Class 11 Logic and Philosophy Chapter 3 অনুমান

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Logic and Philosophy Chapter 3 অনুমান, is a textbook prescribed by the Assam AHSEC Board Class XI Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Logic and Philosophy Chapter 3 অনুমান The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Logic and Philosophy Chapter 3 অনুমান Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Logic and Philosophy Chapter 3 অনুমান

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Medium Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Notes. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam Board Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Suggestion will be able to solve all the doubts of the students. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Solution, Class 11 Logic and Philosophy in Bengali textbooks Solution Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the Assam AHSEC Board Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Question Answer PDF. Class 11 Logic and Philosophy in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

ভাগ – ২ নিরপেক্ষ ন্যায়

প্রথম খণ্ড

অতি- সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ন্যায় অনুমানের সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য পদকে কী বলে?

উত্তরঃ পক্ষ পদ বলে।

প্রশ্ন ২। যে,পদ ন্যায় অনুমানে দুটি আশ্রয়বাক্যে উপস্থিত থাকে, কিন্তু সিদ্ধান্তে অনুপস্থিত থাকে, তাকে কী বলা হয়?

উত্তরঃ হেতুপদ।

প্রশ্ন ৩। ‘CESARE’ কি দ্বিতীয় সংস্থানের বৈধ মূর্তি?

উত্তরঃ হ্যাঁ।

প্রশ্ন ৪। প্রথম সংস্থানে সাধ্য আশ্রয়বাক্যটি বিশেষ বচন হতে হবে। —এটা কি সত্যি?

উত্তরঃ না।

প্রশ্ন ৫। ন্যায়ে বৈধ মূর্তি কয়টি?

উত্তরঃ উনিশটি।

প্রশ্ন ৬। ন্যায় অনুমানে কয়টি বচন থাকে?

উত্তরঃ তিনটি।

প্রশ্ন ৭। ন্যায় অনুমানে কয়টি আশ্রয়বাক্য বা হেতুবাক্য থাকে?

উত্তরঃ দুটি।

প্রশ্ন ৮। ন্যায় অনুমানে দুটি সম্বন্ধহীন পদের মধ্যে কে সম্পর্ক স্থাপন করে?

উত্তরঃ হেতুপদ।

প্রশ্ন ৯। ‘দুজন অপরিচিত ব্যক্তির মধ্যে মধ্যস্থ তৃতীয় ব্যক্তির ভূমিকার সঙ্গে হেতু পদের ভূমিকার তুলনা করা যায়।’—উক্তিটি কি সত্য?

উত্তরঃ হ্যাঁ।

প্রশ্ন ১০। কোন্ তর্কবিজ্ঞানী নকশা বা ছকের সহায়তায় চারপ্রকার সংস্থানকে ব্যক্ত করেছেন?

উত্তরঃ তর্কবিদ কারভেথ রীড।

প্রশ্ন ১১। সাধ্যপদের সাংকেতিক নাম কী?

উত্তরঃ ‘P’

প্রশ্ন ১২। পক্ষপদের সাংকেতিক নাম কী?

উত্তরঃ ‘S’

প্রশ্ন ১৩। হেতুপদ বা মধ্যপদের সাংকেতিক নাম কী?

উত্তরঃ ‘M’

প্রশ্ন ১৪। ন্যায়ের সংস্থান কীভাবে নির্ধারণ করা হয়? 

উত্তরঃ হেতুপদের অবস্থান দেখে।

প্রশ্ন ১৫। FERIO কোন্ সংস্থানের বৈধ মূর্তি?

উত্তরঃ প্রথম সংস্থানের।

প্রশ্ন ১৬। একটি ন্যায় অনুমানের দুটি আধার বচনে থাকা কিন্তু সিদ্ধান্তে না থাক পদটির নাম কী?

উত্তরঃ হেতুপদ।

প্রশ্ন ১৭। লুপ্তাবয়ব ন্যায়ে কয়টি পর্যায় (Order) হয়?

উত্তরঃ চারটি।

প্রশ্ন ১৮। ন্যায়ের নিয়ম মতে, একটি যুক্তিতে কয়টি পদ থাকবে?

উত্তরঃ তিনটি।

প্রশ্ন ১৯। ন্যায়ের বৈধতা বিচার করতে হলে প্রথমেই কী করতে হয়?

উত্তরঃ প্রথমেই যুক্তিটিকে নিয়মসম্মতভাবে বিন্যস্ত করতে হয়। 

প্রশ্ন ২০। যথার্থ তর্কবাক্য হিসেবে কোন্ চিহ্নের ব্যবহার করতে হয়?

উত্তরঃ ∴

প্রশ্ন ২১। অমিশ্র প্রাকল্পিক ন্যায় কাকে বলে? 

উত্তরঃ যে ন্যায়ে তিনটি বাক্যই প্রাকল্পিক, তাকে অমিশ্র প্রাকল্পিক ন্যায় বলে।

প্রশ্ন ২২। অমিশ্র বৈকল্পিক ন্যায় কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ন্যায়ে তিনটি বাক্যই বৈকল্পিক, তাকে অমিশ্র বৈকল্পিক ন্যায় বলে।

প্রশ্ন ২৩। প্রাকল্পিক নিরপেক্ষ ন্যায় কী?

উত্তরঃ যে ন্যায়ে সাধ্য আশ্রয়বাক্য হল ‘প্রাকল্পিক’, কিন্তু পক্ষ আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ত ‘নিরপেক্ষ বচন’ তাকে ‘প্রাকল্পিক-নিরপেক্ষ’ ন্যায় বলে।

প্রশ্ন ২৪। বৈকল্পিক-নিরপেক্ষ ন্যায় কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ন্যায়ে সাধ্য আশ্রয়বাক্য ‘বিকল্পক’ কিন্তু পক্ষ আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্ত ‘নিরপেক্ষ বচন’, তাকে ‘বৈকল্পিক নিরপেক্ষ’ ন্যায় বলা হয়।

প্রশ্ন ২৫। সাধ্যপদ কাকে বলে?

উত্তরঃ ন্যায় অনুমানের সিদ্ধান্তের বিধেয়পদকে সাধ্যপদ বলে।

প্রশ্ন ২৬। পক্ষপদ কাকে বলে?

উত্তরঃ ন্যায় অনুমানের সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্যপদকে পক্ষপদ বলে।

প্রশ্ন ২৭। হেতুপদ কাকে বলে?

উত্তরঃ ন্যায় অনুমানে যে পদটি দুটি আশ্রয়বাক্যেই উপস্থিত থাকে, কিন্তু সিদ্ধান্তে অনুপস্থিত থাকে, তাকে হেতুপদ বা মধ্যপদ বলে। 

প্রশ্ন ২৮। সাধ্য আশ্রয়বাক্য বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ ন্যায় অনুমানে সাধ্যপদটি যে আশ্রয়বাক্যে থাকে, তাকে সাধ্য আশ্রয়বাক্য বা প্রধান যুক্তিবাক্য বলে।

প্রশ্ন ২৯। পক্ষ আশ্রয়বাক্য বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ ন্যায় অনুমানে পক্ষপদটি যে আশ্রয়বাক্যে উপস্থিত থাকে, সেই আশ্রয়বাক্যকে পক্ষ আশ্রয়বাক্য বা অপ্রধান আশ্রয়বাক্য বলে।

প্রশ্ন ৩০। ন্যায়ের সিদ্ধান্ত কী?

উত্তরঃ ন্যায়ের সিদ্ধান্ত হল সেই বচন, যাতে সাধ্যপদ ও পক্ষপদ উপস্থিত থাকে, কিন্তু হেতুপদ অনুপস্থিত থাকে।

সঠিক উত্তর নির্বাচন করো:

প্রশ্ন ১। একটি অমিশ্র নিরপেক্ষ ন্যায়ে একটি আধার বাক্য/দুটি আধার বাক্য থাকে। 

উত্তরঃ দুটি আধার বাক্য থাকে।

প্রশ্ন ২। নিরপেক্ষ ন্যায়ে হেতুপদ/পক্ষপদ / সাধ্যপদ অন্তত একবার ব্যাপ্ত হতে হবে।

উত্তরঃ হেতুপদ।

প্রশ্ন ৩। ন্যায় অনুমান নিগমাত্মক/আগমনাত্মক অনুমান।

উত্তরঃ নিগমনাত্মক অনুমান।

প্রশ্ন ৪। নিগমনাত্মক বা অবরোহ অনুমান শুধুমাত্র আকারগত/ শুধুমাত্র বস্তুগত/আকারগত ও বস্তুগত উভয় সত্যতাই বিচার করে।

উত্তরঃ শুধুমাত্র আকারগত সত্যতাই বিচার করে।

প্রশ্ন ৫। প্রথম সংস্থানে তিনটি/চারটি/পাঁচটি/ছয়টি বৈধ মূর্তি পাওয়া যায়।

উত্তরঃ চারটি।

প্রশ্ন ৬। BAROCO একটি বৈধ ন্যায়/অপরোক্ষ ন্যায়/ব্যাপ্য পদ। 

উত্তরঃ বৈধ ন্যায়।

প্রশ্ন ৭। দ্বিতীয় সংস্থানে দুইটি/তিনটি/চারটি বৈধ মূর্তি আছে। 

উত্তরঃ চারটি।

প্রশ্ন ৮। তৃতীয় সংস্থানে চারটি/পাঁচটি/ছয়টি বৈধ মূর্তি আছে। 

উত্তরঃ ছয়টি।

প্রশ্ন ৯। চতুর্থ সংস্থানে চারটি/পাঁচটি/ছয়টি বৈধ মূর্তি আছে।

উত্তরঃ পাঁচটি।

প্রশ্ন ১০। দ্বিতীয় সংস্থানে হেতুপদের স্থান উদ্দেশ্য/বিধেয়।

উত্তরঃ বিধেয়।

প্রশ্ন ১১। প্রথম সংস্থানের বৈধ মূর্তিসমূহের পক্ষ বাক্যটি সার্বিক/সদর্থক/বিশেষ হয়। 

উত্তরঃ সদর্থক হয়।

প্রশ্ন ১২। দ্বিতীয় সংস্থানে সিদ্ধান্ত সদর্থক/নঞর্থক বচন।

উত্তরঃ নঞর্থক।

প্রশ্ন ১৩। একটি ন্যায়ে মাত্র দুটি /তিনটি/চারটি পদ থাকে। 

উত্তরঃ তিনটি।

প্রশ্ন ১৪। সাধ্য/পক্ষ/হেতুর অবস্থিতির ওপরেই ন্যায়ের সংস্থান নির্ভর করে। 

উত্তরঃ হেতুর অবস্থিতির ওপরেই ন্যায়ের সংস্থান নির্ভর করে।

প্রশ্ন ১৫। নিরপেক্ষ ন্যায়ে দুটি বিশেষ বচন/সামান্য বচন থেকে সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না।

উত্তরঃ দুটি বিশেষ বচন।

প্রশ্ন ১৬। ন্যায় অনুমানের সিদ্ধান্তের বিধেয়পদকে সাধ্যপদ/ পক্ষপদ/হেতুপদ বলে।

উত্তরঃ সাধ্যপদ।

প্রশ্ন ১৭। প্রথম সংস্থানের বৈধমূর্তিগুলোর সাধ্য বাক্যটি সার্বিক/ সদর্থক/নঞর্থক হয়।

উত্তরঃ সার্বিক বা সামান্য বচন। 

প্রশ্ন ১৮। ন্যায়ের তৃতীয় সংস্থানে হেতুপদ দুটি  আশ্রয়বাক্যেই উদ্দেশ্য/বিধেয় হয়।

উত্তরঃ উদ্দেশ্য হয়।

প্রশ্ন ১৯। ‘BOCARDO’ দ্বিতীয়/তৃতীয়/চতুর্থ সংস্থানের বৈধ মূর্তি। 

উত্তরঃ তৃতীয় সংস্থানের বৈধ মূর্তি।

প্রশ্ন ২০। মিশ্র ন্যায়ে একটি/দুটি /তিনটি বচনই একই আকারের হয় না ।

উত্তরঃ তিনটি।

শূন্যস্থান পূর্ণ করো: 

১। একটি ______ গঠন করতে দুটি আশ্রয়বাক্যের প্রয়োজন হয়।

উত্তরঃ ন্যায়। 

২। ন্যায়ে বিশেষ বচন সিদ্ধান্ত হলে হেতু বচনের একটিকে ______ হতে হবে।

উত্তরঃ বিশেষ।

৩। তৃতীয় সংস্থানে হেতুপদ দুটি আশ্রয়বাক্যেই ______ হয়।

উত্তরঃ উদ্দেশ্য। 

৪। DATISI হচ্ছে ______ সংস্থানের বৈধ মূর্তি।

উত্তরঃ তৃতীয়।

৫। সাধ্য বচন বিশেষ আর পক্ষ বচন ______ হলে কোনো বৈধ সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় না।

উত্তরঃ নঞর্থক।

৬। ন্যায়ের চতুর্থ সংস্থানে হেতুপদ সাধ্য বচনে ______ এবং পক্ষ বচনে ______ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। 

উত্তরঃ বিধেয়, উদ্দেশ্য।

৭। ন্যায়ের তৃতীয় সংস্থানে সিদ্ধান্ত ______ বচন হতে হবে।

উত্তরঃ বিশেষ।

৮। দ্বিতীয় সংস্থানে কোনো একটি আশ্রয়বাক্য ______ হতে হবে।

উত্তরঃ নঞর্থক।

প্রশ্ন ৯। ন্যায়ের অবয়ব বা বচনগুলো ______ বা ______ বচন।

উত্তরঃ শর্তহীন; নিরপেক্ষ।

প্রশ্ন ১০। ন্যায়ের সিদ্ধান্ত দুটি ______ বাক্যের মিলিত দল।

উত্তরঃ আশ্রয়। 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। নিরপেক্ষ ন্যায় বা ন্যায় বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ যে অবরোহমূলক মাধ্যম অনুমানে পরস্পর সংযুক্ত দুটি নিরপেক্ষ আশ্রয়বাক্য থেকে একটি নিরপেক্ষ বচন সিদ্ধান্ত হিসেবে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়, তাকে ‘নিরপেক্ষ ন্যায়’ বা ‘ন্যায়’ বলে।

তর্কবিজ্ঞানী ডঃ কিন্‌সে (Keynes) বলেন, যে অনুমানে তিনটি শর্তহীন বচন এবং তিনটি পদ থাকে, তাকে ‘ন্যায়’ বলে। কিন্তু ‘ন্যায়’ বলতে সাধারণত আমরা প্রথম সংজ্ঞাটিকেই গ্রহণ করি।

প্রশ্ন ২। নিরপেক্ষ ন্যায়-এর একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তরঃ সকল মানুষ হয় মরণশীল।

সকল রাজা হয় মানুষ।

∴ সকল রাজা হয় মরণশীল।

প্রশ্ন ৩। নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ ন্যায়ের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:

(ক) ন্যায়ে তিনটি মাত্র অবয়ব বা বচন থাকে। এই তিনটি বচনের মধ্যে প্রথম দুটি আশ্রয়বাক্য এবং তৃতীয়টি সিদ্ধান্ত। ন্যায়ের অবয়বগুলো শর্তহীন ও নিরপেক্ষ বচন হয়ে থাকে।

(খ) ন্যায় যেহেতু অবরোহমূলক অমাধ্যম অনুমান, সেইহেতু, বৈধ ন্যায়ের সিদ্ধান্ত আশ্রয়বাক্য থেকে বেশি ব্যাপক হতে পারে না।

(গ) ন্যায়ে তিনটি মাত্র পদ থাকে, যদিও প্রতিটি পদ দু’বার করে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। 

(ঘ) ন্যায়ের সিদ্ধান্ত, দুটি আশ্রয়বাক্যের মিলিত ফল।

(ঙ) ন্যায় অনুমান আকারগত সত্যতার সঙ্গে জড়িত। বস্তুগত সত্যতার সঙ্গে নয়।

প্রশ্ন ৪। নিরপেক্ষ ন্যায়ের গঠন সম্বন্ধে আলোচনা করো। 

উত্তরঃ ন্যায়ের গঠনগুলি নিম্নরূপ:

(ক) ন্যায় অনুমানে তিনটি বচন থাকে—দুটি আশ্রয়বাক্য এবং একটি সিদ্ধান্ত। পরস্পর সংযুক্ত দুটি আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়। ন্যায়ের তিনটি বচনের প্রথম দুটি আশ্রয়বাক্য, তৃতীয়টি সিদ্ধান্ত।

(খ) ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকে। পদ তিনটির নাম সাধ্যপদ, পক্ষপদ এবং হেতুপদ। প্রতিটি পদ দু’বার করে থাকে। সিদ্ধান্তের বিধেয় পদটির নাম সাধ্যপদ, সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্যপদটির নাম পক্ষপদ এবং যে পদ দুটি আশ্রয়বাক্যে উপস্থিত থাকে, কিন্তু সিদ্ধান্তে অনুপস্থিত থাকে, তাকে হেতুপদ বলে।

(গ) পদের উপস্থিতি অনুসারে আশ্রয়বাক্যের নামকরণ করা হয়। সাধ্যপদটি যে আশ্রয়বাক্যে থাকে, তাকে সাধ্য আশ্রয়বাক্য বলে। পক্ষপদটি যে আশ্রয়বাক্যে থাকে, তাকে পক্ষ আশ্রয়বাক্য বলে। সিদ্ধান্ত হল সেই বচন, যাতে সাধ্যপদ ও পক্ষপদ উপস্থিত থাকে, কিন্তু হেতুপদ অনুপস্থিত থাকে। 

(ঘ) ন্যায়ের যুক্তিসম্মত গঠন হবে এরকম—প্রথমে থাকবে সাধ্য আশ্রয়বাক্য, তারপর পক্ষ আশ্রয়বাক্য এবং সর্বশেষে সিদ্ধান্ত।

প্রশ্ন ৫। উদাহরণ সহযোগে ন্যায়ের গঠন বিশ্লেষণ করো। 

উত্তরঃ নিম্নোক্ত উদাহরণের মাধ্যমে ন্যায়ের গঠন বিশ্লেষণ করা হল:

সকল মানুষ হয় মরণশীল। 

সকল দার্শনিক হয় মানুষ।

∴ সকল দার্শনিক হয় মরণশীল।

এখানে প্রথম বচনটি ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ হল ‘সাধ্য আশ্রয়বাক্য’, দ্বিতীয় বচনটি ‘সকল দার্শনিক হয় মানুষ’ হল ‘পক্ষ আশ্রয়বাক্য’ এবং তৃতীয় বচনটি ‘সকল দার্শনিক হয় মরণশীল’ হল ‘সিদ্ধান্ত।

এই ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ আছে—’মানুষ’, ‘দার্শনিক’ এবং ‘মরণশীল’। সিদ্ধান্তের বিধেয় ‘মরণশীল’ হল ‘সাধ্যপদ’, সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য ‘দার্শনিক’ হল ‘পক্ষপদ’ এবং দুইটি আশ্রয়বাক্যে উপস্থিত কিন্তু অনুপস্থিত ‘মানুষ’ পদটি ‘।

প্রথম বচনটিতে ন্যায়ের সাধ্যপদটি উপস্থিত থাকে। তাই এই বচনটিকে ‘সাধ্য আশ্রয়বাক্য বা সাধ্যযুক্তিবাক্য বা ‘প্রধান যুক্তিবাক্য’ বলে। দ্বিতীয় বচনটিতে পক্ষপদটি উপস্থিত থাকার দরুন সেই বচনটিকে ‘পক্ষ আশ্রয়বাক্য বা পক্ষ যুক্তিবাক্য বা অপ্রধানযুক্তিবাক্য’ বলা হয়। প্রধান ও অপ্রধান যুক্তিবাক্যের ভিত্তিতে তৃতীয় বচনটিকে পাওয়া যায় এবং তৃতীয় বচনটিতে সাধ্যপদ এবং পক্ষপদ উপস্থিত থাকে কিন্তু হেতুপদ অনুপস্থিত থাকে বলে এই বচনটিকে সিদ্ধান্ত বলা হয়।

সাধ্যপদ, পক্ষপদ এবং হেতুপদকে যথাক্রমে ‘P’, ‘S’ এবং ‘M’ এই তিনটি বর্ণের দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এই তিনটি বর্ণ প্রতীক বা সংকেতের কাজ করে।

এখানে ন্যায়ের যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত রূপ বা আকারটি যথাযথ। প্রথমে সাধ্য আশ্রয়বাক্য, তারপর পক্ষ আশ্রয়বাক্য এবং সর্বশেষে সিদ্ধান্ত।

প্রশ্ন ৬। ন্যায় অনুমানে হেতুপদের ভূমিকা কী?

উত্তরঃ ন্যায় অনুমানের উদ্দেশ্য যুক্তিসম্মতভাবে সিদ্ধান্তের প্রতিষ্ঠা। সিদ্ধান্তে পক্ষপদের সঙ্গে সাধ্যপদের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। এজন্য সিদ্ধান্তে পক্ষপদ এবং সাধ্যপদ থাকে। 

প্রকৃতপক্ষে ‘সাধ্য’ ও ‘পক্ষ’ পদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ বা পরিচয় থাকে না, হেতুপদ মধ্যস্থ হয়ে এই দুটি অপরিচিত পদের মধ্যে সম্বন্ধ স্থাপন করে। পক্ষপদের সঙ্গে সাধ্যপদের সম্বন্ধ নির্ণয় করা সম্ভব হয় হেতুপদের মাধ্যমে। ‘হেতুপদ’ সেই পদ যা দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে থাকে, কিন্তু সিদ্ধান্তে থাকে না। হেতুপদের উপস্থিতির জন্যই দুটি আশ্রয়বাক্য পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। প্রথম আশ্রয়বাক্যটিতে সাধ্যপদের সঙ্গে হেতুপদের সম্পর্ক থাকে। দ্বিতীয় আশ্রয়বাক্যে পক্ষপদের সঙ্গে হেতুপদের সম্পর্ক থাকে। এই সম্পর্কের ফলেই হেতুপদের মাধ্যমে সাধ্যপদ ও পক্ষপদের মধ্যে সিদ্ধান্তে সম্পর্ক-স্থাপন করা সম্ভব হয়। পরস্পর সংযুক্ত নয়, এমন দুটো আশ্রয়বাক্য থেকে কখনও সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হতে পারে না। কাজেই, ন্যায়ে হেতুপদের গুরুত্ব অপরিসীম। 

প্রশ্ন ৭। ন্যায়ের শ্রেণিবিভাগ সম্বন্ধে আলোচনা করো।

অথবা,

ন্যায়ের প্রকারভেদ সম্বন্ধে আলোচনা করো।

উত্তরঃ নিম্নোক্ত তালিকা থেকে ‘ন্যায়’-এর প্রকারভেদ বোঝা যাবে:

প্রথমত, ন্যায়কে দু’ভাগে ভাগ করা হয়, সেগুলো হল— ‘অমিশ্র’ এবং ‘মিশ্র’। 

অমিশ্র ন্যায়—এই জাতীয় ন্যায়ে তিনটি বচনের আকার একই হয়। যে ন্যায়ের তিনটি বাক্যই এক জাতীয়, তাকে ‘অমিশ্র ন্যায়’ বলে। যেমন—তিনটি বচনই শর্তহীন বা নিরপেক্ষ বচন হতে পারে। আর তিনটি বচনই শর্তযুক্ত বা সাপেক্ষ বচন হতে পারে। সুতরাং অমিশ্র ন্যায় দু’ প্রকারের হয়— 

(ক) অমিশ্র নিরপেক্ষ ন্যায়। 

(খ) অমিশ্র সাপেক্ষ ন্যায়।

অমিশ্র সাপেক্ষ ন্যায় দু’ প্রকারের হয়। যেমন—(অ) প্রাকল্পিক ন্যায়, (আ) বৈকল্পিক ন্যায়। 

মিশ্র ন্যায়: মিশ্র ন্যায়ে তিনটি বচনই একই আকারের হয় না। কোনো কোনো বচন নিরপেক্ষ বচন, আর কোনো কোনো বচন সাপেক্ষ বচন হয়। অর্থাৎ, যে ন্যায়ে বিভিন্ন জাতীয় বাক্যের মিশ্রণ থাকে, তাকে মিশ্র ন্যায় বলে। 

মিশ্র ন্যায় তিন প্রকারের হয়। যথা—

(ক) প্রাকল্পিক-নিরপেক্ষ। 

(খ) বৈকল্পিক-নিরপেক্ষ। 

(গ) দ্বিকল্প ন্যায়। 

প্রশ্ন ৮। দ্বিকল্পক ন্যায় কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ন্যায় অনুমানে সাধ্য আশ্রয়বাক্য দুটি প্রকল্পক বচন ‘এবং’ দ্বারা যুক্ত হয়, পক্ষ আশ্রয়বাক্যটি বিকল্পক বচন হয় এবং সিদ্ধান্ত প্রকল্পক অথবা বিকল্পক বচন হয়, তাকে দ্বিকল্পক বচন বলে।

প্রশ্ন ৯। ‘ন্যায়ের বৈধতার সাধারণ নিয়মাবলি’ বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ পরম্পরাগত যুক্তিবিজ্ঞানীরা ন্যায়ের বৈধতার দশটি নিয়ম বা বিধির কথা বলেছেন। এই নিয়মগুলো যে-কোনো প্রকারের ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম। এজন্য এগুলোকে ন্যায়ের বৈধতার সাধারণ নিয়মাবলি বলা হয়। 

প্রশ্ন ১০। ন্যায়ের সংস্থান বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ নিরপেক্ষ ন্যায়ের যুক্তিবাক্য (আশ্রয়বাক্য) দুটিতে হেতুপদের (মধ্যপদ) অবস্থান অনুযায়ী ন্যায়ের যে আকার হয়, তাকে ন্যায়ের সংস্থান বলে।

ন্যায়ের দুটি আশ্রয়বাক্যেই হেতুপদ উপস্থিত থাকে। প্রতিটি আশ্রয়বাক্যে হেতুপদ উদ্দেশ্য হতে পারে কিংবা বিধেয় হতে পারে। এভাবে আশ্রয়বাক্য দুটিতে হেতুপদের অবস্থান চার রকমের হতে পারে। ফলে ন্যায়ের সংস্থানও চার রকমের হয়।

প্রশ্ন ১১। ন্যায়ের সংস্থান কয়প্রকার ও কী কী? 

উত্তরঃ হেতুপদের অবস্থান অনুযায়ী আমরা চার রকমের সংস্থান পাই:

(ক) প্রথম সংস্থান। 

(খ) দ্বিতীয় সংস্থান। 

(গ) তৃতীয় সংস্থান। 

(ঘ) চতুর্থ সংস্থান।

প্রশ্ন ১২। প্রথম সংস্থান বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ প্রথম সংস্থানে হেতুপদ সাধ্য আশ্রয়বাক্যে উদ্দেশ্য ও পক্ষ আশ্রয়বাক্যে বিধেয়রূপে ব্যবহৃত হয়। যথা—

সকল মানুষ হয় মরণশীল। (A)

সকল রাজা হয় মানুষ। (A)

∴ সকল রাজা হয় মরণশীল। (A)

সকল M হয় P। (A)

সকল S হয় M। (A)

∴ সকল S হয় P। (A)

প্রশ্ন ১৩। দ্বিতীয় সংস্থান বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ দ্বিতীয় সংস্থানে হেতুপদ দুটি আশ্রয়বাক্যেই বিধেয়রূপে ব্যবহৃত হয়। যথা—

কোনো মানুষ নয় চতুষ্পদ প্রাণী। (E)

সকল গোরু হয় চতুষ্পদ প্রাণী। (A) 

∴ কোনো গোরু নয় মানুষ। (E) 

 কোনো P নয় M (E)

সকল S হয় M। (A)

∴ কোনো S নয় P। (E)

প্রশ্ন ১৪। ন্যায়ের তৃতীয় সংস্থান বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ ন্যায়ের তৃতীয় সংস্থানে হেতুপদ দুটি আশ্রয়বাক্যেই উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যথা— 

কোনো কোনো মানুষ হয় জ্ঞানী (I) 

সকল মানুষ হয় মরণশীল প্রাণী। (A)

∴ কোনো কোনো মরণশীল প্রাণী হয় জ্ঞানী। (I)

কোনো কোনো M হয় P। (I)

সকল M হয় S। (A)

∴ কোনো কোনো S হয় P। (I) 

প্রশ্ন ১৫। ন্যায়ের চতুর্থ সংস্থান বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ ন্যায়ের চতুর্থ সংস্থানে হেতুপদ দুটি সাধ্য আশ্রয় বাক্যে বিধেয় ও পক্ষ আশ্রয়বাক্যে উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যথা— 

সকল দার্শনিক হয় মানুষ। (A)

কোনো মানুষ নয় চতুষ্পদ প্রাণী। (E) 

∴ কোনো চতুষ্পদ প্রাণী নয় দার্শনিক। (E)

সকল P হয় M। (A)

কোনো M নয় SI (E)

∴ কোনো S নয় PI (E)

প্রশ্ন ১৬। কীভাবে ছকের মাধ্যমে হেতুপদের বিভিন্ন অবস্থানকে ব্যক্ত করা যায়, দেখাও।

উত্তরঃ তর্কবিজ্ঞানী কারভেথ রীড (Carveth Read) ছকের মাধ্যমে হেতুপদের বিভিন্ন অবস্থানকে, অর্থাৎ ন্যায়ের চারটি সংস্থানকে নিম্নোক্তভাবে ব্যক্ত করেছেন—

রচনাভিত্তিক প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অমিশ্র নিরপেক্ষ ন্যায়ের সাধারণ নিয়মাবলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ অমিশ্র নিরপেক্ষ ন্যায়ের সাধারণ নিয়মগুলো নিম্নরূপ:

প্রথম নিয়ম: প্রত্যেক ন্যায় অনুমানে তিনটি এবং শুধুমাত্র তিনটি পদ থাকবে, তার বেশিও নয়, কমও নয়। 

দ্বিতীয় নিয়ম: প্রত্যেক ন্যায় অনুমানে তিনটি বচন থাকতে হবে, তার বেশিও নয়, কমও নয়। 

তৃতীয় নিয়ম: প্রত্যেক ন্যায় অনুমানে আশ্রয়বাক্য দুটির মধ্যে ‘হেতুপদ’ অন্ততপক্ষে একবার ব্যাপ্ত হতে হবে।

চতুর্থ নিয়ম: কোনো পদ যদি আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্ত না হয়, তাহলে সিদ্ধান্তে ব্যাপ্ত হতে পারবে না।

পঞ্চম নিয়ম: দুটি নঞর্থক আশ্রয়বাক্য থেকে বৈধ সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হবে না।

ষষ্ঠ নিয়ম: যদি একটি আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হয়, তাহলে সিদ্ধান্তও নঞর্থক হবে এবং বিপরীতভাবে যদি সিদ্ধান্ত নঞর্থক হয়, তবে একটি আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হতে বাধ্য। 

সপ্তম নিয়ম: দুটি আশ্রয়বাক্যই যদি সদর্থক হয়, তাহলে সিদ্ধান্তও সদর্থক হবে; বিপরীতভাবে, সিদ্ধান্ত যদি সদর্থক হয়, তবে দুটি আশ্রয়বাক্যই সদর্থক হতে বাধ্য।

অষ্টম নিয়ম: দুটি আশ্রয়বাক্যই যদি বিশেষ বচন হয়, তাহলে কোনো বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না। 

নবম নিয়ম: একটি আশ্রয়বাক্য যদি বিশেষ বচন হয়, তাহলে সিদ্ধান্তও বিশেষ বচন হবে।

দশম নিয়ম: সাধ্য আশ্রয়বাক্য বিশেষ বচন হলে এবং পক্ষ আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে কোনো বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ২। ন্যায়ের বৈধতার সাধারণ নিয়মাবলির শ্রেণি বিভাজন সম্বন্ধে আলোচনা করো। 

উত্তরঃ নিরপেক্ষ ন্যায়ের নিয়মাবলির মধ্যে কয়েকটি মুখ্য নিয়ম, কতকগুলি গৌণ নিয়ম আছে। তাই ন্যায়ের দশটি নিয়মকে তিনটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করে আলোচনা করা হয়। যেমন—

(অ) গঠন-সংক্রান্ত নিয়ম।

(আ) বৈধতা-সম্পর্কিত নিয়ম। 

(ই) অনুসিদ্ধান্ত বা গৌণ নিয়ম।

(অ) গঠন-সংক্রান্ত নিয়ম:

(ক) ন্যায় অনুমানে মাত্র তিনটি পদ থাকবে— তার বেশিও নয়, কমও নয়।

(খ) ন্যায় অনুমানে তিনটি শর্তহীন বা নিরপেক্ষ বচন থাকবে— তার বেশিও নয়, কমও নয়।

(আ) বৈধতা সম্পর্কিত নিয়ম:

(ক) হেতুপদটি অন্তত একবার আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্ত হবে। 

(খ) কোনো পদ যদি আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্ত না হয়, সেটি সিদ্ধান্তেও ব্যাপ্ত হতে পারবে না।

(গ) দুটি নঞর্থক বচন থেকে বৈধ সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হবে না।

(ঘ) একটি আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে, সিদ্ধান্তও নঞর্থক হবে। 

(ঙ) দুটি আশ্রয়বাক্য সদর্থক হলে, সিদ্ধান্তও সদর্থক হবে। এই নিয়মটি মুখ্য নয়, গৌণ নিয়ম। কারণ ৭নং নিয়মটি ৬নং নিয়ম থেকেই পাওয়া যায়। 

(ই) অনুসিদ্ধান্ত বা গৌণ নিয়ম:

উল্লেখিত মুখ্য নিয়মগুলি থেকে অনেক অনুসিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়। এগুলি গৌণ নিয়ম। নীচে তিনটি গৌণ নিয়ম উল্লেখ করা হল—

(ক) দুটি আশ্রয়বাক্যই যদি বিশেষ বচন হয়, তাহলে কোনো বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না।

(খ) যে-কোনো একটি আশ্রয়বাক্য যদি বিশেষ বচন হয়, তাহলে সিদ্ধান্তও বিশেষ বচন হবে।

(গ) সাধ্য আশ্রয়বাক্য বিশেষ বচন হলে এবং পক্ষ আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে কোনো বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। 

প্রশ্ন ৩। নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের নিয়মভঙ্গজনিত দোষগুলি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের নিয়মভঙ্গজনিত দোষগুলি নিম্নরূপ: 

(ক) নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের নিয়মানুযায়ী প্রত্যেক ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তার বেশিও নয়, কমও নয়।

যদি কোনো নিরপেক্ষ ন্যায়ে তিনটির পরিবর্তে চারটি পদ থাকে, তাহলে ‘চারিপদ ঘটিত দোষ’ বা ‘চতুষ্পদী দোষ’ ঘটে। 

তাছাড়া, যদি ন্যায়ের কোনো পদকে একাধিক অর্থে ব্যবহার করা হয়, তাহলে যে দোষ দেখা দেয়, তাকে ‘অনেকার্থক দোষ’ বলা হয়।

(খ) বৈধ আদর্শ আকারের নিরপেক্ষ ন্যায়ের হেতুপদকে যুক্তিবাক্য বা আশ্ৰয়বাক্য দুটির যে-কোনো একটিতে অন্তত পক্ষে একবার ব্যাপ্য বা ব্যাপ্ত হতে হবে।

কোনো ন্যায় অনুমানে এই নিয়মটি লঙ্ঘিত হলে, ‘অব্যাপ্য হেতুপদ দোষ’ ঘটে।

(গ) বৈধ আদর্শ আকারের নিরপেক্ষ ন্যায়ে আশ্রয়বাক্যে কোনো পদ অব্যাপ্ত থাকলে সিদ্ধান্তে সেইপদ ব্যাপ্ত হতে পারবে না ।

এই নিয়মটি লঙ্ঘন করলে দু’ধরনের দোষের উদ্ভব হয়। যদি সিদ্ধান্তে সাধ্যপদটি ব্যাপ্য হয় এবং সেটি যদি যুক্তিবাক্যে অব্যাপ্য হয়, তাহলে যে দোষের উদ্ভব ঘটে, তার নাম ‘অবৈধ সাধ্যপদ দোষ’। 

যখন কোনো ন্যায়ের সিদ্ধান্তে পক্ষপদ ব্যাপ্য হয়, কিন্তু সেই পদটি পক্ষ আশ্রয়বাক্যে অব্যাপ্য থাকে, তখন যুক্তিটি ‘অবৈধ পক্ষপদ দোষে’ দুষ্ট হয়। 

(ঘ) দুটি নঞর্থক আশ্রয়বাক্য থেকে কোনো বৈধ সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয় না।

এই নিয়মটি লঙ্ঘন করলে যে দোষের উদ্ভব হয়, তার নাম নিষেধেক যুক্তিবাক্য’ বা ‘নঞর্থক যুক্তিবাক্যজনিত দোষ’।

প্রশ্ন ৪। ন্যায়ের সংস্থান সম্বন্ধে আলোচনা করো। 

উত্তরঃ নিরপেক্ষ ন্যায়ের যুক্তিবাক্য বা আশ্রয়বাক্য দুটিতে হেতুপদের অবস্থান অনুযায়ী ন্যায়ের যে আকার হয়, তাকে ন্যায়ের সংস্থান বলে। 

ন্যায়ের সংস্থান চার প্রকারের: 

(ক) প্রথম সংস্থান। 

(খ) দ্বিতীয় সংস্থান।

(গ) তৃতীয় সংস্থান। 

(ঘ) চতুর্থ সংস্থান। 

(ক) প্রথম সংস্থানে হেতুপদ সাধ্য আশ্রয়বাক্যে উদ্দেশ্য ও পক্ষ আশ্রয়বাক্যে বিধেয়রূপে ব্যবহৃত হয়। যথা—

সকল মানুষ হয় মরণশীল। (A)

সকল রাজা হয় মানুষ। ( A ) 

∴ সকল রাজা হয় মরণশীল। (A)

সকল M হয় P। (A)

সকল S হয় M। (A) 

∴ সকল S হয় P। (A)

(খ) দ্বিতীয় সংস্থানে হেতুপদ দুটি আশ্রয়বাক্যেই বিধেয়রূপে ব্যবহৃত হয়। যথা—

কোনো মানুষ নয় চতুষ্পদ প্রাণী। (E) 

সকল গরু হয় চতুষ্পদ প্রাণী। (A) 

∴ কোনো গরু নয় মানুষ। (E)

কোনো P নয় M। (E)

সকল S হয় M। (A)

∴ কোনো S নয় P | (E) 

(গ) ন্যায়ের তৃতীয় সংস্থানে হেতুপদ দুটি আশ্রয়বাক্যেই উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যথা—

কোনো কোনো মানুষ হয় জ্ঞানী (I) 

সকল মানুষ হয় মরণশীল প্রাণী। (A) 

∴ কোনো কোনো মরণশীল প্রাণী হয় জ্ঞানী। (I) 

কোনো কোনো M হয় P। (I)

সকল M হয় S। (A)

∴ কোনো কোনো S হয় P। (I)

(ঘ) চতুর্থ সংস্থানে হেতুপদ দুটি সাধ্য আশ্রয়বাক্যে বিধেয় ও পক্ষ আশ্রয়বাক্যে উদ্দেশ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যথা—

সকল দার্শনিক হয় মানুষ। (A) 

কোনো মানুষ নয় চতুষ্পদ প্রাণী। (E)

∴ কোনো চতুষ্পদ প্রাণী নয় দার্শনিক। (E) 

সকল P হয় M। (A)

কোনো M নয় S। (E)

∴ কোনো S নয় PI (E)

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top