Class 11 Political Science Chapter 4 সংসদীয় সরকারের কার্যপালিকা

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Political Science Chapter 4 সংসদীয় সরকারের কার্যপালিকা, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 4 সংসদীয় সরকারের কার্যপালিকা The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 4 সংসদীয় সরকারের কার্যপালিকা Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Political Science Chapter 4 সংসদীয় সরকারের কার্যপালিকা

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question in Bengali The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.

প্রশ্ন ৩৪। ভারতীয় সংবিধানে উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্ধারণ করা যে কোনো দুটি যোগ্যতা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ সংবিধানের ৬৩নং ধারা অনুসারে একজন উপরাষ্ট্রপতি থাকবেন। 

উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য নির্ধারণ করা যোগ্যতাসমূহের মধ্যে দুটি যোগ্যতা নিম্নরূপঃ

(ক) তাঁকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।

(খ) তাঁকে কমপক্ষে ৩৫ বছর বয়ছ হতে হবে।

(গ) তাঁর রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে। 

প্রশ্ন ৩৫। ভারতীয় সংবিধানে কোনো রাজ্যের রাজ্যপাল পদের জন্য নির্ধারণ করা যে কোনো দুটি যোগ্যতা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ কোনো রাজ্যের রাজ্যপাল হওয়ার জন্য ভারতীয় সংবিধানে নিম্নলিখিত যোগ্যতাসমূহের উল্লেখ করা হয়েছেঃ

(ক) তাঁকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।

(খ) তাঁকে কমপক্ষে ৩৫ বছর বয়স্ক হতে হবে। এবং

(গ) তিনি কোনো লাভজনক পদে বহাল থাকবেন না। 

প্রশ্ন ৩৬। ভারতের অসামরিক সেবার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো?

উত্তরঃ ভারতের অসামরিক সেবার দুটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ

(ক) যোগ্যতা এবং মেধা নিয়োগের মাপকাঠি। 

(খ) এটি অরাজনৈতিক এবং স্থায়ী কর্ম পরিষেবা।

প্রশ্ন ৩৭। সংশোধনী আইন (২০০৩) কীভাবে মন্ত্রী পরিষদের আকার সীমাবদ্ধ করেছিল? 

উত্তরঃ ৯১তম সংশোধনী আইন (২০০৩) এর আগে, মন্ত্রীসভার আকার ঠিক করা হত জরুরী অবস্থা বা পরিস্থিতির প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে। কিন্তু এতে মন্ত্রীসভার আকার অনেক বড় হয়ে যেত। তাছাড়া, কোন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে, সংসদ সদস্যদের সমর্থন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দলের সদস্যদেরকে মন্ত্রীপদ দেওয়া হত যার ফলে মন্ত্রীসভার আকার বড় হয়ে যেত। মন্ত্রীসভার সদস্য সংখ্যার ব্যাপারে কোন সীমাবদ্ধতা ছিল না। তাই ৯১তম সংশোধনীর মাধ্যমে রাজ্যিক এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার আকার নির্ধারিত হয়। এই সংশোধনী আইনে লোকসভার সর্বমোট আসন সংখ্যার ১৫ শতাংশের বেশি মন্ত্রীসভার সদস্য হতে পারেন না। রাজ্যের ক্ষেত্রে বিধানসভার সর্বমোট আসনের ১৫ শতাংশের বেশি রাজ্যিক মন্ত্রীসভার সদস্য হতে পারেন না।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ভারতের রাষ্ট্রপতি কীভাবে নির্বাচিত হন? 

উত্তরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতি পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে একক হস্তান্তরযোগ্য ভোট দ্বারা সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে নির্বাচিত হন। সংবিধানের ৫৪নং দ্বারা (Article 54) অনুযায়ী ভারতীয় সংসদের উভয়কক্ষের নির্বাচিত সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য একটি নির্বাচন সংস্থা গঠিত হয়। এই নির্বাচন সংস্থা নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে। মনোনীত সদস্যগণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন না। 

একক হস্তান্তরযোগ্য ভোট দ্বারা সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে একজ রাজ্যিক বিধানসভার সদস্যের (MLA) এবং একজন সাংসদ (M.P) এর ভোটসংখ্যা নিম্নরূপঃ 

একজন বিধায়কের ভোট = সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জনসংখ্যা / সেই রাজ্যের মোট বিধায়ক সংখ্যা % ১০০০

(অবশিষ্ট ৫০০ বা এর অধিক হলে ভাগফলের সঙ্গে ১ যোগ হবে।) একজন সাংসদের ভোট = সকল বিধায়কের মোট ভোট / মোট সাংসদ সংখ্যা (অবশিষ্ট ভাজকের অর্ধেক বা অর্ধেক হতে অধিক হলে ভাগফলের সঙ্গে ১ যোগ হবে)।

প্রশ্ন ২। রাষ্ট্রপতিকে কে নির্বাচন করেন?

উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের ৫৪নং অনুচ্ছেদ (Article 54) মতে ভারতীয় সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচিত সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভার নির্বাচিত সদস্যগণকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের-জন্য একটি ‘নির্বাচন সংস্থা” গঠিত হয়। এই নির্বাচন সংস্থা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন করে।

প্রশ্ন ৩। ভারতের উপরাষ্ট্রপতি কীভাবে নির্বাচিত হন? 

উত্তরঃ সংবিধানের ৬৬নং অনুচ্ছেদ (Article 66 ) মতে ভারতীয় সংসদের উভয়কক্ষের সদস্যদের নিয়ে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য একটি ‘নির্বাচন সংস্থা” গঠিত হয়। এই নির্বাচন সংস্থা উপরাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন করে। উপরাষ্ট্রপতি পরোক্ষ পদ্ধতিতে একক হস্তান্তর যোগ্য ভোট দ্বারা সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে নির্বাচিত হন। 

রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভার সদস্যগণ উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন না। 

প্রশ্ন ৪। বংশানুক্রমিক (Hereditary) এবং নির্বাচিত কার্যপালিকার মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করো।

উত্তরঃ বংশানুক্রমিক কার্যপালিকা ক্ষমতা প্রয়োগ করে বংশগতি নীতির উপর ভিত্তি করে। বংশানুক্রমিক কার্যপালিকার উদাহরণ হিসাবে ব্রিটেনের রাণীকে উল্লেখ করা যায়। নির্বাচিত কার্যপালিকার উদাহরণ হল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি। তিনি জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হন। বংশানুক্রমিক কার্যপালিকা উত্তরাধিকারসূত্রে স্থির হয়। এই ক্ষেত্রে বংশ বা জন্মগত পরিচয়ই প্রধান। নির্বাচিত কার্যপালিকার ক্ষেত্রে নির্বাচন মূল ভিত্তি। এই কার্যপালিকা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জনগণ দ্বারা নির্বাচিত। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সাধারণ বংশানুক্রমিক কার্যপালিকাকে আনুষ্ঠানিক (formal) বা নিয়মতান্ত্রি ক প্রধান হিসাবে শাসন ক্ষমতা প্রয়োগ করতে দেখা যায় কিন্তু নির্বাচিত কার্যপালিকা শাসন ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রকৃত (Real) রাষ্ট্রপ্রধান। নির্বাচিত কার্যপালিকার কার্যকাল একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আবদ্ধ। কিন্তু বংশানুক্রমিক কার্যপালিকার কার্যকাল সেই কার্যপালিকার জীবনকাল ব্যাপীয়া। 

প্রশ্ন ৫। রাজনৈতিক কার্যপালিকা ও স্থায়ী কার্যপালিকার মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

উত্তরঃ রাজনৈতিক কার্যপালিকা অস্থায়ী। এই প্রকার কার্যপালিকা নির্বাচনের মাধ্যমে সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। স্থায়ী কার্যপালিকা নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয় না। তাই এর কার্যকালও নির্বাচনের ফলাফলের উপর নির্ভরশীল নয়। সরকারী আমলাগণ ও সরকারী আধিকারিকগণ স্থায়ী কার্যপালিকার উদাহরণ।

প্রশ্ন ৬। রাষ্ট্রপতির বিচার-বিষয়ক ক্ষমতা সম্পর্কে একটি টীকা লেখো?

উত্তরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতির কতকগুলি বিচার-বিষয়ক ক্ষমতা আছে। সুপ্রীমকোট ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতিগণকে তিনি নিয়োগ করেন। তিনি ভারতের এটর্নি জেনারেল (Attorney-General of India) সহ কেন্দ্রীয় সরকারের আইন দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকগণকে নিয়োগ করেন। 

রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে ভারতের রাষ্ট্রপতি আদালত কর্তৃক দণ্ডিত অপরাধীকে ক্ষমা প্রদান করতে পারেন। গুরুতর শাস্তিকে লঘুতর করার ক্ষমতাও রাষ্ট্রপতির আছে। তিনি মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত অপরাধীকে ক্ষমা করতে পারেন।

প্রশ্ন ৭। ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের আলোচনা করো?

উত্তরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতি ভারতীয় সংসদীয় ব্যবস্থার সাংবিধানিক প্রধান। তাঁর অধিকাংশ ক্ষমতাই আনুষ্ঠানিক এবং নিয়মতান্ত্রিক। অপরপক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বস্তুত ভারতের সংসদীয় ব্যবস্থার সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাশালী ব্যক্তিত্ব।

ভারতীয় গণতন্ত্রে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির প্রধান পরামর্শদাতা। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদ ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে সংযোগ রক্ষা করেন। শাসন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দেন। রাষ্ট্রের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সর্বদা রাষ্ট্রপতিকে খবরাখবর প্রদান করেন।

ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে বহুবার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই তাঁদের মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ অনুসারে কাজ করতে বাধ্য। তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বাধীন মন্ত্রী পরিষদের সঙ্গে দেশের শাসন সংক্রান্ত সকল বিষয় আলোচনা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীপরিষদকে উৎসাহ প্রদান করেন এবং প্রয়োজনে রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার্থে সতর্কও করেন। 

প্রশ্ন ৮। কাকে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন?

উত্তরঃ সংবিধান অনুযায়ী ভারতে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সংসদীয় পদ্ধতির ব্যবস্থায় ভারতের রাষ্ট্রপতি নিয়মতান্ত্রিক কার্যপালিকা এবং প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত কার্যপালিকা।

ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে নিযুক্ত করেন। তিনি নিজ পছন্দ অনুসারে যে কোনো ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করতে পারেন না। তিনি লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করেন।

এই সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতা সংসদের যে কোনো কক্ষের সদস্য হতে পারেন। আবার সংসদের সদস্য নাও হতে পারেন। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ওই নেতাকে ছয়মাসের ভেতর সংসদের যে কোনো কক্ষের সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হতে হবে। ভারতের পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন এবং এইচ, ডি. দেবগৌড়া যখন প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হন তখন তিনি সংসদের সদস্য ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি রাজ্যসভার সদস্য হয়েছিলেন। সুতরাং রাষ্ট্রপতি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতাকেই প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন। 

প্রশ্ন ৯। ভারতের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর যোগ্যতাগুলো কী কী?

উত্তরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর যোগ্যতাসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) তাঁকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।

(খ) তাঁর বয়স অন্তত পক্ষে ৩৫ বছর হতে হবে। 

(গ) তাঁর সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।

(ঘ) তিনি কোন লাভজনক কার্যে নিযুক্ত থাকতে পারবেন না।

(ঙ) রাজ্যসভার সদস্যপদ প্রার্থীর যোগ্যতা থাকতে হবে। অবশ্য তিনি সংসরে সদস্য হতে পারবেন না। 

প্রশ্ন ১০। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদের যে-কোন চারটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো?

উত্তরঃ ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদের বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ 

(ক) ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী।

(খ) ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদে সাধারণতঃ তিন ধরনের মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এগুলি হল- পূর্ণ মন্ত্রী, রাজ্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী।

(গ) ভারতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদ তাঁদের নীতি ও কার্যের জন্য যৌথভাবে আইনসভার নিম্নকক্ষ লোকসভার নিকট দায়বদ্ধ থাকে। প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় সংখ্যাগৰিষ্ঠতা হারালে প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীপরিষদেরও পতন ঘটে।

(ঘ) সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য মন্ত্রীপরিষদের সদস্য হতে পারেন। 

প্রশ্ন ১১। “রাষ্ট্রপতি সংসদের অবিচ্ছেদ্য অংশ।” তুমি কি মন্তব্যটির সঙ্গে একমত? কেন? 

উত্তরঃ “রাষ্ট্রপতি সংসদের অবিচ্ছেদ্য অংশ।” – এই মন্তব্যের সঙ্গে আমি একমত। রাষ্ট্রপতি সংসদের সদস্য নন। তথাপি তিনি সংসদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। 

এর কারণসমূহ নিম্নরূপঃ 

(ক) রাষ্ট্রপতি এবং লোকসভা ও রাজ্যসভা নিয়ে সংসদ গঠিত।

(খ) রাষ্ট্রপতি সংসদের অধিবেশন আহ্বান করতে পারেন ও স্থগিত রাখার পারেন। তিনি লোকসভা ভেঙ্গেও দিতে পারেন। 

(গ) রাষ্ট্রপতি রাজ্যসভার ১২জন সদস্যকে সাহিত্য, বিজ্ঞান, কলা, সমাজসেবা প্রভৃতি বিষয়ে পারদর্শী ব্যক্তিগণের মধ্য হতে মনোনীত করেন। 

(ঘ) লোকসভায় নির্বাচিত হয়ে আসা সদস্যদের মধ্য ঈঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি না থাকলে ভারতের রাষ্ট্রপতি লোকসভায় ২ জন ঈঙ্গ-ভারতীয় সদস্য মনোনীত করতে পারেন।

(ঙ) রাষ্ট্রপতি সংসদের উভয় সভায় ভাষণ দিতে পারেন এবং বাণী (message) প্রেরণ করতে পারেন।

(চ) সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত বিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতির একান্ত প্রয়োজন। তিনি সম্মতি প্রদান করলে বিল আইনে পরিণত হয়। তিনি সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত বিলে সম্মতি প্রদান করতে পারেন, অথবা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরৎ পাঠাতে পারেন অথবা ভেটো প্রয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ সম্মতি না দিয়ে বিলটিকে আটকে রাখতে পারেন। কিন্তু পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরৎ পাঠানো বিল পুনরায় সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হলে তিনি সম্মতি দিতে বাধা থাকেন।

(ছ) সংসদের অধিবেশন বন্ধ থাকাকালীন রাষ্ট্রপতি ১২৩নং ধারা মতে ‘অধ্যাদেশ’ (ordinance) জারি করতে পারেন। এই আইন সংসদ প্রণীত আইনের মতোই বলবৎ হয়। এই অধ্যাদেশ জরুরি প্রয়োজন ভিত্তিতে জারি করা হয়। সংসদের অধিবেশন বসবার ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এই আইনের কার্যকাল থাকে যদি না তার আগেই তা বাতিল করে দেওয়া হয়। আবার রাষ্ট্রপতি এই জরুরি আইন প্রত্যাহার করেও নিতে পারেন। 

প্রশ্ন ১২। ভারতের রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক পদ মর্যাদা সম্পর্কে একটি টীকা লেখো? 

অথবা, 

ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান কে? তাঁর সাংবিধানিক পদমর্যাদা সংক্ষেপে আলোচনা করো?

উত্তরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি নিয়মতান্ত্রিক শাসক তথাপি ভারতীয় সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় তাঁর গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেন। রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার প্রতীক স্বরূপ।

সংসদে যখন কোনো দল বা জোট সুস্পষ্ট সংখ্যাধিক্য অর্জন করতে পারে না তখন দেশকে প্রধানমন্ত্রী দেওয়ার জন্য তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। রাষ্ট্রপতির নামেই ভারতের শাসনকার্য পরিচালিত হয়। রাষ্ট্রপতি সংসদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভারতের রাষ্ট্রপতি ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার নীতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক রাষ্ট্রপ্রধান। রাষ্ট্রপতি প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারী নন। মন্ত্রীসভার উপদেশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তাঁর কার্য সম্পাদন করেন। 

প্রশ্ন ১৩। ভারতের রাষ্ট্রপতির ভেটো ক্ষমতা সম্পর্কে লেখো? 

উত্তরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতির সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত বিলগুলির উপর ভোটো প্রয়োগের ক্ষমতা আছে। তিনি তিন ধরনের ভোট প্রয়োগ করতে পারেন। 

এগুলো হল- 

(ক) চরম ভেটোঃ রাষ্ট্রপতি সংসদ অনুমোদিত বিলের সম্মতি প্রদান স্থগিত রাখতে পারেন। সাধারণত তিনি সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত বেসরকারি বিলের ক্ষেত্রে এই ভোটো প্রয়োগ করতে পারেন। বাস্তবে তিনি মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ ক্রমেই এই ভেটো প্রয়োগ করে থাকেন।

(খ) সাময়িক ভেটোঃ এই ভেটো প্রয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত বিলটিকে সম্মতি না দিয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে পাঠাতে পারেন। যদি সংসদ পুনরায় অনুমোদন করে পাঠায়, তখন রাষ্ট্রপতি সেই বিলে সম্মতি প্রদান করেন।

(গ) পকেট ভেটোঃ ভারতের সংবিধানে সংসদ অনুমোদিত বিলে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সম্মতি প্রদানের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় সীমার উল্লেখ করা হয়নি। তাই তিনি সংসদ অনুমোদিত বিল ভেটো প্রযোগের মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ সম্মতি না দিতে পারেন। ১৯৮৬ সালে তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি জ্ঞানী জৈল সিংহ পোষ্টাল বিলের ক্ষেত্রে এই ভেটো প্রয়োগ করেছিলেন। কিন্তু যদি মন্ত্রী পরিষদের সংসদে শক্তিশালী অবস্থান থাকে, তবে রাষ্ট্রপতি এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে কোন অসুবিধার সম্মুখীন হন না। 

প্রশ্ন ১৪। লোকসভার নেতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা ব্যাখ্যা করোঃ

উত্তরঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী লোকসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বা জোটের নেতা। তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদ ও সংসদের মধ্যে যোগাযোগ সংস্থাপন করেন। তিনি শাসক দলের নেতা হিসেবে সংসদে তাঁর দল বা জোটের নীতিকে সমর্থন করেন। তিনি লোকসভায় বিরোধী পক্ষের সকল প্রশ্নের জবাব দেন। লোকসভার তাঁর দল বা জোটের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন তাঁকে অত্যন্ত শক্তিশালী করে তোলে। কারণ প্রধানমন্ত্র নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীপরিষদ যৌথভাবে সংসদের প্রতিনিধি রূপে দেশ শাসন করেন। প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বাধীন মন্ত্রীপরিষদ যৌথভাবে লোকসভার নিকট দায়বদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত মন্ত্রী পরিষদের অস্তিত্ব নেই। তাই প্রধানমন্ত্রীকেই লোকসভায় প্রধানত বিরোধীপক্ষের জবাব দিতে হয়। সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার সদস্যাগণ দেশের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের দ্বারা প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। তাই লোকসভায় প্রধানমন্ত্রী নিজেকে জাতি তথা দেশের নেতা হিসেবে তোলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় আস্থা হারালে প্রধানমন্ত্রীর পদও হারান। তাই প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় বিরোধী পক্ষের সকল প্রশ্নের উত্তর দেন। লোকসভায় তাঁর নেতৃত্ব নির্ভর করে তাঁর ব্যক্তিত্বের উপর। 

প্রশ্ন ১৫। জাতির নেতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা আলোচনা করো।

অথবা, 

জাতির মুখপাত্র হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ প্রধানমন্ত্রী জাতি তথা সমগ্র দেশের নেতা। তিনি জাতির মুখপাত্র স্বরূপ কার্য করেন। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি জাতির প্রতিনিধিত্ব করেন। তিনি জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে জাতির পক্ষে বক্তব্য রাখেন। সরকারের প্রধান হিসাবে তিনি জাতির কল্যাণে দেশের বৈদেশিক নীতি গ্রহণ ও পরিচালনা করেন। প্রধানমন্ত্রী জাতির স্বার্থে রাষ্ট্রীয় ও আন্তরাষ্ট্রীয় নীতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। দেশের জনগণের বিপদকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণের পাশে দাঁড়ান। জাতির পথ প্রদর্শক হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতির নেতা হিসাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তিনি ভারতের মর্যাদা রক্ষা করেন। প্রধানমন্ত্রী ভারত সরকার তথা জাতির প্রধান প্রবক্তা। 

প্রশ্ন ১৬। ইউনিয়ন পাব্লিক সার্ভিস (Union Public Service Commission) এর গঠন প্রণালী ব্যাখ্যা করো?

অথবা, 

কেন্দ্রীয় লোকসেবা আয়োগ (Union Public Service Commission) এর গঠন প্রণালী ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ কেন্দ্রীয় লোকসভা আয়োগ (UPSC) ভারত সরকারের একটি অরাজনৈতিক সংস্থা যার প্রধান কাজ হচ্ছে ভারত সরকারের পক্ষে আমলাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করা। এই সংস্থা ভারতের সংবিধানের ৩১৫নং ধারা (Article 315) অনুযায়ী গঠন করা হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি এই আয়োগের সভাপতি ও সদস্যদের নিযুক্ত করেন। তাদের কার্যকাল সাধারণত হয় বছর। ৬৫ বছর বয়সে তারা কার্য হতে অবসর গ্রহণ করেন। 

প্রশ্ন ১৭। কেন্দ্রীয় লোকসেবা আয়োগের যে কোনো চারটি কার্য লেখো? 

উত্তরঃ কেন্দ্রীয় লোকসেবা আয়োগ (UPSC)-র চারটি কার্য হল নিম্নরূপঃ

(ক) কেন্দ্রীয় সরকারকে আমলা বা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া। আমলানের নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়মনীতি সম্পর্কে উপদেশ দান। 

(খ) সরকারি আমলাদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও বদলি সংক্রান্ত উপদেশ দান।

(গা) সরকারি আমলাদের শৃঙ্খলাভঙ্গ সংক্রান্ত বিষয়ে গৃহীত ব্যবস্থানি সম্পর্কে উপদেশ দান।

(ঘ) সরকারি আমলা সংক্রান্ত যে কোনো বিষয় সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি পরামর্শ চাইলে তাকে সেই ব্যাপারে পরামর্শ দান। 

প্রশ্ন ১৮। কার্য নির্বাহকের পাঁচটি কার্য উল্লেখ করো।

উত্তরঃ আধুনিক রাষ্ট্র জনকল্যাণমূলক বিবিধ কার্য সম্পাদন করে। কার্য নির্বাহকের প্রধান কার্যাবলী নিম্নরূপঃ

(ক) কার্য নির্বাহকের প্রধান কার্য হল দেশের আভ্যান্তরীণ শাসন কার্য পরিচালনা করা। আইন সভা কর্তৃক প্রণীত আইনানুসারে দেশকে পরিচালনা করা। আভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, বিভিন্ন কর্মচারী নিয়োগ, সরকারি কর্মচারীদের জন্য নিয়ম-নীতি চালু প্রভৃতি সম্পাদন করা কার্যনির্বাহকের প্রধান কার্য।

(খ) বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা কার্য নির্বাহক অর্থাৎ শাসন বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্য। বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সত্ত্বাব ও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে কার্য নির্বাহক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

(গ) অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করা বা যুদ্ধ পরিচালনা করা কার্যনির্বাহকের কার্য। দেশের স্থল, জল ও বায়ু সেনা কার্য নির্বাহকের অধীনে থাকে। 

(ঘ) কার্য নির্বাহক দেশের আইন সভার অধিবেশন আহ্বান বা স্থগিত রাখতে পারেন। আইনসভার অধিবেশন স্থগিত থাকাকালীন জরুরি প্রয়োজনে কার্য নির্বাহক অধ্যাদেশও জারি করতে পারে।

(ঙ) সরকারের কার্য পরিচালনা করার জন্য প্রতি বছর অর্থ ব্যরের আবশ্যক হয়। এই ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সরকার কর ধার্য করে এবং অন্যান্য উৎস হতে সংগ্রহ করে। এই কর ধার্য ও ব্যয়ের ব্যাপারে আইনসভার অনুমোদন নেওয়া হলেও প্রকৃতপক্ষে শাসন বিভাগই এই উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ করে। 

প্রশ্ন ১৯। ভারতের রাষ্ট্রপতির চারটি প্রশাসনিক ক্ষমতা লেখো? 

অথবা, 

ভারতের রাষ্ট্রপতির চারটি কার্যপালিকার ক্ষমতা লেখো? 

উত্তরঃ ভারতের রাষ্ট্রপতি কার্যপালিকা সংক্রান্ত ক্ষমতার চূড়ান্ত অধিকারী। ভারতে রাষ্ট্রপতির নামেই শাসন কার্য পরিচালিত হয়। কার্যপালিকার সকল ক্ষমতা তাঁর হাতেই ন্যস্ত করা হয়েছে। 

ভারতের রাষ্ট্রপতির চারটি কার্যপালিকা ক্ষমতা নিম্নরূপঃ 

(ক) ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী অন্যান্য মন্ত্রীদেরও নিয়োগ করেন।

(খ) তিনি প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য মন্ত্রীগণকে শপথ বাক্য পাঠ করান। 

(গ) তিনি রাজ্যের রাজ্যপাল, অ্যাটর্নি জেনারেল, কনট্রোলার ও অডিটর- জেনারেল, নির্বাচন কমিশনার, কেন্দ্রীয় লোকসেবা আয়োগের সভাপতি ও সদস্য প্রভৃতি নিয়োগ করেন।

(ঘ) তিনি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের প্রশাসক নিয়োগ করেন।

(ঙ) রাষ্ট্রপতি বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করেন। 

প্রশ্ন ২০। ভারতের রাষ্ট্রপতির জাতীয় জরুরীকালীন ক্ষমতা সংক্ষেপে লেখো? 

উত্তরঃ যদি যুদ্ধ, বহিঃশত্রুর আক্রমণ, আভ্যন্তরীণ সশস্ত্র বিপ্লব বা তাদের সম্ভাবনার জন্য ভারতের অথবা ভারতের কোন অংশের নিরাপত্তা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বা ক্ষুন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তাহলে রাষ্ট্রপতি এই মর্মে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি মন্ত্রী পরিষদের লিখিত পরামর্শক্রমেই কেবলমাত্র এই ক্ষমতা প্রয়োগ করার পারেন। রাষ্ট্রপতির এই ঘোষণা সংসদের উভয়কক্ষেই উত্থাপন করতে হয়। সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য দ্বারা তা অনুমোদিত হতে হবে। সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর ছয়মাস পর্যন্ত জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকে। ছয়মাস করে ঘোষণাটির মেয়াদ বাড়ানো যায়। লোকসভা জরুরি অবস্থা সংক্রান্ত ঘোষণা প্রত্যাহার করার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব পাশ করলে রাষ্ট্রপতিকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিতে হয় [ধারা ৩৫২(৭)]।

প্রশ্ন ২১। রাষ্ট্রপতি শাসন সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো? 

উত্তরঃ সংবিধানের ৩৫২নং ধারা অনুসারে কোন রাজ্যের রাজ্যপালের নিকট হতে অথবা অন্য কোন উপায়ে রাষ্ট্রপতি যদি অবগত হন যে সেই রাজ্যের সংবিধান অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করা সম্ভব নয়, তাহলে রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেই রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করতে পারেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের লিখিত সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এইরূপ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। এইরূপ জরুরি অবস্থা ঘোষণাকালেও সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত না হলে তা দুই মাসের বেশি কার্যকরী হতে পারে না। সংসদের অনুমোদন সাপেক্ষে এই ধরনের জরুরি অবস্থা একসঙ্গে ছয়মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা যেতে পারে। রাজ্যের জরুরি অবস্থা দুই ধরনের হতে পারে- (ক) পূর্ণ জরুরি অবস্থা, এবং (খ) অর্থ- জরুরি অবস্থা। জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর যদি রাজ্যের মন্ত্রীপরিষদ ও বিধানসবা উভয় ভেঙ্গে দিয়ে রাজ্যের শাসনকার্য কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়, তখন তাকে পর্ণ জরুরি অবস্থা বলা হয়। অন্যদিকে জরুরি অবস্থা ঘোষণার দ্বারা কেবল যদি রাজ্যের মন্ত্রীপরিষদকে বরখাস্ত করা হয় কিন্তু রাজ্যের বিধানসভাকে ভঙ্গ না করে নিস্কিয় করে রাখা হয়, তখন তাকে অর্থ জরুরি অবস্থা বলা হয়। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে হয় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয় অথবা বিধানসভা ভঙ্গ করে পূর্ণ রাষ্ট্রপতি শাসন বলবৎ করা হয়। 

প্রশ্ন ২২। ভারতের রাষ্ট্রপতির জরুরিকালীন ক্ষমতা সংক্ষেপে উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান বিশেষ পরিস্থিতিতে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে জরুরিকালীন ক্ষমতা প্রদান করেছে। সংবিধানে রাষ্ট্রপতির তিন ধরনের জরুরিকালীন ক্ষমতার উল্লেখ আছে। 

এইগুলি হল-

(ক) জাতীয় জরুরি অবস্থা (National Emergency)। 

(খ) রাজ্যে সাংবিধানিক অচলাবস্থা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা (State Emergency)

(গ) আর্থিক জরুরি অবস্থা (Financial Emergency)

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। 

প্রশ্ন ২০। রাষ্ট্রপতির পদমর্যাদা আলোচনা করো? 

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান রাষ্ট্রপতির প্রকৃত ভূমিকা ও পদমর্যাদা নিয়ে বিস্তারিত চর্চা করেনি। তাই তাঁর প্রকৃত ভূমিকা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। পণ্ডিত নেহেরু এবং ডাঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের আমল থেকেই এই বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে। সংবিধান নির্মাতাগণ সংবিধান রচনাকালে বলেছিলেন যে ভারতের রাষ্ট্রপতি ইংল্যাণ্ডের রাজা বা রানির মতো নিয়মতান্ত্রিক শাসকপ্রধানের ভূমিকা গ্রহণ করবেন। আর যেহেতু ভারতে সংসদীয় কার্যপালিকার শাসন-ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে সেহেতু মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি শাসক প্রধান হিসেবে কার্য নির্বাহ করবেন। ভারতে মন্ত্রীপরিষদ শাসিত শাসনব্যবস্থা প্রচলিত থাকার দরুন প্রকৃত শাসন ক্ষমতা মন্ত্রিসভা এবং আইনসভার হাতে নাস্ত। রাষ্ট্রপতি প্রকৃত শাসক নন। তিনি সাংবিধানিক প্রধান। পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু এই মত পোষণ করতেন। অন্যদিকে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ রাষ্ট্রপতিকে কেবলমাত্র নিয়মতান্ত্রিক (formal) শাসক হিসেবে মেনে নেননি।

গণ পরিষদের অধিকাংশ বিশেষজ্ঞদের মতে রাষ্ট্রপতিকে আনুষ্ঠানিক প্রধান (Ceremonial Head) হিসেবে গণ্য করা উচিত। ডঃ আম্বেদকারের মতে, ‘ভারতের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান, শাসন বিভাগের প্রধান নন। তিনি জাতির প্রতিনিধিত্ব করেন না।’ রাষ্ট্রপতির পদমর্যাদা বিশ্লেষণ করলে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, রাষ্ট্রপতিকে কেবলমাত্র নামসর্বস্ব সাক্ষীগোপাল হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়, তিনি মন্ত্র পরিষদকে পরামর্শ, উৎসাহ দান ও সতর্ক করে দিতে পারেন। রাষ্ট্রপতির পদমর্যাদা অনেকটাই নির্ভর করে তাঁর ব্যক্তিত্বের উপর। সাংবিধানিক সংকটকালে তাঁর পদমর্যাদার গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। সাংবিধানিক কাঠামো বজায় রাখার জন্য এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য রাষ্ট্রপ্রধানের নিজস্ব বিচারবুদ্ধি প্রয়োগের সুযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়। মন্ত্রীপরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্ত যদি দেশ বা জাতীয় স্বার্থের বিরোধী হয় সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ নাও মানতে পারেন। তিনি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপ্রধান। 

প্রশ্ন ২৪। জননায়ক হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা আলোচনা করো?

উত্তরঃ ভারতে প্রধানমন্ত্রী হলেন প্রকৃত শাসক প্রধান। জননায়ক হিসেবে তাঁর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিককালে প্রচার মাধ্যম প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা ও ব্যক্তিত্ব ও তার চারিত্রিক বিভিন্ন গুণাবলী ও ভাবমূর্তি তোলে ধরে। তাঁর রাজনৈতিক কার্যকলাপ, বক্তৃতা, বিবৃতি আদি জনমনে কার্যকর প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব সৃষ্টি করে। সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতা অনেকাংশে জাতির নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার ও নেতৃত্বদানকারী গুণাবলীর উপর নির্ভরশীল। দেশের সংকটের সময় প্রধানমন্ত্রীর সদর্থক ভূমিকা ও সক্রিয় নেতৃত্ব প্রদান তাঁর পদমর্যাদা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জননায়ক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আচরণগত কলাকৌশল, বাগ্মীতা জনমানসে তাঁর সম্মোহনী শক্তি বাড়িয়ে তোলে। 

প্রশ্ন ২৫। রাজ্যের শাসন ব্যবস্থায় রাজ্যপালের ভূমিকা আলোচনা করো? 

উত্তরঃ রাজ্যের শাসনবিভাগের শীর্ষে আছেন রাজ্যপাল। তিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পাঁচ বছরের জন্য নিযুক্ত হন। সংসদীয় শাসন ব্যবস্থার পদ্ধতি অনুসারে ভারতের রাষ্ট্রপতির মতো রাজ্যপালও মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রী পরিষদের নির্দেশ ও পরামর্শ অনুসারে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির মতো রাজ্যপালও নিয়মতান্ত্রিক প্রধান। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে রাজ্যপালকে রাজ্যের নিয়মতান্ত্রিক শাসক প্রধান মনে হলেও তাঁরে সম্পূর্ণভাবে নিয়মতান্ত্রিক শাসক প্রধান বলা যায় না।

সংবিধানে রাজ্যপালকে স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কোন্ বিষয়ে ও ক্ষেত্রে তিনি স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন সে বিষয়ে তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হয় এবং ওই ক্ষমতা যুক্তিযুক্ত হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে আদালতে প্রশ্ন তোলে তাঁর কার্যের বৈধতাকে প্রত্যাহ্বান জানানো যায় না। অবশ্য সংবিধানে মাত্র কয়েকটি বিষয়ে তাঁর স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের কথা উল্লেখ আছে। এই স্বেচ্ছাধীন। ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্র ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে রাজ্যপালকে মন্ত্রীসভার পরামর্শক্রমেই চলতে হয়।

রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। রাজ্যপালের মাধ্যমে কেন্দ্র সবসময় অবহিত হতে পারে যে বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্র দ্বারা প্রেরিত নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যগুলো কাজ করছে কিনা। সুতরাং একদিকে রাজ্যপাল নিয়মতান্ত্রিক শাসক এবং অন্যদিকে কেন্দ্রের প্রতিনিধি, এই দ্বৈত ভূমিকা রাজ্যপালকে নির্বাহ করতে হয়। 

প্রশ্ন ২৬। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের চারটি কার্য উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ ভারতের সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদ নিম্নোক্ত চারটি গুরুত্বপূর্ণ কার্য সম্পাদন করেঃ

(ক) নীতি নির্ধারণ ও তার বস্তবায়নঃ কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটই সরকারের নীতি নির্ধারণ করে। রাজনীতিভাবে গৃহীত নীতি মন্ত্রীপরিষদের দ্বারা বাস্তবায়িত করার ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন নীতি যেমন- স্বরাষ্ট্রনীতি, বৈদেশিক নীতি, প্রতিরক্ষা সংক্রন্ত নীতি, আর্থিক নীতি প্রভৃতি বিষয়ে ক্যাবিনেটে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত হয় এই নীতিগুলোর বাস্তবায়নে মন্ত্রীপরিষদ সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করে।

(খ) আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত ভূমিকাঃ আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রীপরিষদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। ক্যাবিনেটের সক্রিয় ভূমিকা ও নির্দেশ অনুসারে অধিকাংশ আইনের খসড়া প্রস্তত করা হয়। অধিকাংশ আইনের খসড়া ক্যাবিনেটের সদস্যরা সংসদে পেশ করেন।

(গ) প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনঃ দেশের প্রশাসনিক কার্য পরিচালনার প্রকৃত ও কার্যকরী ক্ষমতা মন্ত্রীসভার হাতে ন্যস্ত। মন্ত্রীসভার নির্দেশক্রমে স্বায়ী আমলারাই নীতি রূপায়ণের লক্ষ্যে শাসনকার্য পরিচালনা করেন। ভারতের মতো জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র সরকারের ভূমিকা বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রীপরিষদের দায়দায়িত্বও বেড়ে গিয়েছে।

(ঘ) সরকারের আয়-বায় নির্ধারণঃ কেন্দ্রীয় সরকারের আয়-ব্যয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে ক্যাবিনেটের ভূমিকা অপরিসীম। অর্থমন্ত্রকের প্রধান অর্থমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সংসদের নিম্ন সদন লোকসভায় সরকারের সম্ভাব্য আয়-বায়ের হিসাব বা বাজেট পেশ করেন। 

প্রশ্ন ২৭। ভারতীয় প্রশাসনীয় ব্যবস্থায় আমলাতন্ত্রের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।

অথবা, 

আমলাতন্ত্রকে স্থায়ী কার্যপালিকা বলে কেন গণ্য করা হয়?

উত্তরঃ ভারতীয় প্রশাসনীয় ব্যবস্থার আমলাতন্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। একটি গণতান্ত্রিক সরকার দক্ষ এবং পেশাদার আমলাতন্ত্র ছাড়া সুচারুরূপে শাসনকার্য পরিচালনা করতে পারে না। ভারতের সংবিধান নির্মাতাগণ অরাজনৈতিক এবং পেশাদার আমলাতন্ত্র সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাই ভারতীয় প্রশাসন ব্যবস্থায় অরাজনৈতিক এবং পেশাদার (Professional) আমলাতন্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত। ভারতবর্ষে নিয়োগীকৃত আমলাতন্ত্রের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমলাতন্ত্র শাসনকার্যের ধারাবাহিকতা (Consistency) রক্ষা করে। এজন্য আমলাতন্ত্র স্থায়ী কার্যপালিকারূণে দায়িত্ব ও কর্তবা নির্বাহ করে। ভারতবর্ষে আমলাগণ পেশাদারী মনোভাব নিয়ে প্রশাসনীয় দায়িত্ব পালন করেন। তাদের নিয়োগের মাপকাঠি হল- যোগ্যতা ও মেধা। মন্ত্রিগণ নির্বাচিত প্রতিনিধি। প্রশাসনিক কার্যে তাদের অভিজ্ঞতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। মন্ত্রিগণ। সরকারের দায়িত্বে থাকেন এবং প্রশাসন তাদের নিয়ন্ত্রণে ও তত্ত্বাবধানে থাকে। 

আমলাগণ কখনও আইন বিভাগের প্রণয়ন করা নীতির বিরোধিতা করতে পারেন না। মস্তিদের দায়িত্ব হল, প্রশাসনের উপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ রাখা। আমলাগণ কোন সময়েই রাজনৈতিক ব্যাপারে কোন রাজনৈতিক অবস্থান নিতে পারে না। আমলাতন্ত্রের দায়িত্ব হলো বিশ্বাসী ও দক্ষভাবে সরকারের গ্রহণ করা নীতির খসড়া তৈরি করা ও নীতি কার্যকর করায় ভাগ নেওয়া। আমলাতন্ত্র হল এমনই এক প্রশাসন যন্ত্র যার সাহায্যে সরকারের কল্যাণকামী নীতিগুলো মানুষের কাছে দেওয়া। আমলাতন্ত্র স্থায়ী প্রশাসন যন্ত্রে। মন্ত্রিগণ সবসময়ই আমলাদের উপর নির্ভরশীল থাকেন। আর এজন্য আমলাতন্ত্রকে স্থায়ী কাপালিকা বলে গণ্য করাটাই স্বাভাবিক।

প্রশ্ন ২৮। সংসনীয় সরকারের বিষয়ে একটি টীকা লেখো?

উত্তরঃ সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান এবং রাষ্ট্রপতি বা রাজা হলেন নামমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান। এধরনের সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি বা রাজার ভূমিকা প্রাথমিকভাবে শুধুই আনুষ্ঠানিক, প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর কেবিনেট আসল ক্ষমতা ভোগ করেন। জার্মানি, ইটালী, জাপান, ইংল্যাণ্ড এবং পর্তুগাল এই ব্যবস্থার অন্তর্গত।

সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় শাসনবিভাগ এবং আইনবিভাগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকে। মন্ত্রীসভার সদস্যগণ আইনসভার সদস্য। সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় মন্ত্রী পরিষদ আইনসভার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের আস্থার উপর স্বপদে বহাল থাকেন। আইনসভা সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করে।

সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার প্রধানমন্ত্রী বৈদেশিক নীতি নির্দ্ধারণ করেন এবং বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষা করেন। তিনি জাতির মুখপাত্র হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এই ধরনের সরকার ব্যবস্থার প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর মন্ত্রীসভা শাসন ব্যবস্থার মূল চালিকা শক্তি এবং রাষ্ট্রপতি নামমাত্র রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। 

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top