Class 11 History Chapter 3 তিনটি মহাদেশ জুড়ে সাম্রাজ্যের পত্তন, is a textbook prescribed by the Assam AHSEC Board Class 11 History Question Answer in Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 History Chapter 3 তিনটি মহাদেশ জুড়ে সাম্রাজ্যের পত্তন The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 History Chapter 3 তিনটি মহাদেশ জুড়ে সাম্রাজ্যের পত্তন are free to use and easily accessible.
Class 11 History Chapter 3 তিনটি মহাদেশ জুড়ে সাম্রাজ্যের পত্তন
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 11 History Chapter 3 তিনটি মহাদেশ জুড়ে সাম্রাজ্যের পত্তন The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Assam AHSEC Class 11 History in Bengali Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. Class 11 History Book PDF. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Class 11 History Notes in Bengali will be able to solve all the doubts of the students. Class 11 History Suggestion in Bengali, Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the Assam AHSEC Board Class 11 History Solution. Class 11 History Notes in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.
8. রোম সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসের তিনটি কারক কি কি ছিল? তাদের প্রত্যেকের সম্পর্কে দুই/তিন লাইন লেখ।
উত্তরঃ রোম সাম্রাজ্যের তিনটি প্রধান কারক হল—সম্রাট, সম্ভ্রান্তশালী গোষ্ঠী এবং সেনাবাহিনী।
(ক) সম্রাটঃ সম্রাট ছিলেন রোমান সাম্রাজ্যের একমাত্র শাসক। তাকে প্রধান নাগরিক বলে গণ্য করা হত। সিনেটকে সম্মান করার জন্যই তা করা হত। সম্রাট চূড়ান্ত শাসক নন বলে দেখানো হত।
(খ) সম্রান্তশালী গোষ্ঠীঃ সম্ভ্রান্তশালী গোষ্ঠী সিনেটে প্রতিনিধিত্ব করতেন। এরা অভিজাত ও সম্পদশালী পরিবারে অন্তর্ভুক্ত ছিল। রোমে যখন রিপাব্লিক ব্যবস্থা ছিল তখন এই শ্রেণী তা নিয়ন্ত্রণ করত। সিনেটের প্রতি সম্রাট কিরূপ আচরণ করতেন তার দ্বারা তার মর্যাদা বিচার করা হত। যে সম্রাট সিনেটের প্রতি বিরুদ্ধাচারণ করতেন তাকে নিকৃষ্ট বলে গণ্য করা হত।
(গ) সেনাবাহিনীঃ সম্রাট ও সিনেটের পরবর্তী স্থান ছিল সেনাবাহিনীর। সেনাবাহিনী পেশাদারী ছিল। সেনাবাহিনী রাজার ভাগ্যনিয়ন্তা ছিল।
9. রোমান অর্থে ‘নগর’ কি ছিল? নগর জীবনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বল।
উত্তরঃ রোমান অর্থে ‘নগর’ হল একটি শহর এলাকা যার নিজস্ব শাসক, একটি কাউন্সিল বা পরিষদ এবং একটি ভূখণ্ড আছে। এই ভূখণ্ড তার এলাকায় অনেকগুলি গ্রাম অন্তর্ভুক্ত করত।
শহর জীবনের বৈশিষ্ট্যঃ শহর জীবনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ
(ক) নগর বা শহরে খাদ্যসামগ্রীর অভাব ছিল না।
(খ) দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দুর্ভিক্ষের সময় নগরাঞ্চলে অধিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যেত।
(ঘ) শহরের জনগণ উচ্চস্তরীয় বিলাস ও আমোদ-প্রমোদ উপভোগ করত।
10. ‘নিকট প্রাচ্য’ বলতে কি বোঝ? রোমান সাম্রাজ্যে নিকট প্রাচ্যের অবস্থান ও ভূমিকা বর্ণনা কর।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যে ভূমধ্যসাগরের পূর্ব অঞ্চলের এলাকাগুলো নিকট প্রাচ্য বলে পরিচিত ছিল। এই অঞ্চলের মধ্যে সিরিয়ার রোমান রাজ্য, প্যালেস্টাইন, মেসোপোটামিয়া এবং ব্যাপক অর্থে আরবের মতো পারিপার্শ্বিক এলাকাগুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।
নিকট প্রাচ্যে অসংখ্য রাজা ছিল রোমান সাম্রাজ্যের উপর নির্ভরশীল। এই স্থানীয় রাজ্যগুলি ছিল রোমের খরিদ্দার। এগুলির শাসকেরা প্রয়োজনে রোমের সমর্থনে তাদের সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করতেন, পরিবর্তে তাদের অবস্থান রোমান শাসক সমর্থন করতেন। এইগুলির মধ্যে কিছু ছিল যথেষ্ট সম্পদশালী। তবে দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রথমে ইউফ্রেটিস নদীর পশ্চিমদিকে সমস্ত রাজ্যগুলিকে রোমান সাম্রাজ্য গ্রাস করে নেওয়ায় নিকট প্রাচ্যে রোমান সাম্রাজ্যের কর্তৃত্ব স্থাপিত হয় এবং সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
11. “রোম সাম্রাজ্যে ব্যাপক সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ছিল।” কয়েকটি উদাহর দাও।
উত্তরঃ রোম সাম্রাজ্য নিঃসন্দেহে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ ছিল। এই বৈচিত্র্য নানাভাবে এবং নানাস্তরে প্রতিফলিত হয়েছিল; যথা—
(ক) ধর্মীয় মতবাদে নানা প্রকার বৈচিত্র্য ছিল।
(খ) সাম্রাজ্যে কথ্যভাষার বিভিন্নতা ছিল।
(গ) জনগণ নানা প্রকার পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করত।
(ঘ) সামাজিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকার রূপ ছিল।
(ঙ) জনগণ নানা প্রকার ভোগ্যসামগ্রী উপভোগ করত।
(চ) তাদের আবাসস্থলের ধরন নানা প্রকার ছিল।
12. রোম সম্রাটের চূড়ান্ত ক্ষমতা কিভাবে প্রতিহত করা হয়েছিল ?
উত্তরঃ রোম সাম্রাজ্য স্বৈরাচারী শাসনের কবলে ছিল। সম্রাট ও সরকার জনগণের অসন্তোষ বা সমালোচনা সহ্য করতে পারতেন না। গণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে সরকার সাহল ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন। চতুর্থ শতকের পূর্বে রোমান আইনের একটি শক্তিশালী পরম্পরার উদ্ভব ঘটে। এই আইন শক্তিশালী সম্রাটেরও ক্ষমতা ভঙ্গ করতে সক্ষম হয়। এই আইনের ফলে রাজাদের স্বৈরাচারী কাজের সমাপ্তি ঘটে। এই আইন মূলত নাগরিকদের পৌর অধিকারসমূহ রক্ষার্থে ব্যবহার করা হত। এই আইনের ফলে জনগণ ক্ষমতাশালী বিশপ ও ক্ষমতাবান রাজার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সক্ষম হন।
13. রোমান সাম্রাজ্যে/সমাজ ব্যবস্থায় মহিলাদের অবস্থান কেমন ছিল? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ মহিলাদের অবস্থান ও মর্যাদা একটি সমাজব্যবস্থার অগ্রগতি বা উন্নতির পরিচায়ক। রোমান সমাজব্যবস্থা এই ক্ষেত্রে ভিন্নতর ছিল না।
(ক) রোমান মহিলারা সম্পত্তি ভোগ ও দেখাশোনার ব্যাপারে যথেষ্ট আইনি অধিকার ভোগ করতেন।
(খ) বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী স্ত্রীর স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক মর্যাদা ছিল। আধিপত্যের শিকার হতেন।
(গ) যদিও মহিলাদের আইনি ও অর্থনৈতিক মর্যাদা ছিল, তবুও মহিলারা পুরুষের ।
(ঘ) শিক্ষার ক্ষেত্রে রোমান মহিলারা পুরুষের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও সমাজে শিক্ষার বিকাশে তাদের যথেষ্ট অবদান ছিল।
14. রোমান সমাজে বিবাহব্যবস্থা কেমন ছিল? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ প্রথম খ্রিস্টপূর্ব থেকে রোমান সাম্রাজ্যে এক বিশেষ ধরনের বিবাহব্যবস্থার প্রচলন হয়।
(ক) এই ব্যবস্থায় বিবাহের পরও স্ত্রী স্বামীর অধিকারে আসে না এবং মা-বাবার সম্পদের উপর সম্পূর্ণ অধিকার ভোগ করত।
(খ) কন্যাপন প্রথার প্রচলন থাকলেও মহিলারা বাবার মৃত্যুর পর তার সম্পদের অধিকারী হতেন।
(গ) ছেলেরা ২৮–২৯ থেকে ৩১ – ৩২ বছর বয়সে বিয়ে করলেও মেয়েদের বিবাহ দেওয়া হত ১৮–১৯ থেকে ২১-২২ বছরে। ফলে বয়সের পার্থক্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমস্যা তৈরি করত।
(ঘ) সাধারণত সম্বন্ধ করেই বিবাহ হত। আবার বিবাহ বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া ছিল তুলনামূলকভাবে সহজ। স্বামী ও স্ত্রীর তরফে বিচ্ছেদের চাহিদাসহ আবেদনই ছিল এই ব্যাপারে যথেষ্ট।
15. রোমান সাম্রাজ্যে কি কি ভাষার প্রচলন ছিল?
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের মুখ্য প্রশাসনিক ও ব্যবহারিক ভাষা ছিল গ্রিক ও ল্যাটিন।
তবে বিশাল বিস্তৃত সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ভাষার প্রচলন ছিল; যেমন— নিকট প্রাচ্যে অ্যারামাইক ভাষাগোষ্ঠীর প্রচলন ছিল, মিশরে কোপ্টিক ভাষা, পিউনিক ও বারবার ভাষা উত্তর আফ্রিকাতে, স্পেনে সেন্টিক ভাষা ইত্যাদি। কিন্তু এই ভাষাগুলির অধিকাংশেরই কোন লিখিত রূপ ছিল না।
16. রোমান সাম্রাজ্যে শিক্ষার কেমন প্রসার ছিল?
উত্তরঃ শিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে বলা যায় রোমান সাম্রাজ্যে সাধারণ শিক্ষিতজনের সংখ্যা নানা অংশে সমান ছিল না। অগ্ন্যুৎপাতে ধ্বংসপ্রাপ্ত পম্পেই নগরীতে প্রাপ্ত দেওয়াল লিখন ও বিজ্ঞাপন-এর অস্তিত্ব প্রমাণ করে যে এখানে যথেষ্ট শিক্ষিত লোক ছিল। অন্যদিকে মিশরে যথেষ্ট পরিমাণে প্যাপিরি পাওয়া গেলেও এখানকার দলিলপত্র সাধারণত পেশাদার লিপিকারদের দ্বারা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এর থেকে বোঝা যায় দলিল কর্তারা ছিলেন অশিক্ষিত। তবে সমাজের কয়েকটি শ্রেণী; যেমন- যোদ্ধা, সামরিক আধিকারিক ও ভূ-সম্পত্তির পরিচালকদের মধ্যে শিক্ষার হার ছিল ব্যাপক।
17. রোমান সাম্রাজ্যের সবথেকে উর্বর সমৃদ্ধশালী ও জনবহুল অঞ্চলগুলির নাম লেখ।
উত্তরঃ Strabo এবং Pliny-র মতো লেখকদের মতে রোমান সাম্রাজ্যের বহু এলাকাই ছিল উর্বর ও সমৃদ্ধশালী এবং জনবহুল হিসাবে খ্যাত, যেমন –
(ক) ইটালির ক্যাম্পানিয়া।
(খ) সিসিলি।
(গ) মিশরের ফেরাম।
(ঘ) খেলীলি, বাইজেন্টিয়াম।
(ঙ) দক্ষিণ ধল।
(চ) বেটিকা, দক্ষিণ স্পেন ইত্যাদি।
তাছাড়া কিছু অঞ্চল বিশেষভাবে খ্যাত ছিল তাদের উৎপাদকতার জন্য; যেমন—
(ক) ক্যাম্পানিয়াতে উৎকৃষ্ট মানের সুরা।
(খ) সিসিলি ও বাইজেন্টিয়ামে গম।
(গ) শ্বেলীলিতে নিবিড়ভাবে জমি চাষ। এবং
(ঘ) স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলে ওলিভ অয়েল।
18. রোমান সাম্রাজ্যে বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কি তারতম্য পরিলক্ষিত হয়? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের বহু এলাকা ছিল অনেক উর্বর, সমৃদ্ধশালী ও ঘন জনবসতিপূর্ণ। এই অঞ্চলগুলির সমৃদ্ধি রোমান সাম্রাজ্যের অগ্রগতি নিশ্চিত করেছিল।
আবার রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তৃত অন্যান্য অঞ্চল ছিল অনেকটাই অনুন্নত। যেমন নুমিডিয়ায় মেষপালক ও যাযাবর শ্রেণীর লোকেরা প্রায়ই স্থান পরিবর্তন করত। আফ্রিকার উত্তর অঞ্চলে রোমান সাম্রাজ্য বিস্তৃত হওয়ায় চারণভূমির পরিমাণ কমে আসে। এমনকী স্পেনের উত্তরাংশও ছিল যথেষ্ট অনুন্নত। সেন্টিকভাষী লোকেরা পাহাড়ের চূড়ায় বাস করত। এইভাবেই রোমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে তারতম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিলক্ষিত হয়।
19. রোমান সাম্রাজ্যের সুসংহত অর্থনৈতিক উন্নয়নের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের সময়কাল প্রাচীন যুগ হলেও সে সময়কার সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক জীবন আদিম ও অনুন্নত ছিল না, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ছিল সুসংহত।
সুসংহত অর্থনৈতিক উন্নয়নের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে জলশক্তির বহুল ব্যবহার।
(খ) জলশক্তি নির্ভর কারখানাগুলোর উন্নত পরিকাঠামো।
(গ) স্পেনে সোনা ও রুপার খনিতে হাইড্রলিক খনন পদ্ধতির ব্যবহার।
(ঘ) বিশাল দৈত্যাকার পরিমাপ যন্ত্রের ব্যবহার।
(ঙ) সুসংগঠিত বাণিজ্যিক পরিকাঠামো।
(চ) মুদ্রার বহুল প্রচলন সুসংহত অর্থনীতির ইঙ্গিত দেয়।
20. রোমান সাম্রাজ্যে কর নিরূপণ নীতি কী ছিল?
উত্তরঃ প্রারম্ভিক পর্যায়ে রোমান সাম্রাজ্য কর নিরূপণ ব্যবস্থা ছিল অতি সহজ। রোমানবাসীদের অধীনে থাকা ধন-সম্পদের পরিমাণের উপর কর নিরূপণ করা হত। যুদ্ধকালীন সময় ৩% হারে হলেও স্বাভাবিক সময় তা ছিল মাত্র ১%। অতিরিক্ত কর সংগ্রহ হলে তা ফিরিয়ে দেওয়া হত। জমি, পশু, কৃতদাস, ব্যক্তিগত সম্পদ ও অর্থনৈতিক উপাদানের উপর ভিত্তি করে কর নির্ধারিত হত।
তবে ১৬৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পরবর্তী সময় নতুন নতুন বহু অঞ্চল বা রাজ্য দখলের ফলে রোমান সাম্রাজ্য বিশাল সম্পদশালী হয়ে ওঠে। স্পেনের রুপা ও সোনার খনির উপর নিয়ন্ত্রণ রোমান সাম্রাজ্যের খাজনা সংগ্রহের এক বিশাল সূত্র তুলে ধরে। তাছাড়াও তার বিভিন্ন প্রদেশ বিশাল খাজনা প্রদানের এক উপায় হয়ে ওঠে। এর ফলে রোমান শাসক তার ইটালিও নাগরিকদের থেকে খাজনা বা কর সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা বোধ করে এবং কেবল প্রাদেশিক অঞ্চল থেকে কর সংগ্রহের মাধ্যমেই সাম্রাজ্যে আর্থিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রিত হয়।
21. রোমান সাম্রাজ্যে প্রকার অধিকার রক্ষায় আইনী সহায়তা কতটুকু সক্ষম ছিল। সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ রোমান শাসনব্যবস্থা ছিল স্বৈরাচারী প্রকৃতির। ফলে কোন ধরনের আদেশ অমান্য করলে বা প্রতিবাদ বা প্রতিরোধকে সরকার বল প্রয়োগের মাধ্যমে মোকাবিলা করত। তবে চতুর্থ শতাব্দী থেকে রোমান আইনের একটি শক্ত ধারা গড়ে উঠেছিল
এবং এই আইনগুলো চরম কঠোর সম্রাটদের কাজকর্মেরও রাশ টেনে ধরত। টা নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী যেমন খুশি চলতে পারতেন না, কারণ জনসাধারণের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে আইনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এর ফলে চতুর্থ শতাব্দীর শেষভাগে বা পরবর্তীতে যখন রোমান সম্রাটরা জনগণের সঙ্গে কঠোর ব্যবহার করেছেন ও তাদের নিপীড়ন করেছেন তখন নিজেদের অধিকার রক্ষায় জনগণ আইনের আশ্রয়ে পরিত্রাণ পেয়েছেন।
22. রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাসে চতুর্থ শতাব্দীর গুরুত্ব কি?
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাসে চতুর্থ শতাব্দী ছিল নিম্নলিখিত কারণে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক দুদিকেই গুরুত্বপূর্ণঃ
(ক) সাংস্কৃতিক পর্যায়ে খ্রিস্টধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সম্রাট কনস্টেনটাইন ধর্মীয় ক্ষেত্রে আলোড়ন সৃষ্টি করেন।
(খ) সম্রাট ডায়োক্লেটিয়ান সাম্রাজ্যের সীমারেখার পরিবর্তন ও সামরিক এবং অসামরিক শাসনব্যবস্থার পৃথকীকরণ করেন।
(গ) সম্রাট কনস্টেনটাইন নতুন স্বর্ণমুদ্রা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।
(ঘ) সম্রাট কনস্টেনটাইন কনস্টানটিনোপল নামে সাম্রাজ্যের নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। যার ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি লাভ করে।
23. রোমান সাম্রাজ্যে ধর্মীয় বিশ্বাস কি ছিল? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ রোমানরা বহু ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিল। সাম্রাজ্য জুড়ে যেমন অসংখ্য মন্দির বা দেবালয় ছিল তেমনি অগণিত রোমান দেবদেবী ও গ্রীক এবং পূর্বদেশীয় দেবদেবীর স্তুতি বা আরাধনা হত। বহু দেবদেবীর নিজস্ব কোন নামে পৃথক অস্তিত্ব ছিল না।
আরেকটি ধর্মীয় বিশ্বাস ছিল ইহুদী ধর্মমত, যা পরবর্তী পর্যায়ের ইহুদী মতবাদ থেকে ভিন্ন ছিল।
চতুর্থ শতাব্দীতে খ্রিস্টধর্ম রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে স্বীকৃত হলে এই ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটে। স্থানীয়রা খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করলেও তাদের প্রচলিত বিশ্বাস ও প্রথাগুলো মেনে চলত। খ্রিস্টীয় যাজকরা কঠোরতর বিশ্বাস ও প্রথা দৃঢ়ভাবে বলবৎ করে খ্রিস্টীয় অনুগামীদের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতেন। যদিও খ্রিস্টধর্মে প্রসার ঘটে এবং বিভেদের সৃষ্টি হয় তবুও প্রচলিত বিশ্বাস চলতে থাকে এবং ধীরে ধীরে ধর্মীয় প্রভেদ ক্রমশ হ্রাস পায় এবং সুস্থিরতা আসে।
24. রোম সভ্যতা পতনের চারটি কারণ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ রোম সভ্যতা পতনের চারটি কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
(ক) সাম্রাজ্যবাদ রোম সভ্যতা পতনের একটি অন্যতম প্রধান কারণ। যুদ্ধ ও সাম্রাজ্যবাদের ফলে রোম সাম্রাজ্যে গণতন্ত্র বেশিদিন স্থায়ী নি
(খ) রাজনৈতিক সংঘাত ও দুর্নীতির ফলে রোম সভ্যতার পতন ঘটে।
(গ) খ্রিস্টধর্ম বিস্তারের ফলে রোম সম্রাটের কর্তৃত্ব হ্রাস পায়।
(ঘ) সাম্রাজ্যে বিভিন্ন উপজাতির আক্রমণের ফলে রোম সম্রাটের ক্ষমতা হ্রাস পায়।
25. রোম সাম্রাজ্যের পতন প্রক্রিয়া সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তরঃ রোম সাম্রাজ্যের পতন প্রক্রিয়া পশ্চিম সাম্রাজ্যে শুরু হয়। যখন উত্তরের জার্মানির গোষ্ঠী (গোথ, বান্দাল, লোমবার্ড প্রভৃতি) সকল প্রধান প্রধান প্রদেশ জয় করে এবং সেখানে তাদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে তখন পশ্চিমাঞ্চল খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যায়। এই প্রদেশসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল স্পেনের ভিসিগোথ, ধনের ফ্রাঙ্ক এবং ইটালির লোমবার্ড।
জাস্টিনিয়ান ৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে বান্দালদের কাছ থেকে আফ্রিকা পুনর্দখল করেন। তিনি অস্ট্রোগোৎসদের নিকট হতে ইটালি পুনরুদ্ধার করেন। কিন্তু এই পুনরুদ্ধার দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয় এবং লম্বার্ড আক্রমণের পথ পরিষ্কার করে দেয়।
সপ্তম শতকের প্রথমদিকে রোম ও ইরানের মধ্যে পুনরায় যুদ্ধ আরম্ভ হয়। তৃতীয় শতক থেকে ইরান সাসানিয়ান কর্তৃক শাসিত হত। তারা মিশরসহ পূর্বদিকের সকল প্রধান প্রদেশে আক্রমণ চালায়। ৬২০-এর দশকে রোম সম্রাট বাইজেন্টিয়াম এইসব প্রদেশ পুনরুদ্ধার করেন। তখন থেকে মাত্র কয়েক বছর পর দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে চরম আঘাত আসে। ৬৪২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আরবগণ পূর্ব রোম ও সাসানিয়ান সাম্রাজ্য উভয়েরই এক বিশাল এলাকা জয় করে। এইভাবে রোম সাম্রাজ্যের সম্পূর্ণ পতন ঘটে।
26. ‘এস্ফোরাই’ বিষয়ে একটি টীকা লেখ।
উত্তরঃ ‘এস্ফোরাই’ হল রোমান সাম্রাজ্যে ব্যবহৃত একপ্রকার পাত্র। মদ এবং অলিভ অয়েলের মতো তরল পদার্থ এই সকল পাত্র দ্বারা রোমান সাম্রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হত। এই সকল পাত্রের খোলামকুচির মতো ভগ্ন অংশ পাওয়া যায় এবং তার থেকে এগুলো কোন অঞ্চলে তৈরি করা হয়েছিল সে সম্বন্ধে পুরাতত্ত্ববিদরা ধারণা করেছেন। এছাড়া এই সকল পাত্রগুলোতে ব্যবহৃত মাটির ধরন থেকে ভূমধ্যসাগরের কোন্ অঞ্চলে কোন প্রকার দ্রব্য বেশি উৎপাদিত হত তাও নির্ণয় করেছেন।
27. রোম ও ইরান সাম্রাজ্যের বিস্তার আলোচনা কর।
উত্তরঃ ছয়শত ত্রিশ দশকের শেষদিকে ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ অঞ্চল দুটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য কর্তৃক শাসিত হয়েছিল। এই দুটি শক্তিশালী সাম্রাজ্য হল রোম ও ইরান। উভয় সাম্রাজ্যই একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। ইতিহাসের অধিকাংশ সময় একে অন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল। উভয় সাম্রাজ্য ইউফ্রেটিস নদী সংলগ্ন একটি সংকীর্ণ ভূমি বা বিভক্ত ছিল।
(ক) রোম সাম্রাজ্যঃ ভূমধ্যসাগর এবং তার চতুর্দিকে উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলে রোম সম্রাজ্যের আধিপত্য ছিল। উত্তর দিকে রোম সাম্রাজ্যের সীমানা রাইন ও ড্যানিউ নদী দুটি দ্বারা নির্ধারিত ছিল। দক্ষিণ দিকে এর সীমানা বিশাল সাহারা মরুভূমি যারা নির্ধারিত ছিল।
(খ) ইরান সাম্রাজ্যঃ দক্ষিণের কাস্পিয়ান সাগর হতে আরম্ভ করে পূর্ব দিকের আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল এবং কখনও কখনও আফগানিস্তানের বিশাল এলাকা ইরান সাম্রাজ্য কর্তৃক বশীভূত ছিল।
28. রোম সাম্রাজ্য সাংস্কৃতিকভাবে ইরান সাম্রাজ্য অপেক্ষা অধিক বৈচিত্র্যম ছিল কি? রোমান সাম্রাজ্য ও ইরানীয় সাম্রাজ্যের মধ্যের পার্থক্য লেখ।
উত্তরঃ ইরান প্রথমত পার্থিয়ান এবং পরবর্তীকালে মাসানিয়ান রাজবংশ কর্তৃক শাসিত হয়েছিল এবং দুইটি রাজবংশ প্রধানত ইরানী জনগণকে শাসন করেছিল। কিন্তু রোম সাম্রাজ ভৌগোলিকভাবে সংমিশ্রিত, যা সাধারণত একই শাসন পদ্ধতির দ্বারা আবদ্ধ ছিল। এই সাম্রাজ্যে বহু ভাষায় কথা বলা হত। কিন্তু প্রশাসনিক কাজে ল্যাটিন ও গ্রিক ভাষা ব্যবহৃত করা হত। পশ্চিমাঞ্চলের উচ্চ সম্প্রদায় ল্যাটিন ভাষায় কথা বলত ও লিখত এবং পূর্বাঞ্চলের উচ্চ সম্প্রদায়ভুক্ত জনগণ গ্রিক ভাষায় লিখত ও কথা বলত। সাম্রাজ্যে বাস করা সকল জনগণ এক শাসকের অধীন ছিল। সুতরাং রোম সাম্রাজ্য সাংস্কৃতিকভাবে ইরান সাম্রাজ্য অপেক্ষা অধিক বৈচিত্র্যময় ছিল।
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ
1. রোম সমাজের পারিবারিক জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা কর।
উত্তরঃ রোম সমাজের পারিবারিক জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) একক পরিবার ব্যবস্থাঃ রোম সমাজে একক পরিবার ব্যবস্থা বহুলভাবে প্রচলিত ছিল। প্রাপ্তবয়স্ক পুত্র একসঙ্গে পিতার সঙ্গে একই পরিবারে থাকত না। অপরদিকে দাসকে পরিবার জীবনের একটি বিশেষ অঙ্গ বলে বিবেচিত করা হত।
(খ) বিবাহ ব্যবস্থাঃ খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতক পর্যন্ত স্ত্রী তার সম্পত্তি স্বামীকে হস্তাস্তর করত না। পত্নী তাহার জন্মগত পারিবারিক সম্পত্তির উপর অধিকার বজায় রাখত। বিবাহকালীন পত্নীর যৌতুক স্বাভাবিকভাবেই স্বামীর উপর ন্যস্ত হত। বিবাহের পরও পিতার সম্পত্তির উপর কন্যার উত্তরাধিকার থাকত। পিতার মৃত্যুর পরও এমনকী কন্যা মৃত পিতার সম্পত্তির মালিক হত। এইভাবে রোমান মহিলাদের সম্পত্তির মালিকানা ও তদারকির আইনগত অধিকার ছিল। তখনকার দিনে বিবাহ বিচ্ছেদ খুবই সহজ ছিল।
(গ) পুরুষশাসিত পরিবারঃ প্রাচীন রোম সাম্রাজ্যে পুরুষশাসিত পরিবার ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। মহিলাগণ সাধারণত স্বামী কর্তৃক শাসিত হত। স্বামীগণ প্রায়ই তাদের স্ত্রীকে প্রহার ও শারীরিক নির্যাতন করত। তাছাড়া সন্তানদের উপর পিতার বৈধ নিয়ন্ত্রণ থাকত। তাদের অবাঞ্ছিত সন্তানদের বর্জন করবার বৈধ ক্ষমতা পিতার ছিল।
2. রোম সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক বিস্তারের উপর আলোকপাত কর।
উত্তরঃ রোম সাম্রাজ্যে নানাপ্রকার অর্থনৈতিক কার্যকলাপ চলত। এর ফলে রোম সাম্রাজ্যে ব্যাপক আর্থিক প্রসার ঘটে।
এই আর্থিক বিস্তারের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) রোম সাম্রাজ্যে খনি, বন্দর, ইটখোলা, পাথর ফ্যাক্টরি, জলপাই তেল প্রভৃতির উন্নত পরিকাঠামো ছিল। মদ, গম, জলপাই তেল অধিক পরিমাণে ভোগ্য বস্তুহিসাবে ব্যবহৃত ও বাণিজ্য করা হত। এই সকল পণ্যসামগ্রী মূলত প্রদেশ, স্পেন, মিশর, উত্তর আফ্রিকা এবং ইটালি থেকে আমদানি করা হত। মদ। ও জলপাই তেল এমফোরাই নামক পাত্রে আদান-প্রদান করা হত এদের গুণগত গেলিক মান বজায় রাখার কারণে।
(খ) ১৪০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্প্যানিশ জলপাই তেলের বাণিজ্য চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। স্প্যানিশ জলপাই তেল ড্রেজেল ২০’ নামক পাত্রের মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হত। স্পেনের প্রস্তুতকারকগণ ইটালির জলপাই তেলের বাজার দখল করে। এর কারণ হল স্পেনের প্রস্তুতকারকগণ অপেক্ষাকৃত কম দামে উন্নতমানের জলপাই তেল সরবরাহ করত।
(গ) রোম সাম্রাজ্যের অনেক অঞ্চলের উচ্চ প্রজনন ক্ষমতার জন্য সুনাম ছিল। সাম্রাজ্যের জনবহুল এলাকা ও ঐশ্বর্যশালী এলাকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—ইটালির সিসিলি, মিশরের ফাইয়ুম এবং গেলিলী, বাইজেসিয়াম (টিউনিসিয়া), দক্ষিণ ধল এবং বেয়িটিকা (দক্ষিণ স্পেন)।
(ঘ) কেম্পোনিয়া উন্নতমানের মদ তৈরির প্রধান কেন্দ্র ছিল। সিসিলি ও বাইজাসিয়ান। কর্তৃক রোমে অধিক পরিমাণে গম রপ্তানি করা হত। বস্তুত, রোম সাম্রাজ্য অর্থনৈতিকভাবে অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র ছিল। দেশে প্রচুর পরিমাণে স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন ছিল।
3. রোমান সাম্রাজ্যে কখন এবং কিভাবে ইটালীয় কর্তৃত্ব লোপ পায়? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় ছিল ইটালি ও রাজাগুলির মধ্যে ক্ষমতার হস্তান্তর। সাম্রাজ্যের প্রারম্ভিক পর্যায়ে সিনেট ও সেনাবাহিনীতে ইটালীয় আধিপত্য বিস্তৃত ছিল। তবে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শতাব্দী ব্যাপী সময়ে রাজ্য পর্যায়ের উঁচু শ্রেণীভুক্ত পরিবার থেকে রাজ্য শাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মী ও সেনাধিকারিক নিয়োগ করা হত। সম্রাটের স্নেহধন্য এই গোষ্ঠী শাসন ও সামাজিক প্রধানদের একটি নতুন শ্রেণী তৈরি করেছিল, যারা কালক্রমে সিনেটের সদস্যদের চেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠে। সিনেট, যাতে ইটালীয় আধিপত্য ছিল, একে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে সম্রাট খেলিনাস সিনেটরদের সেনাবাহিনীতে নিযুক্তি বা সংস্পর্শ থেকে দূরে দূরে রাখতেন।
প্রথম শতাব্দীর শেষ ভাগ এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীর প্রথম ভাগে সামরিক বাহিনী শাসনকার্যে নিযুক্তদের মূলত রাজ্যগুলি থেকেই নেওয়া হত, যার ফলে কেবল ইটালির উপর নির্ভর করতে হত না। কিন্তু তৃতীয় শতাব্দী পর্যন্ত ইটালির নাগরিকরা সিনেটে তাদের আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিল, যতক্ষণ না রাজ্যস্তর থেকে আগত সিনেটররা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এর ফলেই রোমান সাম্রাজ্যের ভিতর ইটালির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পতন সূচীত হয়।
4. আমি/ প্রথম রোমান সাম্রাজ্যের সামাজিক শ্রেণীগুলি কি কি? পরবর্তী পর্যায়ে এর কোন পরিবর্তন আসে না কি? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ রোমান সমাজ বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভাজিত ছিল। রোমান লেখক টাসিটাস-এর বর্ণনায় রোমান সামাজিক শ্রেণীগুলির বর্ণনা পাওয়া যায়। আদি/ প্রথম রোমান সাম্রাজ্যের সামাজিক শ্রেণীগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) সিনেট সদস্যরা।
(খ) অশ্বারোহী শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা।
(গ) জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ সম্মানীয় শ্রেণী।
(ঘ) বিশেষ পরিবারভূক্ত শ্রেণী।
(ঙ) সার্কাস, নাটক ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত নীচুতলার মানুষ।
(চ) ক্রীতদাস।
তবে ‘পরবর্তী’ বা শেষ রোমান সাম্রাজ্যকালে এই সামাজিক শ্রেণীবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটে এবং নতুনভাবে নিম্নোক্ত শ্রেণী বিভাজন হয়ঃ
(ক) অভিজাত শ্রেণী গঠিত হয় পূর্ববর্তী সিনেট সদস্য ও অগারোহী শ্রেণীর সদস্যদের নিয়ে।
(খ) মধ্যবিত্ত শ্রেণী, যার অংশ হয় আমলাতন্ত্র এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া পূর্বাঞ্চলীর সমৃদ্ধ ব্যবসায়ী এবং কৃষকরাও এই শ্রেণীর অংশ ছিল। এই শ্রেণীভূক্ত গোষ্ঠীরা মূলত সরকারি চাকুরি ও রাষ্ট্রের উপর নির্ভর করে তাদের জীবনধারণ করত।
(গ) সর্বনিম্নে ছিল ‘Humiliores’ নামে পরিচিত বিশাল নিম্ন শ্রেণী। এর অংশ ছিল গ্রাম্য শ্রমিক, শিল্প ও খনির কাজে যুক্ত শ্রমিক, শস্য ও অলিভ ক্ষেতে কর্মরত ও নির্মাণশিল্পে যুক্ত শ্রমিক, নগরের ঠিকা শ্রমিক এবং ক্রীতদাসরা।
5. রোমান সমাজব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।
উত্তরঃ রোমান সমাজব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত উন্নত এবং আধুনিক। এর মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) রোমান সাম্রাজ্যের একটি অতি আধুনিক বৈশিষ্ট্য ছিল অণু পরিবারের অস্তিত্ব। প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা যেমন বাবা-মায়ের সঙ্গে এক পরিবারে বাস করত না, তেমনি প্রাপ্তবয়স্ক ভাইয়েরাও এক বাড়িতে বসবাস করত না।
(খ) ক্রীতদাসরা ছিল রোমান পরিবার ব্যবস্থার অবিচ্ছিন্ন অঙ্গ।
(গ) রোমান মহিলারা সম্পত্তি ভোগ ও দেখাশোনার ব্যাপারে যথেষ্ট আইনি অধিকার ভোগ করতেন।
(ঘ) সন্তানের উপর পিতার অধিকার ছিল চূড়ান্ত পর্যায়ের।
(ঙ) সমাজের কয়েকটি বিশেষ শ্রেণী; যেমন- যোদ্ধা, সামরিক আধিকারিক ও ভূ-সম্পত্তির পরিচালকদের মধ্যে শিক্ষার হার ছিল ব্যাপক।
(চ) বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে সাংস্কৃতিক বিভিন্নতার মধ্যেও ঐক্য ছিল সমাজ জীবনে।
(ছ) আইনি অধিকার ও মর্যাদা থাকলেও মহিলারা পুরুষের আধিপত্যের শিকার হতেন।
6. রোমান সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো কেমন ছিল? এর উপর ভিত্তি করে কিভাবে সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ বন্দর, পাথর, খাদ, খনি, ইটভাটা, ওলিভ অয়েল কারখানা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে রোমান সাম্রাজে একটি শক্ত অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে উঠেছিল।
গম, সুরা, অলিভ অয়েলের মতো বহুলব্যবহৃত সামগ্রীর যথেষ্ট পরিমাণে ব্যবসা বাণিজ্য হত। অনুকূল আবহাওয়াতে এই ধরনের সামগ্রী স্পেন, গ্যালিক প্রদেশ, উত্তর আফ্রিকা, মিশর ও কিছু পরিমাণে ইটালিতে উৎপন্ন হত। সাম্রাজ্যের সর্বত্র ব্যবসা হত। আবার নিজেদের উৎপাদিত জিনিস বাজারজাত করবার ব্যাপারে বিভিন্ন এলাকার ভূস্বামীদের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতার মনোভাব ছিল। তাছাড়া সংগঠিত বাণিজ্যিক পরিকাঠামো এবং মুদ্রার বহুল ব্যবহার রোমান সাম্রাজ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেছিল।
7. রোমান সাম্রাজ্যে ক্রীতদাস ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও নিকট প্রাচ্যে ক্রীতদাস প্রথার প্রচলন ছিল। চতুর্থ শতাব্দীতে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসাবে খ্রিস্টান ধর্মের উত্থান ও বিকাশ ঘটলেও ক্রীতদাস প্রথার অস্তিত্ব নিয়ে কোন প্রশ্ন দেখা দেয়নি। তবে এটাও সত্য যে রোমান অর্থব্যবস্থায় সকল কঠোর পরিশ্রমের কাজই ক্রীতদাসরা করত না। অবশ্য ক্রীতদাসরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাতে এক ধরনের বিনিয়োগ। কিন্তু রোমান কৃষি-বিষয়ক লেখকরা ভূস্বামীদের ক্রীতদাস ব্যবহারে সতর্ক করে দেন। তবে এটা ক্রীতদাসদের প্রতি সহানুভূতির মনোভাব থেকে নয়, বরং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিচার-বিশ্লেষণ করেই এই ধরনের মত ধরেছিলেন। আবার রোমান উচ্চশ্রেণীর লোকেদের ব্যবহার ক্রীতদাসের প্রতি অমানবিক হলেও সাধারণ লোক প্রতি ছিল সহানুভূতিশীল।
8. রোমান সাম্রাজ্যে শ্রমিকের উপর নিয়ন্ত্রণ বা পরিচালনার ক্ষেত্রে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ রোমান কৃষি-সম্বন্ধীয় লেখকদের শ্রমিক পরিচালনার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে দেখা যায়। তাদের বর্ণনায় পাওয়া যায় যে নিয়োগকর্তাদের ধারণা ছিল যে তদারকি ছাড়া কোন কাজই সুসম্পাদিত হতে পারে না, তাই সাধারণ শ্রমিক ও ক্রীতদাসদের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত পর্যায়ের অনারকির ব্যবস্থা ছিল।
তদারকির কাজের সুবিধার জন্য শ্রমিকদের ছোট-বড় গোষ্ঠীতে ভাগ করে নওয়া হত। Colurella দশজন শ্রমিকের গোষ্ঠী গঠনের সুপারিশ করেছিলেন, কারণ এতে শ্রমিকের দক্ষতা যাচাই ও কাজ করানো সম্ভব ছিল। প্রিনীর লেখায় গোষ্ঠীবদ্ধ শৃঙ্খলিত শ্রনিককে কাজ করানোর উল্লেখ পাওয়া যায়, যা তিনি সমালোচনা করেছিলেন।
রোমান সাম্রাজ্যের কিছু শিল্প সংগঠনে কঠিনতর শ্রমিক পরিচালনা পদ্ধতি গ্রহণ করা হত। আলেকজান্দ্রিয়ার সুগন্ধি কারখানায় যথেষ্ট পরিমাণ তদারকি ব্যবস্থার পরও শ্রমিকদের উর্দি ছাড়াও ঘন জালিকাবদ্ধ একটি মুখোশ মাথায় পরতে হত এবং কর্মক্ষেত্র ছাড়ার আগে তাদের সেখানকার সমস্ত জামাকাপড় পরিবর্তন করতে হত।
কৃষিক্ষেত্র বা শিল্পখানা থেকে পালিয়ে যাওয়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার সুবিধার জন্য প্রথম অবস্থাতেই তাদের শরীরে নির্মমভাবে চিহ্নিতকরণ করা হত। তাছাড়াও বহু নিয়োগকর্তা শ্রমিকলের সঙ্গে তাদের চুক্তি ঋণপত্রের আদলে তৈরি করতেন। এক্ষেত্রে কর্মীরা নিয়োগকর্তার কাছে কণী বলে প্রতিপন্ন করে তাদের উপর নিয়োগকর্তার কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করা হত।
9. তৃতীয় শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্যে আভ্যন্তরীণ সংকট কিভাবে সাম্রাজ্যের পতন ত্বরান্বিত করেছিল, সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় শতাব্দীতে শান্তি, সমৃদ্ধি ও (অর্থনীতির) অর্থনৈতিক বিস্তার ঘটলেও তৃতীয় শতাব্দীতে আভ্যন্তরীণ অশান্তির সূচনা হয়। ২৩০ খ্রিস্টাব্দ থেকে রোমান সাম্রাজ্য একসাথে নানা দিকে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে।
২২৫ খ্রিস্টাব্দে ইরানে একটি নতুন রাজবংশ সেসেনিয়ো ক্ষমতায় আসে এবং মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে তারা ইউফ্রেটিস নদীর দিকে অগ্রসর হয়ে রোমান সাম্রাজ্যভুক্ত অঞ্চল এবং তার রাজধানী ‘এন্টিয়োজ’ দখল করে।
ইতিমধ্যে জার্মান উপজাতিগোষ্ঠীর সমষ্টি রাইন ও দানিয়ুব নদীর সীমান্তে এগিয়ে যায়। এর ফলে ২৩৩–২৮৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে কৃষ্ণসাগর থেকে আলপস্ পর্বতমালা পর্যন্ত বিস্তৃত রোমান সাম্রাজ্যভুক্ত অঞ্চল বহুবার জার্মান উপজাতি, যেমন— গোথ, ফ্রেঙ্ক ইত্যাদির দ্বারা আক্রান্ত হয়। রোমানরা এর ফলে দানিয়ুব নদীর পরবর্তী বহু এলাকার উপর নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তবুও এই উপজাতিদের সঙ্গে অনবরত যুদ্ধ করে যেতে হয়েছে রোমান সাম্রাজ্যের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য।
তাছাড়া ঘনঘন সম্রাটের পরিবর্তন রোমান সাম্রাজ্যের দ্রুত অবনতির দিকে ধাবিত হওয়া রাজনৈতিক পরিকাঠামোর পরিচায়ক। এইভাবেই তৃতীয় শতাব্দীতে আভ্যন্তরীণ অশান্তি রোমান সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব পতনের দিকে নিয়ে গিয়েছিল।
10. ফ্রান্সের ভৃত্য এবং রোমান দাসদের জীবনধারার তুলনা কর।
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের দাস ও মধ্যযুগীয় ফ্রান্সের ভৃত্য (serf)-এর সময়কালের পার্থক্য তথা অঞ্চলের পার্থক্য থাকলেও তাদের অবস্থার বিশেষ কোন পার্থক্য ছিল না। উভয়ই তারা তাদের স্বামীর অধীনস্ত ছিল এবং তাদের কোন স্বাধীনতা ছিল না।
রোমান দাসঃ
(ক) রোমান সাম্রাজ্যে ক্রীতদাসরা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য হত।
(খ) ক্রীতদাসদের ব্যবহার করা হত বিশেষত তার স্বামীর ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক কাজে।
(গ) ক্রীতদাসদের কাজে নিয়োগ করা হলে, তারা যাতে পলায়ন না করে, তাই তাদের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখা হত।
ফ্রান্সের ভৃত্য (Seri):
(ক) সার্ফ বা ভূমিদাসরা তাদের প্রভুর জমি চাষ করত।
(খ) সার্ফ বা ভূমিদাসের দ্বারা উৎপাদিত সামগ্রীর অধিকাংশই সামন্ত প্রভু হস্তগত করতেন।
(গ) তারা প্রভুর অনুমতি ব্যতীত স্বামীর আনুগত্য ছেড়ে যেতে পারত না। তাছাড়া কৃষিকাজ ব্যতীত নানা শ্রমদান করতে হত।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলীর উত্তরঃ
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
1. তুমি যদি রোম সাম্রাজ্যে বাস করতে তাহলে তুমি শহরে না দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস করতে? কেন কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ আমি যদি রোম সাম্রাজ্যে বাস করতাম তাহলে আমি শহরে বাস করতাম। এর কারণসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) শহরে খাদ্যসামগ্রীর কোন অভাব বা দুষ্প্রাপ্যতা ছিল না।
(খ) দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল অপেক্ষা শহরে নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধা ছিল।
(গ) শহরে ভোগবিলাসের অপেক্ষাকৃত ভাল ব্যবস্থা ছিল।
2. এই অধ্যায়ে উল্লিখিত কয়েকটি শহর, নগর, নদী, সাগর এবং প্রদেশের একটি তালিকা তৈরি কর। এই তালিকার যে-কোন তিনটি বিষয় সম্পর্কে তুমি কি কিছু বলতে পার?
উত্তরঃ শহর ও নগরঃ রোম, কার্তাজ, নেপোলস, এন্টিয়োক, দামাস্কাস, আলেকজেন্দ্রিয়া, কাউম, কনস্টানটিনোপল, তানগিরেস, হিপ্পোনিয়াম।
নদনদীঃ রাইন, ডানিউব, টাইগ্রিস, ইউফ্রেটিস, নীল, ওয়াডালকিভির।
সমুদ্রঃ ভূমধ্যসাগর, আদ্রিয়াটিক সাগর, এজিয়ান সাগর, লোহিত সাগর, কৃষ্ণসাগর।
প্রদেশঃ গাউল (আধুনিক ফরাসি দেশ), কেম্পানিয়া, মেসিডোনিয়া, মিশর, রিপোলিতানিয়া, আফ্রিকা প্রসেনমুলার, টিউনিসিয়া, মুনিনিয়া, মরক্কো, বাইটিকা (দক্ষিণ) স্পেন), হাসপানিয়া (উত্তর স্পেন), সিরিয়া।
উপরোক্ত তালিকার তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচিত হলঃ
(ক) ভূমধ্যসাগর—ভূমধ্যসাগর ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশকে বিভক্ত করেছে এবং পশ্চিম দিকে স্পেন হতে আরম্ভ করে পূর্ব দিকে সিরিয়া পর্যন্ত সকল দিক দিয়ে বিস্তৃত। ভূমধ্যসাগর রোম সাম্রাজ্যের হৃদপিণ্ডস্বরূপ ছিল। রোম সাম্রাজ্য উত্তর ও দক্ষিণ উভয় দিকে সমগ্র ভূমধ্যসাগর ও তার চতুর্দিকের অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের একীকরণ দূরপাল্লার সমুদ্র বাণিজ্যে গতি সঞ্চার করেছিল এবং রোম সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করেছিল।
(খ) স্পেন—রোমের স্পেন নিয়ন্ত্রণ বিশাল পরিমাণ কৃষিঙ্গ জমির যোগান দিয়েছিল। সামরিক শহর, প্রশাসনিক নগর কেন্দ্রের বিকাশ এবং রোমান উপনিবেশ কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় যেখান হতে ল্যাটিন সংস্কৃতি প্রচারিত হত।
(গ) রাইন ও ডেনিউব নদীঃ এই নদী দুটি রোম সাম্রাজ্যের উত্তর দিকের সীমানা নির্ধারণ করেছিল।
3. মনে কর তুমি একজন রোমান গৃহবধূ ঘরের প্রয়োজনে বাজারের একটি তালিকা তৈরি করছ। এই তালিকায় কি কি থাকবে?
উত্তরঃ শিক্ষার্থীগণ নিজেরা চেষ্টা করে তৈরি করবে। শিক্ষার্থীদের নিজ কল্পনাশক্তি থাকা বাঞ্ছনীয়।
সঙ্কেতঃ খাদ্যসামগ্রী/পোশাক-পরিচ্ছদ / অলঙ্কার সামগ্রী/শিখন সামগ্রী।
4. রোম সরকার রৌপ্যমুদ্রা তৈরি বন্ধ করেছিলেন কেন বলে তুমি মনে কর এবং মুদ্রা তৈরির জন্য কোন্ ধাতুর ব্যবহার আরম্ভ করেছিলেন?
উত্তরঃ রোম সরকার ‘ডেনিয়াস’ নামে পরিচিত রৌপ্যমুদ্রা তৈরি বন্ধ করেছিলেন, কারণ—
(ক) রূপা স্পেনের খনি হতে উত্তোলন করা হত।
(খ) অবিরাম রূপা ব্যবহারের ফলে খনিসমূহ প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছিল।
(গ) অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্পেনের খনি হতে খনিজ উত্তোলন সুবিধাজনক নয়। এই সকল কারণে রোম সরকার স্বর্ণমুদ্রা তৈরি করতে আরম্ভ করেন।
নাতিদীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ
5. মনে কর সম্রাট ট্রাজন ভারতবর্ষ অধিগ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছেন এবং রোমানগণ বহু শতাব্দী এই দেশে শাসন কায়েম করেছিল। কি কি ভাবে বর্তমান ভারতবর্ষ অন্যরকম হত বলে তুমি ভাব?
উত্তরঃ রোমানগণ যদি ভারতবর্ষে বহু শতাব্দী ধরে বাস করত তাহলে ভারতবর্ষ নিম্নলিখিতভাবে পৃথক হতঃ
(ক) ভারতবর্ষে গণতন্ত্রের পরিবর্তে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হত।
(খ) খ্রিস্টধর্ম ভারতের রাষ্ট্রধর্ম হত।
(গ) দাসব্যবস্থা দেশে প্রচলিত থাকত।
(ঘ) ভারতীয় বিভিন্ন ভাষা ছাড়াও ল্যাটিন, গ্রিক প্রভৃতি ভাষার প্রচলনও দেশে থাকত।
(ঙ) গ্রামাঞ্চল শহর দ্বারা শাসিত হত।
(চ) দেশে কলা ও ভাস্কর্যের পরিবর্তন হত।
(ছ) ভারতবাসী ভারতীয়দেরা দেবীর সঙ্গে বৃহস্পতি, জুনো প্রভৃতি রোমান দেবদেবীর পূজার্চনা করত।
(জ) ভারতীয় সমাজ প্যাট্রিসিয়ান, প্রেবিয়ান ও দাস প্রভৃতিতে বিভক্ত থাকত।
6. এই অধ্যায়টি ভালোভাবে পড় এবং রোম সমাজের ও অর্থনীতির কয়েকটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর যা তোমার কাছে সম্পূর্ণ আধুনিক বলে মনে হয়।
উত্তরঃ রোম সাম্রাজ্যের কয়েকটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ
(ক) রোম সমাজ উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল।
(খ) রোম সমাজে একক পরিবারের (nuclear) ব্যাপক প্রসার ছিল।
(গ) পিতার সম্পত্তিতে মেয়েদের পূর্ণ অধিকার ছিল। তারা সম্পত্তি দখল ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারত।
(ঘ) রোম সমাজে বিভিন্ন ধর্মীয় মতবাদ, বহু ভাষা, নানা প্রকার পরিধান, খাদ্যসামগ্রী, সামাজিক সংগঠনের প্রচলন ছিল।
(ঙ) রাজা স্বেচ্ছাচারীর মতো কাজ করতে পারতেন না।
(চ) জনগণ তাদের অধিকার রক্ষার জন্য আইনের সক্রিয় ব্যবহার করতে পারত | রোম অর্থনীতির কয়েকটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ
(ক) রোম সাম্রাজ্যের একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ছিল।
(খ) রোম সাম্রাজ্যের ব্যবসা-বাণিজ্য সমৃদ্ধশালী ছিল।
(গ) কৃষি উৎপাদনের হার অত্যন্ত অধিক ছিল।
(ঘ) সমগ্র রোম সাম্রাজ্যে একটি সংঘটিত বাণিজ্যিক ও ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।
(ঙ) গ্যালিলি প্রদেশে অত্যধিক কৃষিযোগ্য জমি ছিল।
We Hope the given একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পাঠ্যক্রমের প্রশ্ন ও উত্তর will help you. If you any Regarding, Class 11 History Chapter 3 তিনটি মহাদেশ জুড়ে সাম্রাজ্যের পত্তন, drop a comment below and We will get back to you at the earliest.
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.