Class 11 Advance Bengali Chapter 13 রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Advance Bengali Chapter 13 রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা is a textbook prescribed by the ASSAM AHSEC Board Class 11 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Advance Bengali Chapter 13 রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Advance Bengali Chapter 13 রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Advance Bengali Chapter 13 রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা |একাদশ শ্রেণীর প্রাগ্রসর বাংলা পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্ন ও উত্তর

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 11 Advance Bengali Chapter 13 রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা Question Answer. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st year Advance Bengali Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. AHSEC Board Class XI Advance Bengali Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. HS 1st Year Advance Bengali Subject Suggestion, HS 1st Year Advance Bengali Notes Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 11 Advance Bengali Textbooks. HS 1st Year Advance Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা

ছোটগল্প

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

১। ছোটগল্প কাকে বলে ? ছোটগল্প হিসাবে ‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ গল্পটির সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ যেখানে কাহিনি ছোট, চরিত্র সংখ্যা কম, গল্পটি পড়া শেষ হলেও আরো পড়াতে ইচ্ছা থেকে যায় তাকে ছোটগল্প বলে। রবীন্দ্রনাথ ছোট গল্পের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “যা শেষ হলেও শেষ হয় না।” রবীন্দ্রনাথ ‘সোনারতরী’ কাব্যগ্রন্থের ‘বর্ষাযাপন’ কবিতায় ছোট গল্পের সংজ্ঞা দেন-

“ছোট প্রাণ, ছোট ব্যথা          ছোটো ছোটো দুঃখ কথা 

                     নিতাই সহজ সরল

 ..………………………………………………………

 ……………………………………………………….

                   শেষ হয়ে হইল না শেষ।”

‘রামাকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ একটি সংক্ষিপ্ত কাহিনি। চরিত্র সংখ্যাও খুব কম। চারটি প্রধান চরিত্রের ঘাত-প্রতিঘাত, আভ্যন্তরীন টানাপোড়নের মধ্য দিয়েই গল্পটি নির্মিত। উইলকে কেন্দ্র করে নির্মিত গল্পের বয়ান। চরিত্র ও বাচনের কৌশলে বয়ানে ফুটে ওঠে অর্থলোলুপ আধুনিক জগতের কিছু-কিছু মানুষের প্রতিলিপি। গল্পের বয়ানে একদিকে যেমন কোনো ঘটনাকে বোঝায় পাশাপাশি মানসিকতাও ফুটে উঠেছে। একটি ছোট বিষয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ছোট ছোট সংকটের মধ্যে নিহিত রয়েছে বৃহত্তর সংকটের পূর্বাভাস। চরিত্র‌ও ঘটনার যাবতীয় চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বোঝা যায় গল্পটি ছোটগল্প হিসেবে বহুলাংশে সার্থক।

২। বরদাসুন্দরীর চরিত্র চিত্রণ করো।

উত্তরঃ বরদাসুন্দরী গল্পের একটি চরিত্র। সে গুরুচরণের ধর্মপত্নী। তার নামেই গুরুচরণ সমস্ত সম্পত্তি উইল করে দিয়ে যান। স্বামীর মৃত্যুতে বরদাসুন্দরী কেঁদেছেন কিন্তু তার এই কান্না কৃত্রিম ছিলনা। দেখা যায় রাইচরণ যখন উইল দিতে আসেন তখন বরদাসুন্দরী কেঁদে ভাসিয়েছেন। স্বামীর উদ্দেশ্যে বলেছেন – “ওগো, তেমন যত্ন করে আমাকে আর কে দেখবে, আমার দিকে কে মুখ তুলে চাইবে গো।”

বরদাসুন্দরীকে সম্পত্তি দেওয়াকে কেন্দ্র করে গল্পটি বিস্তার লাভ করে। গল্পে দেখা যায় বরদাসুন্দরীকে গুরুচরণ সম্পত্তি উইল করে দিয়ে গেলে নবদ্বীপ তার নামে উইলজালের অভিযোগ করে আদালতে। তার পক্ষে সাক্ষী দেওয়ার কেউ  ছিলনা। শুধু তার গৃহপোষ্য মামাতো ভাই। কিন্তু নবদ্বীপ ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে তার ভাইকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসে। শেষপর্যন্ত রামকানাইয়ের সাক্ষ্যে বরদাসুন্দরী মামলা জিতলেন। গল্পে তার চারিত্রিক দিক তেমন ভাবে ফুটে ওঠেনি। তার সম্পত্তি দেওয়াকে কেন্দ্র করে গল্পটি বিস্তার লাভ করেছে।

৩। রামকানাইয়ের চরিত্র চিত্রণ করো।

উত্তরঃ গল্পের মুখ্য চরিত্র রামকানাই। তার নামেই গল্পের নামকরণ। গুরুচরণের ভাই রামকানাই। দাদাকে সে খুব ভালোবাসে। গুরুচরণ যখন মৃত্যুশয্যায় তখন রামকানাই দাদার পাশে বসে দাদার জন্য দুঃখী হয়েছে। ডাক্তার ডেকে এনেছে। আবার দাদা মারা গেলে সম্পত্তি নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হবে বলে সন্দেহ করে দাদাকে উইল করার কথা মনে করিয়ে দেয়। তার আশা পুত্র নবদ্বীপও দাদার সম্পত্তির কিছু অংশ পাবে। তাই ইচ্ছে করে নিজহাতে উইল লিখেন, কিন্তু কিছু না পাওয়ায় ব্যথিত হন। তাই বলে দাদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেননি। সংসারের কর্তা রামকানাই হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর কথাই সংসারের শেষ কথা। স্ত্রীর ভয়ে সে কাতর থাকে। কোন কাজের ব্যাপারে রামকানাই হস্তক্ষেপ করেননা। সে জানে হস্তক্ষেপ করলে হিতে বিপরীত হয়ে উঠবে। 

স্ত্রীর মতামতের সমালোচনা করেননা, ভুল-ঠিক ধরিয়ে দেননা, স্ত্রী-পুত্রের যাবতীয় শাসানি সে সহ্য করেন, দুঃখে লুকিয়ে কাঁদেন। স্ত্রী ও পুত্র বুদ্ধি করে রামকানাইকে কাশী পাঠিয়ে দেয় মকদ্দমা জেতার জন্য। রামকানাই কাশী থেকে ফিরে এসে নবদ্বীপ ও তার স্ত্রীর সম্পত্তিবিষয়ক সমস্ত চক্রান্ত জানতে পেরে দুঃখ পান তিনি সৎ, সরল। তাই সুযোগ সত্ত্বেও দাদার সম্পত্তি দখল করার প্রয়াস করেননি। স্ত্রী-পুত্রের বিপক্ষে গিয়ে সত্যের দিকেই সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে। সত্য ঘটনার স্পষ্ট উচ্চারণেও শেষ পর্যন্ত স্ত্রী-পুত্রের কাছে নির্বোধ সেজেছেন।

S.L. No.সূচীপত্র
পদ্যাংশ
পাঠ – ১গৌরাঙ্গ – বিষয়ক পদ
পাঠ – ২দুই বিঘা জমি
পাঠ – ৩সনেট
পাঠ – ৪সুদূরের আহ্বান
পাঠ – ৫রানার
পাঠ – ৬উত্তরাধিকার
পাঠ – ৭কাস্তে
গদ্যাংশ
পাঠ – ৮রাজধর্ম
পাঠ – ৯ভাগীরথীর উৎস সন্ধানে
পাঠ – ১০রামায়ণ
পাঠ – ১১রূপকথা
ছোটগল্প
পাঠ – ১২কাবুলিওয়ালা
পাঠ – ১৩রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা
পাঠ – ১৪খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রাচীন ও মধ্যযুগ)

৪। নবদ্বীপ ও তাঁর মায়ের উইলের ব্যাপারে ষড়যন্ত্রের বিস্তারিত পরিচয় দাও।

অথবা, 

‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ গল্পে বরদা সুন্দরীর বিপক্ষে নবদ্বীপ ও তার মা কেন এবং কীভাবে ষড়যন্ত্র করেছিলেন তার বিবরণ দাও।

উত্তরঃ নবদ্বীপ ও তাঁর মা বলতে রামকানাইয়ের পুত্র ও স্ত্রী। দুটি চরিত্রই লোভী, স্বার্থপর। গুরুচরণের সম্পত্তির উত্তরাধিকার নবদ্বীপের প্রাপ্য বলে এরা দুইজনই মনে করেন। যখন এরা জানতে পারে গুরুচরণ উইল করে গেছেন রামকানাইয়ের হাত দিয়ে তখন তারা‌ রামকানাইকে দোষীর কাঠগড়ায় দাড় করান। মৃত ব্যক্তিকে তারা শাসায়। নবদ্বীপ বলে ওঠে কে গুরুচরণের মুখাগ্নি করবে দেখে নেবে। রামকানাইয়ের বুদ্ধি-সুদ্ধির ব্যাপারে তাদের দুজনেরই শ্রদ্ধা ছিলনা। কীভাবে সম্পত্তি উদ্ধার করা যায় সেই ব্যাপারে নবদ্বীপ তার বন্ধুদের সংগে যুক্তি পরামর্শ করেছে। উইলজালের অভিযোগে বরদাসুন্দরীর‌ বিপক্ষে আদালতে মামলা করেছে। মামলা জেতার ক্ষেত্রে রামকানাই সমস্যা সৃষ্টি করবে এই আশঙ্কায় মা-ছেলে যুক্তি করে রামকানাইকে কাশীতে পাঠিয়ে দেয়। নবদ্বীপ ও তার মা‌ জানে বরদাসুন্দরীর পক্ষে প্রধান সাক্ষ্যী রামকানাই। আরেকজন আছে তার গৃহপোষ্য‌ মামাতো ভাই। তাই নবদ্বীপ ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে মামাতো ভাইকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসে। এসমস্ত কিছু অত্যন্ত দক্ষ কূটকৌশলী অভিজ্ঞতায় সমাধান করেছে। তাদের হটকারী, ষড়যন্ত্রের চিত্রে মনে হয় মা-ছেলে এই ব্যাপারে দক্ষ কারিগর। এমনকি, রামকানাইকে পর্যন্ত ছাড়েনি। রামকানাইয়ের মৃত্যুতে শোক যাপন না করে উল্টো আত্মীয়ের মধ্যে বলতে শুনা গেল – ‘ আর কিছুদিন পূর্বে গেলেই ভালো হত’।

৫। রামকানাই কি যথার্থই নির্বুদ্ধিতার পরিচয়ই দিয়েছিল। তাঁর উক্ত নির্বুদ্ধিতার মধ্যদিয়ে তাঁর চরিত্রের কি পরিচয় পাওয়া যায় ?

উত্তরঃ রামকানাই যথার্থ নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেননি। রামকানাই এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র।

গুরুচরণের কথামতো উইল রচনা করেছিলেন রামকানাই। গুরুচরণ মৃত্যুশয্যায় যা যা বলে গেছেন তা তা লিখে গেছেন রামকানাই। সুযোগ সত্ত্বেও উইলে কোনোরকম যড়যন্ত্র করেননি। দাদা মারা যাওয়ার পর উইলটিকে সযত্নে বৌদির হাতে তুলে দিয়ে বলেছেন লোহার সিন্দুকে যত্ন করে রাখার জন্য। রামকানাইয়ের এই নির্লোভ, সহজ,‌ সাধারণ পরিচয় তার স্ত্রী-পুত্রের কাছে নির্বুদ্ধিতা রূপে ফুটে ওঠে। স্ত্রী-পুত্রের মতানুসারে যদি রামকানাই কৌশলে উইলটি নবদ্বীপের নামে লিখে দিতেন তবেই ঠিক ছিল। কাশী থেকে ফিরে এসে সম্পত্তির জন্য স্ত্রী-পুত্রদের গভীর ষড়যন্ত্র আঁচ করতে পেরে ব্যথিত হন। বিরোধিতা করতে গিয়েও করেননি কারণ তিনি জানেন বিরোধিতা করলে স্ত্রী-পুত্রদের কাছে হিতে-বিপরীত হয়ে ওঠবে। কিন্তু আদালতে কোনো কিছুর তোয়াকা না করে সত্যি কথাই বলেন। এতে রামকানাইয়ের মনুষ্যত্বপূর্ণ সহজ, সাধারণ মানবিক চরিত্রই ফুটে ওঠেছে।

৬। ‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র রামকানাই গুরুচরণের ছোটভাই। দুই ভাইয়ের মধ্যে বিশ্বাস ছিল অটুট। তাই গুরুচরণ মৃত্যুশয্যায় রামকানাইয়ের হাত দিয়ে উইল করে গেছেন। এই উইলনুযায়ী গুরুচরণের সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকার গুরুচরণের স্ত্রী বরদাসুন্দরী। রামকানাই উইলে কোনো কারসাজি করেননি। রামকানাইয়ের সহজ, সরল, সাধারণ, নির্লোভ চেহারা তার স্ত্রী-পুত্র মেনে নেননি। তাই সম্পত্তি উদ্ধারে পত্র নবদ্বীপ ও পত্নী গভীর ষড়যন্ত্রে নেমে পড়েন। রামকানাইয়ের কোনরূপ সহযোগিতা ছিলনা এই ষড়যন্ত্রে, বরং রামকানাই তাদের ষড়যন্ত্রে বাধা হয়ে উঠবে সেই আশঙ্কায় তাকে কাশীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত রামকানাইয়ের সাক্ষ্যতেই বরদাসুন্দরী পক্ষে মকদ্দমা যায়। সংসারে এই অপ্রত্যাশিত বিপর্যয় রামকানাইকে নানাভাবে পীড়িত করে। হঠাৎ জ্বর আসে, তারপর ধীরে ধীরে একদিন নবদ্বীপের অনাবশ্যক বাপ মারা যায়। রামকানাইয়ের এই আচরণ ও নামকরণ উভয়ের একটি গভীর সম্পর্ক রয়েছে। লেখক ব্যাঙ্গাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই গল্পের নামকরণ করেন। এই ব্যাঙ্গাত্মক দৃষ্টিভঙ্গীর থেকে গল্পের নামকরণ সার্থক হয়ে ওঠেছে।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ 

১। ‘মরণকালে বুদ্ধিনাশ হয় ‘ – এই উদ্ধৃতি কে করেছে ? বক্তা কোন প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করেছিল ?

উত্তরঃ এই উদ্ধৃতি নবদ্বীপের বা করেছে।

মৃত্যুকালে সন্তানহীন গুরুচরণ তার স্থাবর -অস্থাবর সম্পত্তি তার স্ত্রী বরদাসুন্দরীকে দান করে গেছে। নবদ্বীপের মা আশা করেছিল গুরুচরণ যেহেতু অপুত্রক তাই মরণকালে ভাইপো নবদ্বীপকেই তার সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে যাবে। কিন্তু তার আশা পূর্ণ হলনা। গুরুচরণের মৃত্যুর পর নবদ্বীপের মা অনেক আশা নিয়ে এসে দেখে সমস্ত সম্পত্তির মালিক হয়ে গেছে বরদাসুন্দরী। তাই নবদ্বীপের মা রাগে, ক্ষোভে গুরুচরণের উদ্দেশ্যেই এই উক্তিটি করেছেন।

২।‌ ‘দেখিব মুখাগ্নি কে করে’ – উক্তিটি কার ? এইরূপ উক্তিটির কারণ কি ?

উত্তরঃ উক্তিটি গুরুচরণের ভাইপো নবদ্বীপের।

গুরুচরণ সুবিশাল সম্পত্তির মালিক। সন্তানহীন গুরুচরণ মৃত্যুকালে তার স্থাবর-অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি স্ত্রী বরদাসুন্দরীকে দিয়ে গেছেন। নবদ্বীপ ও নবদ্বীপের মা উভয়ের আশা ছিল গুরুচরণ তার সম্পত্তির ভাগ নবদ্বীপকে দিয়ে যাবে। কিন্তু জ্যাঠামশাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে নবদ্বীপ এসে দেখে জ্যাঠামশাই সমস্ত সম্পত্তি জ্যাঠাইমাকে দিয়ে গেছেন। তখন নবদ্বীপ রেগে মৃতব্যক্তিকে (গুরুচরণকে) শাসিয়ে উদ্ধৃত উক্তিটি বলে ওঠে। গুরুচরণের মুখাগ্রির মালিক একমাত্র ভাইপো নবদ্বীপ। যেহেতু সম্পত্তি তার ভাগ্যে জুটেনি তাই সে মুখাগ্রি করবেনা এবং কে মুখাগ্নি করবে দেখে নেবে।

৩। “আমি সাক্ষ্য দিব এবং আরো সাক্ষ্য জুটাইব।” – কে, কাকে এই কথা বলেছিল ? সে তার কথা কি রাখতে পেরেছিল ?

উত্তরঃ উদ্ধৃতিটি বরদাসুন্দরীর গৃহপোষ্য মামাতো ভাই বরদাসুন্দরীকে একথা বলেছে। শুরুচরণের সম্পত্তি নিয়ে বরদাসুন্দরী ও নবদ্বীপের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। একে অপরের নামে উইলজালের অভিযোগে আদালতে মামলা করে। বরদাসুন্দরীর উইলের পক্ষে একমাত্র সাক্ষী নবদ্বীপের বাবা রামকানাই। আবার এই উইলে গুরুচরণের সইও অস্পষ্ট। অপরদিকে নবদ্বীপ তার উইলের পক্ষে একাধিক সাক্ষ্য জোগাড় করেছে। উইলে গুরুচরণের সইও স্পষ্ট। নিজের উইলকে আদালতে সত্য প্রমাণের ক্ষেত্রে বরদাসুন্দরী যখন চিন্তিত হয়ে ওঠে। তখন তার মামাতো ভাই উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে। কিন্তু বক্তা শেষ পর্যন্ত নিজের কথা রাখেনি। ভয় ও প্রলোভনে সে শেষপর্যন্ত নবদ্বীপের পক্ষে সাক্ষ্য দেয়।

৪। ‘তোরা এ কী সর্বনাশ করিয়াছিস।” – কে, কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছিল ? কোন সর্বনাশের কথা এখানে বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ গল্পের রামকানাই এই ডাক্ত করেছিলেন। রামকানাই কাশী থেকে এসে যখন জানতে পারেন নবদ্বীপ সম্পত্তির লোভে মিথ্যে উইল তৈরি করে ও তার পক্ষে সাক্ষ্য জুটিয়ে আদালতে বরদাসুন্দরীর নামে উইলজালের অভিযোগে আদালতে মামলা করে তখন রামকানাই এই উক্তিটি করেছিলেন।

স্ত্রী-পুত্রের উইল জাল করার কারসাজিকে রামকানাই সর্বনাশ বলেছেন।

৫। “সে আমাদের কপালের দোষ।” কে এই কথা কেন বলেছিল ?

উত্তরঃ রামকানাই বরদাসুন্দরীর উদ্দেশ্যে এই কথা বলেছিল।

গুরুচরণ মৃত্যুকালে উইল করে গেছেন যে, তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক তার স্ত্রী বরদাসুন্দরী। রামকানাইয়ের আশা ছিল বড়ভাই যেহেতু অপুত্রক তাই সে তার ছেলে নবদ্বীপকে সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে যাবেন। কিন্তু তা হয়নি। ভাই মারা যাওয়ার পর রামকানাই যখন উইলটি বরদাসুন্দরীকে দিতে গেলেন তখন স্বামী হারানোর দুঃখে-যন্ত্রণায় সে বলে ওঠে স্বামীর আগে কেন তার মৃত্যু হলোনা। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে রামকানাই উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন। উক্তিটি ব্যাঙ্গাত্মক।

৬। “আমার সাক্ষ্যে মকদ্দমা রক্ষা পায়।” কে, কাকে এই কথা বলেছিল ? তার সাক্ষ্যে মকদ্দমা রক্ষা পেয়েছিল কী ?

উত্তরঃ বরদাসুন্দরীকে তার গপোষ্য মামাতো ভাই এই কথা বলেছিল।

তার সাক্ষ্যে মকদ্দমা রক্ষা পায়নি। বরদাসুন্দরীকে বলে এসেছে সে তার দিকে সাক্ষ্য দিবে। কিন্তু সে তার কথা রাখেনি। নবদ্বীপ ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে তাকে তার পক্ষে নিয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত রামকানাইয়ের সাক্ষ্যতে বরদাসুন্দরীর পক্ষে মামল যায়। কিন্তু সে গিয়ে দিদিকে বলে তার সাক্ষ্যে বরদাসুন্দরী মামলা জিতেন।

৭। “চতুর ব্যারিস্টার সকৌতুক পার্শ্ববর্তী অ্যাটর্নিকে বলিলেন ‘‘বাই জোভ ! লোকটাকে কেমন করে ঠেসে ধরেছিলুম।” – প্রসঙ্গটি বুঝিয়ে দাও।

অথবা, 

চতুর ব্যারিষ্টার সকৌতুকে পার্শ্ববর্তী অ্যাটর্নিকে বলিলেন, ‘বাই জোভ ! লোকটাকে কেমন ঠেসে ধরেছিলুম।’ – চতুর ব্যারিষ্টার কাকে ঠেসে ধরেছিলেন ? এর ফলে লোকটি কী করেছিল ?

উত্তরঃ চতুর ব্যারিষ্টার রামকানাইকে ঠেসে ধরেছিলেন।

মকদ্দমার দিন বাদী-বিবাদী সবাই উপস্থিত হল। কিন্তু এর আগের দিন পর্যন্ত রামকানাইয়ের সংসারে এক অস্বস্থিকর পরিস্থিতি অতিবাহিত হয়েছে। একদিকে বরদাসুন্দরী আরেকদিকে পুত্র নবদ্বীপ এই দুইয়ের টানা পোড়নে বিদ্ধস্ত রামকানাই আগেরদিন রাত্রিবেলা অনাহারে থেকেছে। অনাহারে মৃতপ্রায় বৃদ্ধ রামকানাই সাক্ষ্য মঞ্চের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। চতুর ব্যারিস্টার অত্যন্ত কৌশলে রামকানাইয়ের মুখ থেকে আসল কথাটি বের করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। তাকে জেরা করতে থাকে। ব্যারিস্টার সূকৌশলে অনেক দূরের কথা আরম্ভ করে ধীরে-ধীরে প্রসঙ্গে আসে। রামকানাই মনুষ্যত্বের দায়বদ্ধতা থেকেই আসল কথাটি ব্যারিষ্টারের কাছে বলে। কিন্তু ব্যারিস্টারমশায় রামকানাইয়ে আসল কথা বলাকে সমস্ত নিজের কেডিট বা নিজের দক্ষতা মনে করেন। তখন ব্যারিষ্টার সকৌতূক পার্শ্ববর্তী অ্যাটর্নিকে এই কথাটি বলেন।

৮। “জয়শ্রী যখন বরদাসুন্দরীকে ত্যাগ করিয়া অন্যপক্ষে যাইবার আয়োজন করিতেছে তখন রামকানাইয়ের ডাক পড়িল।” – বিষয়টি সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ রামকানাইয়ের হাত দিয়ে গুরুচরণ উইল তৈরি করিয়েছিলেন। উইলে সন্তানহীন গুরুচরণ তার সমস্ত সম্পত্তি স্ত্রী বরদাসুন্দরীর নামে দিয়ে যান। ভাইপো নবদ্বীপকে সম্পত্তির কিছু অংশ পর্যন্ত দিয়ে যাননি। ফলে এতদিনকার সাংসারিক ঐক্যের মধ্যে ফাটল দেখা দেয়। নবদ্বীপ ও তার মা জাল উইল করে আদালতে দ্বারস্থ হয়। রামকানাই এক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে তাই তাকে কাশীতে পাঠিয়ে দেওয়া হল। মকদ্দমার পরিণতিপর্বে যখন রামকানাইয়ের প্রয়োজন বোধ করল তখন তাঁকে আদালতে সাক্ষ্যের জন্য ডাকা হয়। বরদাসুন্দরীর পক্ষে রামকানাইয়ের সাক্ষ্য মকদ্দমা হারার পথ থেকে তাকে জয়ের দিকে নিয়া যায়।

৯। “কোনো ভাবনা নাই। এ বিষয় আমিই পাইব।” – উক্তিটি কার ? প্রসঙ্গটি বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ উক্তিটি নবদ্বীপের।

গুরুচরণ মৃত্যুকালে তার সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির উইল করে গেছে । রামকানাইয়ের স্ত্রী যখন জানতে পারে তখন সে রামকানাইয়ের উপর রেগে ওঠে।

নবদ্বীপও তার মায়ের মতো পিতার বিরুদ্ধে এক প্রকার বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। সেও ভাবে জ্যাঠামশাইর সম্পত্তির উত্তরাধিকার একমাত্র সেই-ই। নবদ্বীপ সম্পত্তির পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় নেমে পড়ে। তাই গল্পে দেখা যায় সে বুদ্ধিমান বন্ধুদের সংগে আলোচনায় সে প্রসঙ্গে মত্ত হয়ে ওঠে। বন্ধুরাও তাকে পরামর্শ দেয়। বন্ধুদের সংগে আলোচনা করে বাড়িতে এসে মাকে বলে যে, সমস্ত সম্পত্তিই সেই-ই পাবে। তারজন্য তার মাকে পরামর্শ দেয় রামকানাইকে বাড়ি থেকে স্থানান্তরিত করার জন্য।

১০। “এমনতরো আস্ত নির্বোধ সমস্ত শহর খুঁজিলে মিলেনা।” – এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? কেন বলা হয়েছে বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ এখানে বৃদ্ধ রামকানাইয়ের কথা বলা হয়েছে।

গল্পে উইল নিয়ে যে বিরোধ সৃষ্টি হলো তা শেষপর্যন্ত আদালতের রায়ের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে। আর এই রায় হবে রামকানাইয়ের জবানবন্দীর উপর। রামকানাই নবদ্বীপের বাবা। নবদ্বীপের আশা ছিল রামকানাই তার পক্ষেই সাক্ষ্য দেবে। নবদ্বীপ তার বিরোধী সমস্ত সাক্ষীকে অর্থলোভও ভয় দেখিয়ে নিজের পক্ষে নিয়ে আসে। মকদ্দমার দিন রামকানাই যে সাক্ষী দেয় তা নবদ্বীপের বিপক্ষে ছিল। ফলে বরদাসুন্দরীর পক্ষেই মকদ্দমা আসে। নবদ্বীপের বিপক্ষে আদালতে রায় যাওয়ার কারণ আবিষ্কার করে বন্ধুরা চুলচেরা বিশ্লেষণে নেমে পড়ে। তাদের মতে রামকানাইয়ের মত বুদ্ধিহীন ব্যক্তি আস্থ শহরে নেই। কারণ সে নিজের ছেলের বিপক্ষে গিয়ে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে।

১১। “গোলাম হাজির, এখন মহারাণীর কি অনুমতি হয়।” – কে, কাকে, কোন প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করেছেন ?

উত্তরঃ রামকানাই তার হাতে গুরুচরণের উইল তৈরি করেন। রামকানাই গুরুচরণের কথায় যখন সে জেনেছে গুরুচরণ তার সমস্ত সম্পত্তি স্ত্রী বরদাসুন্দরীকে দিয়েছেন তখন তার মনে কষ্ট হয়। গল্পে তার মনের এই কষ্টের বহিঃপ্রকাশ লক্ষ্য করা যায় না। উইলের কথা রামকানাইর   স্ত্রী ও ছেলে নবদ্বীপ যখন জানতে পারে তখন তারা বেজায় চটে ওঠে। মা- ছেলে যুক্তি করে বরদাসুন্দরীর বিপক্ষে উইলজালের অভিযোগ এনে আদালতে মকদ্দমা করে। নবদ্বীপ তার মকদ্দমা জেতার জন্য যাবতীয় কৌশল করে। রামকানাই এই ক্ষেত্রে বাধা হবে তাই তাকে কাশী পাঠিয়ে দেয়। প্রয়োজনে কাশী থেকে বাড়ি এসে যখন জানতে পারে উইলকে নিয়ে বিবাদ শুরুহয়ে গেছে তখন তার মানসিক কষ্টবোধ হয়। রামকানাই তার স্ত্রীকে ভয় পায় কোনো কিছুতেই উত্তর দেয়না। রামকানাই বুঝে স্ত্রীর কাছে সে ‘গোলাম জীবন কাটাচ্ছে’। তাই রামকানাই কাশী থেকে ফিরে এসে স্ত্রীকে রসিকতায় উপরিউক্ত উক্তিটি করেছেন।

১২। ‘রমণীর মুখে মধু, হৃদয়ে ক্ষুর’ – কে, কাকে উদ্দেশ্য করে, কোন প্রসঙ্গে উক্তিটি করেছে ?

উত্তরঃ রামকানাই তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে এই উক্তিটি করেছেন।

উইলকে কেন্দ্র করে যে পারস্পরিক অভিযোগ তৈরি হয়েছিল তাতে প্রধান সমস্যার কারণ হিসেবে রামকানাইকে কাশী যেতে হয়েছে। তার স্ত্রী ও পুত্র নবদ্বীপ কৌশল করে পাঠিয়েছে। কাশী থেকে রামকানাই ফিরে এসে স্ত্রীর সঙ্গে পরিহাস করে বলে, “গোলাম হাজির এখন মহারাণীর কি অনুমতি হয়।” তখন রামকানাইয়ের স্ত্রী তার একথা শুনে অভিযোগ করে বলেন, এতদিন কাশীতে কাটিয়ে আসলে তার কথা একদিনও মনে পড়েনি। উভয় পক্ষে অনেকক্ষণ ধরে পরস্পরের নামে আদরের অভিযোগ চলতে থাকে। তাদের রসালাপের মধ্যে ফুটে ওঠে পুরুষ-নারীর দ্বন্দ্ব। নবদ্বীপের মা পুরুষের ভালোবাসার সংগে মুসলমানের মুরগি বাৎসল্যের তুলনা করেছেন। রামকানাই এই বিষয়টির প্রত্যুওরেই উপরিউক্ত উক্তিটি করেছেন।

১৩। “মামাতো ভাই ছুটিয়া গিয়া দিদিকে বলিল, বুড়ো সমস্ত মাটি করিয়াছিল – আমার সাক্ষ্যে মকদ্দমা রক্ষা পায়।” – বুড়ো কে ? ঘটনাটি সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ বুড়ো হল নবদ্বীপের বাবা রামকানাই।

বরদাসুন্দরীকে তার গপোষ্য মামাতো ভাই এই কথা বলেছিল।

তার সাক্ষ্যে মকদ্দমা রক্ষা পায়নি। বরদাসুন্দরীকে বলে এসেছে সে তার দিকে সাক্ষ্য দিবে। কিন্তু সে তার কথা রাখেনি। নবদ্বীপ ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে তাকে তার পক্ষে নিয়ে আসে। শেষ পর্যন্ত রামকানাইয়ের সাক্ষ্যতে বরদাসুন্দরীর পক্ষে মামল যায় । কিন্তু সে গিয়ে দিদিকে বলে তার সাক্ষ্যে বরদাসুন্দরী মামলা জিতেন।

১৪। ‘মরণকালে বুদ্ধি নাশ হয়। এমন সোনার চাঁদ ভাইপো থাকতে ……….’ উক্তিটি কার ? সোনার চাঁদ ভাইপোটি কে ?

উত্তরঃ উক্তিটি রামকানাইয়ের স্ত্রীর। ভাইপোটি হল রামকানাইয়ের পুত্র নবদ্বীপচন্দ্ৰ।

সংক্ষিপ্ত টীকা লিখ

১। নবদ্বীপ: রামকানাইয়ের পুত্র সে। কিন্তু রামকানাইয়ের চরিত্রের ছিটেফোটাও নবদ্বীপের মধ্যে লক্ষ্য করা যায় না। জ্যাঠামশাইয়ের সম্পত্তির অংশ না পেয়ে নবদ্বীপ সম্পত্তি উদ্ধারের জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। বরদাসুন্দরীর বিপক্ষে উইলজালের অভিযোগ এনে মামলা করেছে। লোভ ও ভয় দেখিয়ে সাক্ষীদের নিজের পক্ষে আনার চেষ্টা করেছে। তাছাড়া বাবাকে অনেক ক্ষেত্রেই অনাবশ্যক বলে মনে করেছে।

২। গুরুচরণ: গুরুচরণ গল্পটির একটি সাধারণ চরিত্র। এই চরিত্রের আভ্যন্তরীণ ঘাত-প্রতিঘাত গল্পে প্রকাশিত না হওয়ায় চরিত্রটি সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। গল্পের প্রথমদিকে খুব অল্প সময়ের জন্য গুরুচরণের উপস্থিতি। গুরুচরণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রেখে মারা যান। মৃত্যুশয্যা থেকে মৃত্যু এই কিছুক্ষণের জন্যই গুরুচরণের উপস্থিতি রয়েছে গল্পে। মৃত্যুর আগেই তার সহায় সম্পত্তি ধর্মপত্নী বরদাসুন্দরীকে দিয়ে যান।

৩। রামকানাইয়ের স্ত্রীঃ রামকানাইয়ের স্ত্রীর কোনো নির্দিষ্ট নাম নেই গল্পে। স্ত্রীর কথামতো রামকানাইয়ের সংসার চলতো। স্ত্রীর প্রতি রামকানাইয়ের যে শ্রদ্ধা তা ভয়ের। উইল রামকানাই কোনো কারসাজি না করায় তার স্ত্রী তাকে শাসায়। তার পুত্র নবদ্বীপ, মায়ের নির্দেশ‌ই নবদ্বীপ উইলজালের অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করে। মামলার ক্ষেত্রে রামকানাই  সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে বলে তাকে কাশীতে পাঠিয়ে দেয়। কাশী থেকে ফিরে আসার পর রামকানাই স্ত্রীর সঙ্গে রসিকতা করতে গেলে সে পুরুষের ভালোবাসার সঙ্গে মুসলমানের মুরগি বাৎসল্যের তুলনা করেছেন। সুতরাং দেখা যাচ্ছে রামকানাইয়ের স্ত্রী পৌরষধর্মী ব্যক্তিত্ব। এছাড়া লোভী, স্বার্থপরতা তার চরিত্রের আরেকটি বিশেষ দিক।

৪। বরদাসুন্দরী: বরদাসুন্দরী গল্পের একটি চরিত্র। সে গুরুচরণের ধর্মপত্নী। তার নামেই গুরুচরণ সমস্ত সম্পত্তি উইল করে দিয়ে যান। স্বামীর মৃত্যুতে বরদাসুন্দরী কেঁদেছেন কিন্তু তার এই কান্না কৃত্রিম ছিলনা। দেখা যায় রাইচরণ যখন উইল দিতে আসেন তখন বরদাসুন্দরী কেঁদে  ভাসিয়েছেন। স্বামীর উদ্দেশ্যে বলেছেন – “ওগো, তেমন যত্ন করে আমাকে আর কে দেখবে, আমার দিকে কে মুখ তুলে চাইবে গো।”

বরদাসুন্দরীকে সম্পত্তি দেওয়াকে কেন্দ্র করে গল্পটি বিস্তার লাভ করে। গল্পে দেখা যায় বরদাসুন্দরীকে গুরুচরণ সম্পত্তি উইল করে দিয়ে গেলে নবদ্বীপ তার নামে উইলজালের অভিযোগ করে আদালতে। তার পক্ষে সাক্ষী দেওয়ার কেউ  ছিলনা । শুধু তার গৃহপোষ্য মামাতো ভাই। কিন্তু নবদ্বীপ ভয় ও প্রলোভন দেখিয়ে তার ভাইকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসে। শেষপর্যন্ত রামকানাইয়ের সাক্ষ্যে বরদাসুন্দরী মামলা জিতলেন। গল্পে তার চারিত্রিক দিক তেমন ভাবে ফুটে ওঠেনি। তার সম্পত্তি দেওয়াকে কেন্দ্র করে গল্পটি বিস্তার লাভ করেছে।

৫। রামকানাই – গল্পের মুখ্য চরিত্র রামকানাই। তার নামেই গল্পের নামকরণ। গুরুচরণের ভাই রামকানাই। দাদাকে সে খুব ভালোবাসে। গুরুচরণ যখন মৃত্যুশয্যায় তখন রামকানাই দাদার পাশে বসে দাদার জন্য দুঃখী হয়েছে। ডাক্তার ডেকে এনেছে। আবার দাদা মারা গেলে সম্পত্তি নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হবে বলে সন্দেহ করে দাদাকে উইল করার কথা মনে করিয়ে দেয়। তার আশা পুত্র নবদ্বীপও দাদার সম্পত্তির কিছু অংশ পাবে। তাই ইচ্ছে করে নিজহাতে উইল লিখেন, কিন্তু কিছু না পাওয়ায় ব্যথিত হন। তাই বলে দাদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেননি। সংসারের কর্তা রামকানাই হওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর কথাই সংসারের শেষ কথা। স্ত্রীর ভয়ে সে কাতর থাকে। কোন কাজের ব্যাপারে রামকানাই হস্তক্ষেপ করেননা। সে জানে হস্তক্ষেপ করলে হিতে বিপরীত হয়ে উঠবে। স্ত্রীর মতামতের সমালোচনা করেননা, ভুল-ঠিক ধরিয়ে দেননা, স্ত্রী-পুত্রের যাবতীয় শাসানি সে সহ্য করেন, দুঃখে লুকিয়ে কাঁদেন। স্ত্রী ও পুত্র বুদ্ধি করে রামকানাইকে কাশী পাঠিয়ে দেয় মকদ্দমা জেতার জন্য। রামকানাই কাশী থেকে ফিরে এসে নবদ্বীপ ও তার স্ত্রীর সম্পত্তিবিষয়ক সমস্ত চক্রান্ত জানতে পেরে দুঃখ পান তিনি সৎ, সরল। তাই সুযোগ সত্ত্বেও দাদার সম্পত্তি দখল করার প্রয়াস করেননি। স্ত্রী-পুত্রের বিপক্ষে গিয়ে সত্যের দিকেই সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে। সত্য ঘটনার স্পষ্ট উচ্চারণেও শেষ পর্যন্ত স্ত্রী-পুত্রের কাছে নির্বোধ সেজেছেন।

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ ছোট গল্পটি কার রচনা ?

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের।

২। রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ ছোট গল্পটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত ?

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের ‘গল্পগুচ্ছ’ গ্রন্থের অন্তর্গত।

৩। রামকানাইয়ের বড় ভাইয়ের নাম কী ছিল ?

উত্তরঃ গুরুচরণ।

৪। ‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম কী ?

উত্তরঃ রামকানাই।

৫। গুরুচরণের প্রথমপক্ষের স্ত্রীর নাম কি ?

উত্তরঃ বরদাসুন্দরী।

৬। বরদাসুন্দরী কে ?

উত্তরঃ গুরুচরণের প্রথম স্ত্রী।

৭। “আমার স্থাবর-অস্থাবর সমস্ত বিষয় সম্পত্তি আমার ধর্মপত্নী বরদাসুন্দরীকে দান করিলাম।” কার উক্তি ?

উত্তরঃ গুরুচরণের উক্তি।

৮। “দেখিব মুখাগ্নি কে করে।” – কার উক্তি ?

উত্তরঃ রামকানাইয়ের পুত্র নবদ্বীপের উক্তি।

৯। গুরুচরণ কার ছাত্র ছিলেন ?

উত্তরঃ ডফ সাহেবের।

১০। “রমণীর মুখে মধু, হৃদয়ে ক্ষুর।” – উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ উক্তিটি রামকানাইয়ের।

১১। “মরণকালে বুদ্ধি নাশ হয়।” – উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ উক্তিটি রামকানাইয়ের স্ত্রীর।

১২। ‘সে আমাদের কপালের দোষ।’ উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ রামকানাইয়ের উক্তি।

১৩। রামকানাইয়ের ছেলের নাম কী ?

উত্তরঃ নবদ্বীপ।

১৪। “ওগো, আমার কী, সর্বনাশ হল গো, কী সর্বনাশ হল।” – উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ উক্তিটি বরদাসুন্দরীর।

১৫। রামকানাইকে তার স্ত্রী ও পুত্র কোথায় পাঠিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ কাশী।

১৬। ‘‘হুজুর, আমি বৃদ্ধ, অত্যন্ত দুর্বল। অধিক কথা কহিবার সামর্থ্য নাই উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ উক্তিটি রামকানাইয়ের।

১৭। গুরুচরণের মৃত্যুর সময় তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী কী করছিল ?

উত্তরঃ তাস খেলতে ছিলেন।

১৮। ‘বউ ঠাকুরাণী, দাদা তোমাকেই সমস্ত বিষয় দিয়া গিয়াছেন’ – বক্তা কে ? তিনি কাকে ‘বউ ঠাকুরাণী’ বলে সম্বোধন করেছেন ?

উত্তরঃ বক্তা রামকানাই, তিনি বউ ঠাকুরাণী বলতে বরদা সুন্দরীকে সম্বোধন করছেন, যিনি তাঁর বৌদি।

১৯। গুরুচরণ কার ছাত্র ছিলেন ?

উত্তরঃ গুরুচরণ ডফ্ সাহেবের ছাত্র ছিলেন।

২০। গুরুচরণের পত্নীর নাম কী ?

উত্তরঃ বরদা সুন্দরী।

২১। ‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ গল্পে কে, কাকে নিজের বিষয় সম্পত্তি উইল করেছিলেন ?

উত্তরঃ ‘রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা’ গল্পে গুরুচরণ, তাঁর স্ত্রী বরদাসুন্দরীর নামে বিষয় সম্পত্তি উইল করেছিলেন।

২২। “বাই জোভ! লোকটাকে কেমন ঠেসে ধরেছিলুম। – বক্তা কে ? লোকটিই বা কে ?

উত্তরঃ বক্তা চতুর ব্যারিষ্টার, লোকটি রামকানাই।

FAQs

Question: Where I can get Assam AHSEC Board Class 11 Advance Bengali Suggestion Chapter Wise?

Answer: You can get Assam AHSEC Board Class 11 Advance Bengali Suggestion Chapter Wise On Roy Library. For every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly.

Question: Which is the best Site to get Assam AHSEC Board Class 11 Advance Bengali Solutions?

Answer: Roy Library is a genuine and worthy of trust site that offers reliable information regarding Assam AHSEC Board Class 11 Advance Bengali Solutions.

Question: How can students use the solutions for exam preparation?

Answer: Students can use the solutions for the following:

  • Students can use solutions for revising the syllabus.
  • Students can use it to make notes while studying.
  • Students can use solutions to understand the concepts and complete the syllabus.

IMPORTANT NOTICE

We have uploaded this Content by Roy Library. You can read-write and Share your friend’s Education Purposes Only. Please don’t upload it to any other Page or Website because it is Copyrighted Content.

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top