৭৮তম স্বাধীনতা দিবস প্রবন্ধ | Essay on 78th Independence Day in Bengali

Join Roy Library Telegram Groups
Essay on 78th Independence Day in Bengali

৭৮তম স্বাধীনতা দিবসের প্রবন্ধ | Essay on 78th Independence Day in Bengali

৭৮তম স্বাধীনতা দিবস, ভারতের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট, ভারত তার বহু বছরের ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে। সেই দিনটি প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়। এই দিনটি আমাদের জাতির ত্যাগ, সংগ্রাম, এবং ঐক্যের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসঃ

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া ছিল। মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহেরু, ভগৎ সিং, সরদার বল্লভভাই প্যাটেলসহ অসংখ্য নেতার নেতৃত্বে আমরা এই মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছিলাম। গান্ধীর অহিংস আন্দোলন, নেহেরুর পরিকল্পনা, এবং সুভাষ চন্দ্র বোসের আজাদ হিন্দ ফৌজ— এই সমস্ত উদ্যোগ আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সুগম করেছিল।

সেই সময়ে নারী, শিশু, বৃদ্ধ সকলেই এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিল। গ্রাম থেকে শহর, উত্তর থেকে দক্ষিণ— সমগ্র ভারত একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে এই সংগ্রামে যুক্ত হয়েছিলেন।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপনঃ

প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করা হয়। এই দিনটি আমাদের জাতীয় চেতনাকে উদ্দীপিত করে। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে পতাকা উত্তোলন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, এবং নানা ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও এই দিনটি বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনাকে উদ্দীপিত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রবন্ধ প্রতিযোগিতা, নাটক, এবং গান পরিবেশন করা হয়। শিশুদের মধ্যে স্বাধীনতার ইতিহাস এবং তাৎপর্য তুলে ধরার জন্য নানা ধরনের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

স্বাধীনতার অর্জন ও ভবিষ্যৎঃ

স্বাধীনতার পর ভারত বহু ক্ষেত্রেই অগ্রগতি অর্জন করেছে। অর্থনীতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা, এবং স্বাস্থ্য— প্রত্যেক ক্ষেত্রে ভারত উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। বিশ্বমঞ্চে ভারতের স্থান সুদৃঢ় হয়েছে। আমাদের মহাকাশ গবেষণা, তথ্যপ্রযুক্তি, ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

কিন্তু আজও আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দারিদ্র্য, বেকারত্ব, সন্ত্রাসবাদ, এবং সামাজিক অসাম্য আমাদের অগ্রগতির পথে অন্তরায়। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি সুখী, সমৃদ্ধশালী, এবং সমতা ভিত্তিক সমাজ গঠন করা। এজন্য প্রয়োজন শিক্ষার প্রসার, নারীর ক্ষমতায়ন, এবং দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্যোগ গ্রহণ করা।

আমাদের প্রিয় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের সকলের একযোগে কাজ করতে হবে। সকল নাগরিকের মধ্যে দেশপ্রেম, ঐক্য, এবং পারস্পরিক সম্মানের চেতনা জাগ্রত করতে হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই মূল্যবোধে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা একটি উন্নত, সুন্দর, এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন করতে পারে।

সংগ্রামের প্রেরণাঃ

আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। জাতীয় ঐক্য, আত্মত্যাগ, এবং নিষ্ঠা— এই মূল্যবোধগুলো আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমাদের নেতাদের আত্মত্যাগ এবং সংকল্প আমাদের চলার পথের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে।

অতীতের সেই সংগ্রামের কাহিনী আমাদের প্রেরণা দেয়, এবং আমাদের আজকের সমস্যা সমাধানের শক্তি জোগায়। আমাদের সেই সংগ্রামকে স্মরণ করে নিজেদের মধ্যে ঐক্য ও শক্তি সঞ্চয় করতে হবে, যাতে আমরা আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারি।

উপসংহারঃ

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top