Class 11 Logic and Philosophy Chapter 2 বচন, is a textbook prescribed by the Assam AHSEC Board Class XI Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Logic and Philosophy Chapter 2 বচন The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Logic and Philosophy Chapter 2 বচন Solutions are free to use and easily accessible.
Class 11 Logic and Philosophy Chapter 2 বচন
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Medium Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Notes. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam Board Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Suggestion will be able to solve all the doubts of the students. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Solution, Class 11 Logic and Philosophy in Bengali textbooks Solution Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the Assam AHSEC Board Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Question Answer PDF. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.
অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। বচনের অংশগুলি কী কী?
উত্তরঃ উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয়।
প্রশ্ন ২। একটি চতুর্বর্গীয় বচনের কয়টি অংশ থাকে?
উত্তরঃ চারটি।
প্রশ্ন ৩। চতুবর্গীয় বচনের অংশগুলি উল্লেখ করো।
উত্তরঃ পরিমাণ চিহ্ন, উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয় পদ।
প্রশ্ন ৪। সার্বিক সদর্থক বচনের চিহ্ন কী?
উত্তরঃ ‘A’
প্রশ্ন ৫। সার্বিক নঞর্থক বচনের চিহ্ন কী?
উত্তরঃ ‘E’
প্রশ্ন ৬। বিশেষ সদর্থক বচনের চিহ্ন কী?
উত্তরঃ ‘I’
প্রশ্ন ৭। বিশেষ নঞর্থক বচনের চিহ্ন কী?
উত্তরঃ ‘O’
প্রশ্ন ৮। সংযোজক সবসময় কোন্ কালের রূপ হয়?
উত্তরঃ বর্তমান কালের।
প্রশ্ন ৯। সংযোজক কি সর্বদা সদর্থক হয়?
উত্তরঃ না, সংযোজক সদর্থক এবং নঞর্থক দু-ই রকমেরই হতে পারে।
প্রশ্ন ১০। ‘বচন মাত্রই সত্য কিংবা মিথ্যা হয়’- উক্তিটি কি সত্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ, উক্তিটি সত্য।
প্রশ্ন ১১। ‘বাক্য মাত্রই সত্য কিংবা মিথ্যা হয়’- উক্তিটি কি সত্য?
উত্তরঃ না, উক্তিটি মিথ্যা।
প্রশ্ন ১২। ‘প্রতিটি বচন বাক্য, কিন্তু প্রতিটি বাক্য বচন নয়’- উক্তিটি কি সত্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ, উক্তিটি সত্য।
প্রশ্ন ১৩। ‘প্রতিটি বাক্য বচন, কিন্তু প্রতিটি বচন বাক্য নয়’- উক্তিটি কি সত্য?
উত্তরঃ না, উক্তিটি সত্য নয়।
প্রশ্ন ১৪। কোন্ ধরনের বাক্য বচন হিসেবে তর্কবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ একমাত্র ঘোষক বাক্য (Assertive Sentence) তর্কীয় বচন হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ১৫। কীসের উপর বচনের গুণ নির্ভর করে?
উত্তরঃ বচনের গুণ, অর্থাৎ বচন সদর্থক না নঞর্থক, তা নির্ভর করে সংযোজকের প্রকৃতির উপর।
প্রশ্ন ১৬। কোনো বচনের পরিমাণ কীসের উপর নির্ভর করে?
উত্তরঃ বচনের পরিমাণ উদ্দেশ্যের সঙ্গে যুক্ত পরিমাণসূচক চিহ্নের উপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন ১৭। সকল্পক বা প্রাকল্পিক বচনের গুণ কীভাবে নির্ধারণ করা হয়?
উত্তরঃ সকল্পক বচনের ‘অনুবর্তী বা পরবর্তী বা অনুগ’ অংশটির গুণ অনুসারে সমগ্র বচনটির গুণ নির্ধারণ করা হয়।
প্রশ্ন ১৮। বিকল্পক বা বৈকল্পিক বচন কি সর্বদা সদর্থক হয়ে থাকে?
উত্তরঃ হ্যাঁ।
প্রশ্ন ১৯। বিকল্প কী?
উত্তরঃ বৈকল্পিক বচনের উপাদান বচনগুলোকে বিকল্প বলে।
প্রশ্ন ২০। সকল্পক বচনের কয়টি অংশ এবং কী কী?
উত্তরঃ সকল্পক বচনের দুটি অংশ। যথা- পূর্ববর্তী অংশ এবং পরবর্তী অংশ।
প্রশ্ন ২১। কীভাবে একটি সকল্পক বচনের পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়?
উত্তরঃ সকল্পক বচনের পরিমাণ পূর্ববর্তী অংশের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে।
প্রশ্ন ২২। গুণ অনুযায়ী বিকল্পক বচন সদর্থক না নঞর্থক?
উত্তরঃ সদর্থক।
প্রশ্ন ২৩। যৌগিক বচন কয় রকমের এবং কী কী?
উত্তরঃ যৌগিক বচন দুই প্রকার। যথা-
(ক) যৌগিক সদর্থক।
(খ) যৌগিক নঞর্থক।
প্রশ্ন ২৪। সরল বচনে কয়টি উদ্দেশ্য এবং কয়টি বিধেয় থাকে?
উত্তরঃ একটি উদ্দেশ্য ও একটি বিধেয় থাকে।
প্রশ্ন ২৫। ব্যাখ্যানির্ভর বচনের কয়টি রূপ? কী কী?
উত্তরঃ দুটি রূপ। ব্যতিরেকী ও ব্যতীতিক।
শুদ্ধ উত্তর দাও:
১। ভাষায় প্রকাশিত অবধারণকে শব্দ/পদ/বচন বলে।
উত্তরঃ বচন।
২। একটি বচনে একটি/দুইটি/তিনটি পদ থাকে।
উত্তরঃ দুইটি।
৩। একটি বচনে একটি/দুইটি/তিনটি অংশ থাকে।
উত্তরঃ তিনটি।
৪। একটি বচনে যার সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য/বিধেয় বলে।
উত্তরঃ উদ্দেশ্য।
৫। কোন্ বচনকে আংশিক বললে তার গুণ/পরিমাণকে বোঝায়।
উত্তরঃ পরিমাণকে।
৬। বচনের সংযোজক একটি শব্দ/পদ/এর কোনোটাই নয়।
উত্তরঃ শব্দ।
৭। বচনের সংযোজক বর্তমান/অতীত/ভবিষ্যৎ কালে থাকে।
উত্তরঃ বর্তমান।
৮। কোনো বচন সার্বিক না বিশেষ, সেটা বোঝা যায় তার গুণ/পরিমাণ থেকে।
উত্তরঃ পরিমাণ।
৯। সংযোজক সর্বদা সদর্থক/নঞর্থক/সদর্থক অথবা নঞর্থক থাকে।
উত্তরঃ সদর্থক অথবা নঞর্থক থাকে।
১০। নিরপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সম্বন্ধ শর্তাধীন/ শর্তনিরপেক্ষ।
উত্তরঃ শর্তনিরপেক্ষ।
১১। সাপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের সম্বন্ধ শর্তাধীন/ শর্তনিরপেক্ষ।
উত্তরঃ শর্তাধীন।
১২। গুণ ও পরিমাণের মিশ্রপদ্ধতি অনুযায়ী বচনের শ্রেণিবিভাগ করলে চার/ পাঁচ/ছয় রকমের বচন পাওয়া যায়।
উত্তরঃ চার।
১৩। I বচন সার্বিক সদর্থক/বিশেষ সদর্থক।
উত্তরঃ বিশেষ সদর্থক।
১৪। A বচন সার্বিক সদর্থক/বিশেষ নঞর্থক।
উত্তরঃ সার্বিক সদর্থক।
১৫। E বচন সার্বিক নঞর্থক/বিশেষ নঞর্থক।
উত্তরঃ সার্বিক নঞর্থক।
১৬। O বচন বিশেষ সদর্থক/বিশেষ নঞর্থক।
উত্তরঃ বিশেষ নঞর্থক।
১৭। বচনের গুণ নির্ধারিত হয় উদ্দেশ্য/বিধেয়/সংযোজক দ্বারা।
উত্তরঃ সংযোজক দ্বারা।
১৮। নিরপেক্ষ /সাপেক্ষ বচনে উদ্দেশ্য এবং বিধেয় পদের সম্বন্ধ শর্তহীন।
উত্তরঃ নিরপেক্ষ।
১৯। গুণ/সম্বন্ধ/নিশ্চয়তা অনুযায়ী বচন নিরপেক্ষ ও সাপেক্ষ হয়।
উত্তরঃ সম্বন্ধ।
২০। গুণ/সম্বন্ধ/পরিমাণ অনুযায়ী বচন সার্বিক ও বিশেষ হয়।
উত্তরঃ পরিমাণ।
২১। গুণ অনুযায়ী বচন সার্বিক ও বিশেষ/সদর্থক ও নঞর্থক/নিরপেক্ষ ও সাপেক্ষ হয়।
উত্তরঃ সদর্থক ও নঞর্থক।
২২। অবধারণ একটি মানসিক প্রক্রিয়া/মানসিক প্রক্রিয়া নয়।
উত্তরঃ মানসিক প্রক্রিয়া।
২৩। বচনের সংযোজক একটি পদ/একটি গুণ/একটি উদ্দেশ্য/ এগুলোর কোনোটাই নয়।
উত্তরঃ এগুলোর কোনোটাই নয়।
২৪। ‘সকল কুকুর হয় জন্তু’-এটি সদর্থক/আংশিক/বিকল্পক বচন।
উত্তরঃ সদর্থক।
২৫। সকল বিশিষ্ট বচন সার্বিক /আংশিক।
উত্তরঃ আংশিক।
২৬। বচন একটি শব্দ/বাক্যাংশ/ কোনোটাই নয়।
উত্তরঃ বাক্যাংশ।
২৭। সামান্য বচনে উদ্দেশ্যের সমগ্র বাচ্যার্থ/লক্ষণার্থ উল্লেখ করা হয়।
উত্তরঃ বাচ্যার্থ।
২৮। সামান্য ও বিশেষ বচন গুণের/পরিমাণের বিভাজন।
উত্তরঃ পরিমাণের।
২৯। সদর্থক/নঞর্থক বচনে বিধেয় পদে উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে স্বীকার করা হয়।
উত্তরঃ সদর্থক।
৩০। সামান্য/বিশেষ বচনে বিধেয় পদকে সমগ্র উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়।
উত্তরঃ সামান্য।
শূন্যস্থান পূর্ণ করো:
১। মিশ্রনীতি অনুসারে বচনকে ______ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
উত্তরঃ চার।
২। বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সংযোগকারী নির্দেশক চিহ্নটিকে ______ বলে।
উত্তরঃ সংযোজক।
৩। সল্পক বচনের ______ অংশ।
উত্তরঃ দুইটি।
৪। সাপেক্ষ বচনকে ______ এবং ______ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
উত্তরঃ সকল্পক, বিকল্পক।
৫। গুণ অনুযায়ী বচন ______ এবং ______ হয়।
উত্তরঃ সদর্থক, নঞর্থক।
৬। পরিমাণ অনুযায়ী বচন ______ এবং ______ হয়।
উত্তরঃ সামান্য, বিশেষ।
৭। একটি বচনে ______ অংশ থাকে।
উত্তরঃ তিনটি।
৮। একটি চতুর্বর্গীয় বচনে ______ অংশ থাকে।
উত্তরঃ চারটি।
৯। কেবল ______ বাক্য বচন হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
উত্তরঃ ঘোষক।
১০। বচনের কোনো ______ বৈশিষ্ট্য নেই।
উত্তরঃ ভাষাগত।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। বচন বা বিবৃতি (Proposition) কাকে বলে?
উত্তরঃ দুটি পদের মধ্যে কোনো সম্বন্ধের স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতিকে ‘বচন’ বলে। বচন উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের অভ্যন্তরীণ সম্বন্ধ। বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় দুটি পদ থাকে এবং এই দুটি পদের মধ্যে সম্বন্ধসূচক শব্দও থাকে। অর্থাৎ প্রতিটি বচনে তিনটি অংশ থাকে, যথা-
(ক) উদ্দেশ্য পদ।
(খ) বিধেয় পদ। এবং
(গ) সংযোজক।
বচন মাত্রই সত্য কিংবা মিথ্যা হয়।
প্রশ্ন ২। বচনের দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বচনের দুটি উদাহরণ নিম্নরূপ-
(ক) ‘ফুল হয় সুন্দর’- এটি একটি তর্কীয় বচন বা তর্কবাক্য। এখানে ‘ফুল’ হল ‘উদ্দেশ্য পদ’, ‘সুন্দর’ হল ‘বিধেয় পদ’ এবং ‘হয়’ হল সংযোজক।
(খ) ‘মানুষ নয় অমর’- এই বচনটিতে ‘মানুষ’ হল ‘উদ্দেশ্য পদ’, ‘অমর’ হল বিধেয় পদ এবং ‘নয়’ হল সংযোজক। প্রথম উদাহরণ-
(ক) এ উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে স্বীকৃতি সম্বন্ধ। এবং দ্বিতীয় উদাহরণ-
(খ) এ উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে অস্বীকৃতি সম্বন্ধ রয়েছে।
প্রশ্ন ৩। উদ্দেশ্য (Subject) কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি তর্কবাক্যে যে পদ সম্বন্ধে কিছু বলা হয়, সেই পদের নাম হল উদ্দেশ্য।
প্রশ্ন ৪। বিধেয় (Predicate) বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ একটি বচনে উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যা বলা হয়, সেই পদের নাম হল বিধেয়।
প্রশ্ন ৫। সংযোজক (Capula) কী?
উত্তরঃ বচনের উদ্দেশ্য এবং বিধেয় পদের অভ্যন্তরীণ সম্বন্ধসূচক শব্দকে সংযোজক বলে।
প্রশ্ন ৬। গুণ (Quality) অনুসারে বচন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ গুণ অনুসারে শর্তহীন বা নিরপেক্ষ বচনকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যথা-
(ক) সদর্থক বচন (affirmative) ও
(খ) নঞর্থক বচন (negative)
প্রশ্ন ৭। সদর্থক (Affirmative) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদের ক্ষেত্রে স্বীকৃত হয়, অর্থাৎ বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কিছু স্বীকার করে, তাকে সদর্থক বচন বলে। যথা- ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’। এখানে বিধেয় পদ ‘মরণশীল’ উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’-এর ক্ষেত্রে স্বীকৃত হয়েছে।
প্রশ্ন ৮। নঞর্থক (Negative) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদের সম্পর্কে অস্বীকৃত হয়, অর্থাৎ বিধের পদটি উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কিছু অস্বীকার করে, তাকে নঞর্থক বচন বলে। যথা- ‘কোনো মানুষ নয় অমর’-এখানে বিধেয় ‘অমর’ পদটি উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’-এর সম্পর্কে অস্বীকৃত হয়েছে।
প্রশ্ন ৯। পরিমাণ (Quantity) অনুসারে বচন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ পরিমাণ অনুসারে শর্তহীন বা নিরপেক্ষ বচন দুই প্রকারের হয়। যথা-
(ক) সামান্য বা সার্বিক বচন (universal) ও
(খ) বিশেষ বচন (particular)
প্রশ্ন ১০। সামান্য বা সার্বিক (Universal) বচন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে তর্কীয় বচনে বিধেয় পদটি সমগ্র উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বীকার বা অস্বীকার করে, তাঁকে ‘সামান্য বা সার্বিক (universal) বচন’ বলে। যেমন-
(ক) সকল মানুষ হয় মরণশীল।
(খ) কোনো মানুষ নয় অমর।
প্রথম উদাহরণ-
(ক)-এ বিধেয় পদ ‘মরণশীল’ সমগ্র উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষকে স্বীকার করেছে।
দ্বিতীয় উদাহরণ-
(খ)-এ বিধেয় পদ ‘অমর’ সমগ্র উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ কে অস্বীকার করেছে।
প্রশ্ন ১১। বিশেষ (Particular) বচন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে তর্কবাক্যে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্যের কিছু অংশ সম্পর্কে স্বীকার বা অস্বীকার করে, সেই বচনকে ‘বিশেষ বচন’ বলে। যথা-
(ক) কোনো কোনো মানুষ হয় জ্ঞানী।
(খ) কোনো কোনো মানুষ নয় জ্ঞানী।
প্রথম উদাহরণ-
(ক)-এ বিধেয় পদ ‘জ্ঞানী’ উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’-এর কিছু অংশের ক্ষেত্রে স্বীকৃত হয়েছে।
দ্বিতীয় উদাহরণ-
(খ)-এ বিধেয়’ পদ ‘জ্ঞানী’ উদ্দেশ্য পদ ‘মানুষ’-এর কিছু অংশ সম্পর্কে অস্বীকৃত হয়েছে।
প্রশ্ন ১২। সম্বন্ধ (Relation) অনুসারে বচন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ উদ্দেশ্য ও বিদেয় পদের মধ্যে সম্বন্ধের ভিত্তিতে বচনকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যথা-
(ক) নিরপেক্ষ বা শর্তহীন বচন এবং (categorical)
(খ) সাপেক্ষ বা শর্তাধীন বচন (conditional)
প্রশ্ন ১৩। নিরপেক্ষ (Categorical) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্বন্ধ কোনো শর্তের ওপর নির্ভর করে না, সেই বচনকে ‘নিরপেক্ষ বচন’ বলে। এ জাতীয় বচনের সত্যতা কোনো শর্তসাপেক্ষ নয়। যেমন-
(ক) সকল মানুষ হয় মরণশীল।
(খ) কোনো মানুষ নয় পূর্ণ।
উদাহরণ- (ক) এবং উদাহরণ (খ) এ উদ্দেশ্যের সঙ্গে বিধেয় পদের সম্বন্ধ কোনো শর্তাধীন নয়।
প্রশ্ন ১৪। সাপেক্ষ (Conditional) বা শর্তাধীন বচন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের সম্বন্ধ কোনো শর্তের ওপর নির্ভর করে, সেই বচনকে সাপেক্ষ বচন বলা হয়। সাপেক্ষ বচনের সত্যতা বা অসত্যতা শর্তসাপেক্ষ। যেমন—
(ক) যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে মাটি ভেজে।
(খ) হয় সে আসবে, নয় আমি যাব।
প্রশ্ন ১৫। সাপেক্ষ (Conditional) বচন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ সাপেক্ষ বচন দুই প্রকার। যথা—
(ক) সকল্পক বা প্রাকল্পিক বচন। ও
(খ) বিকল্পক বচন বা বৈকল্পিক বচন।
প্রশ্ন ১৬। সকল্পক বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে সাপেক্ষ বচনে শর্তটি ‘যদি … তাহলে …’ জাতীয় শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, তাকে সকল্পক বা প্রাকল্পিক বচন বলে। যথা—
‘যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে মাটি ভেজে।’
প্রশ্ন ১৭। বিকল্পক বা বৈকল্পিক বচন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে সাপেক্ষ বচনে শর্তটিকে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ না করে দুটি বিকল্প বচন ব্যবহার করা হয়, তাকে ‘বিকল্পক বা বৈকল্পিক বচন’ বলে। এই বচনে ‘হয় …. নয় …’ শর্তটি আরোপ করা হয়। যথা—’হয় সে ভালো, নয় সে ধূর্ত’। বিকল্পক বচন সবসময়ই সদর্থক হয়ে থাকে। বিকল্পক বচনের ‘হয়’ এবং ‘নয়’কে বিকল্প বলে।
প্রশ্ন ১৮। গঠন (Composition or Structure) অনুযায়ী বচন কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ গঠন অনুযায়ী বচন দুই রকমের হয়। যথা—
(ক) সরল বচন (simple)। এবং
(খ) যৌগিক বচন (compound)।
প্রশ্ন ১৯। সরল বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে একটিমাত্র উক্তি থাকে, তাকে সরল বচন বলে। যথা— সকল মানুষ হয় মরণশীল।
প্রশ্ন ২০। যৌগিক বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে একাধিক উক্তি থাকে, তাকে যৌগিক বচন বলে। যেমন- যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে মাটি ভেজে।
প্রশ্ন ২১। নিশ্চয়তা (Modality) অনুযায়ী বচন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ নিশ্চয়তা অনুযায়ী বচন তিন প্রকারের। যথা—
(ক) অনিবার্য (necessary) বচন।
(খ) বিবরণাত্মক (assertory) বচন। ও
(গ) সম্ভাব্য বচন (problematic)।
প্রশ্ন ২২। অনিবার্য (necessary) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে নিশ্চয়তার মাত্রা সবথেকে বেশি থাকে তাকে অনিবার্য বচন বলে। যেমন— রামকে নিশ্চয়ই যেতে হবে, দুই আর দুই অবশ্যই চার হয় ইত্যাদি।
প্রশ্ন ২৩। বিবরণাত্মক ( assertory) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ বিবরণাত্মক বচন হল সেই বচন, যাতে উদ্দেশ্য এবং বিধেয় পদের সম্পর্ক অভিজ্ঞতা ভিত্তিক থাকে এবং অজ্ঞতার সীমাতেই আবদ্ধ থাকে। যেমন— ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’, ‘কোনো কোনো মানুষ হয় সৎ’ ইত্যাদি।
প্রশ্ন ২৪। সম্ভাব্য (problematic) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে উদ্দেশ্য এবং বিধেয় পদের মধ্যকার সম্বন্ধ বস্তুর প্রকৃত স্বরূপ সম্বন্ধে আংশিক জ্ঞানের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে সম্ভাব্য বচন বলে। এর ফলে এই বচন সম্ভাব্য হয় মাত্র। যেমন ‘সে হয়তো ভালো’, ‘রাম সম্ভবত সৎ’ ইত্যাদি।
প্রশ্ন ২৫। অর্থ ও তাৎপর্য (Import or Significance) অনুযায়ী বচনকে কয় শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে এবং কী কী?
উত্তরঃ অর্থ ও তাৎপর্য অনুযায়ী বচনকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। যথা—
(ক) শাব্দিক বচন বা বিশ্লেষক বচন।
(খ) যথার্থ বচন বা সংশ্লেষক বচন।
প্রশ্ন ২৬। শাব্দিক (Verbal) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ শাব্দিক বা বিশ্লেষক বচন হচ্ছে সেই বচন যার বিধেয় উদ্দেশ্য পদের সমগ্র বা আংশিক লক্ষণার্থ উল্লেখ করে। যেমন— সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব।
এই জাতীয় বচনকে বিশ্লেষণাত্মক বচন, ব্যাখ্যামূলক বচন, মৌলিক বচন বলা হয়। বিশ্লেষক বলা হয় কারণ, এক্ষেত্রে উদ্দেশ্যকে বিশ্লেষণ করলেই বিধেয়কে পাওয়া সম্ভব।
২৭। যথার্থ (Real) বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনে বিধেয় পদ উদ্দেশ্যের লক্ষণার্থের অন্তর্গত থাকে না এবং বিধেয় পদ উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে নতুন তথ্য দেয়, তাকে যথার্থ বা সংশ্লেষক বচন বলে। যথা— ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব’, ‘গোরু হল গৃহপালিত জীব’ ইত্যাদি ।
প্রশ্ন ২৮। বিশিষ্ট বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনের উদ্দেশ্য একটি বিশিষ্ট পদ, তাকে ‘বিশিষ্ট বচন’ বলে। যেমন— সক্রেটিস হন একজন দার্শনিক।
প্রশ্ন ২৯। ব্যতিরেকী বচনে কী ধরনের শব্দ থাকে? উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বোঝাও।
উত্তরঃ ব্যতিরেকী বচনে ‘মাত্র’, ‘কেবলমাত্র’, ‘একমাত্র’ জাতীয় শব্দ থাকে। যেমন- কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই হন দার্শনিক। এই বচন দুটি বচনকে প্রকাশ করে। যেমন-
(ক) কোনো কোনো জ্ঞানী ব্যক্তি হন দার্শনিক।
(খ) কোনো অ-জ্ঞানী ব্যক্তিরা নয় দার্শনিক।
প্রশ্ন ৩০। কী জাতীয় শব্দ থাকলে আমার সেই বচনকে ব্যতীতিক বচন বলব? উদাহরণের সাহায্যে বোঝাও।
উত্তরঃ ‘ব্যতীত’, ‘ছাড়া’ জাতীয় শব্দ থাকলে আমরা সেই বচনকে ব্যতীতিক বচন বলব। যেমন— পারদ ছাড়া সকল ধাতুই কঠিন।
এই বচনে দুটি বচনের সংযোগ ঘটেছে।
(ক) সকল ধাতুই কঠিন।
(খ) পারদ কঠিন নয়।
রচনাভিত্তিক প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। বচন বলতে কী বোঝো? বচনের গঠন সম্পর্কে উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ দুটি পদের মধ্যে কোনো সম্বন্ধের স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতিকে বচন বলে। বচনে উদ্দেশ্য এবং বিধেয় দুটি পদ থাকে এবং এই দুটি পদের মধ্যে সম্বন্ধসূচক শব্দও থাকে। কাজেই প্রতিটি বচনে তিনটি অংশ থাকে; যথা—
(ক) উদ্দেশ্য পদ।
(খ) বিধেয় পদ। ও
(গ) সংযোজক।
বচন মাত্রই সত্য কিংবা মিথ্যা হয়।
তর্কবাক্য বা তর্কীয় বচনে যে পদ সম্বন্ধে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য’ বলে; আর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যা বলা হয়, তাকে ‘বিধেয়’ বলে। বচনের উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদের মধ্যে সম্বন্ধসূচক চিহ্ন বা শব্দটিকে ‘সংযোজক’ বলে। বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় দুটি পদ, কিন্তু সংযোজক কোনো পদ নয়। সংযোজক সব সময় ‘ভূ’ ধাতুর বর্তমানকালের রূপে থাকে এবং তা সদর্থক ও নঞর্থক দুই-ই হতে পারে।
উদাহরণ:
(ক) ‘মানুষ হয় মরণশীল’। এই বচনটিতে ‘মানুষ’ উদ্দেশ্য পদ। কেননা ‘মানুষ’ সম্পর্কে কিছু বলা হয়েছে। ‘মরণশীল’ বিধেয় পদ, কারণ ‘মরণশীল’ কথাটি ‘মানুষ’ সম্পর্কে বলা হয়েছে। ‘হয়’ ক্রিয়াপদটি সংযোজক, কারণ এই শব্দটি ‘মানুষ’ ও ‘মরণশীল’-এর মধ্যে সম্বন্ধ বোঝাচ্ছে।
(খ) ‘মানুষ নয় অমর’– এই বচনটিতে ‘মানুষ’ হল উদ্দেশ্য পদ, ‘অমর’ হল বিধেয় পদ এবং ‘নয়’ হল সংযোজক।
বচনের বিন্যাস: উদ্দেশ্য – সংযোজক— বিধেয়’ এই আকারে বচন গঠন করা হয়।
প্রথম উদাহরণ—
(ক) এ উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে স্বীকৃতি সম্বন্ধ। এবং
দ্বিতীয় উদাহরণ—
(খ) এ উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে অস্বীকৃতি সম্বন্ধ রয়েছে। অর্থাৎ, সদর্থক বচনে স্বীকৃতি সম্বন্ধ এবং নঞর্থক বচনে অস্বীকৃতি সম্বন্ধ থাকে এবং সংযোজক এই সম্বন্ধকে প্রকাশ করে।
প্রশ্ন ২। সংযোজকের প্রকৃতি সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তরঃ বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যকার সম্বন্ধসূচক শব্দ বা চিহ্নকে সংযোজক বলে। সংযোজকের প্রকৃতি নিম্নরূপ:
(ক) সংযোজক কোনো পদ নয়, শুধুমাত্র শব্দ।
(খ) পরম্পরাগত যুক্তিবিজ্ঞানে যে বচন ব্যবহার করা হয়, তাতে সংযোজকটিকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হয়।
(গ) সংযোজক সবসময় ‘হওয়া’ ক্রিয়া (To be verb)-র বর্তমানকালের রূপ হবে, অর্থাৎ ‘ভূ’ ধাতুর রূপ হতেই হবে।
(ঘ) সংযোজক সদর্থক, নঞর্থক দুই রকমেরই হয়। বচনে যদি বিধেয় পদ উদ্দেশ্য পদের সম্পর্কে স্বীকৃত হয়, তাহলে সংযোজক সদর্থক হয়। কিন্তু বিধেয় পদ উদ্দেশ্য পদের ক্ষেত্রে অস্বীকৃত হলে, সংযোজকটি নঞর্থক হয়।
(ঙ) সংযোজক সদর্থক হলে এবং বিধেয়ের সঙ্গে নঞর্থক চিহ্ন যুক্ত থাকলে বচনটি সদর্থক হয়।
(চ) সংযোজক নিম্নোক্ত বিভিন্ন মূর্তি ধারণ করতে পারে— ‘হয়’, ‘নয়’, ‘হলুম’, ‘হলুম না’, ‘হই’, ‘হই না’, ‘হলেন’, হলেন না’, ‘হন’, ‘হন না’, ‘হও’, ‘হও না’, ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩। সংযোজকের প্রকৃতি সম্বন্ধে তর্কবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন মতবাদগুলি উল্লেখ করো। সংযোজক কী সর্বদাই সদর্থক হবে?
উত্তরঃ সংযোজকের স্বরূপ বা প্রকৃতি ঠিক কীরকম হওয়া উচিত এ বিষয়ে কিছু মতভেদ আছে। মতভেদের কেন্দ্রে প্রধানত দুটি প্রশ্ন:
(ক) সংযোজক কি শুধুমাত্র ‘ভূ’ ধাতুর লট বিভক্তি, অর্থাৎ বর্তমানের কালের রূপ হবে?
(ক) প্রথম প্রশ্নের উত্তরে হ্যামিলটন্, ম্যানসেল, ফাওলার প্রমুখ তর্কবিজ্ঞানীরা বলেন যে, সংযোজক সবসময় ‘ভূ’ ধাতুর বর্তমানকালের রূপ হবে। কিন্তু জে. এস. মিল বলেন যে, সংযোজক অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ তিনটিকালেই হতে পারে।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, নিগমনাত্মক তর্কবিজ্ঞানে সময়ের বিষয়টি আলোচ্য বা বিবেচ্য নয়। সংযোজক সময়-বর্জিত-সম্বন্ধ প্রকাশ করে। বচনে বিধেয় পদে কাল বা সময়সূচক শব্দ থাকে। সংযোজকটি নিছক সম্বন্ধ নির্ণয়কারী সংকেত বলেই বরাবর এটি ‘ভূ’ ধাতুর ‘লট্’ বিভক্তিতে থাকা উচিত।
(খ) দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তরে হবস এবং অন্যান্য তর্কবিজ্ঞানীরা বলেন, সংযোজক সবসময়েই সদর্থক হবে। অর্থাৎ সংযোজক ‘হয়’ রূপে ব্যবহৃত হবে, ‘নয়’ রূপে নয়।
এই বক্তব্যটি সমর্থনযোগ্য নয়, কারণ বচনে বিধেয় পদ উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে স্বীকৃত বা অস্বীকৃত হয়। এই স্বীকৃত বা অস্বীকৃতি প্রত্যক্ষভাবে প্রকাশ পায় সংযোজকের মাধ্যমে। অতএব, সংযোজক সদর্থক ও নঞর্থক দুই রূপেই থাকতে পারে।
প্রশ্ন ৪। ব্যাকরণসম্মত বাক্য এবং যুক্তিবিজ্ঞানের বচনের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
অথবা,
‘প্রতিটি বচন বাক্য, কিন্তু প্রতিটি বাক্য বচন নয়। ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ যুক্তিবিজ্ঞানের বচন এবং ব্যাকরণের বাক্যের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। যেমন—
(ক) বচনের তিনটি অংশ থাকে—উদ্দেশ্য, সংযোজক এবং বিধেয়। কিন্তু বাক্যের দুটি অংশ—উদ্দেশ্য এবং বিধেয়।
(খ) বচনে গুণ ও পরিমাণ স্পষ্ট করে লিখতে হয়। কিন্তু বাক্যে তার প্রয়োজন হয় না।
(গ) বচন সবসময় বর্তমানকালে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু বাক্য অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ যে-কোনো কালেই ব্যবহৃত হতে পারে।
(ঘ) কেবল ঘোষক বাক্য বচন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ব্যাকরণে ঘোষক বাক্য ছাড়াও আদেশমূলক বাক্য, প্রশ্নবোধক বাক্য, বিস্ময়সূচক বাক্য, অনুরোধসূচক বাক্য, ইচ্ছামূলক বাক্যের ব্যবহার হয়।
(ঙ) বচন মাত্রেই সত্য কিংবা মিথ্যা হয়। কিন্তু বাক্যমাত্রই সত্য কিংবা মিথ্যা বলে গণ্য হয় না, শুধু ঘোষক বাক্যই সত্য কিংবা মিথ্যা হয়।
(চ) যুক্তিবিজ্ঞানের বচনের নির্দিষ্ট রূপ হল— ‘উদ্দেশ্য— সংযোজক— বিধেয়’ ব্যাকরণের অধিকাংশ বাক্যকে নিয়ে তর্কবিদ্যায় আলোচনা করার আগে বাক্যটিকে তর্কীয় বচনে রূপান্তরিত করতে হয়।
অতএব বচন এবং বাক্য সমার্থক নয়। প্রতিটি বচন বাক্য, কিন্তু প্রতিটি বাক্য বচন নয়। যদিও প্রত্যেক তর্কীয় বচন ব্যাকরণের ‘বাক্য’ হতে বাধ্য, তবুও ব্যাকরণের প্রত্যেক বাক্য ‘তর্কীয় বচন’ হতে বাধ্য নয়।
প্রশ্ন ৫। গুণ ও পরিমাণের মিশ্র নীতি অনুসারে বচনের শ্রেণিবিভাগ করো। উদাহরণসহ সেই শ্রেণিগুলিকে ব্যাখ্যা করো।
অথবা,
বচনের চতুর্বর্গীয় পরিকল্পনা বা বিভাজন ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ গুণ অনুসারে, নিরপেক্ষ বচনকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা—
(ক) সদর্থক বচন। এবং
(খ) নঞর্থক বচন।
আবার পরিমাণ অনুসারে, নিরপেক্ষ বচন দুই প্রকারের হয়। যথা—
(ক) সামান্য বা সার্বিক বচন। এবং
(খ) বিশেষ বচন।
পরম্পরাগত যুক্তিবিজ্ঞানী অ্যারিস্টটলের মতে, গুণ ও পরিমাণের যুগ্ম বা সংযুক্ত বা মিশ্র নীতি অনুসারে নিরপেক্ষ বচনে নিম্নোক্ত চারভাগে ভাগ করা যায়:
(ক) সামান্য সদর্থক বচন (universal affirmative)
(খ) সামান্য নঞর্থক বচন (universal negative)
(গ) বিশেষ সদর্থক বচন (particular affirmative)
(ঘ) বিশেষ নঞর্থক বচন (particular negative)
(ক) সামান্য সদর্থক বচন: যে বচনে বিধেয় পদটি সমগ্র উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কিছু স্বীকার করে, তাকে সামান্য সদর্থক বচন বলে। যেমন—’সকল ফুল হয় সুন্দর’।সামান্য সদর্থক বচনের প্রতীকাত্মক বা সাংকেতিক নাম হল ‘A’।
(খ) সামান্য নঞর্থক বচন: যে বচনে বিধেয় পদটি সমগ্র উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে কিছু অস্বীকার করে, সেই বচনকে সামান্য নঞর্থক বচন বলে। যেমন— ‘কোনো শিশু নয় বৃদ্ধ’। নঞর্থক বচনের প্রতীকাত্মক বা সাংকেতিক নাম হল ‘E’।
(গ) বিশেষ সদর্থক বচন: যে বচনে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদের কিছু অংশ সম্পর্কে স্বীকার করে, সেই বচনটিকে বিশেষ সদর্থক বচন বলা হয়। যেমন—’কোনো কোনো ফুল হয় লাল’।
বিশেষ সদর্থক বচনের প্রতীকাত্মক বা সাংকেতিক নাম হল – ‘I’।
(ঘ) বিশেষ নঞর্থক বচন: যে বচনে বিধেয় পদটি উদ্দেশ্য পদের কিছু অংশ সম্পর্কে অস্বীকার করে, সেই বচনটিকে বিশেষ নঞর্থক বচন বলে। যেমন— “কোনো কোনো ফুল নয় লাল’।
বিশেষ নঞর্থক বচনের প্রতীকাত্মক বা সাংকেতিক নাম হল—‘O’।
এই বচন চারটির উদ্দেশ্য পদের পরিবর্তে ‘S’ বর্ণপ্রতীক, বিধেয় পদের পরিবর্তে ‘P’ বর্ণপ্রতীক ব্যবহার করলে A, E, I, O বচনের আকার নিম্নরূপ হয়:
(A) সামান্য সদর্থক বচন– সকল S হয় P
(E) সামান্য নঞর্থক বচন— কোনো S নয় P
(I) বিশেষ সদর্থক বচন— কোনো কোনো S হয় P
(O) বিশেষ নঞর্থক বচন— কোনো কোনো S নয় P
চার ধরনের বচনের চারটি অংশ থাকে — পরিমাণ-চিহ্ন, উদ্দেশ্য, সংযোজক ও বিধেয় ৷
নিরপেক্ষ বচনের এই চার রকমের অর্থাৎ A, E, I, O বিভাগকে বচনের চতুর্বর্গ পরিকল্পনা বা বিভাজন বলে।
প্রশ্ন ৬। সাপেক্ষ বচন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ সাপেক্ষ বচন দুই প্রকার —
(ক) সকল্পক বা প্রাকল্পিক বচন। ও
(খ) বিকল্পক বা বৈকল্পিক বচন।
(ক) সকল্পক বা প্রাকল্পিক বচন: যে সাপেক্ষ বচনে শর্তটি ‘যদি … তাহলে …’ জাতীয় শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, তাকে সকল্পক বা প্রাকল্পিক বচন বলে। যথা—’যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে মাটি ভেজে’। সকল্পক বচনের দুটি অংশ—একটির নাম পূর্ববর্তী বা পূর্বগ এবং অপরটির নাম পরবর্তী বা অনুবর্তী বা অনুগ। সল্পক বচনে ‘যদি’ অংশটি শর্ত বোঝায় এবং ‘তাহলে’ অংশটি মূল বক্তব্য বোঝায়। প্রাকল্পিক বচনের যে অংশে শর্তটি বর্তমান, সেই অংশকে পূর্ববর্তী অংশ বা ‘পূর্বগ’ বলা হয় এবং যে অংশে মূল বক্তব্যটি বর্তমান সেই অংশকে অনুবর্তী বা ‘অনুগ’ বলা হয়।
সকল্পক বা প্রাকল্পিক বচনে পরবর্তী অংশের গুণ অনুসারে সমগ্র বচনটির গুণ ধরা হয়।
(খ) বিকল্পক বা বৈকল্পিক বচন: যে সাপেক্ষ বচনে শর্তটিকে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ না করে দুটি বিকল্প বচন ব্যবহার করা হয়, তাকে ‘বিকল্পক বা বৈকল্পিক’ বচন বলে। যথা—’হয় সে ভালো নয় সে ধূর্ত’। বিকল্পক বচন সবসময়ই সদর্থক হয়ে থাকে। বিকল্পক বচনের ‘হয়’ এবং ‘নয়’কে ‘বিকল্প’ বলে।
সংকল্পক বচনের পরিমাণ পূর্ববর্তী অংশের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। অর্থাৎ পূর্ববর্তী অংশে সামান্য বচন হলে সমগ্র বচনটি বিশেষ বচন হবে। কিন্তু বিকল্পক বচন সামান্য বা বিশেষ দু’ ধরনেরই হতে পারে।
ভাগ – ৩ সাধারণ বাক্যের তর্কীয় বচনে রূপান্ত
প্রথম খণ্ড
ব্যাকরণসম্মত বাক্যের তর্কীয় বচনে রূপান্তরের নিয়ম
১। যদি কোনো বাক্যে ‘সকল’, ‘প্রত্যেক’, সমস্ত’, ‘যেকোনো’, যে কেউ’, ‘সব’, ‘সর্বপ্রকার’, ‘সর্বদা’, ‘সর্বত্র’, ‘সম্পূর্ণরূপে’, ‘অপরিহার্যভাবে’ ইত্যাদি শব্দ থাকে এবং বাক্যটি সদর্থক হয়, তাহলে সেই বাক্যটিকে ‘A’ বচনে রূপান্তরিত করতে হবে।
উদাহরণ:
ব্যাকরণসম্মত বাক্য | তর্কীয় বচনে রূপান্তরিত রূপ |
(ক) সমস্ত ধার্মিক ব্যক্তিই সৎ। | (A) সকল ধার্মিক ব্যক্তি হন সৎ। |
(খ) সকল ছাত্র কলেজে এসেছিল। | (A) সকল ছাত্র হয় এমন ব্যক্তি যারা কলেজে এসেছিল। |
(গ) যে-কোনো শিশু খেলায় যোগ দিতে পারে। | (A) সকল শিশু হয় এমন যারা খেলায় যোগ দিতে পারে। |
২। যদি কোনো বাক্য ‘সকল’, ‘প্রত্যেক’, ‘সমস্ত’, ‘যে-কোনো’, ‘যে কেউ’, ‘সব’, ‘সর্বপ্রকার’, ‘সর্বদা’, ‘সর্বত্র’, ‘সম্পূর্ণরূপে’, ‘অপরিহার্যভাবে’ ইত্যাদি শব্দযুক্ত হয় এবং নঞর্থক হয়, তাহলে সেই বাক্যটি ‘O’ বচন রূপে বিবেচিত হবে।
ব্যাকরণসম্মত বাক্য | তর্কীয় বচনে রূপান্তরিত রূপ |
(ক) সকল দার্শনিক উন্মাদ নয়। | (O) কোনো কোনো দার্শনিক নয় উন্মাদ। |
(খ) প্রত্যেকটা চকচকে জিনিস সোনা নয়। | (O) কোনো কোনো চকচকে জিনিস নয় সোনা। |
(গ) সব দুর্ঘটনা মারাত্মক হয় না। | (O) কোনো কোনো দুর্ঘটনা নয় মারাত্মক। |
৩। ‘প্রায় সব’, ‘প্রায় সকল’, ‘কয়েকটি’, ‘কিছু কিছু’, ‘কতিপয়’, ‘কোনো কোনো’, ‘অনেক’, ‘অনেকেই’, ‘বেশিরভাগ’, ‘কয়েকজন’, ‘কয়েকটি’, ‘বহু’, ‘একটা ছাড়া’ সব’, ‘মুষ্টিমেয়’, ‘সাধারণত’, ‘প্রায়ই’, ‘প্রায় সকলেই’, ‘সম্ভবত’, ‘প্রায় সব সময়’, ‘কখনো-কখনো’, ‘অনেক সময়’, ‘সংখ্যা’, ‘ভগ্নাংশ’, ‘শতকরা’ ইত্যাদি শব্দযুক্ত সব বাক্যই ‘বিশেষ বাক্য।’ যদি সেই বাক্যগুলি সদর্থক হয়; তাহলে তাদের ‘বিশেষ সদর্থক বচন’ অর্থাৎ ‘I’ বচনে রূপান্তরিত করতে হয়। অন্যদিকে, যদি বাক্যগুলি নঞর্থক নয়, তাহলে তাদের ‘বিশেষ নঞর্থক বচন’ অর্থাৎ ‘O’ বচনে পরিবর্তিত করতে হবে।
উদাহরণ:
ব্যাকরণসম্মত বাক্য | তর্কীয় বচনে রূপান্তরিত রূপ |
(ক) বেশিরভাগ ছাত্রই তর্কবিজ্ঞান বুঝতে পারে। | (I) কোনো কোনো ছাত্র হয় এমন ব্যক্তি যারা তর্কবিজ্ঞান বুঝতে পারে। |
(খ) প্রায় সকল মানুষ ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলেন। | (I) কোনো কোনো মানুষ হন এমন ব্যক্তি যারা ধর্মঘটে সামিল হয়েছিলেন। |
(গ) বহু লোকই সত্যবাদী নয়। | (O) কোনো কোনো লোক নয় সত্যবাদী। |
(ঘ) দশজন সদস্য ভোট দিতে যাননি। | (O) কোনো কোনো সদস্য নয় এমন ব্যক্তি যারা ভোট দিতে গিয়েছিলেন। |
৪। যদি কোনো সদর্থক বাক্যে ‘ক্বচিৎ’, ‘কদাচিৎ’, ‘কালেভদ্রে’, ‘প্রায় নাই’, ‘খুব কম’ ইত্যাদি শব্দ থাকে, তাহলে সেই বাক্যকে ‘O’ বচনে রূপান্তরিত করতে হয়। অন্যদিকে, যদি কোনো নঞর্থক বাক্যে ‘ক্বচিৎ’, ‘কদাচিৎ’, ‘প্রায় নাই’, ‘খুব কম’ ইত্যাদি শব্দ উপস্থিত থাকে, তাহলে তাকে ‘I’ বচনে রূপান্তরিত করতে হয়। কারণ, উপরোক্ত শব্দসমূহ নেতিবাচক (নঞর্থক) অর্থ বহন করে।
উদাহরণ:
ব্যাকরণসম্মত বাক্য | তর্কীয় বচনে রূপান্তরিত রূপ |
(ক) ধার্মিক ব্যক্তিরা কদাচিৎ সুখী হয়। | (O) কোনো কোনো ধার্মিক ব্যক্তিরা নয় সুখী। |
(খ) খুব কম ছাত্রই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। | (O) কোনো কোনো ছাত্র নয় এমন যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। |
(গ) বৈজ্ঞানিকরা ক্বচিৎ কবি হয় না। | (I) কোনো কোনো বৈজ্ঞানিকরা হন কবি। |
৫। ব্যতিরেকী বচন: ‘মাত্র’, ‘কেবলমাত্র’, ‘কেবল’, ‘একমাত্র’, ‘শুধুমাত্র’ ইত্যাদি শব্দযুক্ত বাক্যগুলিকে ব্যতিরেকী (exclusive) তর্কবাক্য বলে। উপরোক্ত শব্দযুক্ত বাক্যগুলিকে ‘A’ অথবা ‘E’ অথবা ‘I’ বচনে রূপান্তরিত করা যায়। ‘A’ বচনে রূপান্তরিত করতে হলে এইসব বাক্যের উদ্দেশ্যপদ তর্কীয় বচনে বিধেয় হবে এবং বিধেয় পদ তর্কীয় বচনে উদ্দেশ্য পদ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
উদাহরণ:
(ক) কেবল ধার্মিকরাই বিনয়ী। (ব্যাকরণসম্মত বাক্য) (A) সকল বিনয়ীরা হন ধার্মিক। (তর্কীয় বচন) আবার ‘E’ বচনে রূপান্তরিত করতে হলে প্রদত্ত বাক্যের উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধপদ তর্কীয় বচনে উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হবে, কিন্তু পদটি তর্কীয় বচনে একই থাকবে।
উদাহরণ:
ব্যাকরণসম্মত বাক্য: কেবল ধার্মিকরাই বিনয়ী।
তর্কীয় বচন: (E) কোনো অ-ধার্মিকরা নয় বিনয়ী।
কিন্তু ব্যতিরেকী বাক্যকে ‘I’ বচনে রূপান্তরিত করতে হলে প্রদত্ত বাক্যেরও তর্কীয় বচনের উদ্দেশ্য এবং বিধেয় পদ একই হবে।
উদাহরণ: ব্যাকরণসম্মত বাক্য — কেবল ধার্মিকরাই বিনয়ী।
তর্কীয় বচন: (I) কোনো কোনো ধার্মিকরা হয় বিনয়ী। সাধারণত, ব্যতিরেকী বাক্যকে ‘A’ বচনে রূপান্তরিত করা হয়ে থাকে।
৬। যদি কোনো বাক্যে শুধুমাত্র ‘না’, ‘নয়’, ‘কখনওনা’, ‘কিছুই নয়’, ‘কোথাও নহে’, ‘কোনোভাবেই নয়’ ইত্যাদি শব্দ থাকে, তাহলে সেই বাক্যকে ‘E’ বচনে রূপান্তরিত করা হয়।
উদাহরণ:
(ক) ব্যাকরণসম্মত বাক্য — ত্রিভুজ কখনও বর্গক্ষেত্র হয় না।
তর্কীয় বচন — (E) কোনো ত্রিভুজ নয় বর্গক্ষেত্র।
(খ) ব্যাকরণসম্মত বাক্য — কেহই সুখী নয়।
তর্কীয় বচন — কোনো ব্যক্তি নয় সুখী। (E)
৭। বিশিষ্ট বচনে (Singular proposition): এই বচনে যদি উদ্দেশ্য পদটি নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝায়, তাহলে তাকে সামান্য বচন বলে ধরতে হবে। অপরপক্ষে, উদ্দেশ্য পদটি যদি অ-নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে বোঝায়, তখন তাকে বিশেষ বচন হিসেবে ধরতে হবে। সেসব ক্ষেত্রে সদর্থক বা নঞর্থক চিহ্ন অনুযায়ী সেইসব বচন সদর্থক বা নঞর্থক হবে।
উদাহরণ:
(ক) প্রদত্ত বাক্য: শেক্সপিয়র একজন বিখ্যাত নাট্যকার।
তর্কীয় বচন: (A) শেক্সপিয়র হন একজন বিখ্যাত নাট্যকার।
(খ) প্রদত্ত বাক্য: শংকরদেব রাজনীতিক ছিলেন না।
তর্কীয় বচন: (E) শংকরদেব নন এমন ব্যক্তি যিনি রাজনীতিক ছিলেন।
(গ) প্রদত্ত বাক্য: কোনো একটি ধাতু কঠিন পদার্থ নয়।
তর্কীয় বচন: (O) কোনো কোনো ধাতু নয় কঠিন পদার্থ।
৮। যদি কোনো বাক্যের উদ্দেশ্য পদটি নামবাচক বিশেষ্য, সর্বনাম ও গুণবাচক পদ হয়, তাহলে সেই বাক্যকে সামান্য পদ বলে ধরতে হবে। প্রদত্ত বাক্যটি সদর্থক না নঞর্থক সেই অনুযায়ী বচনটি সদর্থক বা নঞর্থক হবে।
উদাহরণ:
(ক) প্রদত্ত বাক্য: গৌহাটি একটি বড় নগর।
তর্কীয় বচন: (A) গৌহাটি হয় একটি বড় নগর।
(খ) প্রদত্ত বাক্য: সে সুখী নয়।
তর্কীয় বচন: (E) সে নয় সুখী।
(গ) প্রদত্ত বাক্য: দরিদ্রতা একটি অভিশাপ।
তর্কীয় বচন: (A) দরিদ্রতা হয় একটি অভিশাপ।
৯। ব্যতীতিক বচন: ‘ব্যতীত’, ‘ছাড়া’, ‘বিনা’ ইত্যাদি শব্দযুক্ত বাক্যে যাকে বাদ দেওয়া হয়, তা যদি নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা বস্তু হয়, তাহলে তাকে সামান্য বচনে আর অনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা বস্তু হলে, তাকে বিশেষ বচনে রূপান্তরিত করতে হয়।
উদাহরণ:
(ক) প্রদত্ত বাক্য: পারদ ব্যতীত সকল ধাতুই কঠিন।
তর্কীয় বচন: (A) সকল ধাতু পারদ ছাড়া হয় কঠিন।
(খ) প্রদত্ত বাক্য: একটি ছাড়া সকল ধাতুই কঠিন পদার্থ।
তর্কীয় বচন: (I) কোনো কোনো ধাতু হয় কঠিন পদার্থ ।
১০। এমন কতকগুলি ‘প্রশ্নবোধক’, ‘আদেশমূলক’ বা ‘ইচ্ছামূলক’ বাক্য আছে, যার উত্তর তাদের ভিতরই থাকে।
উদাহরণ:
(ক) প্রদত্ত বাক্য: এমন কোনো মা আছেন কি যিনি তাঁর সন্তানকে ভালোবাসেন না?
তর্কীয় বচন: (A) সকল মা হন এমন ব্যক্তি যিনি তাঁর সন্তানকে ভালোবাসেন।
(খ) প্রদত্ত বাক্য: বাঃ! কী সুন্দর বাগান!
তর্কীয় বচন : (A) বাগানটি হয় সুন্দর।
১১। কোনো বাক্যে যদি পরিমাণ চিহ্ন না থাকে, কোনো স্থান বা কালের উল্লেখ না থাকে, তাহলে তাদের অর্থ বুঝে তর্কীয় বচনে রূপান্তরিত করতে হয়।
উদাহরণ:
(ক) প্রদত্ত বাক্য: মানুষ নয় সর্বজ্ঞ।
তর্কীয় বচন: (E) কোনো মানুষ নয় সর্বজ্ঞ।
(খ) প্রদত্ত বাক্য: ফলগুলো পাকা নয়।
তর্কীয় বচন: (O) কোনো কোনো ফল নয় পাকা।
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.