Class 11 History Chapter 8 বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে দ্বন্দ্ব

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 History Chapter 8 বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে দ্বন্দ্ব, is a textbook prescribed by the Assam AHSEC Board Class 11 History Question Answer in Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 History Chapter 8 বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে দ্বন্দ্ব The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 History Chapter 8 বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে দ্বন্দ্ব are free to use and easily accessible.

Class 11 History Chapter 8 বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে দ্বন্দ্ব

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Assam AHSEC Class 11 History in Bengali Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. Class 11 History Book PDF. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Class 11 History Notes in Bengali will be able to solve all the doubts of the students. Class 11 History Suggestion in Bengali, Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the Assam AHSEC Board Class 11 History Solution. Class 11 History Notes in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

9. নূতন সমুদ্রপথ আবিষ্কারের উল্লেখযোগ্য তাৎপর্য কি কি ছিল? 

উত্তরঃ নূতন সমুদ্রপথ আবিষ্কারের পর ইউরোপীয়গণ আমেরিকা, আফ্রিকা এবং এশিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য আরম্ভ করে। তারা সম্পদ, ধর্ম ও ভূমি বিকাশের কথা চিন্তা করতে থাকে। এই মহাদেশগুলিতে তারা তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে। শীঘ্রই এই সকল মহাদেশের সম্পদ ইউরোপে চলে যায়। দাস কেনা-বেচা শুরু হয়ে যায়। এই সকল দেশে পুরোহিতরা খ্রিস্টধর্ম প্রচার আরম্ভ করে। এর ফলে খ্রিস্টধর্ম বিশ্বের সর্ববৃহৎ ধর্মে পরিণত হয়।

10. ইউরোপীয়গণ সমুদ্রযাত্রায় মনোনিবেশ করেছিল কেন? 

উত্তরঃ ইউরোপীয়গণের সমুদ্রযাত্রায় মনোনিবেশের কারণ নিম্নরূপঃ 

(ক) নূতন স্থান আবিষ্কারের মাধ্যমে সোনা ও রুপার খনির সন্ধান শুরু করা।

(খ) নূতন ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থান অনুসন্ধানের জন্য ইউরোপীয়গণ সমুদ্রযাত্রা শুরু করে।

(গ) ভৌগোলিক আবিষ্কারের সঙ্গে ধর্মীয় দিকটিও জড়িত ছিল।

11. সমুদ্রাভিযানে স্পেনীয়দের আগ্রহের কারণ, সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তরঃ অর্থনৈতিক কারণ স্পেনের জনগণকে সমুদ্রযাত্রায় উৎসাহিত করেছিল। ধর্মযুদ্ধের স্মৃতি এবং Reconquista-র সাফল্য স্পেনীয়দের ব্যক্তিগত উচ্চাশা বাড়িয়ে তুলেছিল। তাছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে চুক্তিবদ্ধ হওয়া, যা স্পেনীয় শাসক দ্বারা স্বীকৃত ছিল। এবং সমুদ্রাভিযানে তাদের জয় করা দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব দাবি করা এবং অভিযানের নেতাদের উপাধি ও অধিকৃত দেশের শাসক হিসাবে প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি স্পেনীয়দের সমুদ্রাভিযানে উৎসাহিত করেছিল।

12. কলম্বাস তার দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার পর কোথায় প্রথম পদার্পণ করেন? স্থানীয় অধিবাসীরা কলম্বাসের উপস্থিতিকে কিভাবে গ্রহণ করেছিল?

উত্তরঃ ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দের ১২ই অক্টোবর কলম্বাস তার সমুদ্রাভিযানের পর প্রথম মাটি স্পর্শ করেন। কলম্বাসের ধারণা ছিল জায়গাটির নাম ইন্ডিয়া অর্থাৎ ভারত, কিন্তু বাস্তবে জায়গাটি ছিল বাহামা দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ।

এই দ্বীপটির নাম কলম্বাস রেখেছিলেন গোয়ানহানি, যার অর্থ অগভীর সমুদ্রের দ্বারা বেষ্টিত জায়গা।

এই অঞ্চলের স্থানীয় অধিবাসী ছিল আরাওয়াকরা। তারা কলম্বাস ও তার দলকে অভ্যর্থনা বা স্বাগত জানিয়েছিল। আনন্দ ও উৎসাহের সাথে তাদের খাদ্য ও পানীয় কলম্বাস ও তার সহযাত্রীদের সাথে ভাগ করে নিয়েছিল। বস্তুত তাদের এই ব্যবহারে কলম্বাস মুগ্ধ হয়েছিলেন।

13. পর্তুগীজরা কেন ব্রাজিলের স্থানীয়দের দাসে পরিণত করেছিল? দাস সমস্যা সমাধানে তারা কি পদক্ষেপ নিয়েছিল?

উত্তরঃ ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে পর্তুগীজরা ব্রাজিলে আখ চাষ শুরু করে এবং এর থেকে চিনি উৎপাদন শুরু করে। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই স্থানীয়দের কাজের উপর তাদের নির্ভর করতে হত। কিন্তু ধীরে ধীরে স্থানীয়রা এই ধরনের ক্লান্তিকর ও দুর্বহ কাজ করতে অস্বীকার করায় পর্তুগীজ মালিকরা স্থানীয়দের অপহরণ করে দাসে পরিণত করত। কিন্তু ধীরে ধীরে স্থানীয়রা এর থেকে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে জঙ্গলে পলায়ন করলে দাসের সংকট দেখা দেয়। 

এই অবস্থায় পর্তুগীজ মালিকরা দাস সংগ্রহের জন্য অন্য উৎস খুঁজতে বাধ্য হন এবং সেই সূত্র হয়ে ওঠে পশ্চিম আফ্রিকা।

14. আবিষ্কার-বিষয়ক সমুদ্রযাত্রার অন্তরীক্ষে প্রকৃত উৎসাহদানকারী উপাদানসমূহ কি কি ছিল?

উত্তরঃ প্রকৃত উৎসাহদানকারী উপাদানসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) নূতন নূতন অঞ্চল আবিষ্কারের মাধ্যমে অধিক সংখ্যায় মানুষকে দাসত্বে পরিণত করা এবং দাস ব্যবসার মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা।

(খ) বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং অর্থ উপার্জন।

(গ) সোনা ও মশলা সংগ্রহের মাধ্যমে নাম-যশ আহরণ করা। 

(ঘ) দুঃসাহসিক সমুদ্রযাত্রার মাধ্যমে বিদেশে খ্রিস্টধর্ম প্রচার।

15. কলম্বাস কিভাবে সমুদ্র অভিযান যাত্রা আরম্ভ করেছিলেন? 

উত্তরঃ ক্রিস্টোফার কলম্বাস একজন দক্ষ নাবিক ছিলেন। তার দুঃসাহসিক অভিযান করার দৃঢ় আশা ছিল এবং এইভাবে মান-যশ আহরণ করার উদ্দেশ্য ছিল। তিনি ভাগ্যের উপর বিশ্বাস করতেন। এই অনুযায়ী তিনি মনে করতেন তার ভাগ্যে লেখা আছে যে তিনি নৌ-চালনার মাধ্যমে একদিন পূর্ব দিকে ভারতবর্ষ আবিষ্কার করবেন। তিনি তার এই পরিকল্পনা পর্তুগীজ সম্রাটের কাছে পেশ করেন। কিন্তু তা নাকচ হয়ে যায়। সৌভাগ্যক্রমে স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষ একটি সংক্ষিপ্ত অভিযান মঞ্জুর করেন। কলম্বাস ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দের ৩রা আগস্ট ‘পালো’ বন্দর হতে তার অভিযান শুরু করেন।

16. পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতকের যে-কোন তিনজন নাবিকের নাম উল্লেখ কর। তাদের আবিষ্কারের উপর আলোকপাত কর। 

উত্তরঃ পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতকের তিনজন বিখ্যাত নাবিক হলেন- কলম্বাস, ভাস্কো-ডা-গামা এবং মেগেলান। তাদের আবিষ্কার নিম্নে প্রদান করা হলঃ

(ক) কলম্বাসঃ কলম্বাস ছিলেন বিখ্যাত ইটালীয় নাবিক। তিনি ভারতবর্ষ আবিষ্কারের একটি পথ আবিষ্কার করেছিলেন। ১৪৯২ খ্রিস্টাব্দে তিনি আমেরিকা আবিষ্কার করেন।

(খ) ভাস্কো ডা গামাঃ ভাস্কো ডা গামা বিখ্যাত পর্তুগীজ নাবিক ছিলেন। তিনি উত্তমাশা অন্তরীপ দিয়ে ১.৪৪৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষে আসেন। এইভাবে তিন ভারতে আসবার সমুদ্রপথ আবিষ্কার করেন।

(গ) মেগেলানঃ মেগেলানও পর্তুগীজ নাবিক ছিলেন। তিনি ১৫১১ খ্রিস্টাব্দে ফিলিপিন্স দ্বীপপুঞ্জ আবিষ্কার করেন। তিনি দক্ষিণ আমেরিকাও আবিষ্কার করেন।

17. পোর্তুগীজ ও স্পেনীয়গণ কি কি কারণে সমুদ্রযাত্রা আরম্ভ করেছিল?

উত্তরঃ পোর্তুগীজ ও স্পেনীয়গণের সমুদ্রযাত্রার প্রধান কারণসমূহ নিম্নরূপ:

(ক) সোনা ও বিভিন্ন প্রকার মশলা আহরণের জন্য দুইটি দেশ সমুদ্রযাত্রা আরম্ভ করেছিল।

(খ) সামরিক দিক দিয়ে স্পেনীয়গণ শক্তি অর্জনের জন্য সমুদ্রযাত্রা আরম্ভ করেছিল। 

(গ) পোর্তুগীজগণ মৎস শিকারে পারদর্শী ছিল। এ জন্য সমুদ্রযাত্রায় তারা অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।

(ঘ) দাস ব্যবসা দুইটি দেশের সমুদ্রযাত্রার অন্যতম প্রধান কারণ। 

18. কলম্বাস স্পেনের জন্য কোন দুইটি দ্বীপ দাবি করেছিলেন? এই দ্বীপ দুই আধুনিক নাম কি? 

উত্তরঃ কলম্বাস স্পেনের জন্য কিউবাসকান বা কিউবা এবং কিসকেয়ালি বা হিসপানিয়া নামক দ্বীপ দুটি দাবি করেছিলেন। বর্তমানে এই দ্বীপ দুটি হাইতি ও ডমিনিকরন প্রজাতন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত।

19. কৃত্রিম দ্বীপ বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ মাটি যেহেতু সীমিত ছিল সেই জন্য আজটেকগণ কৃত্রিম পদ্ধতির দ্বারা মাটির পরিমাণ বৃদ্ধি করেছিল। এই উদ্দেশ্যে তারা বিশাল বিশাল ঢিবি তৈরি করে। ইহার মধ্যে গাছপালা দ্বারা আবৃত করে মেক্সিকো হ্রদে কৃত্রিমভাবে দ্বীপ তৈরি করে। ইহার মধ্যে মধ্যে খাল কেটে দ্বীপের উপর ১৩২৫ খ্রিস্টাব্দে আজটেকের রাজধানী শহর টেনসটিটলান নির্মাণ করেছিল।

20. আমেরিকা আবিষ্কারের পর আবিষ্কারকগণ সেখানে কোন প্রকার সংস্কৃতি দেখেছিল? 

উত্তরঃ আমেরিকা আবিষ্কারের পর আবিষ্কারকগণ সেখানে নিম্নোক্ত দুই প্রকার সংস্কৃতি দেখেছিলঃ

(ক) আমেরিকার অর্থনীতি সুস্থ ও সবল ছিল না। উদাহরণস্বরূপ ক্যারিবিয়ান ও ব্রাজিল অঞ্চলের অর্থনীতির কথা উল্লেখ করা যায়।

(খ) সেখানে শক্তিশালী রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। কৃষি ও খনি তাদের অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল। উদাহরণ হিসাবে মায়া, আজটেক এবং পেরুর ইনকা সভা উল্লেখ করা যায়।

21. আবিষ্কারের যুগ বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ সমুদ্রপথ আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে নুতন নুতন দেশ আবিষ্কার হওয়ার সময়কে আধুনিক বিশ্ব ইতিহাসে আবিষ্কারের যুগ বলে অভিহিত করা হয়। পঞ্চদশ শতকের শেষ  বছর থেকে আরম্ভ করে ষোড়শ শতকের সূচনাকাল পর্যন্ত সময়সীমাকে সাধারণত আবিষ্কারের বা সময় বলে ধরা হয়।

22. বর্তমান আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র কার নামে নামকরণ করা হয়েছিল? আমেরিকা নামটি কে এবং কখন আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করেছিলেন?

উত্তরঃ কলম্বাস আবিষ্কৃত আমেরিকাকে আমেরিগো ভেসপুচি নামে একজন ফ্লোরেন্সের ভূগোলবিদ নুতন পৃথিবী বলে অভিহিত করেছিলেন। এরপর তাঁর নামানুসারে নূতন পৃথিবীর নাম আমেরিকা হিসাবে নামকরণ করা হয়। 

আমেরিকা নামটি সর্বপ্রথম ১৫০৭ খ্রিস্টাব্দে একজন জার্মান প্রকাশক ব্যবহার করেছিলেন।

23. দক্ষিণ আমেরিকাকে বর্তমানে কেন ল্যাটিন আমেরিকাও বলা হয়? 

উত্তরঃ দক্ষিণ আমেরিকাকে বর্তমানে ল্যাটিন আমেরিকাও বলা হয় কারণ—

(ক) এই মহাদেশে দুটি প্রধান ভাষা স্প্যানিস ও পোর্তুগীজ ল্যাটিন ভাষা গোষ্ঠীর অংশ। অধিবাসীগণ মুলত আফ্রিকীয়। এবং 

(খ) অধিকাংশ মানুষই ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত। তাদের ধর্মগ্রন্থগুলি এই ভাষাতেই লেখা। 

24. আরাওয়াক লুকেয়োদের সামাজিক/সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।

উত্তরঃ আরাকওয়াক লুকেয়োদের সামাজিক/সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ 

(ক) আরাওয়াকরা ছিল অত্যন্ত নিরীহ প্রকৃতির। তারা সর্বাবস্থায় দ্বন্দ্বের পরিবর্তে সন্ধি প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করত। 

(খ) আরাওয়াক সমাজের মুখ্য সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ছিল তাদের সংঘবদ্ধ উৎপাদন, যাতে সম্প্রদায়ের সবার খাদ্য সরবরাহ সম্ভব হয়।

(গ) আরাওয়াকরা গোষ্ঠীপ্রধানদের দ্বারা সংগঠিত ছিল।

(ঘ) আরাওয়াক সমাজ ব্যবস্থায় বহুবিবাহ প্রথা প্রচলিত ছিল। 

(ঙ) আরাওয়াকরা ছিল সর্বপ্রাণবাদ।

(চ) আরাওয়াকরা সোনার অলঙ্কার ব্যবহার করত, কিন্তু সোনার প্রতি তাদের বিশেষ। গুরুত্ব এবং আগ্রহ ছিল না।

(ছ) আরাওয়াকদের বয়ন শিল্প ছিল অতি উন্নত। Hammock বা ঝুলানো শয্যা হচ্ছে তাদের উল্লেখযোগ্য বিশেষত্ব। 

25. ইউরোপীয়দের সংস্পর্শ কিভাবে আরাওয়াকদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে তুলেছিল ? সংক্ষেপে লেখ। 

উত্তরঃ স্পেনীয়রা প্রথম আরাওয়াকদের সংস্পর্শে আসে। আরাওয়াকরা ছিল খুব উদার  প্রকৃতির। ফলে তারা স্পেনীয়দের সাথে মিত্রতার আগ্রহে ব্যবহার করছিল। সোনার খোঁজে তারা স্পেনীয়দের যথেষ্ট সহায়তা করে। কিন্তু লোভী নিষ্ঠুর এবং স্বার্থবাদী স্পেনীয়রা ছিল তাদের সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ রক্ষা ও পূরণ করতে বদ্ধপরিকর। ফলে যখন স্পেনার আরাওয়াকদের প্রতি নির্মম নীতি গ্রহণ করে তখন আরাওয়াকরা বাধ্য হয় তা রুখে দাড়াতে। কিন্তু এর পরিণতি তাদের পক্ষে খুবই বিষাদময় হয়ে উঠেছিল। স্পেনীয়দের সাথে তাদের যোগাযোগের পঁচিশ বছরের মধ্যেই তাদের জীবনধারার কিছুই প্রায় অবশিষ্ট ছিল না। 

26. পেড্র আলভারেস কেব্রেল কে ছিলেন? পর্তুগীজরা কিভাবে ব্রাজিল অধিকার করে সংক্ষেপে লেখ। 

উত্তরঃ পেড্র আলভারেস কেব্রেল ছিলেন একজন পর্তুগীজ নাবিক। তিনি ব্রাজিলকে পর্তুগীজ উপনিবেশে পরিণত করছিলেন বা দখল করেছিলেন।

পর্তুগীজদের ব্রাজিল দখলের কাজটি হঠাৎ করে সংঘটিত হয়। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে পে আলভারেস কেব্রেল-এর নেতৃত্বে অনেকগুলো জাহাজের একটি বহর পর্তুগাল থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিল। দুর্যোগপূর্ণ সমুদ্রপথ এড়ানোর জন্য পশ্চিম আফ্রিকা ঘুরে রওয়ানা দিলে তিনি আশ্চর্যজনকভাবে ব্রাজিল উপকূলে পৌঁছে যান। পোপ দক্ষিণ আমেরিকার এই পূর্বাঞ্চল পর্তুগালের অধীনে বলে তার মানচিত্রে অনুমোদন রেখেছিলেন, তাই এই অঞ্চলে অর্থাৎ ব্রাজিলে পৌঁছে তাদের ধারণা হয় যে এটা তাদেরই অধীনস্ত স্থান। তাছাড়া বেশি স্থানীয় প্রতিরোধ না থাকায় ব্রাজিলে পর্তুগীজ উপনিবেশ স্থাপন সহজ হয়।

27. টুপিনস্বাগণ কারা ছিল?

উত্তরঃ টুপিনম্বা নামক লোকগণ দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূল ও বনাঞ্চলে বাস করত। এই সকল লোকদের কৃষিকার্যের সরঞ্জাম না থাকায় তারা বনজঙ্গল পরিষ্কার করে খেত করতে পারত না। কিন্তু তারা যথেষ্ট পরিমাণে ফল-মূল, শাকসবজি ও মৎস্য সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছিল। সেজন্য তারা ক্ষেতের উপর নির্ভর না করে চলতে পারত। 

28. ক্রুসেডের স্মৃতি বা সামরিক বিজয় বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ ক্রুসেডের স্মৃতি বা সামরিক বিজয় বলতে ধর্মযুদ্ধের কথাকে স্মরণ করে দেয়। এই ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধের স্মৃতি স্পেনের বহু ব্যক্তিকে সাগরের বীর হতে উৎসাহিত করেছিল। স্পেনের সম্রাট জয় করা রাজ্যসমূহের উপর অধিকার দাবি করে এবং অভিযানের নেতাগণকে উপাধি ও জয় করা স্থান শাসন করতে দিয়ে পুরস্কৃত করে।

29. ইউরোপীয়ানদের সাগরীয় যাত্রা করার ক্ষেত্রে টলেমির ভূগোল কীভাবে উৎসাহিত করেছিল? 

উত্তরঃ টলেমি ছিলেন একজন মিশরীয় ভূগোলবিদ। ১৪৭৭ খ্রিস্টাব্দে তার ( ১৩০০ ) বৎসর পূর্বে লিখিত) লেখা গ্রন্থ Geography মুদ্রিত হয় এবং এর ফলে ইউরোপে সবাই এই বই পড়ার সুযোগ পায়। টলেমির বর্ণনা মতে পৃথিবীর অঞ্চলগুলো অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ ভিত্তি করে ভাগ করা হয়েছিল। এই বইটি পড়ে ইউরোপের মানুষের মধ্যে পৃথিবীর নানা তথ্য সম্বন্ধে জ্ঞানের বিস্তার ঘটে। তারা মনে করে যে পৃথিবীতে তিনটি মহাদেশ আছে—এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা। টলেমি তার গ্রন্থে এইরকম ইঙ্গিত করেন যে পৃথিবী গোলাকার। কিন্তু তিনি মহাসাগরের দূরত্ব প্রকৃত মাপের চেয়ে অনেক কম দেখিয়েছিলেন। আটলান্টিক অতিক্রম করে কোন জায়গায় যাওয়ার বিষয় ইউরোপীয়দের ভ্রান্ত ধারণাবশত তারা অজানার উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রায় রওয়ানা হয়ে যেতেন। 

30. টলেমি কে ছিলেন? 

উত্তরঃ টলেমি হলেন ভূগোল বিষয়ক পুঁথির জনক। তিনি মিশরের পণ্ডিত ছিলেন। ১৪৭৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর ভূগোল-বিষয়ক প্রথম গ্রন্থখানা প্রকাশ পায়। টলেমি সর্বপ্রথম অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ গণনা অনুসারে স্থানসমূহের অবস্থান নির্ণয় করেছিলেন। টলেমির মতে পৃথিবী হল একটি মণ্ডলের আকার।

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

1. প্রাচীন আমেরিকানদের প্রধান সভ্যতাসমূহের বৈশিষ্ট্যের মূল আলোচনা কর। 

উত্তরঃ প্রাচীন আমেরিকায় নানা প্রকার সভ্যতা প্রসার লাভ করেছিল, কিন্তু এদের মধ্যে এই মায়া, আজটেক এবং ইনকা সভ্যতাসমূহ ছিল উল্লেখযোগ্য।

(ক) মায়া সভ্যতাঃ প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টাব্দে মায়া সভ্যতা প্রসার লাভ করে এবং মধ্য আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিস্তার লাভ করে। চিচেন এবং ইটাজা ছিল এই সভ্যতার কেন্দ্রস্থল। এই সভ্যতার মানুষ ধাতুর ব্যবহার জানত না। তথাপি তাদের গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব ছিল। 

মায়া সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ

(অ) এই সভ্যতার মানুষ তাদের শস্যক্ষেতের নিকটবর্তী কলোনীতে বাস করত। শস্য, সিম, আলু, স্কোয়াস ও লঙ্কা তাদের প্রধান খাদ্যবস্তু ছিল। তারা সুতির কাপড় পরিধান করত এবং মাটির বাসন ব্যবহার করত।

(আ) কৃষি ছিল মায়া সভ্যতার প্রধান পেশা। তারা অধিক উৎপাদনের জন্য তাদের দেব-দেবীকে সদা সন্তুষ্ট রাখত।

(ই) তারা নানা প্রকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিশ্বাস করত। রাবার বলের খেলা ছিল তাদের একটি অন্যতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান।

(ঈ) তাদের বর্ণমালা ছবিভিত্তিক ছিল। এক সময় স্বরবর্ণ ব্যবহার করা হত।

(খ) আজটেক সভ্যতাঃ দ্বাদশ শতকে মায়া সভ্যতা পতনের পর আজটেক সভ্যতা বিকাশ লাভ করে। 

আজটেক সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্টসমূহ নিম্নরূপঃ

(অ) আজটেক সাম্রাজ্য দুই লক্ষাধিক বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত ছিল এবং মোট ৩৮টি প্রদেশে বিভক্ত ছিল। প্রতিটি প্রদেশ গভর্নর দ্বারা শাসিত হত। 

(আ) তারা নানাবিধ দেবদেবীর পূজার্চনা করত। সূর্য দেবতা ও খাদ্য দেবতা দেবদেবীর মধ্যে প্রধান ছিলেন। তারা খাদ্য দেবতাকে অন্যান্য দেবতার মাতা বলে ভারত।

(ই) এই মানুষগুলি ধাতু গলানো ও ধাতুর ব্যবহার জানত। 

(ঈ) তারা ধর্মীয় কার্যাদির জন্য ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিল।

(গ) ইনকা সভ্যতাঃ ইনকা সভ্যতা ইন্‌কা জাতিরা গড়ে তুলেছিল। তারা চতুর্দশ ও পঞ্চদশ শতকের মধ্যে আমেরিকার ইন্দো-অঞ্চলে প্রতিষ্ঠা করেছিল। 

এই সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ 

(অ) ইনকা বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল যার মধ্যে অনেক শহর ও নগর অবস্থিত ছিল। 

(আ) তারা শহরে সুসজ্জিত দুর্গ, রাস্তা এবং মন্দির নির্মাণ করেছিল।

(ই) তারা পাহাড়ের গায়ে জমি তৈরি করে শস্য, আলু, মিষ্টি আলু প্রভৃতি চার করত।

(ঈ) সরকারি গুদামে খাদ্যশস্য মজুত করে রাখার ব্যবস্থা ছিল। 

2. আমেরিকানদের স্বদেশী মায়া সভ্যতার জনগণের সমাজ, ধর্ম এবং বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা কর।

উত্তরঃ আমেরিকার স্বদেশী সভ্যতার মধ্যে মায়া সভ্যতা একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। এই সভ্যতার সমাজ, ধর্ম এবং বিজ্ঞান-এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নে বর্ণনা করা হলঃ

(ক) সমাজঃ মায়া সমাজ পুরোহিতশাসিত ছিল। সমাজে পুরোহিতগণ সম্মানিত ছিল। চিচেন ও ইটজা নগর-রাষ্ট্রের সরকার পুরোহিতদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। তারা রাষ্ট্রে স্বেচ্ছাচারির মতো কাজ করত। মায়া সভ্যতার অর্থনীতি ছিল কৃষিভিত্তিক, ধান ছিল প্রধান শস্য। কিছু লোক কাপড় বোনা ও রং দেবার কাজে রত ছিল। ধান, সিম, আলু প্রভৃতি ছিল প্রধান খাদ্যসামগ্রী।

(খ) ধর্মঃ মায়া সভ্যতার জনগণ নানা প্রকার দেবদেবীর পূজার্চনা করত। দেবদেবীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল—বন দেবতা, বারি দেবতা, অগ্নি দেবতা ও শস্য দেবতা। মানুষ অধিক বৃষ্টির জন্য মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী জলে নিক্ষেপ করত। কিছু মানুষ ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করবার জন্য তাদের দেহের অংশবিশেষ দান করত। মায়া সমাজে নরবলি প্রচলিত ছিল।

(গ) বিজ্ঞানঃ বিজ্ঞানের উন্নতিতে মায়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তার ক্যালেন্ডার বা পঞ্জিকা আবিষ্কার করেছিল। এই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরে ৩৯ দিন এবং ১৮ মাস ছিল। প্রত্যেক মাসে ২০ দিন ছিল। গণিতে মায়া সভ্যত শূন্যের ধারণা প্রদান করেছিল। কাগজের ব্যবহার মায়া সভ্যতার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃতিত্ব।

বস্তুত মায়া সভ্যতা আমেরিকার অন্যান্য সভ্যতা থেকে পিছনে পড়ে থাকেনি। 

3. পেরুর ইনকাদের বিষয়ে অথবা আজটেকদের বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত চাক লেখ।

উত্তরঃ (খ) আজটেক সভ্যতাঃ দ্বাদশ শতকে মায়া সভ্যতা পতনের পর আজটেক সভ্যতা বিকাশ লাভ করে। 

আজটেক সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্টসমূহ নিম্নরূপঃ

(অ) আজটেক সাম্রাজ্য দুই লক্ষাধিক বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত ছিল এবং মোট ৩৮টি প্রদেশে বিভক্ত ছিল। প্রতিটি প্রদেশ গভর্নর দ্বারা শাসিত হত। 

(আ) তারা নানাবিধ দেবদেবীর পূজার্চনা করত। সূর্য দেবতা ও খাদ্য দেবতা দেবদেবীর মধ্যে প্রধান ছিলেন। তারা খাদ্য দেবতাকে অন্যান্য দেবতার মাতা বলে ভারত।

(ই) এই মানুষগুলি ধাতু গলানো ও ধাতুর ব্যবহার জানত। 

(ঈ) তারা ধর্মীয় কার্যাদির জন্য ক্যালেন্ডার তৈরি করেছিল।

4. ইনকা সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক বা রাজভাষা কি ছিল? ইনকাদের প্রশাসনিক পরিকাঠামো কেমন ছিল?

উত্তরঃ ইনকা সভ্যতার প্রশাসনিক বা রাজভাষা ছিল কিউচুয়া (Quechua)। ইনকাদের প্রশাসনিক পরিকাঠামো ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত। 

এর মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ 

(ক) ইনকা সাম্রাজ্য ছিল প্রচণ্ড কেন্দ্রীভূত, যেখানে রাজাই ছিলেন সর্বেসর্বা অর্থাৎ ক্ষমতার মূল স্তম্ভ।

(খ) বিজিত জনগোষ্ঠীগুলিকে রাজকার্যে লাগানো হয়েছিল এবং তারা রাজভাষা কিউচুয়া ব্যবহারে বাধ্য ছিল।

(গ) প্রতিটি জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজস্ব প্রবীণ উপদেষ্টামণ্ডলী শাসন করত আলাদাভাবে। কিন্তু জনগোষ্ঠীকে সর্বতোভাবে রাজার প্রতি দায়বদ্ধ ও অনুগত থাকতে হত।

(ঘ) স্থানীয় শাসকরা রাজাকে প্রয়োজনে সামরিক সহায়তা প্রদান করতেন। এর বিনিময়ে তারা পুরস্কৃত হতেন। 

(ঙ) ইনকা সাম্রাজ্য একটি সংঘের মতো পরিচালিত হত, যার কর্তৃত্বে থাকত ইনকারা ইত্যাদি।

5. ইনকা সভ্যতার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।

উত্তরঃ দক্ষিণ আমেরিকার সর্বাপেক্ষা বৃহৎ এবং উন্নত সভ্যতা ছিল ইনকা সভ্যতা। 

এর মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ 

(ক) ইনকা সভ্যতায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছিল প্রচণ্ড কেন্দ্রীভূত। সেখানে রাজাই ছিলেন সর্বেসর্বা অর্থাৎ ক্ষমতার মূল স্তম্ভ।

(খ) ইনকারা ছিল উত্তম স্থপতি। পর্বত কেটে রাস্তা ও দুর্গ হচ্ছে এর নিদর্শন।

(গ) ইনকা সভ্যতার ভিত্তি ছিল কৃষি। ইনকারা শস্য ও আলু উৎপাদন করত এবং খাদ্য ও শ্রমের জন্য ইলামাদের ব্যবহার করত। 

(ঘ) ইনকাদের বয়ন ও মৃৎশিল্প ছিল খুব উন্নত মানের।

(ঙ) যদিও লিখন পদ্ধতির কোন ব্যবহার ছিল না ইনকাদের, তবে রশি ব্যবহার করে গণনার একটি পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। 

(চ) ইনকা সাম্রাজ্যের সংগঠনটি ছিল পিরামিডের মতো। যেখানে শাসক ছিলেন সর্বোচ্চ। তার পতন ছিল সাম্রাজ্যের পতন|

6. মেসোপোটামিয়া সভ্যতার সঙ্গে আজতেক সভ্যতার তুলনা কর। 

উত্তরঃ দুই ভিন্ন অঞ্চলে এবং হাজার বৎসরের পার্থক্যে গড়ে উঠেছিল মেসোপোটামীয় সভ্যতা ও আজতেক সভ্যতা। এই সভ্যতাগুলির বৈশিষ্ট্য তাদের মধ্যে থাকা সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের তুলনামূলক দিক তুলে ধরে।

মেসোপোটার্মীয় সভ্যতাঃ মেসোপোটামিয়া সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) মেসোপোটানীয় সমাজে তিনটি শ্রেণী ছিল; যথা—উচ্চ শ্রেণী, মধ্যবিত্ত শ্রেণী ও নিম্ন শ্রেণী।

(খ) উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী সুখী ও বিলাসী জীবনযাপন করত। অন্যদিকে নিম্ন শ্রেণীর জীবনযাত্রা ছিল করুণ। 

(গ) মহিলাগণ পুরুষের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম মর্যাদা লাভ করত।

(ঘ) জনগণ নানা প্রকার দেবদেবীর পূজার্চনা করত।

(ঙ) জনগণ নানাবিধ মহৎ কৃতিত্বমূলক কাজ সম্পাদন করেছিল। প্রথমেই তারা লিখবার কৌশল আবিষ্কার করে। তারা একটি চন্দ্রপঞ্জিকা তৈরি করে। তাছাড়াও তারা কুম্ভকারের চক্র, কাচ ও নূতন ধরনের ভাস্কর্য আবিষ্কার করে। 

(চ) নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা হলেও তার গ্রামীণ জীবন ছিল অতি উন্নত।

(ছ) স্থানীয়ভাবে উৎকৃষ্ট ধাতুর যোগান ছিল না বলে বহিরাঞ্চল থেকে বিভিন্ন নির্মাণ। কার্যের প্রয়োজনীয়তায় ধাতু আনয়ন করা হত। 

(জ) বহির্দেশীয় এবং অন্তদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ লাভ করেছিল।

(ঝ) সামাজিক শ্রেণী বিভাজনে শাসকরা ছিলেন সবথেকে উচ্চে।

আজটেকদের সভ্যতাঃ আজটেক সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) আজটেক সমাজ ছিল শ্রেণী বিভাজিত। এই সমাজে অভিজাত, যাজক, পুরোহিত, যোদ্ধা, ব্যবসায়ী, কারিগর, চিকিৎসক, শিক্ষক, কৃষক প্রভৃতির অবস্থান ছিল। 

(খ) অভিজাত সম্প্রদায় তাদের মধ্য থেকে রাজা মনোনীত করত। রাজাকে ভূ-পৃষ্ঠে সূর্যদেবতার প্রতিনিধি বলে গণ্য করা হত। জনগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যুদ্ধ দেবতা ও সূর্য দেবতার পূজা করত।

(গ) সীমিত ভূমি থাকার দরুন জনসাধারণ জলাভূমিকে বসবাস ও কৃষি উপযোগ করে তোলে। জলসেচের জন্য নালা ও খাল ছিল। 

(ঘ) জনগণ শস্য, সিম, মটর, মিষ্টি লাউ, স্কোয়াস, আলু প্রভৃতি নানা প্রকার শাকসবজি উৎপাদন করত। 

(ঙ) আজটেক সাম্রাজ্য গ্রামের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়েছিল। সেখানে কোন ব্যক্তিবিশেষ জমির মালিক ছিলেন না, বরং গোষ্ঠীর মালিকানাধীন ছিল জমি। 

(চ) আজটেকরা কোন বিশেষ ধাতুর প্রতি আসক্ত ছিল না। এমনকী সোনা-রুপার প্রতিও তাদের আসক্তি ছিল না। তারা বিভিন্ন ধাতুর ব্যবহার জানত ও করত।

(ছ) আজটেক সমাজে শিক্ষার বিকাশ হয়েছিল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রচলন ছিল।

(জ) আজটেক সমাজ ছিল যাজক সম্প্রদায়কেন্দ্রীক। সমাজে অভিজাত শ্রেণী ছিল। জন্ম ও কর্ম নির্ভর।

(ঝ) ক্রীতদাস প্রথার প্রচলন ছিল আজটেক সাম্রাজ্যে।

7. কলম্বাস কে ছিলেন? আমেরিকা আবিষ্কারের পথে তাঁর সমুদ্র অভিযান বর্ণনা কর।

উত্তরঃ ক্রিস্টোফার কলম্বাস একজন ইটালীয় নাবিক ছিলেন। তাঁর জন্ম ১৪৫১ সালে। তাঁর অভিযানের প্রতি আগ্রহ ছিল এবং অভিযানের মাধ্যমে নাম ও যশ পাওয়া তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। তিনি কার্ডিনাল পিয়ের ডিএলির বই ইমাগো মান্ডি পড়ে বিশেষভাবে উদ্দীপ্ত হয়েছিলেন। তিনি অভিযানের উদ্দেশ্যে পর্তুগীজ রাজার কাছে তাঁর পরিকল্পনা পেশ করেন, কিন্তু তা বাতিল হয়। ভাগ্যক্রমে স্পেনীয় কর্তৃপক্ষের কাছে সামান্য কিছু সাহায্য। পেয়ে তিনি পালোস বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন ১৪৯২ সালের ৩রা আগস্ট।

কলম্বাসের বহর বেশ ছোট ছিল। একটি পালতোলা বড় জাহাজ ও দুটি ছোট জাহাজ নিয়ে তার বহর ছিল। বড় জাহাজটির নাম ছিল সান্তা মারিয়া এবং ছোট জাহাজ দুটির নাম ছিল পিটা ও নিনা। সান্তা মারিয়ার পরিচালন কলম্বাজ নিজেই করেছিলেন। ৪০ জন দক্ষ নাবিক তাকে সহায়তা করেছিলেন। অনুকূল আবহাওয়ায় তিনি যাত্রা করেছিলেন। কিন্তু এত দূর পথে প্রথম ৩৩ দিন অথৈ সমুদ্রে কোন কূল পাওয়া গেল না। ফলে নাবিকদের একটা অংশ অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকে এবং ফিরে যাওয়ার দাবি তোলে।

অবশেষে ১৪৯২ সালের ১২ই অক্টোবর একটি স্থলরেখা নজরে আসে। কলম্বাস প্রথমে ভেবেছিলেন যে তিনি ভারতবর্ষে (India) পৌঁছেছেন। কিন্তু সেটা ছিল বাহামার ওয়ানাহানি দ্বীপ। গুয়ানাহানি দ্বীপে সেখানকার অধিবাসী আরাওয়াকরা নাবিকদের সাদরে গ্রহণ এবং খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করেন। কলম্বাস তাদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হন। এই গুয়ানহানিতে তিনি স্পেনীয় পতাকা প্রোথিত করেন। তিনি এই দ্বীপের নামকরণ করেন সান সালভাদোর। স্থানীয় লোকদের সাহায্যে তিনি আরও বড় দ্বীপ কুমনাস্থান ও কিসকেয়া দর্শন করেন।

8. স্পেনীয় ও পর্তুগীজ শাসকদের সমুদ্রাভিযানে পৃষ্ঠপোষকতার কারণগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা কর। 

উত্তরঃ পঞ্চদশ শতাব্দীতে স্পেনীয় ও পর্তুগীজ শাসকদের সমুদ্রাভিযানে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া বা পৃষ্ঠপোষকতার পিছনে সম্মিলিতভাবে নিম্নলিখিত মোট তিনটি উদ্দেশ্যের উপর নির্ভরশীল ছিলঃ

(ক) অর্থনৈতিকঃ চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেয়। ইউরোপে মারণব্যাধি প্লেগ ও যুদ্ধবিগ্রহে প্রচুর লোকক্ষয়, ব্যবসায়িক মন্দা ও সোনা-রুপার মুদ্রার ঘাটতি দেখা দেয়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে উক্ত দেশীয় শাসকরা নতুন গন্তব্যের সন্ধানে ছিলেন।

(খ) ধর্মীয়ঃ আরও বেশিসংখ্যক লোককে খ্রিস্টধর্মের আওতায় নিয়ে আসা যাবে এই সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় অনেক ধর্মপ্রাণ ইউরোপীয়রা ঝুঁকি নিতেও রাজি ছিলেন।

(গ) রাজনৈতিকঃ তুর্কীদের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়রা ধর্মযুদ্ধে লিপ্ত হলেও এর ইতিবাচক দিকটা ছিল যে এতে এশিয়ার সঙ্গে তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল এবং তাদের মধ্যে এশিয়ার দ্রব্যাদি বিশেষ করে মশলাপাতির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। বিশ্বে ইউরোপীয় রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বেড়ে যাওয়ার ফলে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে উপনিবেশ স্থাপন করায় তাদের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তারা অনেক লাভবান হয় এবং এই অবস্থা বজায় রাখতেই স্পেনীয় ও পর্তুগীজ শাসকরা দূরবর্তী সমুদ্রাভিযানের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। 

9. আমেরিকাতে স্পেনীয় সাম্রাজ্যের বিশিষ্টগুলি লেখ।

উত্তরঃ আমেরিকাতে স্পেনীয় সাম্রাজ্যের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) স্পেনীয় সাম্রাজ্য বিস্তারের ভিত্তি ছিল বারুদ ও অশ্বযোদ্ধাদের বলে বলীয়ান সামরিক ক্ষমতা।

(খ) স্থানীয় জনগণ হয়ত রাজস্ব দিতে না হয় সোনা ও রুপার খনিতে কাজ করতে বাধ্য ছিল। 

(গ) প্রারম্ভিক আবিষ্কার পরবর্তী সময়ে স্পেনীয়রা এই দেশে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট জনপদের সৃষ্টি হয়, যেখানে কিছু স্পেনদেশীয় লোক থাকত এবং স্থানীয়দের কাজকর্মের তদারকি করত।

(ঘ) স্থানীয় সর্দারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নতুন বসতি ও সোনার উৎস খুঁজে বের করার।

(ঙ) সোনার উৎস সন্ধানের অত্যধিক লোভে স্পেনীয়রা হিংস্রতা ও দমন নীতি অবলম্বন করে, যাতে স্থানীয় অসন্তোষ গড়ে ওঠে এবং স্পেনীয়রা নির্বিচারে স্থানীয়দের হত্যা করে ইত্যাদি।

(চ) ক্রমপর্যায়ে স্থানীয় আরাওয়াকরা নিজেদের অস্তিত্ব হারায়, যা স্পেনীয় সাম্রাজ্যের সর্বাপেক্ষা বেদনাদায়ক অবদান।

10. আমেরিকা আবিষ্কার বা অজানা সমুদ্র যাত্রার প্রভাব বা ফলাফল লেখ।

উত্তরঃ অজানা সমুদ্রযাত্রা দিয়ে শুরু হওয়া একটি পর্যায় ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকায় একটি চিরস্থায়ী প্রভাব ফেলেছিল।

(ক) পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে ইউরোপের জনগণ এক সমুদ্র থেকে আরেক সমুদ্রে নির্ভয়ে যাতায়াত করার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল হয়ে উঠেছিল। ইতিপূর্বে সমুদ্রের কোনো যাত্রাপথ সম্বন্ধে ইউরোপীয়দের কোনো কিছু জানা ছিল না। পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে এবং ষোড়শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ওই দুরূহ কাজগুলো করা সম্ভব হয়েছিল।

(খ) ইউরোপের পক্ষে আমেরিকা আবিষ্কারের প্রভাব শুধু প্রথম পর্যায়ের অভিযাত্রীদের উপর নয় অন্যান্যদের উপরও পড়েছিল। সোনা ও রুপার আমদানি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং শিল্প বিস্তারে সহায়ক হয়েছিল।

(গ) ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও হল্যান্ড দেশগুলোর ব্যবসায়ীরা তাদের অনেকগুলো জয়েন্ট স্টক কোম্পানি শা অভিযানেও বেরিয়ে পড়েছিল এবং সেই সঙ্গে সেই সব দেশে উপনিবেশ স্থাপন করে ওই দেশগুলোর বিভিন্ন কৃষিব্য: যেমন – তামাক, আলু, আখ, কোকো, রাবার ইত্যাদির সঙ্গে ইউরোপীয়দের পরিচিত করিয়েছিলেন। 

(ঘ) আমেরিকা থেকে আমদানিকৃত কিছু কৃষিষবা বিশেষ করে আলু এবং লঙ্কার সঙ্গে ইউরোপীয়রা নতুন করে পরিচিত হয়েছিল। ওই মধ্যগুলোকে পরে ইউরোপীয়রা ভারতবর্ষ সহ আরও কয়েকটি দেশেও বয়ে নিয়ে গিয়েছিল।

(ঙ) অপরপক্ষে এই ইউরোপীয় উপনিবেশের ফলে আমেরিকার স্থানীয় অধিবাসীরা যা পেরেছিল তা হচ্ছে নির্মম গণহত্যা, তাদের নিজস্ব জীবনধারার বিলুপ্তিকরণ এবং খনি কৃষিকাজ ও কলকারখানার ক্রীতদাসে পরিণত হওয়া।

11. ফ্রান্সিসকো পিজারোর নেতৃত্বে স্পেনীয়রা কিভাবে ইনকা সাম্রাজ্য দখ করেছিল? সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তরঃ ফ্রান্সিসকো পিজারো ছিলেন একজন স্পেনীয় সেনাকর্মী। তিনি ছিলেন অশিক্ষিত এবং গরীব। ১৫০২ খ্রিস্টাব্দে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে গমন করলে তিনি ইনকা সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধির গল্প শুনেছিলেন। তাই পরবর্তীতে তিনি বহুবার চেষ্টা করেছিলেন প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে ইনকা রাজত্বে পৌঁছতে। একবার যাত্রা শেষে ঘরে ফেরার পথে তিনি স্পেনীশীয় রাজার সঙ্গে দেখা করতে পেরেছিলেন এবং সেই সময় ইনকাদের কারিগরী নৈপুণ্যের নিদর্শন চমৎকার স্বর্ণখচিত পাত্র রাজাকে দেখিয়েছিলেন। সেসব দেখে রাজার খুব লোভ হল এবং তিনি পিজারোকে এই মর্মে কথা দিলেন যে তাকে ওই দেশের গভর্নর করে দেবেন।

পরবর্তীতে পিজারো সুযোগ বুঝে ১৫৩২ খ্রিস্টাব্দের গৃহযুদ্ধের পর আটাওয়ালপা ( Atahualpa) ইনকা সাম্রাজ্যের সিংহাসন দখল করেন। পিজারো ওই সময় সেখানে উপস্থিত হলেন এবং ফাঁদ পেতে ওই রাজাকে বন্দী করলেন। রাজা তাঁর মুক্তিপণ বাবদ একঘর ভর্তি সোনা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। কিন্তু পিজারো তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেননি বরং তাঁর নির্দেশে ওই রাজাকে মেরে ফেলা হয়। এইভাবেই স্পেনীয়রা পিজারোর নেতৃত্বে ইনকা সাম্রাজ্যে দখল করে।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলীর উত্তরঃ

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

1. আজটেকদের সভ্যতার সঙ্গে মেসোপোটামিয়াদের সভ্যতার তুলনা কর।

উত্তরঃ দুই ভিন্ন অঞ্চলে এবং হাজার বৎসরের পার্থক্যে গড়ে উঠেছিল মেসোপোটামীয় সভ্যতা ও আজতেক সভ্যতা। এই সভ্যতাগুলির বৈশিষ্ট্য তাদের মধ্যে থাকা সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যের তুলনামূলক দিক তুলে ধরে।

মেসোপোটার্মীয় সভ্যতাঃ মেসোপোটামিয়া সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) মেসোপোটানীয় সমাজে তিনটি শ্রেণী ছিল; যথা—উচ্চ শ্রেণী, মধ্যবিত্ত শ্রেণী ও নিম্ন শ্রেণী।

(খ) উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী সুখী ও বিলাসী জীবনযাপন করত। অন্যদিকে নিম্ন শ্রেণীর জীবনযাত্রা ছিল করুণ। 

(গ) মহিলাগণ পুরুষের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম মর্যাদা লাভ করত।

(ঘ) জনগণ নানা প্রকার দেবদেবীর পূজার্চনা করত।

(ঙ) জনগণ নানাবিধ মহৎ কৃতিত্বমূলক কাজ সম্পাদন করেছিল। প্রথমেই তারা লিখবার কৌশল আবিষ্কার করে। তারা একটি চন্দ্রপঞ্জিকা তৈরি করে। তাছাড়াও তারা কুম্ভকারের চক্র, কাচ ও নূতন ধরনের ভাস্কর্য আবিষ্কার করে। 

(চ) নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা হলেও তার গ্রামীণ জীবন ছিল অতি উন্নত।

(ছ) স্থানীয়ভাবে উৎকৃষ্ট ধাতুর যোগান ছিল না বলে বহিরাঞ্চল থেকে বিভিন্ন নির্মাণ। কার্যের প্রয়োজনীয়তায় ধাতু আনয়ন করা হত। 

(জ) বহির্দেশীয় এবং অন্তদেশীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ লাভ করেছিল।

(ঝ) সামাজিক শ্রেণী বিভাজনে শাসকরা ছিলেন সবথেকে উচ্চে।

আজটেকদের সভ্যতাঃ আজটেক সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) আজটেক সমাজ ছিল শ্রেণী বিভাজিত। এই সমাজে অভিজাত, যাজক, পুরোহিত, যোদ্ধা, ব্যবসায়ী, কারিগর, চিকিৎসক, শিক্ষক, কৃষক প্রভৃতির অবস্থান ছিল। 

(খ) অভিজাত সম্প্রদায় তাদের মধ্য থেকে রাজা মনোনীত করত। রাজাকে ভূ-পৃষ্ঠে সূর্যদেবতার প্রতিনিধি বলে গণ্য করা হত। জনগণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যুদ্ধ দেবতা ও সূর্য দেবতার পূজা করত।

(গ) সীমিত ভূমি থাকার দরুন জনসাধারণ জলাভূমিকে বসবাস ও কৃষি উপযোগ করে তোলে। জলসেচের জন্য নালা ও খাল ছিল। 

(ঘ) জনগণ শস্য, সিম, মটর, মিষ্টি লাউ, স্কোয়াস, আলু প্রভৃতি নানা প্রকার শাকসবজি উৎপাদন করত। 

(ঙ) আজটেক সাম্রাজ্য গ্রামের উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়েছিল। সেখানে কোন ব্যক্তিবিশেষ জমির মালিক ছিলেন না, বরং গোষ্ঠীর মালিকানাধীন ছিল জমি। 

(চ) আজটেকরা কোন বিশেষ ধাতুর প্রতি আসক্ত ছিল না। এমনকী সোনা-রুপার প্রতিও তাদের আসক্তি ছিল না। তারা বিভিন্ন ধাতুর ব্যবহার জানত ও করত।

(ছ) আজটেক সমাজে শিক্ষার বিকাশ হয়েছিল এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রচলন ছিল।

(জ) আজটেক সমাজ ছিল যাজক সম্প্রদায়কেন্দ্রীক। সমাজে অভিজাত শ্রেণী ছিল। জন্ম ও কর্ম নির্ভর।

(ঝ) ক্রীতদাস প্রথার প্রচলন ছিল আজটেক সাম্রাজ্যে।

2. পঞ্চদশ শতকে ইউরোপীয় নাবিকদের সহায়তাকারী নূতন ঘটনাবলী কি কি? 

উত্তরঃ পঞ্চদশ শতকে ইউরোপীয় নাবিকদের সহায়তাকারী নূতন ঘটনাবলী নিম্নরূপঃ

(ক) ১৩৮০ খ্রিস্টাব্দে চুম্বকীয় কম্পাস আবিষ্কৃত হয়েছিল। তা সমুদ্রযাত্রার সঠিক গন্তব্যস্থল নির্ণয়ে অত্যন্ত সহায়তা করেছিল।

(খ) ইউরোপীয় সামুদ্রিক জাহাজগুলিকে নানাভাবে উন্নত করা হয়েছিল। বৃহৎ জাহাজ তৈরি করা হয়েছিল। এই জাহাজগুলি বিশাল পরিমাণ দ্রব্যসামগ্রী ও নিরাপত্তার জন্য অস্ত্রশস্ত্র বহন করতে পারত।

(গ) পর্যটন সাহিত্য এবং সৃষ্টিতত্ত্ব ও ভূগোল বিষয়ক নানাবিধ গ্রন্থাবলী রচিত হওয়ার ফলে মানুষ সাগ্রহে এইগুলি পড়তে থাকে। টলেমির ভূগোলে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল, অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ বিন্যাস করিবার কথা উল্লেখ আছে। এই ধারণা ইউরোপীয় নাবিকদের বিশ্ব সম্পর্কে অনেক জ্ঞান দান করেছিল।

3. পঞ্চদশ শতকে স্পেন ও পর্তুগালের আটলান্টিক মহাসাগরে সর্বপ্রথম অভিযান চালানোর কারণসমূহ উল্লেখ কর।

উত্তরঃ পঞ্চদশ শতকে স্পেনে ও পর্তুগালের আটলান্টিক মহাসাগরে সর্বপ্রথম অভিযান চালানোর কারণসমূহ নিম্নরূপঃ 

(ক) স্প্যানিশ ও পর্তুগীজ শাসকগণ সমুদ্র অভিযানের জন্য অর্থ মঞ্জুরে উৎসাহী ছিলেন। তাদের সোনা ও ধনদৌলত এবং গৌরব-এর আকাঙ্ক্ষা ছিল।

(খ) বহু ধর্মপ্রাণ খ্রিস্টান বিভিন্ন দেশের মানুষকে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণে বাধ্য করতে চেয়েছিলেন। সুতরাং তারা যে-কোন প্রকার অভিযানে সদা প্রস্তুত থাকতেন।

(গ) ইউরোপীয় দেশসমূহ অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়াযুক্ত অঞ্চলে বসবাস করতে আগ্রহী ছিলেন।

4. কোন্ নূতন খাদ্যসামগ্রীসমূহ দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দিকে প্রেরণ করা হয়েছিল?

উত্তরঃ দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বিশ্বের অন্যান্য স্থানে প্রেরিত নূতন খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—আলু, কুশিয়ার, গোলমরিচ ও লঙ্কা।

নাতিদীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

5. সতেরো বছরের ধৃত এবং ব্রাজিলে ক্রীতদাসরূপে আনীত এক আফ্রিকান বালকের ভ্রমণ বৃত্তান্ত সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। 

উত্তরঃ দাসত্বে পরিণত করা বালকের কাহিনি অত্যন্ত করুণ। তাকে অন্যান্য ক্রীতদাসের মতো জাহাজে আবদ্ধ করা হয়। তাকে দীর্ঘ দিন শিকল দিয়ে বেঁধে বিনা খাদ্য ও জলে রাখা বালকটি কঙ্গো থেকে তার যাত্রা আরম্ভ করে এঙ্গোলায় পৌঁছায়। তারপর সে আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজে করে দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।

6. দক্ষিণ আমেরিকা আবিষ্কার কিভাবে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকতাবাদ বিকাশের সূচনা করেছিল?

উত্তরঃ ইউরোপীয় দেশসমূহ বিশেষত স্পেন এবং পর্তুগালের স্বর্ণ ও রৌপ্যের প্রতি অত্যন্ত লোভ ছিল। তারা আশা করেছিল যে দক্ষিণ আমেরিকায় প্রচুর পরিমাণে স্বর্ণ ও রৌপ্য পাওয়া যায়। এই কারণে তারা সেখানে বিভিন্ন অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। তারা সেখানে তাদের সামরিক শক্তি ও বন্দুকের জোরে শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করে। স্থানীয় বাসিন্দা সহিংসভাবে তাদের প্রতিরোধ করে। কিন্তু এই প্রতিরোধ স্প্যানিশগণ নির্বিচারে দমন করে। তারা স্থানীয় লোকদের জোর করে তাড়িয়ে দেয়। তারা নুতন অঞ্চল এবং নুতন স্বর্ণখনি আবিষ্কারের জন্য স্থানীয় নেতাদের ব্যবহার করে। ইউরোপের অন্যান্য জাতি যখন দক্ষিণ আমেরিকায় স্বর্ণ ও রৌপ্যের ভাণ্ডারের কথা জানতে পারে তখন তারা সেখানে চলে যায় এবং স্থায়ীভাবে বসতি বিস্তার করে। তারা স্থানীয় লোকদের দাসে পরিণত করে এবং তাদের খনিতে কাজ করিতে বাধ্য করে। এইভাবে দক্ষিণ আমেরিকা ধীরে ধীরে ইউরোপীয় শক্তির মুষ্ঠিতে আবদ্ধ হয়ে যায়।

প্রতিবন্ধকতা ও পলায়নঃ কলম্বাস ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা সোনার অন্বেষণ করেন, কিন্তু তাদের অভিযান একটি দুর্ঘটনায় বাধাপ্রাপ্ত হয়। তাঁরা হিংস্র কবির উপজাতির সম্মুখীনও হন। নাবিকরাও যথা শীঘ্র সম্ভব ঘরে ফিরে যাবার দাবি করতে থাকে। কিন্তু ফেরার পথ এত সুগম ছিল না। একদিকে জাহাজ ঘুন পোকার আক্রমণে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং নাবিকরাও ক্লান্ত থাকায় প্রায় ৩২ সপ্তাহ লেগে যায় ফিরতে।

পরবর্তীকালে আরও তিনবার অভিযান চালানো হয় এবং এই অভিযানগুলিতে প্রধান জলভূমি আবিষ্কৃত হয় এবং দেখা যায় যে কলম্বাস ভারতবর্ষ আবিষ্কার করেন নি, বরং তিনি একটি নতুন মহাদেশ আবিষ্কার করেছেন। তিনি উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার নামকরণ ক্লোরেন্সবাসী একজন ভৌগোলিক আমেরিগো ভেসপুচির নামে করেন। এটাই কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের কাহিনী।

We Hope the given একাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পাঠ্যক্রমের প্রশ্ন ও উত্তর will help you. If you any Regarding, Class 11 History Question and Answer in Bengali, drop a comment below and We will get back to you at the earliest.

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top