Class 11 History Chapter 10 দেশীয় লোকদের স্থানচ্যুতি

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 History Chapter 10 দেশীয় লোকদের স্থানচ্যুতি, is a textbook prescribed by the Assam AHSEC Board Class 11 History Question Answer in Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 History Chapter 10 দেশীয় লোকদের স্থানচ্যুতি The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 History Chapter 10 দেশীয় লোকদের স্থানচ্যুতি are free to use and easily accessible.

Class 11 History Chapter 10 দেশীয় লোকদের স্থানচ্যুতি

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Assam AHSEC Class 11 History in Bengali Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. Class 11 History Book PDF. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Class 11 History Notes in Bengali will be able to solve all the doubts of the students. Class 11 History Suggestion in Bengali, Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the Assam AHSEC Board Class 11 History Solution. Class 11 History Notes in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

4. উপনিবেশিকতাবাদে প্রধান প্রেরণাদানকারী উপাদান কি ছিল? উপনিবেশিকতাবাদের প্রকৃতির বিভিন্নতার উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ লাভের সম্ভাবনা উপনিবেশিকতাবাদের প্রধান প্রেরণাদানকারী উপাদান ছিল। কিন্তু উপনিবেশবাদের প্রকৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্নতা ছিলঃ

(ক) দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্যিক কোম্পানি তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা স্থানীয় শাসকদের পরাজিত করে তাদের এলাকা দখল করে নেয়।

(খ) একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যতীত ইউরোপীয়গণ দীর্ঘকাল আফ্রিকার সম্পূর্ণ সমুদ্র উপকূলে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে তোলে। পরবর্তীকালে ঊনবিংশ শতকের শেষদিকে তারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল। এর পর কিছু ইউরোপীয় দেশ আফ্রিকাকে তাদের মধ্যে কলোনী হিসাবে ভাগ করে নিতে একমত হয়েছিল। 

5. উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াতে ইউরোপীয় উপনিবেশের ফলাফল লেখ।

উত্তরঃ উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াতে ইউরোপীয় উপনিবেশ স্থাপনের ফলে নিম্নলিখিত সুদূরপ্রসারী প্রভাব পরিলক্ষিত হয়ঃ 

(ক) ইউরোপ থেকে এসে উদ্বাস্তুরা বসতি স্থাপন করতে শুরু করলে স্থানীয়রা নিজেদের জায়গা থেকে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়।

(খ) ইউরোপীয় ও এশীয় লোকেরা সেখানে ব্যাপকভাবে স্থানান্তরিত হয়েছিল ফলে আজ সেইসকল অঞ্চলে বহিরাগতরা সংখ্যাগুরু এবং দেশীয় লোকেরা সংখ্যালঘু ও কোণঠাসা।

(গ) স্থানীয়রা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মূল স্রোত থেকে। 

(ঘ) স্থানীয়রা ভুলে গেছে তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সেই অস্তিত্ব যে এক সময় দেশগুলিতে তাদেরই প্রাধান্য ছিল এবং এখনও অনেক জায়গা, শহর, নদীর নাম তাদেরই দেওয়া।

6. উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ভূ-প্রকৃতি, প্রাকৃতিক সম্পদ সংক্ষেপে আলোচনা কর। 

উত্তরঃ ভূ-প্রকৃতিঃ উত্তর আমেরিকা মহাদেশটি আর্কটিক মণ্ডল হতে কর্কটক্রান্তি পর্যন্ত এবং প্রশান্ত মহাসাগর হতে আটলান্টিক মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এর উত্তরে উত্তর মহাসাগর, পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর, দক্ষিণে মেক্সিকো উপসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগর এবং পশ্চিমে পশ্চিম মহাসাগর।

প্রাকৃতিক সম্পদঃ

(ক) কানাডার ৪০ শতাংশ বনাঞ্চল গঠিত।

(খ) অনেক এলাকায় খনিজ তেল, গ্যাস এবং খনিজ সম্পদ পাওয়া যায়। 

(গ) গম, ধান এবং ফল প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হয়। 

(ঘ) কানাডায় প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া যায়।

7. কখন এবং কেন ইউরোপীয় বণিকগণ সর্বপ্রথম উত্তর আমেরিকায় এসেছিল? স্থানীয় জাতিদের প্রতি তাদের মনোভাব সংক্ষেপে আলোচনা কর।

উত্তরঃ ইউরোপীয় বণিকরা সপ্তদশ শতকে উত্তর আমেরিকার উত্তর উপকূলে সর্বপ্রথম এসে পৌঁছেছিল। তারা সেখানে মৎস্য ও লোমযুক্ত পশুর ব্যবসা করতে এসেছিল। এই কাজে স্থানীয় অভিজ্ঞ মানুষ তাদের সহায়তা করেছিল। স্থানীয় লোকদের অভিনন্দন ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব তাদের অত্যন্ত সুখী করেছিল। ইউরোপীয়গণ স্থানীয় লোকদের স্থানীয় উৎপাদিত সামগ্রীর বিনিময়ে তাদের কম্বল, লোহা, বাসনপত্র, বন্দুক ও মন দিয়েছিল। স্বদেশী মানুষ পূর্বে মদ কি তা জানত না। কিন্তু অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে তারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে।

8. স্থানীয়দের উচ্ছেদ করে তাদের ভূমি দখল করায় ইউরোপীয়দের যুক্তি কি ছিল? সংক্ষেপে লেখ। 

উত্তরঃ স্থানীয়দের উচ্ছেদ করতে ইউরোপীয়রা নানা যুক্তি উপস্থাপন করত। এইগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) স্থানীয়রা জমির উপযুক্ত ব্যবহার করতে অক্ষম, তাই তাদের জমির উপর অধিকার উচিত নয়।

(খ) স্থানীয়রা অতিশয় অলস প্রকৃতির। এই জন্য হস্তশিল্পের দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও তা তারা কাজে লাগাতে পারেনি। যার ফলে বাজারে বিক্রি করার মতো ভাল কাপড় তারা তৈরি করতে পারেনি।

(গ) ইউরোপীয় শিক্ষা ও সঠিকভাবে পোষাক পরিচ্ছদ পরতে তার সক্ষম ছিল না, এবং তাদের শেখারও আগ্রহ ছিল না।

(ঘ) ইউরোপীয়দের যুক্তি ছিল যে স্থানীয়রা পরিবর্তিত সময়ে মানানসই নয় তাই তাদের একদিন বিলুপ্ত হতে হবে।

9. উত্তর আমেরিকার আদিম অধিবাসীগণই ইউরোপীয়দের আচরণে অনুশি ছিলেন কেন?

অথবা,

স্থানীয় আমেরিকার অধিবাসীর সাথে ইউরোপীয়দের বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন ছিল? সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তরঃ উত্তর আমেরিকার আদিম বসবাসকারীগণ প্রদেয় দ্রব্যসামগ্রীকে ইউরোপীয়দের সঙ্গে তাদের মিত্রতার উপহারস্বরূপ গণ্য করত। অন্যদিকে ইউরোপীয়গণ তাড়াতাড়ি মন্ত্রান্তশালী হতে চেয়েছিল। তারা মৎস্য ও লোমযুক্ত পশুকে ইউরোপে রপ্তানি করে লাভ অর্জনের সামগ্রী মনে করত। তাদের বিক্রীত দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য বিভিন্ন বৎসর বিভিন্ন প্রকার হয়। কারণ দ্রব্যের যোগান সকল বছর সমান ছিল না। আদিম অধিবাসীরা এই বিষয়ে অবগত ছিল না। তা তাদেরকে হতবুদ্ধি করেছিল। কারণ ইউরোপীয় বণিকগণ কখনও কখনও তাদের সামগ্রীর বিনিময়ে অধিক দ্রব্যাদি আবার কখনও কখনও একই পরিমাণ ব্যের বিনিময়ে কম সামগ্রী দিত। তারা ইউরোপীয়দের লোভ লালসায় অসন্তুষ্ট ছিল। ইউরোপীয়গণ শত শত মেষ বধ করেছিল উত্তম গুণসম্পন্ন পশমের জন্য। আদিম অধিবাসীরা প্রিয় ভয় পেত যে এই সকল পশু তাদের উপর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে পারে। 

10. সুবর্ণ অভিযান বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ ১৮৪০-এর দশকে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় সোনার খনি আবিষ্কার হয়। এর ফলে ইউরোপীয় লোকদের সোনা সংগ্রহের প্রতি উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে আছিল। ইউরোপীয়গণের মধ্যে সোনার জন্য দৌড় প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়। হাজার হাজার ইউরোপীয় লোক ক্ষিপ্রগতিতে সোনা সংগ্রহের জন্য আমেরিকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। একে সুবর্ণ অভিযান বলা হয়।

11. ইউরোপীয় ব্যবসায়ীগণ কি কি সামগ্রীর বিনিময়ে স্থানীয় লোকদের নিকট থেকে কোন ধরনের সামগ্রী সংগ্রহ করেছিল? স্থানীয় লোকগণ ইউরোপীয়গণকে প্রদান করা সামগ্রীসমূহ কিভাবে পরবর্তীকালে ইংরেজগণের কারণে বিপদ ডেকে এনেছিল?

উত্তরঃ মিসিসিপি নদীর তীরে দক্ষিণ দিকে ইউরোপীয়গণ বহু স্থানীয় বাজার দেখেছিল। বাজারসমূহে বিনিময় ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবসা চলত। নিয়মিতভাবে চলতে থাকা এই বাজারগুলিতে বহু লোকের সমাবেশ ঘটত। অনন্য ও দুষ্প্রাপ্য হস্তনির্মিত সামগ্রী ও খাদ্যবস্তু ছিল এই বাজারসমূহের বিশেষ আকর্ষণ।

ইউরোপীয় ব্যবসায়ীগণ বাজারসমূহে স্থানীয় লোকদের নিকট থেকে কম্বল, লৌহপাত্র, বন্দুক, মদ প্রভৃতির বিনিময়ে নিজ নিজ পছন্দমতো বস্তু সংগ্রহ করত। তির-ধনুকে অভ্যস্ত এই লোকজন বন্দুক হাতে নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পড়েছিল। পরবর্তীকালে তারা বন্দুক চালনায় অতি পারদর্শী হয়ে উঠেছিল। ফলে তারা ইউরোপীয়গণের বিরুদ্ধে অভয়ারণ পাতে কুণ্ঠাবোধ করেনি।

12. আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মুখ্য বিচারক জন মার্শালের ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দের রায়মান কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তরঃ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মুখ্য বিচারক জন মার্শাল ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে এক গুরুত্বপূর্ণ রায় প্রদান করেন। এই রায়দানে তিনি চেরোকিদের একটি স্বতন্ত্র জাতিগোষ্ঠী হিসাবে ঘোষণা করেন এবং মতপ্রকাশ করেন যে চেরোকি অধিকৃত জমির উপর কোন ধরনের আইন বলবৎ করা হবে না। জমি ভোগ দখলের ক্ষেত্রে তারা কোন আইনের অধীনে আসবে না এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে। আমেরিক যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অবশ্য এই বিষয়ে জন মার্শালের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন নি এবং তার বিরোধিতা করেন। এই দিক থেকে বিবেচনা করলে জন মার্শালের রায়দানকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করা যায়। 

13. অস্ট্রেলিয়ায় কখন মানব বসতিকরণ আরম্ভ হয়েছিল?

উত্তরঃ আমেরিকার মতো অস্ট্রেলিয়ার মানব বসতিকরণের ইতিহাস অতি দীর্ঘ। প্রায় চল্লিশ হাজার বছর বা তারও পূর্ব থেকে সেই দেশে অধিবাসীকরণের আগমন ঘটেছিল। বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রব্রজনকারীগণকে অধিবাসী বলে গণ্য করা হয়েছিল। এই লোকগণ নিউ গিয়েনা থেকে আগত বলে অনুমান করা হয়েছিল। উল্লেখ্য যে নিউ গিয়েনা একটি স্থল সেতুর দ্বারা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। অবশ্য এই লোকদের দাবি অনুযায়ী তাঁরা অস্ট্রেলিয়ার আদিম জনগোষ্ঠী। তারা বাইরে থেকে প্রব্রজন করা ছিল না।

14. টোরেস স্ট্রেইট দ্বীপের বাসিন্দাগণ কারা?

উত্তরঃ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর অঞ্চলে স্থানীয় লোকের অন্য একটি বিরাট জনগোষ্ঠী বাস করে এসেছিল। এই লোকগণকে টোরেস স্ট্রেইট দ্বীপের বাসিন্দা বলা হয়। এই জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে সমতল অধিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। সম্ভবত তারা কোন জংলি জনগোষ্ঠীর লোক ছিল এবং অন্য কোন স্থান থেকে প্রব্ৰজনকারীর রূপে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করে বলে অনুমান করা হয়। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুসারে এই সকল লোকের সংখ্যা মহাদেশটির জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ২.৪ শতাংশ। 

15. অস্ট্রেলিয়ার আধিবাসীগণের প্রতি ইংরেজগণ কেন বিদ্বেষভাব পোষণ করেছিল? এই বিদ্বেষের যুক্তিযুক্ততা ইংরেজগণের কারণে কি ছিল?

উত্তরঃ ইংরেজ নাবিকগণের প্রধান নেতা ক্যাপ্টেন কুক এবং তাঁর সহযোগীগণ অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীগণের মধ্যে গড়ে ওঠা বন্ধুত্বের কথা কুকের প্রতিবেদন মতে জানতে পারে। কিন্তু হঠাৎ কোন আততায়ীর হাতে কুকের মৃত্যু হয়।

কুকের এই হত্যাকাণ্ড অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীগণ করেছিল বলে ইংরেজগণ জানতে পারে। সেইজন্য তারা এই অধিবাসীগণের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ বা অত্যাচারী কার্যসমূহ আরম্ভ করেছিল। অন্যদিকে ক্যাপ্টেন কুকের অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীর হাতে মৃত্যু হয়নি। হত্যাকারী ছিল হাওয়াই দ্বীপের অধিবাসী।

16. অস্ট্রেলিয়ার মহামৌনতা বলতে তুমি কি বোঝ?

উত্তরঃ ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে ডব্লিউ ই এইস স্টেনার নামে একজন নৃতত্ত্ববিদ “অস্ট্রেলিয়ার মহামৌনতা’ শীর্ষক একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। এই বক্তৃতার দ্বারা তিনি অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীগণের বিষয়ে ঐতিহাসিকগণের মৌনতা সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন। ঐতিহাসিকগণ অস্ট্রেলিয়ার অধিবাসীগণের বিষয়ে ইতিহাস অধ্যয়ন করা বাদ দিয়ে কার্যত তাঁর সমালোচনা করে এই বিষয়ে সকলকে সচেতন করার জন্য এই বক্তৃতা প্রদান করেছিলেন। 

17. ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দকে অস্ট্রেলিয়ার জন্য কেন উল্লেখযোগ্য ছিল?

উত্তরঃ অস্ট্রেলিয়া সরকার ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে একটি উল্লেখযোগ্য নীতি গ্রহণ করেছিল। বহু বছর ব্যাপী অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসকারী লোকদের জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকার মুক্ত নীতি গ্রহণ করেছিল। নিজ দেশের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সার্বজনীন সাংস্কৃতিক বিনাশের জন্য বহুমুখী নীতি গ্রহণ করে এইসব লোকদের প্রতি সমমর্মিতা ও সমশ্রদ্ধা প্রবেশের জন্য এক অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। সেই বছর শ্বেতাঙ্গ অস্ট্রেলিয়া নীতিরও অবসান ঘটেছিল। 

18. অস্ট্রেলিয়ায় ইউরোপীয়দের আগমনের বিরুদ্ধে সেখানকার আদিম অধিবাসীদের প্রতিক্রিয়া কিরূপ ছিল?

উত্তরঃ ব্রিটিশ নাবিক ক্যাপ্টেন কুক কর্তৃক ১৭৭০ সালে অস্ট্রেলিয়া আবিষ্কৃত হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় বাসিন্দাগণ ক্যাপ্টেন কুক ও তার সহযোগীদের স্বাগত জানিয়েছিলেন। সুতরাং ক্যাপ্টেন কুক ও তার সহযোগীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাবের আদান-প্রদানের প্রেরিত প্রতিবেদন উদ্দীপনামূলক ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে হাওয়াজি নামে এক স্থানীয় লোক কর্তৃক ক্যাপ্টেন কুক নিহত হন। এর ফলে তাদের প্রতি ব্রিটিশদের মনোভাব পরিবর্তিত হয়ে যায়। তারা তখন অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় অধিবাসীগণ হিংসাবাদী বলে প্রমাণ করতে চেষ্টা করে। অস্ট্রেলিয়ার সকল বাসিন্দা ইউরোপীয়দের আগমন বিপদ হিসাবে গণ্য করেননি। কারণ তারা এই ব্যাপারে দূরদর্শী ছিলেন না। তারা তা উপলব্ধি করতে পারেননি যে জীবাণু সংক্রমণ, যুদ্ধ ও ভূমি হানির ফলে ঊনবিংশ ও বিংশ শতকে তাদের অধিকাংশই মারা যাবে।

19. অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় আদি বসবাসকারীদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি রক্ষা ও পর্যালোচনা করার জন্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল? 

উত্তরঃ অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় আদি বসবাসকারীদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও অধ্যয়নের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়ঃ

(ক) বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানীয়দের সম্পর্কে আলোচনা ও পড়াশুনার জন্য নতুন বিভাগ খোলা হয়। যাতে লোক তার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, শিল্পকলা সম্বন্ধে জানতে পারে।

(খ) সংগ্রহশালার পরিধি বৃদ্ধি করা হয়, যাতে তাদের সম্পর্কিত বিষয়বস্তুগুলি সংগ্রহশালায় পুঞ্জীভূত করা যায়।

(গ) প্রাচীন সময়কাল নির্ভর জন্তুজানোয়ারের নমুনা ও কল্পনা কৃত প্রাকৃতিক পরিস্থিতির পরিবেশ গড়ে তোলা হয়। বিভিন্ন কক্ষকে, যাতে স্থানীয় পরিস্থিতি উপলব্ধি সম্ভব হয়। 

(ঘ) স্থানীয়দের তাদের নিজস্ব ইতিহাস লিখতে প্রেরণা যোগানো হয় ইত্যাদি।

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

1. দক্ষিণ আমেরিকার আবিষ্কার ইউরোপের ঔপনিবেশিক বিস্তারকে কিভাবে অগ্রসর করেছিল?

উত্তরঃ পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে দক্ষিণ আমেরিকার নানা আবিষ্কার ইউরোপের ঔপনিবেশিক বিস্তারকে নিম্নলিখিত উপায়ে অগ্রসর করেছিলঃ

(ক) দক্ষিণ আমেরিকার শান্তিপ্রিয় নম্র ও অপ্রতিবাদী অপ্রতিরোধী অধিবাসীদের চরিত্র ইউরোপীয়দের উপনিবেশ বিস্তারকে বিশেষ ভাবে সহায়তা করেছিল। 

(খ) মূল্যবান ধাতু তথা সোনার প্রতি স্থানীয়দের অনাসক্তি ইউরোপীয়দের এই অঞ্চলে নিজেদের কর্তৃত্ব স্থাপনে আগ্রহী করেছিল।

(গ) প্রাকৃতিক সম্পদের সমৃদ্ধশালী ভাণ্ডারও ইউরোপীয়দের আগ্রহী করে তুলেছিল এই অঞ্চলে। এর ফলে তারা নিজেরা তাদের সক্ষমতাপূর্ণ অঞ্চলে উপনিবেশ গড়ে তোলে।

(ঘ) এই নতুন সমৃদ্ধশালী অঞ্চল ইউরোপের হতাশ ও ধর্মীয় কারণে ব্রাত্য জনসংখ্যার আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়, যা তারা নিজেদের অধীনস্ত করতে ব্যস্ত ছিল। 

(ঙ) দক্ষিণ আমেরিকার সমৃদ্ধি ও সম্পদের যোগান ইউরোপের মৃতবৎ অর্থনীতিতে নতুন প্রাণসঞ্চার করে, যা তার হারাতে চায় না। তাই তারা এই অঞ্চলে নিজেদের ঔপনিবেশিক অস্তিত্ব গড়ে তোলে।

(চ) পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ আমেরিকার নানা অঞ্চল ইউরোপীয়দের অধীনস্ত হয়ে যাওয়ায় তারা অন্যান্য অঞ্চলেও তাদের উপনিবেশ স্থাপনে সচেষ্ট হয়।। 

2. অস্ট্রেলিয়াতে হওয়া রূপান্তরের বাতাস সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।

উত্তরঃ ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে নৃতত্ববিদ W. E. H. Stanner তাঁর বই The Great Australian Silence-এ নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ-পরবর্তী সময় মানুষের মধ্যে দেশীয়দের বিষয়ে জানার আগ্রহ গড়ে ওঠে, কারণ দেশীয় জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতি, সাহিত্য আছে। তখন প্রশ্ন ওঠে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস কেন ক্যাপ্টেন কুক থেকে লেখা হবে, কেন লেখা হবে না দেশীয়দের প্রাচীনকাল থেকে।

তারপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় আদি গোষ্ঠীগুলির কৃষ্টি, সংস্কৃতি, শিল্প, কলা অধ্যয়নের জন্য নতুন বিভাগ শুরু করে। সংগ্রহশালায় স্থানীয়দের জিনিস রাখা হয়। নতুন যাদুঘর বিশেষভাবে তৈরি করা হয় এবং প্রকৃত পরিবেশ কৃত্রিমভাবে গড়ে স্থানীয়দের বিভিন্ন তথ্য লোকসমক্ষে তুলে ধরতে প্রচেষ্টা করা হয়। এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার আদি জনগোষ্ঠীগুলি ইতিহাসকে অবলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়।

১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে বহুসংস্কৃতিবাদ নীতি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম সরকারি নীতি হিসাবে গ্রহণ করা হয়। যার মাধ্যমে স্থানীয় আদিবাসীদের সভ্যতা ও সংস্কৃতি সরকারিভাবে সমান গুরুত্ব লাভ করে। তবে, আদি অস্ট্রেলীয়দের নিকট থেকে ইউরোপীয়রা অস্ট্রেলিয়াকে দখ তাহার কোন চুক্তি নেই, যা নিউজিল্যান্ড এর ক্ষেত্রে পাওয়া যায়। তাছাড়া মিশ্র মাধুনীয়-ইউরোপীয়দের অধিকার সম্বন্ধেও প্রশ্ন ওঠে। এতে নানা বিক্ষোভ গড়ে উঠে যা থেকে সরকার বাধা হয় আদিবাসীদের মানাতা ও স্বীকৃতি দিতে। তাছাড়া মিশ্র শিশুদের প্রতি সরকার সদয় হয় এবং তাদের অধিকার সাব্যস্ত করে। এইভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় রূপান্তরের বাতাস বইতে শুরু করে যা আদিবাসীদের যথাযোগ্য স্বীকৃতি দেয়।

3. ঊনবিংশ শতাব্দীতে ইউরোপীয়রা কিভাবে আমেরিকার স্থলভাগকে তাদের বাসভূমি হিসেবে ব্যবহার করেছিল? বর্ণনা কর। 

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রচণ্ডভাবে আমেরিকার স্থলভাগের দৃশ্যপটের পরিবর্তন ঘটে। ইউরোপীয়রা জমিকে স্থানীয়দের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে নিম্নরূপ ব্যবহার করতঃ

(ক) ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স থেকে আগত যুবক নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি ত্যাগ করে আমেরিকায় এসে নিজ বাসভূমি তৈরি করেছিল কিংবা নিজভূমি পাওয়ার জন্য অভিলাসী ছিল।

(খ) পরবর্তী সময়ে বহু বহিরাগত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে যেমন জার্মানি, সুইডেন, ইটালি ইত্যাদি থেকে আগতরা নিজস্ব ঘরবাড়ি পরিত্যাগ করে এসে নিজস্ব খামারবাড়ি তৈরি করার প্রনাস নিয়েছিল।

(গ) পোল্যান্ড হতে আগত লোকেরা সামান্য ঢেউখেলানো বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে কাজ করতে আনন্দ পেত এবং তাদের গৃহ নির্মাণ করে এবং তারপর উৎসাহ সহকারে অতি অল্প দামে বিশাল সম্পত্তি ক্রয় করেছিল।

(ঘ) ইউরোপীয়রা জঙ্গল পরিষ্কার করে কৃষি উপযোগী করেছিল এবং ধান ও তুলার চাষ করতে আরম্ভ করেছিল, যা ইউরোপে উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছিল না।

(ঙ) বন্য প্রাণীর থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে খামার বাড়ি দিয়ে রাখত এবং এভাবে নিজেদেরকে সুরক্ষা দেওয়ার পন্থা অবলম্বন করেছিল।

4. উত্তর আমেরিকায় মানুষের আবির্ভাব এবং উপনিবেশবাদের পূর্বে তাদের জীবনযাত্রার বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর।

উত্তরঃ মানবের আবির্ভাবঃ উত্তর আমেরিকার স্বদেশী জাতি প্রায় ত্রিশ হাজার বছর পূর্বে এশিয়া হতে এখানে এসেছিল। তারা বেরিং প্রণালীর সংকীর্ণ স্থলপথে এসেছিল। এইসব মানুষ দশ হাজার বছর পূর্বে দক্ষিণ দিকে সরে গিয়েছিল। প্রায় পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই মহাদেশের জলবায়ু অধিকতর উপযোগী হয়েছিল। যার ফলে স্বদেশী আমেরিকানদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। 

স্বদেশীদের জীবনযাত্রার মুখ্য বৈশিষ্ট্যঃ উনো আমেরিকার স্বদেশী জনগণের জীবনযাত্রার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ 

(ক) উত্তর আমেরিকার জনগণ প্রধানত গ্রামের নদীর তীরে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বাস করত।

(খ) এইসব মানুষ সর্বদা মাছ ও মাংস আহার করত। তারা তৃণভূমি অঞ্চলে বন্য মহিষের খোঁজ করত।

(গ) এই সকল লোক লোভী ছিল না। তারা কেবলমাত্র নিজেদের প্রয়োজনমতো পশু শিকার করত। 

(ঘ) তারা শাক সবজি ও ভুট্টা চাষ করত। কিন্তু তারা কদাচিৎ ব্যাপক কৃষিকার্য করত। যেহেতু তাদের বাড়তি উৎপাদন ছিল না এইজন্য তারা মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকায় রাজ্য বা সাম্রাজ্য বিকাশ করেনি।

(ঙ) ভূমির উপর তাদের নিয়ন্ত্রণের কোন ইচ্ছা ছিল না। তারা তাদের নিজ থাকার ও খাওয়ার তুমি নিয়েই সন্তুষ্ট ছিল।

(চ) তারা আনুষ্ঠানিক ছোট ও কর্তৃত্ব তৈরি করেছিল। তারা নিজেদের মধ্যে উপহারও বিনিময় করত।

(ছ) তারা বিভিন্ন ভাষায় কথা বলিত কিন্তু এইগুলি লিখিত ছিল না।

(জ) তারা বিশ্বাস করত যে সময় চক্রাকারে অতিবাহিত হয়।

(ঝ) তারা বিভিন্ন অঞ্চলের জলবায়ু ও আবহাওয়া উপলব্ধি করতে পারত।

(ঞ) তাদের নিজ উৎপত্তি এবং তাদের ইতিহাসের বিবরণ জানত।

5. উত্তর আমেরিকার স্থানীয়দের জীবনশৈলীর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।

উত্তরঃ উত্তর আমেরিকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলির জীবনশৈলীর বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলি দলবদ্ধভাবে নদীতীরের গ্রামগুলিতে বাস করত। তারা মূলত মাছ, মাংস আহার করে জীবনধারণ করত এবং শাকসবজি ও ভুট্টা চাষ করত।

(খ) তারা খাদ্যের অন্বেষণে অনেক দূর পর্যন্ত যাতায়াত করত এবং জঙ্গলে বাইসন নামক জন্তুর খোঁজে ঘুরে বেড়াত। তারা কেবল আহারের প্রয়োজনই জয় হত্যা করত। 

(গ) বাড়তি খাওয়ার তেমন চাহিদা না থাকায় তারা কৃষিকাজে তেমন আগ্রহী ছিল না।

(ঘ) তাদের রাজ্য বা স্থায়ী বাসস্থানের তেমন কোন অভিপ্রায় ছিল না। বাস্তবে ভূমি বা বাসস্থানের স্থায়িত্ব সম্পর্কে কোন স্পষ্ট চিন্তা বা মনোভাব ছিল না।

(ঙ) তাদের মূল চাহিদা ছিল খাদ্য আহরণ করা এবং ভূমির প্রয়োজন ছিল বসবাসের জন্য। 

(চ) তারা সম্পর্ক তৈরি করত, বন্ধুত্ব গড়ে তুলত মূলত একে অন্যের মধ্যে উপহার বিনিময়ের মাধ্যমে এবং এটাই ছিল তাদের মূল বৃষ্টি বা সভ্যতা।

(ছ) তারা বিশ্বাস করত যে সময় পরিবর্তনশীল সুতরাং তাদের বংশধররা তাদের ইতিহাস, উৎস এই সমস্ত বংশানুক্রমিকভাবে প্রসার করবে। 

(জ) তারা দক্ষ ছিল হস্তশিল্পে ও সুন্দর কার্পাস বন্ধ বা পশম বস্ত্র তৈরি করতে ইত্যদি।

প্রশ্ন ৬। ‘সুবর্ণ অভিযান’ বলতে কি বোঝ? সুবর্ণ অভিযান’ কিভাবে রেলপথ নির্মাণ, শিল্পের প্রসার এবং কৃষির প্রসারে সহায়তা করেছিল?

অথবা,

“সোনার জন্য হওয়া দৌড়’ কী ছিল?

উত্তরঃ ইউরোপীয়গণ উত্তর আমেরিকায় সোনা আছে বলে সর্বদা মনে করত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৮৪০-এর দশকে সোনার সন্ধান পাওয়া গিয়াছিল। এর ফলে হাজার হাজার ইউরোপীয় নিজেদের ভাগ্য গড়বার উদ্দেশ্যে উত্তর আমেরিকায় চলে যায়। সোনার জন্য এই দৌড় প্রতিযোগিতাকে ‘সুবর্ণ অভিযান’ বলা হয়।

সুবর্ণ অভিযান ও রেলপথ নির্মাণঃ সুবর্ণ অভিযান উত্তর আমেরিকা মহাদেশ ব্যাপী রেলপথ নির্মাণে বিশেষ সহায়তা করেছিল। রেলপথ নির্মাণের জন্য হাজার হাজার চৈনিক শ্রমিকদের কাজে লাগানো হয়েছিল। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রেলপথ নির্মাণ সমাপ্ত হয়। ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে কানাডায় রেলপথ নির্মাণ সমাপ্ত হয়।

সুবর্ণ অভিযান ও শিল্প সমৃদ্ধিঃ সুবর্ণ অভিযানের ফলে উত্তর আমেরিকায় শিল্পের প্রসার ঘটে। দুটি কারণে সেখানে শিল্পের বিকাশ ঘটে। প্রথমত, রেল-এর যন্ত্রপাতি তৈরি করা যাতে দূরবর্তী অঞ্চল সংযুক্ত হয়। দ্বিতীয়ত, যন্ত্রপাতি তৈরি করা যাতে ব্যাপক মাত্রায় খামার তৈরি সহজতর হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা উভয় রাষ্ট্রেই ফ্যাক্টরী বহুগুণ বৃদ্ধি পায় এবং শিল্পনগরী গড়ে ওঠে। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত মার্কিন অর্থনীতি অনগ্রসর ছিল। কিন্তু ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে তা বিশ্বের সর্ববৃহৎ শিল্পশক্তিতে পরিণত হয়েছিল।

সুবর্ণ অভিযান ও কৃষির বিকাশঃ সুবর্ণ অভিযানের ফলে উত্তর আমেরিকার কৃষির বিস্তার ত্বরান্বিত হয়। বিশাল বনভূমি পরিষ্কার করে অনেকগুলি খামারে বিভক্ত করা হয়। ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বন্য মহিষকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা হয়। এর ফলে শতাব্দীব্যাপী অনুসৃত স্বদেশীদের শিকার জীবনের অবসান ঘটে। ‘সুবর্ণ অভিযান’ উত্তর আমেরিকা মহাদেশ বিস্তারে সহায়তা করেছিল। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে এই বিস্তার সমাপ্ত হয়। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠা করতে আরম্ভ করে এবং একটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তিতে পরিণত হয়।

7. ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ কিভাবে নানা প্রকৃতির রূপ নিয়ে বিস্তার লাভ করেছিল পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে? সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তরঃ ১৫-শতাব্দীর পরবর্তী সময়কালে ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ প্রসার লাভ শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে। নতুন দেশ, মহাদেশ আবিষ্কার সাম্রাজ্যবাদের প্রসারে যথেষ্ট সহায়ক ছিল। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি নানা উপসর্গ অনুসরণ করে বিভিন্ন প্রান্তে তাদের সাম্রাজ্যিক স্বার্থ স্থাপনের জন্য বিভিন্ন উপায়ে তাদের সাম্রাজ্য স্থাপন করে ফলে এই প্রক্রিয়ার প্রকৃতিতে নানা পার্থক্য ছিল।

১৭০০ শতাব্দীর পর প্রারম্ভিক ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী দেশ স্পেন ও পর্তুগাল আমেরিকায় তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার বন্ধ করে। কিন্তু তার পর অন্যান্য দেশ ফ্রান্স, ইংলেন্ড, ইল্যান্ড তাদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড আরম্ভ করে এবং আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ায় তাদের উপনিবেশ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। আয়ারল্যান্ড ছিল মূলত ইংলন্ডের উপনিবেশ যেহেতু সেখানের অধিকাংশ লোকই ছিল ইংলন্ডের অধিবাসী।

১৮০০ খ্রিস্টাব্দের পর সাতজনক বাণিজ্যের আশাই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ইউরোপীয়রা উপনিবেশ গড়ে তোলে কিন্তু তাদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণভাবে পার্থক্য ছিল উপনিবেশনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে।

দক্ষিণ এশিয়ার ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যের সাথে সাথে স্থানীয় শাসকদের পরাস্ত করে রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে ও দেশীয় রাজ্যগুলি অধিগ্রহণ করে। তারা ভূস্বামীদের নিকট হতে কর আদায় করত অথচ তাদের আভ্যন্তরীণ শাসনযন্ত্রের কোন প্রধান পরিবর্তন করতে অনিচ্ছুক ছিল। পরবর্তী সময়ে রেল ব্যবস্থার প্রসার ঘটে যাতে করে অতি সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করা সম্ভব হয়। এবং কাচামাল তাদের দেশে পাঠাতে শুরু করে এবং এভাবে ভারতে উপনিবেশ গড়ে উঠে।

প্রারম্ভে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণাংশ ছাড়া সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলিতে ইউরোপীয়রা তাদের ব্যবসা শুরু করে তবে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে তারা সে সমস্ত দেশগুলির আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। তারপর বিভিন্ন দেশ তাদের উপনিবেশ গড়ে তোলে এবং আফ্রিকাকে তারা তাদের ইচ্ছানুযায়ী নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।

এইভাবেই ভিন্ন প্রকৃতির উপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদ-এর মাধ্যমে ইউরোপীয়রা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে তাদের অস্তিত্ব গড়ে তুলেছিল।

8. ব্রিটেন কিভাবে তার অপরাধীদের অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাসিত করেছিল। ইউরোপীয়দের বসতিকালে অস্ট্রেলিয়ার আর্থিক বিকাশের উপর আলোকপাত কর।

উত্তরঃ ইংল্যান্ড হতে বহুসংখ্যক অপরাধী অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাসিত করা হয়। এই অপরাধীগণ অস্ট্রেলিয়ার প্রথম বসবাসকারী মানুষ। এইসব মানুষের কারাজীবন সমাপ্তির পর তাদের স্বাধীন জীবনযাপনের অনুমতি দেওয়া হয়। কারাবাস সমাপ্তির একটি শর্ত ছিল যে তারা স্বদেশ অর্থাৎ ব্রিটেনে চলে যেতে পারবে না। সুতরাং তারা স্বদেশী জাতিকে উৎখাত করে তাদের জমিতে চাষবাস আরম্ভ করে।

অস্ট্রেলিয়ার আর্থিক উন্নয়নঃ আমেরিকার মতো ইউরোপীয়ান অধীনস্থ অস্ট্রেলিয়ার উন্নয়ন অসম ছিল না। সেখানে সুপ্রতিষ্ঠিত ভরা খামার ছিল এবং দীর্ঘকালের খনি শিল্প ছিল যেখানে পর্যাপ্ত শ্রমিকের যোগান ছিল। এইগুলি ছিল দেশের সমৃদ্ধির ভিত্তি। কিছু সংখ্যক স্বদেশী লোক খামারে কাজ পেত। এইসকল খামারে কাজের শর্ত ছিল এত কঠোর যে তা হাসরের মতো ছিল। পরবর্তীকালে চৈনিক প্রব্রাজকরা সস্তা শ্রমিকের যোগান নিয়েছিল। কিন্তু সরকার শীঘ্রই চীনে প্রব্রজন নিষেধ করে দেন। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া হতে প্রয়াজকরা অস্ট্রেলিয়ার প্রবেশ করবার ভয় ছিল। সুতরাং সরকার অ-শ্বেতাঙ্গ জনগণকে দেশ হতে বহিষ্কারের নীতি গ্রহণ করেন।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলীর উত্তরঃ

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

1. দক্ষিণ আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকার স্বদেশী জাতিদের মধ্যে পার্থক্যের যে-কোন একটি সম্পর্কে মন্তব্য কর।

উত্তরঃ দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় বা স্বদেশী জাতিাদের মতো উত্তর আমেরিকার স্থানীয় বা স্বদেশী জাতি ব্যাপক চাষবাসের চেষ্টা করেনি। তাঁরা তাদের চাহিদার চেয়ে অধিক উৎপাদন করেনি। এই কারণেই তারা দক্ষিণ আমেরিকার মতো রাজ্যসীমা বা সাম্রাজ্য বিস্তার করেনি।

2. ঊনবিংশ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইংরেজির ব্যবহার ছাড়া ইউরোপীয়দের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনযাত্রার আর কি কি বৈশিষ্ট্য তুমি লক্ষ্য কর?

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইংরেজির ব্যবহার ছাড়া নিম্নলিখিত ইউরোপীয় আর্থিক ও সামাজিক জীবনের বৈশিষ্ট্য দৃষ্ট হয়ঃ

(ক) স্বদেশী আমেরিকাবাসী দেশকে যে দৃষ্টিতে দেখত ইউরোপীয় জাতিরা এই দেশকে সেই দৃষ্টিতে না দেখে অন্য দৃষ্টিতে দেখত।

(খ) কিছু সংখ্যক ব্রিটিশ ও ফরাসি প্রব্রজনকারী আমেরিকায় নিজেরা জমির মালিক হতে চেয়েছিল। তারা কনিষ্ঠতম সন্তান হওয়ার ফলে পিতৃসম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারত না।

(গ) জার্মানি, সুইডেন, ইটালি প্রভৃতি দেশ হতে আগত অনেক প্রব্রাজকগণ বৃহৎ কৃষকের নিকট তাদের জমি হারার। তারা নিজেদের খামার চেয়েছিল।

(ঘ) পোল্যান্ড হতে আগত জনগণ ভূমিতে কাজ করতে চেয়েছিল, যাহা তাদের নিজ দেশের ঢালু অঞ্চলের কথা মনে করে দেয়।

(ঙ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতি কম মূল্যে বিশাল সম্পত্তি ক্রয় করা সহজ ছিল। সুতরাং ইউরোপীয়গণ বিশালাকারের জমি ক্রয় করতে সক্ষম হয়েছিল। তারা জমি পরিষ্কার করে তা কৃষি উপযোগী করে তোলে। তারা জমিতে ধান ও কার্পাসের মতো শস্য চাষ শুরু করে। এই সমস্ত শস্য ইউরোপে উৎপাদিত হত না এবং এইজন্য এইগুলিকে অধিক লাভে ইউরোপে বিক্রি করা হত। 

(চ) তারা তাদের বিশাল খামার রক্ষার জন্য বন্যপ্রাণী নিধন করত। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে কাটাতার আবিষ্কৃত হয়, এর ফলে তারা সম্পূর্ণরূপে তাদের খামার সুরক্ষিত করে। 

3. আমেরিকানদের নিকট ‘সীমান্ত’ কি অর্থ প্রকাশ করত?

উত্তরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা দেশ ও নুতন নুতন এলাকা ক্রয়ের দরুন এবং জমি ক্রয়ের দরুন বিস্তৃত থাকত। এই কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম সীমানা পরিবর্তনশীল ছিল। এই কারণে স্বদেশী জাতিগণকে ফিরে যেতে বাধ্য করানো হত। দেশের সীমানা যেখান পর্যন্ত তারা পৌঁছেছিল তা ‘সীমান্ত’ নামে পরিচিত ছিল। 

4. অস্ট্রেলিয়ার স্বদেশী জাতিসমূহের ইতিহাস কেন ইতিহাস গ্রন্থ হতে বাদ পড়েছিল?

উত্তরঃ অস্ট্রেলিয়ার স্বদেশী জাতিদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিকগণ কর্তৃক বৈষম্যের নীতি অনুসৃত হয়েছিল। তারা তাদের গ্রন্থে কেবলমাত্র ইউরোপীয় বসবাসকারীদের কৃতিত্বের কথা বর্ণনা করেছেন। তারা স্বদেশী জাতিদের ঐতিহ্য, পরম্পরা ও রীতিনীতিহীন বলে চিহ্নিত করতে চেষ্টা করেছিলেন। এই কারণে ইতিহাসের পৃষ্ঠা হতে অস্ট্রেলিয়ার স্বদেশী জাতিদের ইতিহাস বাদ পড়েছিল।

নাতিদীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

5. একটি মিউজিয়াম গ্যালারি প্রদর্শন কোন জাতির সংস্কৃতি ব্যাখ্যায় কি পরিমাণ সন্তোষজনক? কোন মিউজিয়াম সম্পর্কে তোমার অভিজ্ঞতা হতে উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ জনগণকে তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে মিউজিয়াম বা যাদুঘর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মিউজিয়াম বা যাদুঘরে প্রদর্শিত নানাবিধ জিনিস বিস্মৃত ও প্রত্যাখ্যাত সংস্কৃতি পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করে। অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতিসমূহ এর প্রকৃষ্টতম উদাহরণ।

We Hope the given একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পাঠ্যক্রমের প্রশ্ন ও উত্তর will help you. If you any Regarding, Class 11 History Question and Answer in Bengali, drop a comment below and We will get back to you at the earliest.

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top