SEBA Class 7 Bengali Chapter 7 পড়ার হিসাব

Join Roy Library Telegram Groups

SEBA Class 7 Bengali Chapter 7 পড়ার হিসাব Question Answer As Per New Syllabus of SEBA Provided by The Roy Library is one of the best content available on the internet as well as many other offline books. SEBA Class 7 Bengali Chapter 7 পড়ার হিসাব Notes is made for SEBA Board Bengali Medium Students. SEBA Class 7 Bengali Chapter 7 পড়ার হিসাব Solutions We ensure that You can completely trust this content. SEBA Class 7 Bengali Chapter 7 পড়ার হিসাব Suggestions If you learn PDF from then you can BUY PDF সপ্তম শ্রেণীর অঙ্কুরণ সমাধান I hope You Can learn Better Knowledge.

SEBA Class 7 Bengali Chapter 7 পড়ার হিসাব

Today’s We have Shared in This Post SEBA Class 7 Ankuran Chapter 7 পড়ার হিসাব Suggestions with you. SEBA Class 7 Bengali Chapter 7 পড়ার হিসাব I Hope, you Liked The information About The SEBA Class 7 Ankuran Chapter 7 পড়ার হিসাব Question Answer. If you liked SEBA Class 7 Ankuran Chapter 7 পড়ার হিসাব Notes Then Please Do Share this Post With your Friends as Well.

পড়ার হিসাব

ক্রিয়াকলাপ

ক – পাঠভিত্তিক

১। নিজে করাে

২। নিজে করাে

৩। নিচের শব্দগুলাের অর্থ শব্দসম্ভার অথবা অভিধান খুজে বের করাে-

উত্তরঃ পুঁথি- হাতে লেখা প্রাচীন বই। 

হদ্দ- সীমা।

সাড়া- উত্তর। 

ঝাড়া- একটানা।

সাঙ্গ- শেষ। 

মুখস্থ- কণ্ঠস্থ।

৪। বলাে ও লেখাে।

(ক) সবাই কোথায় ফিরেছে?

উত্তরঃ ছুটি কাটিয়ে সবাই স্কুলে ফিরেছে।

(খ) বগলে কী নিয়ে সবাই গুটি গুটি চলেছে?

উত্তরঃ বগলে বই নিয়ে সবাই গুটি গুটি চলেছে।

(গ) কী ধরনের বই ছাত্ররা পড়েছে?

উত্তরঃ ছাত্ররা পুঁথি ও গল্প পড়েছে।

S.L. No.সূচি পত্র
পাঠ -১গোষ্ঠযাত্রা – যাদবেন্দ্র
পাঠ -২জাতকের গল্প
পাঠ -৩পণ্ডিত আনন্দরাম বরুয়া
পাঠ -৪মাতৃপূজা
পাঠ -৫বিজ্ঞান ও আমাদের মানসিকতা
পাঠ -৬আশার আলো
পাঠ -৭পড়ার হিসাব
পাঠ -৮মিসাইল মানব
পাঠ -৯অসম
পাঠ -১০প্ৰত্যাহ্বান
পাঠ -১১ভালো থেকো
পাঠ -১২আমার ছেলেবেলা
পাঠ -১৩প্রাকৃতিক দুৰ্যোগ
পাঠ -১৪হে ভারতের শ্ৰমজীবি
পাঠ -১৫মালেগড়

(ঘ) গুরুমশাই ক্লাসে এসে গদাইকে কী জিজ্ঞেস করলেন?

উত্তরঃ গুরুমশাই ক্লাসে এসে গদাইকে জিজ্ঞেস করলেন সে ছুটিতে কেবলই খেলেছে নাকি পড়াশােনা করেছে।

(ঙ) গদাই মামার বাড়ি গিয়ে কী করেছিল?

উত্তরঃ গদাই স্কুল ছুটির সময় মামার বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে গাছে চড়বার সময় গাছ থেকে ধপাস করে পড়ে গিয়েছিল।

৫। সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করাে।

(ক) পড়ার পরে কার কি রকম মনটি ছিল এবার,

সময় এল এখন তারই হিসেবখানা দেবার।

উত্তরঃ আলােচ্য পদ্যাংশটি শিশু সাহিত্যিক সুকুমার রায়ের পড়ার হিসাব কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

দীর্ঘদিনের ছুটি কাটিয়ে ছাত্ররা স্কুলে ফিরছে। বই বগলে নিয়ে তারা ধার পায়ে স্কুলের দিকে চলেছে। ছুটি মানেই আনন্দ, অখণ্ড অবসর। দৈনন্দিন একঘেয়েমি থেকে মুক্তি। বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে। প্রতিদিনের নিৰ্দিষ্ট রুটিনের চাপে তাদের শৈশব প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই ছুটি মানেই কয়েকটা দিন মুক্তি। একটু খেলাধুলা কিংবা বেড়াতে যাওয়া। তবে তার পাশাপাশি পড়াশােনা করাটাও প্রয়ােজন। গ্রীষ্মের ছুটি বা জোর দুটিতে স্কুলে মাস্টারমশাইরা বাড়ির কাজ দিয়ে দেন। সেগুলি স্কুল খুললে দেখাতে হয়।

ছাত্রছাত্রীরা ছুটিতে এই কাজগুলি করে। স্কুল খােলার পর শিক্ষকেরা নিজেদের বিষয়ের কাজগুলি ছাত্রদের কাছ থেকে বুঝে নেন। কোনাে অমনােযােগী ছাত্র ছুটির কাজ না করলে শাস্তি পায়। এতে পড়াশােনার ক্ষতি হয়।

তাই কবি সুকুমার রায় বলেছেন স্কুলে এবার ছাত্রছাত্রীরা ছুটিতে কিরকম পড়াশােনা করেছে সেটাই পরীক্ষা করা হবে।

(খ) কেউ পড়েছে পড়ার পুঁথি, কেউ পড়েছে গল্প,

কেউ পড়েছেন হদ্দমতন, কেউ পড়েছেন অল্প।

উত্তরঃ অবসর বা ছুটি প্রত্যেকেই ভালােবাসে। দীর্ঘদিন কাজ করার পরে কয়েকদিনের ছুটি মনে অতিরিক্ত আনন্দ এনে দেয়। বিশেষত ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে। ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে যাওয়া, পড়া মুখস্থ করা, বাড়ীর কাজ করা, গৃহশিক্ষকের কাছে যাওয়া, এসব মিলিয়ে দিনের অধিকাংশ সময় কেটে যায়। খেলাধূলার জন্য পড়ে থাকে খুবই সামান্য সময়। অথচ খেলাধূলা শরীর ও মন দুটোই ভালাে রাখে।

বিদ্যালয়ের ছুটিতে ছাত্রছাত্রীদের দৈনন্দিন রুটিনে একটু পরিবর্তন হয়। কেউ খুব মন দিয়ে পুঁথি পড়ে কিংবা শ্রেণির বই পড়ে। কেউ আবার সিলেবাসের বাইরে বেরিয়ে অন্য ধরনের কিছু পছন্দের বই পড়ে মনের খিদে মেটায়। কেউ আবার পড়াশােনার জন্য খুব বেশি সময় দেয় ; কেউ আবার অল্প পড়ে। স্কুলে ছুটিতে দেওয়া বাড়ীর কাজগুলি প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হয়। কোনাে গম্ভীর প্রকৃতির ছাত্র সময়বানষ্ট না করে ছুটির কাজগুলি শেষ করে রাখে। কোনাে শিক্ষার্থী ছুটির দিনগুলিতে আলসেমি করে কাটিয়ে দেয়।

৬। শূন্যস্থান পূর্ণ করাে।

(ক) ফিরল সবাই ____________ হল ছুটি।

উত্তরঃ ইস্কুলেতে, সাঙ্গ।

(খ) ____________ এল এখন তারই ____________ দেবার।

উত্তরঃ সময়, হিসেবখানা।

(গ) ____________ এসেই ____________ বলেন, ‘ওরে গদাই।

উত্তরঃ গুরুমশাই, ক্লাশে।

(ঘ) এক্কেবারে অম্নি ____________ পড়ার মত ____________ ।

উত্তরঃ ধপাস, পড়া।

খ- ভাষা অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)

৭। নীচের শব্দগুলাের দুটি করে প্রতিশব্দ লেখাে।

ছুটি ____________ , ____________ 

বই ____________ , ____________ 

গাছ ____________ , ____________ 

অল্প ____________ , ____________ 

বাড়ি ____________ , ____________ 

উত্তরঃ ছুটি- অবসর, অবকাশ

বই- গ্রন্থ, পুস্তক

গাছ- তরু, বৃক্ষ

অল্প- কম, স্বল্প

বাড়ি- গৃহ, বাসস্থান

৮। ‘পাকা’ শব্দের বিভিন্ন রূপে প্রয়ােগ করে বাক্য রচনা করাে।

উত্তরঃ পাকা মাথা (অভিজ্ঞ)- এ কাজটি অত্যন্ত পাকা মাথার কাজ।

পাকা কথা (চূড়ান্ত)- রামবাবুর মেয়ের বিয়ের পাকা কথা হয়ে গিয়েছে।

পাকা রাঁধুনি (দক্ষ)- আমার মা পাকা রাঁধুনি।

পাকা দেখা (স্থির হওয়া)- আমার বােনের পাকা দেখা হয়ে গিয়েছে।

পাকা রং (স্থায়ী)- জামা কাপড়ের পাকা রং থাকে না।

পাকা ধানে মই (সুনিশ্চিত প্রাপ্য নষ্ট হওয়া)- যেভাবে ক্ষতি হল তাতে মনে হল যদুবাবু শ্যামবাবুর পাকা ধানে মই দিয়েছে।

৯। ধ্বন্যাত্মক শব্দ।

উত্তরঃ ধুধু, খাঁখাঁ, হাঁহাঁ, কুচকুচে, টুকটুকে।

গ – জ্ঞান সম্প্রসারণ

১১। বাক্য রচনা।

উত্তরঃ হাত এড়ানাে- টাকা শােধ করার সময় সে হাত এড়ানাে ব্যাপার করছে।

হাত করা- চাকরি পেতে গেলে উপর মহলে হাত করতে হবে।

হাত গােটানাে- নিজের কাজ হয়ে গেলে তােমার হাত গােটানাে স্বভাব।

হাত টান- মাধব বাবুর খুব হাত টান চলছে।

হাত পাতা- যার তার কাছে হাত পাতা যায় না।

হাত বদল- বাক্সটা বহুবার হাত বদল হয়েছে।

হাত যশ- ডাক্তারবাবুর অনেক হত যশ আছে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। সন্দেশ পত্রিকা সম্পর্কে লেখাে।

উত্তরঃ সন্দেশ হল কিশােরদের জন্য বাংলায় প্রকাশিত একটি মাসিক পত্রিকা। ১৯১৩ সালে এই পত্রিকাটির জন্ম দেন উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী। ১৯১৫ সালে উপেন্দ্রকিশাের মারা যাবার পর এর সম্পাদনার ভার নেন তার পুত্র সুকুমার রায়। সুকুমার রায়ের সম্পাদনার সময়েই সন্দেশ একটি অনন্য পত্রিকা হয়ে ওঠে যাতে সাহিত্যরসের সাথে হাস্য ও কৌতুক রস এবং বিজ্ঞান ও জগৎ সম্বন্ধে তথ্যাদির সমাবেশ ঘটে। তবে সুকুমার পত্রিকাটিতে শিশুদের উদ্দেশ্যেই বেশি লিখতেন।

এই পত্রিকায় বিভিন্ন সময়ের জনপ্রিয় লেখক-লেখিকারা লিখতেন তারা হলেন- উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরী, সুকুমার রায়, নলিনী দাশ নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, নারায়ণ স্যানাল, সত্যজিৎ রায়, সুনীন গঙ্গোপাধ্যায়, বিমল কর, লীলা মজুমদার, শিবরাম চক্রবর্তী, প্রেমেন্দ্র মিত্র সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখােপাধ্যায়, শঙ্খ ঘােষ প্রমুখ ।

জনপ্রিয় রচনা ও সিরিজ-

উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরীর টুনটুনির গল্প ও গুপী গাইন বাঘা বাইন ও অন্যান্য গল্প।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা এবং উপন্যাস ‘সে’ এবং আরাে কয়েকটি রচনা।

কুলদারঞ্জন রায়চৌধুরীর অনুবাদ করা রবীনহুড সিরিজ।

সুকুমার রায়ের হ-য-ব-র-ল, আবােল তাবােল, খাই খাই ও পাগলা দাশু।

নলিনী দাশ ও অমিতানন্দ দাশের গােয়েন্দা গণ্ডালু সিরিজ।

সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা, তারিণীখুড়াে ও প্রফেসর শঙ্কু।

বুদ্ধদেব গুহ রচিত ঋজুদা সিরিজের কাহিনি।

মতি নন্দীর কলাবতী সিরিজের উপন্যাস কলাবতীর ময়দান রিপাের্টিং।

২। প্রবন্ধ লেখাে।

সাহিত্যপাঠের প্রয়ােজনীয়তা

উত্তরঃ সাহিত্য হ’ল জীবনবেদ। মানুষের বিচিত্র জীবন ও প্রকৃতির সৌন্দর্যকে অবলম্বন করেই গড়ে ওঠে সাহিত্য। কাব্য, উপন্যাস, গল্প, নাটক ইত্যাদি সাহিত্যকর্মে আমরা বৃহৎ ও বিচিত্র জীবনের লীলাকে প্রত্যক্ষ করি। এককথায় বাস্তবজীবনকে অবলম্বন করেই সাহিত্য গড়ে ওঠে। কিন্তু মনে রাখা দরকার, বাস্তব জীবনের হুবহু প্রতিচ্ছবি সাহিত্য নয়। মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভালাে-মন্দের সঙ্গে লেখকের নিজ চিন্তাভাবনাও মিশে থাকে। সাহিত্যের উপাদান বাস্তবজীবন হলেও তার সঙ্গে লেখকের আপন মনের মাধুরী মিশে থাকে। সাহিত্যকর্মে মানব-চরিত্রের তাই একটি পূর্ণ ও বিশুদ্ধ রূপকে আমরা লীলায়িত হতে দেখি। সাহিত্যপাঠে আমরা আনন্দ উপভােগ করার সঙ্গে সত্য, শিব ও সুন্দরের সন্ধান পাই। আমাদের চেতনা উন্নীত হয়। চোখের সামনে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে একটি সর্বাঙ্গ, সুন্দর পূর্ণায়ত জীবন।

সাহিত্যপাঠে মানুষের আত্মসমীক্ষা ঘটে। মানুষমাত্রই নিজের স্বার্থের কারাগারে বন্দি। শুধু দিনযাপনের, শুধু প্রাণধারণের গ্লানির মধ্যে অতিবাহিত করা জীবনের ধর্ম নয়। মানুষ সাংসারিক জীবনের এক ক্ষুদ্র সত্তা নয়। তার একটি বড়াে মুক্ত ও শুদ্ধ আত্মিক সত্তা আছে। সাহিত্য মানুষকে সেই আত্ম-উপলব্ধির পথে উত্তীর্ণ করে। ক্ষুদ্র থেকে, তুচছতা থেকে আত্মসম্পূর্ণতায় মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায় সাহিত্য। সংসার মানুষকে জড়তায়, ক্ষুদ্রতায় ও স্বার্থপরতায় সংকীর্ণ ও বিচ্ছিন্ন করে রাখে। বৃহৎ মানবসমাজের সঙ্গে আত্মিক যােগে সে যে এক মহিমময় জীবনের অধিকারী, -এটা সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়ে যায়। সাহিত্যপাঠে মানুষ দেখে কোথায় কেন মানুষের পরাজয় ঘটেছে, কোথায় তার ত্রুটি, কীজন্য তার আশা ও আকাঙ্ক্ষা বিপর্যস্ত হয়ে গেল। সেই অকৃতার্থ জীবনের নৈরাশ্যবেদনার মধ্যে সে চরিতার্থতার প্রেরণা লাভ করে। চিরাভ্যস্ত জীবনের প্রাচীর ভেঙে সে বিপুল ও বৃহৎ মহাবিশ্বজীবনের প্রাঙ্গণ-ভূমিতে অগ্রসর হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হয়। সাহিত্যপাঠে এমনভাবে ব্যক্তিজীবনের মুক্তি ঘটে বৃহতের আনন্দলােকে। সাহিত্য মানুষের প্রেম ভালবাসা ও মানবতার বৃত্তিগুলিকে জাগ্রত করে ; বিশ্বজীবনবােধের মঙ্গলচেতনায় তার চিত্তকে উদবােধিত করে। জগৎ ও জীবনের যা সত্য ও সুন্দর, যা সর্বমানবিক ও শাশ্বত, সাহিত্যপাঠে মানুষ সেই দীপ্ত সমুজ্জ্বল শুভ্র সুনির্মল স্বর্গীয় জীবনের আলাে দেখতে পায়। সাহিত্যপাঠে মানুষের আত্ম-আবিষ্কার ও আত্মােপলব্ধি ঘটে। জড়তা-তামস ও খণ্ড-ক্ষুদ্রতা থেকে সাহিত্যপাঠে ব্যক্তি-মানুষের এভাবে সার্বিক মানস উত্তরণ ঘটে, তার সামনে জীবনের সত্যস্বরূপটি প্রদীপ্ত হয়ে সঠিক পথে চলার আলাে দেখায়।

শুধু ব্যক্তিমানুষের উজ্জীবনের ক্ষেত্রেই সাহিত্যপাঠের প্রয়ােজনীয়তা নয়। সাহিত্য বৃহত্তম সমাজেরও এক বৃহত্তম দর্পণ। সাহিত্যিক যেহেতু একজন সামাজিক জীব, তাই সমাজের বিচিত্র ক্রিয়াকলাপ, তার ধর্মকর্ম, উৎসব-অনুষ্ঠান, আচার-সংস্কার সবকিছুই তার মনােজীবনকে নিয়ন্ত্রিত করে। তাই সমাজজীবনের সঙ্গে সাহিত্যিকের প্রত্যক্ষ যােগ থাকে। সাহিত্যসৃষ্টি তার কল্পনাজগতের ব্যাপার হলেও বাস্তবের বৃহত্তর সামাজিক পটভূমিই তার সৃষ্টির ভিত্তিমূলে থেকে যায়। সুতরাং, কেবল ব্যক্তিচেতনা নয়, সমাজবিজ্ঞান ও ইতিহাসের অন্যতম উপাদান সম্পর্কে জ্ঞানলাভের জন্যও সাহিত্যপাঠের প্রয়ােজনীয়তা রয়েছে। সামাজিক রীতিনীতি, ধর্মসংস্কার, পালপার্বণ, উৎসব-অনুষ্ঠান প্রভৃতির সঙ্গে আমরা পরিচিত হই সাহিত্যপাঠের মাধ্যমে। প্রাচীন ও মধ্যযুগের সমাজব্যবস্থা কেমন ছিল, তা জানতে গেলে সাহিত্যপাঠ অপরিহার্য।

বাস্তব জীবনকে অবলম্বন করেই সাহিত্য। কিন্তু সাহিত্য কেবলমাত্র সমকালীনতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বড়াে বড়াে সাহিত্যিকরা সমকালকে অবলম্বন করে এগিয়ে চলে যান চিরকালের দিকে। মানব-ইতিহাসের দূরবিস্তৃত ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টি সম্প্রসারিত থাকে। সমকালীন সভ্যতার গ্লানি, -তার সংকট ও বিপর্যস্ত মানবতা সম্পর্কে তারা সতর্কবাণী উচ্চারণ করে আগামী দিনের শােষণহীন মালিনমুক্ত ও পরিপূর্ণ মনুষ্যত্বের এক সুন্দর জীবনের কথা দৃপ্তকণ্ঠে ঘােষণা করেন। সমগ্র মানবজাতিকে সভ্যতার সংকট থেকে রক্ষা করার জন্য তারা অভয়মন্ত্র রচনা করেন। আজ বিশ্বের মানুষ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কায় ভীত-সন্ত্রস্ত। সমস্ত বিশ্বজুড়ে শান্তিকামী মানুষের কণ্ঠে ধবনিত হচ্ছে- ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই। সেই শান্তির বাণীই যুগে যুগে ধবনিত হয়েছে কবিসাহিত্যিকের রচনায়। সাহিত্যপাঠে মানুষ সেই লীলা-নিকেতনের অধিবাসী হতে চেয়েছে।

সাহিত্য মানুষকে শুধু আনন্দ দান করে না- সাহিত্য মানুষের মানসিক শক্তি স্ফুর্তি আনে। সেই মানসিক জীবনরক্ষায় সাহিত্যপাঠের প্রয়ােজনীয়তা সর্বাধিক। সংসারজীবনে প্রতিনিয়ত মানুষকে কাজকর্ম নিয়ে থাকতে হয়। জীবনপথে সংঘাত, বাধা, শােক, নৈরাশ্য, দুঃখবেদনা ও পরাভব মানুষকে ক্লান্ত, বিষণ্ণ ও আর্ত করে রাখে সর্বদা। সাহিত্যপাঠে মানুষ প্রচণ্ড শক্তি লাভ করে। পরাভূত জীবনের বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে যে মুক্তি পায়, ভয় থেকে অভয় মাঝারে নতুন জীবন লাভ করে। সাহিত্যপাঠে মানুষ নৈরাশ্য-ক্লান্তি-সংশয় থেকে বিশ্বাসের জগতে প্রবেশ করে।

সবচেয়ে বড়াে কথা সাহিত্যপাঠে আমরা চিরকালের মানুষের সঙ্গে পরিচিত হই- চিরন্তন মানবিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির স্বরূপটি সাহিত্য ব্যঞ্জিত করে তােলে। সাহিত্য যুগের জীবনকে নিয়ে রচিত হলেও যুগের মধ্যে সে সীমাবদ্ধ নয়। তা হলে তা সাহিত্যপদবাচ্য হতে পারে না। সাহিত্য সমকালের জীবন নিয়ে সমকালকে পেরিয়ে চিরকালের দিকে, এগিয়ে যায়। সাহিত্য যুগশাসিত সৃষ্টি নয়। সাহিত্য মুক্ত জীবনের বাণীবাহক -কালাশ্রিত হয়ে সে কালােত্তীর্ণ।

সাহিত্যপাঠে আমরা অনাবিল আনন্দ পাই। কিন্তু আনন্দলাভের ক্ষেত্রেই সাহিত্যপাঠের প্রয়ােজনীয়তা সীমাবদ্ধ নয়। সাহিত্য মানুষকে স্বার্থের বন্ধন থেকে মুক্তি দেয়। নৈরাশ্য-সংশয়-গ্লানি থেকে তার চিত্তকে উজ্জীবিত করে। বিশিষ্ট এক নতুন চেতনায় সাহিত্য ব্যক্তিমানুষকে বিশ্ববােধের ব্যাপ্তি ও বৈচিত্রের বিশ্বমানবের সঙ্গে মিলন ঘটিয়ে দেয়। এককথায় সাহিত্যপাঠে মানুষ আনন্দলাভের সঙ্গে সঙ্গে বৃহত্তর মানবজীবনের আদর্শে উদবুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠে।

ব্যাকরণ

অশুদ্ধি সংশােধন-

মনের ভাব প্রকাশ করার লিখিত মাধ্যম হল, শুদ্ধ বাক্য রচনা। শুদ্ধ বাক্য রচনা বলতে, বাক্য রচনা-রীতি অনুসারে কেবল লেখা নয়, সেই সঙ্গে চাই সুষ্ঠু এবং উপযুক্ত শব্দ প্রয়ােগ। শুদ্ধ বানান সম্বন্ধে দ্বিধা থাকলে অনেক সময়ই বাক্যে উপযুক্ত শব্দ প্রয়ােগ করা যায় না। বাংলা বানানের জটিলতাকে সরল ও সহজবােধ্য করে তােলার জন্য পণ্ডিতদের চেষ্টার অবধি নেই। বর্তমানে নির্ধারিত বানান-বিধি অনুসরণ করে পঞ্চাশটি শুদ্ধ বানানের রূপ দেখানাে হল।

বানানগত প্রচলিত শব্দ

১। তৎসম শব্দের বানান (হ্রস্বদীর্ঘ স্বরচিহ্ন)

কুটির- কুটিরে কুটিরে বন্ধ দ্বার।

অবনি- আলােকে শিশিরে কুসুমে ধান্যে হাসিছে নিখিল অবনি।

চিৎকার- ওরা বধির, চিৎকার করলেও ওরা শুনবে না।

দীপাবলি- এবার দীপাবলি উৎসবে দিল্লী, যাব।

ধরণি- ধরণি শীতল হল ঘন বরষায়।

একাকী- হে রাখাল বেণু তব বাজাও একাকী…

কৃতী- অমর্ত্য সেন ভারতের কৃতী সন্তান।

আগামীকাল- আগামীকাল একবার এসাে।

পরবর্তীকাল- শিক্ষার যা হাল দেখছি, তাতে পরবর্তীকালে চাকরি পাওয়াই দুষ্কর।

শশীভূষন- আমার মামা শশীভূষণ দে স্ট্রিটে থাকেন।

প্রতিযােগিতা- আজকাল টি.ভি-র প্রায় প্রতিটি চ্যানেলে সংগীত প্রতিযােগিতা হয়।

মন্ত্রিত্ব- দেশের কাজ করুন নয় তাে মন্ত্রিত্ব ছাড়ুন।

স্থায়িত্ব- ভালাে জিনিসের স্থায়িত্ব অনেক বেশি।

২। বিসর্গ চিহ্নের রক্ষা/ বর্জন-

ইতস্তত- করে কাজ নেই, সত্যি কথাটা বলে ফেলাে।

মনঃপুত- এবারের পুজোর জামা-প্যান্ট আমার মনঃপুত হয়নি।

৩। রেফের নীচে ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব-

অর্চনা- আমরা প্রতি বছর বাণী-দেবীর অর্চনা করি।

চর্চা- তুমি প্রতিদিন কত ঘণ্টা সংগীত চর্চা কর ?

৪। ঙ আর  ং  –

অলংকার- তােমার হাতের অলংকারগুলি সুন্দর মানিয়েছে।

সংগীত- জীবনে আমার সংগীত দাও আনি….

আতঙ্ক- গতকাল সারারাত আতঙ্কে কেটেছে।

কঙ্কাল- ডাক্তারিতে কঙ্কাল-চর্চা করতে হয়।

৫। হ্রস্ব ই-কার, দীর্ঘ ঈ-কার।

কুমীর- সুন্দরবনের খালে প্রচুর কুমির আছে।

বাড়ি- এবার বাড়ি গিয়ে পড়াশােনায় মন দাও।

পাখি- খাঁচার পাখিকে মুক্ত করে দাও।

পাগলি- বর্ষাসুন্দরীকে কবি পাগলি বলে কল্পনা করেছেন।

গয়লানি- গয়লানিকে কাল আধসের দুধ বেশি দিতে বলবে।

হিন্দি- ভারতে হিন্দি ছায়াছবির জনপ্রিয়তা খুব বেশি।

পাকিস্তানি পাকিস্তানিরা উর্দুভাষায় কথা বলে।

আসামি- পুলিশ-হাজত থেকে আসামি উধাও।

দেশি- বিলাতি নয় আমি দেশি জিনিস পছন্দ করি।

৬। হ্রস্ব উ-কার, দীর্ঘ উকার-

ধুলাে- লােকটা সকলের চোখে ধুলাে দিয়ে পালাল।

পুজো- ভটচায্যি মশাই পুজোয় বসেছেন।

পুব- পুব হাওয়াতে দেয় দোলা…

পূজারি- পূজারি পুজোয় বসেছেন।

উনত্রিশ- উনত্রিশ পাতায় দেখাে।

৭। শব্দান্তে ও-কার-

ছােটো- ছােটোদের জন্য ভালাে বই-এর বড়াে অভাব।

আঠারাে- আঠারাে বছর বয়স জানে না কাঁদা..

৮। ণ এবং ন-

পুরানাে- পুরানাে সেই দিনের কথা কী ভােলা যায়।

সােনা- সােনা দিয়ে বাঁধানাে দাঁত।

৯। য-ফলা-

হিত্সা- লুঠের মাল আধাআধি হিস্যা হল।

মফসল- উনি মফস্সলের মানুষ।

১০। ক্ষ এবং খ-

খেত- খেতের আলে আলে সােনালি ঢেউ খেলে।

খ্যাপা- খ্যাপা খুঁজে ফেরে পরশ পাথর।

১১। বিদেশি শব্দে শ-স 

বাদশাহি- এতাে দেখছি বাদশাহি আংটি।

বালিশ- বালিশ নেই সে ঘুমাতে চায়, মাথার নীচে ইট দিয়ে।

পুলিশ- ব্যাপারটা পুলিশ অনুসন্ধান করে দেখছে।

নার্সারি- এখন পাড়ায় পাড়ায় নার্সারি স্কুলের অভাব নেই।

১২। র-ফলা-

খ্রিস্ট- মধুসূদন খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

ব্রিটিশ- নেতাজি ব্রিটিশ বাহিনীকে পরাস্ত করেন।

১৩। ব্যঞ্জনপূর্ব র-রেফ-

হরবােলা- হর্ষে ভুবন হরবােলা।

হরতাল- হরতাল হল, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top