Class 12 Advance Bengali Chapter 3 কপোতাক্ষ নদ

Join Roy Library Telegram Groups

Class 12 Advance Bengali Chapter 3 কপোতাক্ষ নদ Question Answer is a textbook prescribed by the ASSAM AHSEC Board Class 12 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 Advance Bengali Chapter 3 কপোতাক্ষ নদ Notes The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 Advance Bengali Chapter 3 কপোতাক্ষ নদ Solutions are free to use and easily accessible.

Class 12 Advance Bengali Chapter 3 কপোতাক্ষ নদ

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 2nd year Advance Bengali Question Answer, Gives you a better knowledge of all the chapters. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. AHSEC Board Class XII Advance Bengali Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. HS 2nd Year Advance Bengali Suggestion, HS 2nd Year Advance Bengali Notes Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 Advance Bengali Textbooks Solution. HS 2nd Year Advance Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

কপোতাক্ষ নদ

পদ্যাংশ

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটির কবি কে?

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

প্রশ্ন ২। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

উত্তরঃ ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলি’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

প্রশ্ন ৩। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কী জাতীয় কবিতা?

উত্তরঃ চতুর্দশপদী কবিতা।

প্রশ্ন ৪। “সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।”

‘বিরলে’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ বিরলে শব্দের অর্থ নির্জনে।

প্রশ্ন ৫। “বহুদেশে দেখিয়াছি বহু পদ-দলে”,

কিন্তু এ স্নেহের ______ মিটে কার জলে? (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তরঃ তৃষ্ণা।

প্রশ্ন ৬। “সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে।” – কোন নদের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ কপোতাক্ষ নদের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ৭। ‘বঙ্গজ’ শব্দের অর্থ লেখো।

উত্তরঃ বঙ্গদেশের মানুষ।

প্রশ্ন ৮। মধুসূদন দত্ত তাঁর কবিতায় কোন নদের বন্দনা গীতি গেয়েছেন?

উত্তরঃ ‘কপোতাক্ষ নদ’-এর বন্দনা গীতি গেয়েছেন।

প্রশ্ন ৯। কবি প্রবাসে থেকে সর্বদাই কার কথা ভাবেন?

উত্তরঃ জন্মভূমিতে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের কথা ভাবেন।

প্রশ্ন ১০। ‘কপোতাক্ষ নদের সহিত কবির সম্পর্ক কীরূপ?

উত্তরঃ নদের সহিত কবির স্নেহের সম্পর্ক।

প্রশ্ন ১১। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কবি কোথায় বসে রচনা করেন?

উত্তরঃ ফরাসি দেশের ‘ভার্সাই’ নগরীতে বসে রচনা করেন।

প্রশ্ন ১২। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কোথায় রয়েছে?

উত্তরঃ বর্তমান বাংলাদেশের যশোহর জেলায়।

প্রশ্ন ১৩। মধুসূদন দত্ত কোন প্রকার ছন্দের স্রষ্টা?

উত্তরঃ অমিত্রাক্ষর ছন্দের স্রষ্টা।

S.L. No.সূচীপত্র
পদ্যাংশ
পাঠ – ১বংশীনাদে
পাঠ – ২বিপ্রবেশে অর্জুন
পাঠ – ৩কপোতাক্ষ নদ
পাঠ – ৪আমার কৈফিয়ৎ
পাঠ – ৫মেরুর ডাক
পাঠ – ৬হায় চিল
পাঠ – ৭প্ৰত্যহের ভার
গদ্যাংশ
পাঠ – ৮ভালবাসার অত্যাচার
পাঠ – ৯পনেরো আনা
পাঠ – ১০সাহিত্যে খেলা
পাঠ – ১১দিবা দ্বিপ্রহরে
নাটক
পাঠ – ১২মুকুট
উপন্যাস
পাঠ – ১৩মেজদিদি
ব্যাকরণ
ছন্দ
অলঙ্কার

প্রশ্ন ১৪। “কপোতাক্ষনদ’ কবিতাটিতে মোট কয়টি পংক্তি রয়েছে?

উত্তরঃ চৌদ্দটি।

প্রশ্ন ১৫। “সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে।” – সতত শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘সতুত’ শব্দের অর্থ সবসময়।

প্রশ্ন ১৬। “দুগ্ধ স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে”- ‘তুমি’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘তুমি’ বলতে কপোতাক্ষ নদের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৭। “দুগ্ধ স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে”- এখানে কোন্ জন্মভূমির কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ এখানে জন্মভূমি বলতে যশোহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৮। ‘সতত যেমতি লোক নিশার স্বপনে,

শোনো মায়া _____।’ (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)

উত্তরঃ মন্ত্রধ্বনি।

প্রশ্ন ১৯। কবি মধুসূদন দত্তের লেখা শ্রেষ্ঠ কাব্য কোনটি?

উত্তরঃ চতুর্দশপদী কবিতাবলী।

প্রশ্ন ২০। কবি মধুসূদন দত্তের রচিত একটি নাটকের নাম লেখো।

উত্তরঃ কৃষ্ণকুমারী।

প্রশ্ন ২১। বাংলা সাহিত্যে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত কী কবি নামে পরিচিত?

উত্তরঃ ‘মধুকবি’ নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ২২। মধুসূদনের একটি বিখ্যাত নাটকের নাম লেখো।

উত্তরঃ শর্মিষ্ঠা।

প্রশ্ন ২৩। কবি মধুসূদন রচিত শ্রেষ্ঠ কাব্য কোনটি?

উত্তরঃ চতুর্দশপদী কবিতাবলী।

প্রশ্ন ২৪। কবি মধুসূদন দত্ত রচিত মহাকাব্যের নাম লেখো।

উত্তরঃ মেঘনাদবধ কাব্য।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

পশ্ন ১। ‘‘বারি রূপ কর তুমি, এ মিনতি গাবে,

বঙ্গজ জনের কানে, সখে, সখারীতে।”

– সখা বলে কবি কাকে সম্বোধন করেছেন? উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ ‘সখা’ বলে কবি কপোতাক্ষ নদকে সম্বোধন করেছেন।

বঙ্গজ জন বলতে এখানে বাংলাদেশের মানুষের কথা বলা হয়েছে। কবির অনুরোধ নদী যেমন সাগরকে তার জল দান করে, ঠিক সেভাবে সে তার কুলুকুলু ধ্বনিতে মধুসুদনের নাম গান বঙ্গের মানুষের কাছে করে এবং মনে করিয়ে দেয় কবির কথা।

প্রশ্ন ২। “তৰ কলকলে

জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে!”

এখানে কার কলধ্বনির কথা বলা হয়েছে? ‘ভ্রান্তির ছলনে’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

উত্তরঃ এখানে ‘কপোতাক্ষ নদের’ কলধ্বনির কথা বলা হয়েছে। কবি ফরাসি দেশের ভার্সাই নগরে বসে কপোতাক্ষ নদের কলধ্বনি শুনতে পান। কিন্তু বাস্তবে এ ব্যাপারটি ছিল কবির স্মৃতিমাত্র। যার জন্য কবি একে ‘ভ্রান্তির ছলনা’ বলেছেন।

প্রশ্ন ৩। “সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে।

সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে;”

– কবির নাম কী? এখানে কবি কোন্ নদীর কথা বলেছেন?

উত্তরঃ কবির নাম হল মাইকেল মধুসূদন দত্ত। এখানে কবি কপোতাক্ষ নদের কথা বলেছেন।

প্রশ্ন ৪। “লইছে যে তব নাম বঙ্গের সঙ্গীতে।”- বাক্যটি কোন্ কবিতার অন্তর্গত?bকার নামের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ বাক্যটি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার অন্তর্গত।

কপোতাক্ষ নদের নামের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ৫।“ বারিরূপ কর তুমি, এ মিনতি গাবে,

বঙ্গজ জনের কানে, সখে সখারীতে,

নাম তার।”

‘সখা’ বলে কবি কাকে সম্বোধন করেছেন? উদ্ধৃতিটি কোন্ কবিতার অংশ?

উত্তরঃ ‘সখা’ বলে কবি কপোতাক্ষ নদকে সম্বোধন করেছেন।

উদ্ধৃতিটি ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার অংশ।

প্রশ্ন ৬। মাইকেল মধুসূদনের ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কোন শ্রেণীর রচনা? কবি উক্ত কবিতাটি কোন দেশে বসবাস কালে রচনা করেছিলেন?

উত্তরঃ চতুর্দশপদী কবিতাবলি।

ফরাসী দেশের ভার্সাই শহরে বসবাস কালে তিনি কবিতাটি রচনা করেছিলেন।

প্রশ্ন ৭। “সতত হে নদ তুমি পড় মোর মনে”

– কে বলেছে ? ‘সতত’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ কথাটি কবি মধুসুদন দত্তের।

সতত শব্দের অর্থ সবসময় বা সর্বদা।

প্রশ্ন ৮। “বহু দেশে দেখিয়াছি বহু পদ-দলে

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে ?”

– কে বহু দেশ দেখেছেন? কার জলে স্নেহের তৃষ্ণা মিটে?

উত্তরঃ কবি মধুসুদন দত্ত।

কপোতাক্ষ নদের জলে স্নেহের তৃষ্ণা মিটে।

প্রশ্ন ৯। “দুগ্ধ স্রোতরূপী তুমি জন্মভূমি স্তনে।”

তুমি কে? এখানে কোন জন্মভূমির কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘তুমি’ বলতে কপোতাক্ষ নদকে বোঝানো হয়েছে।

জন্মভূমি বলতে যশোহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ১০। “দুগ্ধ স্রোতরূপী তুমি জন্মভূমি স্তনে।”

– এখানে ‘জন্মভূমি’ এবং ‘স্তন’এর অর্থ কী?

উত্তরঃ এখানে কবির কাছে জন্মভূমি শব্দের অর্থ মাতৃস্তন এবং স্তনদুগ্ধ হল কপোতাক্ষের জল।

প্রশ্ন ১১। “প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে”

– এখানে প্রজা ও রাজা কে?

উত্তরঃ এখানে প্রজা ‘কপোতাক্ষ নদ’ আর রাজা হল ‘সমুদ্র’।

প্রশ্ন ১২। মাইকেল মধুসূদন দত্ত কপোতাক্ষ নদকে মাতৃস্তনে দুগ্ধ স্রোতরূপী হিসেবে কল্পনা করেছেন কেন?

উত্তরঃ মাতা যেমন স্তন দুগ্ধ দ্বারা সন্তানের পুষ্টি সাধন করেন, কবির জন্মভূমি জননীও তেমনি তার কপোতাক্ষ নদের দুগ্ধরূপ বারি দ্বারা কবির মানসিক পুষ্টি সাধন করেছেন। তাই কবি এরূপ কল্পনা করেছেন।

প্রশ্ন ১৩। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কোন ধরনের কবিতা?

উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ একটি চতুর্দশপদী কবিতা। এই কবিতায় চৌদ্দটি পংক্তি ও প্রতি পংক্তিতে চৌদ্দটি অক্ষর বা বর্ণ আছে।

প্রশ্ন ১৪। কবি মধুসূদন দত্তের দুটি কাব্যের নাম লেখো।

উত্তরঃ দুটি কাব্য হল – 

(১) চতুর্দশপদী কবিতাবলী। 

(২) মেঘনাদবধ কাব্য।

প্রশ্ন ১৫। মধুসূদন দত্তের লেখা দুখানি নাটকের নাম লেখো।

উত্তরঃ মধুসূদন দত্তের লেখা দুখানি নাটক হল – 

(১) কৃষ্ণকুমারী।

(২) শর্মিষ্ঠা।

প্রশ্ন ১৬। মধুসূদন দত্তের লেখা দুখানি প্রহসনের নাম লেখো।

উত্তরঃ (১) একেই কী বলে সভ্যতা।

(২) বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। “বহু দেশে দেখিয়াছি বহু পদ-দলে,

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?”

এখানে বক্তা কে? বক্তার বক্তব্য বিশদ করো।

অথবা, 

কবির নাম উল্লেখ করো। কবি কোন্ প্রসঙ্গে একথা বলেছেন? 

উত্তরঃ এখানে বক্তা হলেন কবি মধুসূদন।

সুদুর ফরাসি দেশের ভার্সাই শহরে কবি মধুসূদন অত্যন্ত দুঃখ-দারিদ্র্যের জীবন অতিবাহিত করছিলেন। তিনি নানা জনপদ ঘুরেছেন। নানা দেশের নানা নদ-নদী দেখেছেন। কিন্তু জন্মভূমির প্রতি, স্বদেশের নদীর প্রতি কবির প্রাণের টান ছিল গভীর। তিনি বিদেশের চাকচিক্য ও বৈভবের মাঝেও শান্তি খুঁজে পান। তাঁর মনে জেগে থাকে স্বদেশের জন্য এক অপূরণীয় তৃষ্ণা। একমাত্র স্বদেশই পারে তার সেই তৃষ্ণার জ্বালা মেটাতে।

২। “_____এ মিনতি গাবে,

বঙ্গজ-জনের কানে, সখে, সখারীতে

নাম তার,”

– ‘সখা’ বলে কবি কাকে সম্বোধন করেছেন ? কবির বক্তব্য বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ ‘সখা’ বলে কবি কপোতাক্ষ নদকে সম্বোধন করেছেন।

কবি জন্মভূমি ছেড়ে বহুদূর প্রবাসে পড়ে আছেন। তবুও এই বাংলার (জন্মভূমির এক অখ্যাত নদী তাঁর হৃদয়ের সবটুকু অধিকার করে আছে। তিনি তাঁর কল্পনার চক্ষে সর্বদাই কপোতাক্ষ নদকে দেখতে পান। অর্থাভাবের জন্য তিনি স্বদেশে ফিরতে পারবেন না। হয়তো তাঁর প্রিয় নদ কপোতাক্ষের সঙ্গে তাঁর পুনরায় দেখা নাও হতে পারে। সেই কারণে কবি কপোতাক্ষ নদকে অনুরোধ করছেন যাতে সে কুলুকুলু ধ্বনিতে কবির নামগান বঙ্গজনের কাছে প্রতিনিয়ত করে এবং যেন মনে করিয়ে দেয় প্রবাসে থেকেও কবি নিজ জন্মভূমি ও বাংলা ভাষাকে ভুলেননি।

প্রশ্ন ৩। “সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে।”

– কোন নদের কথা এখানে বলা হয়েছে? কবির এ নদের কথা মনে পড়ার কারণ কী?

উত্তরঃ এখানে ‘কপোতাক্ষ নদ’এর কথা বলা হয়েছে।

কবি সুদূর ফরাসি দেশের ভার্সাই শহরে প্রবাস জীবন অতিবাহিত করলেও কবির মনে তাঁর জন্মভূমির কপোতাক্ষ নদের কথা অহরহ মনে পড়ে। বিদেশে বসেই কবি যেন তাঁর মনোশ্চক্ষে কপোতাক্ষ নদকে দেখতে পান। এই নদীর ভাবনা তাঁকে সর্বদা আচ্ছন্ন করে রাখে।

প্রশ্ন ৪। “বহু দেশে দেখিয়াছি বহু পদ-দলে,

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?”

– কবির নাম উল্লেখ করো। কবি কোন্ প্রসঙ্গে একথা বলেছেন? 

উত্তরঃ কবির নাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

সুদূর ফরাসি দেশের ভার্সাই শহরে কবি মাইকেল মধুসুদন অত্যন্ত দুঃখ দারিদ্র্যে জীবন অতিবাহিত করছিলেন। এই চরম দুঃখের দিনে তাঁর স্বদেশ ও গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের কথা মনে পড়ে। কবি বলছেন, তিনি বিভিন্ন দেশ, নদ-নদী দেখেছেন কিন্তু তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের দুধের মতো তৃষ্ণা নিবারক এমন কোন নদ-নদীর সন্ধান তিনি আর কোথাও পান নি।

প্রশ্ন ৫। “____যতদিন যাবে,

প্রজারূপে রাজরূপ সাগরের দিতে

বারি রূপ কর তুমি; এ মিনতি গাবে

বঙ্গজ জনের কানে, সখে, সখারীতে

নাম, তার, _______।”

– কবির নাম লেখো। পংক্তিগুলোর অন্তর্নিহিত ভাবটি স্পষ্ট করো।

উত্তরঃ কবির নাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত।

কবি কপোতাক্ষ নদকে কল্পনা করেছেন প্রজারূপে আর সমুদ্রকে কল্পনা করেছেন রাজারূপে। রাজা যেমন নিজের আসনে বসে থাকেন আর প্রজারা তার কাছে খাজনা নিয়ে হাজির হয়, কপোতাক্ষ নদ তেমনি তার জলধারাকে রাজা সমুদ্রের কাছে খাজনা হিসাবে দিতে চলেছে।

কবি ভারাক্রান্ত মনে নদীর কাছে মিনতি জানিয়েছেন যে কপোতাক্ষ নদ যেন সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হতে হতে বাংলার মানুষের কাছে তাঁর নামে এই বার্তা পৌঁছে দেয় যে কবি বিদেশে থেকেও নিজের জন্মভূমিকে মনে রেখেছেন।

প্রশ্ন ৬। সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো –

‘বঙ্গ দেশে দেখিয়াছি বহু পদ-দলে, 

কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মিটে কার জলে?

দুগ্ধ-স্রোতোরূপী তুমি জন্মভূমি-স্তনে।’

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু বাংলা কাব্য জগতের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র কবি মধুসূদন দত্তের ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘কপোতাক্ষ নদ’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ – কবি প্রবাস জীবনে থাকা সত্ত্বেও তার দেশোয়ালি কপোতাক্ষ নদের কথা যে স্মরণে আছে তাই প্রকাশিত হয়েছে।

কবি তাঁর জন্মভূমি ছেড়ে সুদূর ফ্রান্সে জীবন যাপন করছেন। নানা দেশের নদ-নদী দেখেছেন কিন্তু স্বদেশের নদীর প্রতি কবির প্রাণের টান ছিল গভীর। তিনি বিদেশের বৈভবের মধ্যে শান্তি খুঁজে পান না। তাঁর মনে জেগে থাকে স্বদেশের জন্য এক অপূরণীয় তৃষ্ণা। একমাত্র স্বদেশই পারে তাঁর সেই তৃষ্ণা মেটাতে।

কবি জন্মভূমিকে মাতৃস্তন রূপে কল্পনা করেছেন, আর কপোতাক্ষকে কল্পনা করেছেন মাতৃস্তনে প্রবাহিত স্তন দুগ্ধ রূপে। মা যেমন তার স্তনদুগ্ধ দ্বারা সন্তানকে পুষ্ট করে তুলেন, কবির জন্মভূমি জননীও তেমনি তার কপোতাক্ষ নদের দুগ্ধরূপ বারি দ্বারা কবির মানসিক পুষ্টি সাধন করেছেন।

প্রশ্ন ৭। ‘‘আর কি হে হবে দেখা?”

– কে, কার সঙ্গে দেখা করতে চান? কবির কণ্ঠে এইরূপ অনিশ্চয়তা ফুটে উঠেছে কেন?

উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর জন্মভূমির কপোতাক্ষ নদের সঙ্গে দেখা করতে চান।

সুদূর ফরাসি দেশের ভার্সাই শহরে প্রবাসের নানা সমস্যাদীর্ণ জীবনের মাঝে জন্মভূমি বাংলাদেশের কপোতাক্ষ নদের স্মৃতি কবিকে বিষণ্ণ করেছে। কবি জানেন না, এই জীবন থেকে মুক্তি নিয়ে তিনি আবার জন্মভূমির পুণ্যতোয়া নদীর তীরে ফিরতে পারবেন কি না। তাই তার কণ্ঠে এইরূপ অনিশ্চয়তা ফুটে উঠেছে।

প্রশ্ন ৮। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবির কোন্ মানসিকতা ধরা পড়েছে?

উত্তরঃ ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত জন্মভূমির প্রতি তাঁর অপরিমেয় ভালোবাসা ব্যক্ত করেছেন। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে কবি ফরাসি দেশের ভার্সাই শহরে প্রবাসী। কিন্তু সেই প্রবাসেও জন্মভূমির স্মৃতি কবির মনকে বিষণ্ণ করে তুলেছে। তিনি সন্ধ্যার ক্লান্ত পাখির মতো ঘরে ফিরতে চান। কবিতাটির প্রতি ছত্রে জননী জন্মভূমির প্রতি কবির নাড়ির টানই ধরা পড়েছে।

প্রশ্ন ৯। “যেমতি লোক নিশার স্বপনে

শোনে মায়া – মন্ত্রধ্বনি-

কোন্ কবির কোন্ কবিতার অংশ? নিশার স্বপন কী? মায়া-মন্ত্রধ্বনি কথাটির তাৎপর্য কী?

উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশটি কবি মাইকেল মধুসুদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা থেকে গৃহিত হয়েছে।

নিশার স্বপন কথাটির অর্থ হল রাত্রিকালে নিদ্রায় দেখা স্বপ্ন। স্বপ্নের জগৎ বাস্তবে টেকে না। স্বপ্ন যেন মায়া মন্ত্র দ্বারা রচিত এক ইন্দ্রজালের জগৎ, যা ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে বিলীন হয়ে যায়। এখানে কবি কল্পনাকে মায়াময় স্বপ্নের জগতের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার বিষয়বস্তুর বিবরণ দাও এবং কবিতাটিতে কবিচিত্তের যে পরিচয় প্রতিফলিত তার উল্লেখ করো।

উত্তরঃ কবি সুদূর ভার্সাই শহরে (ফ্রান্সে) থাকাকালীন সময়ে অত্যন্ত দুঃখ-দারিদ্রে জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। এই চরম দুঃখের দিনে তাঁর স্বদেশ ও বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের কথা মনে পড়ে। তাঁর নিঃসঙ্গ-নির্জনতার সঙ্গী ছিল এই কপোতাক্ষ নদ। তাঁকে তিনি কখনও ভুলতে পারেননি। তাই তিনি এতদূরে থেকেও এই নদীর কলকলে ধ্বনি মায়াচ্ছলে শুনতে পান। কবি বলছেন, তিনি বিভিন্ন দেশ, নদনদী দেখেছেন কিন্তু তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কপোতাক্ষের জলে মাতৃদুগ্ধের মতো তৃষ্ণা নিবারক এমন কোন নদ-নদীর জলের সন্ধান তিনি আর কখনও কোথাও পাননি। অর্থাভাবের জন্য তিনি হয়তো স্বদেশ ফিরতে পারবেন না। হয়তো তাঁর প্রিয় নদ কপোতাক্ষের সঙ্গে আর দেখা নাও হতে পারে। সে কারণে কবি কপোতাক্ষ নদকে অনুরোধ করছেন যাতে সে কুলুকুলু ধ্বনিতে তাঁর নামগান বঙ্গের মানুষের কাছে করে এবং মনে করিয়ে দেয় যেন প্রবাসে থেকেও কবি নিজ জন্মভূমি ও বাংলা ভাষাকে ভুলতে পারেন নি।

প্রশ্ন ২। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি মধুসূদনের যে স্মৃতিচারণ, আক্ষেপ ও প্রার্থনা অভিব্যক্ত তা বিবৃত করো।

উত্তরঃ কবি সুদূর ভার্সাই শহরে (ফ্রান্সে) থাকাকালীন সময়ে অত্যন্ত দুঃখ-দারিদ্রে জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। এই চরম দুঃখের দিনে তাঁর স্বদেশ ও বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের কথা মনে পড়ে। তাঁর নিঃসঙ্গ-নির্জনতার সঙ্গী ছিল এই কপোতাক্ষ নদ। তাঁকে তিনি কখনও ভুলতে পারেননি। তাই তিনি এতদূরে থেকেও এই নদীর কলকলে ধ্বনি মায়াচ্ছলে শুনতে পান। কবি বলছেন, তিনি বিভিন্ন দেশ, নদনদী দেখেছেন কিন্তু তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কপোতাক্ষের জলে মাতৃদুগ্ধের মতো তৃষ্ণা নিবারক এমন কোন নদ-নদীর জলের সন্ধান তিনি আর কখনও কোথাও পাননি। অর্থাভাবের জন্য তিনি হয়তো স্বদেশ ফিরতে পারবেন না। হয়তো তাঁর প্রিয় নদ কপোতাক্ষের সঙ্গে আর দেখা নাও হতে পারে। সে কারণে কবি কপোতাক্ষ নদকে অনুরোধ করছেন যাতে সে কুলুকুলু ধ্বনিতে তাঁর নামগান বঙ্গের মানুষের কাছে করে এবং মনে করিয়ে দেয় যেন প্রবাসে থেকেও কবি নিজ জন্মভূমি ও বাংলা ভাষাকে ভুলতে পারেন নি।

প্রশ্ন ৩। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় মধুসূদন দত্তের কবিমানসের যে পরিচয় ফুটে উঠেছে তার পরিচয় দাও।

উত্তরঃ কবি সুদূর ভার্সাই শহরে (ফ্রান্সে) থাকাকালীন সময়ে অত্যন্ত দুঃখ-দারিদ্রে জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। এই চরম দুঃখের দিনে তাঁর স্বদেশ ও বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের কথা মনে পড়ে। তাঁর নিঃসঙ্গ-নির্জনতার সঙ্গী ছিল এই কপোতাক্ষ নদ। তাঁকে তিনি কখনও ভুলতে পারেননি। তাই তিনি এতদূরে থেকেও এই নদীর কলকলে ধ্বনি মায়াচ্ছলে শুনতে পান। কবি বলছেন, তিনি বিভিন্ন দেশ, নদনদী দেখেছেন কিন্তু তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কপোতাক্ষের জলে মাতৃদুগ্ধের মতো তৃষ্ণা নিবারক এমন কোন নদ-নদীর জলের সন্ধান তিনি আর কখনও কোথাও পাননি। অর্থাভাবের জন্য তিনি হয়তো স্বদেশ ফিরতে পারবেন না। হয়তো তাঁর প্রিয় নদ কপোতাক্ষের সঙ্গে আর দেখা নাও হতে পারে। সে কারণে কবি কপোতাক্ষ নদকে অনুরোধ করছেন যাতে সে কুলুকুলু ধ্বনিতে তাঁর নামগান বঙ্গের মানুষের কাছে করে এবং মনে করিয়ে দেয় যেন প্রবাসে থেকেও কবি নিজ জন্মভূমি ও বাংলা ভাষাকে ভুলতে পারেন নি।

প্রশ্ন ৪। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার অনুসরণে কবির স্বদেশপ্রীতির পরিচয় দাও।

উত্তরঃ কবি সুদূর ভার্সাই শহরে (ফ্রান্সে) থাকাকালীন সময়ে অত্যন্ত দুঃখ-দারিদ্রে জীবন অতিবাহিত করেছিলেন। এই চরম দুঃখের দিনে তাঁর স্বদেশ ও বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের কথা মনে পড়ে। তাঁর নিঃসঙ্গ-নির্জনতার সঙ্গী ছিল এই কপোতাক্ষ নদ। তাঁকে তিনি কখনও ভুলতে পারেননি। তাই তিনি এতদূরে থেকেও এই নদীর কলকলে ধ্বনি মায়াচ্ছলে শুনতে পান। কবি বলছেন, তিনি বিভিন্ন দেশ, নদনদী দেখেছেন কিন্তু তাঁর বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া কপোতাক্ষের জলে মাতৃদুগ্ধের মতো তৃষ্ণা নিবারক এমন কোন নদ-নদীর জলের সন্ধান তিনি আর কখনও কোথাও পাননি। অর্থাভাবের জন্য তিনি হয়তো স্বদেশ ফিরতে পারবেন না। হয়তো তাঁর প্রিয় নদ কপোতাক্ষের সঙ্গে আর দেখা নাও হতে পারে। সে কারণে কবি কপোতাক্ষ নদকে অনুরোধ করছেন যাতে সে কুলুকুলু ধ্বনিতে তাঁর নামগান বঙ্গের মানুষের কাছে করে এবং মনে করিয়ে দেয় যেন প্রবাসে থেকেও কবি নিজ জন্মভূমি ও বাংলা ভাষাকে ভুলতে পারেন নি।

প্রশ্ন ৫। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ নবজাতকের জন্মের পর যেভাবে তার পিতা-মাতা বা দাদু-ঠাকুরমা তার নামকরণ করে থাকেন ঠিক সেভাবে শিল্প-সাহিত্যেও নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সাহিত্যে নামকরণের কোন বাধাধরা নিয়ম বা রীতি নেই। তবে নামকরণকে হতে হয় কখনও বিষয়মুখী। আবার কখনওবা কাহিনী নির্ভর। আবার শিরোনামের মধ্যে কখনও চরিত্র, কখনও মুখ্য ঘটনা প্রধান হয়ে উঠে।

‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটির নামকরণ বিষয়ভিত্তিক। কবি মধুসূদন দত্তের গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের সঙ্গে তাঁর আবাল্য বন্ধুত্ব। কবি ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়েছিলেন ফরাসি দেশের ভার্সাই শহরে। সেখানে থাকাকালীন অত্যন্ত দুঃখদারিদ্র্যে জীবন অতিবাহিত করছিলেন। এই চরম দুঃখের দিনে তাঁর স্বদেশ ও বাড়ির পাশ দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদের কথা মনে পড়ে। কবি বলছেন, তিনি বিভিন্ন দেশ, নদ-নদী, দেখেছেন কিন্তু কপোতাক্ষের জলে দুধের মতো তৃষ্ণা নিবারক এমন কোন নদ-নদীর সন্ধান তিনি আর কোথাও পাননি। ফরাসি দেশে বসে কবি কপোতাক্ষের কলধ্বনি শুনতে পান। কবির আশঙ্কা আর কখনও এ জীবনে তাঁর প্রিয় মাতৃবৎ নদীর সঙ্গে দেখা হবে কিনা। এই প্রবাসে যদি তাঁর জীবন-তারা খসে যায়, তবে হয়তো আর দেখা হবে না। তাই কবি সাগররাজের কাছে বয়ে যাওয়া প্রজারূপ নদীর কাছে মিনতি সে যেন বাংলার মানুষের কানে এই বার্তা পৌঁছে দেয়, যে সুদূর প্রবাসে বসেও তাঁর মন জুড়ে আছে জন্মভূমির কথা। কবিতাটির কথাবস্তু বা বিষয়বস্তু কপোতাক্ষ নদকে কেন্দ্র করেই বর্ণিত। সুতরাং বলা যায় কবিতাটির নামকরণ যথার্থ ও সার্থক।

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি চতুর্দশপদী কবিতা হিসাবে কতখানি সার্থক হয়েছে, আলোচনা করো।

উত্তরঃ ইংরেজি সনেট এর অনুকরণে কবি মধুসূদন দত্ত বাংলায় চতুর্দশপদী কবিতার সূচনা করেন। সনেটের উৎপত্তি ইটালিয়ান কবি পেত্রাকের হাতে। পেত্রাক যে সনেট লিখতেন তার গঠনশৈলী ছিল এ রকম – মোট চৌদ্দটি লাইন, দুটি অংশে বিভক্ত। প্রথমে আট লাইনের একটি স্তবক, যাকে বাংলায় বলে ষটক। সনেটের মূল বিষয় প্রেম ও কবির মনের ভাব ও আবেগ। কবি এই ধারাটির অনুসরণে সনেট রচনা করেন।

সুদূর ফরাসী দেশের ভার্সাই শহরে বসবাস করার সময় কবি চতুর্দশপদী কবিতাবলী কাব্যখানি রচনা করেন। এই কাব্যেরই একটি কবিতা ‘কপোতাক্ষ নদ’। এই কবিতাটিতে মোট চৌদ্দটি লাইন এবং প্রতি লাইনে আছে চৌদ্দটি বর্ণ বা অক্ষর। কবিতাটিতে মধুসুদন বঙ্গভূমির প্রতি প্রেম ব্যক্ত করেছেন। কবিতাটি দুটি অংশে বিভক্ত – প্রথমে আট ও শেষে ছয় লাইনে। প্রথম অষ্টকে জন্মভূমি কপোতাক্ষ নদের জন্য তাঁর যে স্মৃতিমেদুর মানসিক পরিস্থিতি বর্ণনা করেছেন এর পরবর্তী ছয় লাইনে তাঁর মনের খেদ প্রকাশ করেছেন।

সুতরাং বিষয় ও গঠনরীতি উভয় বিচারেই ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি মধুসূদনের একটি সার্থক চতুর্দশপদী কবিতা।

প্রশ্ন ২। ‘কপোতাক্ষ নদ’ সম্পর্কে কবি হৃদয়ের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ বাংলা কাব্য জগতের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র কবি মধুসূদন দত্তের ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটিতে তাঁর মাতৃভূমি ও কপোতাক্ষ নদের প্রতি অন্তরের যথার্থ আকর্ষণ ও ভালবাসার কথাই প্রকাশিত হয়েছে।

সুদূর ফরাসি দেশের ভার্সাই শহরে একাকী বসে কবি তাঁর জন্মভূমির প্রতিটি জিনিসকে স্মরণে এনেছেন। বন্ধু-বান্ধবহীন বিদেশে কবির মনে পড়েছে গ্রাম বাংলার মাঠ, ছায়া শীতল সাগরদাড়ী গ্রাম এবং বাল্য সখা কপোতাক্ষ নদের কথা। তিনি যেন দিব্যকর্ণে শুনতে পান কপোতাক্ষ নদের কলধ্বনি। কবি জানেন যে, এই নদের কলধ্বনি শোনা তাঁর ভ্রান্তি মাত্র।

কবি বহুদেশ ভ্রমণ করেছেন, বহু নদ-নদীও তিনি দেখেছেন কিন্তু কপোতাক্ষের জল তাঁর নিকট মাতৃ দুগ্ধের ন্যায় মনে হয়েছে। এ জলে তাঁর মনের পিপাসা যেভাবে মিটেছে, তা অন্য কোন নদীর জল মেটাতে পারেনি, কারণ এই নদের সাথে কবির অন্তরের বন্ধন রয়েছে। তাই কপোতাক্ষের কথা স্মরণে আসামাত্র কবি হৃদয়ে বিষাদের সৃষ্টি হয়েছে। নিজের দেশে ফিরে আসা ছিল দরিদ্র কবির চিন্তার বাইরে। তাই কপোতাক্ষ নদকে কবির অনুরোধ, সে যেন তার সমুদ্রগামী জলধারায় মধুসুদনের নাম প্রচার করতে করতে যায়, বঙ্গবাসীর নিকটে প্রবাসী বাঙ্গালী কবির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। কপোতাক্ষ নদ যদি বাঙ্গালীর নিকট মধুসূদনের যশোগান করে তবে তিনি তার নিকট চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top