SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন

Join Roy Library Telegram Groups

SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন Question Answer As Per New Syllabus of SEBA ক্লাস 8 বাংলা প্রশ্ন উত্তর Provided by The Roy Library is one of the best content available on the internet as well as many other offline books. SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন Notes is made for SEBA Board Bengali Medium Students. SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন Solutions We ensure that You can completely trust this content. SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন Suggestions If you learn PDF from then you can BUY PDF Class 8 Bengali textbook Solutions. অষ্টম শ্রেণীর অঙ্কুরণ প্রশ্ন উত্তর I hope You Can learn Better Knowledge.

SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন

Today’s We have Shared in This Post অষ্টম শ্রেণীর অঙ্কুরণ সমাধান SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন Notes with you. SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন I Hope, you Liked The information About The SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন Solutions. If you liked SEBA Class 8 Bengali Chapter 7 মন্ত্ৰের সাধন Question Answer Then Please Do Share this Post With your Friends as Well.

মন্ত্ৰের সাধন 

ক্রিয়াকলাপ

ক — পাঠভিত্তিক

প্রশ্ন ১। উত্তর দাও।

(ক) সোয়ার্জ কোন দেশের অধিবাসী ছিলেন?

উত্তরঃ সোয়ার্জ জার্মান দেশের অধিবাসী ছিলেন।

(খ) সোয়ার্জ কোন ধাতু দিয়ে বেলুন তৈরি করেছিলেন।

উত্তরঃ সোয়ার্জ অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে বেলুন তৈরি করেছিলেন।

(গ) কে প্রথম পাখার সাহায্যে আকাশে উড়তে চেষ্টা করেছিলেন? তিনি কোন দেশের অধিবাসী ছিলেন?

উত্তরঃ লিলিয়েনথাল প্রথম পাখার সাহায্যে আকাশে উড়তে চেষ্টা করেছিলেন। তিনি জার্মান দেশের অধিবাসী ছিলেন।

(ঘ) ল্যাঙলি কে ছিলেন?

উত্তরঃ মার্কিন দেশের একজন অধ্যাপক ছিলেন ল্যাঙলি। তিনি পাখাযুক্ত উড়বার কল প্রস্তুত করেছিলেন।

(ঙ) উইলবার রাইট কোন দেশের অধিবাসী ছিলেন?

উত্তরঃ উইলবার রাইট মার্কিন দেশের অধিবাসী ছিলেন।

S.L. No.সূচীপত্র
পাঠ -১জোনাকি
পাঠ -২চিরকালের শরাইঘাট
পাঠ -৩অ্যান ফ্রাঙ্কের ডায়েরি
পাঠ -৪জাগো, জাগো ভারত সন্তান
পাঠ -৫হৈমবতীর আত্মবিশ্বাস
পাঠ -৬পুত্রভিক্ষা
পাঠ -৭মন্ত্ৰের সাধন
পাঠ -৮প্ৰশ্ন
পাঠ -৯আদাব
পাঠ -১০হারানো সভ্যতার খোঁজে
পাঠ -১১উপমন্যু
পাঠ -১২সুখ
পাঠ -১৩হোমি জাহাংগির ভাবা
পাঠ -১৪সংস্কৃতি এবং আমাদের জীবন
পাঠ -১৫শ্ৰীকৃষ্ণের মৃত্তিকা ভক্ষণ

প্রশ্ন ২। পাঠের কঠিন শব্দের অর্থ শব্দ-সম্ভার বা অভিধান থেকে খুঁজে বের করে শিখে নাও।

উত্তরঃ আধিপত্য – কর্তৃত্ব, প্রাধান্য। 

নিষ্ফল – বিফল। 

সাধনা – আরাধনা।

ভীরু – ভয় পায় এমন। 

নির্ভীক – ভয়হীন। 

তত্ত্ব – যথার্থ রূপ, স্বরূপ।

সাম্রাজ্য – সম্রাটের শাসনাধীন রাজ্য। 

গগন – আকাশ। 

অধিকাংশ – বেশির ভাগ।

নদীগর্ভে – নদীর গভীরে। 

পণ – অঙ্গীকার। 

অবিরত – অনবরত। 

প্রয়াস – চেষ্টা।

নিরন্তর – অনবরত। 

সমৃদ্ধ – সম্যক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত।

প্রশ্ন ৩। প্রসঙ্গের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাখ্যা করো।

যাঁহারা ভীরু তাঁহারাই বহু ব্যর্থ সাধনা ও মৃত্যুভয়ে পরাঙ্মুখ হইয়া থাকেন।

বীর পুরুষেরাই নির্ভীক চিত্তে মৃত্যুভয়ের অতীত হইতে সমর্থ হন।

উত্তরঃ সামান্য বাতাসে গভীর সমুদ্র ফুলে ওঠে না। সামান্য বায়ুবেগে ক্ষুদ্র জলাশয়ই চঞ্চল ও আকুল হয়ে ওঠে। সামান্য ঝড়-ঝঞ্ঝা বজ্রপাতে পর্বতশ্রেষ্ঠ হিমালয় অচল, অটল থাকে। সামান্য বিপর্যয় ক্ষুদ্রের বিনাশ সাধনে সমর্থ হলেও বৃহতের তাতে কিছু যায় আসে না।

একই ভাবে মানুষের ক্ষেত্রে যারা বলিষ্ঠ মানসিকতার অধিকারী হন তাদের ষড়রিপু তাদের মহত্ব কলঙ্কিত করতে সমর্থ হয় না। তাঁদের একমাত্র চিন্তা- যাব আজীবন-কাল পাষাণ কঠিন স্মরণে/যদি মৃত্যুর মাঝে নিয়ে যায় সুখ আছে সেই মরণে। এই সব স্থিতধীরাই নরকুলে ধন্য। অপরদিকে যাঁরা ক্ষুদ্র, তুচ্ছ তারা অল্পেই কাতর হন। সামান্য সুখেই তারা ভেসে যান, অল্প দুঃখের অভিঘাতে হা-হুতাশ করে মরেন। জীবন যুদ্ধে তারা পরাজিত হন।

যাঁরা ভীরু তাঁরাই বহু ব্যর্থ সাধনা ও মৃত্যুভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে থাকে। বীর মানবেরাই ভয়হীন চিত্তে মৃত্যুভয়ের অতীত হতে সমর্থ হন। ল্যাঙলির মৃত্যুর পর তাঁরই স্বদেশী উইলবার রাইট উড়বার কল নিয়ে পুনরায় পরীক্ষা শুরু করলেন। ল্যাঙলির বিফলতার দুঃখে উইলবার রাইট পিছপা হননি। উড়বার সময় একবার কল থেমে যায় এবং আকাশ থেকে পড়ে গিয়ে রাইটের একখানা পা ভেঙে যায়, এতেও তিনি ভীত না হয়ে পুনরায় পরীক্ষা শুরু করলেন এবং সেই চেষ্টার ফলে মানুষ আকাশচারী হয়ে নীলাকাশে তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছে।

দুর্লভ মানবজীবন সার্থক করে তুলতে গেলে পথে আছে সীমাহীন বাধা। জীবনের পথ দুর্গম, পদে পদে বিপদ, ব্যর্থতার ইশারা। বিপদে-আপদে যারা ভয় পেয়ে থমকে দাঁড়ায় তারা জড় বস্তুর মতো। মানুষ তার প্রকৃত মনুষ্যত্বের তখনই উদ্বোধন ঘটাতে পারে যখন সে কর্মে, চিন্তায়, চেতনায় সহস্র বাধা সত্ত্বেও সত্যকে আঁকড়ে ধরে।

প্রশ্ন ৪। শূন্যস্থান পূর্ণ করো।

(ক) বেলুন যে ………………… হইতে পারে, ইহা কেহ ………………..করিল না।

উত্তরঃ বেলুন যে ধাতুনির্মিত হইতে পারে, ইহা কেহ বিশ্বাস করিল না।

(খ) যেসব কল ………………… বলিয়া কাটিয়া ফেলা হইল তাহা ………………….. করিতে অনেক বৎসর লাগিয়াছিল।

উত্তরঃ যেসব কল অনাবশ্যক বলিয়া কাটিয়া ফেলা হইল তাহা আবিষ্কার করিতে অনেক বৎসর লাগিয়াছিল।

(গ) জার্মান দেশে …………………… মনে করিলেন, আমরা কেন পাখির মতো আকাশ ………………….. করিতে পারিব না।

উত্তরঃ জার্মান দেশে লিলিয়েনথাল মনে করিলেন, আমরা কেন পাখির মতো আকাশ ভ্রমণ করিতে পারিব না।

প্রশ্ন ৫। উত্তর বলো ও লেখো।

(ক) ল্যাঙলি ‘ভগ্নহৃদয়ে মৃত্যুগ্রস্ত হয়েছিলেন কেন?

উত্তরঃ মার্কিন দেশের অধ্যাপক ল্যাঙলি পাখাযুক্ত একটি উড়বার কল তৈরি করলেন। তাতে ছিল অত্যন্ত হাল্কা একটা ইঞ্জিন। ইঞ্জিনটিতে ছিল একটা স্ক্রু ঢিলা। ইঞ্জিন চালাবার পর কল আকাশে উঠে চক্রাকারে ঘুরতে থাকলে। ঢিলা ত্রুটি খুলে কলটি নদীতে পড়ে যায়। এই বিফলতার দুঃখে ল্যাঙলি ভগ্নহৃদয়ে মৃত্যুগ্রস্ত হয়েছিলেন।

(খ) লিলিয়েনথাল পাখির মতো ‘উড়িবার ইচ্ছা’ কীভাবে কার্যকরী করেছিলেন? তাঁর পরিণতি কী হয়েছিল?

উত্তরঃ অনেক পরীক্ষার পর লিলিয়েনথাল নানারকম পাখা তৈরি করলেন এবং সেগুলি হাতে বেঁধে পাহাড় থেকে ঝাঁপ দিয়ে পাখায় ভর করে নীচে নামতে লাগলেন। একবার তাঁর মনে হয় দুখানা পাখার পরিবর্তে আরো বেশি পাখা ব্যবহার করা হলে আরো উড়বার সুবিধা হত। লিলিয়েনথাল ত্রিশ বছর পর্যন্ত এই পরীক্ষা করতে লাগলেন। জীবনের অনেক সময় কেটে যাওয়ায় তিনি নিজের কাজ শেষ করতে জন্য উৎসুক হয়ে পড়লেন। যে কলটি তৈরি করলেন তা আগের মতো শক্ত হল না। সেই অসম্পূর্ণ কল নিয়েই উড়বার চেষ্টা করলেন। এবার অতি সহজে বাতাস কেটে যাচ্ছিলেন, দুর্ভাগ্যবশত হঠাৎ বাতাসের ঝাপটা এসে উপরের একটি পাখা ভেঙে দিল। এই দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণ হারালেন।

(গ) সোয়ার্জ রেশমের তৈরি বেলুন পছন্দ করেননি কেন?

উত্তরঃ রেশমের তৈরি বেলুন সোয়ার্জ পছন্দ করেননি। তিনি অ্যালুমিনিয়ামের দ্বারা বেলুন প্রস্তুত করেন। অ্যালুমিনিয়াম কাগজের মতো হাল্কা, এটি ভেদ করে গ্যাস বের হতে পারে না।

খ – ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)

☐ জেনে নাও।

পাঠে আছে এমন কয়েকটি শব্দের প্রতি মনোযোগ দাও। যেমন- শিখাইল, সাধন, ধরিয়া, পাইব, বলিয়া, কাটিয়া, করিল ইত্যাদি। এখানে ধাতু বা শব্দের শেষে বর্ণ বা বর্ণ সমষ্টি অথবা প্রত্যয় যুক্ত হয়ে নতুন শব্দের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশ্ন ৬। এবার শব্দ বা ধাতুর প্রত্যয় যোগ করে শূন্যস্থান পূর্ণ করো। যেমন- শিখা + ইল = শিখাইল

সাধ + ………. = সাধন

বল্ +…………. = বলিয়া

ধরি + ……….. = ধরিয়া

কাট্ + …………. = কাটিয়া

পা +………. = পাইব

কর্ + ………… = করিল

উত্তরঃ সাপ্ + অন্ = সাধন

বল্ + ইয়া = বলিয়া

ধরি + ইয়া = ধরিয়া

কাট্‌ + ইয়া = কাটিয়া

পা + ইব = পাইব

কর্ + ইল = করিল

প্রশ্ন ৭। ‘অক’, ‘ইয়া’, ‘ইব’, ‘আই’ প্রত্যয় যোগ করে নতুন শব্দ গঠন করো।

(ক) শাস্ + অক্ = শাসক  ………. + অক্ = …………

………….. + অক্ = ………  ………… + অক = ……….

(খ) দেখ + ইয়া = দেখিয়া  ……….. + ইয়া = ………….

………… + ইয়া = ………  ………… + ইয়া = ………….

(গ) বল্ + ইব = বলিব  ………. + ইব = …………..

………… + ইব = ………  ………… + ইব = …………..

(ঘ) হাস + আই = হাসাই  …………. + আই = ………….

……….. + আই = ………  ………… + আই = ……………

উত্তরঃ শাস্ + অক্‌ = শাসক, জন + অক = জনক

পাল + অক্ = পালক, পাত + অক্ = পাতক

(খ) দেখ + ইয়া = দেখিয়া, নাচ + ইয়া =নাচিয়া

বল + ইয়া = বলিয়া, কর + ইয়া = করিয়া

(গ) বল + ইব = বলিব, দেখ+ ইব = দেখিব

দেখ + ইব = দেখিব, কর + ইব = করিব

(ঘ) হাস + আই = হাসাই, পড় + আই = পড়াই

দৌড় + আই = দৌড়াই, কাঁদ + আই = কাঁদাই

প্রশ্ন ৮। নীচের শব্দগুলো প্রত্যয় ভেঙে দেখাও।

ঢিলা, ঝাপটা, নির্মিত, যাইতে, নির্ভীক, কর্মকার, বাঁধিয়া।

উত্তরঃ ঢিলা = ঢিল্ + আ

ঝাপটা = ঝাপট্ + আ

নির্মিত = নির্ম + ইত

যাইতে = যা + ইতে

নিৰ্ভীক = নির্ভ + ঈক

কর্মকার = কর্মক + আর

বাঁধিয়া = বাপ্ + ইয়া

☐ জেনে নাও।

সোয়ার্জ অ্যালুমিনিয়াম ধাতু দিয়ে বেলুন প্রস্তুত করেছিলেন- এই বাক্যটিতে আমরা দেখলাম যে ক্রিয়া বা কাজ পূর্বেই শেষ হয়ে গেছে। অর্থাৎ যে ক্রিয়া বা কাজ পূর্বেই শেষ হয়ে গেছে তার কালকে অতীত কাল বলে।

প্রশ্ন ৯। নীচের উদাহরণের মতো অতীত কালের কয়েকটি উদাহরণ দাও।

(ক) ‘মন্ত্রের সাধন’ পাঠটি আমার পড়া হয়েছে।

(খ) সূর্য গেল অস্তাচলে।

(গ) ……………………………..।

(ঘ) ……………………………….।

ওপরের কাজগুলো এইমাত্র সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ যে ক্রিয়া এইমাত্র সম্পন্ন হয়েছে তাকে সাধারণ বা নিত্য অতীত কাল বলে।

উত্তরঃ (ক) ‘মন্ত্রের সাধন’ পাঠটি আমার পড়া হয়েছে।

(খ) সূর্য গেল অস্তাচলে।

(গ) আমার খাওয়া হয়ে গিয়েছে।

(ঘ) তারা মাঠে দৌড়ানোর কাজ শেষ করেছে।

ওপরের কাজগুলো এইমাত্র সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ যে ক্রিয়া এইমাত্র সম্পন্ন হয়েছে তাকে সাধারণ বা নিত্য অতীত কাল বলে।

(ক) সোয়ার্জ সমস্ত সম্পত্তি ব্যয় করে পরীক্ষা করছিলেন।

(খ) মন্দিরে কাঁসর ঘণ্টা বাজছিল।

(গ) ……………………………..।

(ঘ) ……………………………….।

যে ক্রিয়ার কাজ অতীতে কিছু সময় ধরে চলছিল তাকে ঘটমান অতীত কাল বলে।

উত্তরঃ (ক) সোয়ার্জ সমস্ত সম্পত্তি ব্যয় করে পরীক্ষা করছিলেন।

(খ) মন্দিরে কাঁসর ঘণ্টা বাজছিল।

(গ) সে বই পড়ছিল।

(ঘ) শিশুটি মাকে দেখে আনন্দ পেয়েছিল।

যে ক্রিয়ার কাজ অতীতে কিছু সময় ধরে চলছিল তাকে ঘটমান অতীত কাল বলে।

(ক) উইলবার রাইট ব্যোমযান আবিষ্কার করেছিলেন।

(খ) রবীন্দ্রনাথ নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন।

(গ) ……………………………..।

(ঘ) ……………………………….।

যে ক্রিয়া বা কাজ বহু পূর্বে হয়ে গেছে তাকে পুরাঘটিত অতীত কাল বলে।

উত্তরঃ (ক) উইলবার রাইট ব্যোমযান আবিষ্কার করেছিলেন।

(খ) রবীন্দ্রনাথ নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন।

(গ) বঙ্কিমচন্দ্র অনেক উপন্যাস লিখেছিলেন।

(ঘ) বালকেরা বাড়িতে মনোযোগ সহকারে পড়া করেছিল।

যে ক্রিয়া বা কাজ বহু পূর্বে হয়ে গেছে তাকে পুরাঘটিত অতীত কাল বলে।

(ক) লিলিয়েনথাল বিপদ জেনেও বিরত হলেন না, তিনি অনেক পরীক্ষা চালিয়ে গেলেন।

(খ) যদি আমি মন দিয়ে লেখা-পড়া করতাম, তাহলে ভালো ফল পেতাম।

(গ) ……………………………..।

(ঘ) ……………………………….।

যে ক্রিয়া বা কাজ প্রায়ই ঘটতো তাকে নিত্যবৃত্ত বা পুরানিত্যবৃত্ত অতীত কাল বলে।

উত্তরঃ (ক) লিলিয়েনথাল বিপদ জেনেও বিরত হলেন না, তিনি অনেক পরীক্ষা চালিয়ে গেলেন।

(খ) যদি আমি মন দিয়ে লেখা-পড়া করতাম, তাহলে ভালো ফল পেতাম।

(গ) আমি যেকোনো কাজ মন দিয়ে করে ভালো ফল পেয়েছি।

(ঘ) রমা অভ্যাসের জন্য ভালো গান গেয়েছে।

প্রশ্ন ১০। নীচের বাক্যগুলো পড়ে বুঝে অতীত কালের চারটি রূপ উল্লেখ করো।যেমন-

(ক) গল্পটি পড়লাম।সাধারণ বা নিত্য অতীত
(খ) আমরা সকলে নদীর ধারে বেড়াতাম।____________
(গ) বঙ্কিমচন্দ্ৰ আনন্দমঠ রচনা করেছিলেন।____________
(ঘ) প্রিয়াংকা নাচছিল।____________
(ঙ) শান্ত স্কুলে গেল।____________
(চ) রাজকন্যা চুল বাঁধছিলেন।____________
(ছ) সেবার বন্যায় সমস্ত দেশ ডুবে গিয়েছিল।____________
(জ) দিদিমা প্রত্যেকদিন গঙ্গাস্নান করতেন।____________

উত্তরঃ 

(ক) গল্পটি পড়লাম।সাধারণ বা নিত্য অতীত
(খ) আমরা সকলে নদীর ধারে বেড়াতাম।নিত্যবৃত্ত অতীত।
(গ) বঙ্কিমচন্দ্ৰ আনন্দমঠ রচনা করেছিলেন।পুরাঘটিত অতীত।
(ঘ) প্রিয়াংকা নাচছিল।ঘটমান অতীত।
(ঙ) শান্ত স্কুলে গেল।নিত্য অতীত।
(চ) রাজকন্যা চুল বাঁধছিলেন।নিত্যবৃত্ত অতীত।
(ছ) সেবার বন্যায় সমস্ত দেশ ডুবে গিয়েছিল।পুরাঘটিতর অতীত।
(জ) দিদিমা প্রত্যেকদিন গঙ্গাস্নান করতেন।ঘটমান অতীত।

প্রশ্ন ১১। বিভিন্ন কারকে চতুর্থী বিভক্তি প্রয়োগ করে বাক্যরচনা করো।

উত্তরঃ কর্তৃকারক- দরিদ্রদের জন্য বিদ্যাসাগরের দয়ার কথা সুবিদিত।

কর্মকারক- কাজের জন্য মানুষ পাই কোথায়।

করণকারক- আনন্দের জন্য দাদারা তাস খেলছে।

নিমিত্ত কারক- পথশিশুদের বিদ্যাদান এই সংস্থার উদ্দেশ্য।

অপাদান- ভালোর জন্য দিদিমণির কথা মন দিয়ে শুনবে।

অধিকরণ কারক- যাওয়ার জন্য দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি।

গ – জ্ঞান-সম্প্রসারণ

প্রশ্ন ১২। রচনা লেখো।

(ক) দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব।

– সূচনা

– বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীলতা

– বিজ্ঞানের অবদান

– বিজ্ঞানের অপকার

– উপসংহার

(খ) কম্পিউটার ও আধুনিক জীবন।

– সূচনা

– দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটারের প্রভাব

– কম্পিউটারের উপকারিতা

– কম্পিউটারের অপকারিতা

– উপসংহার

উত্তরঃ (ক) দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব।

সূচনা – বিজ্ঞানের জয়যাত্রা- মানুষ যুগ-যুগান্তের স্বপ্ন ও সাধনা দিয়ে বিজ্ঞানের ওপর প্রভুত্ব আয়ত্ত করেছে। তার অক্লান্ত কর্মসাধনার ক্রমপরিণতি বিংশ শতাব্দীর সভ্যতা। বহু বিজ্ঞান-গবেষকের ত্যাগ, তিতিক্ষার বিনিময়ে, ব্যর্থতার হা-হুতাশ ভেদ করে মানব-সভ্যতার এ তিলোত্তমা মূর্তি রচিত হয়েছে। বিজ্ঞান-সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে মানুষই নেয় দৈত্যের আকার-অসীম হয় তার বল- বায়ুর চেয়ে বেগবান হয় তার গতি- উত্তাল সিন্ধুর প্রলয়ঙ্কর মূর্তি মন্ত্রমুগ্ধ ভুজঙ্গের মতো হয় শান্ত তার নির্দেশে। বিজ্ঞানের কল্যাণে মানব-সভ্যতার যা কিছু সুন্দর, যা কিছু মধুর মনোমুগ্ধকর স্বাচ্ছন্দ্যের উৎস- সবই এসেছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম, ভাবনা-চিন্তার সঙ্গে বিজ্ঞানের নিবিড় যোগাযোগ আছে।

বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল – পদার্থবিদ নর্মান ক্যাম্পবেল-এর ভাষায় শিল্পবিজ্ঞান বা প্রযুক্তিবিদ্যা আধুনিক যুগে মানব-কল্যাণে এবং তাদের সুখস্বাচ্ছন্দ্য- পূর্ণ জীবনযাপনের অজস্র উপকরণ জুগিয়েছে। বাতানুকূল ব্যবস্থা, ফ্রিজ, ফোন, টেলিফোন, চলচ্চিত্র, কন্ঠস্বর নিয়ন্ত্রিত টাইপরাইটার, টি.ভি. ভিডিও, রেডিও, ঘরসাফাই ও কাপড়কাচার যন্ত্র, মোটর, লিফ্ট, বিমান কত কি। স্বয়ংক্রিয় নানা রান্নার সরঞ্জামের ব্যবস্থা করে রান্নাঘরের বন্দীদশা থেকে বিজ্ঞান গৃহিণীদেরও মুক্তি দিয়েছে।

দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান- প্রত্যূষে ঘড়িতে অ্যালার্ম বাজিয়ে ঘুম ভাঙিয়ে বিজ্ঞানের কার্যারম্ভ হয়। বিজ্ঞানের প্রযুক্তি কৌশলে ততক্ষণে মহানগরের ঘরে ঘরে এসেছে কলের জল, ধনীর গৃহে গ্রীষ্মে শীতল এবং শীতে গীজার-এর উষ্ণ জল- যখন যা প্রয়োজন। গ্রীষ্মে ততক্ষণে মাথার ওপর ঘুরে চলেছে পাখা। বৈদ্যুতিক স্টোভে হচ্ছে ভোরের জলখাবার। চায়ের কাপের সঙ্গে পড়া হতে লাগল দৈনিক পত্রিকা- অতি আধুনিক ফোটোপ্রিন্টিং। আর নেপথ্যে বেজে চলেছে রেডিও। দৈনন্দিন বাজার করার বিরক্তি দূর করেছে ফ্রিজ, বন্ধুর সঙ্গে বাক্যালাপের দূরত্ব হ্রাস করেছে দূরভাষ। খট্ খট্ করে কর্ণপটহভেদী কড়ানাড়ার বদলে হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠে জানিয়ে দেয় অতিথি-অভ্যাগতের আবির্ভাব। পোশাক-পরিচ্ছদ ইলেকট্রিক ওয়াশিং মেশিনে কেচে ইলেকট্রিক ইস্ত্রিতে ইস্ত্রি করা হচ্ছে। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষ বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নিচ্ছে নিজের ইচ্ছামতো।

কর্মজীবনে বিজ্ঞানের ভূমিকা- কর্মজগতে যখন বের হতে হবে-পথের সাথী হয় বাস, ট্রাম, ট্রেন আর দূরে যেতে হলে পথের সাথী বিমান। বোতাম টিপলেই লিফ্ট পৌঁছে দিচ্ছে সর্বোচ্চতলে। গ্রীষ্মে অফিসে বাতানুকূল ঘরে বসে যত জটিল কাজের সমাধান হচ্ছে কম্পিউটারের সাহায্যে। দূর-দূরান্তের সঙ্গে টেলিফোনে, টেলেক্সে, ফ্যাক্সে চলছে জরুরি খবর আদান-প্রদান। চিঠিপত্র লেখা হচ্ছে ডিক্টাফোনে, টাইপরাইটারে। ঘরে ঘরে গিয়ে কর্মচারীদের নির্দেশের প্রয়োজন নেই। সে কাজ করছে স্পিকোফোন।

শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান- পাঠ্যপুস্তক বিজ্ঞানের কল্যাণে সহজলভ্য হয়েছে। ছাত্র-সমাজের পরমবন্ধু বিজ্ঞান তা লেখার কাগজ বহন করে আনছে রেল-স্টিমারে। বিদ্যুতের সাহায্যে বই ছাপা হচ্ছে ছাপাখানায়, ক্লাসঘরে মাথার ওপর পাখা ঘুরছে। অন্ধদের শিক্ষার জন্য ব্রেল পদ্ধতির আবিষ্কার হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিজ্ঞান করেছে নানা ব্যবহার ইলেকট্রনিক্সের কল্যাণে হয়তো একবিংশ শতকের ছাত্রদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার দরকারই হবে না। ঘরে বসেই টি. ভি.-র পর্দায় মাস্টারমশায়ের বক্তৃতা শুনতে পাবে তারা; ফিজিক্স, কেমিস্ট্রির পরীক্ষা দেবে।

শ্রমিকজীবনে বিজ্ঞান- শ্রমিক জীবনে জীবিকার সংস্থান যেখানে- সেখানে সবই চলে বিজ্ঞানের সাহায্যে। বিদ্যুতের সাহায্যে কলকারখানায় কাজ হয়। এখানেও ভাবীযুগের বিজ্ঞান কর্মীজনতার মেহনত কমিয়ে দেবে; সুইচ টিপলেই দূর থেকে চালানো যাবে বড় বড় কারখানা। বিজ্ঞান আজ যন্ত্রের সাহায্যে চাষ, জমিতে সচল বিদ্যুৎচালিত টিউবওয়েল, পাম্পসেট ও উন্নত বিপণন ব্যবস্থা করে কৃষক জীবনেও যথাযোগ্য স্থান লাভ করেছে নদী- উপত্যকা- পরিকল্পনা- প্রকল্প গ্রহণ করে দুরন্ত নদীকে শান্ত করেছে বিজ্ঞান। অফিস-কাছারীতে কঠিন গাণিতিক বিষয়ের জন্য এখন ক্যালকুলেটার ও কম্পিউটার আছে।

আর্তের সেবায় বিজ্ঞানের বহুমুখী রূপ- সুস্থ জীবনের মতো আর্তের দৈনন্দিন জীবনেও বিজ্ঞান আজ অকাতরে মানব-প্রভুর সেবা করছে যে সব রোগ ছিল দুরারোগ্য, বিজ্ঞানের সেবায় আজ তা মৃতসঞ্জীবনীতে পরিণত। বিজ্ঞান এক মানুষের হৃদয়যন্ত্র প্রয়োজনে অন্যের হৃদয়ে সংযোজিত করে তাকে প্রাণদান করছে। দিনের পর দিন ব্লাডব্যাঙ্ক থেকে বোতল বোতল রক্ত নিয়ে কত লোকের জীবন রক্ষা করছে। এক্স-রে করছে, রেডিয়ামকোবাল্ট রশ্মি সারাচ্ছে ক্যানসার, বিজ্ঞানবলে মানুষ লাভ করেছে দীর্ঘতর জীবন। শল্যবিদ্যার উন্নতিও আধুনিক বিজ্ঞানের দান। অকস্মাৎ বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে এগিয়ে আসে ফায়ারব্রিগেড ধন-প্রাণ রক্ষায়। বিজ্ঞানের নব নব সম্পদ আজ মানুষের হাতের মুঠোয়।

অবসর বিনোদনে বিজ্ঞান- অবসর বিনোদনেও বিজ্ঞান মানুষের একান্ত আপনজন । রেডিও, সিনেমা, টি.ভি—তার দিনের কর্মক্লান্তি ঘুচিয়ে দেয়। ধনী-নির্ধন সকল মানুষের জীবনে রেডিও, টি.ভি. প্রভৃতি আনন্দের স্পর্শ এনে দেয়। সান্ধ্য ভ্রমণে পথপার্শ্বের দোকানের আলোকসজ্জা দেয় তাকে আনন্দ। বিজ্ঞানবদান্যতায় অবসর বিনোদনে আজ ধনী-দরিদ্রের ভেদাভেদ দূর হয়েছে।

বিজ্ঞানের অপকারীতা- দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান মানবপ্রভুর সেবায় নিযুক্ত কিন্তু স্বৈরাচারীশক্তি ও জঙ্গী যুদ্ধবাজদের হাতে বিজ্ঞান চরম ভয়াবহ। তাদের হাতে নিউট্রন, পারমাণবিকবোমার ধ্বংসাস্ত্র- বিশ্ব ধ্বংস করবে তারা। সেটা বিজ্ঞানের দোষ নয়। দোষ অপব্যবহারকারীদের।

উপসংহার- বিশ্বমানবের কল্যাণকামনায় যে জিনিসের সৃষ্টি তার ব্যবহার কখনোই যেন কারো অমঙ্গল সাধনা না করে। এই দিকটির প্রতি আমাদের সিচেতনতা সব সময়ই সজাগ রাখতে হবে। কেননা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান সবসময় আশীর্বাদস্বরূপ। আমাদের অজ্ঞানতা ও অপব্যবহারের ফলেই এর ব্যবহারজনিত ত্রুটি চোখে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে বিজ্ঞান সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলেই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্থান করে নিয়েছে।

(খ) কম্পিউটার ও আধুনিক জীবন।

সূচনা- বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশীট সংগ্রহ করে একটি ছাত্র সবিস্ময়ে আবিষ্কার করে জীবন বিজ্ঞানে সে ১১০ নম্বর পেয়েছে, যদিও ওই বিষয়ের পূর্ণসংখ্যা ১০০। একই সঙ্গে সে দেখে ইতিহাসে মাত্র ৫ পেয়েছে, যদিও সে ভালই পরীক্ষা দিয়েছিল। ছেলেটি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। তার পরীক্ষার ফল পুনর্বিবেচনা করে দেখা গিয়েছিল, ছেলেটি জীবনবিজ্ঞানে ৯০ এবং ইতিহাসে ৭৫ নম্বর পেয়েছে। এ সবই কম্পিউটারের কেরামতি। কম্পিউটারকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তার বিরুদ্ধে অনেক নালিশ জমা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কম্পিউটার বেকসুর খালাস পায়। কেননা পরে প্রমাণিত হয় কম্পিউটার ভুল করেনি। কম্পিউটারকে যিনি ভুল তথ্য সরবরাহ করেছিলেন তিনিই দায়ী।

দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটারের প্রভাব- বিজ্ঞানের নবতম বিস্ময় কম্পিউটার এই ইংরাজী কথাটির অর্থ ‘যন্ত্রগণক’। শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন শব্দ কমপিউটেয়ার থেকে- যার অর্থ গণনা করা। বিংশ শতাব্দীর শেষ লগ্নে এই যন্ত্রটি বিভিন্ন অফিস, ব্যাঙ্ক, রেলওয়ে, বিমান, টেলিভিশন, কলকারখানা এমন কি খেলার আসরেও নিজের স্থানটি সুনির্দিষ্ট করে নিয়েছে। এর নির্ভুল কর্মপদ্ধতির ওপর অনায়াসে নির্ভর করা চলে।

আবিষ্কার তত্ত্ব- ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজকে বলা হয় আধুনিক কম্পিউটারের জনক। নির্ভুল এবং দ্রুত গণনার জন্য তিনি পাঁচটি অংশে সম্পূর্ণ আধুনিক কম্পিউটারের গঠনকৌশল আবিষ্কার করেন। ব্যারেজের পরিকল্পনা সম্পূর্ণ হতে সময় লেগেছিল প্রায় এক শতাব্দী, কেননা তাঁর সমকালীন প্রযুক্তিবিদ্যা উন্নত ছিল না এবং এর সূক্ষ্ম যন্ত্রাংশ তৈরি করার মতো কৌশলও অজানা ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে স্বয়ংক্রিয় ইলেকট্রনিক কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। এ বিষয়ে হাওয়ার্ড আইকিন নামে আরও এক বিজ্ঞানীর নাম স্মরণীয়। তিনিই বিদ্যুৎচালিত যান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে কম্পিউটারকে নির্দেশ দেবার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করেন।

কম্পিউটারের পরিচয়- মানুষ তার জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্যকে ক্রম অনুযায়ী সাজিয়ে রেখে তার উপর ভিত্তি করেই কোনো সমস্যার সমাধানের সূত্র নির্ণয় করে। কম্পিউটার কোনো সমস্যা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্যাদি গ্রহণ করে সেগুলি সুসংবদ্ধভাবে সাজিয়ে নেয়। এরপর নির্দেশ অনুযায়ী তথ্যভিত্তিক ফলাফল সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। তথ্য সরবরাহ এবং নির্দেশ বা প্রোগ্রাম নির্ভুল হলে কম্পিউটারের মগজ অভিপ্রেত ফলাফল বা সিদ্ধান্ত জানাতে ভুল করে না। যে বিশেষ ভাষায় কম্পিউটারকে তথ্য এবং নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে বলা হয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। তথ্য এবং প্রোগ্রামের পরিবর্তন ঘটিয়ে একই কম্পিউটার দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করানো সম্ভব। কম্পিউটার হল আধুনিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। জটিল গাণিতিক সমস্যা বা হিসাবকে কোনো ভুলভ্রান্তি ছাড়াই কম্পিউটার চোখের নিমেষে তার সমাধান করে দেয়। নির্দেশ মাত্রই এই যন্ত্র বিভিন্ন তথ্যকে সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে তার যুক্তিনির্ভর সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিশাল কাজের দায়িত্ব অনায়াসেই বহন করে। কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মীবৃন্দের মাসিক বেতন, সামগ্রিক আয়ব্যয়, লাভক্ষতির হিসাব নিকাশ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপ্রণালী কম্পিউটারের সাহায্যে নির্ধারিত হয়। বিমান এবং রেলের আসন সংরক্ষণ কম্পিউটারের মাধ্যমে সহজেই সম্পন্ন হয়। বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞান কম্পিউটারের কাছে বিশেষভাবে ঋণী। টেলি যোগাযোগ, ডাক ও পরিবহন বিভাগ, জীবনবীমা কর্পোরেশন প্রভৃতি সংস্থায় নিয়মিতভাবে কম্পিউটারের ব্যবহার হয়ে চলেছে। অপরাধীর সমস্ত মামলার পুরোনো নথিপত্রের হদিশ দেওয়া, পাত্রপাত্রী নির্বাচন এবং বিজ্ঞাপন প্রচারের কাছে কম্পিউটারের ভূমিকা অপরিসীম।

কম্পিউটারের উপকারিতা- ইলেকট্রনিকস্ শিল্পের দ্রুত উন্নতির কারণে কম্পিউটার এখন অনেক সহজলভ্য বিজ্ঞান গবেষণাগার থেকে এই যন্ত্রটি এখন সমাজজীবনের নানাক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। বর্তমানে সালে সারা ভারতে কম্পিউটারের সংখ্যা কয়েক লক্ষে দাঁড়িয়েছে। এর বিভিন্ন যন্ত্রাংশ এখন এদেশেই তৈরি হচ্ছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটার- শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটারের অবদান অপরিসীম। পাশ্চাত্য দেশগুলিতে কম্পিউটার শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বা গবেষণার কাজে কম্পিউটার বিশেষভাবে উপযোগী। কম্পিউটারের মাধ্যমে মেধার তারতম্য নিরূপণ করা হয়। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর প্রগতিপত্র তৈরি করতে এবং পরীক্ষার্থীদের দ্রুত ও নির্ভুল ফল প্রকাশের জন্য কম্পিউটারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি ভারতবর্ষে বিভিন্ন স্কুল কলেজে ছাত্রদের কম্পিউটার সম্বন্ধে আগ্রহশীল করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। অবশ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার প্রাধান্য সম্বন্ধে বাদানুবাদেরও সৃষ্টি হয়েছে। কেননা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নানা অসুবিধা এবং শিক্ষার উপকরণের অপ্রতুলতার কথা চিন্তা না করে রাতারাতি কম্পিউটার প্রবর্তন অনেক শিক্ষাবিদ এবং বুদ্ধিজীবীর কাছে বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। নিরক্ষরতা দূরীকরণ যখন প্রধান সমস্যা তখন সেদিকে দৃষ্টিপাত করাই সব থেকে বেশি প্রয়োজন। বহু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার সম্বন্ধে হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। কম্পিউটারের ব্যবহার ব্যয়বহুল হলেও চাকুরির নিশ্চিত সুযোগ জেনেই, বিপুল অর্থের বিনিময়ে অনেকে কম্পিউটার ট্রেনিং নিচ্ছেন। ফলে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারগুলির ব্যবসা বেশ ফুলেফেঁপে উঠছে।

বেকার সমস্যার জনক- একথাও অনস্বীকার্য যে, কম্পিউটারের উপযোগিতা সম্বন্ধে দ্বিমত না থাকলেও এদেশে কম্পিউটার বহু বেকার যুবকের মুখের অন্ন ছিনিয়ে নিয়েছে এবং নিচ্ছে। কম্পিউটার প্রবর্তনের ফলে বেসরকারি শিল্প এবং বাণিজ্যিক সংস্থায় কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কমে গেছে। সরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক, জীবনবীমা কর্পোরেশন সর্বত্রই ‘নো ভ্যাকেন্সি’। রেল বিভাগে কর্মীসংখ্যা বাইশ লক্ষ থেকে কমে চোদ্দ লক্ষে নেমেছে। ভবিষ্যতে আরও কমার সম্ভাবনা। শ্রমিক উৎখাত অটোমেশনের প্রভাবে কোনো কর্মী অবসর গ্রহণ করলে তাঁর জায়গায় এখন আর অন্য কর্মী নিয়োগ করা হয় না। শিল্পসংস্থাও অবসরকারলীন বয়সে পৌঁছোবার আগেই কর্মীদের সোনালী করমদনের লোভ দেখিয়ে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

উপসংহার- আধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যাকে কোনো উন্নয়নশীল দেশ উপেক্ষা করতে পারে না। বাস্তব অবস্থাকে পর্যালোচনা করে কম্পিউটারকে নির্বাসিত করলে কোনো স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো যাবে না। বরং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ কোথায় এবং কিভাবে হতে পারে এই ‘মহাজ্যোতিষী’কে জিজ্ঞাসা করা হোক। হয়তো তাঁর উত্তরে মধ্য দিয়ে বেকার সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিত মিলবে।

প্রশ্ন ১৩। দলে আলোচনা করে লেখো।

(ক) দূরদর্শনের উপকারিতা ও অপকারিতা।

(খ) বর্তমানে সমাজে সিনেমার প্রভাব।

(গ) মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা।

(ক) হিতকর প্রভাব- অন্যান্য সামাজিক মানুষের সঙ্গে ছাত্রজীবনেও দূরদর্শন অপরিহার্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে। আজকের ছাত্রসমাজ ভীষণ গতিশীল। কর্মজীবনে প্রবেশের উপযোগী হয়ে ওঠার জন্য ‘ইঁদুর দৌড়ে’ ছাত্রেরা ক্লান্ত হয়ে ওঠে। সেই সময় দূরদর্শন দু-দণ্ড বিশ্রামের, আরাম উপভোগের নিশ্চয়তা দান করে। খেলাধূলার প্রতি ছাত্রসমাজের আকর্ষণ চিরকালের। অথচ সকল ছাত্রের পক্ষে ফেডারেশন কাপের অথবা আই. এফ. এ. লীগের প্রতিযোগিতামূলক খেলা দেখার সুযোগ হয় না। এর কারণ হল দূরত্ব, টিকিট সংগ্রহের সমস্যা এবং বড় শহরে বসবাসের সুযোগের অভাব। দূরদর্শন সুদূর গ্রামগঞ্জের ছাত্রসমাজেও একই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক খেলা দেখার সুযোগ এনে দিয়েছে। অলিম্পিক, বিশ্বকাপ ফুটবল অথবা বিশ্বকাপ ক্রিকেট, রিলায়েন্স, এশিয়াড প্রভৃতির ক্রীড়াচিত্র দেখার সুযোগ ছাত্রসমাজের পক্ষে অকল্পনীয় ছিল। দূরদর্শনের কল্যাণে ছাত্রসমাজ সেই সুযোগ পেয়েছে। অত্যন্ত উৎসাহী দু-একজন ছাত্র অবশ্যই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের সেই ক্রীড়া কৌশল স্কুল-কলেজ স্তরে সীমাবদ্ধভাবে প্রয়োগ করতে চেষ্টা করে। বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস এবং পাঠ্যসূচীর অন্তর্গত অন্যান্য বহু শিক্ষাছাত্রেরা বইয়ের পাতায় বা শিক্ষকের শিক্ষা-দানের মাধ্যমে শিখে থাকে। দূরদর্শনের প্রভাবে পাঠ্যসূচীর অন্তর্গত বহু বিষয়ের চিত্ররূপ ও ব্যাখ্যায় ছাত্রদের কাছে শিক্ষণীয় বিষয়গুলি অতি বেশি সজীব হয়ে ওঠে। দূরদর্শনের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান অথবা স্টার টি.ভি.র ‘ডিস্কটিভি চ্যানেল’ ছাত্রসমাজের কাছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নব-দিগন্ত উন্মোচিত করে। সাহিত্যিক সংগীতবার্সার, নৃত্যানুষ্ঠান, নাটক, লোকসংগীত ও লোকনৃত্যানুষ্ঠান ছাত্রসমাজের সঙ্গে চেতনাকে সমৃদ্ধ করে। দূরদর্শনের মাধ্যমে ছাত্রেরা অনুভব করে ভারতের বিবিধ বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের সুর। ফলে ছাত্রদের মনে জাতীয় সংহতির এক বাস্তব রূপরেখা গড়ে ওঠে।

অহিতকর প্রভাব- অহিতকর সুখকর বস্তুও মাত্রাতিরিক্ত হলে শরীরিক অথবা মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। ছাত্রসমাজের বেশি অংশের মধ্যে দূরদর্শনের পর্দার প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি দেখা যাওয়ার কারণে ছাত্রসমাজের চিন্তাশক্তি অনুশীলনের সুযোগ কমে যাচ্ছে।

খেলাধুলার ক্ষেত্রেও অহিতকর প্রভাব অনুভূত হচ্ছে। যেখানে খেলার মাঠ আছে সেখানে আর আগের মতো ছাত্রেরা খেলাধূলা অনুশীলনের জন্য মাঠে আসে না। সেই সময় তারা দূরদর্শনের পর্দায় খেলাধূলার চিত্ররূপ দেখে। নিজে খেলা এবং না খেলে নিছক খেলা দেখা এক নয়। ছাত্রসমাজের শরীর ও মনের স্বাস্থ্যের পক্ষে নিজে খেলাই শ্রেয় একথা সর্বজনগ্রাহ্য। ‘দূরদর্শন’-এ অতি আসক্তি ছাত্রসমাজের চোখের ক্ষতি করে, পঠন-পাঠনের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে।

ভোগবাদী দর্শন- দূরদর্শনের বিভিন্ন চ্যানেল বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞানের বিবিধ বিষয়ের সঙ্গে দর্শকদের পরিচিত করা অথবা দর্শকদের সাংস্কৃতিক মানরক্ষা করা সেই সব চ্যানেলের উদ্দেশ্য নয়। পণ্যদ্রব্যের বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্য সামগ্রীর বাজার গড়ে তোলাই সেই সব চ্যানেলের মুখ্য উদ্দেশ্য। এমন কি সরকার নিয়ন্ত্রিত দূরদর্শনেও বিজ্ঞাপনের বাহুল্য লক্ষ্য করার মতো। বিজ্ঞাপনের জন্য। সব চিত্রের প্রদর্শন করা হয় যা সুস্থ সংস্কৃতির পরিপন্থী। ভারতের মতো দরিদ্র দেশে অধিক পরিবারেই দূরদর্শনে প্রদর্শিত ভোগ্য সামগ্রী ক্রয় করার মতো ক্ষমতা নেই। সেই সব পরিবার কিশোর-কিশোরী ছাত্র-ছাত্রীদের মনে আয়ত্তাধীন নয় এমন সব ভোগ্যপণ্যের প্রতি তীব্র আসক্তি গড়ে তোলার জন্য দূরদর্শনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই আয়ত্তাতীত আসক্তি অনেক ছাত্রকে উৎকেন্দ্রিক কর্মের সঙ্গে জড়িত করে। দূরদর্শনের প্রভাবে ছাত্রসমাজের মধ্যে ভোগবাদী জীবন-দর্শনের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ভারতীয় ধর্ম ও দর্শনে ভোগবাদী জীবন অনুমোদিত নয়। শুধু তাই নয়, ভারতের মতো দরিদ্র দেশে ভোগবাদী জীবন দর্শন সর্ববিধ অন্তরায়।

উপসংহার- দূরদর্শনকে যথার্থ লোকশিক্ষার বাহন করে গড়ে তোলা উচিত। দূরদর্শনের জন্য ছাত্রসমাজের মনে জাতীয় সংহতি এবং সাংস্কৃতিক চেতনার সমুন্নতির অবকাশ দূরদর্শনে সুস্থ সংস্কৃতির পরিপন্থী সর্ববিধ চলচ্চিত্র বা সিরিয়ালে। নিষিদ্ধ করা দরকার। দূরদর্শনকে বাণিজ্যিক সংস্থাসমূহ থেকে মুক্ত করা দরকার। এতে শুধু ছাত্রসমাজের নয়, সমগ্র সমাজেরই মঙ্গল হবে।

(খ) বর্তমান সমাজে সিনেমার প্রভাব।

চলচ্চিত্রের ইতিবৃত্ত- চলচ্চিত্র বা সিনেমা আধুনিক বিজ্ঞানের একটি অত্যাশ্চর্য দান। এটি একাধারে মানুষকে জ্ঞান ও আনন্দদানের বাহন হিসেবে কাজ করে। একশ বছর পূর্বে কেউ এ জিনিস কল্পনাই করতে পারত না। কিন্তু আমেরিকার বিখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস এডিসনের বিস্ময়কর প্রতিভা এই অসম্ভব কল্পনাকে একদিন সম্ভব করে তুলল। বিজ্ঞানের ইতিহাসে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে একটি স্মরণীয় বছর। এডিসন চলন্ত বস্তুর ছবি তোলার একটি যন্ত্র আবিষ্কার করলেন। এডিসনের আবিষ্কার বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করল।

এর পরে গ্রেট ব্রিটেনে ছবিকে পর্দায় রূপায়িত করবার যন্ত্র আবিষ্কৃত হল। মানুষের কাছে এটা এক মহাবিপ্লবের ঘটনা। ছায়াছবি কায়ার রূপ ধরে মানুষকে হাসি-কান্নার খোরাক জোগাতে লাগল। এর পর বহু চিন্তা ও শ্রমের ফলে আমরা সবাক চলচ্চিত্রকে লাভ করেছি। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী হিউজিন শেষে গবেষণা করে দেখালেন যে, দৃশ্যমান জিনিসের যেমন ফটোগ্রাফি নেওয়া যায় তেমনি শ্রয়মান শব্দেরও ফটোগ্রাফি করা সম্ভব। এই গবেষণার সূত্র ধরে বিজ্ঞানীদের চেষ্টায় সাউণ্ড ফটোগ্রাফের নিখুঁত পন্থা উদ্ভাবিত হল। এর ফলে চিত্রের সঙ্গে কথা যুক্ত হয়ে পূর্বেকার মূক-চিত্র কথা ও গানে সবাক হয়ে উঠল।

অজানাকে জানবার আকাঙ্ক্ষা- মানুষ কেবলমাত্র নিজের গতানুগতিক জীবনযাত্রা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না। তার কৌতূহল অসীম। সে অজানা দেশের অচেনার আনন্দলাভে উন্মুখ হয়ে ভ্রমণ করে। সীমাহীন সাগর, খরস্রোতা নদ-নদী, সুউচ্চ পর্বত, শ্যামল বনানী নিরন্তর তাকে হাতছানি দেয়। আদিম মানব-অধ্যুষিত গভীর বন-বনানী, শুষ্ক মরুস্থল, সবুজ দ্বীপের আহ্বান অহরহ তাকে মাতাল করে তোলে। নৃত্য-গীতের ছন্দে-লয়ে সে সাময়িক দুঃখ ভুলে থাকতে চায়। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় দেখে শিল্পের ক্ষুধা মেটাবার আকাঙ্ক্ষা তার চিরন্তন। রহস্য-রোমাঞ্চের আহ্বানে সে ডিটেকটিভ গল্প কিংবা ভয়াল ভয়ঙ্কর বিজ্ঞান-ভিত্তিক উপন্যাসের চিত্ররূপ দেখে তার আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করতে পারে। তবে কেবল অজানাকে জানা, কৌতূহল চরিতার্থ করা বা আনন্দ দান করার জন্যেই আজ চলচ্চিত্রকাররা তাঁদের ছবি তৈরি করেন না। তাঁদের ছবির মাধ্যমে তাঁরা স্বদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা জানান, তুলে ধরেন সেখানকার অত্যাচার, নিপীড়ন বঞ্চনার কাহিনী।

জনমত গঠন ও সমাজ জীবনে প্রভাব- আজ প্রেক্ষাগৃহ হয়ে উঠেছে জ্ঞানবিজ্ঞান ও শিক্ষাসংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। এটি যেন কৈশোরের ক্রীড়াভূমি, যৌবনের উপবন, বার্ধক্যের বারাণসী। চলচ্চিত্রকে মানুষ একান্ত আপনার করে নেওয়ায় জনমত গঠন ও শিক্ষা বিস্তারে তার প্রভাব এত বেশি। চলচ্চিত্র দর্শকদের এমনভাবে প্রভাবিত করে যে ছবিতে সে যা দেখে সেজন্য সত্যি বলে মনে করে। সেজন্য চলচ্চিত্র অতি সহজেই জনমত গঠন করতে পারে। চলচ্চিত্রের ন্যায় বহুল প্রচার অন্য কিছুতে নেই বলে জনজীবনে এর প্রভাব এত বেশি।

আনন্দবিধান- খাদ্য যেমন দেহের ক্ষুধা মিটিয়ে দৈহিক স্বাস্থ্য রক্ষা করে, আনন্দও তেমনি মনের ক্ষুধা মিটিয়ে মনের স্বাচ্ছন্দ্য বিধান করে। দেহ-মন একসঙ্গে সুস্থ থাকলে তবেই মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপনে সক্ষম হয়। চলচ্চিত্র আজ জনসাধারণের আনন্দ আহরণের সহজ উৎসে পরিণত। নিরক্ষর বা অল্পশিক্ষিত জনতা চলচ্চিত্রে পরিচিত গ্রন্থগুলির চিত্ররূপ দেখে একাধারে আনন্দ ও শিক্ষালাভ করতে পারেন। পরিচিত গ্রন্থগুলির চিত্ররূপ অনেক দর্শককে মূল গ্রন্থ পাঠে অনুপ্রাণিত করে। এতে সাহিত্যের প্রচার হয়।

শিক্ষা প্রসারে চলচ্চিত্র- প্রধানত আনন্দের বাহন হলেও এর মধ্যে শিক্ষারও নানা দিক আছে। পুঁথিগত শিক্ষা অপেক্ষা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে শিক্ষাদান অধিকতর ফলপ্রসূ হয়। চলচ্চিত্রকে জনশিক্ষার বাহন করতে হলে প্রচুর তথ্যচিত্র নির্মাণ করা প্রয়োজন। দেশের ও বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জীবনধারা, বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিষয়ে সহজ ব্যাখ্যামূলক চিত্র, ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহের তথ্যচিত্র বাধ্যতামূলকভাবে দেখালে ছাত্র ও জনসাধারণ সকলেই উপকৃত হন। কিশোর-কিশোরীদের শিল্প-বাণিজ্যে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন শিল্পসম্বন্ধীয় চিত্র প্রদর্শিত হলে, ওইসব বিষয়ে তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। তা ছাড়া মাঝে মাঝে বিদ্যালয়গুলিতে বিখ্যাত গ্রন্থ, মহৎ জীবনী এবং বিজ্ঞান-বিষয়ক তথ্যাদির চিত্ররূপও কিশোর মনের সুষ্ঠু বিকাশের সাহায্য করবে। ইউরোপ, আমেরিকা, রাশিয়া ও জার্মানী প্রভৃতি দেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক তথা সর্ববিধ শিক্ষার ক্ষেত্রে চলচ্চিত্রকে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহৃত করা হচ্ছে। ভারতেও চলচ্চিত্রকে শিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে।

অপকারিতা- চলচ্চিত্রের একটা খারাপ দিকও আছে। চলচ্চিত্রে প্রযোজনা ব্যায়সাপেক্ষ ফলে অনেক সময় ব্যবসায়ের সাফল্যের কথা চিন্তা করে ছবি তুলতে হয়। এতে শিল্পের মান নষ্ট হয়। তবুও চলচ্চিত্র মানব-সভ্যতাকে বিভিন্নভাবে সেবা করছে। পৃথিবীর বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা, যুদ্ধবিগ্রহের কাহিনি, দুর্গম স্থানের দৃশ্য আজ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রচারিত হয়। যে সমস্ত মনীষীদের আমরা দেখি না বা দেখবার সম্ভাবনা নেই, নামমাত্র অর্থব্যয়ে আমরা তাঁদের অবিকল মূর্তি দেখতে পাই, তাঁদের কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। বিজ্ঞানের এই অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদান ধীরে ধীরে সমস্ত মানব-সমাজকে জ্ঞান ও আনন্দের জোগান দিতে পারবে। এ কথা চিন্তা করেই বিশ্বব্যাপী শক্তিশালী এই মাধ্যমটির যথাযোগ্য ব্যবহারের প্রতি নজর দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিশ্বের সমস্ত মানুষকে এভাবে প্রভাবিত করা একমাত্র চলচ্চিত্রের পক্ষেই সম্ভব। তাই বিশ্ববিশ্রুত চলচ্চিত্রকারদের সমাজজীবনের প্রতি আলাদা মমত্ব স্থাপন করতে হবে এবং তার বাস্তবায়নে যথাযথ সংযম পালনও এই শিল্পের অন্যতম শর্ত।

(গ) মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা-

বিজ্ঞান কত উন্নত এবং বিজ্ঞানের কাছে আজ মানবজীবন কত অসহায়, সেটি মোবাইল ফোন অক্ষরে অক্ষরে প্রমাণ করে।

উপকারিতা – (ক) মোবাইল ফোনের দৌলতে আজ বিশ্ব হাতের মুঠোয়।

(খ) প্রয়োজনীয় খবরাখবর নিমেষে পৌঁছানোর কৌশল এখন মানুষের করায়ত্ত হয়েছে মোবাইল ফোনের দৌলতে।

(গ) ভ্রাম্যমান ফোন হওয়ার কারণে এটা সঙ্গে করে ঘোরা যায়।

(ঘ) মোবাইল ফোন ব্যবহার, নিম্ন খরচের আওতায় বলে, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও এটি ব্যবহার করতে পারে।

(ঙ) মোবাইল ফোনের ব্যবহার তৃণমূল স্তরেও ভীষণভাবে জনপ্রিয় বলে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর উপর তার প্রভাব পড়ে।

অপকারিতা- (ক) মোবাইল ফোনের অপব্যবহার আজ সমাজে ভীষণভাবে প্রকট।

(খ) টিনএজার ছেলেমেয়েদের যথেচ্ছ আকারে মোবাইল ফোনের ব্যবহার, তাদের মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হচ্ছে।

(গ) পড়াশুনার আলোচনার থেকে রোমান্টিক আলোচন’ই টিন-এজারদের কাছে মোবাইলের মাধ্যমে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। এই প্রবণতা আসলে সমাজেরই অবক্ষয়।

(ঘ) ইন্টার-নেটের মাধ্যমে অশ্লীল ছবি বা VDO, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের শুধু ক্ষতিই করছে না, এর ফলে বাড়ছে ক্রাইম প্রবণতা।

প্রশ্ন ১৪। নীচের বাক্যগুলো পড়ো এবং বুঝে বলো তুমি কী করবে?

(ক) ঘর থেকে বেরোবার সময় কেউ হাঁচি দিলে।

(খ) একটি বেড়াল তোমার রাস্তা কাটলে।

(গ) ঘর থেকে বেরোবার সময় কেউ পেছন থেকে ডাকলে।

উত্তরঃ (ক) ঘর থেকে বেরোবার সময় কেউ হাঁচি দিলে পিছন ফিরে না তাকিয়ে কিংবা ঘরে ফিরে না এসে কুসংস্কারমুক্ত মনে গন্তব্যস্থলের দিকে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

(খ) একটি বেড়াল রাস্তা কাটলে দাঁড়িয়ে না পড়ে অথবা বাড়িতে ফিরে না এসে কুসংস্কারকে মনে ঠাঁই না দিয়ে গন্তব্যস্থলের দিকে যাওয়া কর্তব্য।

(গ) ঘর থেকে বেরোবার সময় কেউ পেছন থেকে ডাকলে অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দেওয়া প্রয়োজন। তারপর নিজের কাজে যাওয়া প্রয়োজন। কুসংস্কার যে কোনো জাতিকে পেছনে ঠেলে দেয়। সেইজন্য নিজেও কুসংস্কার মুক্ত হওয়া প্রয়োজন; অপরকেও কুসংস্কার মুক্ত করা প্রয়োজন।

প্রশ্ন ১৫। ‘বিজ্ঞান বনাম কু-সংস্কার’ বিষয়টি নিয়ে তর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। (শিক্ষক/শিক্ষয়িত্ৰী সপক্ষে অথবা বিপক্ষে যুক্তি দর্শাতে সাহায্য করবেন।)

উত্তরঃ দলগতভাবে চেষ্টা করো।

ঘ – প্রকল্প

প্রশ্ন ১৬। পাঁচজন বিজ্ঞানী, তাঁদের আবিষ্কৃত সামগ্রী এবং আবিষ্কারের সাল তালিকাভুক্ত করো।

উত্তরঃ 

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top