Class 11 Political Science Chapter 11 রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Political Science Chapter 11 রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 11 রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 11 রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Political Science Chapter 11 রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question in Bengali Class 11 Political Science Chapter 11 রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, Class 11 Political Science Chapter 11 রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.

প্রশ্ন ৩। রাজনীতি বিজ্ঞান বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ অ্যারিস্টটল রাজনীতি বিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক। ‘Politics’ শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘Politicus’ হতে উদ্ভব হয়েছে। ‘Politicus’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Polis’ হতে গৃহীত হয়েছে। গ্রিক ভাষায় ‘Polis’ শব্দের অর্থ হল ‘নগর–রাষ্ট্র’ বা ‘City–State’। প্রাচীন গ্রিকরা ‘নগর–রাষ্ট্র’ বা ‘Polis’-এর বিভিন্ন কার্যকলাপ আলোচনা কালে ‘Politika’ শব্দের ব্যবহার করেছিলেন। ‘Politics’ শব্দকে বর্তমানে ‘Political science’ বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা রাজনীতি বিজ্ঞান বলা হয়।

বিভিন্ন রাজনৈতিক চিন্তাবিদের সংজ্ঞা বিশ্লষণ করে বলা যায় যে রাজনীতি বিজ্ঞান হল রাষ্ট্র ও সরকার, ক্ষমতা, রাজনৈতিক কার্যকলাপ, রাজনৈতিক পদ্ধতি, প্রতিষ্ঠান প্রভৃতির তত্ত্বগত অধ্যয়নের বিষয়বস্তু।

প্রশ্ন ৪। রাজনীতি বিজ্ঞান কি বিজ্ঞান? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দেখাও? 

উত্তরঃ পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ, গবেষণা ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিগুলোর সাহায্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাষ্ট্রের সৃষ্টি, কার্যাবলী, সরকার ও শাসিতের সম্পর্কে তথ্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করা হয়। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল 158টি রাষ্ট্রের সংবিধান পর্যালোচনা করেছিলেন। এক্ষেত্রে তিনি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের ন্যায় রাজনীতি বিজ্ঞান অধ্যয়ন করেছিলেন। বিজ্ঞানীদের গবেষণা করার জন্য গবেষণাগার থাকে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের জন্য আমাদের এই বিশ্বই গবেষণাগার। এখানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিষয়ের শ্রেণীভাগ, বিশ্লেষণ, ও পর্যবেক্ষণ করে কিছু সাধারণ সূত্র প্রতিষ্ঠা করেন যা রাষ্ট্রবিজ্ঞানে প্রযুক্ত হতে পারে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা অযৌক্তিক নয়।

৫। “রাজনীতি বিজ্ঞান বিজ্ঞান নয়”। এর স্বপক্ষে কারণ দর্শাও?

উত্তরঃ রাজনীতি বিজ্ঞানের সংজ্ঞা, পরিসর, নীতি–আদর্শ বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে সকল রাজনীতি চিন্তাবিদদের ধারণা বা চিন্তাধারা এক নয়। বিজ্ঞানীদের প্রদত্ত বৈজ্ঞানিক সূত্রের মতো রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের সর্বজন গ্রাহ্য নির্দিষ্ট কোন সূত্র বা ধারণা নেই। রাষ্ট্রবিজ্ঞান মানুষের আচার আচরণ পর্যবেক্ষণ করে। কিন্তু প্রতিটি মানুষের আচার–আচরণ ভিন্ন ধরনের। পদার্থবিদ্যা বা রসায়নবিদ্যার মতো রাষ্ট্রিবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ ও শ্রেণীবিন্যাস করে আলোচনা করা সম্ভব নয়। এজন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান নয়। 

প্রশ্ন ৬। রাজনীতিতে ছাত্রদের কি করা উচিত? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে কারণ দর্শাও?

উত্তরঃ রাজনীতি নিঃসন্দেহে প্রতিটি ব্যাক্তির জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এর অর্থ এই নয় যে সকলেরই রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করা উচিত। কারণ ছাত্রজীবন অধ্যয়নের সময়। ছাত্ররা সাধারণত এসময় অপরিণত থাকে। তারা রাজনীতির জটিলতা ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারে না। তাছাড়া ছাত্ররা আবেগ প্রবণ হয়। আর রাজনীতিতে আবেগের কোন স্থান নেই। যদি ছাত্ররা সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করে, তবে তারা নোংরা রাজনীতিবিদদের দ্বারা বিপথগামী হবে। অবশ্য ছাত্রদের রাজনীতির বিষয়বস্তু পড়া ও শেখা উচিত। কারণ রাজনীতির বিষয়বস্তু সম্পর্কে ছাত্রদের জ্ঞান থাকা আবশ্যক। তবে সক্রিয় রাজনীতিতে তাদের অংশ গ্রহণ করা উচিত নয়। কারণ ছাত্রদের শিক্ষালাভে সক্রিয় রাজনীতি একটি প্রধান অন্তরায়।

প্রশ্ন ৭। রাজনীতি তত্ত্ব অধ্যয়ন কীভাবে আমাদের কাছে প্রয়োজনীয়?

অথবা,

রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়নের চারটি দিক উল্লেখ করো যা আমাদের প্রয়োজনীয় হতে পারে?

অথবা,

রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়ন নিম্নলিখিত কারণে আমাদের কাছে প্রয়োজনীয়ঃ

(ক) রাজনৈতিক তত্ত্ব আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুধাবন করতে সহায়তা করে। রাজনৈতিক তত্ত্ব সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকলে আমরা রাজনীতির ত্রুটিগুলো ধরতে পারি।

(খ) রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনীতিবিদ, নেতা, শাসক, নাগরিক সকলের জন্য উপকারি। তাই রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়ন সমাজের সকল শ্রেণীর জন্য প্রয়োজনীয়। 

(গ) রাজনৈতিক তত্ত্ব গবেষকদের কাছে মূল্যবান। কারণ রাজনৈতিক তত্ত্বগুলো গবেষকদের অতি অল্প সময়ে এবং সহজ উপায়ে তাদের কাজ সম্পাদন করতে সহায়তা করে। 

(ঘ) রাজনৈতিক তত্ত্ব আমাদিগকে সমাজ পরিবর্তনের কারণসমূহ ও তার প্রকৃতি উপলব্ধি ও ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে। এছাড়া সমাজ পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক ও তার প্রভাব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা প্রদান করে।

প্রশ্ন ৮। “সাম্যের অধিকার সবার সমান সুযোগের নিশ্চয়তা প্রদান করে।”– মতামত দাও? 

উত্তরঃ সাম্যের অর্থ হচ্ছে সবার সমান সুযোগ–সুবিধা পাওয়া। সমাজে সকল ব্যক্তির সমান পদ মর্যাদা থাকে না। শারীরিক, অর্থনৈতিক বা সামাজিক দিক দিয়ে সমাজের সকল মানুষ সমান নয়। তাই সাম্যের অধিকার সকলকে সমান সুযোগের নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে না। অসমর্থ বা দরিদ্র মানুষদের বিশেষ সুবিধা না দিলে সাম্যের অধিকার অর্থহীন হয়ে পড়ে। সমাজের সকল মানুষের অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক অবস্থা সমান হয় না। তাই সকলের জন্য সমান সুযোগের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হলে ইতিবাচক অর্থে সাম্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে অর্থাৎ অক্ষম ও দুর্বল শ্রেণীর জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে হবে।

প্রশ্ন ৯। ডাঃ আম্বেদকর সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো?

উত্তরঃ ডঃ বি. আর. আম্বেদকর সংবিধানের খসড়া কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি ভারতীয় সমাজের অবহেলিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষের বিশেষ করে অনুসূচিত সম্প্রদায়ের মানুষদের উন্নতি কল্পে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় অস্পৃশ্য ও নির্যাতিত অনুসূচিত জাতির সামাজিক ও অর্থনৈতিক দুর্দশাকে তাঁর রচিত বিখ্যাত কিছু গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হল– “Castes in India: Their Mechanism, Genesis and development”, “who were sudras?” এবং “The Untouchables”. 

প্রশ্ন ১০। কীভাবে রাজনীতি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ মিমাংসা করার একটি উপায়?

উত্তরঃ রাজনীতি হল আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাজ বা গোষ্ঠীর বিবাদ মিমাংসা করার একটি অন্যতম উপায়। সমাজে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে স্বার্থ সম্পর্কিত ঝগড়া–বিবাদ আছে। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু সাধারণ স্বার্থও আছে যা সকল গোষ্ঠীর কাছেই গ্রহণযোগ্য। রাজনীতি সেই সাধারণ স্বার্থগুলো রক্ষা ও উন্নত করতে সচেষ্ট থাকে। এই প্রক্রিয়া ঝগড়া–বিবাদ মিমাংসা করার একটি উপায়। রাজনীতি সমাজের গোষ্ঠীগুলোকে তাদের স্বার্থ সম্পর্কিত সমস্যা বা মতভেদগুলোকে গ্রহণযোগ্য মীমাংসা বা নিষ্পত্তির পথ খোঁজে বের করতে সহায়তা করে। রাজনীতি সমাজের নিরাপত্তা ও ন্যায় রক্ষারও কাজ করে।

প্রশ্ন ১১। শ্রেণী সংগ্রামের তিনটি বৈশিষ্ট্য লেখো? 

উত্তরঃ শ্রেণী সংগ্রাম এর তিনটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ

(ক) পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে শ্রেণী সংগ্রাম পরিলক্ষিত হয়। এটি দুটি বিপরীত শ্রেণীর মধ্যে সংগ্রাম।

(খ) উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যক্তিগত মালিকানা থাকার দরুন শ্রেণী দুটির সৃষ্টি হয়েছে।

(গ) শ্রেণী সংগ্রামের ফল হল শ্রমিক শ্রেণীর (Working Class), সাফল্য। তারপর শ্রমিক শ্রেণীর একনায়কত্ববাদ প্রতিষ্ঠা। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের অস্তিত্বের বিলুপ্তি সাধন। 

প্রশ্ন ১২। রাজনীতি অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো?

অথবা,

রাজনীতি অধ্যয়নের আবশ্যকতা কী?

উত্তরঃ গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, “মানুষ রাজনৈতিক জীব”। তাই রাজনীতি বিজ্ঞান অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। রাজনীতি বিজ্ঞান অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তার কারণ নিম্নরূপঃ

(ক) রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের দ্বারা যে কোনো লোক রাষ্ট্র সম্পর্কে অনেক তথ্য আহরণ করতে পারে। এছাড়া আমরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়ন করে রাষ্ট্রের কার্যকলাপ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য আহরণ করতে পারি। 

(খ) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা রাজনীতি বিজ্ঞান অধ্যয়ন আমাদের সুনাগরিক হওয়ার শিক্ষা প্রদান করে। সুতরাং রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের আবশ্যকতা অপরিসীম। 

প্রশ্ন ১৩। রাজনৈতিক তত্ত্বের প্রকৃতি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো? 

উত্তরঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করে। এটি রাজনীতি বিজ্ঞানের একটি শাখা। এটি সমাজের পরিবর্তন ও এর প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করে। রাজনৈতিক তত্ত্ব আদর্শ সমাজ তথা আদর্শ রাষ্ট্র নির্মাণের ব্যাখ্যা প্রদান করে। রাজনৈতিক তত্ত্ব আংশিক ইতিহাস, আংশিক দর্শন ও আংশিক বিজ্ঞান স্বরূপ রাজনীতি বিজ্ঞানের আলোচনা ও ব্যাখ্যা প্রদান করে। এক কথায় রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনীতি সম্পর্কিত সকল কিছুর ব্যাখ্যা করে। 

প্রশ্ন ১৪। রাজনীতি তত্ত্বের বৈশিষ্ট্যসমূহ ব্যাখ্যা করো? 

উত্তরঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল মানুষকে ‘রাজনৈতিক জীব’ বলেছেন। তাই রাজনীতি তত্ত্বের পরিসর ব্যাপক। রাজনীতি তত্ত্বের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) রাজনৈতিক তত্ত্ব মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্রের ব্যাখ্যা প্রদান করে। 

(খ) রাজনৈতিক তত্ত্ব রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি শাখা।

(গ) রাজনৈতিক তত্ত্ব সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কেই কেবলমাত্র ব্যাখ্যা প্রদান করে না; এটি সমাজ পরিবর্তনের উপায়ও খোঁজে। 

(ঘ) রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে।

(ঙ) রাজনৈতিক তত্ত্ব সম্পূর্ণভাবে ইতিহাস বা দর্শন বা বিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়গুলোর ব্যাখ্যা প্রদান করে না। এটি ইতিহাস, দর্শন ও বিজ্ঞানের সঙ্গে সম্পর্কিত কেবল রাজনৈতিক বিষয়গুলোর তত্ত্বমূলক ব্যাখ্যা প্রদান করে। 

(চ) বর্তমানে রাজনৈতিক তত্ত্ব বাস্তব ঘটনা ও তথ্যাদির বিষয়ে অধ্যয়ন অন্তর্ভুক্ত করে। তাই রাজনৈতিক তত্ত্ব ব্যবহারিক ও ব্যাখ্যামূলক হিসেবে ভূমিকা পালন করে। 

প্রশ্ন ১৫। “রাজনীতি বিজ্ঞান” বা “রাষ্ট্রবিজ্ঞান” শব্দের উৎস সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তরঃ রাজনীতি বিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটল সর্বপ্রথম রাজনীতি (Politics) শব্দটি তাঁর প্রসিদ্ধ গ্রন্থের শিরোনাম (Title) রূপে গ্রহণ করেছিলেন। ‘রাজনীতি’ বা ইংরেজি Politics শব্দটি ল্যাটিন শব্দ Politicus (পলিটিকাস) হতে উদ্ভব হয়েছে। Politicus শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Polis’ হতে গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রিক শব্দ ‘Polis’ – এর অর্থ হল ‘নগর রাষ্ট্র’ বা ‘ City–State’। প্রাচীন গ্রিকরা ‘নগর–রাষ্ট্র’ বা ‘City–State’-এর বিভিন্ন কার্যকলাপ আলোচনার জন্য ‘Politika’ শব্দের ব্যবহার করত। বর্তমানে অ্যারিস্টটল প্রদত্ত ‘Politics’ শব্দকে ‘Political Science’ বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলা হয়।

প্রশ্ন ১৬। “রাজনীতি বিজ্ঞান আমাদের সুনাগরিক হওয়ার শিক্ষা প্রদান করে।”- ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের রাজনীতি বিজ্ঞান সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকা অতি আবশ্যক। জীবনের অতি প্রয়োজনীয় বিষয়, যেমন– স্বাধীনতা, সমতা, অধিকার, ধর্ম–নিরপেক্ষতা প্রভৃতি সম্পর্কে আমাদের সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকা একান্ত আবশ্যক। রাজনীতি বিষয়ে নতুন নতুন ধ্যান–ধারণা অর্জনের মাধ্যমে আমরা সুনাগরিকের গুণাবলী অর্জনের অধিকারী হই। ন্যায় ও সমতা সম্পর্কে রাজনীতি বিজ্ঞান আমাদের গভীর জ্ঞান প্রদান করে। তাই আমরা রাজনৈতিক ভাবে সচেতন হতে সক্ষম হই। রাজনীতি বিজ্ঞান এইভাবে আমাদের সুনাগরিক হতে শিক্ষা প্রদান করে। সুনাগরিক একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল্যবান সম্পদ।

প্রশ্ন ১৭। আধুনিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের চারটি সীমাবদ্ধতা লেখো?

উত্তরঃ বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের পরিধি ক্রমশই প্রসারিত হচ্ছে। তথাপি রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের আধুনিক পদ্ধতির কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। 

উক্ত সীমাবদ্ধতা গুলি নিম্নরূপঃ

(ক) আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নে নৈতিকতাকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে। 

(খ) আধুনিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়ন অন্যান্য সমাজবিজ্ঞানগুলোর উপর অধিক নির্ভরশীল। 

(গ) মানুষের আচার–আচরণ বৈজ্ঞানিকভাবে অধ্যয়ন বা পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। 

(ঘ) আধুনিক পদ্ধতিতে রাজনীতি বিজ্ঞান অধ্যয়নের সময় দার্শনিক তত্ত্বগুলোকে অবহেলা করা হচ্ছে।

প্রশ্ন ১৮। রাজনীতি বিজ্ঞানের বিষয়বস্তুতে অন্তর্ভুক্ত করা যে কোনো চারটি বিষয় উল্লেখ করো?

উত্তরঃ রাজনীতি বিজ্ঞানের বিষয়বস্তুর পরিসর সম্পর্কে বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ বিভিন্ন মতামত শোষণ করেন। কতিপয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাজনীতি বিজ্ঞানের পরিসরকে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করেছেন। 

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুতে অন্তর্ভুক্ত বিষয় চারটি নিম্নরূপঃ

(ক) রাজনীতি বিজ্ঞানে রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্ক এবং রাষ্ট্রের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

(খ) রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সমূহ, আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগ প্রভৃতি সরকারের অঙ্গগুলোর অধ্যয়ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু। 

(গ) বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জনমত, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে আলোচনা রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের বিষয়বস্ত্ত। 

(ঘ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক আইন প্রভৃতি বিষয়গুলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের অন্তর্গত।

(ঙ) ক্ষমতা, প্রভাব, কর্তৃপক্ষ প্রভৃতি বিষয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের অন্তর্ভুক্ত। 

প্রশ্ন ১৯। রাজনৈতিক তত্ত্বের বিষয়বস্তুতে অন্তর্ভুক্ত করা যে কোনো চারটি বিষয় সম্পর্কে লেখো?

উত্তরঃ রাজনৈতিক তত্ত্বের বিষয়বস্তুতে অন্তর্ভুক্ত চারটি বিষয় নিম্নরূপঃ 

(ক) রাষ্ট্র ও সরকার হল রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল বিষয়।

(খ) রাজনৈতিক তত্ত্ব ক্ষমতা ও রাজনৈতিক আদর্শবাদ অধ্যয়ন অন্তর্ভুক্ত করে। 

(গ) রাজনৈতিক তত্ত্ব নানা প্রকার আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করে।

(ঘ) রাজনৈতিক তত্ত্বের আলোচনা উদ্দেশ্যমূলক। 

বর্তমান সমাজে ক্ষমতার ভিত্তি, বৈধ কর্তৃপক্ষ ও ক্ষমতা প্রয়োগের ফলাফল অনুসন্ধান করাই হল রাজনৈতিক তত্ত্বের মূল উদ্দেশ্য। সুতরাং রাজনৈতিক তত্ত্ব রাষ্ট্রের উদ্ভব, ক্রমবিকাশ ও ভবিষ্যৎ প্রভৃতির আলোচনা করে। 

প্রশ্ন ২০। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যয়নের পরিধি সম্পর্কে সাম্প্রতিককালের মতামত আলোচনা করো?

উত্তরঃ সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্র ও সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক আলোচনাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একমাত্র বিষয় বলে মানতে রাজি নন। আধুনিক রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনার বাস্তব দিকের উপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তারা সমাজ ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সংগঠন ও বিভিন্ন শক্তির প্রভাবে মানুষের আচার–আচরণের ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়ার সম্যক রূপটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে চান। আধুনিক রাজনৈতিক চিন্তাবিদরা রাষ্ট্র ও সরকারের আলোচনা ছাড়াও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও এর পেছনের বিভিন্ন প্রভাবের বিশ্লেষণও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয় বলে মনে করেন। বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নের পরিসীমা অনেক প্রসারিত হয়েছে।

প্রশ্ন ২১। “রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাজনীতির তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক উভয়দিক আলোচনা করে।” মন্তব্যটির সত্যতা মূল্যায়ন করো? 

উত্তরঃ স্যার ফ্রেডারিক পোলক (Sir Frederick Pollock) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধিকে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক রাজনীতি এই দু শ্রেণীতে ভাগ করেছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান তত্ত্বগত দিক দিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারের উদ্দেশ্য, প্রকৃতি, উৎস প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু ব্যবহারিক রাজনীতি কেবল রাষ্ট্র ও সরকারের কার্যকলাপ নিয়েই আলোচনা করে। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বা রাজনীতি বিজ্ঞান রাজনীতির তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক উভয় দিক নিয়েই আলোচনা করে। 

প্রশ্ন ২২। অর্থনীতি ও রাজনীতি বিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক লেখো?

উত্তরঃ অৰ্থনীতি ও বিজ্ঞানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। প্রাচীন গ্রীসে অর্থনীতি ‘রাজনৈতিক অর্থনীতি” নামে প্রচলিত ছিল। অ্যাডাম স্মিথ অর্থবিজ্ঞানকে রাজনীতি বিজ্ঞানের শাখা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র’ রাজনীতি সম্পর্কিত অর্থনীতির একটি গ্রন্থ। বর্তমানে অর্থনীতি ও রাজনীতি বিজ্ঞান দুটি স্বতন্ত্র বিষয়। তথাপি দুটির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। কারণ দুটি বিষয়ের মুখ্য বিষয় হল জনগণের কল্যাণ সাধন।

রাজনৈতিক কার্যকলাপ একটি দেশের অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। একইভাবে একটি দেশের গৃহীত অর্থনৈতিক আদর্শ ও পরিকল্পনা সেই দেশের সরকারের প্রকৃতিকে তোলে ধরে। সুতরাং অর্থনীতি ও রাজনীতি বিজ্ঞান দুটি স্বতন্ত্র বিষয় হওয়া সত্ত্বেও উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। 

প্রশ্ন ২৩। ‘রাজনীতি যে কোনো একটি সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য অঙ্গ।’ আলোচনা করো?

উত্তরঃ মানুষ দু’ভাবে এক এবং অদ্বিতীয়। মানুষের বিচার শক্তি আছে এবং নিজেদের কর্মকে প্রতিফলিত করার ক্ষমতা আছে। রাজনীতি বলতে কী বোঝায় সে বিষয়ে মানুষের মনে বিভিন্ন রকমের ধারণার উদ্ভব হয়। এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে রাজনীতি আজকাল নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির সহায়ক হয়ে পড়েছে, সেটা যে কোনো ভাবেই হোক না কেন। কিন্তু রাজনীতি আসলে সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য অঙ্গ। মহাত্মা গান্ধী একবার বলেছিলেন যে রাজনীতি আমাদেরকে সাপের কুণ্ডলীর মতো জড়িয়ে আছে, লড়াই করে এর থেকে বেড়িয়ে আসা ছাড়া আর কোন গতি নেই। একটি সমাজ যদি স্থায়ীভাবে চলতে চায়, তবে তাকে তার সদস্যদের নানা ধরনের চাহিদা এবং স্বার্থকে গুরুত্ব দিতেই হবে। এজন্য প্রয়োজন হয়েছে নানা ধরনের সামাজিক প্রতিষ্ঠান। যেমন– পরিবার, গোষ্ঠী, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। এধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কীভাবে সরকার (Government) গঠন হয় এবং কীভাবে সরকার কাজ করে তাই রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু।

সংক্ষেপে, রাজনীতির উৎপত্তি হয়েছে যেখানে আমাদের প্রত্যেকের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আছে কোনটা ন্যায্য বা সঠিক বা কোনটা আমাদের সমাজে বাঞ্ছনীয়। রাজনীতি সমাজের বিভিন্ন আলোচনার সাথে জড়িয়ে আছে যার মাধ্যমে সংঘবদ্ধ সিদ্ধান্ত তৈরি হয়। সমাজের সার্বিক কল্যাণ সাধনে সুস্থ রাজনীতির একটি বিশেষ প্রভাব রয়েছে। 

প্রশ্ন ২৪। রাজনীতি বিজ্ঞান এবং অর্থনীতির মধ্যে দুটি পার্থক্য উল্লেখ করো?

উত্তরঃ রাজনীতি বিজ্ঞান এবং অর্থনীতির মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও রাজনীতি বিজ্ঞান ও অর্থনীতি দুটি স্বতন্ত্র বিষয়। রাজনীতি বিজ্ঞান কলা বিষয়ক এবং অর্থনীতি কলা ও রাণিজ্য উভয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। 

রাজনীতি বিজ্ঞান এবং অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য হল–

(ক) রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মূলত রাষ্ট্র এবং সরকার নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করা হয়। অন্যদিকে অর্থনীতি অর্থনৈতিক তত্ত্ব এবং আর্থিক কার্যকলাপ আলোচনা করে। 

(খ) অর্থনীতির অঙ্ক শাস্ত্রের সঙ্গে সম্পর্ক বিদ্যমান। সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা রাজনীতি বিজ্ঞানকে গভীরতা দিলেও অঙ্ক শাস্ত্রের উপযোগিতা রাজনীতি বিজ্ঞানে আবশ্যক নয়।

প্রশ্ন ২৫। “ইতিহাস ব্যতীত রাজনীতি বিজ্ঞান সারশূন্য, রাজনীতি বিজ্ঞান ব্যতীত ইতিহাস নিষ্ফল।” আলোচনা করো? 

উত্তরঃ অভিমতটি অধ্যাপক জন সীলীর। ইতিহাস এবং রাজনীতি বিজ্ঞানের পারস্পরিক সম্পর্ক আলোচনা করার সময় উক্ত অভিমতটি পোষণ করেন। ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর উপর নির্ভর করে রাজনীতি বিজ্ঞান তার অধ্যয়নের পরিসর বৃদ্ধি করে। তবে রাজনীতি বিজ্ঞান পুরোপুরি ইতিহাসের উপর নির্ভরশীল নয়। রাজনীতি বিজ্ঞান রাষ্ট্রের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে অধ্যয়ন করে। ইতিহাস কেবল রাষ্ট্রের অতীতের ঘটনাবলী লিপিবন্ধ করে রাখে। রাজনীতি বিজ্ঞানের অবদান ব্যতীত রাষ্ট্রের ঘটনাবলী শুধুই বর্ণনামূলক থেকে যেত। রাজনীতি বিজ্ঞান ইতিহাসের ঘটনাবলী থেকে রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য আহরণ করে বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনার মাধ্যমে সঠিক তথ্য পরিবেশন করে। রাজনীতি বিজ্ঞানের অধ্যয়ন ব্যতীত ইতিহাস শুধুই বর্ণনামূলক হিসেবে প্রতিভাত হয়। অতীতের রাজনৈতিক পদ্ধতি, রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি জানবার জন্য ইতিহাসের ছাত্রকে রাজনীতি বিজ্ঞান অবশ্যই অধ্যয়ন করতে হবে। রাজনীতি বিজ্ঞান ইতিহাসের পরিপুরক। রাষ্ট্রনায়করা ইতিহাস তৈরি করেন। ইতিহাস এবং রাজনীতি বিজ্ঞান গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং অধ্যাপক সীলীর উপরোক্ত অভিমতটি সঠিক।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। রাজনৈতিক তত্ত্বের সংজ্ঞা দাও। রাজনৈতিক তত্ত্বের পরিসর আলোচনা করো? 

অথবা,

রাজনৈতিক তত্ত্বের সংজ্ঞা লেখো। রাজনৈতিক তত্ত্বের বিষয়বস্তু সংক্ষেপে আলোচনা করো?

উত্তরঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি পৃথক শাখা। রাজনৈতিক তত্ত্ব রাষ্ট্র ও সরকারের সম্পর্কের তত্ত্বগত আলোচনা করে। এটি রাজনীতি চিন্তাবিদদের রাজনীতি তথা রাষ্ট্র সম্পর্কে প্রদত্ত চিন্তাধারা ও ব্যাখ্যামূলক বিশ্লেষণের সমষ্টি। এটি রাষ্ট্রের উৎস, ক্রমবিকাশ ইত্যাদির তত্বমূলক বা ব্যাখ্যামূলক ধারণা বা চিন্তাধারার সমষ্টি। এটি রাজনীতির ধারণা, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা নিয়ে আলোচনা করে। রাজনৈতিক তত্ত্বের পরিসর ও বিষয়বস্তু জটিল ও বিস্তৃত। রাজনৈতিক তত্ত্ব একটি প্রগতিশীল সমাজবিজ্ঞান। সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজনৈতিক তত্ত্বের বিষয়বস্তুও পরিবর্তিত হচ্ছে ও এর পরিসর ক্রমশই বর্ধিত হচ্ছে। 

রাজনৈতিক তত্ত্বে আলোচ্য বিষয়বস্তুগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) রাষ্ট্র ও সরকারের আলোচনাঃ রাষ্ট্র ও সরকারের আলোচনা রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়নের প্রধান বিষয়। রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করেই মানুষের রাজনৈতিক জীবন আবর্তিত হয় এবং ব্যক্তির প্রতিভার বিকাশ ঘটে ও নিরাপদ সমাজ জীবন প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজনৈতিক তত্ত্ব রাষ্ট্র ও সরকারের উৎস, প্রকৃতি ও কার্যাবলী আলোচনা করে। সরকারের মাধ্যমেই রাষ্ট্রের ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ হয়।

(খ) রাজনৈতিক মতাদর্শ আলোচনাঃ রাজনৈতিক তত্ত্বে আমরা রাজনৈতিক ধারণা ও নীতিগুলো করি। এই ধারণা ও নীতিগুলো সংবিধান রচনা, সরকার গঠন, ও সমাজ জীবন নিরাপদ করতে সহায়তা করে। রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনৈতিক মতাদর্শ সম্পর্কে আলোচনা করে। উল্লেখযোগ্য কিছু রাজনৈতিক মতাদর্শ হল – ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদ, সমাজবাদ, বৈজ্ঞানিক সমাজবাদ, উদারনীতিবাদ, গান্ধীবাদ, ও মার্ক্সবাদ।

(গ) রাজনৈতিক নীতির ধারণা ও সংজ্ঞা সমূহের আলোচনাঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনৈতিক শব্দ, ধারণা, সংজ্ঞা প্রভৃতির আলোচনা ও ব্যাখ্যা প্রদান করে। এটি স্বাধীনতা, সমতা, ন্যায়, গণতন্ত্র, ধর্ম–নিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ প্রভৃতি রাজনৈতিক বিষয়গুলোর সম্পর্কে ধারণা, অর্থ ও ব্যাখ্যা প্রদান করে। রাজনৈতিক তত্ত্ব অনুসন্ধান করে কিছু বিশেষ নীতির গুরুত্ব, যেমন আইনের নিয়ম (Rule of Law), ক্ষমতা পৃথকীকরণ (Separation of Power), বিচার সংক্রান্ত পুনর্বিচার (Judicial Review) ইত্যাদি।

(ঘ) বিতর্ক ও বিরোধ সম্পর্কে আলোচনাঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব রাষ্ট্রের ভেতরের বিভিন্ন মানুষের চিন্তাধারা, অনুভূতি ও স্বার্থ সম্পর্কিত নানাপ্রকার বিরোধ ও বিরোধের কারণ এবং এর সমাধান সূত্র বের করার জন্য আলোচনা করে।

(ঙ) আন্তর্জাতিক বিষয়ের আলোচনাঃ বর্তমানে আন্তর্জাতিক ঘটনা প্রবাহ জাতীয় জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করছে এবং রাজনৈতিক তত্ত্ব এই আন্তর্জাতিক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করতে বাধ্য হচ্ছে। 

প্রশ্ন ২। রাজনীতি বিজ্ঞানের পরিসর আলোচনা করো?

অথবা,

রাজনীতি বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু আলোচনা করো?

উত্তরঃ রাজনীতি বিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি বা পরিসীমার ব্যাপকতা সম্পর্কে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতভেদ বর্তমান কালে অধিকতর বৃদ্ধি পেয়েছে। গেভিস (Gavies), গার্ণার (Garner) প্রভৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি কেবলমাত্র রাষ্ট্র সম্পর্কিত ঘটনাবলীর মধ্যে সীমাবদ্ধ করেছেন। অপরদিকে ডঃ স্টিফেন (Dr. Stephen), লিকক্ (Leacock) প্রভৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধিকে কেবলমাত্র সরকারের আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। 

লাস্কি (Laski), গেটেল (Gettele), গিলখৃষ্ট (Gilchrist) প্রভৃতি রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণের মতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্র এবং সরকার উভয়ই আলোচনা করে। 

আধুনিক রাজনীতি চিন্তাবিদগণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় বাস্তবতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা সমাজবন্ধ মানুষের আচরণের ক্রিয়া–প্রতিক্রিয়ার সামগ্রিক দিকটি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিষয়বস্তুতে অন্তর্ভুক্ত করতে চান। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (UNESCO) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে এক প্রস্তাব গ্রহণ করে। 

এই সংস্থার প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত আলোচনার বিষয়গুলো নিম্নরূপঃ

(ক) রাজনৈতিক তত্ত্ব, সিন্ধান্ত ও তাদের ইতিহাস। 

(খ) রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমূহ – সংবিধান, জাতীয়, আঞ্চলিক ও স্থানীয় সরকার, সরকারি প্রশাসন, সরকারের আর্থিক ও সামাজিক কার্যাবলী এবং তুলনামূলক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।

(গ) রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, জনমত।

(ঘ) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন। 

এই প্রস্তাব হতে এটা সহজেই বোঝা যায় যে, বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে।

প্রশ্ন ৩। রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়নের উপযোগিতা আলোচনা করো?

অথবা,

রাজনৈতিক তত্ত্বের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ নানা কারণে রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়ন করা প্রয়োজন। নিম্নলিখিত কারণে রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়ন অতি গুরুত্বপূর্ণঃ

(ক) রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনৈতিক বাস্তবতা উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। রাজনৈতিক নীতিগুলো সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকলে আমরা ভুল আদর্শের অনুগামী হব না। 

(খ) রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনীতিবিদ, নেতা, শাসক, নাগরিক সকলের জন্য খুব উপকারি। এটি সমাজের প্রতিটি বর্গের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। 

(গ) রাজনৈতিক তত্ত্ব জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলো সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

(ঘ) রাজনৈতিক তত্ত্বগুলো রাজনৈতিক আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে রুশ বিপ্লবকে প্রেরণা দিয়েছিল মার্কসবাদ তত্ত্ব। 

(ঙ) সমাজ গঠনে যে রাজনৈতিক ধারণা ও নীতিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেগুলো সম্পর্কে রাজনৈতিক তত্ত্ব পূর্ণ জ্ঞান দেয়। শিক্ষিত ও সতর্ক নাগরিক হতে রাজনৈতিক তত্ত্ব সহায়তা করে। 

(চ) রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনৈতিক ঘটনাগুলোর বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা প্রদান করে।

এটি শুধু রাজনৈতিক ঘটনার মূল্যায়ন করতে কেবল সহায়তা করে না সঠিক রাজনৈতিক অবস্থা নির্বাচন করতেও সহায়তা করে। 

সর্বশেষে এটাই বলা যায় যে রাজনৈতিক তত্ত্ব আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরে সহায়তা করে।

প্রশ্ন ৪। রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নে বিভিন্ন সমস্যাসমূহের আলোচনা করো?

উত্তরঃ রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নকালে আমরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই। 

এই সমস্যাসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সর্বজনগ্রাহ্য বিজ্ঞানসম্মত কোন তত্ত্ব নেই। আমরা রাষ্ট্র ও সরকার, স্বাধীনতা, সমতা, নাগরিকত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে বিভিন্ন প্রকার সংজ্ঞা পাই। কিন্তু এগুলো এসকল বিষয়ে আমাদের পূর্ণাঙ্গ কোন ধারণা প্রদান করে না। 

(খ) রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণের তত্ত্বগুলো উদ্দেশ্যমূলক নয়। কারণ তারা নিজ নিজ বিশ্বাস, মূল্য বা নৈতিকতায় প্রভাবিত হয়ে থাকেন। তাই আমাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেতে সমস্যা হয়। 

(গ) সমাজবন্ধ সকল মানুষের আচরণ এক নয়। তাই রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নে আমরা সমস্যার সম্মুখীন হই। 

(ঘ) পরীক্ষা–নিরীক্ষার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের কোনো গবেষণাগার নেই। তাই আমরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নে পূর্ণ জ্ঞান লাভ করতে পারি না।

(ঙ) রাষ্ট্রবিজ্ঞান অধ্যয়নে সুম্পষ্ট নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক সংজ্ঞা না থাকার দরুন রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে অন্যান্য সমাজবিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল হতে হয়।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। নীচের বাক্যগুলো রাজনৈতিক তত্ত্ব সম্পর্কে সত্য অথবা মিথ্যা লেখো। 

(ক) এটি সে সব ধারণার আলোচনা করে যা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ভিত তৈরি করে?

উত্তরঃ সত্য।

(খ) এটি বিভিন্ন ধর্মের পারস্পরিক সম্পর্ককে ব্যাখ্যা করে?

উত্তরঃ মিথ্যা।

(গ) এটি ব্যাখ্যা করে সাম্য ও স্বাধীনতা সম্বন্ধে ধারণা?

উত্তরঃ সত্য।

(ঘ) এটি রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বানী করে।

উত্তরঃ মিথ্যা।

প্রশ্ন ২। রাজনীতি হল রাজনীতিকরা যা করে এর চেয়েও কিছু বেশি। এ সম্পর্কে তুমি কি একমত? উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ রাজনীতি সম্পর্কে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন প্রকার ধারণা পোষণ করে। কিছু সংখ্যক লোক বিশ্বাস করেন রাজনীতিবিদরা যা কিছু করেন তা–ই রাজনীতি। যদি তারা দেখেন রাজনীতিবিদরা দলের আদর্শ হতে বিচ্যুত হয়ে পড়েছেন, মিথ্যে আশ্বাস নিচ্ছেন, তখন তারা রাজনীতিকে একটা অসৎ উপায় হিসাবে ভাবেন। এ ধরনের চিন্তাভাবনা আমাদের সমাজে এতটাই শক্তিশালী ভিত্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে আমরা যখন কোনো লোককে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কোনো অসৎ পথ অবলম্বন করতে দেখি, তখন আমরা বলি লোকটি রাজনীতির খেলা খেলছে। কেবল সাধারণ মানুষ নয় বড়ো বড়ো ব্যবসায়ীরাও রাজনীতিকে দোষারোপ করেন যদিও তারাও নানাভাবে রাজনীতিবিদের নিকট হতে সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।

প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি হল রাজনীতিবিদরা যা করেন তার চেয়েও কিছু বেশি। রাজনীতি স্বাধীনতা, সাম্য, ন্যায়, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। এটি অনুসন্ধান করে বিশেষ কিছু নীতির গুরুত্ব, যেমন– আইনের শাসন (Rule of Law), ক্ষমতা পৃথকীকরণ (Separation of powers), বিচার সংক্রান্ত পুনর্বিচার (Judicial Review) ইত্যাদি। এ সকল করা হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক চিন্তাবিদদের তৈরি করা বিভিন্ন মতামতকে পরীক্ষা করে। বর্তমানে রাজনীতি সমাজের রাজনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্তসকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে। 

প্রশ্ন ৩। “সতর্ক নাগরিকের অবশ্যই প্রয়োজন গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য।” – “মতামত দাও? 

উত্তরঃ গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য সদা সতর্ক নাগরিকের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। নাগরিকগণ রাজনৈতিক সচেতনতাসম্পন্ন হলে গণতন্ত্র সাফল্য লাভ করবে। নাগরিকগণ অধিকার উপভোগের সঙ্গে সঙ্গে যদি রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ব বা কর্তব্য পালনেও সচেষ্ট হয়, তা হলে রাষ্ট্রের উন্নতি সাধন সম্ভব। নাগরিকগণ নির্বাচনের সময় যদি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে তাদের ভোটাধিকার প্রযোগ করেন তাহলে তারা যোগ্য সরকার নির্বাচিত করতে সক্ষম হবেন। এভাবে নাগরিকগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ সাধন হবে যা তাদেরকে শাসনকার্যে অংশ গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করবে। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হল জনগণ। সুতরাং জনগণের রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়া একান্ত আবশ্যক।

প্রশ্ন ৪। রাজনৈতিক তত্ত্ব পড়ার প্রয়োজনীয়তা কী? চারটি কারণ নির্দেশ করো যার ফলে রাজনৈতিক মতবাদ আমাদের কাছে প্রয়োজনীয়। 

উত্তরঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব পড়ার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের রাজনৈতিক তত্ত্ব পড়া উচিত। রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়ন নিম্নলিখিত কারণে আমাদের কাছে একান্ত প্রয়োজনীয়। 

(ক) রাজনৈতিক তত্ত্ব আমাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুধাবন করতে সহায়তা করে। রাজনৈতিক তত্ত্ব সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকলে আমরা রাজনীতির ত্রুটিগুলো ধরতে পারি।

(খ) রাজনৈতিক তত্ত্ব রাজনীতিবিদ, নেতা, শাসক, নাগরিক সকলের জন্য উপকারি। তাই রাজনৈতিক তত্ত্ব অধ্যয়ন সমাজের সকল শ্রেণীর জন্য প্রয়োজনীয়। 

(গ) রাজনৈতিক তত্ত্ব গবেষকদের কাছে মূল্যবান। কারণ রাজনৈতিক তত্ত্বগুলো গবেষকদের অতি অল্প সময়ে এবং সহজ উপায়ে তাদের কাজ সম্পাদন করতে সহায়তা করে। 

(ঘ) রাজনৈতিক তত্ত্ব আমাদিগকে সমাজ পরিবর্তনের কারণসমূহ ও তার প্রকৃতি উপলব্ধি ও ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে। এছাড়া সমাজ পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক ও তার প্রভাব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা প্রদান করে।

প্রশ্ন ৫। তুমি কি মনে করো তোমায় একটি ভাল/দৃঢ়প্রতায় তর্ক অন্যকে বাধ্য করবে তোমাকে শুনতে?

উত্তরঃ হ্যাঁ; আমাদের মতে, আমার একটি ভাল/দৃঢ়প্রত্যয় তর্ক অন্যকে বাধ্য করবে আমাকে শুনতে।

প্রশ্ন ৬। তুমি কি মনে করো রাজনৈতিক তত্ত্ব পড়া অঙ্ক পড়ার মত? তোমার মতের সপক্ষে কারণ দেখাও?

উত্তরঃ রাজনৈতিক তত্ত্ব পড়া অঙ্কশাস্ত্র পড়ার মত নয়। রাজনৈতিক তত্ত্বে আমরা স্বাধীনতা, সমতা, ন্যায়, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রভৃতির বিষয় অধ্যয়ন করি। রাজনৈতিক তত্ত্ববিদগণ স্বাধীনতা, সমতা, সামাজিক ন্যায়, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রভৃতি বিষয়ে নানারকম সংজ্ঞা প্রদান করেন। তাদের প্রদত্ত সংজ্ঞাগুলোর কোনো নির্দিষ্ট সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা ও প্রামাণ্যতা নেই। কিন্তু অঙ্কশাস্ত্রে কোণ বা ত্রিভূজ বা চতুর্ভূজ বা বর্গক্ষেত্রের একটি নির্দিষ্ট সার্বজনীন গ্রহণযোগ্য এবং প্রমাণিত সংজ্ঞা থাকে।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top