Class 11 Political Science Chapter 2 ভারতীয় সংবিধানে অধিকার

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Political Science Chapter 2 ভারতীয় সংবিধানে অধিকার, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 2 ভারতীয় সংবিধানে অধিকার The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 2 ভারতীয় সংবিধানে অধিকার Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Political Science Chapter 2 ভারতীয় সংবিধানে অধিকার

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question in Bengali The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.

প্রশ্ন ২৮। দক্ষিণ আফ্ৰিকার সংবিধানে উল্লিখিত নাগরিকদের যে কোনো দুটি অধিকার উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ দুটি অধিকার হল- 

(ক) মর্যাদার অধিকার। 

(খ) গোপনীয়তার অধিকার।

প্রশ্ন ২৯। সাধারণ অধিকার এবং মৌলিক অধিকারের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো?

উত্তরঃ সাধারণ অধিকার এবং মৌলিক অধিকারের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপঃ

(ক) সাধারণ অধিকারগুলো রাজ্যিক আইনসভা বা কেন্দ্রীয় আইনসভা প্রণয়ন করে। তাই আইনসভা সাধারণ আইন প্রণয়নের পদ্ধতির মাধ্যমে সাধারণ অধিকারগুলো পরিবর্তিত করতে পারে। অন্যদিকে মৌলিক অধিকারগুলো সংবিধানে বিধিবদ্ধ করা আছে। তাই মৌলিক অধিকারগুলো কেবলমাত্র সংবিধান সংশোধনের দ্বারা পরিবর্তিত হয়। 

(খ) সাধারণ অধিকারগুলো বিভিন্ন কারণে খর্ব হতে পারে কিন্তু নাগরিকের মৌলিক অধিকারগুলো খর্ব হয় না।

প্রশ্ন ৩০। ভারতীয় সংবিধানের কোন্ সংশোধনীর মাধ্যমে এবং কোন্ অনুচ্ছেদে মৌলিক কর্তব্যগুলি সংযোজন করা হয়েছে? 

উত্তরঃ ছাত্র-ছাত্রীরা নিজে করো।

প্রশ্ন ৩১। ভারতীয় সংবিধানে সন্নিবিষ্ট দুটি মৌলিক অধিকার উল্লেখ করো?

উত্তরঃ সাম্যের অধিকার (Articles 14-18) এবং স্বাধীনতার অধিকার (Articles 19-22)।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ 

প্রশ্ন ১। ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত যে কোনো চারটি নির্দেশাত্মক নীতির উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রপরিচালনার চারটি নির্দেশাত্মক নীতি নিম্নরূপঃ

(ক) জীবিকা অর্জনের যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করা। 

(খ) গ্রামাঞ্চলে পঞ্চায়েত রাজ ব্যবস্থার প্রবর্তন করা।

(গ) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা।

(ঘ) গো-হত্যা নিবারণ।

প্রশ্ন ২। ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলোর প্রকৃতি আলোচনা করো। 

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে (অনুচ্ছেদে ১২-৩৫) মৌলিক অধিকারগুলোর প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ

(ক) মৌলিক অধিকারগুলো আদালতে বিচারযোগ্য। 

(খ) মৌলিক অধিকারগুলো চরম নয়। এগুলোর উপর সমর্থনযোগ্য কতকগুলো সীমাবদ্ধতা আছে।

(গ) মৌলিক অধিকারগুলো কতকগুলো ইতিবাচক ও কতকগুলো নেতিবাচক।

(ঘ) সংবিধানে লিপিবন্ধ মৌলিক অধিকারগুলো কেবলমাত্র ভারতীয় নাগরিকগণ ভোগ করতে পারে।

(ঙ) ২০ এবং ২১ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলো ব্যতীত অন্যান্য মৌলিক অধিকারগুলো জরুরিকালীন অবস্থার সময় সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়।

(চ) মৌলিক অধিকারগুলো নারী ও শিশুদের সুরক্ষা প্রদান করেছে। 

প্রশ্ন ৩। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত রাষ্ট্র পরিচালনার চারটি নির্দেশাত্মক নীতির উল্লেখ করো?

উত্তরঃ আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত চারটি নির্দেশাত্মক নীতি নিম্নরূপঃ 

(ক) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা।

(খ) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ন্যায়সঙ্গত ও সম্মানজনক সম্পর্ক বজায় রাখা।

(গ) আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করা। 

(ঘ) মধ্যস্থতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিরোধগুলোর মীমাংসা করা।

প্রশ্ন ৪। মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতির মধ্যে চারটি পার্থক্য লেখ?

উত্তরঃ মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতির মধ্যে চারটি পার্থক্য নিম্নরূপঃ 

(ক) মৌলিক অধিকারগুলো বাস্তবায়িত করতে সরকার বাধ্য; কিন্তু নির্দেশাত্মক নীতি বাস্তবায়ন করতে সরকার বাধ্য নন। 

(খ) মৌলিক অধিকারগুলো আদালতে বিচারযোগ্য। কিন্তু নির্দেশাত্মক নীতি আদালতে বিচারযোগ্য নয়। 

(গ) উভয়ের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে মৌলিক অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকে। কিন্তু নির্দেশাত্মক নীতিগুলো বাতিল হয়। অবশ্য জরুরিকালীন অবস্থার সময় নির্দেশাত্মক নীতি বাতিল হয় না।

(ঘ) মৌলিক অধিকারের মূল লক্ষ্য হল রাজনৈতিক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করা। অপরদিকে নির্দেশাত্মক নীতিগুলোর মূল লক্ষ্য হল রাজনৈতিক এবং আর্থ-সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা।

প্রশ্ন ৫। পৌর অধিকার সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো? 

উত্তরঃ যে সকল অধিকার ব্যতীত মানুষের জীবনের প্রাথমিক শর্ত পরিপূর্ণ হয় না। তাদের পৌর অধিকার বা ব্যক্তিগত অধিকার বলে। এই অধিকারগুলো সভ্য জীবনযাপনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। জীবনের অধিকার, ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার, স্বাধীন ধর্মাচরণের অধিকার, আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার, শিক্ষার অধিকার প্রভৃতি পৌর অধিকারের উদাহরণ। ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলো পৌর অধিকারের মুল ভিত্তি।

প্রশ্ন ৬।গান্ধীবাদী নির্দেশাত্মক নীতিসমূহ ব্যাখ্যা করো? 

উত্তরঃ গান্ধীজির আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত কতকগুলো নীতি ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 

এই নীতিগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) রাষ্ট্র পঞ্চায়েতরাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন করবে।

(খ) কুটির শিল্পের উন্নয়ন ও গ্রামাঞ্চলে সমবায় ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য রাষ্ট্র বিশেষভাগে সচেষ্ট থাকবে।

(গ) গো-হত্যা নিবারণ করা।

(ঘ) একমাত্র ঔষধ হিসাবে ব্যবহারের ক্ষেত্র ব্যতীত কোন প্রকার মাদক দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য রাষ্ট্র সচেষ্ট থাকবে।

প্রশ্ন ৭। ভারতীয় সংবিধানের ৩২নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃক জারি করা লেখ সমূহ কী কী?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩২নং অনুচ্ছেদে নাগরিকের মৌলিক অধিকার খর্ব হলে তার প্রতিকারের কয়েকটি ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যে কোনো ব্যক্তি মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে প্রতিকারের জন্য সুপ্রীম কোর্টের নিকট আবেদন করতে পারে। সুপ্রীম কোর্ট অভিযোগ বিচার করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবার নির্দেশ দিতে পারে। নাগরিকের মৌলিক অধিকার বলবৎ করবার জন্য সুপ্রীম কোর্ট নিম্নলিখিত লেখ (নির্দেশ) সমূহ জারি করতে পারেনঃ

(ক) বন্দী প্রত্যক্ষীকরণ (Habeas Corpus)

(থ) পরমাদেশ (Mandamus)

(গ) প্রতিষেধ (Prohibition)

(ঘ) অধিকার পৃচ্ছা (Quo-warranto)

(৫) উৎপ্রেষণ (Certiorari)

প্রশ্ন ৮। ভারতের সংবিধানের কত তম অনুচ্ছেদে হাইকোর্টগুলোকে অধিকার রক্ষার জন্য লেখ জারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? কখন হাইকোর্টগুলোর লেখ জারির ক্ষমতা প্রত্যাহার করা হয়েছিল? কোন্ সংশোধনী আইনে হাইকোর্টকে লেখ জারির ক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়?

উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের ২২৬নং অনুচ্ছেদে হাইকোর্টগুলোকে অধিকার রক্ষার জন্য লেখ জারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

১৯৭৬ সালের ৪২-তম সংশোধনের মাধ্যমে হাইকোর্টগুলোর লেখ জারির ক্ষমতা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৮ সালে ৪৪-তম সংশোধনে হাইকোর্টকে লেখ জারির ক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। 

প্রশ্ন ৯। কীভাবে অধিকার ও কর্তব্যের মধ্যে পরস্পর গভীর সম্পর্ক যুক্ত?

অথবা, 

“অধিকার ও কর্তব্যের মধ্যে গভীর সম্পর্ক বিচার করো। 

অথবা, 

“অধিকার কর্তব্যের সূচনা করে।” ব্যাখ্যা করো।

অথবা, 

“অধিকারের মধ্যেই কর্তব্য নিহিত।” সংক্ষেপে আলোচনা করো। 

উত্তরঃ ইংরাজিতে একটি প্রবাদ আছে, Rights imply duties অর্থাৎ অধিকারের মধ্যেই কর্তব্য নিহিত। 

সমাজবোধ হতে অধিকার ও কর্তব্যের উদয় হয়। অধিকার স্বীকার করার অর্থ দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করা, আর এই দায়িত্বকে আমরা বলি কর্তব্য। অধিকার ও কর্তব্যের এই গভীর পারস্পরিক সম্পর্ক সামাজিক, রাষ্ট্রনৈতিক, অর্থনৈতিক, পারিবারিক ও নৈতিক জীবনে বিদ্যমান। রাষ্ট্রীয় আইন মেনে চলার অর্থ কর্তব্য পালন করা। যেমন – মাতাপিতার সন্তান-সন্ততিদের লালন পালন করা সন্তানদের প্রাপ্য অধিকার, বৃদ্ধাবস্থায় সন্তানদের মাতা-পিতাকে ভরণ-পোষণ ও যত্ন করা সন্তাননের কর্তব্য। সুতরাং দেখা যায় যে প্রতিটি অধিকারের সঙ্গে কর্তব্য গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। এরা যেন একই মুদ্রার দুই দিক। একের অভাবে অন্য অর্থহীন। যার লক্ষ্য হল ব্যক্তি তথা সমাজের সার্বিক কল্যাণ সাধন করা।

প্রশ্ন ১০। “রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার আয়োগ” সম্পর্কে টীকা লেখো। 

উত্তরঃ ১৯৯৩ সালের মানব অধিকার সুরক্ষা আইন – এর অধীনে ১৯৯৪ সালে ভারত সরকার রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার আয়োগ গঠন করেন। উক্ত আয়োগ সুপ্রীম কোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারপতি, যিনি সভাপতির পদ অলংকৃত করেন, হাইকোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারপতি এবং অপর দুজন সদস্য যাদের মানবাধিকার সম্পর্কে বিশেষ অভিজ্ঞতা আছে এমন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ নিয়ে গঠিত। তাদের সকলকে নিয়োগ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। 

এই আয়োগের প্রধান প্রধান কার্য নিম্নরূপঃ 

(ক) মানবাধিকার হতে বঞ্চিত ব্যক্তির আবেদন পত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অভিযোগ তদন্ত করে দেখা।

(খ) জেল কয়েদিদের অবস্থা যাচাইয়ের জন্য জেল পরিদর্শন করা।

(গ) মানবাধিকার বিষয়ে সরকারকে বিভিন্ন পরামর্শ দান করা।

নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় মানবাধিকার আযোগ অত্যন্ত অল্প সময়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে। 

প্রশ্ন ১১। ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত নাগরিকের স্বাধীনতার অধিকার নিয়ে একটি টীকা লেখো। 

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৯নং হতে ২২নং অনুচ্ছেদে স্বাধীনতার অধিকারগুলোর উল্লেখ আছে। 

বর্তমানে ১৯নং অনুচ্ছেদে নিম্নোক্ত ছয়টি স্বাধীনতা বর্ণিত আছেঃ

(ক) বাক ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা।

(খ) শান্তিপূর্ণভাবে নিরস্ত্র হয়ে সমবেত হওয়ার অধিকার। 

(গ) সমিতি ও সংঘ গঠনের অধিকার।

(ঘ) ভারতের সর্বত্র চলাফেরার অধিকার। 

(ঙ) ভারতের সর্বত্র বসবাস করবার অধিকার।

(চ) যে কোনো পেশা বা ব্যবসা-বাণিজ্য করবার অধিকার।

প্রশ্ন ১২। ভারতের সংবিধানে বর্ণিত নির্দেশাত্মক নীতি এবং মৌলিক অধিকারসমূহের মধ্যে তুলনামূলক সম্পর্ক ব্যাখ্যা করোঃ

উত্তরঃ রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতি ও মৌলিক অধিকার একে অপরের পরিপূরক। ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে মৌলিক অধিকার সমূহ লিপিবন্ধ করা হয়েছে এবং নির্দেশাত্মক নীতিগুলো সংবিধানের চতুর্থ অধ্যায়ে লিপিবন্ধ করা হয়েছে। 

ভারতীয় সংবিধানের প্রণেতাগণ সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায় এবং চতুর্থ অধ্যায়কে একটি অপরটির পরিপূরক হিসাবে বিধিবদ্ধ করেছেন। মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতির মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে সংসদ এবং সুপ্রীম কোর্টের মধ্যে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

ভারতীয় সংবিধানের ১ম সংশোধনীর সময় মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতির সম্পর্ক নিয়ে প্রথম বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছিল। ভারতীয় সংবিধানের ১ম সংশোধনীতে জমিদারী প্রথা বিলোপ করা হয়। নির্দেশাত্মক নীতির রূপায়ণের জন্য জমিদারি প্রথার বিলোপ সাধন করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে প্রশ্ন ওঠেছিল যে এটা সম্পত্তির অধিকারকে খর্ব করছে এবং ১৯৬৭ সালে গোলকনাথ মামলায় সুপ্রীম কোর্ট ঘোষণা করে যে মৌলিক অধিকার সংশোধন করা যায় না। কিন্তু ১৯৭৮ সালের ৪৪-তম সংশোধনীতে সম্পত্তির অধিকারকে মৌলিক অধিকারের তালিকা হতে বাতিল করা হয়।

সংসদ ২৪-তম সংশোধনী ও ২৫-তম সংশোধনীর মাধ্যমে গোলকনাথ মামলার সিদ্ধান্তকে অতিক্রম করে। সংবিধানের ২৫-তম সংশোধন অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের সঙ্গে নির্দেশাত্মক নীতির বিরোধ হলেও সংসদ নির্দেশাত্মক নীতি রূপায়ণ করে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা লাভ করে।

সংবিধানের ৪২-তম সংশোধন অনুযায়ী মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতির মধ্যে সম্পর্কের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মিনার্ভা-মামলায় প্রদান করে মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট। ১৯৮০ সালে মিনার্ভা মামলায় সুপ্রীম কোর্ট ঘোষণা করে যে মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতির মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে মৌলিক অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

সংবিধানের চতুর্থ অধ্যায়কে তৃতীয় অধ্যায়ের ‘ভগিনী অধ্যায়’ (Sister part) হিসাবে ধরা হয়। সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে মৌলিক অধিকার সমূহ লিপিবন্ধ করা হয়েছে যা নাগরিকের পৌর ও রাজনৈতিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে। কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার সম্পর্কে মৌলিক অধিকারে সুস্পষ্টভাবে আলোকপাত করা হয়নি। তাই সংবিধান প্রণেতাগণ অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধিকারকে সন্নিবেশিত করার জন্য চতুর্থ অধ্যায়ে কতিপয় নির্দেশাত্মক নীতি লিপিবদ্ধ করেন। মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতি একে অপরের পরিপূরক। সুতরাং এটা বলা যায় যে নির্দেশাত্মক নীতিগুলো মৌলিক অধিকারের ত্রুটিগুলো দূর করেছে। 

প্রশ্ন ১৩। রাষ্ট্রের নির্দেশাত্মক নীতিগুলোর সাংবিধানিক গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।  

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের চতুর্থ অধ্যায়ে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতিগুলো আদালত দ্বারা বলবৎ যোগ্য নয়। কিন্তু এইগুলো শাসনকার্য পরিচালনার মৌলিক নীতি হিসাবে স্বীকৃত ও গৃহীত। আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের এই নীতির সাহায্য গ্রহণ করা উচিত। নির্দেশাত্মক নীতিগুলোর বিশেষত্ব হল এই যে এগুলো ভারতের মতো রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। নির্দেশাত্মক নীতিগুলোতে কল্যাণকামী রাষ্ট্রের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও আদর্শ নিহীত আছে। 

নির্দেশাত্মক নীতিগুলো আইন বিভাগকে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বিচারবিভাগের পথও প্রদর্শন করে। এই নীতিগুলোর নৈতিক মূল্য ভারতীয় সংবিধানকে বিশেষ মর্যাদা। প্রদান করেছে।

নির্দেশাত্মক নীতিগুলো আদালত দ্বারা বলবৎ যোগ্য নয়। তবুও আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এদের উপযোগিতা রয়েছে। এই নীতিগুলোকে সংবিধানিক উপায়ে সরকার কার্যকর করতে পারে। নাগরিকগণের প্রতি রাষ্ট্রের কর্তব্য রয়েছে এবং তা নির্দেশাত্মক নীতিগুলো পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক নির্দেশক নীতিগুলো বর্তমানে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে।

প্রশ্ন ১৪। ভারতে সমাজতান্ত্রিক সমাজ গঠনের ভিত্তি স্বরূপ যে কোনো চারটি নির্দেশাত্মক নীতির উল্লেখ করো।

উত্তরঃ কতকগুলো নির্দেশাত্মক নীতি সমাজতান্ত্রিক আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত। 

এগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) রাষ্ট্র সকল কাজের জন্য ন্যায় ও সহানুভূতিশীল বাতাবরণের সৃষ্টি এবং মাতৃমঙ্গল প্রতিষ্ঠা করবে।

(খ) ভারতের সকল নাগরিকদের জন্য অভিন্ন দেওয়ানী বিধি প্রবর্তনের জন্য রাষ্ট্র সচেষ্ট থাকবে।

(গ) সরকার দুর্বলতর ও অনগ্রসর সম্প্রদায়সমূহের পূর্ণ বিকাশের জন্য সচেষ্ট থাকবে। 

(ঘ) রাষ্ট্র শাসন বিভাগ হতে বিচার বিভাগকে পৃথক রাখবার চেষ্টা করবে। 

প্রশ্ন ১৫। ভারতের সংবিধানে মৌলিক অধিকারগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কেন? চারটি কারণ দর্শাও।

উত্তরঃ মৌলিক অধিকার গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। 

এই অধিকারগুলো ভারতীয় সংবিধানে সন্নিবেশিত করার কারণগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) এগুলো জনগণের মূল অধিকার। 

(খ) এগুলো ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য একান্ত আবশ্যক।

(গ) এই অধিকারগুলো ব্যক্তির স্বাধীনতা রক্ষা করে এবং রাষ্ট্রকে স্বৈরাচারী হতে প্রতিহত করে।

(ঘ) এগুলো সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণ ও সুরক্ষা প্রদানে সহায়তা করে। 

(ঙ) এই অধিকারগুলো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি।

প্রশ্ন ১৬। মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য ভারতীয় সংবিধানে প্রদত্ত চারটি ব্যবস্থার উল্লেখ করো?

অথবা, 

মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের চারটি ব্যবস্থা লেখো?

উত্তরঃ সংবিধানের ৩২নং ধারায় মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য সাংবিধানিক বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোন ব্যক্তির মৌলিক অধিকার খর্ব হলে সেই ব্যক্তি তার প্রতিকারের জন্য সুপ্রীম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে। কোর্ট বন্দী প্রত্যক্ষীকরণ, পরমাদেশ, অধিকার পৃচ্ছা, উৎশ্লেষণ, প্রতিষেধ প্রভৃতি লেখ জারি করে মৌলিক অধিকারগুলো সংরক্ষণ করতে পারে। 

প্রশ্ন ১৭। মৌলিক অধিকারের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ মৌলিক অধিকার ভারতীয় গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই অধিকার ব্যতীত জনগণ তাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন করতে পারে না। ভারতীয় জনগণের ব্যক্তি স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সংবিধানে মৌলিক অধিকারগুলো সন্নিবেশিত করা হয়েছে। জাতি, ধর্ম, নির্বিশেষে সকল জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এই অধিকারগুলো একান্ত জরুরি। মৌলিক অধিকারগুলো ভারতীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি স্বরূপ বিবেচিত হয়। জনগণের সার্বিক বিকাশের জন্য এই অধিকারগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই অধিকার ব্যতীত গণতন্ত্রের কল্পনাই করা যায় না।

প্রশ্ন ১৮। মৌলিক অধিকারগুলোর সীমাবদ্ধতা আলোচনা করো?

অথবা, 

মৌলিক অধিকারগুলোর ত্রুটিগুলো কী কী? 

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলো চরম নয়। 

এইগুলোর উপর কতিপয় সীমাবদ্ধতা আছে। এই সীমাবদ্ধতাগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে কোন অর্থনৈতিক অধিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

(খ) স্বাধীনতা অধিকারের ক্ষেত্রে সরকার সমর্থনযোগ্য বাধা-নিষেধ আরোপ করতে পারেন।

(গ) কেন্দ্রীয় সংসদ মৌলিক অধিকার সংশোধন করতে পারে।

(ঘ) দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষিত হলে নাগরিকের কতিপয় মৌলিক অধিকার বাতিল হয়ে যায়। 

প্রশ্ন ১৯। ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৫-২৮ নং অনুচ্ছেদে ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারের বিষয় লিপিবন্ধ করা আছে। ভারতীয় নাগরিকগণ যে-কোন ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাস গ্রহণ, ধর্মবর্জন, ধর্মাচরণ বা পুজার্চনা বা উপাসনা করতে পারবে। ধর্ম প্রচারের অধিকারও সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত। সরকারি বা সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মশিক্ষা দেওয়া নিষিদ্ধ। রাষ্ট্রের কোন নিজস্ব ধর্ম নেই বা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ধর্মমতের কোন স্থান নেই। নৈতিকতা, জনস্বাস্থ্য, ও আইন-শৃঙ্খলার জন্য এই অধিকারের উপর কতিপয় বাধা-নিষেধ আরোপ করা যায়। 

প্রশ্ন ২০। ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৩ এবং ২৪নং অনুচ্ছেদ দুটিতে শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার ঘোষিত হয়েছে। কোনরূপ মজুরি না দিয়ে বা উপযুক্ত মজুরি না দিয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন ব্যক্তির নিকট হতে কার্য আদায় করা যাবে না। দাস ব্যবসা, বিনা মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য করা, বা অনুরূপভাবে বলপূর্বক যে কোন শ্রম আদায় করা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৪নং অনুচ্ছেদ মতে, ১৪ বৎসরের কম বয়স্ক শিশুদের কারখানা, খনি বা অন্য কোন বিপদজনক কার্যে নিযুক্ত করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মানুষ কেনা-বেচা, স্ত্রীলোকদের ব্যভিচার করতে বাধ্য করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। 

প্রশ্ন ২১। দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধানে উল্লেখিত নাগরিকদের যে-কোন চারটি অধিকার উল্লেখ করো?

উত্তরঃ দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধানে উল্লেখিত অধিকারগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) মর্যাদার অধিকার। 

(খ) উপযুক্ত বাসস্থানের অধিকার।

(গ) গোপনীয়তার অধিকার।

(ঘ) শিশুদের অধিকার।

প্রশ্ন ২২। ভারতীয় নাগরিকের চারটি মৌলিক কর্তব্য উল্লেখ করো?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪র্থ (ক) অংশে ৫১ (ক) অনুচ্ছেদে নাগরিকের মৌলিক কর্তব্যসমূহ লিপিবন্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা মোট এগারোটি। 

এই কর্তব্যসমূহ হতে চারটি নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ

(ক) সংবিধান মান্য করা; জাতীয় পতাকা ও জাতীয় প্রতীককে শ্রদ্ধা করা। 

(খ) ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে যে সকল মহান আদর্শ অনুপ্রাণিত করেছিল তা অনুসরণ ও পালন করা।

(গ) ভারতের সার্বভৌমত্ব, ঐক্য ও সংহতিকে রক্ষা করা। 

(ঘ) দেশ রক্ষা করা এবং প্রয়োজন বোধে সামরিক বাহিনীতে যোগদান করা।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top