Class 11 Bengali Chapter 11 মহেশ

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Bengali Chapter 11 মহেশ Provided by The Roy Library is one of the best content available on the internet as well as many other offline books. Class 11 Bengali Chapter 11 মহেশ Question Answer is made for AHSEC Board students. Class 11 Bengali Chapter 11 মহেশ We ensure that You can completely trust this content. If you learn PDF from then you can Scroll Down and buy PDF text book Solutions I hope You Can learn Better Knowledge.

Class 11 Bengali Chapter 11 মহেশ

Here we will provide you complete Bengali Medium AHSEC Class 11 বাংলা ( MIL ) Suggestion, AHSEC Class 11 Bengali (MIL) Question Answer, AHSEC Class 11 Bengali (MIL) Notes, Class 11 Bengali (MIL) Suggestion, AHSEC Class 11 Bengali (MIL) Solution, একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর, একাদশ শ্রেণীর বাংলা সিলেবাস, একাদশ শ্রেণির বাংলা, একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন, একাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন, একাদশ শ্রেণির বাংলা সমাধান, একাদশ শ্রেণির বাংলা (MIL) প্রশ্ন উত্তর, একাদশ শ্রেণির বাংলা (MIL) মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক, একাদশ শ্রেণির বাংলা (MIL) বই প্রশ্ন উত্তর, একাদশ শ্রেণির বাংলা (MIL) PDF.

মহেশ

প্রশ্নোত্তরঃ

১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্ন :

(ক) ‘মহেশ’ গল্পটির লেখক কে?

উত্তরঃ মহেশ গল্পটির লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।

(খ) গফুরের গ্রামের নাম কী?

উত্তরঃ গফুরের গ্রামের নাম কাশীপুর।

(গ) কাশীপুর গ্রামের জমিদারের নাম কী ছিল?

উত্তরঃ কাশীপুর গ্রামের জমিদারের নাম তর্করত্ন।

(ঘ) ‘সব পেটয়া নমঃ’ বলতে এখানে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ সব খেয়ে ফেলা হয়েছে বোঝানো হয়েছে।

(ঙ) “পাঁচ সাতদিন পরে একদিন পীড়িত গফুর চিন্তিত মুখে দাওয়ায় বসিয়াছিল” – গফুরের চিন্তার কারণ কী ছিল?

উত্তরঃ পাঁচ সাতদিন পরে একদিন পীড়িত গফুর চিন্তিত মুখে দাওয়াল বসেছিল কারণ মহেশ গতকাল থেকে ঘরে ফেরে নাই।

(চ) গফুরের মেয়ের নাম কী?

উত্তরঃ গফুরের মেয়ের নাম আমিনা।

২। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :

(ক) “মহেশ তুই আমার ছেলে, তুই আমাদের আট সন প্রতিপালন করে বুড়ো হয়েছিস।” —উক্তিটি কার ? মহেশ কীভাবে তাদের আটসন প্রতিপালন করেছে?

উত্তরঃ উক্তিটি গফুরের।

মহেশ গফুরের প্রতিপালিত ষাড়। মহেশ গল্পে চিত্রিত বাংলার নিপীড়িত ও অত্যাচারিত কৃষক গফুর গভীর দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে গিয়ে সেই বুড়ো বলদটিকে পেটপুরে খেতে দিতে পারত না, এই আক্ষেপে সে মনে মনে দ্বগ্ধ হয়। কিন্তু গফুরের ভালোবাসার কোনো খামতি নেই। কারণ এই মহেশই এত বছর গফুরকে প্রতিপালন করে এসেছে। মহেশকে দিয়েই ভাগের জমি চাষ করে উপার্জন করেছে। তাই গফুর দারিদ্র্যের দিনে এসে মহেশকে বলেছে সে তারই ছেলে, গফুরদের আটসন প্রতিপালন করেছে মহেশ।

(খ) “পিতা ও কন্যার মাঝখানে এই যে একটুখানি ছলনার অভিনয় হইয়া গেল” – এখানে পিতা ও কন্যা বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? ছলনাটা কী?

উত্তরঃ এখানে পিতা বলতে গফুর এবং কন্যা বলতে আমিনাকে বোঝানো হয়েছে।

মহেশকে কী খাওয়াবে তা স্থির করতে না পেরে জ্বরের আছিলা দেখিয়ে নিজের মুখের ভাত আমিনাকে মহেশের মুখে তুলে দিতে বলে গফুর।

বয়স অল্প হলেও বাবার ছলনার অভিনয় আমিনা বোঝে। তাই বলা হয়েছে যে, পিতা ও কন্যার মাঝে একটি ছলনার অভিনয় হইয়া গেল।

(গ) “প্রজার মুখের এত বড় স্পর্ধা জমিদার হইয়া শিবচরণ বাবু কোনমতেই সহ্য করিতে পারে নাই।” — প্রজাটি কে? তার কোন স্পর্ধার কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তরঃ প্রজাটি হলেন গফুর।

জৈষ্ঠ্য মাসের আগুন ঝরা দুপুরে জন মজুরের কাজের সন্ধানে বৃথাই ঘুরে বেড়িয়ে দুর্বল ও শ্রান্ত দেহে বাড়ি ফিরে আসার পর মেয়েকে অহেতুক গালাগালি ও মারধোর করে গফুর যখন শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে বিপর্যস্ত, তখনই জমিদারের পিয়াদা তাকে ধরে নিয়ে যেতে আসে। স্বাভাবিক ভাবেই আত্মবিস্মৃত গফুর ‘মহারাণীর রাজত্বে কেউ কারো গোলাম নয়।’ এই বলে স্পর্ধা প্রকাশ করলে পেয়াদা তাকে জোর করে জমিদারের সদরে নিয়ে যায়। এহ ঔদ্ধত্য ও স্পর্ধার জন্য সেখানে অশেষ লাঞ্ছনা এবং অমানুষিক শারীরিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছিল তাকে মারের চোটে তখন তার চোখ, মুখ ফুলে ফুলে উঠেছিল।

(ঘ) “কিন্তু দাও এবার আমাকে কহেন দুই খড়’ – কে কার প্রতি এই উক্তি করেছে? অনুরোধটি বিবৃত করো?

উত্তরঃ গফুর পুরোহিত তর্করত্নের প্রতি এই উক্তি করেছে।

তর্করত্ন যখন এসে গফুরকে জানান যে মহেশকে না খাইয়ে মেরে ফেললে হিন্দুর গ্রামে গোহত্যার অপরাধে তাকে গ্রাম ছাড়া করবে। তখন গফুর তারে দারিদ্র্যতার অবস্থা বিস্তারিত বর্ণনা করলেও চতুর তর্করত্নের মনে কোনো সহানুভূতি জাগে না। তখন গফুর তর্করত্নকে অনুরোধ করে যে তিনি যদি কাহন দুই খড় দেন তাহলে গফুর তার গরুটাকে দুদিন পেটপুরে খেতে দিতে পারে। তর্করত্নের চারচারটি গাদা আছে তার থেকে অল্প কিছু গফুরকে সাহায্য করলে গফুর উপকৃত হয়।

(ঙ) প্রতিবেশী কেহ তাহাকে এত বড় শাস্তি দিতে পারে এ ভয় তাহার নাই।’ — কার কীরূপ শাস্তির কথা এখানে বলা হয়েছে?

উত্তরঃ মহেশকে যখন পাওয়া যাচ্ছিল না তখন গফুরের মেয়ে এসে জানিয়েছে যে মানিক ঘোষেরা মহেশকে থানায় দিয়েছে। তারা আমিনাকে জানিয়েছে মহেশকে দরিয়াপুরের খোঁয়াড়ে খুঁজতে। কারণ মহেশ ঘোষেদের বাগানে ঢুকে গাছপালা নষ্ট করেছিল। কথাটি শুনে গফুর স্তব্ধ হয়েছিল, তার মনে মহেশ সম্বন্ধে এত বড় শাস্তির আশঙ্কা হয়নি। কারণ সে নিরীহ এবং গরীব। তাই প্রতিবেশীরা তাকে এত বড় শাস্তি দিতে পারে না। তাছাড়া মানিক ঘোষ গো-ব্রাহ্মণের ভক্ত। সুতরাং এখানে মহেশের এই শাস্তির কথাই বলা হয়েছে।

S.L. No.সূচীপত্র
অধ্যায় -1বৈষ্ণবী মায়া
অধ্যায় -2কালকেতুর ভোজন
অধ্যায় -3বর্ষায় লোকের অবস্থা
অধ্যায় -4বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি
অধ্যায় -5বছিরদ্দি মাছ ধরিতে যায়
অধ্যায় -6মায়াতরু
অধ্যায় -7ফুল ফুটুক না ফুটুক
অধ্যায় -8কেউ কথা রাখেনি
অধ্যায় -9ইচ্ছাপূরণ
অধ্যায় -10লজ্জাবতী
অধ্যায় -11মহেশ
অধ্যায় -12আহার ও পানীয় ( প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য )
অধ্যায় -13প্রাচীন কামরূপের শাসননীতি
অধ্যায় -14সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি
অধ্যায় -15তাসের ঘর
অধ্যায় -16আদাব
অধ্যায় -17ভাড়াটে চাই
অধ্যায় -18ব্যাকরণ
অধ্যায় -19রচনা

৩। দীর্ঘ উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ

(ক) ‘যেমন চাষা তার তেমনি বলদ। খড় জোটে না, চাল কলা খাওয়া চাই” – বক্তা কে? প্রসঙ্গটি বিবৃত করো।

উত্তরঃ বক্তা মহেশ গল্পের পুরোহিত তর্করত্ন।

তর্করত্ন দুপুরবেলা জমিদারের ছোট ছেলের জন্মতিথি পূজা সেরে ফলমূল, ভিজে চালের পুঁটুলি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। গফুরের চাষের বলদ মহেশকে একটা পিটালি গাছের তলায় বাঁধা দেখে গফুরের উপর তার রাগ হয়। তাই গফুরের ঘরে ঢুকে গফুরকে সতর্কবাণী শুনাতে এসেছেন। গফুর তার দারিদ্র্যতার শেষ চিহ্নটুকু নিয়ে তার অতি প্রিয় মহেশের আহারের যোগান ধরার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। অন্যদিকে তর্করত্ন এসে গফুরকে সাবধান করছেন যে মহেশ না খেয়ে মারা গেলে গো-হত্যার অপরাধে তাকে গ্রামছাড়া হতে হবে। হিন্দুর গ্রামে গরু ভগবানের সমান। তখন গফুর তার সমস্ত চেষ্টার ব্যর্থতার কাহিনি তর্করত্নকে সোনায় কিন্তু এতে তর্করত্নের কোনো সমবেদনা জাগে না। সে উল্টো গফুরকেই দায়ী করে। গফুর তার মহেশকে পেটপুরে খাবার দিতে অসমর্থ তাই সে তর্করত্নের কাছেও কহেন দুই খড় ধার চায় কিন্তু তর্করত্ন গফুরকে সাহায্য করা তো দুরের কথা গফুর ধার চেয়েছে বলে উপহাস করেছে। এরপর ক্ষুধার্ত মহেশ সেই পুটুলির দিকে শিং নেড়ে এগিয়ে এলে তর্করত্ন ভয় পেয়ে পিছিয়ে যান। গফুর তর্করত্নকে যখন বলে, ‘গন্ধ পেয়েছে একমুঠো খেতে চায়।’ তখন তর্করত্ন এ মন্তব্য করেছিলেন।

(খ) “তোকে দিলে না এ মুঠো? ওদের অনেক আছে, তবু দেয় না।” — কে কাকে একথা বলেছে? উক্তিটির অর্থ পরিস্ফুট করো?

উত্তরঃ গফুর তার চাষের বলদ মহেশকে বলেছে।

গ্রামের পুরোহিত তর্করত্ন মশাই জমিদারের ছোট ছেলের জন্মতিথির পূজো সেরে বাড়ি ফেরার পথে গফুরের চাষের বলদ মহেশকে একটি পিটালি গাছের তলায় বাঁধা দেখে গফুরের ওপর তাঁর রাগ হয়েছিল। সেখানেই গফুরের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তাহয়। তর্করত্নের হাতে ফলমূল ও ভিজে চালের পুটুলি থাকায় তার গন্ধে মহেশ তার দিকে খাবার জন্য এগিয়ে যায়। তর্করত্ন এখানে দাঁড়িয়ে অনেক শুকনো উপদেশ দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু দয়া করে একমুঠো চালও খররাতি করেননি, তাই গফুর মহেশকে সান্ত্বনা দিয়ে এই কথাগুলি বলেছিল।

(গ) “ওসব থাক্ মা, ওতে আমার মহেশের প্রাচিত্তির হবে।” এখানে মা বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? ‘ওসব থাক’ বলতে কী সবের কথা বলা হয়েছে? “মহেশের প্রাচিত্তির” বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ এখানে মা বলতে গফুরের মেয়ে আমিনাকে বোঝানো হয়েছে।

‘ওসব থাক’ বলতে বোঝানো হয়েছে, যখন মহেশের মৃত্যুর পর গফুর ফুলবেড়ের চটকলে কাজ করতে যাওয়ার জন্য অনেক রাতে আমিনাকে ডেকে তোলে। তার বাবা অনেক দুঃখে-কষ্টে কল-কারখানার কাজ করতে রাজি হয়নি, কারণ সেখানে মেয়েদের ইজ্জত থাকে না আক্র থাকে না। অথচ আজ সেই চটকলে কাজ করতে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আমিনা আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। তারপর আমিনা জল খাওয়ার ঘটি ও পিতার ভাত খাওয়ার পিতলের থালাটি সঙ্গেবনিতে চেয়েছিল, তখনই গফুর আলোচ্য উক্তিটি করে বলেছে ‘ওসব থাক’ অর্থাৎ পিতলের ঘটিটি ও থালাটির কথা বলেছে।

হিন্দু প্রধান কাশীপুর গ্রামের সমাজ বার্তাদের বিচারে গো হত্যা মহাপাপ এবং এই পাপের জন্য গফুরকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। একথা মেনে নিয়ে মহেশের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরেই মেয়ে আমিনাকে সঙ্গে নিয়ে ফুল বেড়ের চটকলে কাজ করার জন্য গভীর রাত্রিতে গ্রাম ছেড়ে যাওয়ার সময় মহেশেরে মৃত্যু ঘটানোর প্রায়শ্চিত্তের জন্য তাদের সামান্য সম্বল ঘটি ও থালাটি ফেলে রেখে যায় গফুর। এক্ষেত্রে অশিক্ষিত চাষী গফুরের বলা ‘মহেশের প্রাচিত্তির’ কথাটির অর্থ মহেশের মৃত্যু ঘটানোর মতো মহাপাপ করার অপরাধের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করা।

(ঘ) মহেশ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো?

উত্তরঃ লেখক নামকরণের মধ্য দিয়ে আপনার ব্যক্তিগত

অভিপ্রায়কে রূপ দিতে চান। সাধারণত নামকরণ কতগুলি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল, যেমন-চরিত্র ঘটনা, কোনো গূঢ় ব্যঞ্জনা, রূপক এবং সংকেত ইত্যাদি। ‘মহেশ’ গল্পটিতে লেখক ‘মহেশ’ নামের অবলা মূল চরিত্রটির মধ্য দিয়ে গল্পটির উৎকর্ষতা ফুটিয়ে তুলেছেন। মহেশের পরিণতিই গল্পের মূল বিষয়।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহেশ’ সামাজিক গল্পটির মূল উপজীব্য একটি মূক ষাঁড়ের জীবনের করুণ পরিণতি আর সেই পরিণতিকে ঘিরে তার প্রতিপালক গফুরের অসহায় অবস্থা। মহেশের মৃত্যুর জন্য প্রত্যক্ষ দায়ী গফুর, কিন্তু পরোক্ষ দায়ী তৎকালীন জমিদার শাসিত সমাজ ব্যবস্থা। 

দারিদ্র জীর্ণ সংসারে গফুর তার মাতৃহারা কন্যা আমিনা এবং তার প্রিয় মহেশকে নিয়ে দীনহীনভাবে দিনাতিপাত করে। জমিদার শিবচরণ বাবুর দাপটে দুবছরে গফুরকে গত বছরের পাওনা বাবদ সমস্ত খড় জমিদারের কাছারিতে এক কাহন খড়ও ধারও দিতে অস্বীকৃত হন। শ্মশানের ধারের গোচারণ ভূমিটুকুও জমিদার জমাবিলি করে দেন। মানিক ঘোষের বাগানে ঢুকে গাছপালা নষ্ট করায় গো-ব্রাহ্মণে ভক্তিসম্পন্ন মানিক ঘোষ পর্যন্ত মহেশকে খোঁয়াড়ে দিলে অসহায় গফুরকে এক টাকার বিনিময়ে তাকে ছাড়িয়ে আনতে হয়।

নিরুপায় অসহায় গফুর এক সময় মহেশকে কসাইয়ের হাতে তুলি দিতে চেয়েছিল, সেই খবর পেয়ে গফুরকে জমিদার বাড়িতে ডেকে অপমান ও তিরস্কার করা হয়।

অভুক্ত গফুর একদিন কাজের সন্ধানে বেরিয়ে কাজ না পেয়ে জৈষ্ঠ্যের খরতাপে বাড়ি ফিরে চাল না থাকায় ভাত পায় না। মুসলমান হওয়ায় সমাজে তারা অস্পৃশ্য বলে আমিনাকে তৃষ্ণার জল সংগ্রহ করতে গিয়েও অসীম ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়, তাই ক্ষুধার্ত গফুর তৃষ্ণার জলও পায়নি।

আমিনা জল আনতে গেলে সেই অবকাশে মহেশ জমিদারের ফুলগাছ নষ্ট করে, ধান নষ্ট করে, ও বাবুর ছোটো মেয়েকে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার জন্য অবসন্ন গফুরকে পেয়াদা পাঠিয়ে ডেকে পাঠানো হয়। এসময় আত্মবিস্মৃত হয়ে গফুর বলে — মহারাণীর রাজত্বে কেউ কারো গোলাম নয়, খাজনা দিয়ে বাস করি, আমি যাব না। কিন্তু গফুরকে যেতে হল এবং সেখানে এই কথা বলার অপরাধে সে প্রহার ও লাঞ্ছনা সহ্য করে অর্ধমৃত অবস্থায় কোনোরকমে বাড়ি ফিরে শুয়ে পড়ে।

এই সময় আমিনার জলের কলসি মহেশ গুঁতো মেরে ভেঙে দিয়ে সেই জল আকণ্ঠ পান করতে থাকলে, মেয়ের আর্ত চিৎকার শুনে বাইরে এসে লাঙলের ফালা দিয়ে গফুর মহেশকে আঘাত করে ফলে মহেশ মারা যায়।

রক্ত মাংসের মানুষ গফুর জমিদার শাসিত সমাজ ব্যবস্থার যে নির্যাতন, লাঞ্ছনা প্রহার সহ্য করেছে, তার একমাত্র কারণ মহেশ। তার ধৈর্য্যের বাঁধ যেদিন ভেঙে গিয়েছিল সেদিন সে দ্বিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে মহেশকে মেরে ফেলেছিল।

সুতরাং দেখা যায় গল্পটির শুরু মহেশকে দিয়েই, মহেশ মূক অবলা জীব হলেও মহেশের প্রতি গফুরের ভালোবাসা ও নিরুপায় অবস্থায় আত্মবিস্মৃত গফুরের অন্যায় কার্য গল্পটির মর্মে ধাক্কা দেয়। মহেশের করুণ পরিণতিই গল্পটির মূল বর্ণিত বিষয়। তাই নামকরণ যথার্থ সার্থক।

(ঙ) মহেশ গল্প অবলম্বনে গফুরের চরিত্র বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ মহেশ গল্পে গফুর জোলা চরিত্রটি তৎকালীন সমাজের অত্যাচারী নিপীড়িত মানুষের প্রতিনিধি চরিত্র। ভূমিহীন ভাগচাষি মুসলমান গফুর কায়ক্লেশে মাতৃহারা কন্যা আমিনা ও তার প্রাণপ্রিয় সন্তানতুল্য মহেশকে নিয়ে গ্রামের শেষ সীমায় পথের ধারে বাস করে।

গফুর চরিত্রের অলংকার হল তার স্নেহ পরায়ণতা, সরলতা, মায়ামমতা, ধৈর্য্যশীলতা। গফুর রক্ত মাংসের শরীর বিশিষ্ট মানুষ, তাই তার চরিত্রের গুণগুলি যেমন তাকে সমৃদ্ধ ও সমুন্নত করেছে তেমনি সামান্য দোষও তার চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছে। সে ধৈৰ্য্যশীল তবে ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে প্রতিবাদ করতেও ভোলেনি। তাই জমিদারের পেয়াদা তাকে ডেকে নিয়ে যেতে এলে ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর গফুর পেয়াদার মুখে জুতো মারতে মারতে টেনে নিয়ে যাওয়ার কথা শুনে ‘মহারাণির রাজত্বে কেউ কারও গোলমা নয়’—বলে প্রতিবাদ জানায়। আবার মেয়েকেও ধৈর্য্য হারিয়ে গালাগালি করেছে, সর্বোপরি মহেশকে মেরে ফেলেছে। এসবই ধৈর্য্যচ্যুতির উদাহরণ।

গফুর মানিক ঘোষের মতো গো ব্রাহ্মণে ভক্তিসম্পন্ন মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই মানিক ঘোষ তার মহেশকে খোঁয়াড়ে দেবে একথা সে বিশ্বাস করতে না পারলেও প্রকৃত ঘটনা ঘটায় তার বিশ্বাসের ভিত নড়েছিল।

গফুর চরিত্রের সবচেয়ে বড়ো দিক হল এক অবলা জীব মহেশের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা। সে নিজে না খেয়ে তাকে খাওয়াতে চায়, নিজের ঘরের অবস্থার কথা জেনেও ঘরের চালের খড় টেনে খেতে দেয়। পরম স্নেহে মহেশের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে সে বলে – মহেশ তুই আমাদের আট সম প্রতিপালন করে বুড়ো হয়েছিস, তোকে আমি পেট পুরে খেতে দিতে পারিনে কিন্তু তুই তো জানিস তোকে আমি কত ভালোবাসি। মহেশের জন্য তাকে কতবার দৈহিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।

গফুর বিনয়ী, তাই সবিনয়ে তর্করত্নের কাছে তার অসহায়তার কথা জানিয়েছে, যদিও কোনো ফল হয়নি। মহেশ গল্পে গফুর চরিত্রটি এইভাবে রক্ত মাংসের এক অনাবদ্য চরিত্র হয়ে উঠেছে।

(চ) ‘মহেশ’ গল্পের জমিদার ও তর্করত্নের চরিত্র আলোচনা করে সামাজিক শোষণ, নিষ্ঠুরতা ও অন্যায় অবিচারের ছবিটি পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ সাহিত্য সমাজের দর্পণ, তাই সাহিত্য দর্পণে সমাজের মুখ দেখেন পাঠকেরা। ‘মহেশ’ গল্পে বর্ণিত জমিদার শাসিত কাশীপুর গ্রাম, জমিদার শিবচরণ বাবু, তর্করত্ন, গফুর, আমিনা, গফুরের প্রাণপ্রিয়, যাড় মহেশ এ সবই তৎকালীন গ্রাম্য সমাজের এক একটি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হয়ে উঠেছে।

জমিদার শিবচরণবাবুর দোর্দণ্ড প্রতাপে প্রজারা সন্ত্রস্থ, তাঁর সীমাহীন লোভে প্রজারাও সর্বস্বান্ত, তাই উৎপাদিত ফসলের বেশির ভাগ তিনি সংগ্রহ করে নেন। প্রজাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা না করে নিজের রাজস্ব আদায়ে তিনি তৎপর। পেয়দাদের দিয়ে প্রজাদের উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হত। এক কথায় তৎকালে গ্রামের প্রজারা প্রজাপীড়ক জমিদারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল, বিশেষ করে ব্রাহ্মণ জমিদারের অধীনে বিধর্মী প্রজা আরও অত্যাচারিত হত।

সেই সময়কারে সমাজে ব্রাহ্মণদের গো-ভক্তি ছিল মৌখিক আন্তরিক নয়। তাই তর্করত্ন মহেশের অসহায়তার সম্যক কারণ জানার পরেও গফুরকে এক কাহন খড় দিতে রাজি হননি। আবার মানিক ঘোষের গো-ব্রাহ্মণে ভক্তির কথা সর্বজনবিদিত হলেও মহেশের অন্যায়কে ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখতে পারেননি।

তৎকালীন সমাজে ছোঁয়াছুয়ির বাছ বিচার ছিল, তাই গফুর কাহন দুই খড় চেয়ে তর্করত্নের পায়ের কাছে বসে পড়লে তর্করত্ন পিছিয়ে গিয়ে বলেন – ‘আ মর ছাঁয় ফেলবি নাকি?” মুসলমানদের ম্লেচ্ছ বলে ঘৃণা করা হত। কাছারিতে তর্করত্ন গফুরকে উদ্দেশ্য করে সবার সামনে বলেন – ‘ধর্মজ্ঞানহীন ম্লেচ্ছ জাতিকে গ্রামের ত্রিসীমানায় বাস করিতে দেওয়া নিষিদ্ধ। তৃষ্ণা জল পর্যন্ত সংগ্রহ করতে আমিনাকে অপরের করুণার ওপর নির্ভর করে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হত।

(ছ) প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করোঃ

(i) যে তোমার দেওয়া মাঠের ঘাস, তোমার দেওয়া তেষ্টার জল তাকে খেতে দেয় নি, তার কসুর তুমি যেন কখনো মাপ করো না।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘মহেশ’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। গল্পটির মধ্য দিয়ে সেকালের গ্রাম বাংলার এক নির্মম বাস্তব ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। পাশাপাশি তিনি গল্পটির মধ্য দিয়ে গভীর মানবতাবোধ তথা সমাজ সচেতনতার পরিচয়ও এখানে তুলে ধরেছেন। জমিদাররা প্রজাদের ওপর যে নির্যাতন করে থাকতেন কিংবা সমাজপতিরা গ্রামে যে ভণ্ডামি করে থাকতেন, তার নিখুঁত একটি ছবিও গল্পে তুলে ধরেছেন।

কাশীপুর গ্রামের এক মুসলমান চাষি হল গফুর, কন্যা আমিনাকে নিয়ে গ্রামের শেষপ্রান্তে গফুরের বাস। তার কয়েক বিঘা চাষের জমি থেকে যেটুকু ফসল পাওয়া যেত, তাতে বাপমায়ের কোনরকমে চলে যেত। জমির খড় খেটে চলত মহেশের খাওয়া। কিন্তু পর পর দুসন আজন্মার কারণে দেশে নেমে এসেছিল আকাল। যে মহেশ তার জমিতে আট বছর চাষ করে আজ বুড়ো হয়েছে, সেই মহেশকে গফুর এ অবস্থাতেও ত্যাগ করতে পারেনি। বরং তাকে পুত্রস্নেহে প্রতিপালন করে চলেছে। পরিস্থিতির চাপে গফুর বর্তমান অসহায় মহেশের মুখে খড় বিচুলিও দিতে পারে না, কারণ জমিদার তার সব খড় কেড়ে নিয়েছেন। মহেশের চরে খাওয়ার জমিটুকুও জমিদার মশাই পয়সার লোভে বিলি করে দিয়েছেন। তাই গফুরের মতো মহেশকেও একবেলা আধবেলা, আকর কখনও না খেয়ে কাটাতে হয়।

ওদিকে গফুরের ওপর জমিদার ও অন্যান্যদের নির্যাতন অব্যাহত। হিন্দু প্রধান গ্রামে কন্যা আমিনাকে জল আনতে হয় অপরের দয়ার উপর নির্ভর করে গো হাটায় মহেশকে বিক্রি করার কথা শুনে জমিদার গফুরকে তলব করে, অকারণে শাস্তি দেন। একদিকে জমিদার, তর্করত্ন মানিক ঘোষের মতো সম্পন্ন, কিন্তু জমিদার গফুরকে তলব করে অকারণে শাস্তি দেন। একদিকে জমিদার তর্করত্ন, মানিক ঘোষের মত সম্পন্ন, কিন্তু হৃদয়হীন লোকেরা, অপরদিকে গফুরের দারিদ্র্য ভরা জীবন এবং তার জন্য সংগ্রাম, তার জীবনকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে।

(ii) কিন্তু সংসারে অত ক্ষুদ্রের অত বড় দোহাই দেওয়া শুধু বিফল নয়, বিপদের কারণ।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘মহেশ’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।

সামাজিক বৈষম্যের শিকার সদ্য জ্বর থেকে উঠে দুর্বল শরীরে জ্যৈষ্ঠ্যের দুপুরের ঘর রৌদ্রে কাজের খোঁজে বেরিয়ে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ফিরে আসে। ঘরে ফিরে ক্ষুধার অন্ন ও তৃষ্ণার জল না পেয়ে ক্রোধে অন্ধ গফুর প্রথমবার আত্মস্থিত হয় এবং কন্যা আমিনাকে গালিগালাজ করে ও চড় কষিয়ে দেয়। ঠিক এই সময়ে জমিদারের পেয়াদা তাকে নিয়ে যেতে আসলে সে ‘খাওয়া দাওয়া হয়নি, পরে যাব’ বললে পেয়াদা কুৎসিত সম্বোধন করে বলে ‘বাবুর হুকুম জুতো মারতে মারতে টেনে নিয়ে যেতে’ — এ কথা শোনার পরেই গফুর দ্বিতীয়বার আত্মবিস্মৃত হয়েছিল।

প্রথমবার গফুর মেয়েকে গালিগালাজ করেছিল দ্বিতীয়বার আত্মবিস্মৃত হয়ে জমিদারের পেয়াদার সামনেই জমিদারের সদরে যাওয়ার আদেশ সে উপেক্ষা করে। একটা দুর্বাক্য উচ্চারণ করে বলে ‘মহারাণির রাজত্বে কেউ কারো গোলাম নয়। খাজনা দিয়ে করি, আমি যাব না। কিন্তু সংসাৰে অত ক্ষুদ্রের এত বড় কথা শুধু বিফলই নয় বিপদের কারণও। তাই ঘণ্টাখানেক পরে যখন গফুর জমিদারের সদর থেকে ফিরে এল তখন সে আর বিছানা থেকে উঠতে পারল না তার চোখ মুখ ফুলে উঠেছিল। অর্থাৎ জমিদারের শাস্তি সমস্তটা গফুরের পিঠেই পড়েছে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ 

১। ‘তবু, দাপটে তাঁর প্রজারা টু শব্দটি করিতে পারে না। – এমনই প্রতাপ’ – তার প্রতাপের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ কাশীপুর গ্রামটি ছোট, সেই গ্রামের জমিদার আরও ছোট হলেও তাঁর এমন প্রতাপ ছিল যে, কোনো প্রজা তাঁর কাজের প্রতিবাদ করতে পারত না। হিন্দু প্রধান গ্রামে বাস করে কসাইদের কাছে গরু বিক্রির চেষ্টা করার অপরাধে গফুরকে জমিদারের সদরে এসে কানমলা ও নাকখত খেতে হয়েছিল। জমিদারের ডাকে ‘মহারাণির রাজত্বে খাজনা দিয়ে বাস করি’ গোছের উক্তি করে প্রতিবাদ জানানোর অপরাধে তাকে জমিদারের কাছারিতে দৈহিক নিগ্রহও ভোগ করতে হয়।

২। ‘এই নিষ্ঠুর অভিযোগে গফুরের যেন বাকরোধ হইয়া গেল’ – অভিযোগটি কী?

উত্তরঃ জমিদারের ভাগচাষি গফুরের প্রতি কাশীপুর গ্রামের হিন্দু পুরোহিত তর্করত্নের অভিযোগটি ছিল – জমিদারের জমিতে ভাগে ধান চাষ করে গফুর এবার নিজের ভাগে যে খর পেয়েছে তার সবটাই সে নাকি বেচে পেটায় নমঃ করেছে। চাষের বলদ মহেশের খাওয়ার জন্য এক আঁটিও খড় সে ফেলে রাখেনি। কসাই এর মতো এমনই নিষ্ঠুর সে।

৩। ‘এই দুর্বছরে তোকে কেমন করে বাঁচিয়ে রাখি বল’ – বছরটিকে বক্তার দুর্বচ্ছর মনে হয়েছে কেন?

উত্তরঃ পর পর দু’বছর অজন্মা তাই মাঠের ধান মাঠে শুকিয়ে গেছে। গত বছরের পাওনা বাবদ জমিদার সমস্ত খড় জমা রেখেছে, শ্মসান ধারের গোচরটুকু পয়সার লোভে জমাবিলি করে দিয়েছে। একারনেই বছরটিকে ‘দুর্বচ্ছর’ বলা হয়েছে।

৪। নক্ষত্রখচিত কালো আকাশে মুখ তুলিয়া বলিল ‘— বক্তা কী বলেছিল?

উত্তরঃ গফুরের হাতে মহেশের মৃত্যুর পর রাতে মেয়ে আমিনার হাত ধরে ফুলবেড়ের চটকলের উদ্দেশ্যে যাবর সময় পথের ধারে বাবলা তলায় এসে গফুর আল্লার উদ্দেশ্যে বলেছিল তার মহেশ তৃষ্ণা নিয়ে মরেছে, তার চরে খাবার জমিও কেউ রাখেনি। আল্লার দেওয়া মাঠের ঘাস, তৃষ্ণার জল, যে খেতে দেয়নি আল্লা যেন তার অপরাধ কখনও মাপ না করেন।

৫। ‘বিশেষত মুসলমান বলিয়া এই ছোটো মেয়েটা তো কাছেই ঘেষিতে পারে না।’— ছোট মেয়েটির কাছে ঘেঁষতে না পারার কারণ? কাছে না ঘেঁষে তার প্রয়োজন কীভাবে মেটায়?

উত্তরঃ মহেশ গল্পে বর্ণিত হিন্দু প্রধান কাশীপুর গ্রামে আমিনা অন্ত্যজ মুসলমান গফুর জোলার মেয়ে। এই গ্রামের হিন্দু গ্রামবাসীদের মধ্যে রয়েছে সংকীর্ণ ধর্ম চেতনা, জাত পাতের ভেদাভেদ। হিন্দুর ব্যবহার্য জল মুসলমান মেয়ে আমিনার স্পর্শে অপবিত্র হয়ে যাওয়ার ভয়ে কম বয়সি আমিনাকেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দূরে দাড়িয়ে থাকতে হয়, কাছে সে ঘেঁষতে পারে না।

গ্রামের অন্যান্য জলাশয়ের মাঝখানে খোঁড়া গর্তের সঞ্চিত জলের জন্য গ্রামবাসীর ভিড় করে। আর মুসলমান মেয়ে আমিনা শূন্য কলসি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দূরে দাঁড়িয়ে থাকে এবং সামান্য জল পাবার আশায় সকলের কাছে বহু অনুনয় বিনয় করে। তারপর কেউ দয়া করে তার পাত্রে সামান্য জল ঢেলে দিলে বাধ্য হয়ে সেটুকু জল নিয়েই আমিনা তার জলের প্রয়োজন মেটায়।

শব্দার্থ :

প্রতাপ – তেজ, পরাক্রম।

তর্করত্ন – সংস্কৃত ন্যায়শাস্ত্রের বিশেষ উপাধি হ’ল তর্করত্ন।

বাটি – বাড়ি।

প্রাঙ্গণ – উঠোন।

বিচুলি – ঝেড়ে-নেওয়া ধানের শুকনো গাছ।

খামার – শস্য মাড়াই করার স্থান।

দুর্বচ্ছর – দুঃসময়।

আট সন – আটটি বছর।

অবিদিত – অজানা।

কসুর – ত্রুটি, অপরাধ।

ইজ্জত  – সম্মান।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top