Class 11 Political Science Chapter 1 সংবিধান প্রণয়নঃ সংবিধানঃ কেন এবং কিভাবে?, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 1 সংবিধান প্রণয়নঃ সংবিধানঃ কেন এবং কিভাবে? The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 1 সংবিধান প্রণয়নঃ সংবিধানঃ কেন এবং কিভাবে? solutions are free to use and easily accessible.
Class 11 Political Science Chapter 1 সংবিধান প্রণয়নঃ সংবিধানঃ কেন এবং কিভাবে?
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question in Bengali The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণী রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.
প্রশ্ন ২২। ভারতীয় সংবিধানের যেকোনো চারটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের চারটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ
(ক) লিখিত সংবিধান।
(খ) বিশ্বের দীর্ঘতম সংবিধান।
(গ) ভারতীয় সংবিধান নমনীয়তা ও অনমনীয়তার সংমিশ্রণ।
(ঘ) ভারতীয় সংবিধানে একটি প্রস্তাবনা আছে যা ভারতকে একটি সার্বভৌম।
সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, গণরাজ্য হিসাবে ঘোষণা করেছে।
প্রশ্ন ২৩। ভারতবর্ষকে কেন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলা হয়? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করো।
উত্তরঃ ভারতবর্ষ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে ধর্ম – নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতা বলতে বোঝায় কোন বিশেষ ধর্মে রাষ্ট্র পক্ষপাতিত্ব করবে না, ধর্ম বিরোধী হবে না, বা অধার্মিকতাকে প্রশ্রয় দেবে না। সকল ধর্মীয় গোষ্ঠীর নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ – সুবিধা থাকবে। ধর্মীয় ব্যাপারে রাষ্ট্র তার নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে। ১৯৭৬ সালের ৪২তম সংশোধনী আইনের মাধ্যমে প্রস্তাবনায় ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ – শব্দটি সংযোজন করা হয়েছে। অবশ্য ভারতের সংবিধানে প্রথম এই শব্দটি উল্লেখ করা না হলেও স্বাধীনতা প্রাপ্তির সময় থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ অনুসরণ করা হয়েছে। ভারতে বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর লোক বসবাস করে। তাই এই আদর্শ গ্রহণ করা যুক্তিযুক্ত হয়েছে।
প্রশ্ন ২৪। ভারতবর্ষকে প্রজাতন্ত্র বা গণরাজ্য বলা হয় কেন?
উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি হতে ভারত একটি ‘প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র। ‘প্রজাতন্ত্র’ বা ‘গণরাজ্য’ শব্দের অর্থ হল – শাসন – ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপ্রধান হলেন নির্বাচিত ব্যক্তি। তিনি বংশানুক্রমিক বা উত্তরাধিকার সূত্রে রাষ্ট্রপ্রধান নন। ভারতের রাষ্ট্রপতি পরোক্ষভাবে ভারতের জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত হন। সুতরাং ভারতবর্ষ একটি প্রজাতন্ত রাষ্ট্র। ভারতে প্রজাতন্ত্র দিবস প্রতি বৎসর ২৬শে জানুয়ারি দিনটিতে পালন করা হয়।
প্রশ্ন ২৫। ভারতীয় সংবিধানের এককেন্দ্রীক বা অযুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্যসমূহ লেখো।
উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের কতিপয় এককেন্দ্রীক বা অনুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ
(ক) জরুরিকালীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা এককেন্দ্রীক ব্যবস্থায় পরিবর্তিত হয়।
(খ) ক্ষমতা বণ্টনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় প্রাধান্যতা পরিলক্ষিত হয়।
(গ) সংশোধনীয় প্রস্তাব উত্থাপনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের একচেটিয়া অধিকার।
(ঘ) কেন্দ্রীয় সংসদ সাধারণ আইন প্রণয়নের মতো সাধারণ সংখ্যাধিক্যের মাধ্যমে প্রস্তাব অনুমোদন করে রাজ্যের নাম ও সীমানা পরিবর্তন করতে পারে।
প্রশ্ন ২৬। ভারতীয় সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্যসমূহ লেখো।
উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) ভারতে দুই ধরনের সরকার বিদ্যমান। সমগ্র দেশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রতিটি রাজ্যের জন্য পৃথক রাজ্য সরকার আছে।
(খ) ভারতের সংবিধান লিখিত।
(গ) ভারতীয় সংবিধান তিনটি তালিকার মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজাসমূহের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করে দিয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের তপশীলে এই তালিকা তিনটি সন্নিবেশিত করা হয়েছে।
(ঘ) ভারতের সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় ধরনের সরকারই সংবিধান অনুযায়ী তাদের শাসনকার্য পরিচালনা করে।
প্রশ্ন ২৭। লিখিত সংবিধান এবং অলিখিত সংবিধান ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ লিখিত সংবিধানে সরকারের মৌলিক নিয়মনীতি ও আইন, জনগণের অধিকার, শাসক ও শাসিতের মধ্যের সম্পর্ক ও দায়বদ্ধতা প্রত্যেকটি বিষয়ই লিপিবন্ধ করা থাকে। দেশের শাসন সংক্রান্ত সকল বিষয়ই সংবিধানে বিশদভাবে লিপিবন্ধ করা হয়ে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশে লিখিত সংবিধান দ্বারা শাসনকার্য পরিচালিত হয়।
অলিখিত সংবিধান দলিল আকারে লিখিত থাকে না। অলিখিত সংবিধানের মূল ভিত্তি হল বিভিন্ন প্রথা, নিয়ম – কানুন এবং বিচারালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত। এইগুলোর উপর ভিত্তি করে ধীরে ধীরে অলিখিত সংবিধান আত্মপ্রকাশ করে। ইংল্যাণ্ডের সংবিধান অলিখিত সংবিধানের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
প্রশ্ন ২৮। ভারতীয় সংবিধানের উৎস হিসাবে লেখকদের মতামত আলোচনা করো।
উত্তরঃ অভিজ্ঞতা প্রাপ্ত সাংবিধানিক লেখকগণ ভারতীয় সংবিধানের উপর বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ হতে আলোকপাত করেছেন। তাদের সংবিধানের উপর মতামত ভারতীয় সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। সিরভাই (Sirbhai) – এর রচিত ‘ভারতীয় সাংবিধানিক আইন’ (Indian Constitutional Law) নামক গ্রন্থ ভারতীয় সংবিধানের উপর মতামত সম্বলিত একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। ভারতীয় সংবিধান অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটি অত্যন্ত সহায়ক।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। কেবিনেট মিশন পরিকল্পনার সুপারিশগুলির পরীক্ষামূলক আলোচনা করো।
উত্তরঃ ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য ব্রিটিশ মন্ত্রী পরিষদ তিন কেবিনেট সদস্য বিশিষ্ট একটি দল গঠন করেন এবং একটি নতুন প্রস্তাব তাদের হাতে দিয়ে ভারতে পাঠানো হয়। একে কেবিনেট মিশন বলা হয়।
এই কেবিনেট মিশনের সুপারিশগুলির কতিপয় সুপারিশ নিম্নরূপঃ
(ক) ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধান রচনার জন্য একটি সংবিধান সভা’ (গণপরিষদ) গঠন করার সুপারিশ।
(খ) শাসনকার্য পরিচালনার জন্য একটি অন্তবর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব।
(গ) পাকিস্তান গঠনের প্রস্তাব বাতিল।
(ঘ) প্রাদেশিক আইনসভায় জাতি ও গোষ্ঠী ভিত্তিক সমানুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাব।
প্রশ্ন ২। সংবিধান সভায় (গণপরিষদে) সুবিবেচনার নীতি অনুসরণ করা হয়েছিল কি? কারণ দর্শাও।
উত্তরঃ জনসাধারণের প্রতিনিধি হিসাবে সংবিধান সভা তার বিধিগত ক্ষমতা প্রয়োগ করেছিল। সংবিধান সভায় (গণপরিষদে) সকল সদস্যের বক্তব্য আলোচিত হয়েছে এবং ঐক্যমতের নীতিতে সংবিধান রচিত হয়েছে। আমাদের সংবিধান রচিত হয়েছে কিছু পদ্ধতি এবং গণপরিষদের সদস্যদের সুবিবেচনার নীতির ভিত্তিতে। সংবিধান সভার সদস্যরা সমাজের বিভিন্ন বর্গের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। কিন্তু আলোচনার সময় তারা সমগ্র রাষ্ট্রের স্বার্থের কথা চিন্তা করেছেন। সদস্যদের মধ্যে বিরোধ ছিল কিন্তু তা দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে, জনগণের কল্যাণার্থে।
সংবিধান সভায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। যেমন – ভারতে এককেন্দ্রীকরণ বা বিকেন্দ্রীকরণ ক্ষমতা নীতির প্রবর্তন, কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্ক, বিচার বিভাগের ক্ষমতার সীমা এবং সম্পত্তির অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ের উপর বিতর্ক প্রভৃতি। প্রায় প্রতিটি বিষয়ের উপর বিতর্ক ও আলোচনা হয়েছিল। কেবল সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রবর্তন নিয়ে কোন বিতর্ক হয়নি। সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রবর্তনের ব্যাপারে সংবিধান সভার সকল সদস্যদের মধ্যে পূর্ণ সহমত ছিল। সংবিধান সভায় কিছু বিষয়ে যদিও ভোটাভুটিও হয়েছিল, তথাপি সকল বিষয়ই সদস্যদের ঐক্যমতে গৃহীত হয়েছিল।
সংবিধান সভার সদস্যরা প্রতিটি বিষয়ের উপর বিতর্ক ও আলোচনার পর তাদের সহমতে যা গ্রহণ করেছিলেন তা হতে সংবিধানের বিধিগত ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সংবিধান সভার সদস্যরা জনগণের জন্য নির্দিষ্ট চুক্তিপত্র বিশেষভাবে ও বিতর্কের মাধ্যমে স্থির করেন যা জনগণের নিকট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এই বিতর্ক স্মরণ করে রাখা হয়েছিল কারণ এটা সংবিধান রচনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যা সমানভাবেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ফরাসি ও আমেরিকার বিপ্লবের ক্ষেত্রে।
প্রশ্ন ৩। উদ্দেশ্য-সম্পর্কিত প্রস্তাবের গুরুত্ব আলোচনা করো?
উত্তরঃ গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু ‘উদ্দেশ্য সম্পর্কিত প্রস্তাব’ (objective resolution) উত্থাপন করেন। তিনি একে ভারতের জনগণের পবিত্র প্রতিজ্ঞা ( Solemn pledge) বলে অভিহিত করেন যা সংবিধান প্রণয়ন কালে অনুসরণ করা হয়েছিল। সংবিধানের দার্শনিক দিক ও ভিত্তি এই ‘উদ্দেশ্য-সম্পর্কিত প্রস্তাব’ দ্বারা স্থাপিত হয়েছিল। সংবিধান প্রণয়নের সময়ে সংবিধান প্রণেতাগণ উদ্দেশ্য-সম্পর্কিত প্রস্তাব’ বিশেষভাবে নজরে রেখেছিলেন।
প্রস্তাবগুলি হল নিম্নরূপঃ
(ক) ‘গণপরিষদ ভারতকে স্বাধীন সার্বভৌম সাধারণতন্ত্র’ (Independent sovereign republic) বলে ঘোষণা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কিন্তু ‘স্বাধীন’ শব্দটি পরে বর্জন করা হয়েছিল। কারণ ‘সার্বভৌম’ শব্দটির মধ্যে স্বাধীনতার তাৎপর্য নিহিত আছে।
(খ) সমগ্র ভূখণ্ড যা সমগ্র ব্রিটিশ-ভারত অন্তর্ভুক্ত করে এবং দেশীয় রাজ্যগুলি এবং অন্যান্য ভূখও যা স্বাধীন ভারতে অন্তর্ভুক্ত হতে ইচ্ছুক তাদের সকলকে নিয়ে একটি সংঘ গঠিত হবে।
(গ) যাতে উক্ত ভূখণ্ড এবং গণপরিষদ নির্ধারিত অন্যান্য ভূখণ্ড এবং অবশিষ্ট ক্ষমতা (Residuary Powers) সহ অন্যান্য সকল ক্ষমতা ভোগ করবে এবং স্বশাসিত অঙ্গের মর্যাদা পাবে।
(ঘ) যেখানে স্বাধীন সার্বভৌম ভারত ও এর অবশিষ্ট অংশ এবং সরকারের সকল অঙ্গ জনসাধারণের নিকট হতে ক্ষমতা অর্জন করবে।
(ঙ) যেখানে সকল জনসাধারণের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়, সমতা, চিন্তা ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা স্বীকৃত হবে।
(চ) যেখানে সংখ্যালঘু, পশ্চাৎপদ জাতি এবং উপজাতি এবং নিপীড়িত শ্রেণীর সুরক্ষার যথাযথ ব্যবস্থা থাকবে।
(ছ) যেখানে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা রক্ষা করা হবে।
(জ) বিশ্বের শান্তি রক্ষা ও মানব কল্যাণ করা হবে।
পণ্ডিত নেহরু প্রদত্ত ‘উদ্দেশ্য সম্পর্কিত প্রস্তাব’ ১৯৪৭ সালের ২২ শে জানুয়ারি গণ পরিষদ গ্রহণ করে। ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ সংবিধান রচনাকালে এই উদ্দেশ্য-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলি অনুসরণ করেছিলেন। খসড়া সংবিধান (Drafted Constitution) রচনার সময় এই উদ্দেশ্যগুলি বিবেচনার জন্য গ্রহণ করা হয়েছিল। নেহরু প্রদত্ত এই প্রস্তাবগুলি বিশেষভাবে ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রশ্ন ৪। ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহের একটি ধারণা দাও?
অথবা,
ভারতীয় সংবিধানর বৈশিষ্ট্যসমূহের একটি ধারণা দাও?
উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের কতকগুলি বৈশিষ্ট্য আছে। এগুলো নিম্নরূপঃ
(ক) ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক গণরাজ্য হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
(খ) ভারতের সংবিধানের তৃতীয় অংশে (Part III, Articles 12-35) ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ছয়টি মৌলিক অধিকার বিধিবদ্ধ করা হয়েছে।
(গ) সংবিধানের চতুর্থ অংশে (Part IV, Articles 36-51) রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য কতকগুলি নির্দেশাত্মক নীতির উল্লেখ আছে।
(ঘ) ১৯৭৬ সালে সংবিধানের ৪২-তম সংশোধনী আইন সংবিধানের ৫১ (ক) অনুচ্ছেদে নাগরিকদের জন্য দশটি মৌলিক কর্তব্যের অন্তর্ভুক্তি করেছে। বর্তমানে মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা এগারোটি। এগারোতম মৌলিক কর্তব্যটি ২০০২ সালের ৮৬-তম সংশোধনীর মাধ্যমে সংযোজন করা হয়েছে।
(ঙ) ভারতের সংবিধানের কতকাংশ নমনীয় এবং কতকাংশ অনমনীয়।
(চ) ভারতীয় সংবিধানের কার্যকারিতা অনুযায়ী ভারত কাঠামোগত দিক দিয়ে। যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু বস্তগতভাবে এককেন্দ্রীক।
(ছ) ভারতীয় সংবিধানে ব্রিটিশ ধাঁচের সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ব্যবস্থার উল্লেখ আছে।
(জ) ভারতের সংবিধানের অষ্টাদশ অংশে ৩৫২নং অনুচ্ছেদ হতে ৩৬০ নং অনুচ্ছেদে তিনটি বিশেষ অবস্থায় রাষ্ট্রপতির জরুরিকালীন অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত ক্ষমতা বর্ণিত হয়েছে।
(ঝ) সংবিধানের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলি হল- সার্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটাধিকার, বিচার সংক্রান্ত পুনর্বিচার, স্বাধীন বিচারবিভাগ, নির্বাচন আযোগ প্রভৃতি ব্যবস্থা। ভারতের সংবিধান বস্তুত জনগণের সংবিধান। এর প্রধান লক্ষ্য হল একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা করা।
প্রশ্ন ৫। ভারতের সংবিধানের উৎসগুলি কী কী?
উত্তরঃ ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ স্বাধীন ভারতের জনগণের জন্য একটি অভিনব সংবিধান রচনা করেন। সংবিধান নির্মাতাগণ পৃথিবীর বিভিন্ন সংবিধানের শ্রেষ্ঠ অংশগুলি যা ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় উপযোগী তা নিয়ে একটি আদর্শ সংবিধান রচনা করেন।
ভারতীয় সংবিধানের উৎসগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) ভারত শাসন আইনঃ ব্রিটিশ সংসদ ভারতের শাসন-তান্ত্রিক সংস্কারের জন্য কতকগুলি আইন প্রণয়ন করেছিলেন। ভারতীয় গণপরিষদ এই আইনসমূহ হতে প্রয়োজনীয় বিশেষ বিষয়গুলি ভারতীয় সংবিধানে বিধিবদ্ধ করে। এই ব্যাপারে ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই আইনের অনেক ধারা ভারতীয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
(খ) ব্রিটিশ সংসদীয় পদ্ধতিঃ ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ ব্রিটিশ সংসদীয় পদ্ধতি সম্পর্কে বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। তাই তাঁরা ব্রিটিশ সাংবিধানিক পদ্ধতির বহু বিষয় ভারতের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন। ভারতে সংসদীয় ধাঁচের সরকার ব্রিটিশ সংবিধান হতে গ্রহণ করা হয়েছে।
(গ) অন্যান্য সংবিধানের প্রভাবঃ গণপরিষদ এমন একটা সংবিধান রচনা করতে চেয়েছিল যাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সংবিধানের উত্তম বৈশিষ্ট্যগুলি ভারতের সংবিধানেও থাকবে। সুতরাং ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়ন, কানাডা, আয়ারল্যাণ্ড প্রভৃতি দেশের সংবিধান দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
(ঘ) গণপরিষদের বিতর্কঃ গণপরিষদের বিতর্কগুলি ভারতীয় সংবিধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভারতের সংবিধান গণপরিষদের সদস্যদের আলোচনা ও বিতর্কের ফসল। প্রতিটি বিষয় নিয়ে গণপরিষদে আলোচনা করা হয়েছিল।
(ঙ) লেখকদের মতামতঃ ভারতের সংবিধান সম্পর্কে লেখকদের মতামত ভারতের সংবিধানের একটি অন্যতম উৎস। সিরডাই (Sirbhai)-এর ভারতীয় সাংবিধানিক আইন’ (Indian Constitutional Law) গ্রন্থটি ভারতীয় সংবিধানের উপর লিখিত একটি বলিষ্ঠ মতামত সম্বলিত গ্রন্থ।
প্রশ্ন ৬। দেশ বিভাজন কীভাবে গণপরিষদের কার্যপ্রণালীকে প্রভাবিত করেছিল?
উত্তরঃ ১৯৪৭ সালের ৩রা জুন মাউন্টবেটেন পরিকল্পনা (Mount batten plan ) অনুযায়ী স্বাধীনতার প্রাক্কালে ভারত বিভাজন হয়েছিল।
এই দেশ বিভাজন গণপরিষদের কার্যপ্রণালীকে নিম্নোক্তভাবে প্রভাবিত করেছিলঃ
(ক) দেশ বিভাজনের ফলে পাকিস্তান অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল হতে গণপরিষদে নির্বাচিত সদস্যবৃন্দের সদস্যপদের বিলোপ সাধন হয়। গণ পরিষদের সদস্য সংখ্যা ২৯৯তে হ্রাস পায়। ১৯৪৯ সালের ২৬শে নভেম্বর উক্ত ২৯৯ সদস্যদের মধ্য হতে ২৮৪ জন সদস্য গণ পরিষদের অধিবেশনে উপস্থিত হয়ে সাক্ষর দিয়ে সম্মতি প্রদান করেন এবং ভারতীয় সংবিধান গৃহীত হয়।
(খ) এই দেশবিভাজনের ফলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি হয় এবং রক্তক্ষয়ী এই দাঙ্গা বহু মানুষকে বাস্তুচ্যুত ও দেশত্যাগ করতে বাধ্য করে। এই দাঙ্গায় বহুলোক প্রাণ হারায় এবং অনেক লোকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তচ্যুত হয়। হিংসার দাবানলে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের এরূপ দুর্দশার কথা গভীর ভাবে চিন্তা করেই নাগরিকত্বের পরিবর্তিত ধারণা আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় যাতে সংখ্যালঘুরা নিজেদের নিরাপদ মনে করতে পারে। নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে কোন ধর্মীয় পরিচিতির ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
প্রশ্ন ৭। গণপরিষদের গঠন ও কার্যাবলী সংক্ষেপে আলোচনা করো?
উত্তরঃ কেবিনেট মিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী গণপরিষদ কর্তৃক ভারতের সংবিধান রচিত হয়। গণপরিষদ ১৯৪৬ সালে গঠিত হয়। গণপরিষদের মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ৩৮৯জন। এর মধ্যে ৯৩ জন সদস্য দেশীয় রাজ্যগুলির রাজা কর্তৃক মনোনীত হয়েছিলেন। ভারতের প্রাদেশিক আইনসভার প্রতিনিধিগণ একক হস্তান্তরযোগ্য ভোটের মাধ্যমে ২৯৬ জন সদস্য নির্বাচিত করেন। মুসলিম, শিখ ও সাধারণ- এই তিন শ্রেণীর মধ্য হতে জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। ১:১০,০০,০০০ অনুপাতে ২৯৬ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচনে কংগ্রেস ২১১টি আসনে এবং মুসলিম লীগ ৭৩টি আসনে জয়লাভ করে। গণপরিষণে সমাজের সকল শ্রেণির সদস্য করে। সমগ্ৰ ভারতবর্ষের জন্য একটি সংবিধান তৈরি করাই ছিল গণপরিষদের মূ্ল উদ্দেশ্য।
১৯৪৬ সালের ৯ই ডিসেম্বর গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। একই সালের ১১ ডিসেম্বর ডঃ রাজেন্দ্র প্রসান গণপরিষদের স্থায়ী সভাপতি নির্বাচ হন। ১৯৪৭ সালের ২৬শে জানুয়ারি দ্বিতীয় অধিবেশন আরম্ভ হয়। এই অধিবেশ সভার কার্য পরিচালনা সংক্রান্ত, সংখ্যালঘু সম্পর্কিত কমিটি এবং ইউনিয়ন ক্ষমতা সংক্রান্ত কমিটি গঠন করা হয়। গণপরিষদের তৃতীয় অধিবেশন আরম্ভ হয় ১৯৪৭ সালের ২২শে এপ্রিল এবং এই অধিবেশনে সংবিধান রচনার দিকে মনোনিবেশ কর হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ জুলাই চতুর্থ অধিবেশন আরম্ভ হয়। এই অধিবেশনে ইউনিয়ন ও প্রাদেশিক কমিটির প্রস্তাব পেশ করা হয়। ১৯৪৭ সালের ২২শে জুলাই ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা গণ পরিষদে গৃহীত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগষ্ট ২ম অধিবেশন আরম্ভ হয় এবং উক্ত অধিবেশনে ডঃ বিঃ আর আম্বেদকরের সভাপতিয়ে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি খসড়া কমিটি গঠন করা হয়। এই খসড়া কমিটি কর্তৃক রচিত খসড়া সংবিধান ১৯৪১ সালের ২৬শে নভেম্বর গণ পরিষদে গৃহীত হয় এবং ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান কার্যকরী হয়।
প্রশ্ন ৮। ভারত একটি ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র।’ পর্যালোচনা করো?
উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, প্রজাতন্ত্র’ রূপে ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৭৬ সালের ৪২-তম সংবিধান সংশোধনী আইনের মাধ্যমে প্রস্তাবনায় ‘সমাজতান্ত্রিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দ দুইটি সংযোজন করা হয়েছে।
ভারত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। দেশের আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ব্যাপারে ভারত সম্পূর্ণরূপে বহির্শক্তির নিয়ন্ত্রণ মুক্ত। রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রেই ভারত রাষ্ট্রের অবাধ ক্ষমতা আছে। ভারত দেশের আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন। প্রস্তাবনায় ভারতকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। এর অর্থ হল ভারতের শাসন ব্যবস্থায় সমাজতান্ত্রিক আদর্শ অনুসরণ করা হয়েছে। ভারতের অর্থনীতি সাম্যের উপর প্রতিষ্ঠিত।
সংবিধানের প্রস্তাবনায় ভারতকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ গ্রহণ করা হয়েছে। রাষ্ট্র কোন বিশেষ ধর্মের পক্ষপাতিত্ব করবে না, ধর্ম-বিরোধী হবে না বা অধার্মিকতাকে প্রশ্রয় দেবে না। রাষ্ট্র ধর্মীয় ব্যাপারে কোন রূপ হস্তক্ষেপ করবে না। তবে পাশ্চাত্য ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে ভারতীয় ধর্ম নিরপেক্ষতার পার্থক্য আছে। ভারতে ধর্মীয় সংস্কারের কারণে সরকার কখনো কখনো ধর্মীয় ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে।
প্রস্তাবনায় ভারতকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের শাসন ব্যবস্থা জনগণের স্বার্থে জনগণ কর্তৃক শাসিত হয়। ভারতের শাসন ব্যবস্থা জনগণের শাসন ব্যবস্থা। ভারতের জনগণ প্রতিনিধি নির্বাচন করে সেই প্রতিনিধিগণের দ্বারা শাসন কার্য পরিচালনা করেন।
সংবিধানের প্রস্তাবনা অনুসারে ভারত একটি প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র। ভারতের শাসনকার্য অনুসারে ভারত একটি প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র। ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি। তিনি ইংল্যাণ্ডের রাজা বা রাণীর মতো বংশানুক্রমিক অনুসারে রাষ্ট্রপ্রধান নন। তিনি জনগণ কর্তৃক পরোক্ষভাবে নির্বাচিত হন। সুতরাং ভারত একটি প্রজাতন্ত্র বা সাধারণতন্ত্র রাষ্ট্র।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। এর মধ্য কোনগুলো সংবিধানের কাজ নয়?
ক) এর দ্বারা নাগরিক অধিকারগুলোর সুরক্ষা প্রদান করা হয়।
খ) এটি সরকারের বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন ক্ষমতাকে তুলে ধরেছে।
গ) এটি নিশ্চিত করে ভালো মানুষের ক্ষমতায় আসা।
ঘ) এটি মানুষের মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে কিছু মূলা দেয়।
উত্তরঃ (গ) এটি নিশ্চিত করে ভালো মানুষের ক্ষমতায় আসা।
প্রশ্ন ২। এগুলোর মধ্যে কোনটি শ্রেষ্ঠ কারণ যার দ্বারা সংবিধানের স্রষ্টারা সাংসদদের থেকে বিখ্যাত?
(ক) সংসদ আসার পূর্বে সংবিধান রচিত হয়েছিল।
(খ) ভারতীয় সংবিধানের স্রষ্টারা সংসদের সদস্যদের থেকে অনেক দক্ষ।
(গ) সংবিধান বিশেষভাবে বর্ণনা করেছে, কিভাবে সংসদ গঠিত হবে এবংক্ষমতা কি?
(খ) সংবিধান কখনোও সংসদ দ্বারা সংশোধিত হয় না।
উত্তরঃ (গ) সংবিধানে বিশেষভাবে বর্ণনা করেছে, কিভাবে সংসদ গঠিত হবে এবং তার ক্ষমতা কি?
প্রশ্ন ৩। উল্লেখ করো নিম্নলিখিত সংবিধানের বিবরণ সত্য না মিথ্যা।
(ক) সংবিধান হচ্ছে একটি লিখিত দলিল যার দ্বারা সরকার গঠিত হয় এবং কিভাবে তা ক্ষমতা প্রয়োগ করে।
উত্তরঃ মিথ্যা।
(খ) গণতান্ত্রিক দেশে সংবিধান থাকে এবং এর প্রয়োজন।
উত্তরঃ মিথ্যা।
(গ) সংবিধান হচ্ছে একটি আইনি দলিল যা কোনোও আদেশ ও তার মূল্য উল্লেখ করে।
উত্তরঃ মিথ্যা।
(ঘ) সংবিধান নাগরিকের নতুন পরিচয় দেয়।
উত্তরঃ সত্য।
প্রশ্ন ৪। উল্লেখ করো, ভারতীয় সংবিধান তৈরির ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত মতবিরোধ থাকা উচিত কি? কারণ দেখাও।
(ক) গণ পরিষদে ভারতীয় জনগণের প্রতিনিধিত্ব ছিল না কারণ পূর্বে গণপরিষদের সদস্য জনসাধারণের দ্বারা নির্বাচিত হয়নি।
(খ) সংবিধান রচনার সময় কোনোও মূখ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়নি যেহেতু সংবিধান রচনার সময় সাধারণ মানুষ তাদের দল নেতা নির্বাচনে সজাগ ছিলো।
(গ) সংবিধানের উৎপত্তি খুব সীমিত ছিল, তার মধ্যে বেশির ভাগ অংশই তুলে ধরা হয়েছে অন্য দেশের সংবিধান থেকে।
উত্তরঃ (ক) উক্ত সিদ্ধান্তটি শুদ্ধ নয়।
গণপরিষদ জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত না হলেও তাতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব ছিল। গণপরিষদে বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতা, পণ্ডিত, দার্শনিক, আইনজ্ঞ, লেখক প্রভৃতি সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছিলেন। তাছাড়া সদস্যগণ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী, জাতি, বর্ণ ও ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে ভূমিকা পালন করেছিলেন। সুতরাং এটা বলা যায় যে গণ পরিষদের সদস্যগণ জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত না হলেও তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
(খ) এই সিদ্ধান্তটি সঠিক, কারণ সংবিধানের মুখ্য বিষয় নিয়ে নেতৃবৃন্দের মধ্যে সহমত ছিল। সুতরাং সংবিধান প্রণয়নের সময় কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় নি। তাদের মধ্যে মৌলিক কাঠামো বিষয়ে সহমত ছিল।
(গ) এই সিদ্ধান্তটি সঠিক বলা উচিত নয়, কারণ ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ ইংল্যান্ড, কানাডা, আয়ারল্যাণ্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি দেশের সংবিধান হতে কতকগুলি ধারণা ও বিষয়বস্তু অনুকরণ করে আমাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছেন যা কেবলমাত্র আমাদের দেশেই কার্যকরী এবং আমাদের সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে সামজস্যপূর্ণ। সুতরাং ভারতীয় সংবিধানে মৌলিকত্ব নেই তা বলা যুক্তিসঙ্গত নয়।
প্রশ্ন ৫। ভারতীয় সংবিধানের সম্পর্কে দুটো উদাহরণ দিয়ে প্রত্যেক নাগরিককে স্বীকার করতে হয়-
ক) সংবিধান রচিত হয়েছিল বিশ্বাসযোগ্য স্রষ্টাদের দ্বারা যারা নাগরিকদের কাছে সম্মানীয়।
(খ) সংবিধান ক্ষমতাকে এমনভাবে ভাগ করেছে যা ধ্বংস করা কঠিন।
(গ) সংবিধান গঠিত হয় নাগরিকের আশা ও আকাঙ্খা নিয়ে।
উত্তরঃ (ক) ভারতের সংবিধান সম্মানিত বিশ্বস্ত নেতৃবৃন্দের দ্বারা প্রণীত হয়েছিল।
কারণ-
(অ) গণপরিষদে সকল ধর্মের সদস্য ও নেতাগণ ছিলেন। তাছাড়া অনুসূচীত জাতির ২৬ জন সদস্য ছিলেন।
(আ) গণপরিষদে সকল সিদ্ধান্ত আলোচনাপূর্বক সুন্দরভাবে গৃহীত হয়েছিল। দুই- একটি বিষয় ব্যতীত সকল বিষয়ে গণ পৰিষদে সদস্যদের মধ্যে সহমত ছিল।
(খ) সংবিধান এমনভাবে ক্ষমতা বণ্টন করেছে যে তা ধ্বংস করা প্রায় দুঃসাধ্য ছিল। এর প্রধান কারণঃ-
(অ) সংবিধান সংশোধনের নির্দিষ্ট পদ্ধতি সংবিধানে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে।
(আ) ক্ষমতা বণ্টনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের ভারসাম্য নীতি ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারের প্রতিটি বিভাগের মধ্যে সমতা রক্ষা করা হয়েছে।
(গ) সংবিধান জনগণের আশা-আকাঙ্খার আলোক স্বরূপ।
তা প্রতিপন্ন হয়েছে নিম্নোক্ত কারণ সমূহের জন্যঃ
(অ) সংবিধানে জনগণের মৌলিক অধিকার অন্তর্ভুক্ত ও তাদের রক্ষাকল্পে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।
(আ) জনগণের আশা-আকাঙ্খা পুরণের জন্য সংবিধানে, জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে নির্দেশাত্মক নীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
প্রশ্ন ৬। দেশের সংবিধানে সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্ববোধকে পরিষ্কার করে বর্ণনা করার কী দরকার? কী হতে পারে যদি এইগুলিকে পরিষ্কার ভাবে বর্ণনা করা না হয়?
উত্তরঃ সংবিধানে সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্বের সীমা সুস্পষ্ট ও নির্ধারিত থাকা প্রয়োজন। যদি সরকারের প্রতিটি বিভাগের ক্ষমতা ও দায়িত্বের সীমা নির্ধারিত না। থাকে তাহলে যে-কোন বিভাগ ক্ষমতা গ্রাস করে স্বৈরাচারী হয়ে যেতে পারে। যদি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে পরিষ্কারভাবে ক্ষমতা বণ্টন না করা থাকে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙ্গে পড়তে পারে।
প্রশ্ন ৭। সংবিধানে শাসকের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কী প্রয়োজন? এমন কি কোনও সংবিধান আছে যা জনসাধারণকে কোনও ক্ষমতাই দেয় না?
উত্তরঃ সংবিধানে সরকারের উপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা আবশ্যক। নাগরিকের মৌলিক অধিকারগুলো সরকারের একচেটিয়া ক্ষমতা ব্যবহারে বাধা দান করে। তাছাড়া সমতার অধিকার রাষ্ট্রকে জাতি, ধর্ম, বর্ণ প্রভৃতির ভিত্তিতে বৈষম্য সৃষ্টি করতে বাধা দান করে। সংবিধান কর্তৃক সরকারের উপর আরোপিত বাধা নিষেধ সরকারকে স্বৈরাচারী হতে বাধা দান করে। সুতরাং সংবিধান কর্তৃক সরকারের উপর সমর্থন যোগ্য বাধা নিষেধ থাকা উচিত।
নাগরিকদের কোন অধিকার প্রদান করে না এমন কোন সংবিধান হতে পারে না। যে-কোন সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে হলে জন সমর্থনের প্রয়োজন। সরকারকে নীতি নির্ধারণের জন্য জনমতের প্রয়োজন। সংবিধান ক্ষমতা প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বও প্রদান করে। আর এই দায়িত্ব হল জনগণের অধিকার সুরক্ষা করা। সুতরাং এমন কোন সংবিধান হতে পারে না যেখানে নাগরিকদের জন্য কোন অধিকারের ব্যবস্থা নেই।
প্রশ্ন ৮। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের সংবিধান যখন রচিত হয়েছিল, তখন আমেরিকা সম্পূর্ণভাবে জাপানকে সৈনিক দিয়ে দখল করে নিয়েছিল। জাপানের সংবিধানে এরকম কোনও ব্যবস্থা ছিল না যেগুলি আমেরিকানদের পছন্দ ছিল না। তোমরা কি দেখেছো সংবিধান তৈরির ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয়েছে? কীভাবে ভারতীয় সংবিধানের সাথে এর তফাৎ দেখা যায়?
উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর মার্কিন সেনাবাহিনী অধিকৃত জাপানে মার্কিন সেনাপ্রধান ম্যাক আর্থারের তদারকিতে সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। স্বাধীনতার পর গণপরিষদ স্বাধীন সংস্থায় পরিণত হয়। সংবিধান রচনায় গণপরিষদের উপর কোনরকম বাধা নিষেধ ছিল না। গণপরিষদ সংবিধান রচনার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিল। তাতে ব্রিটিশ সরকারের কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছিল না।
প্রশ্ন ৯। রজত তার শিক্ষককে প্রশ্ন করেছিল “সংবিধান পঞ্চাশ বছরের পুরানো এবং সেইহেতু অচল। কেউ আমার মত নেয়নি। এটা এমন ভাষায় লিখা হয়েছে যা আমার বোধগম্য নয়। বলুন কেন আমি দলিল মেনে নিব?” যদি শিক্ষক তুমি হও তবে রজতকে কী উত্তর দেবে?
উত্তরঃ আমাদের সংবিধান সেকেলে নয়। আমাদের সংবিধান ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি কার্যকরী হয়। কিন্তু প্রয়োজন সাপেক্ষে এই সংবিধানের কিছু কিছু অংশ পরিবর্তন করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত এটি মোট ১০৯ বার সংশোধন করা হয়েছে। রজতকে ভারতের সংবিধানকে মান্য করতে হবে কারণ গণপরিষদ আমাদের জন্য তা রচনা করেছে। এটি সৃষ্টি করেছে জনগণ এবং জনগণের মঙ্গলের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে। ভারতের জনগণ ক্ষমতার উৎস এবং প্রকৃত ক্ষমতা আমাদের হাতে ন্যস্ত। সুতরাং আমাদের সংবিধান সেকেলে নয়।
প্রশ্ন ১০। ভারতীয় সংবিধানের আলোচনাতে বুঝা যায় তিনজন বক্তা তিনটি উপায় নিয়ে ছিলেন?
(ক) হরবনসঃ গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে ভারতীয় সংবিধান সাফল্য লাভ করেছে?
(খ) নেহাঃ সংবিধান প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল স্বাধীনতা, সমতা, ভ্রাতৃত্ববোধ রক্ষা করার জন্যে। পূর্বে ইহা কখনো ঘটেনি যার জন্যে সংবিধানের পতন ঘটেনি।
(গ) নাজিমাঃ সংবিধান আমাদের পতন ঘটায়নি আমরাই সংবিধানের ব্যর্থতা ঘাটিয়েছি। তুমি রাজি আছো, এই ক্ষেত্রে, যদি হ্যাঁ হয় তবে কেন? যদি না হয়, তবে কেন?
উত্তরঃ (ক) আমরা হরবনসের সঙ্গে একমত। সংবিধানের প্রস্তাবনা অনুযায়ী ভারত একটি সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্র। ভারতে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত। সরকারের সকল বিভাগ সংবিধানের গণ্ডীর ভেতরে থেকে কার্য সম্পাদন করছে। আমাদের দেশে ১৬টি লোক সভা নির্বাচন হয়েছে। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে সংবিধান একটি গণতান্ত্রিক কাঠামো প্রদানে সাফল্য অর্জন করেছে।
(খ) নেহা সঠিক বলেছে যে আমাদের সংবিধান স্বাধীনতা, সমতা এবং সৌভ্রাতৃত্ব সুনিশ্চিত করতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ, কিন্তু যেহেতু এইগুলি বাস্তবায়িত হয় নি সেইহেতু সংবিধান ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষমতাবান ও অর্থবান লোকরাই স্বাধীনতা ও সমতার নীতি ভঙ্গ করছে। নির্বাচনে অর্থ ও বাহুবল দ্বারা জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করা হয় অথবা গরীব ভোটারদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে বা ভয় প্রদর্শন করে তাদের সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সুযোগ দেওয়া হয় না। সুতরাং আমাদের সংবিধান ব্যর্থতার দায়-স্বীকার করতে বাধ্য।
(গ) নাজিমার অভিমতের সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করতে পারি। সংবিধান রচয়িতাগণ আমাদের একটি উৎকৃষ্ট সংবিধান উপহার দিয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমাদের সংবিধান সাফল্যের সঙ্গে কার্য সম্পাদন করতে পারছে না। রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক অধিকারগুলি সংবিধানে স্বীকৃত হলেও তা আমরা বাস্তবায়িত করতে পারিনি। তাই নাজিমার অভিমতের আংশিক সত্যতা আছে যে সংবিধান আমাদিগকে ব্যর্থ করেনি বরং আমরাই সংবিধানের ব্যর্থতা ঘটিয়েছি।
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.