Class 11 Political Science Chapter 3 নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 3 নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 3 নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব Solutions are free to use and easily accessible.
Class 11 Political Science Chapter 3 নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question in Bengali The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ভারতে কেন প্রথম প্রাক্তন পদ পদ্ধতি বা সাধারণ প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ভারতে সাধারণ প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি বা প্রথম প্রাক্তন পদ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এই পদ্ধতিকে ইংরাজিতে First past the Post পদ্ধতি বলা হয়।
ভারতে এই পদ্ধতি অনুসরণ করার কারণসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) এই পদ্ধতি অতি সহজ। সাধারণ মানুষ সহজেই এই পদ্ধতি বোঝতে পারে।
(খ) এই পদ্ধতি দেশের ঐক্য ও সংহতির সহায়ক।
(গ) সংসদীয় গণতন্ত্র সাফল্যের চাবিকাঠি। কারণ এই পদ্ধতি আইন সভায় একটি স্থায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে সক্ষম হয়।
প্রশ্ন ২। ভারতের সংবিধানে উল্লিখিত আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করো?
উত্তরঃ ব্রিটিশ সরকার বিশেষ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচক মণ্ডলী (Separate Electorate) ব্যবস্থার সূচনা করেছিল। এই ব্যবস্থায় কোন একটি বিশেষ গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় হতে প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে হলে, কেবলমাত্র সেই গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের লোকেরাই ভোটদাতা হিসাবে বিবেচিত হত। ভারতের সংবিধান সভার সদস্যরা এই ব্যবস্থাকে সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করতে রাজি হন নি। তাঁরা এর পরিবর্তে অনুন্নত অনুসূচীত জাতি ও জনজাতিদের জন্য সংরক্ষিত নির্বাচনী কেন্দ্র (Reserved Constituency) এর সূচনা করেন যেখানে নির্দিষ্ট নির্বাচনী কেন্দ্রের সকল ভোটদাতারাই ভোটদান করবে। তবে প্রার্থীকে কেবল সেই গোষ্ঠী বা জাতির হতে হবে যে জাতি বা গোষ্ঠীর জন্য আসনটি সংরক্ষিত করা হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানে অনুসূচীত জাতি ও জনজাতিদের জন্য লোকসভা, রাজ্যিক বিধানসভা ও স্থানীয় স্বায়ত্ত শাসন প্রতিষ্ঠানগুলিতে আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশ্ন ৩। ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকার একটি ধারণা দাও?
উত্তরঃ ভারতের নির্বাচন কমিশন একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য দুইজন সহাকারি নির্বাচন কমিশনার নিয়ে গঠিত। তাঁদের রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন কমিশনের সভাপতি। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও অন্য দুইজন সহকারি কমিশনারের কার্যকাল ৬ বৎসর।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন কমিশনের সভাপতি হলেও তাঁর ক্ষমতা অন্য দুই সহকারি কমিশনারদের চেয়ে অধিক নয়। তবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সুপারিশে রাষ্ট্রপতি অন্য দুই সহকারি কমিশনারকে অপসারণ করতে পারেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে অপসারিত করতে হলে অপসারণ সংক্রান্ত প্রস্তাব সংসদের উভয় কক্ষের মোট সদস্য সংখ্যার অধিকাংশ ও উপস্থিত ভোটদানকারী সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের দ্বারা সমর্থিত হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি তাঁকে অপসারণ করতে পারেন। এই অপসারণ পদ্ধতির জন্য আমরা বলতে পারি যে ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কার্যকালের সুনিশ্চয়তা আছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশন ভারতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারগণ স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন কার্য পরিচালনা করেন।
প্রশ্ন ৪। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয় চারটি বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো?
উত্তরঃ ভারতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয় চারটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ
(ক) স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনঃ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। এই কমিশনের উপর কোন সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত নয়।
(খ) শাসন যন্ত্রের অপব্যবহার রোধ করাঃ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শাসকদল কর্তৃক শাসন যন্ত্রের অপব্যবহার বন্ধ করা উচিত।
(গ) সার্বজনীন প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটাধিকারঃ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সার্বজনীন প্রাপ্ত বয়স্কের ভোটাধিকার প্রবর্তন করা প্রয়োজন। ভারতে এই ব্যবস্থা প্রচলিত আছে।
প্রশ্ন ৫। ভারতের নির্বাচন কমিশনের তিনটি কার্য উল্লেখ করো?
উত্তরঃ ভারতের সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন বিষয়ক কিছু দায়িত্ব ৩২৪ (১) ও ৩২৪(৬) ধারায় দেওয়া হয়েছে।
সেই অনুযায়ী কমিশনের তিনটি কার্য নিম্নরূপঃ
(ক) ভোটার তালিকা প্রণয়নঃ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলির নির্বাচন সংক্রান্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংশোধন।
(খ) পরিচয় পত্রপ্রদাননঃ কমিশন ভুয়ো ও জাল ভোট প্রদান বন্ধ করার জন্য ‘সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র’ প্রদানের দায়িত্ব হাতে নিয়েছে।
(গ) নির্বাচনী প্রতীক দানঃ কমিশন জাতীয় ও আঞ্চলিক দল নির্ধারণ করে স্বীকৃতি পূর্বক তাদেরকে নির্বাচনী ‘প্রতীক’ দান করে।
প্রশ্ন ৬। ভারতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য গৃহীত যে কোনো তিনটি পদক্ষেপ ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ভারতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
এই পদক্ষেপগুলির মধ্যে তিনটি নিম্নরূপঃ
(ক) বিজ্ঞপ্তি জারিঃ নির্বাচন কমিশন মনোনয়ন পেশ, মনোনয়ন পত্র পরীক্ষা, মনোনয়ন প্রত্যাহার, নির্বাচনের সময় সূচী ইত্যাদির উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
(খ) মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারঃ মনোনয়ন পত্র পরীক্ষার পর প্রার্থীদের তা প্রত্যাহারের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হয়। যদি কোন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক না হন, তাহলে সেই প্রার্থী তাঁর মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারেন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর্ব সমাপ্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেন।
(গ) ভোট প্রদানঃ নির্দিষ্ট দিনে ভোটারগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এই উদ্দেশ্যে কমিশন ই. ভি. এম ব্যবহার করে।
প্রশ্ন ৭। ভারতে নির্বাচনী ক্ষেত্রগুলির সীমানা কীভাবে নির্ধারিত করা হয়?
উত্তরঃ সমগ্র দেশের নির্বাচনী কেন্দ্রের সীমানা নির্ধারণের জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতি একটি স্বাধীন কমিশন নিয়োগ করেন, যার নাম ডিলিমিটেশন কমিশন। এই কমিশন ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের সহযোগিতায় তার কার্য সম্পাদন করে। ডিলিমিটেশন কমিশন নির্বাচনী ক্ষেত্রগুলির সীমানা নির্ধারণের পর এই কমিশন প্রতিটি কেন্দ্রে জনসংখ্যার বিন্যাস পর্যবেক্ষণ করে। যে নির্বাচনী কেন্দ্রে অনুসূচীত জনজাতির সংখ্যা সমানুপাতিক হারে বেশি, সেই কেন্দ্রটি অনুসূচীত জনজাতি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষণ করা হয়। অনুসূচীত জাতির ক্ষেত্রে কমিশন দুইটি বিষয় লক্ষ্য করে। প্রথমে নির্বাচনী কেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করে, যেখানে অনুসূচীত জাতির সংখ্যা বেশি। এরপর সেই কেন্দ্রগুলিকে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়। এটি করা হয় কারণ অনুসূচীত জাতি সাধারণত সমগ্র দেশেই ছড়িয়ে আছে। প্রত্যেক কমিশনের কার্যকালের সময়ে এই নির্বাচনী কেন্দ্রগুলি পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয়।
প্রশ্ন ৮। ভারতে কেন সাধারণ প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়?
অথবা,
ভারতে ‘প্রথম জনেই বিজেতা পদ্ধতি গ্রহণ করার দুটি কারণ উল্লেখ করো?
উত্তরঃ ভারতে সাধারণ প্রতিনিধিত্ব বা প্রথম প্রাক্তন পদ (First past the post) পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। ভারতের সংবিধানে এই পদ্ধতির উল্লেখ আছে।
এর প্রধান কারণসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) এই পদ্ধতি অতি সহজ সরল। সাধারণ মানুষ সহজেই এই পদ্ধতি বোঝতে পারে।
(খ) এই পদ্ধতিতে সাধারণভাবে সমগ্র জনগণের প্রতিনিধিত্ব স্থাপন করা সম্ভব হয়।তাই এই পদ্ধতি দেশের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার সহায়ক।
(গ) এই ব্যবস্থায় প্রতিনিধি ও নির্বাচক মণ্ডলীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
(ঘ) এই ব্যবস্থার সংসদীয় গণতন্ত্র সাফল্য লাভ করে। কারণ তা আইন সভায় একটি স্থায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রদান করে।
প্রশ্ন ৯। সাধারণ প্রতিনিধিত্ব (First- past-the-post) এবং সমানুপাতিক প্রতিনিধিদের মধ্যে তুলনামূলক পার্থক্য দেখাও।
অথবা,
সাধারণ প্রতিনিধিত্ব (First-Past-the-post) এবং সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ত্বের মধ্যে প্রভেদ দেখাও।
উত্তরঃ উভয় ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্যসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) সাধারণ প্রতিনিধিত্ব (FPTP) ব্যবস্থায় সমগ্র দেশকে ভৌগোলিক ভিত্তিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নির্বাচনী চক্র বা অঞ্চলে বিভাজিত করা হয়। কিন্তু সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় বিশাল ভৌগোলিক এলাকাকে নির্বাচনী চক্ররূপে নির্ধারণ করা হয়। সমগ্র দেশকে একটি নির্বাচনী চক্র বা এলাকা হিসাবেও গণ্য করা হতে পারে।
(খ) সাধারণ প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় প্রতি নির্বাচন চক্র বা এলাকা হতে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। সমানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থায় একটি নির্বাচনী চক্র বা এলাকা হতে একাধিক প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়।
(গ) সাধারণ প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে একজন প্রার্থীকে সংখ্যাধিক্য ভোট (৫০%+১) পাওয়ার প্রয়োজন হয় না। কেবল অন্য প্রার্থীদের চেয়ে অধিক ভোট পেতে হয়। কিন্তু সমানুপাতিক ব্যবস্থায় একজন প্রার্থীকে সংখ্যাধিক ভোট লাভ করতে হয়।
(ঘ) সাধারণ প্রতিনিধি ব্যবস্থায় একটি দল তাদের প্রাপ্ত ভোটের তুলনার অধিক আসন লাভ করতে পারে। যেমন ১৯৮৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভারতী জাতীয় কংগ্রেস ভোট পেয়েছিল ৪৮.০ শতাংশ, কিন্তু আসন লাভ করেছিল ৪১৫টি। কিন্তু সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বে একটি দল ভোটপ্রাপ্তির ভিত্তিতে আসন লাভ করে।
প্রশ্ন ১০। ভারতের নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার পরীক্ষামূলক আলোচনা করো?
উত্তরঃ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অপরিহার্য শর্ত হল নির্বাচন ব্যবস্থা। এই নির্বাচন ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ সংস্থা থাকা প্রয়োজন। ভারতীয় সংবিধানের ৩২৪নং ধারায় নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম পরিচালনা করার জন্য একটি স্বাধীন, স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে। এরই নাম নির্বাচন কমিশন।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের উপর গণতন্ত্রের সাফল্য নির্ভরশীল। তাই ভারতীয় সংবিধান প্রণেতাগণ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব আইন বা শাসন বিভাগের হাতে না দিয়ে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের হাতে দিয়েছেন। সংবিধানের ৩২৪(২) ধারানুসারে একজন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠিত হতে পারে। তবে সদস্য-বিশিষ্ট কমিশন গঠিত হলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সভাপতি হিসাবে কাজ করবেন। বর্তমানে তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন রয়েছে। রাষ্ট্রপতি কমিশনারদের ৬ বৎসরের জন্য নিয়োগ করেন।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের সংবিধানের ৩২৪(১) ও ৩২৪ (৬) ধারানুসারে বেশ কিছু দায়িত্ব আছে। সেগুলি হল-ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সংশোধন, পরিচয় পত্র প্রদান, নির্বাচন পরিচালনা, রাজনৈতিক দলগুলিকে স্বীকৃতি ও প্রতীক দান, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, সরকার, নির্বাচনে কর্তব্যরত কর্মচারী ও ভোটারদের আচরণ বিধি নির্ধারণ করা প্রভৃতি।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাজের সীমাবদ্ধতাও আছে। নির্বাচন কমিশনারদের যোগ্যতা ও কার্যকাল রাষ্ট্রপতি স্থির করেন। কিন্তু তা কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শেই করেন।অধিকও কমিশন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করেন। এর ফলে সরকারের শাসন যন্ত্রের প্রভাব থেকে যায়। বর্তমানে নির্বাচনে বিভিন্ন ব্যবস্থার যেমন- মাইক্রো-অবজারভার, ডিজিটেল ক্যামেরার ব্যবহার প্রভৃতি কমিশনের মর্যাদা অনেকখানি বৃদ্ধি করেছে।
প্রশ্ন ১১। ভারতে নির্বাচন কমিশনের গুরুত্ব আলোচনা করো?
অথবা,
ভারতে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আলোচনা করো?
উত্তরঃ দীর্ঘ দিন ধরে ভারতে নির্বাচন কমিশন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করে আসছে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে ভারতে নির্বাচন কার্য পরিচালনা করছে। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানটি ভারতীয় গণতন্ত্রের অত্যন্ত ক্ষমতাশালী এবং কার্যকরী প্রতিষ্ঠান।
ভারতের নির্বাচন কমিশন আজ পর্যন্ত ১৬টি লোকসভা, অনেক বিধানসভার সাধারণ নির্বাচন এবং লোকসভা ও বিধানসভার উপনির্বাচন পরিচালনা করেছে। এই নির্বাচন পরিচালনার সময়কাল পর্যালোচনা করে আমরা নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিম্নরূপ পাইঃ
(ক) নির্বাচন কমিশন উগ্রপন্থি অধ্যুষিত আসাম, পাঞ্জাব, জম্মু ও কাশ্মীর রাজাগুলিতে নানা অসুবিধার সম্মুখীন হয়েও নির্বাচন কার্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেছে।
(খ) ১৯৯১ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারকালে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী যখন আততায়ীর হাতে নিহত হন তখন সাধারণ নির্বাচন স্থগিত করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সেই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল।
(গ) ২০০২ সালে গুজরাট বিধানসভা ভঙ্গ হওয়ার পর সরকার নির্বাচন করতে আগ্রহী হলেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর ছিল না। বলে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করাতে রাজি হয় নি।
উপরের আলোচনা হতে এটাই বুঝা যায় যে ভারতের নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ভারতীয় গণতন্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ১২। আইনসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো?
উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের ৭৩-তম সংশোধনীর মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে স্থানীয় স্বায়ত্ত শাসন প্রতিষ্ঠানগুলিতে এবং ৭৪-তম সংশোধনীর মাধ্যমে শহরাঞ্চলের স্বায়ত্ত শাসন প্রতিষ্ঠানগুলিতে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানে লোকসভা ও রাজ্যিক বিধান সভাগুলিতে এখনও মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় নি। এই ধরনের আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন। তাই মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়। কিন্তু সেই বিলটি সংসদে খারিজ হয়ে যায়। ২০১০ সালের মার্চ মাসে পুনরায় সংসদে লোকসভা ও রাজ্যিক বিধানসভা গুলিতে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিল আনা হয়। এই বিলে লোকসভা ও রাজ্যিক বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সংসদের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভা এই বিলটি অনুমোদন করেছে। এই বিল অনুযায়ী লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ১৮১টি আসন এবং রাজ্যিক আইন সভাগুলির ৪,১০৯টি আসনের মধ্যে ১৩৭০টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করা হবে। কিন্তু বর্তমানে এই বিলটি লোকসভায় বিবেচনাধীন অবস্থায় আছে।
মহিলা সংরক্ষণ বিলের পক্ষে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ভারতীয় জনতা পার্টি এবং বামদলগুলি তাদের সমর্থন প্রদান করেছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় জনতা দল, সমাজবাদী পার্টি এবং জনতাদল (সংযুক্ত) এই বিলের বিরোধিতা করছে।
প্রশ্ন ১৩। আঞ্চলিক বা ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্ব বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনসভার সদস্যগণ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ব্যবস্থায় নির্বাচনের জন্য সমগ্র দেশকে কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় ভাগ করা হয় এবং প্রত্যেক এলাকা হতে সম-জনসংখ্যার। ভিত্তিতে এক বা একাধিক প্রতিনিধি সংখ্যাধিক্য ভোটে আইনসভায় নির্বাচিত হন। এই প্রকার প্রতিনিধিত্বের পক্ষে যুক্তি হল যে নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকার সকল ভোটারের স্বার্থই সমান। সুতরাং সামগ্রিক দৃষ্টিতে নির্দিষ্ট এলাকা হতে প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া গণতন্ত্রের পক্ষে মঙ্গলজনক। অধিকন্তু এই প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা অত্যন্ত সহজ ও সরল।
প্রশ্ন ১৪। আঞ্চলিক বা ভৌগোলিক পদ্ধতির পক্ষে এবং বিপক্ষে দুটি করে যুক্তি দাও?
উত্তরঃ আঞ্চলিক বা ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্বের স্বপক্ষে দুটি যুক্তি হল নিম্নরূপঃ
(ক) নির্দিষ্ট এলাকার সকল মানুষের স্বার্থ সমান। সুতরাং নির্দিষ্ট এলাকা হতে প্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া উচিত।
(খ) এই প্রকার প্রতিনিধিদের অত্যন্ত সহজ ও সরল বলে গণ্য করা হয়।
আঞ্চলিক বা ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্বের বিরুদ্ধেও কতিপয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মত পোষণ করেছেন।
আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের বিপক্ষে নিম্নোক্ত যুক্তিগুলো প্রদর্শন করা হয়ে থাকেঃ
(ক) আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব প্রকৃত গণতন্ত্রের ভিত্তি নয়।
(খ) আঞ্চলিক স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়।
প্রশ্ন ১৫। সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের লক্ষ্য কী? সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের দুজন বলিষ্ঠ সমর্থকের নাম লেখো।
উত্তরঃ সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মূল লক্ষ্য হল দেশের বিভিন্ন মতামত বা স্বার্থ তাদের শক্তি বা প্রভাব অনুযায়ী আইনসভায় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ সৃষ্টি করা। এর ফলে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বলিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন – জন স্টুয়ার্ট মিল (J. S. Mill) এবং লেকি (Lecky)।
প্রশ্ন ১৬। সংখ্যা লঘিষ্ঠ প্রতিনিধিত্বের পদ্ধতিসমূহ উল্লেখ করো?
উত্তরঃ সংখ্যা লঘিষ্ঠ প্রতিনিধিত্বের পদ্ধতিসমূহ নিম্নরূপঃ
(ক) সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব।
(খ) সীমাবদ্ধ ভোটপদ্ধতি।
(গ) স্তূপীকৃত ভোট পদ্ধতি।
(ঘ) দ্বিতীয় ব্যালট পদ্ধতি।
প্রশ্ন ১৭। ইস্রায়েলে কীভাবে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব অনুসরণ করা হয়?
উত্তরঃ ইস্রায়েলের নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের অনুসরণ করা হয়। প্রতি চার বৎসর পর পর ইস্রায়েলের পার্লামেন্ট ‘নাসেট’ – এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের দলীয় প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু নির্বাচকরা (ভোটাররা) প্রার্থীর ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচিত করেন না। তারা দলীয় ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচিত করেন। একটি রাজনৈতিক দল তাদের প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে আইন সভার আসন লাভ করে। এর ফলে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল আইন সভায় প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পায়। কেবল কোনও দলকে আইনসভায় আসন পেতে হলে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ ভোট পেতে হয়। এই জন্যই ইস্রায়েলে প্রায়ই বহুদলীয় কোয়ালিশন ব্যবস্থা দেখা যায়।
প্রশ্ন ১৮। প্রথম প্রাক্তন পদ প্রথা বা সাধারণ প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ প্রথম প্রাক্তন পদ পদ্ধতিকে একাধিকত্ব বা বহুত্ব (Plurality) পদ্ধতিও বলা হয়। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এই পদ্ধতিতে দেশের মোট নির্বাচক মণ্ডলীকে ভৌগোলিক ভাবে এলাকায় বিভক্ত করা হয়। এই এলাকাগুলোকে নির্বাচনী চক্র বলা হয়। প্রত্যেক নির্বাচনী চক্র হতে একজন প্রতিনিধি আইনসভায় নির্বাচিত করা হয়। একটি নির্বাচনী চক্রে বিভিন্ন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। যে প্রার্থী সর্বাধিক ভোট লাভ করে সেই প্রার্থী নির্বাচিত হয়। বিজয়ী প্রার্থীর সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের প্রয়োজন হয় না। এই পদ্ধতিকে প্রথম প্রাক্তন পদ পদ্ধতি বলা হয়।
প্রশ্ন ১৯। ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার যে কোনো চারটি দুর্বলতা উল্লেখ করো?
উত্তরঃ ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার চারটি দুর্বলতা হলোঃ
(ক) ভারতের নির্বাচন কমিশনের কর্মী সংখ্যা খুবই সীমিত। কমিশন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর্মচারিদের সাহায্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। তাই অনেক সময় নির্বাচনে শাসক দল কর্তৃক শাসনযন্ত্রের অপব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।
(খ) অর্থবলের অপব্যবহারঃ নির্বাচনে হিসাব বহির্ভূত অর্থের ব্যবহার মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। ভারতে নির্বাচনের সময় অসাধু প্রার্থীরা অর্থের বিনিময়ে গরীব ভোটারদের ভোট ক্রয় করে নির্বাচনে জয়লাভ করে। ধনবান প্রার্থীরা দরিদ্র এলাকায় মদ, কম্বল, কাপড় ইত্যাদি বিতরণ করে গরীব ভোটারদের ভোট নিজেদের অনুকূলে আনতে সক্ষম হয়।
(গ) বাহুবলের ব্যবহারঃ ভারতে নির্বাচনের সময় অধিক মাত্রায় বাহুবলের ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। বাহুবলীদের সাহায্যে অসাধু প্রার্থীরা বুথ দখল, ভুয়ো ভোটদান প্রভৃতি দুষ্কর্ম সংঘটিত করে। যার ফলস্বরূপ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত হয়। তাছাড়া আজকাল বাহুবলী অপরাধীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
(ঘ) সাধারণতঃ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলই জাতি, ধর্ম ইত্যাদির ভিত্তিতে প্রার্থীদের দলীয় টিকিট প্রদান করে। নির্বাচনের সময় জাতি বা ধর্মের ভিত্তিতে জোরদার প্রচার হয়। সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়। এর ফলস্বরূপ নির্বাচনী প্রচারে উন্নয়নমূলক বিষয়গুলোর গুরুত্ব হ্রাস পায়।
উপরোক্ত ত্রুটিগুলো দূর করার জন্য নির্বাচনী সংস্কারের আরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসকল ত্রুটি বা দুর্বলতা দূর করা একান্ত আবশ্যক।
প্রশ্ন ২০। ভারতে নির্বাচন সংস্কারের জন্য চারটি পরামর্শ দাও?
উত্তরঃ ভারতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য নির্বাচন ব্যবস্থায় নিম্নোক্ত সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা উচিত।
(১) নির্বাচনে প্রার্থীদের অর্থবলের অপব্যবহার কঠোর হস্তে নিয়ন্ত্রণ করা।
(২) অপরাধমূলক মামলায় জড়িত প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে অনুমতি না দেওয়া।
(৩) জাতি, ধর্ম বা অন্য কোনো উপায়ে প্রার্থীরা ভোটারকে যাতে প্রভাবিত করতে না পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(৪) ভারতের নির্বাচন কমিশনের কর্মী সংখ্যা খুবই সীমিত। কমিশন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের সাহায্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। তাই অনেক সময় নির্বাচনে শাসক দল কর্তৃক শাসনযন্ত্রের অপব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সংস্থা। নির্বাচনে শাসনযন্ত্রের অপব্যবহার যাতে না হয় নির্বাচন কমিশনের সেদিকে কঠোর দৃষ্টি রাখা।
প্রশ্ন ২১। আমাদের একটি স্বাধীন নির্বাচন আয়োগের প্রয়োজন কেন ব্যাখ্যা করো?
উত্তরঃ সুন্দর এবং সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনার একটি স্বাধীন নির্বাচন আয়োগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের ৩২৪নং ধারা ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থা পরিচালনা করা, নিয়ন্ত্রণ করা এবং নীতি নির্ধারণ করার জন্য আমাদের একটি স্বাধীন নির্বাচন আযোগের নিযুক্তি দিয়েছে। ভারতীয় নির্বাচন আয়োগ এক সদস্য বিশিষ্ট বা বহুসদস্য বিশিষ্ট হতে পারে। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এক সদস্য বিশিষ্ট ছিল। প্রধান নির্বাচনী আয়ুক্ত নির্বাচন আয়োগ পরিচালনা করলেও অন্যান্য আয়ুক্তদের চেয়ে বেশি ক্ষমতার অধিকারী নন। প্রধান আয়ুক্ত এবং অন্য দুই আয়ুক্ত সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি যৌথমঞ্চ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রীসভার পরামর্শ অনুসারে এদেরকে নিয়োগ করেন। তাই শাসকদল তাদের পছন্দের লোক আযোগে নিয়োগ করার সুযোগ পায়। অনেকেই পরামর্শ দিচ্ছেন নিয়োগের ক্ষেত্রে বিরোধী পক্ষের নেতা এবং মুখ্য ন্যায়াধীশের পরামর্শ থাকা আবশ্যক। সংবিধান নির্বাচন আয়োগের কার্যকালের নিরাপত্তার স্বীকৃতি দিয়েছে।
দীর্ঘকাল ধরে নির্বাচন আযোগ একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করছে। নির্বাচন পদ্ধতির পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য আমাদের একটি স্বাধীন নির্বাচন আযোগের প্রয়োজন আছে।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। নির্বাচনের বিভিন্ন পদ্ধতিগুলি কী কী?
উত্তরঃ ভোটারগণ প্রধানত তাদের প্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ এই দুভাবে নির্বাচিত করেন। প্রত্যক্ষ নির্বাচনে ভোটারগণ প্রত্যক্ষভাবে তাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচন করেন এবং পরোক্ষ নির্বাচনে ভোটারগণ তাদের প্রতিনিধিদের পরোক্ষভাবে নির্বাচন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচনের বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে।
নির্বাচনের এই বিভিন্ন পদ্ধতিগুলো নিম্নরূপঃ
(ক) প্রথম প্রাক্তন পদ পদ্ধতি বা সাধারণ প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি (First Past the post system): প্রথম প্রাক্তন পদ পদ্ধতি বা First past the post পদ্ধতি বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রই গ্রহণ করেছে। এই পদ্ধতিতে দেশের মোট নির্বাচক মণ্ডলীর ভৌগোলিকভাবে বিভাজিত করা হয়। এই এলাকাগুলোকে নির্বাচনী চক্র বলে। প্ৰত্যেক নির্বাচনী চক্র হতে একজন প্রতিনিধি আইন সভায় নির্বাচিত হন। নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যে প্রার্থী সর্বাধিক ভোট পায় সেই প্রার্থী নির্বাচিত হয়। বিজয়ী প্রার্থীর সংখ্যাধিক্য ভোটের প্রয়োজন হয় না।
(খ) আঞ্চলিক বা ভৌগোলিক প্রতিনিধিত্বঃ আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইন সভাই জনগণের প্রতিনিধি সভা। বর্তমানে পৃথিবীর বেশির ভাগ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভৌগোলিক বা আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের (Territorial Representation) ব্যবস্থ স্বীকৃতি লাভ করেছে। নির্বাচনের জন্য পুরো দেশকে কয়েকটি নির্বাচনী এলাকার বিভাজিত করা হয় এবং প্রত্যেক এলাকা হতে সম-জনসংখ্যার ভিত্তিতে এক বা একাধিক প্রতিনিধি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে আইন সভায় নির্বাচিত হন। আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতি অতি সহজ ও সরল পদ্ধতি। অবশ্য সাম্প্রতিককালে কয়েকজন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্বের সমালোচনা করেছেন।
(গ) বৃত্তিগত প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিঃ বৃত্তিগত প্রতিনিধিত্ব (Functional Representation) পদ্ধতিতে প্রতিনিধিগণ সমাজের বিভিন্ন বৃত্তি বা পেশাভুক্ত গোষ্ঠীর দ্বারা আইন সভায় নির্বাচিত হন। বৃত্তিমূলক প্রতিনিধিত্বের ধারণা ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের সময় মিরাব্যু (Mirabeau) নামক বিখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী সর্বপ্রথম প্রদান করেছিলেন। সমিতি প্রধান সমাজতন্ত্রবাদ (Guild Socialism) এই পদ্ধতির প্রকৃত সমর্থক।
(ঘ) সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্বঃ গণতন্ত্র জনগণের শাসন ব্যবস্থা। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রতিনিধিই শাসন ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত হন। ফলে সংখ্যালঘু স্বাধ উপেক্ষিত হয়। জন স্টুয়ার্ট মিলের মতে, “সংখ্যালঘিষ্ঠের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব গণতন্ত্রে র অপরিহার্য অঙ্গ।”
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.