Class 11 Advance Bengali Chapter 12 কাবুলিওয়ালা

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Advance Bengali Chapter 12 কাবুলিওয়ালা is a textbook prescribed by the ASSAM AHSEC Board Class 11 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Advance Bengali Chapter 12 কাবুলিওয়ালা The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Advance Bengali Chapter 12 কাবুলিওয়ালা Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Advance Bengali Chapter 12 কাবুলিওয়ালা |একাদশ শ্রেণীর প্রাগ্রসর বাংলা পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্ন ও উত্তর

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 11 Advance Bengali Chapter 12 কাবুলিওয়ালা Question Answer. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st year Advance Bengali Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. AHSEC Board Class XI Advance Bengali Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. HS 1st Year Advance Bengali Subject Suggestion, HS 1st Year Advance Bengali Notes Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 11 Advance Bengali Textbooks. HS 1st Year Advance Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

কাবুলিওয়ালা

ছোটগল্প

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

১। কাবুলিওয়ালা গল্প ‌অবলম্বনে রহমতের একটি চরিত্র চিত্রণ করো।

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের মুখ্য চরিত্র হল ‘কাবুলিওয়ালা’। তাঁর নাম ছিল রহমত। তাঁর বাড়ি সুদূর আফগানিস্থানে। দেশ থেকে কিসমিস, বাদাম প্রভূতি নিয়ে সে সুদূর কলকাতায় ব্যাবসা করতে আসে। দশজন পিতার মতো তাঁর হৃদয়েও সন্তান বাৎসল্যের কোমল স্নিগ্ধতা বিরাজিত। দেশে তার ছোট মেয়ে ছিল। দেশ থেকে কলকাতায় আসার সময় দেখা যায় সে ভূষি মাখিয়ে মেয়ের হাতের ছাপ কাগজে নিয়ে আসে। স্নেহ বুভুক্ষু পিতৃহৃদয় মিনি নামে পাঁচ বছরের ছোটো মেয়েটির মধ্যে নিজের মেয়ের ছবি দেখতে পায়। সে থলিতে ভরে তার সংগে কিসমিস, বাদাম নিয়ে আসত। ধীরে -ধীরে মিনি ও তার মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একদিন একজন লোককে ছুরি মারার অপরাধে রহমতের জেল হয়। কয়েক বৎসর পর জেল থেকে ছাড় পেয়ে যখন সে মিনিকে দেখতে বাদাম-কিসমিস নিয়ে আসে তখন মিনির বাবা তাকে দাম দিতে উদ্যত হলে তাকে বলতে শোনা যায় সে এখানে ব্যাবসা করতে আসেনি।

রহমত ভদ্র ও সদালাপী। মিনির বাবার সংগে আলাপ-আলোচনায় তার এই গুণাবলীর পরিচয় পাওয়া যায়। রহমত চরিত্রের মধ্যে নির্ভীকতা, মিথ্যার প্রতি অসহিষ্ণুতা চোখে পড়ে। একজন লোক যখন তার পাওনা টাকা দিতে অস্বীকার করে তখন ক্রুদ্ধ রহমত তাকে ছুরি বসিয়ে দেয়। কারণ সে মিথ্যে কথা সহ্য করতে পারেনি। তার এ কাজের জন্য তার মধ্যে ভয়ের কোনো লক্ষণ নেই। রহমত মানুষ হিসেবে অত্যন্ত সরলসোজা। দেখা যায় দীর্ঘ কারাবাসের পর মিনির জন্য সে আগের মতো ছোটো মেয়ে ভেবে কিসমিস, বাদাম নিয়ে যায়। গল্পের শেষে দেখা যায় বধূবেশিনী মিনিকে দেখার পর রহমত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বসে পড়ে। তখন স্পষ্ট বুঝতে পারে তার মেয়েও নিশ্চয় এতদিনে বিবাহযোগ্য হয়ে পড়েছে। তার মন কলকাতার গলি থেকে ছুটে যায় আফগানিস্থানের মরু পর্বতের দেশে। গল্পের শেষে রহমত চরিত্রটি মিনির বাবার মতো পাঠক মহলের সহানুভূতি কেড়ে নেয়।

২। ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের মিনি চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের একটি চরিত্র হল মিনি। গল্পের শুরুতে দেখা যায় পাঁচ বছর বয়সের অত্যন্ত চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে মিনি। সে অনর্গল কথা বলতে থাকে। তার মা অনেক সময় ধমক দিয়ে তার মুখ বন্ধ করে দেন। অন্যদিকে তার বাবা ধৈর্য্যসহকারে তার কথা শুনে থাকেন, সেজন্য মার চেয়েও বেশি বাবার সংগেই তার সম্পর্ক ছিল গভীর। এই বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অকালপক্ক বিজ্ঞতার ভাব সহজেই নজরে আসে, মিনির মধ্যেও তা দেখা যায়। যেমন মিনি তার বাবাকে জিজ্ঞেস করতে দেখা যায়, “বাবা মা তোমার কে হয়।” বা “বাবা রামদয়াল দারোয়ান কাককে কৌয়া বলেছিল, সে কিছু জানেনা। না ?”একদিন সকালে রাস্তা দিয়ে কাবুলিওয়ালা যেতে দেখে মিনি কাবুলিওয়ালাকে চিৎকার করে ডাকতে থাকে, যখন কাবুলিওয়ালা চিৎকার শুনে বাড়িমুখী হয় তখন মিনি উর্দ্ধশ্বাসে অন্তঃপুরে চলে যায়। 

মিনির মনে অন্ধ বিশ্বাস ছিল কাবুলিওয়ালার ঝুলিতে তার মতো দুটো-চারটে ছেলে-মেয়েদের পাওয়া যাবে, যাদের ধরে সে ঝুলির ভেতরে ঢুকিয়ে রেখেছে। এখানে আমাদের শিশুমনের ভাবনার সংগে পরিচয় ঘটে। মিনির মতো প্রায় শিশুরাই তা ভেবে থেকে। শিশুমনে সবসময়ই জানার কৌতূহল থাকে। মিনির মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। তাই দেখা যায় মিনিকে জিজ্ঞেস করতে কাবুলিওয়ালা তোমার ঝুলির ভেতরে কি আছে ? গল্পে দেখা যায় মিনি শৈশব থেকে কৌশরে পদার্পণ করে। বয়সের সংগে-সংগে তার স্বভাবেরও পরিবর্তন সাধিত হয়। গল্পের মধ্যদিয়ে রবীন্দ্রনাথ মিনির এই পরিবর্তনকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন।

৩। কাবুলিওয়ালা গল্পের বিষয়বস্তু তোমার নিজের ভাষায় সংক্ষেপে লেখো। 

উত্তরঃ কাবুলিওয়ালা গল্পের সারাংশ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত বিভিন্ন ছোটগল্পের মধ্যে একটি ছোটগল্প হল ‘কাবুলিওয়ালা’। গল্পটির বিষয়বস্তু হল পাঁচ বছর বয়সের অত্যন্ত চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে মিনি। সে অনর্গল কথা বলে। তার মা বিরক্ত হয়ে ধমক দিয়ে তার কথা বন্ধ করেন। অন্যদিকে দেখা যায় পিতা ধৈর্য্য সহকারে তার কথা শুনে থাকেন। মিনি চুপ করে থাকলে তার ভালো লাগেনা। বাবার কাছে সে সস্নেহে প্রশ্রয় পেয়ে থাকে। মার থেকেও বেশি কাছের মানুষ তার বাবা। মিনির বাবা ছিলেন একজন লেখক। গল্পে দেখা যায় মিনির বাবা একদিন সকালে উপন্যাসের সপ্তদশ পরিচ্ছেদ লিখছিলেন তখন মিনি তার টেবিলের পাশে বসে আগডুম বাগডুম খেলতে আরম্ভ করে। তখন পথের পাশ দিয়ে এক কাবুলিওয়ালা যেতে দেখে তাকে ডাকতে শুরু করে। কাবুলিওয়ালা তার চিৎকার শুনে বাড়িমুখী হয়। কাবুলিওয়ালাকে আসতে দেখে সে বাড়ির ভেতর চলে যায়। মিনির মনে একটা ভয় ছিল কাবুলিওয়ালার ঝুলি সন্ধান করলে তার মতো ছোটো ছোটো মেয়েদের পাওয়া যাবে। ধীরে ধীরে কাবুলিওয়ালার সংগে তার বন্ধুত্ব হয়ে যায়। কাবুলিওয়ালা তাকে বাদাম, কিসমিস দিত। তাদের মধ্যে গল্প, রসিকতা চলতে থাকত।

একদিন শীতের সকালে মিনির প্রতিবেশী কেউ একজন রামপুরী চাদরের জন্য রহমতের কাছে ধার নিলে পাওনা টাকা দিতে অস্বীকার করায়, মিথ্যা বলায় ক্রুদ্ধ রহমত তাকে ছুরি বসিয়ে দেয়। এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে তাঁর কারাদণ্ড হয়। কয়েকবছর পর ছাড় পেয়ে যখন সে মিনিকে দেখতে তার বাড়িতে আসে সেদিন ছিল মিনির বিয়ের দিন । এই শুভদিনে জেলখাটা রহমতকে দেখে মিনির বাবার মনে হয়েছিল এ লোকটা এখানে থেকে গেলেই ভালো হয়। রহমত মিনিকে দেখতে চায়। তার ধারণা ছিল মিনি পূর্বের মতো কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা বলে ছুটে আসবে। আজ তাদের বাড়িতে কাজ আছে যাতে সে চলে যায় একথা মিনির বাবা বললে রহমত মিনির জন্য আনা বাদাম-কিসমিস তার হাতে দেয়, তখন তিনি দাম দিতে উদ্যত হলে কাবুলিওয়ালাকে বলতে শোনা যায় সে এখানে ব্যবসা করতে আসেনি। 

তারও মিনির মতো একটি মেয়ে আছে। সে ভূষি মাখা মেয়ের হাতের চিহ্নটি মিনির বাবাকে দেখায় তখন মিনির বাবা বুঝতে পারলেন কাবুলিওয়ালা তার মতোই একজন পিতা। কাবুলিওয়ালার সন্তান বাৎসল্য দেখে মিনিকে ডেকে আনলেন। বধূবেশিনী মিনিকে দেখে রহমত থতমত খেয়ে যায়। সে তখন স্পষ্ট বুঝতে পারল এতদিনে তার মেয়েও বড়ো হয়ে ওঠেছে। তার মন কলকাতার গলি থেকে এক নিমিষে ছুটে যায় আফগানিস্থানে। মিনির বাবা তাকে একটি নোট দিয়ে বলেন যাতে রহমত দেশে মেয়ের কাছে ফিরে যায়। তাদের মিলনসুখে মিনির ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে।

S.L. No.সূচীপত্র
পদ্যাংশ
পাঠ – ১গৌরাঙ্গ – বিষয়ক পদ
পাঠ – ২দুই বিঘা জমি
পাঠ – ৩সনেট
পাঠ – ৪সুদূরের আহ্বান
পাঠ – ৫রানার
পাঠ – ৬উত্তরাধিকার
পাঠ – ৭কাস্তে
গদ্যাংশ
পাঠ – ৮রাজধর্ম
পাঠ – ৯ভাগীরথীর উৎস সন্ধানে
পাঠ – ১০রামায়ণ
পাঠ – ১১রূপকথা
ছোটগল্প
পাঠ – ১২কাবুলিওয়ালা
পাঠ – ১৩রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা
পাঠ – ১৪খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)

৪। “মঙ্গল আলোকে আমার শুভ উৎসব উজ্জল হইয়া উঠিল।” – ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্প অবলম্বনে এই উক্তিটির সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ মিনির বাবা এই উক্তিটি করেছিলেন। মিনির বিয়ের দিন সকালবেলা মিনির বাবা বাইরের ঘরে বসে বিয়ে বিষয়ক হিসাবপত্তর দেখছিলেন। এমন সময় কাবুলিওয়ালা এসে উপস্থিত হয়। প্রথমতঃ তাকে দেখে চিনতে না পারলেও তার হাসি দেখে মিনির বাবা তাকে চিনে ফেলেন। সে কোথা হতে এসেছে এ প্রশ্নের উত্তরে যখন সে বলে, কাল জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে তখন মিনির বাবার পূর্বস্মৃতি মনে পড়ে যায়। সে মিনিকে দেখতে চাইলে মিনির বাবা বলেন আজ বাড়িতে কাজ আছে একথা বলে বিদায় করতে চাইলে মিনির জন্য আনা বাদাম, কিসমিস তার হাতে দেয়, তখন মিনির বাবা এগুলোর দাম দিতে উদ্যত হলে সে বলে, এখানে সে ব্যবসা করতে আসেনি। তারও দেশে মিনির মতো ছোট মেয়ে আছে । তখন ভূষিমাখা মেয়ের হাতের চাপ সে দেখায়। মিনির বাবা তখন বুঝতে পারেন সেও তার মতো পিতা। তার মনের ভাব বুঝতে পেরে মিনিকে ডেকে আনেন। বধূবেশিনী মিনিকে দেখে সে থতমত খেয়ে যায়। 

এতসময়ে সে বুঝতে পারে মিনির মতো। তার মেয়েও বড় হয়ে উঠবে। মিনির বাবা তাকে একটা নোট দেন যাতে সে আফগানিস্থানে মেয়ের কাছে ফিরে যায়। এই টাকার দানের ফলে মিনির বিয়েতে ইলেক্ট্রিক বাতি জ্বালানো হয়নি এবং গড়ে বাদ্যও আসেনি। কারণ বিয়ের হিসেবের টাকা থেকে কাবুলিওয়ালাকে মিনির বাবা টাকা দিয়ে দেন। মিনির বাবা ভাবেন ইলেক্ট্রিক আলোয় তার মেয়েকে বিয়ে দিতে পারেননি তাতে কি হয়েছে তবে পিতা-কন্যার মিলনে যে মঙ্গল আলো প্রজ্জলিত হবে তাতেই মিনির ভবিষ্যৎ জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে।

৫। ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গল্পগুচ্ছ’ ১ম খণ্ডের অন্তর্ভূক্ত। 

গল্পটির প্রধান এবং কেন্দ্রীয় চরিত্র হল কাবুলিওয়ালা। কাবুলিওয়ালাকে কেন্দ্র করেই গল্পটি বিস্তার লাভ করেছে। পাঁচ বছরের মিনি একদিন তার বাড়ির সামানের রাস্তা দিয়ে কাবুলিওয়ালাকে যেতে দেখে ‘কাবুলিওয়ালা ও কাবুলিওয়ালা’ বলে ডাক দেয়। সুদূর কাবুল থেকে আগত রহমত কাবুলিওয়ালা মিনির ডাকে সাড়া দিয়ে বাড়িতে আসে। ধীরে-ধীরে তাদের বন্ধুত্ব হয়। সে মিনির মধ্যে সুদূর কাবুলে রেখে আসা তার মেয়ের ছবি দেখতে পায়৷ তাই সবসময় বুভুক্ষ পিতৃহৃদয় বার-বার ছুটে আসে মিনির কাছে। মিনির জন্য সবসময়ই সে কিসমিস, বাদাম নিয়ে যেত। মিনির প্রতিবেশীকে ছুরি মারার অপরাধে যখন তার কারাদণ্ড হয়, আর এই কারাদণ্ড থেকে মুক্তি পেয়ে যখন মিনিকে দেখার উদ্দেশ্যে মিনির বাড়িতে আসে তখন তার মধ্য দিয়ে যে সন্তান বাৎসল্যের ছবি উন্মোচিত হয় যা সত্যিই খুব হৃদয় বিদারক। সেজন্য গল্পের অন্য কোনো নাম বা গল্পের আরেকটি প্রধান চরিত্র মিনির নামেও না হয়ে গল্পের নামকরণ করা হয় ‘কাবুলিওয়ালা’। সুতরাং বলা যেতে পারে বিষয়বস্ত অনুযায়ী গল্পের নামকরণ যথাযথ বা সার্থক।

প্রশ্ন ৬। ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের কাহিনি অবলম্বনে মিনি ও রহমতের সম্পর্কটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ ছোট গল্পে পাঁচ বছর বয়স মিনি লেখকের কন্যা। আর কাবুলিওয়ালা রহমত সুদূর আফগানিস্থানের প্রাপ্ত বয়স্ক একজন ব্যবসাদার। রহমত তাঁর প্রবাস জীবনে নিজের শিশু কন্যা থেকে বিচ্ছিন্ন। এই বিচ্ছিন্নতা একদিন আবিষ্কার করে মিনিকে। মিনির মধ্যে সে খুঁজে পায় তার শিশুকন্যাকে।

রহমত একদিন পথ দিয়ে চলছিল। মিনি তাকে জানালা দিয়ে পথে দেখতে পেয়ে ‘কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা’ বলে ডাকতে থাকে। কিন্তু কাবুলিওয়ালাকে তাদের ঘরের দিকে আসতে দেখে সে দৌড়ে পালায় অন্দরমহলে। তারপর কাবুলিওয়ালা বাবুর ‘লড়কী’র খোঁজ করলে লেখক তাকে বাড়ির ভিতর থেকে ডাকিয়ে আনেন। মিনি তার বাবার গা ঘেঁষে কাবুলিওয়ালার ঝুলির দিকে সন্দেহের চোখে দেখতে থাকে। কিছু ফলমূল রহমত তাকে দিতে গেলে, দ্বিগুণ সন্দেহে সে তার বাবার হাটুর কাছে আরো ঘেঁষে দাড়ায় । তাদের প্রথম পরিচয়টা এভাবে গেলেও লেখকের অগোচরে তাদের দুজনে মধ্যে গড়ে ওঠে এক অদ্ভূত বন্ধুত্বের সম্পর্ক। রহমত প্রতিদিন তাকে পেস্তা বাদাম ঘুষ দিয়ে তার ক্ষুদ্র হৃদয়খানি জয় করে নেয়।

তাদের মধ্যে চলে সরল হাসি ঠাট্টা যে দেখে লেখক বলেন, ‘একটি বয়স্ক এবং একটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুর সরল হাস্য দেখিয়া আমারও বেশ লাগিত।’ রহমতকে দেখামাত্র মিনি হাসতে হাসতে জিজ্ঞাসা করত, ‘কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা তোমার ঝুলির ভিতর কী ?’ রহমত হাসতে হাসতে উত্তর দিত ‘হাঁতি’। রহমত মিনিকে বলত, ‘খোঁখী, তোমি সসুর বাড়ি কখনু যাবে না।’ মিনির তখন জিজ্ঞাসা ‘তুমি শ্বশুরবাড়ি যাবে ?’ রহমত তখন কাল্পনিক শ্বশুড়ের প্রতি মূর্তি আস্ফালন করে বলত, ‘হামি সসুরকে মারবে।’ একথায় মজা পেয়ে মিনি হাসত।

সুদূর আফগানিস্থানে রহমতের রয়েছে মিনির বয়সের একটি মেয়ে। এই মেয়ের জন্য তার মনে ব্যথা। মিনির মুখ দেখে সে-ব্যথা সে ভুলে থাকে। জেল ফেরত রহমত মিনিকে দেখতে এসে আবিষ্কার করে যে তার মেয়েটিও মিনির মতো বড়ো হয়েছে। স্বদেশীয় বন্ধুর কাছ থেকে চেয়ে আনা কিছু কিসমিস-বাদামের দাম লেখক তাকে দিতে গেলে, সে তখন নিজের মনের কথাটি বলে। সে বলে, ‘বাবু, তোমার যেমন একটি লড়কী আছে, তেমনি দেশে আমারও একটি লড়কী আছে। আমি তাহারই মুখখানি স্মরণ করিয়া তোমার খোঁকির জন্য কিছু কিছু মেওয়া হাতে লইয়া আসি।’ তাইতো এই দুই অসমবয়সী বন্ধুত্ব। রহমত তার বিরহী পিতৃহৃদয়ের জ্বালা জুড়োতে মিনির ক্ষুদ্র হৃদয়ের অনেকখানি তাই জয় করে নিয়ে তার বন্ধুত্ব লাভ করেছিল।

সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা

১।‘‘কৈলাসবাসিনীর সংগে সংগে আমার ঘরের আনন্দময়ী পিতৃভবন অন্ধকার করিয়া পতিগৃহে যাত্রা করিবে।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ ছোটগল্প থেকে গৃহীত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে বাঙালী ঘরের বাস্তব চিত্র এই উক্তির মধ্যদিয়ে তুলে ধরেছেন।

ঘরের আনন্দময়ী বলতে মিনিকে বুঝানো হয়েছে। মিনির বিয়ে ঠিক হয় শরৎকালে পূজার ছুটির মধ্যে। শরৎকালে মা দুর্গা পতিগৃহে কৈলাস থেকে পিত্রালয়ে আসেন। সেখানে তিনদিনের পর পিতা হিমালয় ও মাতা মেনকাকে ছেড়ে পতিগৃহে যাত্রা করেন। মিনিও তেমনি তাঁর পিত্রালয় ছেড়ে পতিগৃহে যাত্রা করবে। মিনির বাবা ভাবেন কৈলাসবাসিনী দুর্গার মত মিনিও পিতৃগৃহ ছেড়ে পতিগৃহে যাত্রা করবে।

২। ‘‘তাহার পর্বতগৃহবাসিনী ক্ষুদ্র পার্বতীর সেই হস্তচিহ্ন আমারই মিনিকে স্মরণ করাইয়া দিল।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ ছোটগল্প থেকে গৃহীত। এখানে রহমত কাবুলিওয়ালার মেয়ের ভূষিমাখা হাতের চিহ্ন দেখে মিনির বাবার মিনির কথা মনে করিয়ে দেয়। এখানে ‘সে’ বলতে মিনির বাবা। কাবুলিওয়ালা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যেদিন 

মিনির বাড়িতে আসল সেদিন ছিল মিনির বিয়ের দিন। সে মিনির জন্য কিস্ মিস্, বাদাম নিয়ে আসে। মিনির বাবা যখন বলেন আজ বাড়িতে কাজ আছে, আজ তার কারো সংগে দেখা করা যাবে না তখন কিসমিস, বাদামগুলি বের করে মিনিকে দেওয়ার জন্য দিলে মিনির বাবা তার টাকা দিতে চাইলেন। তখন কাবুলিওয়ালা টাকা না নিয়ে মিনির বাবাকে বলল আপনার যেমন একটি লড়কী আছে তেমনি তারও দেশে পড়কী আছে। তখন সে তার মেয়ের ভূষা মাখিয়ে হাতের চিহ্ন নেওয়া কাগজটি দেখালে নির্নির বাবার চোখ ছলছল হয়ে আসল। তখন মিনির বাবা তার হৃদয়ের কথা বুঝতে পেরেছিলেন।

৩। ‘‘আজ আমাদের বাড়িতে একটা কাজ আছে, আমিকিছু ব্যস্ত আছি, তুমি আজ যাও।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্প থেকে গৃহীত। কাবুলিওয়ালা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মিনিকে দেখার জন্য তার বাড়িতে আসে তখন মিনির বাবা এই উক্তিটি করেছিল।

কাবুলিওয়ালা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মিনিকে দেখার জন্য তাদের বাড়িতে আসে। মিনির বাবা জেল ফেরত আসামী দেখে প্রথমতঃ বিরক্ত হন। মনে মনে ভাবতে লাগলেন, “আজিকার এই শুভদিনে এ লোকটা এখান হইতে গেলেই ভালো হয় ।” তখন তিনি কাবুলিওয়ালাকে বললেন, আজ তাদের বাড়িতে একটা কাজ আছে, তিনি কিছু ব্যস্ত আছেন, সে যেন আজ চলে যায়।

৪। “তখন বুঝিতে পারিলাম সেও যে আমিও সে, সেও পিতা আমিও পিতা।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্প থেকে গৃহীত। এখানে রবীন্দ্রনাথ দুই পিতৃহৃদয়ের অনুভূতি এই উক্তির মধ্য দিয়ে ব্যক্ত করেছেন। এখানে ‘সে’ বলতে মিনির বাবা। কাবুলিওয়ালা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যেদিন মিনির বাড়িতে আসল সেদিন ছিল মিনির বিয়ের দিন। সে মিনির জন্য কিস্ মিস্, বাদাম নিয়ে আসে। মিনির বাবা যখন বলেন আজ বাড়িতে কাজ আছে, আজ তার কারো সংগে দেখা করা যাবে না তখন কিসমিস, বাদামগুলি বের করে মিনিকে দেওয়ার জন্য দিলে মিনির বাবা তার টাকা দিতে চাইলেন। তখন কাবুলিওয়ালা টাকা না নিয়ে মিনির বাবাকে বলল আপনার যেমন একটি লড়কী আছে তেমনি তারও দেশে পড়কী আছে। তখন সে তার মেয়ের ভূষা মাখিয়ে হাতের চিহ্ন নেওয়া কাগজটি দেখালে নির্নির বাবার চোখ ছলছল হয়ে আসল। তখন মিনির বাবা তার হৃদয়ের কথা বুঝতে পেরেছিলেন।

৫।“ রহমত একটা অনাবশ্যক চন্দ্রবিন্দু যোগ করিয়া হাসিতে হাসিতে উত্তর করিল ‘হাতি’।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ ছোটগল্প ছোটগল্প থেকে গৃহীত। মিনি যখন জিজ্ঞেস করত কাবুলিওয়ালাকে তার ঝুলির মধ্যে কী আছে, তথন রহমত ‘হাঁতি’ বলত তা-ই এখানে ব্যাক্ত হয়েছে।

পাঁচ বছরের মিনির সংগে বন্ধুত্ব হয় আফগানিস্থান থেকে আগত কাবুলিওয়ালার ।সে মিনির মধ্যে তার মেয়ের ছবি দেখত। তাই মিনির জন্য বাদাম, কিসমিস নিয়ে তাদের বাড়িতে আসত। মিনি কাবুলিওয়ালার ঝুলির ভেতরে কি আছে জানতে চাইলে কাবুলিওয়ালা একটা অনাবশ্যক চন্দ্রবিন্দু যোগ করে বলত ‘হাঁতি’।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘‘আজিকার এই শুভদিনে এ লোকটা এখান হইতে গেলেই ভালো হয়।”- এ লোকটি কে ? শুভদিন কিসের ? লোকটি গেলেই ভালো হয় কেন ?

উত্তরঃ এ লোকটি হল কাবুলিওয়ালা। শুভদিনটি হল মিনির বিয়ের দিন। রহমত নামে কাবুলিওয়ালার সঙ্গে ছোটবেলায় মিনির বন্ধুত্ব হয়েছিল। কাবুলিওয়ালা তার জন্য বাদাম, কিসমিস নিয়ে আসত। একদিন একটি লোককে ছুরি মারার অপরাধে তার জেল হয়। কয়েক বছর পর সে জেল থেকে মুক্তি পেয়ে মিনির বাড়িতে আসে। সেদিন‌ই ছিল মিনির বিয়ের দিন। এই শুভদিনে একজন খনীর আসামী বাড়িতে আসা তাদের কাছে অমঙ্গলজনক মনে হওয়ায় মিনির বাবা তখন ভেবেছিলেন লোকটি গেলেই ভালো হয়।

২। ‘‘তখন বুঝিতে পারিলাম সেও যে, আমিও সে,” – কে, কি বুঝিতে পারল, সংক্ষেপে বল।

অথবা, 

‘‘লেখকের এইরূপ উপলব্ধির কারণ বুঝিয়ে দাও।

অথবা, 

‘‘তখন বুঝিতে পারিলাম সেও যে আমিও সে, সেও পিতা আমিও পিতা ।” – এখানে ‘সে’ কে ? কী কারণে বক্তা বুঝতে পেরেছিলেন যে সেও পিতা তিনিও পিতা ?

উত্তরঃ – এখানে ‘সে’ বলতে মিনির বাবা। কাবুলিওয়ালা জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যেদিন মিনির বাড়িতে আসল সেদিন ছিল মিনির বিয়ের দিন। সে মিনির জন্য কিস্ মিস্, বাদাম নিয়ে আসে। মিনির বাবা যখন বলেন আজ বাড়িতে কাজ আছে, আজ তার কারো সংগে দেখা করা যাবে না তখন কিসমিস, বাদামগুলি বের করে মিনিকে দেওয়ার জন্য দিলে মিনির বাবা তার টাকা দিতে চাইলেন। তখন কাবুলিওয়ালা টাকা না নিয়ে মিনির বাবাকে বলল আপনার যেমন একটি লড়কী আছে তেমনি তারও দেশে পড়কী আছে। তখন সে তার মেয়ের ভূষা মাখিয়ে হাতের চিহ্ন নেওয়া কাগজটি দেখালে নির্নির বাবার চোখ ছলছল

হয়ে আসল। তখন মিনির বাবা তার হৃদয়ের কথা বুঝতে পেরেছিলেন।

৩। “কন্যার এই স্মরণচিহ্নটুকু বুকের কাছে লইয়া রহমত কলিকাতার রাস্তায় মেওয়া বেচিতে আসে।”- স্মরণচিহ্নটুকু কি ? রহমতের কাছে এর মূল্য কিরূপ?

উত্তরঃ স্মরণচিহ্নটুকু হল আফগানিস্থানে রেখে আসা তার ছোটো মেয়েটির ভূষি মাথা হাতের ছাপ। রহমতের কাছে এর মূল্য অপরিসীম। সেই ভূবিনাখা হাতের ছাপ থাকা কাগজটির মধ্যদিয়ে যে তার ছোটো মেয়েটির সুকোমল হাতের স্পর্শ পায়, যা তার ও মেয়ের মধ্যেকার দূরত্বকে কমিয়ে দেয়।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top