Hello Viewers Today’s We are going to Share Assam SEBA Board Class 10 Social Science Chapter 12 মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থান্য Question Answer in Bengali. As Per New Syllabus of SEBA Class 10 Social Science Chapter 12 মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থান্য Solutions in Bengali. Which you Can Download PDF Notes Class 10 Social Science Chapter 12 মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থান্য in Bengali Textbook Solutions for using direct Download Link Given Below in This Post.
SEBA Class 10 Social Science Chapter 12 মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থান্য
Today’s We have Shared in This Post SEBA Class 10 Social Science Chapter 12 মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থান্য Suggestions in Bengali. I Hope, you Liked The information About The SEBA Class 10 Social Science Part – I History, Social Science Part – II Political Science, Social Science Part – IIII Economics. If you liked SEBA Class 10 Social Science Chapter 12 মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থান্য Then Please Do Share this Post With your Friends as Well.
মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা
অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর :
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
প্রশ্ন ১। বিনিময় প্রথা কী ?
উত্তরঃ একটি বস্তুর পরিবর্তে অন্য কৌম বস্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পেলে বা গ্রহণ করলে তাকে বিনিময় প্রথা বলে । প্রাচীনকালে মানুষের বস্তু বিনিময় ছিল প্রত্যক্ষ । এই ব্যবস্থাকে প্রত্যক্ষ বিনিময় বা বস্তু বিনিময় বলে । আজকাল মানুষ মুদ্রার সাহায্যে বিনিময় করে । এই ব্যবস্থাকে পরোক্ষ বিনিময় বলে ।
প্রশ্ন ২। মুদ্রা কী ?
উত্তরঃ বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে যে বস্তু সাধারণভাবে গ্রহণযোগ্য এবং একই সঙ্গে যে মূল্যের পরিমাপ এবং মূল্যের ভাণ্ডার হিসাবে বা সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে তাকে মুদ্রা বলে ।
প্রশ্ন ৩। মুদ্রার একটি মুখ্য কার্য উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হতে হবে ।
প্রশ্ন ৪। অবিহিত মুদ্রার একটি উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ চেক ।
প্রশ্ন ৫। প্রতিনিধিত্বমূলক কাগজি মুদ্রা কী ?
উত্তরঃ কাগজী মুদ্রাই ধাতুগত মুদ্রার স্থান অধিকার করেছে । বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে কাগজী মুদ্রার ব্যবহার হয়েছে । পূর্বের কাগজী মুদ্রা সম মূল্যের সোনা বা রূপা হয়ে পরিবর্তিত হয়েছিল । উদাহরণ স্বরূপ ১০০ টাকার কাগজী মুদ্রা ১০০ টাকা মূল্যের সোনা বা রূপায় রূপান্তরিত হয়েছিল । এই ধরনের কাগজী মুদ্রাকে প্রতিনিধিত্বমূলক কাগজী মুদ্রা বলে।
প্রশ্ন ৬। ব্যাঙ্ক কী ?
উত্তরঃ যে প্রতিষ্ঠান মানুষকে টাকা – পয়সা এবং মূল্যবান বস্তু , যেমন— সোনা নিরাপদে জমা রাখার সুবিধা দেয় এবং দরকারী সময়ে মানুষকে টাকা ধার বা লোন দেয় তাকে ব্যাঙ্ক ব্যল ।
প্রশ্ন ৭। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া কোন সনে স্থাপিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ ১৯৩৫ সনে ।
প্রশ্ন ৮। চলিত আমানত কী ?
উত্তরঃ ব্যাঙ্কে চলিত আমানতে সঞ্চয় করলে বা টাকা জমা রাখলে , সঞ্চয়কারী বা আমানতকারী নিজের সঞ্চয় যে কোন সময়ে চেকের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে উঠিয়ে আনতে পারে । সাধারণত ব্যবসায়ীগণ চলিত আমানত ব্যাঙ্কে ব্যবহার করে ।
Sl. No. | সূচিপত্র |
প্রথম খণ্ড: ইতিহাস | |
অধ্যায়-১ | বঙ্গ বিভাজন ( ১৯০৫–১৯১১ ) ও স্বদেশী আন্দোলন |
অধ্যায়-২ | মহাত্মা গান্ধি এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম |
অধ্যায়-৩ | অসমে ব্রিটিশ বিরোধী জাগরণ এবং কৃষক বিদ্রোহ |
অধ্যায়-৪ | স্বাধীনতা আন্দোলন এবং অসমে জাতীয় জাগরণ |
অধ্যায়-৫ | ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য |
দ্বিতীয় খণ্ড: ভূগোল | |
অধ্যায়-১ | অর্থনৈতিক ভূগোল: বিষয়বস্তু এবং সম্পদ |
অধ্যায়-২ | পরিবেশ ও পরিবেশের সমস্যা |
অধ্যায়-৩ | পৃথিবীর ভূগোল |
অধ্যায়-৪ | অসমের ভূগোল |
তৃতীয় খণ্ড: রাজনীতি বিজ্ঞান | |
অধ্যায়-১ | ভারতীয় গণতন্ত্র |
অধ্যায়-২ | আন্তর্জাতিক সংস্থা ― রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্য |
অর্থনীতি বিজ্ঞান | |
অধ্যায়-১ | মুদ্রা এবং ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা |
অধ্যায়-২ | অর্থনৈতিক উন্নয়ন |
সংক্ষেপে উত্তর দাও :
প্রশ্ন ১। সংগতিবিহীন অভাব বিনিময় প্রথায় কীরূপে সমস্যার সৃষ্টি করে ?
উত্তরঃ মনে কর ‘ ক ’ ব্যক্তি ধান উৎপাদন করেছে। একটি নির্দিষ্ট অভাব পূরণ করতে তাঁর আপেল প্রয়োজন হয়েছে । তিনি নিজে আপেল উৎপাদন করেন নাই । এখন তাঁর অভাব কিভাবে মিটাবে ? বিনিময় প্রথার মাধ্যমে তাঁর অভাব দূর হবে । আর একজন ব্যক্তি ‘ খ ’ আপেল উৎপাদন করেছে । তাঁর ধানের প্রয়োজন হয়েছে । তিনি ধান উৎপাদন করেন না । এখানে ‘ ক ’ এবং ‘ খ ’ এর মধ্যে বিনিময় হবে । ‘ ক ’ ধানের এক অংশ ‘ খ ’ কে দিবে এবং তার বিনিময়ে ‘ ক ’ ‘ খ ’ থেকে আপেলের এক অংশ সংগ্রহ করে নেবে । এইভাবে সামগ্রীর বিনিময় করে দুইজনই দুইজনের অভাব পূরণ করেছে ।
উপরে উল্লেখ করা উদাহরণটিতে ‘ ক ’ ও ‘ খ ’ এর মধ্যে অভাবের মিল থাকায় বিনিময় সম্ভব হয়েছে। মনে কর ‘ খ ’ এর ধানের প্রয়োজন হয় নাই , ‘ খ ’ এর মৎসের প্রয়োজন । এই অবস্থায় ‘ ক ’ এবং ‘ খ ’ এর মধ্যে বিনিময় হতে পারে না । ‘ খ ’ এর মৎস উৎপাদনকারীকে খুঁজে পেতে হবে । মনে কর সেইজন ‘ গ ’ । যদি ‘ গ ’ ই ‘ খ ’ এর থেকে আপেল না চেয়ে আম চায় তখন ‘ খ ’ ও ‘ গ ’ এর মধ্যে বিনিময় হবে না।এইভাবে অভাবের সংগতিহীনতার জন্য বিনিময় প্রথাটি ক্রমশ বিলুপ্ত হল । মুদ্রার আগমনে এই অসুবিধা দূর হল । আপেল উৎপাদন করে ‘ খ ’ ই বিক্রী করে এবং সেই টাকায় মৎস ক্রয় করে ।
প্রশ্ন ২। মূল্যের ভাণ্ডার বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ মুদ্রা মূল্যের ভাণ্ডার হিসাবে বা সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে।মুদ্রার সাহায্যে ক্রয়যোগ্য বস্তু ভবিষ্যতে সঞ্চয় করা যায় । কিন্তু বস্তু সঞ্চয় করা অপেক্ষা মুদ্রা পরিমাপে বস্তুর মূল্য সঞ্চয় করা বেশি সুবিধাজনক । আবার উৎপাদনের কাজে মুদ্রাকে নিয়োগ করলে ইহা মূলধন হিসাবে পরিগণিত হয় । মুদ্রা হল সা – সামগ্রীর মূল্যের ভাণ্ডার ।
প্রশ্ন ৩। মুদ্রার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যটি কী এবং কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ ?
উত্তরঃ মুদ্রার সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে , তা না হলে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হতে পারবে না। মুদ্রার বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে এইটিই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ।
প্রশ্ন ৪। মুদ্রার তারল্য গুণ কী ?
উত্তরঃ মুদ্রার তারল্য গুণ থাকতে হবে । তারল্য গুণ যে কোন মুদ্রা সমমূল্যের সা – সামগ্রীতে তৎক্ষণাৎ এবং প্রত্যক্ষভাবে রূপান্তরিত হলেই মুদ্রার তারল্য গুণ আছে বলে বলতে হবে । মুদ্রা সামগ্রীতে তৎকালীনভাবে এবং প্রত্যক্ষভাবে রূপান্তরিত হয় ।
প্রশ্ন ৫। মুদ্রা জিনিস – পত্রের মূল্যের ঐক্যযুক্ত মাপকাঠি — ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ মুদ্রাই সা – সামগ্রীর মূল্যের মাপকাঠি হিসাবেও কার্য সম্পাদন করে । সকল আর্থিক সামগ্রীর মূল্য আছে । মুক্ত সামগ্রীর মূল্য থাকে না। যেমন— বাতাস , সূর্যের রশ্মি , নদীর জল ইত্যাদির জন্য মূল্য দিতে লাগে না । যেগুলি সামগ্রীর বাজারে বেচা – কেনা বা ক্রয় – বিক্রয় হয় সেইগুলি সামগ্রীর মূল্য আছে । মুদ্রার রূপে প্রকাশ করা সামগ্রীর বিনিময় মূল্যই হল সামগ্রীটির দাম । মুদ্রা সামগ্রীর মূল্যের উভয়েরই মাপকাঠি । কারণ সকল আর্থিক সামগ্রীর মূল্য মুদ্রার রূপে প্রকাশ করা হয় ।
প্রশ্ন ৬। সসীম বিহিত ও অসীম বিহিত মুদ্রার পার্থক্য কী ?
উত্তরঃ যে বিহিত মুদ্রার সহায়তায় বা সাহায্যে সীমিত মূল্যের লেনদেন সম্পন্ন করা যায় সেই মুদ্রাকে সসীম বিহিত মুদ্রা বলা হয় ।
অপরদিকে অধিক মূল্যের মুদ্রা হবে অসীম বিহিত মুদ্রা । চেক মুদ্রা এই ক্ষেত্রে অসীম বিহিত মুদ্রা হতে পারে । এই মুদ্রার সহায়তায় অধিক মূল্যের লেনদেন সম্পাদন করতে পারা যায় । লাখ লাখ টাকার ব্যবসা এই মুদ্রার সহায়তায় হয় ।
প্রশ্ন ৭। আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কী কার্য সম্পাদন করে ?
উত্তরঃ ১৯৭৫ সনে প্রথমে পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হয় । এই ব্যাঙ্কে সম্পাদন করা কাজ দুটি হল ―
( ১ ) ব্যবসায়ী , মহাজন থেকে অত্যধিক সুদ দিয়ে ঋণ নেওয়া গ্রামবাসীদেরকে অতি কম সুদে ঋণ প্রদান করে গরীব গ্রামবাসীকে সহায়তা করা ।
( ২ ) গ্রাম্য সঞ্চয় সংগ্রহ করে বিভিন্ন উৎপাদনমূলক কার্যে সেই সঞ্চয় ব্যয় করা । এই আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি কৃষি যোগানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে ।
ভারতবর্ষে বর্তমানে ( ২০১৪ সন ) ৫৭ টি আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক কার্যকরী হয়েছে ।
প্রশ্ন ৮। ব্যাঙ্কবিহীন প্রতিষ্ঠানাদি কোন অর্থে ব্যাঙ্ক থেকে পৃথক ?
উত্তরঃ যে সব বিত্তীয় প্রতিষ্ঠানে জমা রাখা মুদ্রা জমাকারী চেকের সহায়তায় উঠাতে পারে না এবং হস্তান্তর করতে পারে না সেগুলিকে অনা- ব্যাঙ্ক বিত্তীয় প্রতিষ্ঠান বলা হয় । যেমন — উদ্যোগিক ব্যাঙ্ক । অনা – ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠানসমূহে জমাকারীর বীমাকরণের সুবিধা থাকে না ।
অপর দিকে যে সব বিত্তীয় প্রতিষ্ঠানে জমা রাখা মুদ্রা জমাকারী চেকের সহায়তায় উঠাতে পারে বা হস্তান্তর করতে পারে , সেইগুলিকে ব্যাঙ্ক বলে গণ্য করা হয় । ব্যাঙ্কে জমাকারীর সঞ্চয়বীমা প্রথা থাকে ।
সবিস্তারে উত্তর লেখো :
প্রশ্ন ১। বিনিময় প্রথার চারটি অসুবিধে ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ বিনিময় প্রথার চারটি অসুবিধা নীচে ব্যাখ্যা করা হল—
( ১ ) সঙ্গতিবিহীন অভাব :- বস্তু বিনিময়ে – বিনিময়ে অংশগ্রহণ করা দুজন লোকের মধ্যে বস্তুর বিনিময়ে অন্য বস্তু গ্রহণ করার ইচ্ছা থাকতে হবে । তাদের প্রত্যেকের অন্যজনের বস্তুটির প্রয়োজন থাকলে তা সম্ভব হয় । একে অভাবের সঙ্গতি বলে । এরূপ সঙ্গতি না থাকলে বস্তু বিনিময় হতে পারে না । একজন মানুষের চাল আছে , তার কাপড়ের প্রয়োজন , কিন্তু অন্য জনের কাপড় থাখলেও তার যদি চাল না লাগে তাহলে বস্তু বিনিময় হতে পারে না । ইহা সঙ্গতিবিহীন অভাব ।
( ২ ) ভাগ – বিভাগের অসুবিধা :- কিছু সংখ্যক বস্তু ভাগ করতে পারা যায় না , ফলে বস্তু বিনিময়ের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয় । একটি হাতি বা ঘোড়াকে ভাগ করা যায় না এবং এইরূপ বস্তুর মূল্য অন্যান্য বস্তুর তুলনায় অনেক বেশি । কোনো ব্যক্তি এই ধরনের বস্তু পেতে ইচ্ছে করলে অন্য কোন ব্যক্তির সেই বস্তু না থাকলে বিনিময় হতে পারে না ।
( ৩ ) মূল্যের স্থায়ী মাধ্যমের অভাব :- বস্তু বিনিময় ব্যবস্থায় ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে হলে বস্তুগুলিকে সঞ্চয় করতে হয় । কিন্তু বহু বস্তু বেশি দিন জমা রাখা যায় না এবং প্রায় বস্তুগুলি কম সময়ের জন্য নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত সঞ্চয় করা যায় । বিনিময় ব্যবস্থায় মূল্যের কোন স্থায়ী মাধ্যম না থাকায় এটি একটি অসুবিধা ।
( ৪ ) স্থগিত দেনা – পাওনার মানের অভাব :- বস্তু বিনিময় ব্যবস্থায় ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধ করতে হলে বস্তুর মানে করতে হয় । কারণ স্থগিত দেনা – পাওনার একত্রে কোন মান থাকে না । এই অবস্থায় কোন লোকের কোন বস্তু ঋণ হিসাবে নিতে হলে বস্তুটি যাতে লোকে দিতে পারে এবং পরিশোধের সময়ও সেই বস্তুর মানে পরিশোধ করতে পারে । এইজন্য ঋণগ্রহণ ও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয় ।
এই অসুবিধাগুলির জন্যই বস্তু বিনিময় ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে এবং এর স্থানে মুদ্রা বিনিময়ের উদ্ভব হয় ।
প্রশ্ন ২। মুদ্রার যে – কোনো চারটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ মুদ্রার চারটি প্রধান বৈশিষ্ট্য নীচে ব্যাখ্যা করা হল—
( ১ ) মুদ্রার সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে তা না হলে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হতে পারে না । মুদ্রার বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে বা ভিতরে এইটিই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ।
( ২ ) মুদ্রার সনাক্তকরণ সহজ হতে হবে । অন্যান্য সামগ্রীগুলি হতে , ইহা পৃথক হতে হবে । মুদ্রার সনাক্তকরণ সহজ না হলে সামগ্রী বেচা – কেনার সময়ে জটিলতা দেখা দেবে ।
( ৩ ) মুদ্রার স্থায়িত্ব থাকতে হবে । মুদ্রা সহজেই নষ্ট হয়ে যাওয়া সামগ্রী হতে পারে না । মাছ , ডিম , দুধ ইত্যাদির কোনটিই মুদ্রা হতে পারে না , কারণ এইগুলি বেশিদিন টেকে না । মুদ্রা সঞ্চয়ের ভাণ্ডার হতে হলে মুদ্রা বেশিদিন পর্যন্ত টিকতে হবে ।
( ৪ ) মুদ্রা সমজাতীয় হওয়া চাই । অর্থাৎ মুদ্রা গুণের দিক হতে একই প্রকার হবে । উদাহরণস্বরূপ , যদি একটি ১০০ টাকার নোটের আকার ডাক টিকিটের মত একেবারে ছোট আর অন্য একটি ১০০ টাকার নোট একটি সংবাদ পত্রের মত বৃহৎ আকারের হয় তা হলে সামগ্রীর লেনদেনের ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দিবে । সুতরাং সকলগুলি বা প্রত্যেকটি ১০০ টাকার সকল দিক হতে এক হতে হবে । বাকীগুলি মুদ্রার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম হতে হবে ।
প্রশ্ন ৩। মুদ্রার যে – কোনো চারটি প্রধান কার্য ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ নিম্নে মুদ্রার চারটি কার্যাবলী আলোচনা করা হল—
( ১ ) বিনিময়ের মাধ্যম :- মুদ্রার প্রধান কাজ হল বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করা । পূর্বে বস্তুর সঙ্গে বস্তুর বিনিময় চলত । এখন যে কোন বস্তুর বিনিময় অনায়াসেই মুদ্রার মাধ্যমে চলে । মুদ্রা হাতে থাকলে উহার সাহায্যে আমরা যেকোন জিনিস বা সেবা কিনে নিজেদের অভাব মিটাতে পারি ।
( ২ ) মূল্যের পরিমাপ :- মুদ্রাই সা সামগ্রীর মূল্যের মাপকাঠি হিসাবে কাজ করে । সকল বস্তুর মূল্যের সাধারণ পরিমাপ হিসাবে মুদ্রা ব্যবহৃত হওয়ার ফলে যে কোন দুটি বস্তুর মূল্যের তুলনা করা সম্ভব হয়েছে । অর্থাৎ মুদ্রা হিসাবের একক হয়েছে । অর্থ ব্যবস্থায় সব হিসাব – নিকাশ মুদ্রার মাধ্যমে করা হয় । সেজন্য মুদ্রাকে কেন্দ্র করে অর্থ ব্যবস্থার মূল সিদ্ধান্তগুলি নির্ধারিত হয় ইহা বললে অত্যুক্তি হয় না ।
( ৩ ) ভবিষ্যতে ঋণ মিটাবার মাপকাঠি :- মুদ্রার আর একটি কাজ হল দেনা – পাওনার হিসাব নিকাশ করা । লোকে বর্তমানে যে মূল্যে ধার দেয় , ভবিষ্যতে সেই মূল্য ফিরে পাবার আসা করে । মুদ্রার মূল্য অপেক্ষাকৃত স্থায়ী বলে ইহা বর্তমান মূল্যের সঙ্গে ভবিষ্যৎ মূল্যের সংযোগ সাধন করে । এই কারণেই বর্তমানে মুদ্রায় ধার করে ভবিষ্যতে মুদ্রারই মাপকাঠিতে ধার বা দ্রব্যমূল্য পরিশোধ করা সহজ হয় ।
( ৪ ) সঞ্চয়ের বাহন :- মুদ্রা মূল্যের ভাণ্ডার হিসাবে বা সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে । মুদ্রার সাহায্যে ক্রয়যোগ্য বস্তু ভবিষ্যতে সঞ্চয় করা যায়। কিন্তু বস্তু সঞ্চয় করা অপেক্ষা মুদ্রার পরিমাণে বস্তুর মূল্য সঞ্চয় করা বেশি সুবিধাজনক । আবার উৎপাদনের কাজে মুদ্রাকে নিয়োগ করলে তা মূলধন হিসাবে পরিগণিত হয় ।
মুদ্রার কাজকে একজন অর্থনীতিবিদ সুন্দরভাবে একটি কবিতার সাহায্যে প্রকাশ করেছেন ।
কবিতাটি হল—
” Money is a matter of functions four
A medium , a measure , a standard , a store ”
প্রশ্ন ৪। চেক কি একটি মুদ্রা ? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করো ।
উত্তরঃ প্রকৃতপক্ষে চেক মুদ্রা নয় ; চেক হল পরিশোধের আদেশপত্র । চেক একটির সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা থাকে না । চেক হল একজন ব্যক্তি অন্য একজন ব্যক্তিকে এক নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ককে দেওয়া আদেশপত্র । মুদ্রার ন্যায় চেকও জিনিসপত্র কেনা এবং অন্যান্য লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারি । কিন্তু মুদ্রার ন্যায় চেকের গ্রহণযোগ্যতা নাই । সকল মানুষ চেক গ্রহণ করতে নাও পারে । মুদ্রা হল বিহিত বা আইনসম্মতভাবে গ্রহণযোগ্য ৷
প্রশ্ন ৫। মুদ্রা থেকে সৃষ্টি হতে পারে এমন চার প্রধান অসুবিধে ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ মুদ্রার চারটি প্রধান অসুবিধা নীচে ব্যাখ্যা করা হল—
( ১ ) মুদ্রা মূল্যের স্থিরতা না থাকলে কতগুলি জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয় । মুদ্রার মূল্য অবিরামভাবে হ্রাস হলে জনসাধারণের অসুবিধা হয় কারণ একই সামগ্রী কিনতে অধিক ব্যয় করতে হয় । বিশেষ করে সীমিত আয়ের লোকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । ঠিক সেইভাবে সামগ্রীর মূল্য অত্যধিক কমে গেলে অর্থাৎ মুদ্রার মূল্য বৃদ্ধি হলে উৎপাদনকারীর লোকসান হয় এবং উৎপাদন হ্রাস হলে বেকারের সৃষ্টি হয় ।
( ২ ) মুদ্রা অর্থনৈতিক সম্পদ এবং আয় একত্রীকরণের একপ্রকার পদ্ধতি হতে পারে । ইহা সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে ।
( ৩ ) মুদ্রার প্রতি দুর্বলতাই সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণ হতে পারে ৷ দুর্নীতি , অনিয়ম , অবিচারের মূলেই মুদ্রা বলে বলা হলে অত্যুক্তি করা হবে না ।
( ৪ ) মুদ্রার থেকে কালা মুদ্রার বা টাকার সৃষ্টি হয়। কালামুদ্রা অর্থনৈতিক অপরাধ ( যেমন আয়কর ফাঁকি ) সঙ্গে জড়িত । এই ধরনের অপরাধের ফলে সরকারের রাজস্ব হারাতে হয় বা ক্ষতি হয় ।
প্রশ্ন ৬। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের চারটি প্রধান কার্য ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ রিজাভ ব্যাঙ্ক ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক । ১৯৩৫ সালে এটি স্থাপিত হয়েছিল । ১৯৪৯ সালে সরকার একে রাষ্ট্রীয়করণ করে । তখন হতে এটি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কার্যসমূহ নীচে দেওয়া হল—
( ১ ) নোট ছাপা :- ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ২ টাকা হতে আরম্ভ করে ৫ টাকা , ১০ টাকা , ২০ টাকা , ৫০ টাকা , ১০০ টাকা , ৫০০ টাকা , ১০০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যের কাগজের মুদ্রার প্রচলন করেছে । তদুপরি সোনা ও বিদেশী মুদ্রা জমা রাখতে পারে ।
( ২ ) সরকারের ব্যাঙ্ক :- রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ভারত সরকারের ব্যাঙ্কের হিসাবে কাজ করে । এটি সরকারের টাকা জমা রাখে , সরকারের পক্ষে টাকা গ্রহণ করে এবং আদায় দেয় । ইহা সরকারের হয়ে ঋণগ্রহণ করে এবং পরিশোধ করে । টাকা – পয়সা সম্পৰ্কীয় সকল ব্যাপারে ইহা কেন্দ্রীয় সরকারকে পরামর্শ দেয় ।
( ৩ ) অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহের ব্যাঙ্ক :- দেশের অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধীনে । রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহের আমানতের একটি অংশ জমা হিসাবে রাখে এবং প্রয়োজন হলে অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহকে ঋণ দেয় । এই ঋণের জন্য অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে সূদ দিতে হয় ।
( ৪ ) ঋণ নিয়ন্ত্রণ :- অন্যান্য ব্যাঙ্কের ঋণকার্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ করে । দেশে ঋণের পরিমাণ বেশি হলে মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে । এই অবস্থায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অন্যান্য ব্যাঙ্কসমূহকে ঋণ নিয়ন্ত্রণ করতে নির্দেশ দেয় । তদুপরি ব্যাঙ্কের সুদের হার কম – বেশি করে , জমার পরিমাণ হ্রাস – বৃদ্ধি ইত্যাদি করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ন্ত্রণ করে ।
প্রশ্ন ৭। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক সম্পাদিত দুটি প্রধান কার্য ব্যাখ্যা করো ।
উত্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে সম্পাদন করা দুটি প্রধান কার্য নীচে ব্যাখ্যা করা হল—
( ১ ) সঞ্চয় গ্রহণ করা :- বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক জনসাধারণের টাকা – পয়সা জমা হিসাবে গ্রহণ করে ।
এই ধরনের জমা তিন প্রকারের–
( ক ) চাহিদা জমা বা চলিত আমানত ( Current deposit ) ।
( খ ) স্থির আমানত ( Fixed deposit ) । ও
( গ ) সঞ্চয় আমানত ( Saving deposit ) । জমার প্রকার অনুসারে সুদের হার নির্দ্ধারণ করা হয় ।
( ২ ) ঋণ প্রদান :- বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের আর একটি উল্লেখযোগ্য কার্য হল ঋণ প্রদান করা । বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান , কৃষক , ঠেলাচালক , কারিগর , জনসাধারণ এবং সরকারকে ঋণের যোগান দেয় । বাণিজিকে ব্যাঙ্ক ঋণ তিন ধরনে দিতে পারে ।
( ক ) নগদ টাকায় ঋণ প্রদান ।
( খ ) জমা টাকা রাখার থেকে অধিক টাকা উঠানোর সুবিধা দেওয়া । ও
( গ ) বাট্টা নিয়ে বিনিময়পত্র ভাঙ্গিয়ে দেওয়া ।
( ৩ ) ঋণ মুদ্রার সৃষ্টি করা :- বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ঋণ মুদ্রা বা আমানত মুদ্রার সৃষ্টি করে । নগদ জমার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমা রেখে বাকী টাকা ঋণ হিসাবে খাটিয়ে যে মুদ্রার সৃষ্টি করে তাকে ঋণমুদ্রা বলে । ঋণ দাতাকে নগদ টাকা দেওয়া হয় না বলে ব্যাঙ্কে জমা হওয়া টাকা থেকে অধিক পরিমাণে ঋণ দিয়ে ঋণ মুদ্রার সৃষ্টি করতে পারে ।
( ৪ ) বিনিয়োগ :- বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক তাদের জমা টাকা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে । ঋণ দেওয়ার পরে মুদ্রা জমা থাকলে সরকারী ঋণপত্র , ব্যবসায়ের অংশপত্র ইত্যাদিতে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক বিনিয়োগ করতে পারে।
( ৫ ) বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক মোটর গাড়ি , গৃহনির্মাণ ইত্যাদির জন্যও ঋণ দেয় ।
প্রশ্ন ৮। নিম্নে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো কী কার্য সম্পাদন করে তা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো :
( ক ) আই . ডি . বি . আই ।
( খ ) আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ।
( গ ) কৃষি ও গ্রাম উন্নয়নের রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক ।
( ঘ ) ভারতীয় ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাঙ্ক ।
উত্তরঃ আই . ডি . বি . আই ( ভারতীয় ঔদ্যোগিক উন্নয়ন ব্যাঙ্ক ) :- ১৯৬৪ সনে এই ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হয় ।
এর মূল কার্যসমূহ হল—
( ১ ) ঔদ্যোগিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ঋণের যোগান দেওয়াই এর প্রধান উদ্দেশ্য ।
( ২ ) ঔদ্যোগিক উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রসারতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা । এই ব্যাঙ্কটিই উদ্যোগসমূহে ঋণের রূপে প্রত্যক্ষভাবে আর্থিক সাহায্য প্রদান করে । ব্যাঙ্কটি পরোক্ষভাবেও উদ্যোগসমূহে সাহায্যপ্রদান করে । যেমন ব্যাঙ্কটি রাজ্যিক বিত্তীয় নিগম, ঔদ্যোগিক উন্নয়ন নিগম , বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহে বিত্তীয় সাহায্য প্রদান করে এবং এই অনুষ্ঠানসমূহে রাজ্যের ঔদ্যোগিক খণ্ডে বিত্তীয় সাহায্যপ্রদান করে ।
( ৩ ) অর্থনৈতিকভাবে পশ্চাদপদ অঞ্চলসমূহের উদ্যোগে রেহাই সুদের হারে এই ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদান করে বা দেয় ৷
( ৪ ) ব্যাঙ্কটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোগবিহীন জেলাসমূহে ঔদ্যোগিক উদ্যম বৃদ্ধির জন্য অংশগ্রহণ করে ।
( ৫ ) এই ব্যাঙ্কটি ঔদ্যোগিক প্রতিষ্ঠানের মূলধনের অংশ ও ঋণপত্র ক্রয় করে ; অন্যান্য গ্রাহকদের এইগুলি বিক্রী করার ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে ।
( ৬ ) উদ্যোগের উৎপাদিত বস্তুর গুণগত মানের উন্নতি সাধনের জন্যও কয়েকটি পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠা করেছে ।
( খ ) আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক :- ১৯৭৫ সনে প্রথমে ৫ টি আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হয় । এই ব্যাঙ্কে সম্পাদন করা মূল কাজ দুটি হল—
( ১ ) ব্যবসায়ী , মহাজন থেকে অত্যধিক সুদ দিয়ে ঋণ গ্রামবাসীদেরকে অতি কম সুদে ঋণ প্রদান করে গরীব গ্রামবাসীকে সহায়তা করা বা মুক্তি দেওয়া ।
( ২ ) গ্রাম্য সঞ্চয় সংগ্রহ করে বিভিন্ন উৎপাদন মূলক কার্যে সেই সঞ্চয় ব্যয় করা । এই আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি কৃষি যোগানে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে ।
ভারতবর্ষে ২০১৪ সনে ৫৭ টি আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্ক কার্যকরী হয়েছে ।
( গ ) কৃষি ও গ্রাম্য উন্নয়নের রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক :- ১৯৮২ সনে নাবার্ড ( NABARD ) স্থাপন করা হয় । গ্রাম্য ঋণের ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে কার্যগুলি সম্পাদন করেছিল সেই সকল কার্যগুলি নাবার্ডকে হস্তান্তর করা হয় ।
নাবার্ডে সম্পাদন করা মূল কার্যগুলি হল –
( ১ ) গ্রাম অঞ্চলের কৃষি , ক্ষুদ্রউদ্যোগ , কুটির ও গ্রামোদ্যোগ , হস্তশিল্প ও আনুষ্ঠানিক কার্যসমূহের উন্নয়ননের জন্য ঋণের যোগান দেওয়া নাবার্ডের একটি মুখ্য কাজ ।
( ২ ) ঋণ প্রদান প্রক্রিয়া , পরিকল্পনার পুনরীক্ষণ ও পর্যালোচনা , প্রশিক্ষণ ইত্যাদির সুদৃঢ়করণ কল্পে নাবার্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করে ।
( ৩ ) প্রতিটি বিত্তীয় প্রতিষ্ঠান , ভারত সরকার , রাজ্য সরকার , রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইত্যাদির সঙ্গে নাবার্ড সমন্বয় রক্ষা করে ।
( খ ) ভারতীয় ক্ষুদ্র উদ্যোগ উন্নয়ন ব্যাঙ্ক ( Small Industries Development Bank of India বা SIDBI ) ; ১৯৮৯ সনে সিদ্বি আইন গৃহীত হয় ও ১৯৯০ সন হতে সিবি কার্যকরী হয়ে উঠে । সিবির মুখ্য কার্যালয় লক্ষ্ণৌতে অবস্থিত । সিবির মুখ্য কার্যাবলী হল ―
( ১ ) ক্ষুদ্র উদ্যোগসমূহের জন্য উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যা ও আধুনিকীরণের ব্যবস্থা করা ।
( ২ ) ক্ষুদ্র উদ্যোগ খণ্ডেউৎপাদিত সামগ্রীর জন্য বাজারের সুবিধা করে দেওয়া ।
( ৩ ) অর্ধ – নগর এলাকায় ক্ষুদ্র উদ্যোগসমূহে অধিক নিয়োগের ব্যবস্থা করে গ্রাম ও অর্ধ – নগর এলাকা হতে শহরে জনসংখ্যার বহির্গমন রোধ করা । ও
( ৪ ) রাজ্যিক বিত্ত নিগম , ঔদ্যোগিক নিগম , ব্যবসায়িক ব্যাঙ্ক , সমবায় ব্যাঙ্ক ও আঞ্চলিক গ্রাম্য ব্যাঙ্কসমূহে অর্থসাহায্য প্রদান করা ও এই অনুষ্ঠানগুলির মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোগে ঋণ প্রদান করা ।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর :
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :
প্রশ্ন ১। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কটির নাম কী ?
উত্তরঃ ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ।
প্রশ্ন ২। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রাষ্ট্রীয়করণ কোন সনে হয়েছিল ?
উত্তরঃ ১৯৪৯ সনে ।
প্রশ্ন ৩। কোন সনে ভারতে ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়েছিল ?
উত্তরঃ ১৯৬৯ সনে ।
প্রশ্ন ৪। ১৯৬৯ সনে ভারতে কয়টি ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রীয়করণ করা হয়েছিল ?
উত্তরঃ ১৪ টি ।
প্রশ্ন ৫। ভারতবর্ষে কয়টি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক আছে ?
উত্তরঃ ২১ টি ।
প্রশ্ন ৬। কার দ্বারা বিনিময় ব্যবস্থাটি সহজ করেছে ?
উত্তরঃ মুদ্রা ।
প্রশ্ন ৭। ব্যাঙ্কের উৎপত্তি কোথায় হয়েছিল ?
উত্তরঃ ইটালিতে ।
প্রশ্ন ৮। ভারতবর্ষে কোন সনে ব্যাঙ্ক স্থাপন করা হয়েছিল ? ঐ ব্যাঙ্কটির নাম কী ছিল ?
উত্তরঃ ১৭৭০ সনে । ব্যাঙ্কটির নাম ছিল – ব্যাঙ্ক অব্ হিন্দুস্থান ।
প্রশ্ন ৯। আসামের প্রথম ব্যাঙ্কটির নাম কী ?
উত্তরঃ গুয়াহাটি ব্যাঙ্ক ।
প্রশ্ন ১০। মুদ্রার সবচেয়ে প্রধান কার্যটি উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম ।
প্রশ্ন ১১। অমোদ্রিক ধাতুমান ব্যবস্থায় বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে কী কী ব্যবহার করা হয়েছিল ?
উত্তরঃ সোনা ও রূপা ।
প্রশ্ন ১২। মুদ্ৰা কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ মুদ্রা দুই প্রকারের–
( ১ ) হিসাব – নিকাশের মুদ্রা । ও
( ২ ) প্রকৃত মুদ্রা ।
প্রশ্ন ১৩। ভারত ও আমেরিকায় হিসাব – নিকাশের মুদ্রা কী ?
উত্তরঃ ভারতের হিসাব – নিকাশের মুদ্রা টাকা এবং আমেরিকায় ডলার।
প্রশ্ন ১৪। প্রতীক মুদ্রা কী ?
উত্তরঃ যে মুদ্রার অবিহিত মূল্য ধাতুর মূল্য অপেক্ষা বেশি । যেমন— ভারতে প্রচলিত এক টাকা ।
প্রশ্ন ১৫। বিহিত মুদ্রা কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা বিধিসম্মত তাকে বিহিত মুদ্রা বলে । বর্তমানে ভারতবর্ষে প্রচলিত কাগজী মুদ্রা ও ধাতু মুদ্রা বিহিত মুদ্রা ।
প্রশ্ন ১৬। আদেশী মুদ্রা কাকে বলে ?
উত্তরঃ সরকারী আদেশের ভিত্তিতে যে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করা হয় সেই মুদ্রাকে আদেশী মুদ্রা বলে । যেমন — কাগজী ও ধাতু মুদ্রা ।
প্রশ্ন ১৭। মান মুদ্রা কী ?
উত্তরঃ মান মুদ্রা হল দেশটির মুদ্রার একটি একক। এই এককের সঙ্গে বাকীগুলি এককের মূল্য সম্পর্কিত । ভারতবর্ষের মান মুদ্রা হল এক টাকা । এক পয়সা হবে এক টাকার ১০০ ভাগের একভাগ ।
প্রশ্ন ১৮। সংকুচিত মুদ্রা কীভাবে সৃষ্টি হয় ?
উত্তরঃ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদের হার বৃদ্ধি করলে ঋণ গ্রহণকারী কম ঋণ নেবে এবং মুদ্রার যোগান কমে যাবে । এইভাবেই সংকুচিত মুদ্রার সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন ১৯। কিভাবে সুলভ মুদ্রার সৃষ্টি হয় ?
উত্তরঃ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সুদের হার হ্রাস করলে ঋণ গ্রহণকারী অধিক ঋণ নেবে ও মুদ্রার যোগান বৃদ্ধি হবে । এইভাবেই সুলভ মুদ্রার সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্ন ২০। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন মুদ্রা কী ?
উত্তরঃ একটি দেশ যোগানধরা মুদ্রার যে অংশটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সেই অংশটিই হল উক্ত ক্ষমতা সম্পন্ন মুদ্রা ।
প্রশ্ন ২১। আমানত মুদ্রা বা ঋণ মুদ্রা কী ?
উত্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহ ঋণ প্রদানের মাধ্যমে সৃষ্টি করা এবং চেকের সহায়তায় হস্তান্তরিত করতে পারা মুদ্রাকে আমানত বা ঋণ মুদ্রা বলে ৷
প্রশ্ন ২২। চেক কয় প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ চেক দুই প্রকার বাহক চেক এবং ক্রসড্ চেক ।
প্রশ্ন ২৩। ঋণগত মুদ্রা সৃষ্টি করা উৎপাদকের দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ঋণগত মুদ্রা সৃষ্টি করা উৎপাদকের দুটি উদাহরণ হ’ল ―
( ১ ) আমানত মুদ্রা । ও
( ২ ) ব্যাঙ্কের নগদ জমা অনুপাত ।
প্রশ্ন ২৪। দুই প্রকার ঋণপত্রের উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ দুই প্রকার ঋণপত্রের উদাহরণ হ’ল ―
( ১ ) চেক । ও
( ২ ) বিনিময় বিল ।
প্রশ্ন ২৫। দুই প্রকার ব্যাঙ্কের মুদ্রার উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ দুই প্রকার ব্যাঙ্কের মুদ্রার উদাহরণ হ’ল ―
১। চেক । ও
( ২ ) ব্যাঙ্ক ড্রাফট ।
প্রশ্ন ২৬। ব্যাঙ্কের দুই প্রকার জমা ধনের উদাহরণ দাও ।
উত্তরঃ ব্যাঙ্কের দুই প্রকার জমা ধনের উদাহরণ হ’ল ―
( ১ ) চলিত জমা ।
( ২ ) সঞ্চয়ী জমা ।
প্রশ্ন ২৭। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের দুটি কাজ উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের দুটি কাজ হ’ল ―
( ১ ) ব্যবসা – বাণিজ্যকে সহায়তা করা । ও
( ২ ) ধন জমা রাখা ।
প্রশ্ন ২৮। মুদ্রা হস্তান্তরিত করার মাধ্যম কী ?
উত্তরঃ চেক ।
প্রশ্ন ২৯। ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়ার সময় কোন ধরনের মুদ্রা ব্যবহার করে ?
উত্তরঃ আমানত মুদ্রা ।
প্রশ্ন ৩০। নাবার্ডের প্রধান কার্যালয় কোথায় অবস্থিত ? সমগ্র ভারতবর্ষে এর কয়টি আঞ্চলিক কার্যালয় আছে ?
উত্তরঃ নাবার্ডের প্রধান কার্যালয় মুম্বাইতে অবস্থিত। সমগ্র ভারতবর্ষে এর ১৬ টি আঞ্চলিক কার্যালয় আছে ।
প্রশ্ন ৩১। কোন সনে “ ভারতীয় ঔদ্যোগিক বিত্ত নিগম ” প্রতিষ্ঠা করা হয় ?
উত্তরঃ ১৯৪৮ সনে ।
প্রশ্ন ৩২। ঔদ্যোগিক উন্নয়ন ব্যাঙ্কের প্রধান উদ্দেশ্য কী ?
উত্তরঃ ঔদ্যোগিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ঋণের যোগান দেওয়া ।
প্রশ্ন ৩৩। কোন সনে ভারতীয় ষ্টেটব্যাঙ্ক সংগঠন করা হয় ?
উত্তরঃ ১৯৫৫ সনে ।
প্রশ্ন ৩৪। ‘ ধনাদেশ ’ বা নিবার্ড মুদ্রা কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ চেককে ‘ ধনাদেশ ’ বা নিবার্ড মুদ্রা বলা হয়।
প্রশ্ন ৩৫। ব্যাঙ্ক কি ?
উত্তরঃ যে প্রতিষ্ঠান মানুষকে টাকা – পয়সা এবং মূল্যবান বস্তু , যেমন— সোনা নিরাপদে জমা রাখার সুবিধা দেয় এবং প্রয়োজনে মানুষকে টাকা ধার ( loan ) দেয় তাকে ব্যাঙ্ক বলে । ‘
প্রশ্ন ৩৬। বিনিময়ের মাধ্যম কী ?
উত্তরঃ মুদ্রা ।
প্রশ্ন ৩৭। কিসের মাধ্যমে দাম নির্ধারিত হয় ?
উত্তরঃ মুদ্রার মাধ্যমে দাম নির্ধারিত হয় ।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর :
প্রশ্ন ১। বস্তু বিনিময় ব্যবস্থার পাঁচটি অসুবিধা উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ বস্তু বিনিময় ব্যবস্থার পাঁচটি অসুবিধা হ’ল—
( ১ ) অভাবের সঙ্গতিহীনতা ।
( ২ ) ভাগ বিভাগের অসুবিধা ।
( ৩ ) মাপের অভাব ।
( ৪ ) মূল্যের ভরাল বা মাধ্যমের অভাব । ও
( ৫ ) স্থগিত দেনা – পাওনার মানের অভাব ।
প্রশ্ন ২। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিনিময় বলতে কী বুঝ ?
উত্তরঃ একটি বস্তুর পরিবর্তে অন্য একটি বস্তু পাওয়াকে প্রত্যক্ষ বিনিময় বলে । প্রাচীনকালে প্রত্যক্ষ বিনিময় ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল । মুদ্রার সাহায্যে বিনিময় প্রথাকে পরোক্ষ বিনিময় বলে । বর্তমানে এই প্রথাই প্রচলিত আছে । এই প্রথা অনুসারে মানুষ উৎপাদন মুদ্রার মাধ্যমে বিক্রী করে পরে সেই মুদ্রা দিয়ে প্রয়োজনীয় বস্তু ক্রয় করে ।
প্রশ্ন ৩। মানুষ আমানত মুদ্রার ব্যবহার বেশি পছন্দ করে কেন ?
উত্তরঃ মানুষ আমানত মুদ্রা বেশি পছন্দ করার কারণগুলি হল—
( ১ ) নগদ মুদ্রা হিসাব করতে সময় লাগে ।
( ২ ) নগদ মুদ্রা বহন করতে অসুবিধা আছে , এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া নিরাপত্তার প্রশ্ন বা ভয় আছে ।
প্রশ্ন ৪। ধাতু মুদ্রা কী উদাহরণসহ বুঝিয়ে লেখো ।
উত্তরঃ কোন এক ধরনের ধাতু বা একাধিক ধাতু গলিয়ে তৈরি করা যে সকল মুদ্রা কোন সময়ে প্রচলিত হয়ে থাকে সেগুলিকে ধাতু মুদ্রা বলে । যেমন – প্রাচীনকালে সোনা , রূপা , তামা ইত্যাদি ধাতু মুদ্রার প্রচলন ছিল । বর্তমান সময়ে লোহা , সীসা , নিকেল ইত্যাদি কম মূল্যের ধাতুর তৈরি মুদ্রা দেখা যায় । ভারতবর্ষে ১ টাকা , ২ টাকা , ৫ টাকা ও ১০ টাকার ধাতু মুদ্রার প্রচলন আছে ।
প্রশ্ন ৫। কাগজী মুদ্রা বলতে কী বুঝ ?
উত্তরঃ মুদ্রা হিসাবে ছাপানো যে সকল কাগজ কোন সময়ে প্রচলন হয়ে থাকে সেগুলিকে কাগজী মুদ্রা বলা হয় । বর্তমান সময়ে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশ নিজের নিজের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কাগজী মুদ্রা প্রচলন করে । আমাদের দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক হল ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক । এই ব্যাঙ্ক ১ টাকা , ২ টাকা , ৫ টাকা , ১০ টাকা , ৫০ টাকা , ১০০ টাকা , ৫০০ টাকা , ১০০০ টাকার মূল্যের কাগজের মুদ্রার প্রচলন করেছে ।
প্রশ্ন ৬। মুদ্রার চারটি কার্য উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ মুদ্রার চারটি কার্য হল—
( ১ ) মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে কাজ করে ।
( ২ ) মুদ্রা মূল্যের পরিমাপ বা একক হিসাবে কাজ করে ।
( ৩ ) মুদ্রা মূল্যের ভাড়া হিসাবেও কাজ করে ।
( ৪ ) মুদ্রা স্থগিত দেনা – পাওনার হিসাবে কাজ করে ।
প্রশ্ন ৭৷ ব্যাঙ্ক মুদ্রাকে কেন ঋণগত মুদ্রা বলা হয় ?
উত্তরঃ ব্যাঙ্ক মুদ্রা বা আমানত মুদ্রা ব্যাঙ্কের ঋণ , কারণ – এর বিপরীতে ভবিষ্যতে নগদ মুদ্রা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসাবে ব্যাঙ্ক একে সৃষ্টি করে । এই কারণে ব্যাঙ্ক মুদ্রাকে ‘ ঋণগত মুদ্রা ’ ( Credit Mony ) বলা হয় ।
প্রশ্ন ৮। রাষ্ট্রীয় মুদ্রা ও ঋণগত মুদ্রার পার্থক্য লেখো ।
উত্তরঃ ধাতু মুদ্রা ও কাগজের মুদ্রাকে রাষ্ট্রীয় মুদ্রা ( State Money ) বলা হয় । দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক , আমাদের দেশের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ধাতু মুদ্রা ও কাগজের মুদ্রা তৈরি ও প্রচলন করতে পারে কিন্তু ঋণগত মুদ্রা তা পারে না । অপরদিকে , ঋণগত মুদ্রা হল ব্যাঙ্ক মুদ্রা বা আমানত মুদ্রা , ব্যাঙ্কের ঋণ , কারণ এর বিপরীতে ভবিষ্যতে নগদ মুদ্রা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসাবে ব্যাঙ্ক একে সৃষ্টি করে ।
প্রশ্ন ৯। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক বলতে কী বোঝ ?
উত্তরঃ যে সব প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান হতে জমা হিসাবে মুদ্রা গ্রহণ করে এবং ঋণ প্রদান করে , যেসব আমানত চেকের সহায়তায় উঠানো যায় এবং হস্তান্তর করা যায় সেইসব প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক বলে । বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহ শিল্প – উদ্যোগ , বাণিজ্য , কৃষি ইত্যাদির ক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজ চালানোর উদ্দেশ্যে প্রয়োজন হওয়া হ্রস্বকালীন ঋণের যোগান দেয় । আমাদের দেশে ভারতীয় ষ্টেট ব্যাঙ্ক , ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়া , পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ইত্যাদি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ।
প্রশ্ন ১০। বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের প্রধান কাজ কী ?
উত্তরঃ বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের প্রধান কাজ দেশের ব্যবসা – বাণিজ্যে সহায়তা করা । বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহ সাধারণত তিন মাস হতে এক বছর পর্যন্ত মেয়াদে শিল্প উদ্যোগ , বাণিজ্য , কৃষি ইত্যাদি ক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজ চালানোর জন্য ঋণের যোগান দেয় । এই ব্যাঙ্কগুলি জনসাধারণ হতে জমা টাকা গ্রহণ করে এবং হুণ্ডি , বিনিময়পত্র ইত্যাদি ভাঙ্গায় । বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যৌথ মূলধনী কোম্পানীর নীতিতে গঠন করা হয় । ষ্টেট ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়া , ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইণ্ডিয়া , বিজয়া ব্যাঙ্ক , কানাড়া ব্যাঙ্ক ইত্যাদি ভারতবর্ষের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ।
প্রশ্ন ১১। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের চারটি প্রধান কার্য উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের চারটি প্রধান কার্য হল—
( ১ ) নোট ছাপা ।
( ২ ) সরকারের ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজ করা ।
( ৩ ) অন্যান্য ব্যাঙ্ককে পরিচালনা করা ।
( ৪ ) মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা ।
প্রশ্ন ১২। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে কেন ব্যাঙ্কসমূহের ব্যাঙ্ক বলা হয় ?
উত্তরঃ দেশের ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার কার্যাবলী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রণ করে । বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক – এর সর্বমোট জমার একটি অংশ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে বাধ্যতামূলকভাবে জমা রাখতে হয় । বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের ঋণের প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক হতে ঋণ নিতে পারে । তাই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে ব্যাঙ্কসমূহের ব্যাঙ্ক বলা হয় ।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর :
প্রশ্ন ১। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের পার্থক্যসমূহ উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের পার্থক্যসমূহ নীচে উল্লেখ করা হল ―
( ১ ) ব্যাঙ্ক ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সর্বোচ্চ ব্যাঙ্ক । অপরদিকে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠানের একটি অংশ মাত্র ।
( ২ ) কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সঙ্গে জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নাই । কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ও জনসাধারণের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে । কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে সঞ্চয়কারী সঞ্চয় রাখে না বা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক হতে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণ পায় না । বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কে সঞ্চয় করা যায় এবং ঋণ ও পাওয়া যায় ।
( ৩ ) কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে কাগজী মুদ্রা ছাপা হয় , বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের এই অধিকার নাই ।
( ৪ ) কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রীয়কৃত ব্যাঙ্ক । কিন্তু সবগুলি বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রীয়কৃত ব্যাঙ্ক নয় ।
( ৫ ) কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক লাভের আশায় প্রভাবান্বিত হয় না । কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহ ব্যবসায়িক ভিত্তিতে লাভের আশায় গড়ে উঠে ।
( ৬ ) কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সরকারের অর্থের যোগান দেয় , পরামর্শ দাতা এবং এজেন্ট । কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের এইসব কার্য সম্পাদন করতে হয় না ।
( ৭ ) কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা জমা রাখে এবং মুদ্রা পরিবর্তনে সহায়তা করে । কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক এইসব কাজ করতে পারে না ।
প্রশ্ন ২। ব্যাঙ্কের ঋণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও ।
উত্তরঃ ব্যাঙ্কে মুদ্রা সঞ্চিত থাকলে নগদ মুদ্রা না তুলে কোন একজন আমানত মুদ্রা ব্যবহার করতে পারে । চেকের সাহায্যে একজন ব্যক্তি আমানত মুদ্রা অন্য একজনকে হস্তান্তরিত করতে পারে । ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক আমানত মুদ্রা ব্যবহার এবং উপযুক্ত বন্ধকী রেখে সুদ গ্রহণ করে । কৃষি , শিল্প , বাণিজ্য , পরিবহণ ইত্যাদি বিভিন্ন উৎপাদনের ক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজ চালাবার জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের অধিকাংশই ব্যাঙ্ক আমানত বা ব্যাঙ্ক ঋণ ।
ব্যাঙ্ক আমানতের বাইরেও অন্যান্য নানাধরনের ঋণআছে । ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বর্তমানের হস্তান্তরিত বস্তুর পরিবর্তে ভবিষ্যতে প্রাপ্য বস্তুর বা এর দামের বিনিময় করা হয় ।
মুদ্রার ব্যবহার প্রচলন হওয়ার জন্য ঋণ ব্যবস্থার বিকাশ ঘটেছে । আধুনিক অর্থব্যবস্থায় ঋণের মাধ্যমে বহু লেনদেন হয় । বস্তু কেনা – বেচার সময় ব্যবসায়ীগণ নগদ মুদ্রা হতে ঋণের ব্যবহার বেশি করে । এই ক্ষেত্রে তারা বিনিময়পত্র বা বিল অব এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করে ।
Thank You for Visiting – Roy Library
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.