SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান

Join Roy Library Telegram Groups

Hello Viewers Today’s We are going to Share Assam SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান Question Answer in Bengali. As Per New Syllabus of SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান Notes in Bengali PDF Download. SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান Solutions in Bengali. Which you Can Download PDF Notes SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান in Bengali Textbook Solutions for using direct Download Link Given Below in This Post.

SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান

Today’s We have Shared in This Post SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান Suggestions in Bengali. SEBA Class 8 Social Science Chapter 22 ভারতীয় সংবিধান Notes in Bengali. I Hope, you Liked The information About The SEBA Class 8 Social Science Part – I Geography, Class 8 Social Science Part – II History, Class 8 Social Science Part – III Political Science or Economics. If you liked Then Please Do Share this Post With your Friends as Well.

ভারতীয় সংবিধান

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

(ক) ভারতীয় সংবিধানটি রচনা করতে কতদিন সময় লেগেছিল?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানটি রচনা করতে ২ বছর সময় লেগেছিল।

(খ) কত খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় সংবিধানটি সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী হয়?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানটি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারী সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী হয়।

(গ) ভারতে সদস্য নির্বাচন প্রক্রিয়া কখন থেকে শুরু হয়?

উত্তরঃ ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে ভারত পরিষদ আইন-এ মতে ভারতে সদস্য নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

(ঘ) ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ‘ভারত সরকার আইন’-এ কী ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ‘ভারত সরকার আইন’ স্বায়ত্ব ও যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়েছিল।

(ঙ) সংবিধান সভার খসড়া কমিটি কখন গঠন করা হয়?

উত্তরঃ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে আগস্ট ড. ভীমরাও আম্বেদকরের সভাপতিত্বে ৬ সদস্যের একটি সংবিধান খসড়া কমিটি গঠন করা হয়।

প্রশ্ন ২। শূন্যস্থান পূরণ করো—

(ক) ভারতীয় সংবিধানে_____ টি অনুচ্ছেদ,____ টি অধ্যায়,_____ টি অনুসূচী আছে।

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানে ৩৯৫টি অনুচ্ছেদ, ২২টি অধ্যায়, ১২টি অনুসূচী আছে।

(খ) ভারতীয় সংবিধান কেন্দ্র ও রাজ্যের ক্ষমতাসমূহ _____ ও ______ তালিকায় ভাগ করে দিয়েছে।

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান কেন্দ্র ও রাজ্যের ক্ষমতাসমূহ ৯৭টি তালিকায় ও ৬৬টি তালিকায় ভাগ করে দিয়েছে।

(গ) সংবিধানের ৪২তম সংশোধনের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবনায়_____ ও ______অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

উত্তরঃ সংবিধানের ৪২তম সংশোধনের মধ্য দিয়ে প্রস্তাবনায় সমাজতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

(ঘ) সংবিধানের খসড়া কমিটিতে অসমের সদস্য ছিলেন_____।

উত্তরঃ সংবিধানের খসড়া কমিটিতে অসমের সদস্য ছিলেন সৈয়দ মহম্মদ সাদুল্লা।

প্রশ্ন ৩। উত্তর দাও :

(ক) ভারতীয় সংবিধানকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সংবিধান বলা হয় কেন?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান একটি লিখিত সংবিধান। ইহাতে প্রশাসনের মূলনীতি নির্দেশিকার সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকত্ব, মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রের নির্দেশাত্মক নীতি, ন্যায়ালয়ের ব্যবস্থা, নির্বাচন প্রক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো লিখিতরূপে আছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর অন্যান্য রাষ্ট্রসমূহের প্রণীত সংবিধানগুলোর মধ্যে ভারতের সংবিধানটিই দীর্ঘতম সংবিধান, যাহাতে ৩৯৫টি অনুচ্ছেদ, ২২টি অধ্যায় ও ১২টি অনুসূচী আছে। অনুচ্ছেদের অর্থ হল অংশ বা দফা, আর অনসূচীর অর্থ হল তালিকা। পৃথিবীর বেশ কয়েকটি সংবিধানের অতি মূল্যবান আদর্শসমূহকে আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করায় এইটি পৃথিবীর মধ্যে দীর্ঘতম সংবিধান হয়েছে।

(খ) সংমিশ্রিত সংবিধান বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ সংমিশ্রিত সংবিধান হল নমনীয় ও অনমনীয় সংবিধানের সংমিশ্রণ। এই সংবিধান মতে নতুন রাজ্য গঠন করা, রাজ্যের সীমা নির্ধারণ করা ইত্যাদি কিছু কিছু বিষয় সহজেই সংশোধনযোগ্য। এইগুলি সংবিধানের নমনীয় দিক। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়, যেমন— রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি, কেন্দ্র ও রাজ্যের পারস্পরিক ক্ষমতার বিভাজন, উচ্চতম ও উচ্চ ন্যায়ালয় ইত্যাদি বিষয়গুলোকে সহজে সংশোধন করা যায় না। এই ক্ষেত্রে সংবিধানের অনমনীয় দিকটিই পরিস্ফুট হয়। এইসব বৈশিষ্ট্যের ফলেই ভারতীয় সংবিধানকে নমনীয় ও অনমনীয় বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রিত সংবিধানরূপে অভিহিত করা হয়।

(গ) রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতির প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ কী কী?

উত্তরঃ রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতির প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হল—

১। দেশের সব নাগরিকের জীবনধারনের মানদণ্ড উন্নত করা।

২। অর্থনৈতিক সমতা স্থাপন করা।

৩। গ্রামাঞ্চলের উন্নতি সাধন ও পঞ্চায়েত ব্যবস্থার প্রবর্তন করা।

৪। শান্তিপূর্ণভাবে বিবাদ নিষ্পত্তি ও বন্ধুত্ব স্থাপন করা।

৫। নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য সকল শিশুকে (৬-১৪) নিঃশুক্ল ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা।

৬। সমাজের অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা।

৭। দেশের ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান ও কীর্তিক্তত্তসমূহ সংরক্ষণ করা।

৮। প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করাই এই নীতিগুলোর মূল উদ্দেশ্য।

ভারতবর্ষকে একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য উপরোক্তন নীতিগুলো গ্রহণ করা হয়েছে।

(খ) আমাদের সংবিধানের নির্দেশাত্মক নীতি, কোন দেশের সংবিধানের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে?

উত্তরঃ আমাদের সংবিধানের নির্দেশাত্মক নীতি আয়ারল্যান্ডের সংবিধানের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। এক শব্দে প্রকাশ করো।

(ক) যে রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান বংশানুক্রমে থাকেন না।

উত্তরঃ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।

(খ) বিদেশী শাসন থেকে যে রাষ্ট্র মুক্ত_____।

উত্তরঃ সার্বভৌম রাষ্ট্র।

(গ) যে রাষ্ট্রের কোনো রাষ্ট্রীয় ধর্ম নেই______।

উত্তরঃ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।

(ঘ) যে রাষ্ট্র দেশের জনসাধারণের কল্যাণের স্বার্থে নিবেদিত______।

উত্তরঃ কল্যাণকামী রাষ্ট্র।

প্রশ্ন ৫। ‘ক’ অংশের সঙ্গে ‘খ’ অংশ মেলাও–

‘ক’ অংশ‘খ’ অংশ
(ক) ব্রিটিশ সংবিধান থেকে(ক) স্বতন্ত্রতা, সমতা, ভ্রাতৃত্ববোধ
(খ) কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধান থেকে(খ) রাষ্ট্রের নির্দেশাত্মক নীতি
(গ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান থেকে(গ) যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা
(ঘ) ফরাসি সংবিধান থেকে(ঘ) মৌলিক অধিকার
(ঙ) আয়ারল্যান্ডের সংবিধান থেকে(ঙ) সংসদীয় গণতন্ত্র

উত্তরঃ

‘ক’ অংশ‘খ’ অংশ
(ক) ব্রিটিশ সংবিধান থেকে(ঙ) সংসদীয় গণতন্ত্র
(খ) কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধান থেকে(গ) যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা
(গ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান থেকে(ঘ) মৌলিক অধিকার
(ঘ) ফরাসি সংবিধান থেকে(ক) স্বতন্ত্রতা, সমতা, ভ্রাতৃত্ববোধ
(ঙ) আয়ারল্যান্ডের সংবিধান থেকে(খ) রাষ্ট্রের নির্দেশাত্মক নীতি

প্রশ্ন ৬। ভারতীয় সংবিধানের ঐতিহাসিক পটভূমি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ সিপাহি বিদ্রোহের ফলে ভারতবর্ষের শাসনভার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে ইংল্যান্ডের রানির প্রত্যক্ষ শাসনের অধীনে নেওয়া হয়। এরপর থেকে ভারতবর্ষে আধুনিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ব্রিটিশ সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করে। স্বাধীনতা লাভ করার পূর্বে বা আগে পর্যন্ত এই আইনগুলোর মধ্য দিয়ে ইংরেজরা ভারতবর্ষকে শাসন করেছিল। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য আইনের কথা নীচে উল্লেখ করা হল—

১। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার ‘ভারত পরিষদ আইন’ প্রণয়ন করে ভারতীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে এই আইনটি ভারতবর্ষে প্রথম প্রতিনিধিমূলক শাসনব্যবস্থার সূচনা করেছিল।

২। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে সংশোধিত ‘ভারত পরিষদ আইন’ গৃহীত হওয়ার পর থেকেই ভারতের সদস্য নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রবর্তন করা হয়।

৩। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ‘ভারত সরকার আইন’ গৃহীত হয়। এই আইনটি ‘মর্লে মিন্টো সংস্কার আইন’ নামে পরিচিত।

৪। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ‘ভারত সরকার আইন’টি ভারতবর্ষে একপ্রকার স্বায়ত্ব শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিল। যদিও তার পরিসর অতি সীমিত ছিল।

৫। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ‘ভারত সরকার আইন’ মতে ভারতবর্ষে প্রথম বারের মতো স্বায়ত্ব শাসন ও যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন হয়।

৬। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ব্রিটিশ সংসদে গৃহীত আইনের ফলে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভ করে।

S.L. No.সূচীপত্র
ভূগোল খণ্ড
অধ্যায় -1 প্রাকৃতিক সম্পদ
অধ্যায় -2জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং বিতরণ
অধ্যায় -3বসতি
অধ্যায় -4বসতি : গ্ৰাম ও শহুরে জীবন
অধ্যায় -5সাগর-মহাসাগর
অধ্যায় -6ভারতের উদ‍্যোগ এবং পরিবহণ ব‍্যবস্থা
অধ্যায় -7অসমের নদ-নদী
অধ্যায় -8ভূগোল বিজ্ঞান অধ‍্যয়নে প্রযুক্তির প্রয়োগ
ইতিহাস খণ্ড
অধ্যায় -9নব‍্য ধর্মীয় ভাবধারার উথান
অধ্যায় -10মধ‍্যযুগের অসম
অধ্যায় -11অসমের আর্থ-সামাজিক জীবনে মধ‍্যযুগের শাসকদের অবদান
অধ্যায় -12বাণিজ্যবাদ এবং ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের ভারতবর্ষে আগমন
অধ্যায় -13ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের প্রতিষ্ঠা, সম্প্রসারণ এবং সুদৃঢ়করণ
অধ্যায় -14ইস্ট-ইণ্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে ভারতবর্ষে সংস্কারসমূহ
অধ্যায় -15সাম্রাজ্যবাদ এবং অসম
অধ্যায় -16১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ
অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক খণ্ড
অধ্যায় -17মানব সম্পদ উন্নয়ন, মানব সম্পদ উন্নয়নের নির্দেশক এবং
মানব সম্পদ উন্নয়নে বৃত্তিমূলক শিক্ষার ভূমিকা
অধ্যায় -18মানব সম্পদ উন্নয়নের অসুবিধাসমূহ এবং
মানব সম্পদ উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা
অধ্যায় -19আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিত্তীয় অনুষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা
অধ্যায় -20গ্রাহকের সজাগতা, অধিকার এবং সুরক্ষা
অধ্যায় -21সংবিধান ও তার প্রয়োজনীয়তা
অধ্যায় -22ভারতীয় সংবিধান
অধ্যায় -23মৌলিক অধিকার
অধ্যায় -24আমাদের মৌলিক কর্তব্য

প্রশ্ন ৭। সংবিধান প্রণয়নে অসমের ভূমিকা কী ছিল লেখো।

উত্তরঃ ভারতের সংবিধান প্রণয়নে অসমের ভূমিকা ছিল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অসমের অবদানের কথা আলোচনা করতে গেলে যে সব ব্যক্তিগণের নাম উল্লেখযোগ্য তাঁরা হচ্ছেন সৈয়দ মহম্মদ সাদুল্লা, গোপীনাথ বরদলৈ, ধরণীধর বসুমাতরি, রেভারেণ্ড জে. জে. এম. নিকোলাস রয়, নিবারণ চন্দ্র লস্কর, কুলবর চালিহা, রোহিনী কুমার চৌধুরী ও আব্দুর রৌফ। এঁদের মধ্যে সৈয়দ মহম্মদ সাদুল্লা ছিলেন সংবিধান সভার খসড়া কমিটির সদস্য। অসমের অনুসূচিত জাতি-জনজাতি ও পার্বত্য জনজাতির স্বার্থে গঠিত সংখ্যালঘু উপদেষ্টা কমিটির সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন গোপীনাথ বরদলৈ। এই কমিটির পরামর্শ মতে সংবিধানে ষষ্ঠ অনুসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই অনুসূচিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য ও জনজাতীয় অঞ্চলসমূহেরও জন্য স্বায়ত্ব শাসন বিধান রাখা হয়। এইভাবেই ভারতীয় সংবিধান রচনায় অসমের এই বরেণ্য ব্যক্তিগণ যথেষ্ট সফল ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। সমগ্র দেশের সঙ্গে নিজ রাজ্যের স্বার্থে তাঁরা সহমত পোষণ করেছিলেন যাতে রাজ্যের সর্বশ্রেণির মানুষ সংবিধান প্রদত্ত সুবিধা লাভ করতে পারেন।

প্রশ্ন ৮। ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্ত মূল আদর্শসমূহ বর্ণনা করো।

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় মূল আদর্শসমূহ হল–

১। এই প্রস্তাবনার আদর্শ মতে “আমরা ভারতের অধিবাসীরা” — বলতে সকল ক্ষমতার উৎস যে দেশের জনসাধারণ, সেটাই বোঝানো হয়েছে। ভারতবাসীরাই এই সংবিধান রচনা করে দেশের জনসাধারণের কল্যাণে জনসাধারণকে প্রদান করেছে।

২। ভারতবর্ষ একটি ‘সার্বভৌম রাষ্ট্র’। এর অর্থ হল — বিদেশী কোনো রাষ্ট্রের অধীনে না থেকে ভারত স্বাধীনভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতি নির্ধারণ করতে পারবে।

৩। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তবনায় ৪২তম সংবিধান সংশোধনীর মধ্য দিয়ে ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ আদর্শ নতুন করে সংযোজন করা হয়। ‘সমাজতান্ত্রিক’ শব্দটির ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বোঝানো হয়েছে যে দেশের সম্পদ যাতে মুষ্টিমেয় লোকের হাতে কেন্দ্রীভূত না হয় তার জন্য রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এর অর্থ হল ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করতে সংবিধান গুরুত্ব আরোপ করেছে। রাষ্ট্রের উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থা যাতে রাষ্ট্রের দ্বারা পরিচালিত হয়, তার প্রতি লক্ষ্য রেখে এই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

৪। ভারতবর্ষ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে বসবাসকারী সকলেই নিজ ইচ্ছা অনুসারে যে কোনো ধর্ম গ্রহণ, পালন, চর্চা ও প্রচার বাধাহীনভাবে করতে পারে।

৫। ভারতবর্ষকে একটি ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। এর অর্থ হল জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারই রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।

৬। ভারতবর্ষকে একটি প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এই আদর্শ মতে রাষ্ট্র ক্ষমতার শীর্ষে কোনো বংশানুক্রমিক দাবীদার থাকতে পারবে না। এই কারণেই আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি পরোক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

৭। প্রস্তাবনায় সকল নাগরিকদের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়ের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সকল নাগরিকই ন্যায়ের ভিত্তিতে এই সকল বিষয়ে সুযোগ- সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

৮। সংবিধানের প্রস্তাবনায় সকল নাগরিককে চিন্তা, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিশ্বাসের স্বাধীনতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন ৯। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

(ক) ড. ভীমরাও আম্বেদকর। 

(খ) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ। 

(গ) সংসদীয় সরকার।

উত্তরঃ (ক) ড. ভীমরাও আম্বেদকর – ড. ভীমরাও আম্বেদকর-এর সম্পূর্ণ নাম বাবা সাহেব ভীমরাও আম্বেদকর। সম্মানের সঙ্গে তাঁকে ‘বাবাসাহেব’ নামে ডাকা হত। তিনি ভারতীয় সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি ছিলেন। ভারতীয় সমাজের গভীরে থাকা ‘অস্পৃশ্যতা’ দূর করে সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে তিনি সংবিধানে মৌলিক অধিকার সন্নিবিষ্ট করেছিলেন। মহিলাদের উন্নতির স্বার্থে তাদের শিক্ষা ও সম্পত্তির অধিকারের উপর তিনি অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। এছাড়াও, সংবিধানকে কার্যক্ষম করে তোলার ক্ষেত্রে তিনি দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

(খ) ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ – ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতিরূপে কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ভারতের সংবিধান সভার সভাপতি ছিলেন।

(গ) সংসদীয় সরকার – যদি কোনো রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা একটি মন্ত্রী সভার হাতে ন্যস্ত থাকে এবং ঐ মন্ত্রীসভা নিজেদের শাসন নীতির জন্য আইন সভার নিকট দায়ী থাকেন, তখন এই শাসন ব্যবস্থাকে সংসদীয় বা মন্ত্রী পরিষদ চালিত সরকার বলে। ইংল্যান্ড ও ভারতবর্ষে সংসদীয় সরকার শাসনব্যবস্থা প্রচলিত আছে।

প্রশ্ন ১০। ছোটো ছোটো কাগজের টুকরোতে ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলাদা করে লেখে শ্রেণির সব ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে এই টুকরোগুলো বিলিয়ে একটি আকস্মিক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করুণ ও বিষয়গুলোর উপর সবাইকে বক্তব্য পেশ করতে দিন। (শিক্ষক/শিক্ষিকার প্রতি) (অনুষ্ঠানটি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব শিক্ষক/শিক্ষিকার)

উত্তরঃ শ্রেণিতে শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্যে কর।

প্রশ্ন ১১। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

(ক) ভারতবর্ষের শাসন ক্ষমতা ইংরেজদের দখলে কবে গিয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে।

(খ) ব্রিটিশ সরকার কত খ্রিস্টাব্দে ভারত পরিষদ আইন গ্রহণ করে?

উত্তরঃ ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে।

(গ) মহাত্মা গান্ধী কখন একটি নিজস্ব সংবিধানের দাবী তুলেছিলেন?

উত্তরঃ ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে।

(ঘ) সংবিধান সভার সভাপতি কে ছিলন?

উত্তরঃ ডক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদ।

(ঙ) সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি কে ছিলেন?

উত্তরঃ ড. ভীমরাও আম্বেদকর।

(চ) কোন দেশের সংবিধানের ভিত্তিতে আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রীয় নির্দেশাত্মক নীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে?

উত্তরঃ আয়ারল্যান্ডের।

প্রশ্ন ১। ন্যায়, স্বাধীনতা, সমতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের ভাবধারা আমাদের সমাজে না থাকলে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, তা দলগতভাবে আলোচনা করে লেখো।

উত্তরঃ ন্যায় বলতে সংবিধানে নাগরিকদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়ের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

(ক) সামাজিক ন্যায় – ভারতের সকল জনগণ যাতে সম অধিকার ভোগ করে এক মর্যাদাপূর্ণ জীবন অতিবাহিত করতে পারে তার উপর গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে।

(খ) রাজনৈতিক ন্যায় – সকল নাগরিকই সমানভাবে রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করতে পারে। যেমন—সকল প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকই নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোটাধিকার প্রয়োগ করে রাষ্ট্রের কার্যপ্রণালিতে অংশগ্রহণ করতে পারে।

(গ) অর্থনৈতিক ন্যায় – অর্থনৈতিক ন্যায়ের মধ্য দিয়ে আমাদের সমাজে থাকা অর্থনৈতিক অসমতা দূর করার বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে। পুরুষমহিলার সম মজুরি, বৃদ্ধদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদান, রাষ্ট্রীয় সম্পদের সমবিতরণ ইত্যাদি এই ন্যায়ের অন্তর্গত।

স্বাধীনতা – স্বাধীনতা কথাটির মধ্য দিয়ে ভারতীয় নাগরিকদের চিন্তা, মত প্রকাশ, বিশ্বাস, নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী ধর্ম গ্রহণ, চর্চা এবং প্রচার করার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।

সমতা – ভারতের জনসাধারণ যাতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভোগ করতে পারে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ভারতবর্ষে আইনের চোখে সবাই সমান। আইনের ক্ষেত্রে সবাইকে সমান অধিকার ও সম রক্ষণাবেক্ষণ দেওয়ার কথাটি ‘সমতা’র মধ্য দিয়ে বোঝানো হয়েছে।

ভ্রাতৃত্ববোধ – ভ্রাতৃত্ববোধের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সমান সুযোগ ও সম মর্যাদা প্রদান করার বিষয়টি রাষ্ট্রকেই নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন ধর্ম, ভাষা সংস্কৃতির মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার জন্য আমাদের সবাইকে একে অন্যের ভাষা ধর্ম-সংস্কৃতিকে সম্মান জানাতে হবে। তবেই সমাজে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগানো সম্ভব হবে। 

উপরোক্ত বিষয়গুলো বা আদর্শগুলো আমাদের সমাজে না থাকলে ভারতবর্ষ কোনো দিনই কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না। এই আদর্শগুলো না থাকলে সমাজ, দেশ, জাতি ইত্যাদি সমস্তই ধ্বংস হয়ে যাবে এবং জনসাধারণ সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে না।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ভারতের সংবিধানের খসড়া কে প্রস্তুত করেছিলেন?

উত্তরঃ ড. ভীমরাও আম্বেদকারের নেতৃত্বে গঠিত খসড়া প্রস্তুত কমিটি ভারতের সংবিধানের খসড়া প্রস্তুত করেছিলেন।

প্রশ্ন ২। ভারতের খসড়া সংবিধান কখন গৃহীত হয়েছে?

উত্তরঃ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে নভেম্বর ভারতের খসড়া সংবিধানটি সংবিধান সভায় গৃহীত হয়।

প্রশ্ন ৩। ভারতের সংবিধান কখন হইতে কার্যকরী হয়েছে?

উত্তরঃ ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারী থেকে ভারতের সংবিধান কার্যকরী হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। ভারতের সংবিধানের নির্দেশাত্মক নীতির মূল উদ্দেশ্য কী?

উত্তরঃ ভারতকে কল্যাণকামী রাষ্ট্রে পরিণত করা।

প্রশ্ন ৫। স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন?

উত্তরঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ।

প্রশ্ন ৬। ভারতের সংবিধানের ব্যাখ্যা কে দিতে পারে?

উত্তরঃ উচ্চতম ন্যায়ালয়।

প্রশ্ন ৭। ভারতের সংবিধানে দেশের নাগরিকদের জন্য কোন ধরনের নাগরিকত্বের বিধান রাখা হয়েছে?

উত্তরঃ ভারতের সংবিধানে দেশের নাগরিকদের জন্য একক নাগরিকত্বের বিধান রাখা হয়েছে।

প্রশ্ন ৮। পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধান কোনটি?

উত্তরঃ ভারতের সংবিধান।

প্রশ্ন ৯। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য কী কী?

উত্তরঃ যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হল ক্ষমতার বিভাজন, লিখিত সংবিধান, নিরপেক্ষ ন্যায়ালয় ইত্যাদি।

প্রশ্ন ১০। ভারতীয় সংবিধানে কয়টি অনুচ্ছেদ আছে?

উত্তরঃ ৩৯৫ টি।

প্রশ্ন ১১। ভারতীয় সংবিধানে কয়টি অধ্যায় আছে?

উত্তরঃ ২২ টি।

প্রশ্ন ১২। ভারতীয় সংবিধানে কয়টি অনুসূচী আছে?

উত্তরঃ ১২ টি।

প্রশ্ন ১৩। ভারতের কেন্দ্রীয় তালিকায় কয়টি বিষয় আছে এবং কী কী?

উত্তরঃ ভারতের কেন্দ্রীয় তালিকায় ৯৭টি বিষয় আছে। প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক সম্পর্ক, মুদ্রা, বাণিজ্য ইত্যাদি।

প্রশ্ন ১৪। ভারতের রাজ্য তালিকায় কয়টি বিষয় আছে এবং কী কী?

উত্তরঃ ভারতের রাজ্য তালিকায় ৬৬টি বিষয় আছে। এই বিষয়সমূহ হল— অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা, কৃষি, শিক্ষা ইত্যাদি।

প্রশ্ন ১৫। ‘খসড়া কমিটি’ কতজন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়?

উত্তরঃ ‘খসড়া কমিটি’ সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়।

প্রশ্ন ১৬। সংবিধান অনুসারে ভারত কি ধরনের রাষ্ট্র?

উত্তরঃ সংবিধান অনুসারে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র।

প্রশ্ন ১৭। মহাত্মা গান্ধী কত খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় সংবিধানের দাবী করেছিলেন?

উত্তরঃ ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ভারতের সংবিধানের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের নাম উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের নাম হল—

১। রাষ্ট্রের নির্দেশাত্মক নীতি।

২। প্রস্তাবনার সংযোজন।

৩। সার্বভৌম রাষ্ট্র।

৪। গণতান্ত্রিক গণরাজ্য।

৫। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র।

প্রশ্ন ২। সংবিধান বলিতে কী বোঝ?

উত্তরঃ একটি দেশের বা জাতির শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবার জন্য সর্বসাধারণের গ্রহণীয় লিখিত উদ্দেশ্য, কর্মপন্থা, আদর্শ ও নিয়মাবলীকে সংবিধান বলে।

প্রশ্ন ৩। ভারতবর্ষকে কেন ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলে?

উত্তরঃ ভারতের কোনো রাষ্ট্রীয় ধর্ম নাই। ভারতের নাগরিকদের ধর্মের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সরকার সকল ধর্মের প্রতি সমান ব্যবহার, সকল ধর্মের লোককে সমান সুবিধা ও অধিকার দিয়েছে। ভারতে কোনো ধর্মের লোককে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি। উপরোক্ত কারণে ভারতকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলে।

প্রশ্ন ৪। নির্দেশাত্মক নীতি কাকে বলে?

উত্তরঃ যে কল্যাণকামী রাষ্ট্রে প্রত্যেক নাগরিক সমান অধিকার ও সুযোগ লাভ করে প্রগতির পথে অগ্রসর হতে পারে। সে কারণে সংবিধানে রাষ্ট্রকে কিছু নীতি অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নীতিগুলোকে “নির্দেশাত্মক নীতি” বলে।

প্রশ্ন ৫। ভারতকে কেন গণরাজ্য বলে?

উত্তরঃ ভারতে বংশানুক্রমে বা উত্তরাধিকারী সূত্রে কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপ্রধান অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি হতে পারে না। ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান বা রাষ্ট্রপতিকে দেশের জনগণ পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত করে। সেজন্য ভারতকে গণরাজ্য বলে।

প্রশ্ন ৬। ভারতীয় সংবিধানের জন্য খসড়া কমিটি কখন এবং কতজন সদস্যের দ্বারা গঠিত হয়েছিল?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান সভা ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২১শে আগস্ট তারিখে খসড়া কমিটি গঠন করে। এই কমিটি সাতজন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়। এই কমিটির সদস্যগণ বিখ্যাত পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। সদস্যগণ হলেন—

১। ড. ভীমরাও আম্বেদকার — সভাপতি।

২। এম গোপালস্বামী আয়েঙ্গার — সদস্য।

৩। এ. কৃষ্ণস্বামী আয়ার — সদস্য।

৪। কে. কে. মুন্সি — সদস্য।

৫। সৈয়দ মহম্মদ সাদুল্লা — সদস্য।

৬। এন. মাধব রাও — সদস্য।

৭। ডি. পি. খৈতান — সদস্য।

প্রশ্ন ৭। শূন্যস্থান পূরণ কর।

১। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার______ প্রণয়ন করে।

উত্তরঃ ভারত পরিষদ আইন।

২। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারতবর্ষ______ লাভ করে।

উত্তরঃ স্বাধীনতা।

৩। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে মহাত্মা গান্ধী ভারতবর্ষের জন্য ভারতীয়দের রচিত নিজস্ব_____দাবী তুলেছিলেন।

উত্তরঃ সংবিধানের।

৪। ভারতীয় সংবিধান প্রণয়নে_____ ভূমিকা ছিল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

উত্তরঃ অসমের।

৫। ______ হচ্ছে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার অন্তর্ভুক্ত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আদর্শ।

উত্তরঃ সমতা।

৬। ভারতীয় সংবিধানকে নমনীয় ও_____ বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রিত সংবিধানরূপে অভিহিত করা হয়।

উত্তরঃ অনমনীয়।

৭। ভারতীয় সংবিধান ভারতকে একটি_____ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে।

উত্তরঃ সার্বভৌম।

৮। ______ নিরপেক্ষতা ভারতীয় সংবিধানের অন্য এক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।

উত্তরঃ ধর্ম।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ভারতীয় সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তরঃ ভারতের নতুন সংবিধানটি ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ২৬শে জানুয়ারী মাস হতে বলবৎ করা হয়েছে। সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলো নীচে আলোচনা করা হল—

১। লিখিত সংবিধান – ভারতের সংবিধানটি লিখিত। এতে প্রশাসনের মূল নীতির সঙ্গে নাগরিকত্ব, মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য, রাষ্ট্রের নির্দেশাত্মক নীতি, ন্যায়ালয় ইত্যাদি সমস্ত বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এই সংবিধানটিতে ৩৯৫টি অনুচ্ছেদ, ২২টি অধ্যায় ও ১২টি অনুসূচি আছে। সেজন্য আমাদের সংবিধান পৃথিবীর মধ্যে দীর্ঘতম লিখিত সংবিধান।

২। প্রস্তাবনার সংযোজন – ভারতের সংবিধানে একটি প্রস্তাবনা সংযোজন করা হয়েছে। প্রস্তাবনায় সংবিধানের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং কার্যত প্রস্তাবনাটি সংবিধানের অপরিহার্য অঙ্গের মত।

৩। গণতান্ত্রিক গণরাজ্য – সংবিধান অনুসারে ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ইহার ক্ষমতার উৎস হল জনসাধারণ। এখানে জনসাধারণের মত অনুযায়ী সরকার পরিচালিত হয়। তদুপরি ভারত একটি গণরাজ্য। ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান রাষ্ট্রপতি জনসাধারণের পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন।

৪। ভারত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র – সংবিধানে ভারতকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এর কোনো কার্যে বিদেশী রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। রাষ্ট্রীয় এবং সকল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতে স্বাধীনভাবে কার্য সম্পাদন করতে পারবে।

৫। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র – সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের কোনো রাষ্ট্রীয় ধর্ম নেই। ভারতে সকল ধর্মের মানুষকে সুবিধা ও মর্যাদা দেওয়া হয়। সকল ধর্মের মানুষ নিজ ধর্ম পূর্ণ স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে।

৬। সমাজবাদী নীতি – ভারতে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ সাধন করে সমাজবাদী নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। ভারত একটি সমাজবাদী রাষ্ট্র এবং এর নাগরিকগণ পুঁজিবাদের শোষণ হতে মুক্ত।

৭। যুক্তরাষ্ট্রীয় সংবিধান – ভারতীয় সংবিধান যুক্তরাষ্ট্রীয়। যুক্তরাষ্ট্রের সকল বৈশিষ্ট্য সংবিধানটিতে পরিলক্ষিত হয়েছে। যেমন—কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজন, লিখিত ও অনমনীয় সংবিধান, একক নাগরিকত্ব, সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের জন্য ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র বলে।

৮। নমনীয় ও অনমনীয় প্রকৃতি – ভারতীয় সংবিধানের সংশোধন প্রণালী নিরীক্ষণ করলে দেখা যায় যে ইহা নমনীয়ও নয় এবং অনমনীয়ও নয়। এই দুটি পদ্ধতির সংমিশ্রণ। ভারতীয় সংবিধানটি প্রস্তুত করতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতি সহজ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অতি কঠিন নীতি অবলম্বন করা হয়েছে। সুতরাং ভারতীয় সংবিধানটি আংশিকভাবে অনমনীয়।

৯। সংসদীয় গণতন্ত্র – ভারতের শাসন ব্যবস্থা সংসদীয়। ভারতের সংসদটি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। ভারতের সরকারের কার্যপালিকা, বিশেষ হরে ক্যাবিনেট মন্ত্রীসভাটি সংসদের নিকট দায়বদ্ধ। ভারতের রাষ্ট্রপতি নামমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি সাংবিধানিক রাষ্ট্রপ্রধান, মন্ত্রীসভাটিই কাৰ্যপালিকা।

১০। একক নাগরিকতা – সকল ভারতবাসীর জন্য ‘এক নাগরিকত্বের ব্যবস্থা করা হইয়াছে। ভারতের নাগরিকের নাগরিকতা একটিই মাত্র, সেটি হল –‘ভারতীয় নাগরিকতা’। সংযুক্ত রাজ্যসমূহের আলাদা নাগরিকতা নেই।

১১। মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য – ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য কয়েকটি মৌলিক অধিকার সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে। মৌলিক অধিকার ছয় প্রকার। তদুপরি সংবিধানে ভারতীয় নাগরিকদের জন্য দশ প্রকার মৌলিক কর্তব্যের বিষয়েও উল্লেখ করা হয়েছে। ইহা ভারতীয় সংবিধানের এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।

১২। রাষ্ট্রের নির্দেশক নীতি – ভারতকে একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্রে পরিণত করার উদ্দেশ্যে সংবিধানে কিছু ‘রাষ্ট্রের নির্দেশক নীতি সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে। নাগরিকদের সকল দিকে উন্নতি সাধন করার জন্য কিছু সংখ্যক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে এই নীতিসমূহ সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে, এই নীতিসমূহ মৌলিক অধিকারের মত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সরকার এই নীতিগুলি কার্যকরী না করলে জনসাধারণ নীতিগুলি ন্যায়ালয়ের দ্বারা বলবৎ করতে পারে না।

১৩। স্বতন্ত্র ন্যায়পালিকা বিভাগ – ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য হিসাবে সংবিধানে একটি সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন স্বতন্ত্র ন্যায়পালিকা বিভাগের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভারতের উচ্চতম ন্যায়ালয়ের হাতে ন্যায় প্রতিষ্ঠার ভার দিয়ে একে সংবিধানের অভিভাবক বলে গণ্য করা হয়। সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় কার্যপালিকা বিভাগ হতে সম্পূর্ণ পৃথক ও স্বতন্ত্র।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top