Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার is a textbook prescribed by the ASSAM AHSEC Board Class 12 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার Solutions are free to use and easily accessible.
Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 2nd year Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার, Gives you a better knowledge of all the chapters. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. AHSEC Board Class XII Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার will be able to solve all the doubts of the students. HS 2nd Year Advance Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার, HS 2nd Year Advance Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার Notes Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 Advance Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার Textbooks Solution. HS 2nd Year Advance Bengali Byakoran | বাংলা ব্যাকরণ – অলঙ্কার Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.
অলঙ্কার
ব্যাকরণ
প্রশ্ন ১। অলঙ্কার কাকে বলে? অলঙ্কার কত প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ কাব্যদেহের যে সমস্ত উপাদান কাব্যের সৌন্দর্য সৃষ্টি করে ও পাঠককে রসের উৎকর্ষ দেয়, তাকে বলে অলংকার।
অলংকার মানে গয়না। যা ‘অলম্’ বা ভূষিত করে, তাই অলংকার। অর্থাৎ অলংকার হলো সেই জিনিস যা অন্য কোনো জিনিসকে ভূষিত করে, সুন্দর করে, আকর্ষণীয় করে।
এই যেমন – এখন যে মেয়েটি আমাদের সামনে বসে আছে সাধারণ শাড়ি পরে, – ওকে এখন এরকম দেখাচ্ছে। কিন্তু বিবাহ উৎসবে ও যখন হার, দুল, বালা, নোলক, মল, সিঁথি ইত্যাদি গয়না পরে, ঝলমলে পোষাক পরে আমাদের সামনে দাঁড়াবে, তখন এই সাধারণ মেয়েটিকেই ভারি সুন্দর দেখাবে। তাহলে এটা তো ঠিক, অলংকার পরলেই সাধারণ মানুষকেও সুন্দর দেখায় তার সৌন্দর্য আমাদিগকে আকর্ষণ করে।
তেমনি সাধারণ কথাকে অলংকার পরালে, তাও সুন্দর হয়ে ওঠে। সাধারণ কাব্যকে অলংকার সাজালে, তাও সুন্দর হয়। মানুষের অলংকারের নানা নাম আছে। হার, দুল, বালা, চুড়ি প্রভৃতি তেমনি কাব্যের অলংকারেরও নানা নাম – অনুপ্রাস, যমক, উপমা, রূপক, শ্লেষ প্রভৃতি। এক একটি অলংকার আমাদের শরীরকে এক এক রকম সৌন্দর্যে মণ্ডিত করে, তেমনি কাব্যের এক একটি অলংকারও কাব্যকে এক এক রকম চমৎকারিত্ব দেয়। কবিরা এইসব অলংকার দিয়ে তাদের সাধারণ কথাকে অসাধারণ সুন্দর করে তুলেন।
অলঙ্কারকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যেমন –
১। শব্দালঙ্কার।
২। অর্থালঙ্কার।
শব্দালঙ্কার (সংজ্ঞা): শব্দের ধ্বনি সাম্যে (ধ্বনি ঝংকারে) যে অলঙ্কারের সৃষ্টি, তাকে শব্দালঙ্কার বলে।
যেমন – “চল চপলার চকিত চমকে করিছে চরণ বিচরণ।” – রবীন্দ্রনাথ।
এখানে ‘চ’ ধ্বনির বারবার ৬ বার ব্যবহারে ধ্বনি সাম্য ঘটেছে। ফলে ধ্বমি ঝংকার উঠেছে। তাই এখানে ‘চ’-ধ্বনির সাম্যে একটি অদ্ভুত, পুর্ব শব্দালংকার গড়ে উঠেছে।
শব্দালঙ্কার পাঁচ প্রকার।
(১) অনুপ্রাস।
(২) যমক।
(৩) শ্লেষ।
(৪) বক্রোক্তি।
(৫) পুনরুক্তবদাভাস।
প্রশ্ন ২। নিম্নলিখিত অলঙ্কার সমূহের সংজ্ঞা ও দৃষ্টান্ত দাও।
১। অনুপ্রাস: একটি বর্ণ বা একগুচ্ছ বর্ণ বারবার ব্যবহৃত হয়ে যে শব্দ বা ধ্বনি সাম্য সৃষ্টি করে, তাকে অনুপ্রাস বলে।
যেমন- (১) ‘গুরু গুরু মেঘ গুমরি-গুমরি গরজে গগনে-গগনে।’
এখানে ‘গু’ বর্ণটি ৪ বার এবং ‘গ’ বর্ণটি ৫ বার ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে ‘গু’ ও ‘গ’ অপরূপ ধ্বনি সাম্য সৃষ্টি করেছে। তাই এটি হল অনুপ্রাস।
(২) ‘চল চপলার চকিত চমকে করিছে চরণ বিচরণ।’
এখানে ‘চ’ ধ্বনিটি ৬ বার ব্যবহৃত হয়ে ধ্বনি সাম্য সৃষ্টি করেছে। তাই এটি হল একটি অনুপ্রাস অলংকার।
অনুপ্রাস পাঁচ প্রকার যথা –
(১) অন্ত্যানুপ্রাস।
(২) বৃত্তানুপ্রাস।
(৩) ছেকানুপ্রাস।
(৪) শ্রুত্যনুপ্রাস।
(৫) লাটানুপ্রাস।
২। যমক: যে শব্দ বাক্যের মধ্যে বার বার ব্যবহৃত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে তাকে যমক বলে।
উদাহরণ :- (ক) “ভারত ভারত খ্যাত আপনার গুণে।”
ব্যাখ্যা – এখানে ভারত শব্দটি দুবার দুটি অর্থে বসেছে। ১ম ভারত = কবি ভারতচন্দ্র, ২য় ভারত = দেশ ভারতবর্ষ।
(খ) “আনা দরে আনা যায় কত আনারস।”
ব্যাখ্যা – এখানে ১ম আনা = ৪ পয়সা, ২য় আনা = আনয়ন করা।
যমক চার প্রকার –
(১) আদ্যযমক।
(২) মধ্যযমক।
(৩) অন্ত্য যমক।
(৪) সর্ব যমক।
(১) আদ্যযমক: চরণের আদিতে যে যমক তাই আদ্য যমক।
যেমন – ভারত ভারত খ্যাত আপনার গুণে। এখানে ১ম ভারত = কবি ভারতচন্দ্র, ২য় ভারত = দেশ ভারতবর্ষ।
(২) মধ্যযমক: চরণের মধ্যে যে যমক থাকে তাকে মধ্য যমক বলে।
যেমন – পাইয়া চরণ তরী তরি ভবে আশা। এখানে ১ম তরী = নৌকা, ২য় তরি = পার হওয়া বা মুক্তি লাভ করা।
(৩) অন্ত্যযমক: চরণের শেষে যে যমক, তাই অন্ত্য যমক।
যেমন – ‘যত কাঁদে বাছা বলি সর সর
আমি অভাগিনী বলি সর সর।’
এখানে প্রথম পংক্তিতে ‘সর’ শব্দের অর্থ দুধের সর এবং দ্বিতীয় লাইনের ‘সর’ শব্দের অর্থে সরে যাওয়া।
(৪) সর্বয়মক – দুই বা ততোধিক চরণের আদি-মধ্য-অন্ত্য শব্দগুলিতে যমক হলে, সর্বযমক হয়।
যেমন – কান্তার আমোদ পূর্ণ কান্ত সহকারে।
কান্তার আমোদ “পূর্ণ কান্ত সহকারে। (ঈশ্বরগুপ্ত)
এখানে প্রথম চরণের – অর্থ বনভূমি বসন্ত সমাগমে সৌরভময় হয়।
দ্বিতীয় চরণের অর্থ – দয়িতা দয়িত সঙ্গে আনন্দপূর্ণ হয়।
S.L. No. | সূচীপত্র |
পদ্যাংশ | |
পাঠ – ১ | বংশীনাদে |
পাঠ – ২ | বিপ্রবেশে অর্জুন |
পাঠ – ৩ | কপোতাক্ষ নদ |
পাঠ – ৪ | আমার কৈফিয়ৎ |
পাঠ – ৫ | মেরুর ডাক |
পাঠ – ৬ | হায় চিল |
পাঠ – ৭ | প্ৰত্যহের ভার |
গদ্যাংশ | |
পাঠ – ৮ | ভালবাসার অত্যাচার |
পাঠ – ৯ | পনেরো আনা |
পাঠ – ১০ | সাহিত্যে খেলা |
পাঠ – ১১ | দিবা দ্বিপ্রহরে |
নাটক | |
পাঠ – ১২ | মুকুট |
উপন্যাস | |
পাঠ – ১৩ | মেজদিদি |
ব্যাকরণ | |
ছন্দ | |
অলঙ্কার |
৩। শ্লেষ: শ্লেষ হলো শব্দালংকার। যখন একটি শব্দ মাত্র একবার ব্যবহার হয়, অথচ ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে, তখন তাকে শ্লেষ অলংকার বলে।
যেমন – কে বলে ঈশ্বরগুপ্ত ব্যপ্ত চরাচর।
যাহার প্রভায় প্রভা পায় প্রভাকর ৷। (ঈশ্বরগুপ্ত)
ব্যাখ্যা – (১) এখানে প্রথম ঈশ্বরগুপ্ত – কবি ঈশ্বরগুপ্ত
দ্বিতীয় ঈশ্বরগুপ্ত – ভগবান লুক্কায়িত।
(২) প্রথম প্রভাকর – পত্রিকার নাম।
দ্বিতীয় প্রভাকর – সূর্য।
শ্লেষ দু-প্রকার। যেমন – সভঙ্গ শ্লেষ, অভঙ্গ শ্লেষ।
সভঙ্গ শ্লেষ: যে শ্লেষ অলংকারে শব্দটি অক্ষুণ্ণ থাকে এবং তাকে ভাঙলে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে তাকে সভঙ্গ শ্লেষ বলে।
যেমন – “পৃথিবীটা কার বশ? পৃথিবী টাকার বশ।
এখানে ‘পৃথিবী’ ও ‘টা’ বিশ্লেষিত করে ‘টা’-র সঙ্গে কার যোগে উত্তর পাওয়া যাচ্ছে। এখানে সভঙ্গ শ্লেষ।
অভঙ্গ শ্লেষ: শব্দকে না ভেঙ্গে যে শ্লেষ অলংকারের বিভিন্ন অর্থ পাওয়া যায় তাকে অভঙ্গ শ্লেষ বলে।
যেমন – পূজা শেষে কুমারী বলল, ঠাকুর
আমাকে একটি মনের মত বর দাও।
এখানে ‘বর’ একটি শব্দ; একবার মাত্র ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু দুরকম অর্থ প্রকাশ করেছে।
(১) বর – আশীর্বাদ।
(২) বর – স্বামী।
অর্থালংকার: যে অলংকার অর্থের আশ্রয়ে সৃষ্ট, যা অর্থের উপরই সম্পূর্ণ নির্ভরশীল, তাকেই অর্থালংকার বলে।
অর্থালংকারকে মোটামুটি পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন –
(১) সাদৃশ্যমূলক।
(২) বিরোধমুলক।
(৩) শৃঙ্খলামূলক।
(৪) ন্যায়মূলক।
(৫) গুঢ়ার্থমূলক।
সাদৃশ্যমূলক অলংকার
(১) উপমা: উপমা কথাটির সাধারণ অর্থ তুলনা। দুটি ভিন্ন জাতীয় বস্তুর মধ্যে কোনো সমান ধর্ম বা গুণ হেতু তুলনা করা হলে তাকে উপমা অলংকার বলে।
যেমন – মুখখানি চাঁদের ন্যায় সুন্দর।
ব্যাখ্যা – এখানে মুখ ও চাঁদ এই দুই বিজাতীয় বস্তুর মধ্যে তুলনা করা হয়েছে, ‘সুন্দর’ এদের সমান ধর্ম বা সাধারণ গুণ। এবং ‘ন্যায়’ এই সাদৃশ্যবাচক শব্দের সাহায্যে উভয়ের তুলনা করা হয়েছে।
উপমার চারটি উপাদান থাকে –
(১) উপমেয়।
(২) উপমান।
(৩) সাধারণ ধর্ম।
(৪) সাদৃশ্য বাচক শব্দ।
(১) উপমেয় – যে বস্তুকে অন্য কোনো বস্তুর সঙ্গে তুলনা করা হয়।
(২) উপমান – যার সঙ্গে তুলনা করা হয়।
(৩) সাধারণ ধর্ম – যে ধর্ম বা গুণ উপমেয় এবং উপমান উভয় বস্তুতে বর্তমান।
(৪) সাদৃশ্যবাচক শব্দ – যে শব্দের দ্বারা তুলনা বা সাদৃশ্য দেখানো হয়। যেমন – ন্যায়, মত, সম, যেমন, সাদৃশ্য, তুল্য ইত্যাদি।
উদাহরণ – (১) “মুখখানা চাঁদের ন্যায় সুন্দর।”
উপমেয় উপমান সাদৃশ্যবাচক শব্দ সাধারণ ধর্ম।
(২) এও যে রক্তের মতো রাঙা দুটি জবাফুল
উপমান সাদৃশ্যবাচক শব্দ সাধারণ ধর্ম উপমেয়
ব্যাখ্যা – এখানে জবাফুল ও রক্ত দুই বিজাতীয় বস্তু। রাঙা এদের সাধারণ ধর্ম। এ কারণে এখানে উপমা অলংকার হয়েছে।
উপমালংকার চার প্রকার। যেমন –
(১) পূর্ণোপমা।
(২) লুপ্তোপমা।
(৩) মালোপমা।
(৪) প্রতিবস্তুপমা।
(১) পূর্ণোপমা: যে উপমা অলংকারের উপমেয়, উপমান, সাধারণ ধর্ম ও তুলনাবাচক শব্দ – এই চারটি অঙ্গই বর্তমান, তাকে বলে পূর্ণোপমা। যেমন – মুখখানা চাঁদের ন্যায় সুন্দর।
এখানে উপমেয় – মুখ, উপমান – চাঁদ, সাধারণ ধর্ম – সুন্দর এবং সাদৃশ্যবাচক শব্দ – ন্যায়।
(২) রূপক: উপমেয় এবং উপমানের মধ্যে অভেদ কল্পনা করলে রূপক অলংকার হয়।
যেমন – (১) ‘বাছার মুখচন্দ্র মলিন হয়ে গেছে।’
ব্যাখ্যা – এখানে মুখ উপমেয় ও চন্দ্র উপমানের মধ্যে অভেদ কল্পনা করা হয়েছে।
(২) ‘চন্দ্ৰমুখী বালিকা হাসে নিরবধি।’
ব্যাখ্যা – বালিকার মুখ ও চাঁদের মধ্যে অভেদ কল্পনা করা হয়েছে।
(৩) উৎপ্রেক্ষা: উৎপ্রেক্ষা অর্থ সংশয়। প্রবল সাদৃশ্যবশতঃ উপমেয়কে যদি উপমান বলে সংশয় হয় তাহলে তাকে উৎপ্রেক্ষা অলংকার বলে।
উদাহরণঃ (ক) “পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।”
ব্যাখ্যা – এখানে উপমেয় পূর্ণিমার চাঁদ। উপমান রুটি। সাধারণ ধর্ম ঝলসানো। সাদৃশ্য বাচক শব্দ যেন। দুটির মধ্যে প্রবল সংশয় দেখা দিয়েছে এবং উপমান ‘রুটি’ যেন প্রাধান্য পাচ্ছে।
(খ) “সীতা হারা রাম যেন মনিহারা ফণী।”
ব্যাখ্যা – এখানে উপমেয় রাম, উপমান ফণী। ‘রাম’ ও ‘ফণী’তে প্রবল সাদৃশ্য। ‘যেন’ সাদৃশ্যবাচক শব্দ।
উৎপ্রেক্ষা দুই প্রকার। যথা –
১। বাচ্যোৎপ্রেক্ষা।
২। প্রতীয়মানোৎপ্রেক্ষা।
যে উৎপ্রেক্ষা অলংকারে সংশয়সূচক শব্দ ‘যেন’ থাকে না তাকে প্রতীয়মান উৎপ্রেক্ষা এবং যেখানে সংশয়সূচক শব্দ ‘যেন’ থাকে তাকে বাচ্যোৎপ্রেক্ষা অলংকার বলে।
যেমন: ‘সাধ্বী রমণীর দৃষ্টি সমুদ্যত বাজী।
উপমেয় = দৃষ্টি, উপমান = বাজ, সংশয়সূচক শব্দ ‘যেন’ নেই।
বাচ্যোৎপ্রেক্ষার উদাহরণ-
“ফেনিল সলিল রাশি বেগভরে পড়ে আসি।
চন্দ্রালোকে ভেঙে যেন পড়ে পৃথিবীতে।”
(৪) অপহ্নুতি: অপহ্নব শব্দের অর্থ গোপণ। যে অলঙ্কারে উপমেয়কে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে উপমানকে স্বীকার বা প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে অপহ্নুতি অলংকার বলে।
যেমন – (১) ‘মুখ নয়, চন্দ্ৰ’,
ব্যাখ্যা – এখানে উপমেয় মুখকে অস্বীকার বা অপহ্নব করে তার জায়গায় উপমান চন্দ্রের কাল্পনিক প্রতিষ্ঠা করায় অপহ্নতি হয়েছে।
(২) এ মেয়েও মেয়ে নয়, দেবতা নিশ্চয় – ভারতচন্দ্র।
ব্যাখ্যা – এখানে উপমেয় মেয়েকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। অন্যদিকে অপ্রধান বিষয় উপমান দেবতাকে প্রধান রূপে প্রতীয়মান করা হয়েছে। তাই এটি অপহূতি অলংকার।
(৫) ব্যাজম্ভুতি: ব্যাজস্তুতি একটি গুঢ়ার্থমূলক অর্থালঙ্কার। যে অলঙ্কারে নিন্দার ছলে স্তুতি ও স্তুতির ছলে নিন্দা প্রকাশ পায়, তাকে ব্যাজস্তুতি বলে। ব্যাজ শব্দের অর্থ হল, কপট।
যেমন – (১) ‘‘অতি বড় বৃদ্ধ পতি সিদ্ধিতে নিপুণ।
কোন গুণ নাহি তার কপালে আগুন।”
ব্যাখ্যা – এখানে মহাদেবের নিন্দার ছলে স্তুতি করা হয়েছে।
(২) সভাজনশুন জামাতার গুণ বয়সে বাপের বড়।
কোন গুণ নাই, যেথা সেথা ঠাই, সিদ্ধিতে নিপুণ বড়।
ব্যাখ্যা – এখানে বক্তা দক্ষ নিন্দা অর্থেই বাক্যগুলি প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু কবি অপর অর্থ ইঙ্গিত করে শিব নিন্দার ভাগী হতেছেন না। এইভাবে নিন্দাচ্ছলে স্তুতি ব্যজস্তুতি অলংকার হয়েছে।
(৬) সমাসোক্তি: উপমেয়ের উপর উপমানের ব্যবহার আরোপিত হলে সমাসোক্তি অলংকার হয়। অথবা, নির্জীব পদার্থের উপর সজীব পদার্থের ব্যবহার আরোপ করলে তাকে সমাসোক্তি অলংকার বলে।
যেমন – (১) “তটিনী চলেছে অভিসারে”
ব্যাখ্যা – এখানে নির্জীব তটিনীর উপর (রাধিকার) নারীর ব্যবহার আরোপ করা হয়েছে।
(২) “সন্ধ্যা আসিছে অতি ধীর পায়ে দু’হাতে প্রদীপ নিয়ে।”
ব্যাখ্যা – উপমেয় – সন্ধ্যা (অচেতন বস্তু, উপমান – অনুলেখ্য। কাব্যের অংশটি পাঠ করলেই বোঝা যায়, সে হবে একজন গৃহবধূ। এখানে মনুষ্যধর্মের আরোপ হয়েছে।
(৭) বিরোধাভাস: বিরোধাভাস একটি বিরোধমূলক অলংকার। যদি দুটি বস্তুকে আপাত দৃষ্টিতে পরস্পর বিরোধী মনে হয়, অথচ তাৎপর্য বিশ্লেষণে সে বিরোধ থাকে না। তখন তাকে বিরোধাভাস অলঙ্কার বলে।
যেমন – (১) বড় যদি হতে চাও ছোট হও তবে।
ব্যাখ্যা – এখানে বড় অর্থে মহান এবং ছোট অর্থে বিনয়ী সুতরাং প্রকৃত কোন বিরোধ বিরোধ নেই।
(২) ‘মক্ষিকাও গলে না গো পড়িলে অমৃত হ্রদে।
ব্যাখ্যা – হ্রদে পড়া এবং মল্লিকা গলে না যাওয়া পরস্পর বিরোধী ব্যাপার। কিন্তু এখানে হ্রদটি অমৃতের, অমৃত ধ্বংস করে না, অমর করে, সুতরাং এখানে বিরোধের অবসান ঘটেছে।
(৮) অতিশয়োক্তি: উপমান ও উপমেয়ের অভেদত্বের জন্য, যদি উপমান উপমেয়কে সম্পূর্ণ গ্রাস করে ও উপমানই উপমেয় বলে প্রতিপন্ন হয়, তাকে অতিশয়োক্তি অলংকার বলে।
যেমন: (১) “আইল গোধূলি, একটি রতন ভালো।”
ব্যাখ্যা – এখানে উপমান = রতন। উপমেয়ের উল্লেখ নেই তবে তা হবে ‘চন্দ্র’। কবি কল্পনার চমৎকারিত্বে ‘রতন’ ও ‘গোধুলি’ দুটি সম্পূর্ণ পৃথকবস্তু অভেদ হয়েছে।
(২) “বন থেকে এল একটিয় মনোহর।
সোনার টোপর শোভে মাথার উপর।”
ব্যাখ্যা – এখানে উপমান – টিয়ে; উপমেয় – আনারস; কিন্তু সেটি উল্লিখিত হয়নি। গভীর সাদৃশ্যহেতু উপমানটি উপমেয় আনারসকে সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করে ফেলেছে এবং উপমান টিয়ে এখানে প্রকটিত হয়েছে।
(৯) বিষম: কার্য ও কারণের মধ্যে যদি কোন অসঙ্গতি দেখা দেয় অথবা কারণ হতে যে ফল পাওয়ার কথা তার পরিবর্তে যদি অবাঞ্ছিত ফল দেখা দেয় অথবা যদি দুই অসম্ভব ঘটনার মিলন ঘটে তবে বিষম অলংকার হয়।
“জুড়াইতে চন্দন লেপিলে অহর্নিশ।
বিধির বিপাকে তাহা হয়ে উঠে বিষ।”
অর্থাৎ চন্দনের লেপনে শরীরে শীতলতার অনুভব হয়। কিন্তু এখানে বিধির বিপাকে জ্বালা পাওয়া গিয়েছে চন্দনের লেপনের ফলে। সুতরাং বলা যায় এখানে যে ফল পাওয়ার কথা ছিল তার পরিবর্তে অন্য ফল হয় এটি বিষম অলংকার হয়েছে।
(১০) সন্দেহ: সন্দেহ হল সাদৃশ্যবাচক অর্থালংকার। যে অলংকারে উপমেয় এবং উপমান দুটিতেই সমান সংশয় থাকে, তাকে সন্দেহ অলংকার বলে।
যেমন: “সোনার হাতে সোনার কাঁকন কে কার অলংকার।
উপমেয় = সোনার হাত, উপমান = সোনার কাঁকন, সংশয় শব্দ নেই।
এখানে উপমেয়তে সংশয় আবার উপমানেও সংশয় এইজন্য ‘সন্দেহ’।
(১১) ছেকানুপ্রাস: দুই বা ততোধিক ব্যঞ্জনধ্বনি, একইক্রমে, যদি দুবার মাত্র ধ্বনিত হয়, তবে তাকে ছেকানুপ্রাস বলে।
যেমন – এখনি অন্ধ বন্ধ করো না পাখা।
ব্যাখ্যা – এখানে ‘ন্ধ’ একটি যুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ। এটি একই ক্রমে দুবার মাত্র ধ্বনিত হয়েছে, এবং শব্দ সাম্য সৃষ্টি করেছে। তাই চরণটি হয়েছে ছেকানুপ্রাস।
(১২) লুপ্তোপমা: যে উপমা অলংকারকে উপমার চারটি অঙ্গের মধ্যে উপমেয় ছাড়া অন্য একটি বা দুটি অঙ্গ অনুল্লেখিত থাকে, তাকে লুপ্তোপমা বলে।
যেমন – বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।
এখানে সাদৃশ্যবাচক শব্দ ‘যেমন’ লুপ্ত আছে বলিয়া লুপ্তোপমা।
(১৩) কাকু বক্রোক্তি: যখন বক্তার কণ্ঠস্বরের বিশেষ ভঙ্গির জন্য ‘না’ বাচক কথার ‘হ্যা’ বাচক অর্থ হয়, অথবা ‘হ্যা’ বাচক কথার ‘না’ বাচক অর্থ হয়, তখন তাকে কাকু-বক্রোক্তি অলংকার বলে।
যেমন – কে ছেঁড়ে পদ্মের পর্ণ?
এখানে বক্তার কণ্ঠস্বরের ভঙ্গিতেই উত্তরটি রয়েছে। এবং বিপরীত গুণেই তা প্রকাশিত হচ্ছে। ‘পদ্মের পর্ণ’ কে ছেড়ে ? এই প্রশ্নের সঙ্গেই উত্তর বোঝা যাচ্ছে – সুতরাং একি একটি ‘কাকু বক্রোক্তি’।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দাও:
ছন্দ ও অলংকার
১। পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি। অলঙ্কারের নাম লেখো।
উত্তরঃ উপমা (পূর্ণোপমা)।
প্রশ্ন ২। একই শব্দ স্বরধ্বনি সমেত ভিন্ন ভিন্ন অর্থে একাধিকবার ব্যবহৃত হলে কী অলংকার হয়?
উত্তরঃ যমক।
প্রশ্ন ৩। “পাইয়া চরণ তরি তরি ভবে আসা।” অলঙ্কারের নাম লেখো।
উত্তরঃ মধ্যযমক।
প্রশ্ন ৪। চরণের যেখানে অর্ধযতি পড়ে সে সব অংশকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ পর্ব।
প্রশ্ন ৫। “মধুহীন কর নাগো তব মনঃ কোকনদে।” অলংকারের নাম লেখো।
উত্তরঃ অভঙ্গ শ্লেষ।
প্রশ্ন ৬। যাদের দ্বারা ছন্দের পরিমাপ করা যায় তাকে কী বলে?
উত্তরঃ মাত্রা।
প্রশ্ন ৭। “এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ, মরণে তাহাই তুমি করে গেলে দান।” – অলংকারের নাম লেখো।
উত্তরঃ বিরোধাভাস।
প্রশ্ন ৮। এক একটি চরণের যেখানে অর্ধতি পড়ে সে সব অংশকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ পর্ব।
প্রশ্ন ৯। বাকযন্ত্রের একতম প্রয়াসে উচ্চারিত ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছের নাম কী?
উত্তরঃ শব্দালংকার।
প্রশ্ন ১০। একটি বাক্যে একটি শব্দ একবার মাত্র ব্যবহৃত হয়ে যদি একাধিক অর্থ প্রকাশ করে তবে কোন্ অলংকার হয়?
উত্তরঃ শ্লেষ।
প্রশ্ন ১১। সমগ্র বা আংশিক অর্থ পরিস্ফুটনের জন্য ধ্বনি প্রবাহে যে উচ্চারণ বিরতি তাকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ ছেদ।
প্রশ্ন ১২। একই বাক্য সাধারণ ধর্ম বিশিষ্ট দুই বিজাতীয় পদার্থের মধ্যে সাদৃশ্য প্রদর্শন করা হলে কোন্ অলংকার হয়?
উত্তরঃ উপমা।
প্রশ্ন ১৩। উৎপ্রেক্ষা অলংকার কয় প্রকারের?
উত্তরঃ উৎপ্রেক্ষা অলংকার দুই প্রকারের।
প্রশ্ন ১৪। সাদৃশ্যমূলক অলংকারে দুটি তুলনীয় বস্তুর মধ্যে তুলনার সময় যার সঙ্গে তুলনা করা হয়, তাকে কী বলে?
উত্তরঃ উপমান।
প্রশ্ন ১৫। যে কোনো দুই প্রকার অনুপ্রাস অলংকারের নাম লেখো।
উত্তরঃ অন্ত্যানুপ্রাস, ছেকানুপ্রাস।
প্রশ্ন ১৬। ‘চাঁদের মত সুন্দর মুখ’ – কোন অলংকার?
উত্তরঃ উপমা অলংকার।
প্রশ্ন ১৭। সাঙ্গ রূপক কী?
উত্তরঃ উপমেয় ও উপমানের অঙ্গী ও অঙ্গে পরস্পর অভেদ কল্পিত হলে সাঙ্গ রূপক হয়। যেমন – দেহদীপাধারে জ্বলিত লেলিহ যৌবনজয় শিখা।
এখানে উপমেয় দেহ অঙ্গী, এবং তার অঙ্গ যৌবন।
প্রশ্ন ১৮। উপমা অলংকার কত প্রকার?
উত্তরঃ চার প্রকার।
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.