Class 11 History Chapter 6 তিনটি শ্রেণী, is a textbook prescribed by the Assam AHSEC Board Class 11 History Question Answer in Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 History Chapter 6 তিনটি শ্রেণী The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 History Chapter 6 তিনটি শ্রেণী are free to use and easily accessible.
Class 11 History Chapter 6 তিনটি শ্রেণী
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Assam AHSEC Class 11 History in Bengali Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. Class 11 History Book PDF. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Class 11 History Notes in Bengali will be able to solve all the doubts of the students. Class 11 History Suggestion in Bengali, Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the Assam AHSEC Board Class 11 History Solution. Class 11 History Notes in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.
16. “The Manorial Estate’ বা ‘জমিদারের খাস ভূসম্পত্তি’ কি? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।
উত্তরঃ মধ্যযুগীয় ইউরোপের জমিদারদের অধীনে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা কৃষিযোগ্য উর্বর ভূমি হচ্ছে “The Manorial Estate’ বা ‘জমিদারের খাস ভূসম্পত্তি, যা তারা শাসকের নিকট থেকে তাদের বাধ্যতা ও আনুগত্যের জন্য লাভ করত। এইগুলির আকারে ছোট বা বড় পার্থক্য ছিল। এর অন্তর্গত গ্রামগুলিকে ভূ-মালিক সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতেন। ‘The Manonial Estate’ বা ‘জমিদারের খাস ভূসম্পত্তির’ বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় প্রায় সব দ্রব্যই এগুলিতে পাওয়া যেত।
(খ) এই খামারগুলিতে বিস্তৃত গোচারণভূমি ছিল। তাছাড়াও গাছগাছালি ও বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। যেখানে জমিদাররা শিকার করতেন।
(গ) খামারগুলোর পরিধি এত বিশাল ছিল যে সেখানে চার্চ ও যে-কোন বহিঃআক্রমণের প্রতিরোধের জন্য দুর্গও ছিল।
(ঘ) স্বনির্ভরতার পরিপূর্ণতা ছিল না, কারণ লবণ, যাঁতাকলের পাথর ও ধাতুদ্রব এবং বিলাস সামগ্রী আমদানি করতে হত।
17. চতুর্দশ শতকে ইউরোপের অর্থনৈতিক অবনতির কারণ কি কি? সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ চতুর্দশ শতকে ইউরোপের অর্থনৈতিক অবনতির মুখ্য কারণগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) উত্তর ইউরোপে শীতকাল দীর্ঘায়িত হওয়ায় শস্য উৎপাদন ব্যাপক হারে হুম পায়। তাছাড়া সামুদ্রিক ঝড় ও বন্যা মানুষকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করে দেয়। যার ফলে সরকার এর খাজনা সংগ্রহ হ্রাস পায়।
(খ) পূর্বের অনুকূল আবহাওয়া ব্যাপক হারে বন ও চারণভূমিকে কৃষির আওতা আনতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু কৃষিজমির উপর অত্যধিক চাপ জমির উর্বরত নষ্ট করে ফেলেছিল।
(গ) কৃষিক্ষেত্রে আবর্তন প্রক্রিয়া চালু ছিল, তবে এই পদ্ধতি চালু থাকলেও ভূমিক্ষয় রোধের চেষ্টা করা হয়নি। এতে চারণভূমির পরিমাণ কমে যায় এবং গবাদি পশুর সংখ্যা কমে যায়। তাছাড়াও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সম্পদ বৃদ্ধির হারকে ছাপিয়ে যাওয়ায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
(ঘ) ধাতুমুদ্রার ঘাটতি ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি সাধন করে। এই পরিস্থিতিতে সস্তা দস্তার মুদ্রা ব্যবহার শুরু হয় ইত্যাদি।
18. চতুর্দশ শতকের অর্থনৈতিক সংকট ও মহামারীর ফলাফল লেখ।
উত্তরঃ চতুর্দশ শতকের অর্থনৈতিক সংকট ও মহামারীর ফলে নিম্নোক্ত বিপর্যয়কর ফলাফল লক্ষ্য করা যায়ঃ
(ক) অর্থনৈতিক সংকট মিলে অশেষ সামাজিক দূরবস্থার সৃষ্টি করে।
(খ) লোকক্ষয়ের ফলে শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়।
(গ) কৃষি ও শিল্পে ব্যাপক ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি করে।
(ঘ) জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় দ্রব্যাদির চাহিদা কমে। যার ফলে কৃষিপণ্যের দাম কমে যায়।
(ঙ) চাহিদার তুলনায় শ্রমিকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় শ্রমিকের মজুরি দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি।
19. চতুর্দশ শতকের অর্থনৈতিক সংকট ও মহামারীর ফলে কিভাবে সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করে? এর ফলাফল লেখ।
উত্তরঃ কৃষি উৎপাদন হ্রাস পাওয়া, আর্থিক দুরাবস্থা, জনসংখ্যা হ্রাস এই সকল কারণে ভূস্বামীদের আয় কমে যায়। এই পরিস্থিতিতে নিজের ক্ষমতা ও সমৃদ্ধি বজায় রাখতে ভূস্বামীরা পূর্ববর্তী চুক্তিগুলো পরিত্যাগ করে নতুন শ্রমিক নীতি গঠন করে যাতে কৃষকরা তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে এতে সামাজিক অস্থির পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।
কৃষক অসন্তোষ খুব কঠোর হস্তে দমন করা হয়। চূড়ান্ত অত্যাচার সত্ত্বেও তারা এমনভাবে বিদ্রোহ চালিয়ে যেতে তারা পুরোনো সমস্ত প্রথাজনিত পরিস্থিতি উদ্ভব না হয়। ভূস্বামীরা বিদ্রোহ দমন করতে সমর্থ হলেও তারা সামন্ততান্ত্রিক বিশেষ সুবিধাগুলো যাতে তার ফিরে না পান, কৃষকরা অন্তত সেই ব্যবস্থা করতে পেরেছিল।
20. শহরের বাতাস মানুষকে মুক্ত করে দেয়’ (‘Town air makes free ) কথাটা বিশ্লেষণ কর।
উত্তরঃ উল্লেখিত উক্তিটি একটি প্রচলিত প্রবাদ, যা তৎকালীন সমাজে ভূমিদাসদের অবস্থা বর্ণনা করে।
ভূমিদাস প্রথায় একটি শর্ত ছিল যে যদি একজন ভূমিদাস শহরে গিয়ে এক বছর লুকিয়ে থাকতে পারত তাহলে সে দাসত্ব থেকে মুগ্ধ হয়ে যেত। যেহেতু ভূমিদাসের অনেকেই তার দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে চাইত তারা শহরে গিয়ে লুকিয়ে থাকত। এর মাধ্যমে এই দাসত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়। যা শহরের বৃহৎ অর্থনীতি ও মানুষের মুক্ত চিন্তাধারার পরিচায়ক। যে পরিচিতি একজন মানুষ তার অস্তিত্বের প্রয়োজনে রক্ষা করতে চায়। দাসত্বের বন্ধন মানুষের স্বাধীন পরিচিতির ব্যতিক্রম। তাই এই পথ অবলম্বনের মাধ্যমে মানুষ নিজের সত্তা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করত।
21. কি কি উপাদান জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র বিকাশে সহায়তা করেছিল?
উত্তরঃ নিম্নলিখিত উপাদানগুলি জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র বিকাশে সহায়তা করেছিলঃ
(ক) সামস্তপ্রথার বিলোপঃ সামন্তপ্রথা বিলোপের ফলে জমিদারদের ক্ষমতা হ্রাস পায়। সুতরাং ক্ষমতাশালী শাসক সকল ক্ষমতা তাদের হাতে তুলে নেয়।
(খ) মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শক্তি বৃদ্ধিঃ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শক্তি বৃদ্ধি পায়। মধ্যবিত্ত শ্রেণী আশ্চর্যজনকভাবে জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনে অবদান যুগিয়েছিল।
(গ) জাতীয় ভাষা ও সাহিত্যঃ জাতীয় ভাষাসমূহ ও সাহিত্য জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র বিকাশে বৃহৎ ভূমিকা পালন করেছিল।
জাতিভিত্তিক রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ক্ষমতাশালী ও চূড়ান্ত শাসকের হাতে ছিল। ওইরূপ একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা দেশে গড়ে উঠেছিল এবং অরাজকতার পরিসমাপ্তি ঘটেছিল।
22. গাউল (মূল) কিভাবে ফরাসি দেশে পরিণত হয়েছিল?
উত্তরঃ গাউল (ম্বল) রোম সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ ছিল এবং পর্বতমালা, বিস্তৃত সমুদ্র উপকূল, বনভূমি, দীর্ঘ নদ-নদী, কৃষি উপযোগী বিস্তীর্ণ সমভূমি পরিবেষ্টিত ছিল। ‘ফ্রাঙ্ক’ নামক একটি জার্মেনিক’ উপজাতি তাদের নামে এই দেশের ফ্রান্স নামকরণ করেছিলেন। ষষ্ঠ শতকে এই অঞ্চল ফ্রানকিস/ফ্রান্স ফরাসি খ্রিস্টান রাজা দ্বারা শাসিত হয়েছিল। ফরাসিদের গির্জার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্ক আরও গভীরতর হয় যখন ৮০০ খ্রিস্টাব্দে রাজা চার্লস মেজ্ঞনিকে পোপ কর্তৃক ‘পবিত্র রোমক সম্রাট’ উপাধি দ্বারা ভূষিত করা হয়। এর ফলে পোপের প্রতি সম্রাটের সমর্থন অব্যাহত থাকে।
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ
1. মধ্যযুগে ফ্রান্সে দ্বিতীয় শ্রেণী কোনটি ছিল? সমাজে এই শ্রেণীর মর্যাদা আলোচনা কর।
উত্তরঃ মধ্যযুগে ফ্রান্সে অভিজাতবর্গ ছিল দ্বিতীয় শ্রেণী। এটা সত্য যে যাজক বা পুরোহিতগণ প্রথম শ্রেণীভুক্ত ছিলেন, কিন্তু সামাজিক প্রক্রিয়ার প্রধান ভূমিকা অভিজাত শ্রেণীই সম্পাদন করত। এর কারণ হল জমি অভিজাত শ্রেণী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত। ভাসালোজ’ নামক এক প্রকার সামাজিক প্রথার ফলে এই নিয়ন্ত্রণ প্রচলিত ছিল।
ফরাসি রাজাগণ ভাসালোজ দ্বারা জনগণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিলেন। ভাসালোজ রীতি অনুযায়ী কৃষকগণ ছিল অভিজাতবর্গের পোষ্য এবং অভিজাতবর্গ ছিল রাজার পোষ্য। একজন অভিজাত ব্যক্তি রাজাকে তার বয়োজ্যেষ্ঠ বলে গ্রহণ করতেন এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিজ্ঞাবদ্ধতা থাকত। পোষ্য ব্যক্তিরা প্রভু কর্তৃক সুরক্ষিত থাকত এবং প্রভুর প্রতি অনুগত থাকত। অনেকেই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করত এবং গির্জায় বাইবেল হাতে নিয়ে প্রতিজ্ঞা বিনিময় করত। এটা ছিল তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের অঙ্গ। অভিজাত শ্রেণীর মর্যাদাঃ মধ্যযুগে ফ্রান্সে অভিজাত শ্রেণী নিম্নোক্ত উচ্চ মর্যাদা ভোগ করতঃ
(ক) অভিজাত ব্যক্তি তার সম্পত্তির উপর চূড়ান্ত এবং স্থায়ী কর্তৃত্ব ভোগ করত।
(খ) ‘সামস্ত শুল্ক’ নামক এক প্রকার সেনা রাখবার তার স্বাধীনতা ছিল।
(গ) সে তার নিজের আদালত রাখতে পারত, এমনকী নিজ মুদ্রাও তৈরি করতে পারত।
(ঘ) অভিজাত ব্যক্তি তার জমিতে বসবাসকারী সকল মানুষের প্রভু ছিল।
(ঙ) অভিজাত ব্যক্তি বিশাল জমির মালিক ছিল।
2. মধ্যযুগে ইউরোপীয় সমাজে গির্জার প্রভাব কিরূপ ছিল আলোচনা কর।
উত্তরঃ মধ্যযুগে ইউরোপীয় সমাজ ব্যবস্থায় গির্জা একটি প্রধান প্রভাব বিস্তার করেছিল। এটি ইউরোপীয়দের লোকপরম্পরা ও যাদুবিদ্যার প্রতি প্রাচীন বিশ্বাসের উপর নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত করেছেঃ
(ক) যীশুখ্রিস্টের জন্মদিবস ২৫ ডিসেম্বর পালন করা হত। এটি প্রাচীন প্রাক্-রোমান উৎসব পালন পরিবর্তন করেছিল।
(খ) ইস্টারকে যীশুখ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধের প্রতীক বলা হয় এবং এইদিনই যীশুর পুনরুত্থান হয়। কিন্তু ইস্টার-এর তারিখ নির্দিষ্ট ছিল না। পরম্পরাগতভাবে এই দিন প্রত্যেক গ্রামের মানুষ তাদের গ্রামের জমি পরিদর্শনে যেত।
(গ) অত্যধিক কাজে ব্যস্ত শ্রমিকগণ পবিত্র দিনগুলিকে স্বাগত জানাত কারণ এই দিনগুলিতে তাদের কাজ করতে হত না। এই দিনগুলি প্রার্থনার জন্য নির্দিষ্ট থাকত এবং এই দিনগুলিতে তারা আমোদ-প্রমোদ ও খাওয়া-দাওয়া করত।
(ঘ) তীর্থযাত্রা খ্রিস্টান জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল। বহু মানুষ দীর্ঘপথ অতিক্রম করে বৃহৎ গির্জায় যেত।
3. মধ্যযুগীয় ইউরোপে তৃতীয় শ্রেণী অথবা কৃষকদের জীবনী বর্ণনা কর।
অথবা,
মধ্যযুগের ইউরোপীয় সমাজে কৃষকের স্থান কীরূপ ছিল?
উত্তরঃ মধ্যযুগে ইউরোপে কৃষক বা চাষিরা ছিল তৃতীয় শ্রেণী। তারা প্রথম দুই শ্রেণীর (খ্রিস্টান পুরোহিত ও অভিজাত জমিদার) জীবিকার যোগান দিত। তারা নিম্নোক্ত দুই প্রকার ছিলঃ
(ক) স্বাধীন কৃষকঃ স্বাধীন কৃষকগণ ভাড়াটে হিসাবে তাদের প্রভুর জমিতে বাস করত। তারা বছরে ৪০ দিন সামরিক সেবা দান করত। কৃষকের পরিবারের সদস্যগণও সামন্ত প্রভুর জমিতে শ্রমদান করত। এই শ্রমদানের ফসল সরাসরি প্রভুর নিকট যেত। তাছাড়াও কৃষকরা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ, পুকুর খনন, বেড়া তৈরি, রাস্তা মেরামত প্রভৃতি মজুরিবিহীন কাজ করতে হত। জমির কাজে সহায়তা ছাড়াও মহিলা এবং তাদের সন্তান-সন্ততিদের মোমবাতি তৈরি, তাঁত বোনা কাপড় এবং মদ তৈরির জন্য আঙুরের রস বের করা প্রভৃতিতে সহায়তা করত। রাজা কখনও কখনও ‘টেইলি’ নামক একপ্রকার কর কৃষকদের উপর আরোপ করতেন। যাজক ও অভিজাতবর্গ কর হতে রেহাই পেত।
(খ) সার্ফ বা ভূমিদাসঃ সার্ফ বা ভূমিদাসরা প্রধানত সামন্ত প্রভুর জমি চাষ করত। এইজন্য উৎপাদিত সামগ্রীর অধিকাংশই সামস্ত প্রভু হস্তগত করতেন। বলপূর্বক শ্রম বা বেকার তাদের নিকট হতে আদায় করা হত। তারা সামন্ত প্রভুর অনুমতি ব্যতীত জমি চাষ ছেড়ে দিতে পারত না। ভূমিদাসগণ প্রভুর কলে তাদের আটা-ময়দা প্রভৃতি তৈরি করতে পারত। সামন্ত প্রভুরা ভূমিদাস কাকে বিয়ে করবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারী ছিল।
4. সামন্তপ্রথা বলতে কি বোঝ? আলোচনা কর।
উত্তরঃ রোমক সাম্রাজ্য পতনের পর টিউডর যুগের প্রারম্ভে ইউরোপে রাজনৈতিক অরাজকতা দেখা দেয়। সকল লোকেরা দুর্বলদের উপর অত্যাচার ও অবিচার করতে থাকে। আত্মরক্ষার তাগিদে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এক নব পর্যায়ের রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে ওঠে, যার ফলে সাধারণ কৃষকরা কতকগুলি শর্তে জমিদারদের নিকট আশ্রয়প্রার্থী হয়েছিলেন। এই প্রকার প্রথাকে সামন্তপ্রথা বলা হত।
সামন্তপ্রথা দুই প্রকারের রাজনৈতিক সামন্তপ্রথা এবং অর্থনৈতিক সামন্তপ্রথা। রাজনৈতিক সামন্তপ্রথা বলতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং অর্থনৈতিক সামন্তপ্রথা বলতে ভূ-সম্পত্তির ব্যবহারিক পদ্ধতি বোঝায়।
সামস্তপ্রথা বিলোপের কারণসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) সামস্তপ্রথায় সার্ক ও মধ্য ভূম্যধিকারীর সঙ্গে রাজার কোন সম্পর্ক না থাকায় মুখ্য ভূমাধিকারীগণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পক্ষান্তরে রাজার ক্ষমতা লোপ পাওয়ায়। রাজন্যবর্গ এই প্রথা ধ্বংসের চেষ্টা করেন।
(খ) সার্কদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়ায় তারা সামস্তপ্রথার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল।
(গ) সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক ব্যবসা- বাণিজ্যের প্রসার হয় এবং ফলে মুখ্য ভূম্যধিকারীদের শক্তি হ্রাস পায়।
(ঘ) ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের ‘ধর্মযুদ্ধ’ বাধলে ভূম্যধিকারীদের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।
(ঙ) মুখ্য ভূমাধিকারীরা প্রাচীন পন্থায় রণসম্ভার রাখতেন। আধুনিক রণসম্ভার আবিষ্কৃত হওয়ায় তারা দুর্বল হয়ে পড়ে। সর্বোপরি, ফরাসি বিপ্লব পৃথিবীর সাধারণ লোককে নুতন শিক্ষা দিয়েছিল, যার ফলে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে সামর্থ সমগ্র ইউরোপ থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
5. সামন্তপ্রথার গুণ এবং দোষসমূহ আলোচনা কর।
উত্তরঃ মধ্যযুগীয় ইউরোপে গড়ে ওঠা সামস্তপ্রথার গুণসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) সামস্তপ্রথার উদ্ভবের ফলে সাধারণ মানুষ বহিরাগতদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। যার ফলে একটি সমৃদ্ধিশালী সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
(খ) সামন্ত প্রভুরা শাসনের স্বৈরাচারী শাসন থেকে রক্ষা করে।
(গ) সামস্তপ্রথার ফলে ইউরোপে কৃতদাস প্রথা অস্তিত্ব হারায়।
(ঘ) সামস্তপ্রথার ফলে ইউরোপে সাধারণ মানুষের জীবনের অশান্তি দূর হয়। কারণ সামস্ত প্রভুর প্রতি তাদের কর্তব্য ও আনুগত্য তাদের সুরক্ষা ও জীবিকা সুনিশ্চিত করে। মধ্যযুগীয় ইউরোপে গড়ে ওঠা সামন্তপ্রথার দোষসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) সামস্তপ্রথা সমাজকে দুটি ভাগে বিভক্ত করে ফেলে- সামস্ত শ্রেণী ও কৃষক।
(খ) সামস্তপ্রণার ফলে ইউরোপ রাজনৈতিক ঐক্য হারায়।
(গ) সামস্তপ্রথা জাতীয়তাবাদ অস্বীকার করে। সামন্ত প্রভুদের মধ্যে ক্রমাগত যুদ্ধ-বিগ্রহ চলতে থাকার ফলে জাতীয় রাষ্ট্রগঠন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়।
(ঘ) সামস্তপ্রথার ফলে কৃষকদের জীবন দুঃসহ হয়ে ওঠে। ছোট জমির অধিকারী কৃষকদের জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে ওঠে।
6. সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তরঃ দাস-ব্যবস্থার পর সামস্ত প্রথার সূত্রপাত হয়। দাস-মালিক ও দাসগণের মধ্যে শ্রেণীদ্বন্দু উৎপাদন সম্পর্কে যে পরিবর্তন আনে, তাতে দাস-ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে ও তার ধ্বংসাবশেষের উপর সামন্ততান্ত্রিক সমাজ গড়ে ওঠে। সমাজ বিবর্তনের অন্যান্য স্তরের মতো সামন্ততান্ত্রিক স্তরেও সমাজ শ্রেণীভেদ ও শোষণের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। সামন্ততান্ত্রিক সমাজের মূল বৈশিষ্ট্য হল যে, বিত্তবান সামস্তগণ উৎপাদনের উপাদানসমূহের মালিক হলেও সাধারণ মানুষ এই সমাজে ঠিক পুরোপুরি দাস ছিল না। তাদের উপর প্রভুদের সম্পত্তির দাবির অবসান ঘটে এবং উৎপাদনের উপাদান ও যন্ত্রের উপর সাধারণ মানুষের কিছু কিছু অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ভূমিদাসগণ দাসদের মতো সামস্তপ্রভুর ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল না। কিন্তু তারা বেগার খেটে প্রভুর জমি চাষ করতে বাধ্য থাকত। এর পরিবর্তে ভূমিদাসদের ভাগ্যে জুটত ক্ষুদ্র ভূমিখণ্ড ভোগ করার অধিকার। সেই জমিতে চাষাবাদ করে তাদের অন্ন-সংস্থানের ব্যবস্থা করতে হত। সামন্ততান্ত্রিক যুগে অনেক ক্ষেত্রে ভূমিদাসদের সপ্তাহের অধিকাংশ সময় মালিকের জমিতে উপস্থিত থেকে প্রভুর হুকুম তামিল করতে হত।
সামন্ততান্ত্রিক ইউরোপে দুটি প্রধান শ্রেণী হল জমিদার বা সামন্ত প্রভু এবং সাধারণ কৃষক বা সার্ফ। এই সার্ফরা ঠিক দাসশ্রেণীতে পড়ে না, আইনত তারা প্রভুদের সম্পত্তি ছিল না। তাদের নিজস্ব কিছু কিছু জমি থাকত এবং সেই জমি চাষ করে তারা জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু ইচ্ছানুসারে গ্রাম পরিত্যাগ করার স্বাধীনতা না থাকায় তাদের ভূমিদাস বলা যায়। সার্ফদের প্রায় অর্ধেক সময় সামন্ত প্রভুর জমিতে হাজিরা দিতে হত বেগার খাটবার জন্য। তারা মালিকের জমি বিনা মজুরিতে চাষ করে দিত এবং অন্যান্য কাজও সম্পন্ন করত।
ব্যক্তিগত জমিতে বেগার খাটানোর প্রথা যে সামন্ততান্ত্রিক যুগের সবক্ষেত্রেই চালু ছিল এমন কথা বলা যায় না। কোথাও কোথাও ক্ষুদ্র চাষিদের নিজ ভূমিখণ্ডে উৎপন্ন শস্যের বৃহদংশ বিনামূল্যে জমিদারদের হাতে তুলে দেওয়ার বাধ্যতামূলক ব্যবস্থাও প্রচলিত ছিল। সামন্ত্রতান্ত্রিক সমাজে উৎপাদনের অধিকাংশ ক্ষেত্র জুড়ে ছিল কৃষিকাজ। অগণিত ক্ষুদ্র ভূখণ্ডে অসংখ্য ক্ষুদ্র চাষি অক্লান্ত পরিশ্রমে প্রাচীন প্রথায় জমি চাষ করে কায়ক্লেশে নিজেদের জীবনধারণের ব্যবস্থা করত।
সামন্ততান্ত্রিক যুগে অধিকাংশ লোক গ্রামে বাস করত। এই গ্রামগুলিকে ম্যানর নামে অভিহিত করা হয়। প্রত্যেক ম্যানরের একজন প্রভু বা জমিদার থাকত। গ্রামের কিয়দংশ থাকত তাঁর ব্যক্তিগত দখলে, আর অবশিষ্টাংশ থাকত প্রজাদের হাতে।
সামন্ততান্ত্রিক যুগের শেষ দিকে ক্রমে ক্রমে শহরগুলির বিস্তার ঘটে। শহরের শ্রীবৃদ্ধির মূলে ছিল কারিগরদের কাজের সম্প্রসারণ। সামন্ততান্ত্রিক সমাজে চাষাবাদের কাজের সঙ্গে হাতের কাজ একটি বিশেষ স্থান করে নেয়। ক্রমে কারিগর ও ব্যবসায়ীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। কৃষিকাজের যুগ পর্যন্ত উৎপাদন-সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে মানুষ ও প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তা ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির সম্পর্কের উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ল।
সামন্ততান্ত্রিক যুগে সমাজ-জীবনে সংঘবদ্ধ হবার রীতি প্রচলিত ছিল। প্রতি গ্রামে তার পরিচয় পাওয়া যায়। শহরেও সেই ব্যবস্থা থাকায় সর্বত্র বণিক ও কারিগরদের ‘গিল্ড’ স্থাপিত হয়। এক একটি গিল্ডে এক এক ব্যবসায়ের কারিগরগণ দলবদ্ধ হয়ে স্বীয় স্বার্থরক্ষার চেষ্টা করত। গিল্ডগুলি প্রভুশ্রেণীর শোষণ প্রতিরোধের একটি হাতিয়ারস্বরূপ ছিল। গিল্ডের আর একটি উদ্দেশ্য হল – প্রতিযোগিতা হ্রাস করা, যাতে গিল্ডের অন্তর্গত কারিগরদের। কোনরকম ক্ষতি না হয়।
কৃষিকাজ সামন্ততান্ত্রিক সমাজের প্রধান উপজীবিকা হলেও কারিগরগণ বিভিন্ন ধরনের পণ্য প্রস্তুত করতে আরম্ভ করে। চাষিদের যেমন নিজস্ব জমি, গোরু, লাঙল ইত্যাদি উৎপাদনের উপাদান ছিল, সেইরূপ কারিগরদেরও নিজ নিজ যন্ত্রপাতি ছিল। সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় উৎপাদন-সম্পর্কের ক্ষেত্রে সামন্ত প্রভু হল উৎপাদন উপাদানের মালিক, কিন্তু ভূমিদাসের সম্পূর্ণ মালিক সে নয়। ভূমিদাসকে সে ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারে, কিন্তু হত্যা করতে পারে না।
7. মধ্যযুগে ইউরোপে ক্ষমতাশীল নূতন রাষ্ট্রসমূহ (জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র) কিভাবে আবির্ভূত হয়েছিল? এই সকল রাষ্ট্র অভিজাতদের নিকট হতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছিল কেন?
উত্তরঃ মধ্যযুগে ইউরোপের রাজনৈতিক অঙ্গনেও পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল। পঞ্চদশ এবং ষোড়শ শতকে ইউরোপীয় রাজারা তাদের আর্থিক ও সামরিক ক্ষমতা শক্তিশালী করেন। তারা চূড়ান্ত শাসকে পরিণত হন। এই প্রভাবশালী রাজাগণের মধ্যে ফরাসি একাদশ লুই, অস্ট্রিয়ার ম্যাক্সমিলিয়ন, হল্যান্ডের সপ্তম হেনরী এবং স্পেনের ইসাবেল ও ফাড়জিনও উল্লেখযোগ্য। স্পেন ও পর্তুগালের রাজাগণ ইউরোপের সমুদ্র বিস্তারে ভূমিকা পালন আরম্ভ করেন।
নুতন রাষ্ট্র আবির্ভাবের কারণসমূহঃ ক্ষমতাশালী নূতন রাষ্ট্রসমূহ আবির্ভাবের কারণসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) সামাজিক পরিবর্তনঃ দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতকে নানাবিধ সামাজিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। জমিদারদের সামন্ত প্রথা ভেঙে পড়ে এবং অর্থনৈতিক উন্নতির হার মন্থর হয়ে পড়ে। ফলে রাজাগণের অভিজাত শ্রেণী ও সাধারণ মানুষের উপর নিয়ন্ত্রণে সুযোগ করে দেয়। এইভাবে রাজাগণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং অভিজাতবর্গের রাজাদের নিয়ন্ত্রণ করবার সাহস ছিল না।
(খ) কর বৃদ্ধিঃ রাজা কর বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব সংগ্রহ করে ছিলেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় তারা সাম্রাজ্যের সীমা বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা প্রকাশ করেছিলেন। ফলে রাজ কর্তৃত্বের উপর আভ্যন্তরীণ বাধা প্রতিহত করা সহজ করে তোলে।
অভিজাত কর্তৃক বাধা দানঃ নুতন ক্ষমতাবান রাষ্ট্রসমূহ অভিজাতদের নিকট হতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। কর ও রাজস্বের প্রশ্নই নূতন রাষ্ট্রসমূহের বাধাবিপত্তির প্রধান ভিত্তি। ইংল্যান্ডে ১৪৪৭, ১৫৩৬, ১৫৪৭, ১৫৪৯ এবং ১৫৫৩ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহ দেখা দেয় এবং তা দমন করা হয়। ফ্রান্সে একাদশ লুই রাজপুত ও সম্রাটের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রাম করেছিলেন। ক্ষুদ্র অভিজাত সম্প্রদায়গণ সাধারণভাবে তৃতীয় সমিতির সদস্য ছিলেন। তারাও তাদের ক্ষমতার উপর রাজকীয় হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে রাজার বিরুদ্ধাচারণ করে। ষোড়শ শতকে ফ্রান্সের ধর্মীয় যুদ্ধ রাজার অধিকার ও স্বাধীনতার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটি অংশবিশেষ।
8. চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ইউরোপের অর্থনৈতিক অগ্রগতি পিছিয়ে পড়ার কারণগুলি ব্যাখ্যা কর। এর ফলাফল কি ছিল?
উত্তরঃ চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ইউরোপের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধাক্কা খেয়েছিল নিম্নোক্ত কারসমূহের জন্যঃ
(ক) জলবায়ুর পরিবর্তনঃ ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষদিক থেকে গত প্রায় তিনশো বছরের আবহাওয়া অতিরিক্ত ঠান্ডায় কমে যায়। উচ্চ স্থানে ঠান্ডা এত প্রবল হয় যে শস্য উৎপাদন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেক শস্যক্ষেত ঝড় এবং সামুদ্রিক বন্যায় ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে সরকারের ট্যাক্স আদায় তথা রোজগার ভীষণভাবে কমে যায়।
(খ) নিবিড় চাষবাসঃ ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত সহায়ক জলবায়ুর ফলে অনেক বনাঞ্চল কেটে ফেলে তা কৃষিজমিতে পরিণত করা হয়। তা সত্ত্বেও প্রতি বছর তিনটি করে চাষের জন্য জমির উর্বরতা একদম নষ্ট হয়ে যায়। ঠিকমতো ভূমি সংরক্ষণের অভাবে জমির উর্বরতা যেমন কমে যায়, খাদ্যের অভাবে গবাদি পশুর সংখ্যাও যায় কমে।
(গ) ধাতব মুদ্রার অভাবঃ অস্ট্রেলিয়া এবং সার্বিয়ার রূপার খনিতে রূপা উত্তোলনের ঘাটতির ফলে ধাতব মুদ্রার গুরুতর অভাব দেখা দেয়। ফলে বাণিজ্য মার খায়। ফলে এই সংকট থেকে উদ্ধার পেতে সরকার মুদ্রায় রূপার ভাগ কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয় এবং সস্তা ধাতুর মিশ্রণে সংকর ধাতু দিয়ে মুদ্রা তৈরি করে।
(ঘ) প্লেগের প্রাদুর্ভাবঃ ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীতে সমুদ্রপথে বাণিজ্য হত এবং বহু দূর দেশে জাহাজে করে পণ্য পরিবাহিত হত। নানা দেশ থেকে কিছু ইঁদুর জাহাজের খোলের ভিতর আশ্রয় নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করে এবং প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটায়। ইউরোপের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়, কোন কোন এলাকায় প্রায় দুই-পঞ্চমাংশ লোক এই রোগের শিকার হয়।
ফলাফলঃ নিম্নোক্ত ঘটনাবলী প্লেগের ফলস্বরূপ ঘটেঃ
(ক) প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাবে এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক সংকটে এক মহা সামাজিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
(খ) এত বিপুল সংখ্যক লোক মারা যাওয়ায় শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়।
(গ) কৃষি এবং শিল্পের মধ্যে অসমতা পরিলক্ষিত হয়।
(ঘ) ক্রেতার অভাবে কৃষিজাত উৎপাদনের মূল্য পড়ে যায়।
(ঙ) জন স্বল্পতার জন্য শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যায়।
9. কিভাবে মধ্যযুগীয় ইউরোপে বিভিন্ন কারক বা উপাদান আর্থসামাজিক পরিবর্তন এনেছিল, সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তরঃ যাজক ও অভিজাত শ্রেণী প্রচলিত আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোকে স্থায়ী ও অপরিবর্তনীয় বলে মনে করত। কিন্তু বিভিন্ন কারকের মধ্যে পরিবর্তন প্রচলিত পরিকাঠামোতে পরিবর্তন আসে। এই ক্ষেত্রে মুখ্য কারকগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) পরিবেশঃ পঞ্চম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যে ইউরোপের অধিকাংশ স্থানই জঙ্গলাকীর্ণ ছিল কারণ এই সময় প্রচণ্ড শৈত্যপ্রবাহ চলছিল ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়। আবার একাদশ শতাব্দী থেকে উন্নতা বৃদ্ধি পেলে কৃষি জমির পরিধি বৃদ্ধি ও বিস্তার লাভ করে।
(খ) জমির ব্যবহারঃ প্রথম দিকে কৃষি প্রযুক্তি মোটেই উন্নত ছিল না। ফলস্বরূপ কৃষিকাজ অত্যন্ত শ্রমনির্ভর হয়ে উঠেছিল এবং অধিক উৎপাদনের নিমিত্ত জমি কর্ষণ ভিন্নভাবে করা সত্ত্বেও জমির উর্বরতা কমে যায়, যাতে উৎপাদন কমতে থাকে ফলে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছিল। তার মধ্যে অতিরিক খাজনা আদায়ের জন্য ভূস্বামীদের প্রচেষ্টা ভূস্বামী ও কৃষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করে।
(গ) নতুন কৃষি পদ্ধতিঃ একাদশ শতাব্দী থেকে কৃষিকাজে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ধীরে ধীরে লোহার ভারী ও চোখা লাখল, পশুর ব্যবহার, জমিকে দুফসলা থেকে তিন ফসলা, জলসেচের ব্যবহার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ। এইগুলি ধীরে ধীরে সমাজে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন সূচিত করে।
10. এগারো শতকের পর থেকে কি কি কৃষি প্রযুক্তিগত পরিবর্তন হয়েছিল। এগুলির প্রভাব উল্লেখ কর।
উত্তরঃ এগারো শতকের পর কৃষি প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়ঃ
(ক) কাঠের তৈরি হালের পরিবর্তে লোহার ভারি ও চোখা হাল ব্যবহার শুরু হয়। এবং সমান্তরাল দণ্ড ব্যবহার-এর ফলে জমির উর্বরতা বেড়ে গিয়েছিল।
(খ) পশুর ঘাড়ের পরিবর্তে তাদের কাঁধকে কাজে লাগিয়ে চাষ শুরু হয়।
(গ) জল ও বায়ু নির্ভর বিদ্যুতের মাধ্যমে ইউরোপে অনেকগুলি শস্য ও আঙুর মাড়াই কারখানা গড়ে ওঠে।
(ঘ) কৃষিজমিকে দু’ফলা থেকে তিন ফসলা জমিতে রূপান্তরিত করা হয়। এতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পায়, যে পরিস্থিতি কৃষকদের পক্ষে খুব সন্তোষজনক ছিল।
(ঙ) আবার কিছু প্রযুক্তিগত পরিবর্তন খুব ব্যয়সাপেক্ষ; যেমন- জলচালিত বা বায়ুচালিত কল স্থাপন। তাই জমিদাররাই এই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেন ইত্যাদি।
এই পরিবর্তনের ফলে নিম্নলিখিত প্রভাব পরিলক্ষিত হয়ঃ
(ক) সামন্ততন্ত্রের ভিত্তি হিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তিগত অঙ্গীকার দুর্বল হতে শুরু করে।
(খ) দুর্বল অর্থনীতিতে লেনদেন পদ্ধতি ক্রমে অর্থনির্ভর হয়ে ওঠে।
(গ) কৃষকরা তাদের ফসল অন্য কোন দ্রব্যের বিনিময়ে বিক্রি না করে অর্থের বিনিময়ে সেগুলো ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি শুরু করেন।
(ঘ) নগদ অর্থের বহুল ব্যবহার দ্রব্য সামগ্রীর মূল্যের উপর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। ফলে কোন বছর ফসল কম হলে তার বিক্রয়মূল্য বৃদ্ধি পেত।
11. একাদশ শতকের পর কিভাবে শহরাঞ্চলীয় বিকাশ ইউরোপে দেখা যায়? এর ফলাফল কি?
উত্তরঃ রোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর সেই অঞ্চলে সমৃদ্ধশালী শহরগুলি জনশূন্য হয়ে পড়ে। কিন্তু একাদশ শতকে উন্নত কৃষিব্যবস্থা মানুষের জীবনের মান বাড়িয়ে দেয়। ফলে পুনরায় শহর গড়ে ওঠা শুরু করে। যেসকল কৃষকদের বিক্রয়-এর জন্য উদ্বৃত্ত শস্য থাকত, তা বিক্রয় করার সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রপাতি ও কাপড় কিনতে পারার মতো একটি বিক্রয় কেন্দ্রের প্রয়োজন ছিল। নিয়মিত ব্যবধানে মেলার যেমন প্রচলন হল, তেমনি ছোট ছোট ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্রও স্থাপিত হল যা ধীরে ধীরে সেই সব বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি করত, যা পরবর্তীতে শহরের রূপ নিল। তবে বড় বড় প্রাসাদ বা দুর্গ, বিশপের ভূ-সম্পত্তি বা বড় বড় চার্চকে কেন্দ্র করেও শহর গড়ে উঠেছিল।
নতুন শহর গড়ে ওঠার ফলে –
(ক) শহরে জমিদারের জমিতে বসবাস করার বিনিময়ে অতীতে নানা সেবা প্রদান করত। কিন্তু এখন খাজনা বাবদ অর্থ প্রদান করে। এবং
(খ) শহরে অর্থের বিনিময়ে কাজের রীতি চালু হয়, যার ফলে কৃষকরা জমিদারের বন্ধন থেকে বেরিয়ে আসে।
12. ক্যাথিড্রাল কি? কিভাবে ক্যাথিড্রাল শহরের উদ্ভব হয়?
উত্তরঃ মধ্যযুগীয় ইউরোপে গড়ে ওঠা বিশালকায় চার্চগুলিকে ক্যাথিড্রাল বলা হত। দ্বাদশ শতাব্দী থেকে ফ্রান্সে ক্যাথিড্রালগুলির নির্মাণ শুরু হয়। এই নির্মাণ কার্যে ধনী ব্যবসায়ী ও নানা ধরনের মানুষ ধন, শ্রম ও দ্রব্য সামগ্রীর মাধ্যমে সহায়তা করত। তবে এইসব বিশালকায় ক্যাথিড্রালগুলো পাথর দিয়ে নির্মাণ হয়েছিল। যা সম্পূর্ণ করতে অনেক বছর লেগেছিল। যখন ওই চার্চগুলো সম্পূর্ণ তৈরি হচ্ছিল সেই সময় ওই চার্চগুলোর চতুর্দিকে ঘন বসতির সৃষ্টি হয়েছিল এবং চার্চগুলো সম্পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওইগুলি তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়। এইভাবেই ক্যাথিড্রাল শহরের সৃষ্টি হয়।
13. ‘বিশালকায়’ চার্চ বা ‘ক্যাথিড্রাল’-এর শৈল্পিক পরিকাঠামো সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ ‘ক্যাথিড্রাল’গুলির শৈল্পিক পরিকাঠামো নিম্নরূপ ছিলঃ
(ক) আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে এমন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয় যাতে একজন যাজকের গলার স্বর হলের চারদিকে বসে থাকা জনগণ/শ্রোতা শুনতে পায়, সংগীত সুন্দরভাবে শোনা যায়।
(খ) চার্চের ঘণ্টা এমনভাবে লাগানো যাতে ঘণ্টার ধ্বনি যা প্রার্থনার জন্য আহ্বান জানায় তা অনেক দূর থেকে শোনা যায়।
(গ) জানালায় রঙিন কাচ লাগানো থাকত, যা দিনের বেলা সূর্যরশ্মি ভক্তদের মুখমণ্ডল আলোকিত করে রাখত।
(ঘ) রঙিন কাচের জন্য সূর্যাস্তের পর মোমবাতির আলো বাইরের লোকদের কাছে দৃশ্যমান হত।
(ঙ) জানালার রঙিন কাঁচে বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে অশিক্ষিত লোকদের পড়বার উপযোগী করে গল্পের বর্ণনা থাকত।
14. “নতুন নৃপতি গোষ্ঠীর’ সাফল্যের কারণগুলি লেখ। নিজেদের অবস্থান অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং শক্তিশালী করতে তারা কি কি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন?
উত্তরঃ পঞ্চদশ ও ষোড়শ খ্রিস্টাব্দে উদ্ভব হওয়া ‘নতুন নৃপতি গোষ্ঠীর’ সাফল্যের মুখ্য কারণগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) দ্বাদশ এবং ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে শুরু হওয়া সামাজিক বিবর্তন প্রক্রিয়াই সম্রাটদের জয়যাত্রার প্রধান কারণ।
(খ) ভূ-স্বামীদের সামন্ততন্ত্র ও দাসপ্রথার পত্তন।
(গ) অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধীর গতি। এই সকল কারকই নৃপতিদের তাদের শক্তিশালী এবং সাধারণ প্রজাদের উপর প্রভাব বৃদ্ধি করতে সুযোগ করে দিয়েছিল।
এই সকল নতুন শাসকেরা নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় ও সবল করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
(ক) সামন্ততান্ত্রিক কর ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়েছিলেন।
(খ) পেশাদারী প্রশিক্ষিত বন্দুকধারী পদাতিক সৈন্য গড়েছিলেন।
(গ) গোলন্দাজ সৈন্যবাহিনীকে সরাসরি তাদের নিজেদের আওতায় নিয়ে এসেছিলেন। ইত্যাদি। এর ফলে অভিজাত সম্প্রদায় এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার সমস্ত প্রয়াস ভেঙে পড়েছিল।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলীর উত্তরঃ
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
1. ফ্রান্সে সামস্ত সমাজের গোড়ার দিকের দুটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
উত্তরঃ ফ্রান্সে সামন্ত সমাজের গোড়ার দিকের দুইটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ
(ক) সামন্ত সমাজ প্রভু-চাষি সম্পর্কের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। চাষিদের শ্রমদানের বিনিময়ে সামন্ত প্রভুরা চাষিদের সামরিক সুরক্ষা প্রদান করতেন। সামন্ত প্রভুরা চাষিদের উপর বিচার-বিষয়ক অধিকারও ভোগ করিতেন।
(খ) সামস্ত সমাজ তিন শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল; যথা—পুরোহিত, অভিজাত সম্প্রদায় এবং কৃষক। পুরোহিত বা যাজকগণ প্রথম শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত এবং অভিজাত সম্প্রদায়গণ দ্বিতীয় শ্রেণীর অন্তর্গত ছিলেন। কিন্তু বাস্তবে অভিজাত বংশের সামাজিক প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এর কারণ হল জমির উপর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল।
2. ইউরোপের সমাজ এবং অর্থনীতিতে জনসংখ্যা স্তরের দীর্ঘকালীন পরিবর্তন কিভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল?
উত্তরঃ নিম্নলিখিতভাবে জনসংখ্যা স্তরের দীর্ঘকালীন পরিবর্তন ইউরোপের সমাজ ও অর্থনীতি প্রভাবিত করেছিলঃ
(ক) উন্নতমানের খাদ্যসহ মানুষের আয়ুষ্কাল দীর্ঘতর হয়েছিল। ত্রয়োদশ শতকের মধ্যে প্রতি ইউরোপীয় অষ্টম শতকের তুলনায় ১০ বছর অধিক দীর্ঘজীবন আশা করতে পেরেছিল।
(খ) ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্ররূপে বহু শহর গড়ে ওঠে।
3. মধ্যযুগে মঠগুলির কার্য কি ছিল?
উত্তরঃ মধ্যযুগে সন্ন্যাসীগণ মঠে বাস করতেন। তাঁরা অধিকাংশ সময়ই পূজার্চনা, পড়াশুনা এবং চাষবাসের মতো দৈহিক পরিশ্রম করতেন, তারা কলা ও সংস্কৃতির বিকাশ ও উৎসাহ দান করতেন। এইভাবে মধ্যযুগের মঠগুলি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকলাপের কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
নাতিদীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ
4. মধ্যযুগের ফ্রান্সের একটি শহরের একজন হস্তশিল্পীর একটি দিন কল্পনা ও বর্ণনা কর।
উত্তরঃ মধ্যযুগের ফ্রান্সের কোন শহরের একজন হস্তশিল্পী তার শিল্পকার্যে অত্যন্ত সুদক্ষ ছিল। সে কোন গিল্ড সংঘের সদস্য ছিল। গিল্ড বা সংঘ উৎপাদিত সামগ্রীর গুণ, এর মূল্য এবং বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করত। এরা সদস্যদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাহিদার প্রতি দৃষ্টি দিত।
5. নাইটগণ কেন একটি পৃথক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিলেন এবং কেন তাদের পতন ঘটেছিল?
উত্তরঃ মধ্যযুগে ইউরোপে নাইট নামে এক বিশেষ শ্রেণীর উদ্ভব হয়। শুধু অভিজাত শ্রেণীই নাইট হবার অধিকারী হত। নবম শতকের পর হতে ইউরোপে প্রায় সময়ই স্থানীয়ভাবে যুদ্ধবিগ্রহ চলত। আপেশাদারী কৃষক-শ্রেণীগণ যুদ্ধ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সামর্থ্য ছিল না। এই চাহিদা নাইটগণ কর্তৃক পরিপূর্ণ হয়েছিল। এইভাবে নাইটরা একটি পৃথক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিলেন। দ্বাদশ শতকে সামস্ত প্রথা বিলোপের সঙ্গে সঙ্গে নাইটদের পতন ঘটে।
6. মধ্যযুগীয় একজন ফরাসি ভূমিদাস (সার্ক) এবং রোমান ক্রীতদাসের জীবনের অবস্থার মধ্যে তুলনা কর।
উত্তরঃ ফরাসি ভূমিদাসগণ প্রধানত প্রভুর জমি চাষ করত। এই কারণে উৎপাদনের অধিকাংশই প্রভু বা জমিদারের হস্তগত হত। ভূমিদাসরা প্রভুর কলে শস্যের গুঁড়া করত এবং নিজের চুলায় রুটি তৈরি করত এবং মদের বোতলে মদ পূর্ণ করত। কোন ভূমিদাস কাকে বিয়ে করিবে এ-বিষয়ে প্রভু সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারী ছিল।
রোমান ক্রীতদাসের অত্যন্ত কষ্টকর জীবন ছিল। তাকে একটানা কয়েক ঘণ্টা কাজ করতে হত। তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হত যাতে সে পালিয়ে যেতে না পারে। যখন সে ঘুমোতে যেত তখন তাকে বন্ধনমুক্ত করা হত না। তাকে অধিক সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য করানো হত যাতে এইসব সন্তানগণকে ক্রীতদাস করা যায়। অবশ্য কিছুসংখ্যক দাস স্বাধীন ছিল এবং তাদের জীবনযাত্রা অপেক্ষাকৃত উন্নত ছিল।
We Hope the given একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পাঠ্যক্রমের প্রশ্ন ও উত্তর will help you. If you any Regarding, Class 11 History Question and Answer in Bengali, drop a comment below and We will get back to you at the earliest.
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.