Class 11 Political Science Chapter 15 অধিকার

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Political Science Chapter 15 অধিকার, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 15 অধিকার The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 15 অধিকার Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Political Science Chapter 15 অধিকার

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question in Bengali Class 11 Political Science Chapter 15 অধিকার The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, Class 11 Political Science Chapter 15 অধিকার The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.

প্রশ্ন ৭। যে কোনো দুটি নৈতিক ও দুটি আইনগত কর্তব্য লেখো?

উত্তরঃ দুটি নৈতিক কর্তব্য হল – 

(ক) বৃদ্ধ পিতামতার সেবা করা।

(খ) প্রতিবেশীকে সহায়তা করা। 

দুটি আইনগত কর্তব্য হল –

(ক) রাষ্ট্রের আইন মেনে চলা। এবং 

(খ) কর প্রদান করা।

প্রশ্ন ৮। নাগরিকের যে–কোন চারটি অর্থনৈতিক অধিকারের নাম করো?

উত্তরঃ চারটি অর্থনৈতিক অধিকার হলঃ

(ক) জীবিকার অধিকার।

(খ) উপযুক্ত পারিশ্রমিকের অধিকার।

(গ) অবকাশের অধিকার।

(ঘ) শ্রমিক সংঘ গঠনের অধিকার। 

প্রশ্ন ৯। নাগরিকের যে কোনো চারটি পৌর অধিকার উল্লেখ করো?

উত্তরঃ চারটি পৌর অধিকার হলঃ

(ক) জীবনধারণের অধিকার।

(খ) স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার।

(গ) মতামত প্রকাশের অধিকার।

(ঘ) সম্পত্তির অধিকার।

প্রশ্ন ১০। সমতার অধিকারের উপর একটি টীকা লেখো?

উত্তরঃ সমতার অধিকার বলতে ধনী–নির্ধন, জাতি, ধর্ম, বর্ণ, স্ত্রী–পুরুষ নির্বিশেষে প্রতিটি ব্যক্তিকে তার আত্মবিকাশের উপযোগী সমান সুযোগ–সুবিধা প্রদান করাকে বোঝায়। ভারতীয় সংবিধানের ১৪–১৮ নং অনুচ্ছেদে সমতার অধিকার বিধিবন্ধ করা হয়েছে। ভরতের সকল নাগরিক আইনের চোখে সমান এবং আইন সকলকে সমানভাবে সংরক্ষণ করবে। কোনো ভারতীয় নাগরিককে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, স্ত্রী ও পুরুষ ইত্যাদির ভিত্তিতে বৈষম্য করা যাবে না। ভারতীয় সকল নাগরিককে সমান সুযোগ–সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানে সমাজের কিছু শ্রেণির জনগণের জন্যে বিশেষ পরিকল্পনা ও পদ্ধতি রূপায়ণ করা হয়েছে যেমন–শিশু ও অনুন্নত শ্রেণির উন্নতি, মহিলাদের জন্য সুরক্ষণ ব্যবস্থা প্রভৃতি। এছাড়া চাকুরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থা রাখার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হয়েছে। এ সকল ব্যবস্থা বা পদ্ধতি গ্রহণ করার মূলে রয়েছে সমাজের ওই সকল পিছিয়ে থাকা শ্রেণির জনগণ যাতে সমাজের বাকি শ্রেণির সম পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষ সমতা নীতির ভিত্তিতে অধিকার ভোগ করতে পারে। সুতরাং এই বিশেষ ব্যবস্থা বা পদ্ধতি সমতা নীতির পরিপন্থি নয়। সমতার অধিকার সমাজের সকল শ্রেণির জনগণকে সকল ধরনের স্বাধীনতা উপভোগ করার সমান সুযোগ প্রদান করে। ভারতীয় সংবিধানে সমতার অধিকার মৌলিক অধিকার হিসেবে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। 

প্রশ্ন ১১। নাগরিকের অধিকার সংরক্ষণের উপায় সম্পর্কে একটি টাকা লেখো?

উত্তরঃ অধিকারের ধারণা সমাজ থেকে উদ্ভূত। প্রত্যেক ব্যক্তিরই তার জীবনের সার্বিক বিকাশ সাধনের জন্য কতকগুলো সামাজিক শর্তের প্রয়োজন হয়। এই শর্তগুলোকেই অধিকার বলা হয়। অধিকার ছাড়া ব্যক্তির পূর্ণ আত্মবিকাশ ঘটে না। সুতরাং নাগরিকের অধিকার সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকা একান্ত আবশ্যক। নাগরিকের অধিকার সংরক্ষণের বিভিন্ন উপায় আছে। এই উপায়সমূহ হল নিম্নরূপঃ- 

(ক) গণতান্ত্রিক সরকারঃ অধিকারগুলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নাগরিকের অধিকারগুলো সুরক্ষিত থাকে। কারণ গণতান্ত্রিক সরকার নাগরিকের অধিকারগুলো সংরক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে। 

(খ) লিখিত সংবিধানঃ লিখিত সংবিধানে নাগরিকের অধিকারগুলো বিধিবন্ধ করা থাকে। ভরতীয় সংবিধানের তৃতীয় অংশে (Part-III তে) নাগরিকের আত্মবিকাশের প্রয়োজনীয় মৌলিক অধিকারগুলো বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকের মৌলিক অধিকারগুলো খর্ব হলে বঞ্চিত নাগরিক আদালতের দ্বারস্থ হয়ে তার অধিকারগুলো রক্ষা করতে পারে। সংবিধানে বিধিবন্ধ অধিকারগুলো সুরক্ষিত রাখার জন্য নাগরিকগণ আদালতের শরণাপন্ন হতে পারে।

(গ) আইনের সুশাসনঃ অধিকার সংরক্ষণের অন্যতম উপায় হল আইনের সুশাসনের বাস্তবায়ন। আইনের চোখে সকলেই সমান। আইনের সুশাসনের নীতি অনুসারে সকলের ক্ষেত্রেই একই আইন প্রযোজ্য হয় এবং অধিকার উপভোগ করার ক্ষেত্রে আইন সকলকেই সমানভাবে সুরক্ষা প্রদান করে।

(ঘ) স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থাঃ নাগরিকের সকল প্রকার অধিকারে সুরক্ষা প্রদান করার জন্য স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার একান্ত প্রয়োজন। কারণ কোনো নাগরিকের কোনো অধিকার খর্ব হলে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমেই সেই নাগরিক তার অধিকার রক্ষা করতে পারে। সুতরাং স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থাই নাগরিকের অধিকার সংরক্ষণের একটি গুরুত্বপূর্ণ রক্ষা কবচ।

প্রশ্ন ১২। ইমানুয়েল কান্ট–এর অধিকারের ধারণাটি ব্যাখ্যা করোঃ

উত্তরঃ ইমানুয়েল কান্ট–এর (১৭২৪-১৮০৪) একজন বিখ্যাত জার্মান দার্শনিক। তিনি ব্যক্তির মর্যাদা ও অধিকারের পক্ষে জোরালো মত পোষণ করেছেন। তাঁর মতে প্রত্যেক ব্যক্তিরই মর্যাদা আছে এবং প্রত্যেক মানুষকে মানুষ হিসাবে গণ্য করতে হবে। তারা নিজেদের মধ্যে মূল্যবান। একজন লোক অশিক্ষিত, দরিদ্র কিংবা ক্ষমতাহীন হতে পারে তথাপি সে মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকতে পারে এবং সেই হিসাবে সেই মানুষ ন্যূনতম মর্যাদার দাবি করতে পারে।

কাণ্টের মতে, মানুষকে মর্যাদা দেওয়ার মানে হল তাদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবহার করা। এই ধারণা তখনই মূল্যবান হয়ে উঠে যখন মানুষ সামাজিক পরম্পরার বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সংগ্রাম করতে পারে। কাণ্টের অভিমত থেকে এটাই স্পষ্ট যে, আমাদের সব মানুষকে মানুষ হিসাবে গণ্য করতে হবে। তাদের মর্যাদাকে স্বীকৃতি দিতে হবে। কাণ্ট নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অধিকারের ধারণাটি উপস্থাপনা করেছেন। তিনি মানবাধিকারের পক্ষে সওয়াল করেছেন। আমাদের সব মানুষকে মানুষ হিসাবে গণ্য করতে হবে। আমাদের মানুষকে সম্মান করা উচিত। 

প্রশ্ন ১৩। অধিকার ও দায়বদ্ধতার মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ অধিকার রাষ্ট্র এবং আমাদের উপর দায়বদ্ধতা আরোপ করে। অধিকার এবং দায়বদ্ধতা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। কারণ আমরা সবাই সমান অধিকারের অধিকারী। আমরা আমাদের অধিকার ভোগ করার ক্ষেত্রে অন্য কাউকে বঞ্চিত করতে পারি না। যাতে ব্যক্তি স্বাধীনতার অপব্যবহার না হয় সেদিকে সরকারকে সতর্ক হতে হবে। রাষ্ট্র কেবল অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করলেই চলবে না, রাষ্ট্রকে নাগরিকের অধিকারের সংরক্ষণও করতে হবে এবং কিছু দায়–দায়িত্বও নাগরিককে পালন করতে বাধ্য করতে হবে। অধিকার ও দায়বদ্ধতা বা কর্তব্য ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত। 

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় অধিকারসমূহ কী কী? 

অথবা,

ব্যক্তির উন্নতি কল্পে প্রয়োজনীয় অধিকার সমূহ কী কী? 

উত্তরঃ সমাজে প্রত্যেক ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য নানা প্রকার অধিকারের প্রয়োজন হয়। অধিকারসমূহের শ্রেণী বিভাজন করে নিম্নে সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলঃ 

নাগরিকের অধিকারকে প্রধানত তিনভাগে করা যায়; যথা– 

(ক) প্রাকৃতিক অধিকার।

(খ) নৈতিক অধিকার। এবং 

(গ) আইনগত অধিকার। 

(ক) প্রাকৃতিক অধিকারঃ যে সকল অধিকার মানুষ প্রকৃতি রাজ্যে উপভোগ করত সেই অধিকারগুলোকে প্রাকৃতিক অধিকার আখ্যা দেওয়া হয়। হবস্ ও লক্ এর মতানুসারে, প্রকৃতি রাজ্যের মানুষ এ অধিকার ভোগ করত। বর্তমানকালে এই প্রকার অধিকারের কোনো অস্তিত্ব নেই।

(খ) নৈতিক অধিকারঃ যে সকল অধিকারের ভিত্তি মানুষের নৈতিক বোধ সেইগুলোকে নৈতিক অধিকার বলে। নৈতিক অধিকারগুলোকে আদালত কর্তৃক বলবৎ করা যায় না। পিতা–মাতাকে পূত্রের সেবা করা, একটি নৈতিক অধিকার। সমাজে নৈতিকতার মূল্য বৃদ্ধির জন্য এই প্রকার অধিকার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

(গ) আইনগত অধিকারঃ এ ধরনের অধিকার রাষ্ট্র প্রদান করে। এই অধিকারসমূহ আইন দ্বারা অনুমোদিত। পুলিশ ও বিচারালয় এই অধিকারগুলো সুরক্ষা করে। নাগরিকদের এই প্রকার অধিকার একান্ত আবশ্যক। 

আইনগত অধিকারকে আবার-

(ক) পৌর অধিকার।

(খ) রাজনৈতিক অধিকার।

(গ) অর্থনৈতিক অধিকার। এবং 

(ঘ) সামাজিক অধিকার এ চার শ্রেণীতে ভাগ করা।

(ক) পৌর অধিকারঃ যে সকল অধিকার মানুষের সামাজিক জীবনের প্রাথমিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করে সেইগুলিকে পৌর অধিকার বলা হয়। এই অধিকারগুলো ব্যতীত নাগরিক তার ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন করতে সক্ষম হয় না। জীবনধারণের অধিকার, ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার, সভা সমিতি করার অধিকার, পরিবার গঠনের অধিকার প্রভৃতি পৌর অধিকারের উদাহরণ।

(খ) রাজনৈতিক অধিকারঃ রাজনৈতিক অধিকার বলতে নাগরিকের রাষ্ট্র পরিচালনার কার্যে অংশ গ্রহণের সুযোগকে বোঝায়। ভোটাধিকার, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার প্রভৃতি রাজনৈতিক অধিকারের উদাহরণ। এই অধিকারগুলো নাগরিকের রাজনৈতিক সচেতনা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

(গ) অর্থনৈতিক অধিকারঃ অর্থনৈতিক অধিকার ব্যতীত রাজনৈতিক অধিকার মূল্যহীন। অর্থনৈতিক অধিকার বলতে আর্থিকভাবে জীবনে আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগকে বোঝায়। জীবিকা অর্জনের অধিকার, যথাযথ পারিশ্রমিক পাওয়ার অধিকার, অবকাশের অধিকার প্রভৃতি হল অর্থনৈতিক অধিকার।

(ঘ) সামাজিক অধিকারঃ যে সকল অধিকার সমাজ জীবনের জন্য একান্ত আবশ্যক সেগুলোকে সামাজিক অধিকার বলে। এ অধিকার ছাড়া ব্যক্তি তার জীবনের সার্বিক বিকাশ সাধন করতে পারে না। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অধিকার, স্বাস্থ্য সংরক্ষণের অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার প্রভৃতি হল সামাজিক অধিকার। 

প্রশ্ন ২। অধিকার বলতে কি বোঝ? বিভিন্ন প্রকারের অধিকারসমূহ আলোচনা করো?

উত্তরঃ অধিকার হল সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত ও রাষ্ট্র কর্তৃক প্রযুক্ত দাবি। অধিকার বলতে আমরা সমাজবদ্ধ জীব হিসাবে আত্মবিকাশের জন্য মানুষের কতকগুলো সুযোগ–সুবিধা যা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত। আর এই সুযোগ–সুবিধাগুলো মানুষের বেঁচে থাকার ন্যায্য দাবি।

প্রাথমিকভাবে অধিকার হল মানব জীবনের সেসকল অবস্থা যার দ্বারা মানুষ তার সত্যিকারের বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হয় এবং এর ফলে সমাজেরও উন্নয়ন তৃরান্বিত হয়। সুতরাং অধিকার প্রত্যেক মানুষের জীবনকে দেয় সম্মান ও সম্ভ্রম।

নাগরিকের অধিকারকে প্রধানত তিনভাগে করা যায়; যথা– 

(ক) প্রাকৃতিক অধিকার।

(খ) নৈতিক অধিকার। এবং 

(গ) আইনগত অধিকার। 

(ক) প্রাকৃতিক অধিকারঃ যে সকল অধিকার মানুষ প্রকৃতি রাজ্যে উপভোগ করত সেই অধিকারগুলোকে প্রাকৃতিক অধিকার আখ্যা দেওয়া হয়। হবস্ ও লক্ এর মতানুসারে, প্রকৃতি রাজ্যের মানুষ এ অধিকার ভোগ করত। বর্তমানকালে এই প্রকার অধিকারের কোনো অস্তিত্ব নেই।

(খ) নৈতিক অধিকারঃ যে সকল অধিকারের ভিত্তি মানুষের নৈতিক বোধ সেইগুলোকে নৈতিক অধিকার বলে। নৈতিক অধিকারগুলোকে আদালত কর্তৃক বলবৎ করা যায় না। পিতা–মাতাকে পূত্রের সেবা করা, একটি নৈতিক অধিকার। সমাজে নৈতিকতার মূল্য বৃদ্ধির জন্য এই প্রকার অধিকার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

(গ) আইনগত অধিকারঃ এ ধরনের অধিকার রাষ্ট্র প্রদান করে। এই অধিকারসমূহ আইন দ্বারা অনুমোদিত। পুলিশ ও বিচারালয় এই অধিকারগুলো সুরক্ষা করে। নাগরিকদের এই প্রকার অধিকার একান্ত আবশ্যক। 

আইনগত অধিকারকে আবার-

(ক) পৌর অধিকার।

(খ) রাজনৈতিক অধিকার।

(গ) অর্থনৈতিক অধিকার। এবং 

(ঘ) সামাজিক অধিকার এ চার শ্রেণীতে ভাগ করা।

(ক) পৌর অধিকারঃ যে সকল অধিকার মানুষের সামাজিক জীবনের প্রাথমিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করে সেইগুলিকে পৌর অধিকার বলা হয়। এই অধিকারগুলো ব্যতীত নাগরিক তার ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন করতে সক্ষম হয় না। জীবনধারণের অধিকার, ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার, সভা সমিতি করার অধিকার, পরিবার গঠনের অধিকার প্রভৃতি পৌর অধিকারের উদাহরণ।

(খ) রাজনৈতিক অধিকারঃ রাজনৈতিক অধিকার বলতে নাগরিকের রাষ্ট্র পরিচালনার কার্যে অংশ গ্রহণের সুযোগকে বোঝায়। ভোটাধিকার, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার প্রভৃতি রাজনৈতিক অধিকারের উদাহরণ। এই অধিকারগুলো নাগরিকের রাজনৈতিক সচেতনা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

(গ) অর্থনৈতিক অধিকারঃ অর্থনৈতিক অধিকার ব্যতীত রাজনৈতিক অধিকার মূল্যহীন। অর্থনৈতিক অধিকার বলতে আর্থিকভাবে জীবনে আত্মনির্ভর হওয়ার সুযোগকে বোঝায়। জীবিকা অর্জনের অধিকার, যথাযথ পারিশ্রমিক পাওয়ার অধিকার, অবকাশের অধিকার প্রভৃতি হল অর্থনৈতিক অধিকার।

(ঘ) সামাজিক অধিকারঃ যে সকল অধিকার সমাজ জীবনের জন্য একান্ত আবশ্যক সেগুলোকে সামাজিক অধিকার বলে। এ অধিকার ছাড়া ব্যক্তি তার জীবনের সার্বিক বিকাশ সাধন করতে পারে না। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অধিকার, স্বাস্থ্য সংরক্ষণের অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার প্রভৃতি হল সামাজিক অধিকার।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অধিকার বলতে কী বোঝ? অধিকারের গুরুত্ব কী ? অধিকারের দাবি তৈরি করতে কী কী মূল ভিত্তি আছে?

উত্তরঃ অধিকার হল সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত ও রাষ্ট্র কর্তৃক প্রযুক্ত দাবি। অধিকার বলতে আমরা সমাজবদ্ধ জীব হিসাবে আত্মবিকাশের জন্য মানুষের কতকগুলো সুযোগ–সুবিধা যা রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত। আর এই সুযোগ–সুবিধাগুলো মানুষের বেঁচে থাকার ন্যায্য দাবি।

প্রাথমিকভাবে অধিকার হল মানব জীবনের সেসকল অবস্থা যার দ্বারা মানুষ তার সত্যিকারের বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হয় এবং এর ফলে সমাজেরও উন্নয়ন তৃরান্বিত হয়। সুতরাং অধিকার প্রত্যেক মানুষের জীবনকে দেয় সম্মান ও সম্ভ্রম।

অধিকারের গুরুত্বঃ বর্তমান সমাজজীবনে অধিকারের গুরুত্ব অপরিসীমঃ

(ক) সমাজবদ্ধ জীব হিসাবে আত্মবিকাশের জন্য অধিকার অপরিহার্য।

(খ) অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের সহায়ক।

(গ) অধিকারের দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তি তার বুদ্ধি ও দক্ষতাকে উন্নত করতে পারে।

(ঘ) অধিকার সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনের সহায়ক উপাদান।

(ঙ) অধিকার ব্যক্তিকে তার সম্ভাবনাময় জীবন নির্মাণে উৎসাহ ও উদ্দীপনা যোগায়। 

অধিকারের ভিত্তিঃ অধিকার হল সমাজ স্বীকৃত এবং রাষ্ট্র কর্তৃক বলবৎ দাবি। অধিকার দাবি করার বিভিন্ন ভিত্তি রয়েছে। ন্যায্য দাবির অর্থ হল সর্বসম্মতভাবে আত্মসম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার ও মর্যাদা যার মূল ভিত্তি হচ্ছে আত্মসম্মান বোধ। আর এই আত্মসম্মানবোধ প্রত্যেক ব্যক্তির মধ্যেই অন্তর্নিহিত আছে। 

আরেকটি দাবি হল রাষ্ট্রকর্তৃক জনকল্যাণমূলক কাজের স্বীকৃতি ও সংরক্ষণ। এর মূল ভিত্তি হল এই অধিকারের দাবি দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তি তার বুদ্ধি ও দক্ষতাকে উন্নত করতে পারে। 

প্রশ্ন ২। কী কী ক্ষেত্রে কিছু অধিকারকে সার্বজনীন অধিকার বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে? এবং দেখাও যে তিনটি অধিকার যেগুলোকে বিশ্বজনীন অধিকার বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে?

উত্তরঃ মানবাধিকার সুসভ্য সমাজের মুখ্য বিষয়। মানবসমাজের সভ্য হিসাবে আত্মবিকাশ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য মানুষ কতকগুলো অধিকার উপভোগ করে। এ অধিকারগুলোকে সার্বজনীন অধিকার হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়।

রাষ্ট্রসংঘ বিশ্বের সকল মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করবার জন্য অবিরাম প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক পরিশ্রমের পর রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকারের সার্বিক ঘোষণা পত্র তৈরি করে ১৯৪৮ সালের ১০ই ডিসেম্বর তা কার্যকরী করে। উক্ত ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত অধিকারগুলো বিশ্বজনীন অধিকার হিসাবে স্বীকৃত। 

এই ঘোষণা পত্রে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ অধিকারগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) জীবনধারণের অধিকার।

(খ) স্বাধীনতা ও সমতার অধিকার।

(গ) সম্পত্তির অধিকার।

(ঘ) স্বাধীনভাবে কথা বলা ও মতামত প্রকাশের অধিকার।

প্রশ্ন ৩। বিশদভাবে আলোচনা করো যে নতুন দাবিগুলো আমাদের দেশে উল্লেখ করা হয়েছে; উদাহরণস্বরূপ উপজাতি লোকদের জীবন সংরক্ষণ এবং বসবাসের ব্যবস্থা কিংবা শিশুদের শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার।

উত্তরঃ সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সমাজবদ্ধ মানুষের অধিকারের তালিকাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন নতুন অধিকারের দাবিগুলো সমাজে নানা প্রকার সমস্যার সৃষ্টি করছে। সে অনুযায়ী রাষ্ট্রও ব্যক্তির সমস্যা সমাধানকল্পে নুতন নুতন দাবিগুলোকে অধিকার রূপে স্বীকৃতি দিচ্ছে। আমাদের দেশেও অনুসূচীত জাতি ও উপজাতিদের কল্যাণার্থে নানাপ্রকার বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়েছে। সমাজের যে কোনো অনগ্রসর শ্রেণীয় উন্নতিকল্পে আমাদের দেশে নানাপ্রকার ব্যবস্থা অবলম্বন করা হচ্ছে।

আমাদের দেশের সংবিধানের ২৪নং ধারা অনুযায়ী ১৪ বৎসরের কমবয়ঙ্ক শিশুদের কোনো কারখানা, খনি বা অন্য কোনো বিপদজনক কাজে নিযুক্ত করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সংবিধানের ২৩নং ধারা অনুযায়ী মানুষ ক্রয় বিক্রয় করা, বলপ্রয়োগ করে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করা, স্ত্রীলোকদের ব্যভিচার করতে বাধ্য করা ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

ভারতে উপজাতিদের তাদের ভাষা, হরফ ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের অধিকার প্রদান করা হয়েছে। তারা স্বাধীনভাবে তাদের জীবনপ্রণালী রক্ষা করতে পারে।

প্রয়োজনবোধে উপজাতি সমাজের লোক ব্যতীত সমাজের অন্যান্য শ্রেণীর জমিগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

প্রশ্ন ৪। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের পার্থক্য নির্ণয় করো এবং প্রত্যেকটির উদাহরণ দাও?

অথবা,

উপযুক্ত উদাহরণসহ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করো?

উত্তরঃ অধিকার প্রধানত – 

(ক) প্রাকৃতিক।

(খ) নৈতিক। ও 

(গ) আইনগত এই তিনভাগে বিভক্ত। 

আইনগত অধিকারকে আবার পৌরঅধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার এবং সাংস্কৃতিক অধিকার ইত্যাদি কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক অধিকারঃ রাজনৈতিক অধিকার হল রাষ্ট্রের শাসনকার্যে অংশগ্রহণের অধিকার। ভোটদানের অধিকার, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার প্রভৃতি রাজনৈতিক অধিকার।

অর্থনৈতিক অধিকারঃ অর্থনৈতিক অধিকার ব্যতীত অন্যান্য অধিকার অর্থহীন। আর্থিক ক্ষেত্রে জীবনের সুনিশ্চয়তা প্রদানকারী অধিকারগুলোকে অর্থনৈতিক অধিকার বলা হয়। কাজ করার অধিকার, যথাযথ পারিশ্রমিকের অধিকার প্রভৃতি অর্থনৈতিক অধিকারের উদাহরণ।

সাংস্কৃতিক অধিকারঃ সমাজের প্রতিটি মানুষের নিজস্ব ভাষা, সাহিত্য, লিপি, সঙ্গীত, নৃত্য, শিল্পকলা, চিত্রাঙ্কন, ঐতিহ্য প্রভৃতি রক্ষার অধিকারকে সাংস্কৃতিক অধিকার বলা হয়।

প্রশ্ন ৫। রাষ্ট্রের উপর অধিকারের সীমাবদ্ধতা উদাহরণসহ বর্ণনা করো?

উত্তরঃ অধিকার রাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের উপর বাধানিষেধ আরোপ করে। আমাদের সংবিধান নাগরিকদের জন্য কতকগুলো মৌলিক অধিকার প্রদান করেছে। এই অধিকারগুলো উপভোগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রও কোনোরূপ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যদি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা সরকার কর্তৃক কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট নাগরিক তার অধিকার রক্ষাকল্পে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্ট নানা ধরনের লেখ (writ) জারি করে সংশ্লিষ্ট নাগরিকের মৌলিক অধিকার রক্ষা করে। সুতরাং দেখা যায় যে অধিকার রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের উপর বাধানিষেধ বা সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে পারে।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top