Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question in Bengali Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.

প্রশ্ন ১৫। “মৌলিক কাঠামো” হিসাবে স্বীকৃত ভারতীয় সংবিধানের বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যালোচনা করো?

অথবা,

সংবিধানের “মৌলিক কাঠামো” বলে স্বীকৃত বৈশিষ্ট্যসমূহ ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ ভারতের সংবিধান বিবর্তনে দীর্ঘকাল ধরে যে বিষয়টি প্রভাব বিস্তার করে আসছে তা হল সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ধারণাটি একটি বিতর্কিত বিষয়। বিচারালয়ের ব্যাখ্যা হতে মৌলিক কাঠামো তত্ত্বটি আবির্ভূত হয়েছে। ভারতের সুপ্রীমকোর্ট বিখ্যাত কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা রাজ্য (১৯৭৩) মামলার রায়ে ঘোষণা করেছে যে ভারতীয় সংবিধানের একটি মৌলিক কাঠামো আছে যা সংশোধন করা যাবে না। এই মামলার সিদ্ধান্ত সংসদের সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নির্দিষ্ট করে দেয়। তাছাড়া এই সিন্ধান্ত বিচারালয়কে কোনো সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ভঙ্গ বা কী কী বিষয় মৌলিক কাঠামো অন্তর্ভুক্ত করে তা সিদ্ধন্তেরও চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

বিচারপতি শেলাট (Justice Shelat) এবং বিচারপতি গ্রোভার (Justice Grover) মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করেছেনঃ

(ক) সংবিধানের প্রাধান্য। 

(খ) গণতান্ত্রিক গণরাজ্য ধাঁচের সরকার।

(গ) দেশের সার্বভৌমত্ব, একতা ও অখণ্ডতা।

(ঘ) সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো।

(ঙ) সরকারের তিন অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন। 

(চ) মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতি ।

উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ মৌলিক কাঠামোর বৈশিষ্টারূপে গণ্য হয়েছে। ১৯৭৩ সালের পর থেকে বিচারালয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই মৌলিক তত্ত্বের বিশদ ব্যাখ্যা করেছে এবং কী কী বিষয় ভারতের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত ভারও বিশদ ব্যাখ্যা করেছে। এই মৌলিক কাঠামো তত্ত্ব সংবিধানের অনমনীয়তা ও নমনীয়তার মধ্যে সমতা স্থাপন করেছে। এই মৌলিক কাঠামো তত্ত্বের নির্দিষ্ট কতকগুলো অংশ সংশোধন করতে পারা যায় না বলে সংবিধানের অনমনীয় প্রকৃতি চিহ্নিত হয়েছে এবং অন্যদিকে অন্যান্য অংশ সংশোধনের জন্য ক্ষমতা প্রদান করেছে। 

প্রশ্ন ১৬। বিচারালয় কর্তৃক সংবিধানের ব্যাখ্যাসমূহ আলোচনা করো?

অথবা,

বিচারালয় প্রদত্ত সংবিধানের ব্যাখ্যা সমূহ পর্যালোচনা করো?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের বিবর্তনে বিচারালয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। ভারতের সুপ্রীমকোর্ট বিখ্যাত কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সংবিধানের মৌলিক কাঠামো তত্ত্বটি উদ্ভাবন করেছে। 

এই মামলার রায় সংবিধান পর্যালোচনার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিতভাবে অবদান রেখেছেঃ

(ক) এই রায় সংসদের সংবিধান সংশোধন ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নির্দিষ্ট করে দেয়। কোন সংশোধনই সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ভঙ্গ করতে পারবে না।

(খ) এই রায় সংসদকে সংবিধানের যে কোনো অংশ বা সকল অংশ এক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে সংশোধনের অধিকার প্রদান করে।

(গ) কোনো সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ভঙ্গ করছে কিনা বা কী কী বিষয় মৌলিক কাঠামো অন্তর্ভুক্ত করে তা সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ হল বিচার বিভাগ। কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায় সংবিধানের সকল সংশোধনীকে প্রভাবিত করেছে এবং দেশের সকল প্রতিষ্ঠান সংবিধানের এই মৌলিক কাঠামো তত্ত্ব গ্রহণ করে। বস্তত মৌলিক কাঠামো তত্ত্বই প্রাণবস্তু সংবিধানের মূল ভিত্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।

সংবিধান সংক্রান্ত সকল ধারণাকে বিচারালয়ের ব্যাখ্যা কীভাবে পরিবর্তন বা প্রভাবিত করেছে এর আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়। বহু সিদ্ধান্তে সুপ্রীমকোর্ট অভিমত ব্যক্ত করেছে যে চাকুরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে আসন সংরক্ষণ মোট আসনের পঞ্চাশ শতাংশ অতিক্রম করতে পারবে না। বর্তমানে এটা একটি গ্রহণযোগ্য নীতিতে পরিণত হয়েছে। ঠিক একইভাবে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর (Other Backward Classes, OBC) সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রীমকোর্ট ‘নবনীপূর্ণন্তর’ বা ক্রীমিলেয়ার (Creamy layer) নীতি প্রবর্তন করে এবং রাষ্ট্রদান করে যে এই শ্রেণীভূক্ত ব্যাক্তিগণ সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন না। তাছাড়া বিচারালয় শিক্ষার অধিকার, জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার এবং সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালন প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের দ্বারা অনা–আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবিধানের সংশোধনে অবদান যুগিয়েছে। 

প্রশ্ন ১৭। “ভারতীয় সংবিধানটি একটি জীবন্ত দলিল।” ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ সমাজের পরিবর্তনশীল অবস্থা অথবা চিন্তাধারার পরিবর্তন এমন কি রাজনৈতিক বৃহৎ ঘটনাবলীর জন্য সকল দেশের সংবিধান পুনর্লিখন নতুন কোন ঘটনা নয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ফ্রান্সের অনেকগুলো সংবিধান ছিল। কিন্ত ভারতবর্ষের সংবিধান এখনও কার্যকর আছে। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর ভারতের সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে এর রূপায়ণ শুরু হয়েছিল। ৭৩ বছর পরও একই সংবিধান গণতান্ত্রিক রূপে কাজ করছে যার মধ্যে আমাদের দেশের শাসন ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা একটি বলিষ্ঠ সংবিধান পেয়েছি যার মৌলিক কাঠামো আমাদের দেশের পক্ষে খুবই উপযোগী।

আমাদের সংবিধান সমাজের পরিবর্তনশীন চাহিদানুসারে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা গ্রহণ করেছে। সংবিধানের প্রকৃত কার্যকারিতায় এর ব্যাখ্যার পর্যাপ্ত নমনীয়তা রয়েছে। সংবিধান রূপায়ণের নমনীয়তার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নীতি–নিয়ম এবং বিচারালয়ের নির্দেশনামা উভয়ই পরিপক্ষতা দেখিয়েছে। এসব উপাদান আমাদের সংবিধানকে একটি জীবন্ত দলিলে পরিণত করেছে। সংবিধান অনমনীয় বা অপরিবর্তনীয় দলিল নয়। এর সংশোধন, পরিবর্তন এবং পুনঃপরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। ভারতীয় সংবিধান একটি বিশুদ্ধ দলিল এবং এই দলিলের সময় সময় পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনশীল নয়।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ 

প্রশ্ন ১। ভারতীয় সংবিধানের অনমনীয় বৈশিষ্ট্যের কারণ দর্শাও?

অথবা,

ভারতীয় সংবিধানের কতকাংশ অনমনীয় কেন? কারণ দর্শাও। 

উত্তরঃ ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করতে হলে যাতে সহজে সংশোধন করা যায় এরূপ ব্যবস্থা বিধিবদ্ধ করেছেন। আবার সংবিধানকে অপ্রয়োজনীয় ও বারবার সংশোধনের হাত থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছেন। অন্যভাবে বলা যায় যে তারা সংবিধানকে একই সঙ্গে নমনীয় ও অনমনীয় রাখার চেষ্টা করেছেন। নমনীয়তা হল পরিবর্তনের জন্য যুক্ত এবং অনমনীয়তা হল পরিবর্তন প্রতিহত করার জন্য যুক্ত।

ভারতীয় সংবিধানে কতকগুলো অনুচ্ছেদ বা অনুবিধি আছে যেগুলো অস্থায়ী প্রকৃতির এবং এগুলো পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে যাতে সহজেই সংশোধন করা যায় এরূপ পদ্ধতি সংবিধানে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। কিন্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা এবং রাজাসমূহের অধিকার ও ক্ষমতা রক্ষার জন্য সংবিধানের সংশোধনে অনমনীয় পদ্ধতি বিধিবন্ধ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমোদনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া কতকগুলো বৈশিষ্ট্য যেগুলো সংবিধানের কেন্দ্রীয় প্রবণতামূলক সেগুলো সংশোধনের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা সংবিধানে বিধিবন্ধ হয়েছে। মোটামুটি ভাবে বলা যায় যে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা ও কেন্দ্রীয় প্রবণতামূলক বৈশিষ্ট্যগুলো রক্ষার জন্য সংশোধনের অনমনীয় পদ্ধতি সংবিধানের ৩৬৮ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত করা হয়েছে। 

ভারতীয় সংবিধান নিম্নোক্ত তিনটি উপায়ে সংশোধন করা যায়ঃ

(ক) সংসদের সাধারণ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন।

(খ) সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন।

(গ) সংসদের বিশেষ সংখ্যাধিক্যের সমর্থন ও ন্যূনতম অর্ধেক রাজ্যিক আইনসভাগুলোর অনুমোদনের মাধ্যমে সংশোধন।

সংবিধানের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদে সংশোধনের দুটি পদ্ধতি আছে। এগুলো সংবিধানের পৃথক পৃথক অনুবিধির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। একটি পদ্ধতিতে সংসদের উভয়কক্ষের বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংশোধন করা হয়। অপর পদ্ধতিটি অপেক্ষাকৃত জটিল। এর জন্য সংসদের বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও ন্যূনতম অর্ধেক রাজ্যিক আইনসভাসমূহের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এই বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও রাজ্যসমূহের অনুমোদনের মাধ্যমে সংশোধনীতে ব্যাপক সমর্থনের বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এজন্য ভারতীয় সংবিধানের কতকাংশ সংশোধনের জন্য অনমনীয় পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পদ্ধতিটি (সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন) ব্রিটিশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় পদ্ধতির সংমিশ্রণ এবং তৃতীয় পদ্ধতিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনমনীয় পদ্ধতির অনুরূপ। বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং অর্ধেক রাজ্যিক আইনসভাগুলোর অনুমোদন সংবিধানের কতকাংশ সংশোধনকে অনমনীয় পর্যায়ে পর্যবসিত করেছে। 

ভারতীয় সংবিধানের কতকাংশ অনমনীয় প্রকৃতি হওয়ার কারণগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) বিশেষ সংখ্যাধিক্যের মাধ্যমে সাধারণ আইন ও সাংবিধানিক আইনের মধ্যে পার্থক্য রাখা।

(খ) সংবিধান যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রীড়নকে পরিণত না হতে পারে ও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল নিজ স্বার্থ–রক্ষার্থে সংবিধানকে ব্যবহার করতে না পারে।

(গ) যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অনমনীয় সংবিধান প্রয়োজন হয়। ভারতবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রচলিত হওয়ার কারণে কতিপয় বিষয় সংশোধনে বিশেষ সংখ্যাধিক্য ও রাজাগুলোর অনুমোদন আবশ্যক।

(ঘ) তাছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের স্বৈরতন্ত্র প্রতিহত করার জন্য সংবিধানের কতকাংশের সংশোধন পদ্ধতি অনমনীয় হওয়া প্রয়োজন।

প্রশ্ন ২। ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা কী কী? 

অথবা,

ভারতীয় সংবিধানের সংশোধন পদ্ধতির ত্রুটিগুলো দেখাও।

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়। 

এই সীমাবদ্ধতাগুলো হলঃ

(ক) ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের তিনটি ভিন্ন পদ্ধতির জন্য সংশোধন প্রণালী অত্যন্ত জটিল পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে।

(খ) ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের চূড়ান্ত ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার কেন্দ্রীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত। রাজ্যক আইন সভাগুলোর সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপনের কোন ক্ষমতা নেই। রাজ্যগুলো সংবিধান সংশোধনের একমাত্র তৃতীয় পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে কেবল রাজাগুলো অনুমোদন প্রদানের ক্ষমতার অধিকারী। 

(গ) সংসদের উভয় কক্ষের সম্মতি ব্যতীত সংবিধান সংশোধন করা যায় না।

(খ) “রাজ্যিক আইনসভা” কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর আইনসভাকে অন্তর্ভুক্ত করে নি। 

(ঙ) কোনো সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপনের পূর্বে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন আবশ্যক না। কেবল সংশোধনী আইনে পরিণত হওয়ার সময় রাষ্ট্রপতির সম্মতির প্রয়োজন হয়। 

(চ) রাজ্যিক আইনসভাগুলোর জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল অনুমোদন করে পাঠানোর কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।

(ছ) সংবিধানের কোনো কোনো অংশে সংশোধন করার ক্ষেত্রে এত সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে যে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মোট ৯৪বার সংবিধান সংশোধিত হয়ে পড়েছে। 

প্রশ্ন ৩। বিচারবিভাগের মতানুযায়ী সংবিধানের কী কী বিষয় সংশোধন করা যায় না?

অথবা,

বিচারবিভাগের মতে কী কী বিষয়ে ভারতীয় সংবিধান সংশোধন করা যায় না? 

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান বিবর্তনে বিচারালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। বিচারালয় এবং সংসদের মধ্যে বিবাদকালীন সময়ে সংসদ একটি নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা সঠিক চিহ্নিত করে সংবিধান সংশোধন করে। এটা রাজনীতির অঙ্গ যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংবিধান ব্যাখ্যা করে নিজেদের ক্ষমতার সীমা বিভিন্নভাবে নির্ণয় করে। বহুবার সংসদ বিচারালয়ের ব্যাখ্যা মানে নি এবং বিচারালয়ের নির্দেশ অতিক্রম করে সংবিধান সংশোধন করেছে। ১৯৭০ হতে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে এই পরিস্থিতি বারবার দেখা দেয়। কিন্ত বিখ্যাত কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা রাজ্যের (১৯৭৩) মামলার রায়ে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়। এই মামলায় বিচারালয়ের ব্যাখ্যা থেকে সংবিধানের মৌলিক তত্ত্বের উদ্ভূত হয়।

কেশবানন্দ ভারতী মামলায় ভারতের সুপ্রীমকোর্ট ঘোষণা করে যে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো আছে যা সংশোধন করা যাবে না। সুপ্রীমকোর্ট সংবিধানের এই মৌলিক তত্ত্বের বিশদ ব্যাখ্যা করে এবং কী কী বিষয় ভারতের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করে তাও ব্যাখ্যা করেছে। এই ব্যাখ্যা অনুসারে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ সংবিধানের মৌলিক কাঠামো অন্তর্ভুক্ত করে।

(ক) সংবিধানের প্রাধান্য।

(খ) গণতান্ত্রিক গণরাজ্য ধাঁচের সরকার।

(গ) সার্বভৌমত্ব, একতা ও অখণ্ডতা। 

(ঘ) সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা ও যুক্তরাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্য।

(ঙ) সরকারের তিন অঙ্গের মধ্য ক্ষমতা বণ্টন। 

(চ) ব্যক্তির মর্যাদা রক্ষাকারী মৌলিক অধিকার ও কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রদত্ত রাষ্ট্রপরিচালনার নির্দেশাত্মক নীতি। 

বিচারবিভাগের ব্যাখ্যা অনুসারে উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহের মূল প্রকৃতি সংশোধনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যাবে না। এক কথায় বিচারবিভাগের ব্যাখ্যানুযায়ী সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সংশোধন করা যায় না।

প্রশ্ন ৪। সংবিধানের সংশোধনের বিভিন্ন পদ্ধতির তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো?

উত্তরঃ অধিকাংশ আধুনিক সংবিধানের সংশোধনী পদ্ধতিতে দুইটি নীতি প্রাধান্য বিস্তার করে –

(১) একটি হল বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণআফ্রিকা, রাশিয়া প্রভৃতি দেশ সংবিধানে এই নীতি প্রয়োগ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে দুই–তৃতীয়াংশ কিন্তু দক্ষিণআফ্রিকা ও রাশিয়ার ক্ষেত্রে কতিপয় সংশোধনীতে তিন–চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়।

(২) অন্য আরেকটি নীতি যা অনেক আধুনিক সংবিধানে জনপ্রিয়, তা হল সংবিধান সংশোধন পদ্ধতিতে জনগণের অংশগ্রহণ। সুইজারল্যান্ডে জনগণ সংবিধান সংশোধনীর প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে। অন্যান্য যে সকল দেশে জনগণ সংবিধান সংশোধনীর প্রস্তাব উত্থাপন ও অনুমোদন করে সেই সকল দেশ হল রাশিয়া ও ইতালি। 

ভারতের সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি সংবিধানের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে। 

ভারতের সংবিধান নিম্নলিখিত তিনটি পদ্ধতিতে সংশোধন করা হয়ঃ

(ক) সংসদের সাধারণ সংখ্যাধিক্যে সংশোধনঃ এই পদ্ধতিটি সহজ ও সরল। এই পদ্ধতিতে সংশোধনীয় আইন ও সাধারণ আইনের মধ্যে কোন তফাৎ নেই। এই পদ্ধতিটি ব্রিটিশ সংবিধান সংশোধনের অনুরূপ। সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ এই পদ্ধতিতে সংসদের একপাক্ষিক প্রক্রিয়ার দ্বারা সংশোধন করা হয়। এটি একটি নমনীয় পদ্ধতি।

(খ) সংসদের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাধিক্যে সংশোধনঃ এই পদ্ধতিতে সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ কেন্দ্রীয় সংসদ একা বিশেষ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন করে। এই পদ্ধতিটি ব্রিটিশ ও মার্কিন পদ্ধতির সংমিশ্রণ। এই পদ্ধতিকে নমনীয় বলা হয় কারণ একমাত্র সংসদ এই প্রকার সংশোধন করে। আবার অনমনীয় বলা হয় কারণ এরূপ সংশোধনী প্রস্তাব পাস করতে সংসদের বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়।

(গ) সংসদের বিশেষ সংখ্যাধিক্যে সমর্থন ও ন্যূনতম ৫০% রাজ্যিক আইনসভাগুলোর অনুমোদনের মাধ্যমে সংশোধনঃ এই পদ্ধতিটি প্রথম ও দ্বিতীয় পদ্ধতি হতে সম্পূর্ণ পৃথক ধরনের। এই পদ্ধতিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনমনীয় পদ্ধতির অনুরূপ। এই পদ্ধতিতে সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেন কেন্দ্রীয় সংসদ ও রাজ্যসমূহের আইনসভার দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। এই পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয় সংসদের বিশেষ সংখ্যাধিক্য ও রাজ্যিক আইনসভাগুলোর অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। তাই এই পদ্ধতিটি অপেক্ষাকৃত জটিল। সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংসদই সর্বেসর্বা।

উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো আলোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে সাধারণ সংঘ্যাধিক্য ও বিশেষ সংখ্যাধিক্যের উপর ভিত্তি করেই সংবিধান সংশোধন প্রণালী নমনীয় ও অনমনীয় প্রকৃতির হয়।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। নিম্নলিখিতগুলো থেকে সঠিক উত্তর বের করো।

একটি সংবিধান সময়ে সময়ে সংশোধন প্রয়োজন, কারণ – 

(ক) পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয় এবং সংবিধানের উপযুক্ত পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। 

(খ) একটি নির্দিষ্টকালে লিখিত দলিল কিছুদিন পর অপ্রচলিত হয়ে যায়। 

(গ) প্রত্যেক প্রজন্মের নিজস্ব পছন্দমত সংবিধান থাকা উচিত। 

(ঘ) এটি বর্তমান সরকারের দর্শন প্রতিফলিত করে।

উত্তরঃ (ক) পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয় এবং সংবিধানের উপযুক্ত পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। 

প্রশ্ন ২। নিম্নের উক্তিগুলোর শেষে সত্য–মিথ্যা লেখো – 

(ক) রাষ্ট্রপতি সংশোধনী বিল পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন না।

উত্তরঃ সত্য।

(খ) নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের কেবল সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা আছে।

উত্তরঃ সত্য। 

(গ) বিচারালয় সংবিধান সংশোধনী পদ্ধতি উত্থাপন করতে পারে না কিন্তু এটি বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যার দ্বারা সংবিধানকে কার্যকরীভাবে পরিবর্তন করতে পারে।

উত্তরঃ সত্য।

(ঘ) সংসদ সংবিধানের যে কোনো অংশ সংশোধন করতে পারে।

উত্তরঃ মিথ্যা। 

প্রশ্ন ৩। নিম্নের কোনগুলো ভারতীয় সংবিধান সংশোধনে জড়িত? কিভাবে তারা জড়িত?

(ক) নির্বাচক।

(খ) ভারতের রাষ্ট্রপতি।

(গ) রাজ্য আইনসভাসমূহ।

(ঘ) সংসদ।

(ঙ) বিচারালয়।

উত্তরঃ (ক) নির্বাচকগণ ভারতীয় সংবিধান সংশোধনে জড়িত নন।

(খ) ভারতের রাষ্ট্রপতি সংবিধান সংশোধনে জড়িত হন। সংসদ সংশোধনী বিলকে অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতি তাতে সম্মতি প্রদান করেন। তাঁর সম্মতি দানের পর সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হয়।

(গ) রাজ্যের আইনসভাগুলো সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ সংশোধনে জড়িত। রাজ্যের স্বার্থ সম্বলিত যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলো পরিবর্তনের সময় সংশোধন প্রক্রিয়ায় রাজ্য আইনসভাগুলো জড়িত হয়।

সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ সংশোধনের জন্য সংশোধনী বিল সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর তাতে রাজ্য আইনসভাগুলোর অনুমোদন প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০% রাজ্য আইনসভা অনুমোদন দেওয়ার পর সংশোধনী বিলটি রাষ্ট্রপতির নিকট তাঁর সম্মতির জন্য পাঠানো হয়।

(ঘ) সংসদ প্রস্তাব উত্থাপন করে এবং এর অনুমোদন প্রয়োজন হয়। সুতরাং সংশোধন প্রক্রিয়ায় সংসদ জড়িত।

(ঙ) বিচারালয় বিশেষত সুপ্রীমকোর্ট সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ব্যাখ্যা করে এবং কোন সংশোধনী আইন যদি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ভঙ্গ করে, তাহলে সুপ্রীম কোর্ট তা বাতিল ঘোষণা করে। সুতরাং সুপ্রীম কোর্ট সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত নয়। কিন্ত সংশোধনী ব্যাখ্যাকারী হিসাবে ভূমিকা পালন করেন এবং সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।

প্রশ্ন ৪। তোমরা এই অধ্যায়ে পড়েছ যে ৪২-তম সংশোধন এখনও পর্যন্ত সংশোধনীগুলোর মধ্যে একটি প্রধান বিতর্কিত সংশোধনী। নিম্নের কোনগুলো এ বিতর্কের কারণ? 

(ক) এটি জাতীয় জরুরি অবস্থার সময় হয়েছিল এবং জরুরি অবস্থার ঘোষণা একটি বিতর্কিত বিষয় ছিল।

(খ) এটি বিশেষ সংখ্যাধিক্যের সমর্থনে করা হয় নি।

(গ) এটি রাজ্য আইন সভার অনুমোদন ব্যতীত করা হয়েছিল।

(ঘ) এর অন্তর্গত বিষয় বিতর্কিত ছিল।

উত্তরঃ (ক) এটি জাতীয় জরুরি অবস্থার সময় হয়েছিল এবং জরুরি অবস্থার ঘোষণা একটি বিতর্কিত বিষয় ছিল। এবং (ঘ) এর অন্তর্গত বিষয় বিতর্কিত ছিল।

প্রশ্ন ৫। নিম্নের কোনটি বিভিন্ন সংশোধনী সম্পর্কিত আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে বিবাদের যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা নয়?

(ক) সংবিধানের বিভিন্ন ব্যাখ্যা সম্ভব। 

(খ) গণতন্ত্রে বিতর্ক ও মতভেদ স্বাভাবিক।

(গ) সংবিধান কতিপয় নিয়ম ও নীতির উপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছে এবং বিশেষ সংখ্যাধিক্য দ্বারা সংশোধনের অনুমতি দিয়েছে। 

(ঘ) জনগণের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব আইনবিভাগের উপর ন্যস্ত করতে পারা যায় না।

(ঙ) বিচারালয় কেবল নির্দিষ্ট কোনো আইনের সাংবিধানিকতা স্থির করতে পারে এবং এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত কোনো রাজনৈতিক বিতর্কের সমাধান করতে পারে না। 

উত্তরঃ (ঘ) জনগণের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব আইনবিভাগের উপর ন্যস্ত করতে পারা যায় না।

প্রশ্ন ৬। মৌলিক কাঠামো তত্ত্বের বিষয়ের সঠিক উক্তি সমূহ চিহ্নিত করো। ভুল উক্তিসমূহ শুদ্ধ করো।

(ক) সংবিধান মৌলিক কাঠামো নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। 

(খ) আইন বিভাগ একমাত্র মৌলিক কাঠামো ব্যতীত সংবিধানের সকল অংশ সংশোধন করতে পারে।

(গ) সংবিধানের কোন্ বিষয়সমূহকে মৌলিক কাঠামো বলা যায় এবং কোনগুলোকে বলা যায় না এগুলোর সংজ্ঞা বিচারালয় প্রদান করেছে। 

(ঘ) এই তত্ত্ব কেশবানন্দ ভারতী মামলায় প্রথম প্রকাশ পায় এবং পরবর্তী রায়গুলোতে তা আলোচিত হয়। 

(ঙ) এই তত্ত্ব বিচারালয়ের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এবং তা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। 

উত্তরঃ নিম্নে সঠিক উত্তর সনাক্ত করা হলঃ

(ক) সংবিধান মৌলিক কাঠামো নির্দিষ্ট করে নি। এটা বিচার বিভাগের ব্যাখ্যা হতে আবির্ভূত হয়েছে।

(খ) উক্তিটি সঠিক।

(গ) উক্তিটি সঠিক নয়। বিচারালয় সংবিধানের মৌলিক কাঠামো নির্দিষ্ট করেনি। এটা তার ব্যাখ্যা হতে আবির্ভূত হয়েছে।

(ঘ) উক্তিটি সঠিক। 

(ঙ) উক্তিটি সঠিক।

প্রশ্ন ৭। ২০০০ থেকে ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে অনেকগুলো সংশোধনী হয়েছে এ তথ্য থেকে নিম্নলিখিত কোন্ সিদ্ধান্তে তুমি উপনীত হবে?

(ক) এ সময়ে সংশোধনীগুলোতে বিচারালয় হস্তক্ষেপ করেনি। 

(খ) এ সময়ে একটি রাজনৈতিক দলের শক্তিশালী সংখ্যাধিক্য ছিল।

(গ) সাধারণ জনগণের তরফ থেকে কতিপয় সংশোধনীর জন্য প্রচণ্ড চাপ ছিল।

(ঘ) এ সময়ে রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে প্রকৃত কোনো মতভেদ ছিল না।

(ঙ) সংশোধনীগুলো ছিল অবিতর্কিত প্রকৃতির এবং সংশোধনীর বিষয়বস্তর সম্পর্কে দলসমূহের মধ্যে সহমত ছিল।

উত্তরঃ (গ) সাধারণ জনগণের তরফ থেকে কতিপয় সংশোধনীর জন্য প্রচণ্ড চাপ ছিল।

(ঘ) এ সময়ে রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে প্রকৃত কোনো মতভেদ ছিল না।

(ঙ) সংশোধনীগুলো ছিল অবিতর্কিত প্রকৃতির এবং সংশোধনীর বিষয়বস্তর সম্পর্কে দলসমূহের মধ্যে সহমত ছিল।

প্রশ্ন ৮। সংবিধান সংশোধনে বিশেষ সংখ্যাধিক্যের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ নিম্নোক্ত কারণসমূহের জন্য সংবিধান সংশোধনে বিশেষ সংখ্যাধিক্যের প্রয়োজন হয়ঃ

(ক) সাধারণ আইন ও সাংবিধানিক আইনের মধ্যে পার্থক্য দেখানোর জন্য।

(খ) বিশেষ সংখ্যাধিক্যের জন্য রাজনৈতিক দল সহজে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারবে না। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল নিজ দলের স্বার্থে সংবিধান ব্যবহার করতে পারবে না। 

(গ) যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় অনমনীয় সংবিধানের প্রয়োজন হয়। ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রচলিত বলে সংবিধানের কতিপয় বিষয় সংশোধনে বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রাখা হয়েছে। 

(ঘ) সরকারের স্বৈরাচারী হওয়া প্রতিরোধ করতে সংবিধানে বিশেষ সংখ্যাধিক্য রাখা হয়েছে।

প্রশ্ন ৯। ভারতের সংবিধানে বহু সংশোধনী বিচারালয় ও সংসদ কর্তৃক বিভিন্ন ব্যাখ্যার দরুন হয়েছিল উদাহরণ সহ ব্যাখ্যা করো। 

উত্তরঃ ভারতের সংবিধান সুপ্রীমকোর্টকে সংবিধানের ব্যাখ্যাকারী হিসাবে দায়িত্ব অর্পণ, করেছে। বিচারালয়ের ব্যাখ্যার দরুন সংবিধানের সংশোধন হয়েছে। ১৯৬৭ সালে গোলকনাথ মামলায় সুপ্রীমকোর্ট রায়দান করে যে সংসদের মৌলিক অধিকার সংশোধনের কোনো ক্ষমতা নেই। কিন্ত সংসদ এই সিদ্ধান্তকে অতিক্রম করে সংবিধান সংশোধন করে। সংসদ কর্তৃক ব্যাখ্যার কারণে বিচারবিভাগীয় সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। অবশেষে ১৯৭৩ সালের কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সুপ্রীমকোর্ট সংবিধান ব্যাখ্যা করে সিদ্ধান্ত প্রদান করে যে ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক কাঠামো আছে এবং তা সংশোধন করা যাবে না। মৌলিক কাঠামো ব্যতীত সংবিধানের সকল অংশ পরিবর্তনের ক্ষমতা সংসদের আছে।

সুপ্রীমকোর্ট চাকুরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ ৫০ শতাংশের অধিক হতে পারবে না বলে অভিমত ব্যক্ত করে। সুতরাং সুপ্রীমকোর্ট এবং সংসদ তাদের ব্যাখ্যার মাধ্যমে সংবিধানের বহু অংশ সংশোধন করেছিল।

প্রশ্ন ১০। সংশোধনী ক্ষমতা যদি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ন্যস্ত থাকে তাহলে সংশোধনী সমূহের বৈধতা যাচাই করার ক্ষমতা বিচারালয়ের থাকা উচিত নয়। তুমি কি এতে সহমত পোষণ করো? একশত শব্দের মধ্যে তোমার যুক্তি প্রদর্শন করো। 

উত্তরঃ ভারতে সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের (সংসদ ও রাজ্যিক আইনসভাগুলোর) হাতে অর্পণ করা হয়েছে। সুপ্রীম কোর্টের আইন পর্যালোচনা করার ক্ষমতা আছে। সংশোধনীগুলো ব্যাখ্যা করে অনেক সময় সুপ্রীম কোর্ট তা বাতিল বলে ঘোষণাও করে। যদি বিচারালয়কে এ ক্ষমতা দেওয়া না হতো, তাহলে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এমনকী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোও ধ্বংস করে ফেলতো। জরুরি অবস্থার সময় ৪২-তম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের বহু অংশের পরিবর্তন করা হয়েছিল যা সংবিধানের অস্তিত্বকে সংকটাপন্ন করে তুলেছিল। উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রমাণ হয় যে সংসদের সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে অসীম ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। অন্যদিকে সংসদীয় গণতন্ত্র অনুযায়ী বিচারালয়ের এধরনের ক্ষমতা থাকা উচিত নয়। 

সংসদীয় গণতন্ত্রে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করা হয়। কারণ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় সংবিধান সংশোধনের ক্ষমতা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ন্যাস্ত থাকে। সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতিগণ জনগণ দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। তাঁরা মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে শাসন বিভাগ কর্তৃক নিযুক্ত হন। তাঁরা সংবিধানের ব্যাখ্যাকারী হলেও জনগণের প্রতিনিধি নন। সুতরাং তাদের সংসদ কর্তৃক সংশোধনী আইন বাতিল করা উচিত নয়। কারণ এতে সংসদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। তাই সংসদীয় গণতন্ত্রের নীতি অনুযায়ী বিচারালয়ের সংশোধনী সমূহ যাচাই করার ক্ষমতা থাকা উচিত নয়।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top