Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question Answer in Bengali Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, Class 11 Political Science Chapter 9 জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.

জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান

একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান

প্রথম খণ্ড

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। সংবিধান কি স্থির? হ্যাঁ/না লেখো।

উত্তরঃ না।

প্রশ্ন ২। সংবিধান জীবন্ত দলিল হওয়া প্রয়োজন কেন?

উত্তরঃ সংবিধান সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে সদা পরিবর্তিত হওয়ার জন্য এটি জীবন্ত দলিল স্বরূপ হওয়া প্রয়োজন।

প্রশ্ন ৩। কনভেনশন (Convention) বা প্রচলিতা প্রথা বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ প্রচলিত প্রথা বা কনভেনশন (Convention) হল অলিখিত নিয়ম বা নিয়মাবলী যা দীর্ঘ কাল ধরে পালন করা হচ্ছে।

প্রশ্ন ৪। ভারতীয় সংবিধান কি গতিশীল? হ্যাঁ/না লেখো?

উত্তরঃ হ্যাঁ।

প্রশ্ন ৫। ভারতীয় সংবিধানে সংশোধনী ব্যবস্থা বিধিবদ্ধ আছে কি?

অথবা, 

ভারতীয় সংবিধানের কোন অনুচ্ছেদে এর সংশোধনের প্রক্রিয়াকে আলোচনা করে?

উত্তরঃ হ্যাঁ। ভারতীয় সংবিধানের বিংশ অধ্যায়ের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদে সংশোধন পদ্ধতি বর্ণিত আছে।

প্রশ্ন ৬। ভারতীয় সংবিধানের অধ্যায় এবং অনুচ্ছেদ উল্লেখ করো যেখানে সংশোধন পদ্ধতি বিধিবন্ধ আছে?

উত্তরঃ বিংশ অধ্যায়ের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদ।

প্রশ্ন ৭। বিচারালয়ের ব্যাখ্যাসমূহ কি সংবিধানে অবদান রাখতে পারে?

উত্তরঃ বিচারালয়ের ব্যাখ্যাসমূহ সংবিধানের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে।

প্রশ্ন ৮। সংবিধানের অনমনীয়তা বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ সংবিধানের অনমনীয়তা বলতে সংবিধান সংশোধনের জটিল পদ্ধতিকে বোঝায় অর্থাৎ যে সংবিধান সংশোধন করা সহজ নয় সেই সংবিধানের প্রকৃতি অনমনীয়।

প্রশ্ন ৯। সাধারণ আইন পদ্ধতিতে বা সাধারণ সংখ্যাধিক্যের ভোটে ভারতের সংবিধান কি সংশোধন করতে পারা যায়?

উত্তরঃ হ্যাঁ। সাধারণ আইন প্রণয়ন পদ্ধতিতে ভারতের সংবিধানের কতিপয় বিষয় সংশোধন করতে পারা।

প্রশ্ন ১০। কোন সংশোধনী আইন ভারতীয় ভোটারের বয়সসীমা ২১ বছর হতে কমিয়ে ১৮ বছর করেছে? 

উত্তরঃ ৬১-তম সংশোধনী (১৯৮৯)।

প্রশ্ন ১১। কোন্ সংশোধনী আইন ভারতীয় সংবিধানে নাগরিকদের জন্য মৌলিক কর্তব্য অন্তর্ভুক্ত করেছে? 

উত্তরঃ ৪২-তম সংশোধনী আইন (১৯৭৬)।

প্রশ্ন ১২। কোন্ সালে ৭৩-তম সংশোধনী আইন পাশ হয়েছে?

উত্তরঃ ১৯৯২ সালে।

প্রশ্ন ১৩। কোন্ দেশ থেকে আমরা সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতিগুলো অনুকরণ করেছি?

উত্তরঃ ইংল্যাণ্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আয়ারল্যান্ড এবং সোভিয়েত রাশিয়া।

প্রশ্ন ১৪। ভারতীয় সংবিধানের প্রথম সংশোধন কখন হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৯৫১ সালে।

প্রশ্ন ১৫। “হ্যাঁ” অথবা “না” লেখোঃ

(ক) মৌলিক অধিকারগুলোকে সংশোধন করা যায়।

উত্তরঃ হ্যা।

(খ) সংসদ সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সংশোধন করতে পারে না।

উত্তরঃ হ্যাঁ।

(গ) জনগণ সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে।

উত্তরঃ না।

(ঘ) ভারতে সংসদ একাই কেবল সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে।

উত্তরঃ হ্যাঁ।

(ঙ) ভারতে সংবিধান সংশোধনে বিচার বিভাগই সর্বেসর্বা।

উত্তরঃ না।

(চ) রাজ্যিক আইনসভাসমূহও সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে।

উত্তরঃ না।

(ছ) সংসদ একা সংবিধানের যে কোন অংশ সংশোধন করতে পারে। 

উত্তরঃ না।

প্রশ্ন ১৬। ভারতীয় সংবিধান গতিশীল – শুদ্ধ না অশুদ্ধ লেখো?

উত্তরঃ শুদ্ধ।

প্রশ্ন ১৭। কোন্ মামলার রায় সংসদের সংবিধান সংশোধনী ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা পরিষ্কার করেছে?

উত্তরঃ কেশবানন্দ ভারতী মামলা (১৯৭৩)-র রায়।

প্রশ্ন ১৮। ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে থাকা একটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ রাজ্যিক আইনসভাগুলোর সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপনের কোনো ক্ষমতা নেই।

প্রশ্ন ১৯। উচ্চতম ন্যায়ালয় কোন কেসে ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামোর তত্ত্ব পেশ করেছিল?

উত্তরঃ কেশবানন্দ ভারতী বনাম কেরালা রাজ্য (১৯৭৩) মামলায়।

প্রশ্ন ২০। ভারতীয় সংসদে ৪২-তম সংশোধনী কোন্ সালে গ্রহণ করা হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৯৭৬ সালে।

S.L. No.সূচীপত্র
প্রথম খণ্ড
পাঠ – ১সংবিধান প্রণয়নঃ সংবিধানঃ কেন এবং কিভাবে?
পাঠ – ২ভারতীয় সংবিধানে অধিকার
পাঠ – ৩নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব 
পাঠ – ৪সংসদীয় সরকারের কার্যপালিকা
পাঠ – ৫কেন্দ্র ও রাজ্য
পাঠ – ৬বিচার বিভাগ 
পাঠ – ৭যুক্তরাষ্ট্রবাদ 
পাঠ – ৮স্থানীয় সরকার 
পাঠ – ৯জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান
পাঠ – ১০সংবিধানের রাজনৈতিক দর্শন
দ্বিতীয় খণ্ড
পাঠ – ১১রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা
পাঠ – ১২স্বাধীনতা
পাঠ – ১৩ সমতা
পাঠ – ১৪সামাজিক ন্যায়
পাঠ – ১৫অধিকার
পাঠ -১৬নাগরিকত্ব
পাঠ -১৭জাতীয়তাবাদ
পাঠ -১৮ধর্মনিরপেক্ষতা
পাঠ -১৯শান্তি
পাঠ -২০উন্নয়ন

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। উদাহরণের সাহায্যে দেখাও কীভাবে বিচারবিভাগীয় সিদ্ধান্ত ভারতীয় সংবিধানকে সমৃদ্ধ করেছে? 

অথবা,

কীভাবে বিচারালয়ের সিদ্ধান্ত সংবিধানের সমৃদ্ধিতে সহায়তা করে? উদাহরণ দাও। 

উত্তরঃ বিচারালয় দৃঢ়তার সঙ্গে ব্যাখ্যা করেছে যে সংবিধান সংশোধন সংবিধান প্রদত্ত গণ্ডীর মধ্যে হতে হবে এবং গণমুখী ব্যবস্থাসমূহের আইনগত পদ্ধতি এড়িয়ে চলা উচিত নয়। কারণ একবার আইন এড়িয়ে চললে ক্ষমতাশালীদের সেচ্ছাচারিভাবে ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে।

সংবিধানের সফল কার্যকারিতায় বিচার বিভাগের অবদান নিম্নরূপঃ

(ক) বিখ্যাত কেশবানন্দ ভারতী মামলার রায়ে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো তত্ত্বের উদ্ভূত হয়েছে। এই রায় সংসদের সংবিধান সংশোধন ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নির্দিষ্ট করে এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সংশোধনযোগ্য নয় বলে ঘোষণা করে।

(খ) বহু সিদ্ধান্তে সুপ্রীমকোর্ট মত ব্যক্ত করে যে চাকরি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে আসন সংরক্ষণ মোট আসনের পঞ্চাশ শতাংশ অতিক্রম করতে পারবে না। এটা বর্তমানে এক গ্রহণযোগ্য নীতিতে পরিণত হয়েছে। 

বিচারালয় সংবিধানের প্রতিটি বিষয়ের আক্ষরিক ও অন্তর্নিহিত অর্থের মধ্যে সমতা স্থাপনের চেষ্টা করেছে।

প্রশ্ন ২। ভারতীয় সংবিধান সংশোধন গুরুত্বপূর্ণ কেন?

অথবা,

ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা কী? 

উত্তরঃ প্রগতিশীল আর্থ–সামাজিক ব্যবস্থায় প্রত্যেক রাষ্ট্রেরই সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমাদের দেশের সংবিধানের সংশোধনও তাই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সমালোচকগণ অভিযোগ করেন যে সংবিধান একটি পবিত্র দলিল। তাই পুনঃ পুনঃ সংবিধান সংশোধন কোনো অবস্থায়ই উচিত নয়। সমালোচকগণের এই বক্তব্যে কিছুটা যৌক্তিকতা আছে। তবে বক্তব্যটি পুরোপুরি সত্য নয়। এটি পবিত্র দলিল। তাই বলে তা অপরিবর্তনীয় এটা মানা যায় না। বর্তমান যুগে, ভারতে জ্ঞান–বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতির ফলে জনজীবনও পরিবর্তিত হচ্ছে এবং এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভারতীয় সংবিধান স্থায়িত্বের দাবি করতে পারে না। জাতীয় জনজীবনের চাহিদা ও পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে আমাদের সংবিধানেরও প্রয়োজনীয় সংশোধন অতি আবশ্যক। ভারতীয় সংবিধান প্রণেতাগণ ভবিষ্যতে সংবিধানের অস্থায়ী প্রকৃতির অনুবিধি ও পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রগতির স্বার্থে প্রয়োজনীয় সংশোধনী ব্যবস্থা সংবিধানে বিধিবন্ধ করেছেন।

প্রশ্ন ৩। ভারতীয় সংবিধান কি বহুবার সংশোধন হয়েছে? 

উত্তরঃ হ্যাঁ। ভারতীয় সংবিধান বহুবার সংশোধন হয়েছে। ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি ভারতের সংবিধান কার্যকরী হয়। ২০০৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত মোট ১৪বার ভারতের সংবিধান সংশোধন হয়েছে। সংবিধানের অপেক্ষাকৃত জটিল পদ্ধতির তুলনায় সংশোধনের সহজ পদ্ধতির সংখ্যা অধিক। সংবিধানের সংশোধনের সংখ্যা বিষয়ে সর্বদাই নানা রকম সমালোচনা করা হয়। এটা বলা হয় যে ভারতের সংবিধানের মাত্রাতিরিক সংশোধনী হয়েছে। 

প্রশ্ন ৪। ভারতীয় সংবিধানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীর নাম করো?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী হল নিম্নরূপঃ 

(ক) ৪২-তম সংশোধনীঃ এই সংশোধনীর মাধ্যমে প্রস্তাবনায় “সমাজতান্ত্রিক”, “ধর্মনিরপেক্ষ” এবং “সংহতি” শব্দগুলি সংযোজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি আইনগতভাবে কেন্দ্রীয় কেবিনেটের পরামর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য। নাগরিকের দশটি মৌলিক কর্তব্য ৫১ (ক)- এর মাধ্যমে সংযোজন করা হয়েছে। তাছাড়া লোকসভা ও রাজ্য আইনসভাগুলোর কার্যকাল বৃদ্ধি করে পাঁচ থেকে ছয় বছর পর্যন্ত করা হয়েছিল (পরবর্তীকালে ৪৪-তম সংশোধনীতে পুনরায় তাদের কার্যকাল পাঁচ বছর করা হয়।)

(খ) ৬১-তম সংশোধনীঃ ভোটারদের বয়সসীমা ২১ বছর হতে কমিয়ে ১৮ বছর করা হয়। বর্তমানে ভারতীয় নাগরিকের ভোটাধিকার লাভের নিম্নতম বয়সসীমা ১৮ বছর। 

প্রশ্ন ৫। ভারতের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর বিষয়বস্ত কী ছিল?

উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর বিষয়বস্তগুলো নিম্নরূপঃ 

(ক) রাষ্ট্র কর্তৃক স্বাধীনভাবে বাক্ ও মত প্রকাশের উপর সমর্থনযোগ্য নিয়ন্ত্রণ।

(খ) অনুসূচিত জাতি ও জনজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণ।

(গ) নবম তপশীলের সংযোজন। এবং 

(ঘ) জমিদারী প্রথা নির্মূলের আইনসমূহের বৈধতা।

প্রশ্ন ৬। বিশেষ সংখ্যাধিক্য কী? 

অথবা,

বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা কী? 

উত্তরঃ সংবিধানের অধিকাংশ অনুচ্ছেদ সংসদ কর্তৃক বিশেষ সংখ্যাধিক্যের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে দু ধরনের সংখ্যগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়। প্রথমাবস্থায় যারা বিলের পক্ষে ভোট দেবেন তাদের সংখ্যা সভাকক্ষের মোট সদস্য সংখ্যার অন্তত অর্ধেক হতে হবে। দ্বিতীয়ত সংশোধনী বিলের সমর্থকদের সংখ্যা মোট ভোটদানে অংশ গ্রহণকারীদের সংখ্যার দুই–তৃতীয়াংশ হতে হবে। সংসদের উভয় কক্ষই পৃথকভাবে একই পদ্ধতিতে অনুমোদন করতে হবে। যুগ্ম অধিবেশনের কোন সংস্থান নেই। প্রতিটি সংশোধনী খসড়ায় বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সংস্থান রাখার মূল উদ্দেশ্য হল বিরোধী দলগুলোর কিছু সমর্থন সুনিশ্চয়তা করা।

প্রশ্ন ৭। সাধারণ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন করা যায় এরূপ দুটি বিষয়ের উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ সংসদের সাধারণ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন করা যায় এমন দুটি বিষয় হল– 

(ক) কোনো নতুন রাজ্যের সৃষ্টি, অথবা কোনো রাজ্যের সীমানা পরিবর্তন, অথবা রাজ্যের নাম পরিবর্তন।

(খ) কোনো রাজ্যের আইনসভার উচ্চকক্ষ অর্থাৎ বিধান পরিষদ গঠন বা বিলোপ সাধন করা।

প্রশ্ন ৮। সংবিধান সংশোধনে রাজ্যিক আইনসভাগুলোর ভূমিকা কী? 

উত্তরঃ রাজ্যিক আইনসভাগুলো সংবিধান সংশোধনে জড়িত। সংবিধানের কয়েকটি অনুবিধির সংশোধনের ক্ষেত্রে বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পর্যাপ্ত নয়। এই অনুবিধিগুলো সংশোধনের সময় ন্যূনতম অর্ধেক সংখ্যক রাজ্যের আইনসভাগুলোর অনুমোদনেরও প্রয়োজন হয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ও নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষাকারী মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থাসমূহ রক্ষাকল্পে ভারতের সংবিধান প্রণেতাগণ সংবিধানের কতকাংশের সংশোধন করার জন্য ব্যাপক সমর্থন ও সহমত প্রদর্শনের ব্যবস্থা রেখেছেন। তাই সংবিধানের তৃতীয় পদ্ধতি অর্থাৎ অনমনীয় পদ্ধতিতে সংশোধনের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোর আইনসভার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে রাজ্য আইনসভা কোন সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে না। তাদেরকে কেবল অনুমোদন করার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। 

প্রশ্ন ৯। ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের দুটি সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো?

উত্তরঃ সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়। 

নিম্নে এই সীমাবদ্ধতা সমূহের দুটি উল্লেখ করা হলঃ

(ক) রাজ্য আইনসভাসমূহ সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে না। এই ক্ষমতা প্রয়োগ করার ক্ষমতা কেবল সংসদেরই আছে।

(খ) রাজ্য আইনসভাগুলো কতদিনের মধ্যে সংশোধনী বিল অনুমোদন করে পাঠাবে তার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি। 

প্রশ্ন ১০। ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের সর্বাপেক্ষা অনমনীয় পদ্ধতি ব্যাখ্যা করো? 

উত্তরঃ সংবিধানের বিংশ অধ্যায়ের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদে সংশোধনের অনমনীয় পদ্ধতি বর্ণিত আছে। সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সংক্রান্ত কতকগুলো অনুচ্ছেদ দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। এই সংশোধন প্রক্রিয়ায় রাজ্যিক আইনসভাগুলোও যোগদান করে।

এই সকল অনুচ্ছেদ পরিবর্তনের জন্য সংশোধনী প্রস্তাব সংসদের যে কোনো কক্ষে উত্থাপন করা হয়। সংসদের উভয়কক্ষের মোট সদস্যের (দুই কক্ষে পৃথকভাবে) মোট সদস্য সংখ্যার অধিকাংশ এবং উপস্থিত ও ভোটদানকারী সদস্যগণের দুই তৃতীয়াংশ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর অনুমোদনের জন্য রাজ্যগুলোর নিকট প্রেরণ করা হয়। ন্যূনতম অর্ধেক সংখ্যক রাজ্যের আইনসভার অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির নিকট পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দেওয়ার পর সংশোধনী বিলটি আইনে পরিণত হয়। 

প্রশ্ন ১১। অধিকাংশ আধুনিক সংবিধানে সংশোধনী পদ্ধতিতে অনুসৃত নীতি দুটি কী কী?

উত্তরঃ অধিকাংশ আধুনিক সংবিধান সংশোধনী পদ্ধতির ক্ষেত্রে দুটি নীতি অনুসরণ করা হয়। 

এই নীতি দুটি হল –

(ক) বিশেষ সংখ্যা গরিষ্ঠতা নীতিঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান সংশোধনীর ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠতার নীতি অনুসরণ করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্টতার প্রয়োজন হয়। রাশিয়ার ক্ষেত্রে কতিপয় সংশোধনীতে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়।

(খ) সংশোধনী পদ্ধতিতে জনগণের অংশগ্রহণঃ এই সংশোধন পদ্ধতি অনেক আধুনিক সংবিধানে জনপ্রিয়। এই সংশোধন পদ্ধতিতে জনগণ অংশগ্রহণ করে। সুইজারল্যাণ্ডে জনগণ সংবিধান সংশোধনীর প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারে।

প্রশ্ন ১২। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা এবং বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা বলতে কী বোঝ? 

উত্তরঃ সংবিধানের বহু অনুচ্ছেদ সংসদের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংশোধন করা যায়। সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা হলো কোনো প্রস্তাব বা বিলের পক্ষে মোট ভোটের ৫০%+১টি ভোটের অনুমোদন। ধরা যাক, একটি বিলের উপর ভোটাভুটির সময় সভাকক্ষে মোট ২৫০ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন এবং সকল সদ্যসই ভোটদানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিলটির পক্ষে যদি ১২৬টি ভোট পড়ে তাহলে বিলটি অনুমোদিত হবে। এটি সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার উদাহরণ। কিন্ত সংবিধানের ৩৬৮ নং অনুচ্ছেদে বিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে সংবিধানের কতিপয় অনুচ্ছেদ সংশোধনে বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়। প্রথমাবস্থায় যারা বিলের পক্ষে ভোট দেবেন তাদের সংখ্যা সভার মোট সদস্য সংখ্যার অর্ধেক হতে হবে। দ্বিতীয়ত সংশোধনী বিলের সমর্থকদের সংখ্যা মোট ভোট দানে অংশ গ্রহণকারীদের সংখ্যার দুই–তৃতীয়াংশ হতে হবে। সংসদের উভয় কক্ষেই পৃথকভাবে একই পদ্ধতিতে অনুমোদন করতে হবে। সংবিধান সংশোধনীর ক্ষেত্রে যৌথ অধিবেশনের সংস্থান নেই। সংবিধানের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদে বিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার নীতি অনুসরণ করা হয়েছে।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। “ভারতীয় সংবিধান নমনীয়তা ও অনমনীয়তার সংমিশ্রণ।” ব্যাখ্যা করো। 

অথবা,

“ভারতীয় সংবিধানের কতকাংশ নমনীয় এবং কতকাংশ অনমনীয়।” ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ ভারতের সংবিধানকে কেবল নমনীয় বা অনমনীয় বলা যায় না। এটি নমনীয়তা ও অনমনীয়তার সংমিশ্রণ। কারণ ভারতের সংবিধানের কতকগুলো ধারা নমনীয় এবং কতকগুলো দ্বারা অনমনীয়। সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ কেন্দ্রীয় সংসদের একপাক্ষিক প্রক্রিয়ার দ্বারা সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থনে সংশোধন করা যায়। তা সংসদের সাধারণ আইন পাশের পদ্ধতি অনুসারে করা হয়। অন্যদিকে সংবিধানের বেশ কিছু অনুচ্ছেদ জটিল পদ্ধতিতে পরিবর্তন করা হয়। সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনে সংশোধন করা হয় এবং কতকগুলো ধারা সংশোধনের ক্ষেত্রে উক্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে ন্যূনতম অর্ধেক রাজ্যিক আইনসভার অনুমোদনেরও প্রয়োজন হয়। সুতরাং ভারতের সংবিধান নমনীয়তা ও অনমনীয়তার সংমিশ্রণ।

প্রশ্ন ২। ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের অনমনীয় পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করো? 

উত্তরঃ ভারতের সংবিধান নিম্নোক্ত তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে সংশোধন করা হয়ঃ

(ক) সংসদের সাধারণ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন (নমনীয়)।

(খ) সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন (নমনীয় ও অনমনীয় পদ্ধতি)।

(গ) সংসদের বিশেষ সংখ্যাধিক্যে সমর্থন ও ন্যূনতম অর্ধেক রাজ্যিক আইনসভা সমূহের অনুমোদনের মাধ্যমে সংশোধন (অনমনীয় পদ্ধতি) 

নিম্নে অনমনীয় পদ্ধতিটি আলোচনা করা হলঃ

সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ কেন্দ্রীয় সংসদ ও রাজ্যসমূহের আইনসভার দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। এই প্রকার সংশোধনের ক্ষেত্রে সংবিধানের বিংশ অধ্যায়ের ৩৬৮ নং অনুচ্ছেদটির গুরুত্ব অপরিসীম। সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো–সংক্রান্ত অনুচ্ছেদসমূহের সংশোধন উক্ত অনুচ্ছেদে বর্ণিত আছে। এই অনমনীয় পদ্ধতিটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনমনীয় পদ্ধতির অনুরূপ। যুক্তরতীয় কাঠামো সংক্রান্ত সকল অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের ব্যাপারে সংশোধনীর ক্ষেত্রে প্রতিটি কক্ষে মোট সদস্য সংখ্যার অধিকাংশ ও উপস্থিত ভোটদানকারী সদস্যগণের দুই– তৃতীয়াংশ ভোটে সংশোধনী প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর তা অনুমোদনের জন্য রাজ্যগুলোর নিকট প্রেরণ করা হয়। কমপক্ষে ৫০% রাজ্যের আইসভাগুলো কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর তাতে রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য তার নিকট পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশোধনী বিলটি আইনে পরিণত হয়। 

প্রশ্ন ৩। সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা কী?

উত্তরঃ গতিশাল আর্থ–সামাজিক ব্যবস্থায় প্রত্যেক দেশেরই সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সংবিধান সংশোধন সম্পর্কে সমালোচকগণের অভিমত হল যে সংবিধান একটি পবিত্র দলিল (Sacred Document)। তাই এর ঘন ঘন সংশোধন কোন অবস্থায়ই উচিত নয়। তবে এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ বর্তমান সময়ে জ্ঞান–বিজ্ঞানের অভাবনীয় প্রগতির ফলে মানুষের জীবনযাত্রারও পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে এবং এই ক্রমাগত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে কোনো সংবিধানই অসংশোধনীয় অবস্থায় থাকতে পারে না। সুতরাং জাতীয় জীবনের প্রয়োজন তথা পরিবর্তনের সঙ্গে মিল রেখে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন অতি আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

প্রশ্ন ৪। ভারতের সংবিধান কীভাবে সংশোধন করা হয়? 

উত্তরঃ ভারতের সংবিধানের সংশোধন পদ্ধতি সংবিধানের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদে বিধিবন্ধ করা হয়েছে। সংশোধন পদ্ধতি পুরোপুরি নমনীয় বা অনমনীয় নয়। এটি নমনীয়তা ও অনমনীয়তার সংমিশ্রণ। ভারতের সংবিধান নিম্নের তিনটি পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায়ঃ

(ক) সংসদের সাধারণ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন।

(খ) সংসদের দুই–তৃতীয়াংশ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন (৩৬৮নং ধারা)।

(গ) সংসদের বিশেষ সংখ্যাধিক্যের সমর্থন ও ন্যূনতম অর্ধেক রাজ্যিক আইন সভাগুলোর অনুমোদনের মাধ্যমে সংশোধন (৩৬৮নং ধারা)। 

প্রশ্ন ৫। ভারতের সংবিধান সংশোধন পদ্ধতির তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লোখ করো?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধান সংশোধন পদ্ধতির প্রধান তিনটি বৈশিষ্ট্য হল–

(ক) ভারতীয় সংবিধান তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। 

(খ) সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব একমাত্র কেন্দ্রীয় সংসদে উত্থাপিত হয়। 

(গ) সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ সংশোধনে রাজ্যিক আইন সভাগুলোর অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।

প্রশ্ন ৬। সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বলতে কী বোঝা? 

উত্তরঃ সংবিধানে মৌলিক কাঠামোর কোন উল্লেখ নেই। সাধারণত মৌলিক কাঠামো বলতে বোঝায় – 

(ক) সংবিধানের প্রাধান্যতা। 

(খ) গণতান্ত্রিক গণরাজ্য ধাঁচের সরকার।

(গ) দেশের সার্বভৌমত্ব, একতা ও অখণ্ডতা।

(ঘ) সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো।

(ঙ) সরকারের তিন অঙ্গের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন। 

(চ) মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতি।

এই সকল বিষয় পরিবর্তন করলে সংবিধানের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। 

প্রশ্ন ৭। সংবিধান সংশোধনে কারা জড়িত?

উত্তরঃ (ক) সংসদ।

(খ) রাজ্যিক আইনসভা। ও 

(গ) রাষ্ট্রপতি। 

প্রশ্ন ৮। ভারতীয় সংবিধানের ৪২-তম সংশোধনীর বিষয়বস্ত কী ছিল? 

অথবা,

ভারতীয় সংবিধানের ৪২-তম সংশোধনীর উপরে একটি টীকা লেখো?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের সংশোধনীগুলোর মধ্যে ৪২-তম সংশোধনী একটি প্রধান বিতর্কিত সংশোধনী। 

এই সংশোধনীর কার্যকরী প্রধান বিষয়সমূহ হলঃ

(ক) সংবিধানের প্রস্তাবনায় “সমাজতন্ত্র”, “ধর্মনিরপেক্ষ” ও “সংহতি” শব্দগুলোর সংযোজন।

(খ) রাষ্ট্রপতি আইনগতভাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ গ্রহণ করতে বোধ্য।

(গ) সংবিধানের ৫১ (ক) ধারায় দশটি মৌলিক কর্তব্যের অন্তর্ভুক্তি। 

(ঘ) লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলোর কার্যকাল বর্ধিত করে ছয় বছর করা। (৪৪-তম সংশোধনীতে তা বাতিল করে পুনরায় পাঁচ বছর স্থির করা হয়। 

প্রশ্ন ১। আজ পর্যন্ত হওয়া সংবিধান সংশোধনসমূহের বিষয়বস্ত সম্পর্কে একটি ধারণা দাও।

উত্তরঃ আজ পর্যন্ত হওয়া সংশোধনসমূহকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যেতে পারে। 

এগুলো নিম্নরূপ–

(ক) প্রথম শ্রেণীতে আছে তিনটি সংশোধনী। এইগুলি হল প্রশাসনিক ও কৌশলগত এবং মূল সংবিধানের অনুবিধির সঠিক ব্যাখ্যা এবং তা স্বল্প পরিবর্তনমূলক। এই সংশোধনীগুলোর সঙ্গে সংবিধানের অনুবিধির মৌলিক কোন প্রভেদ নেই। এগুলো অস্থায়ী প্রকৃতির। উচ্চতম ন্যায়ালয়ের বিচারপতিদের অবসরকালীন বয়স সীমা ৬০ বছর হতে ৬২ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা (১৫-তম সংশোধনী), উচ্চ ও উচ্চতম ন্যায়ালয়ের বিচারপতিদের বেতন বৃদ্ধি (৫৫-তম সংশোধনী) প্রভৃতি কৌশলগত সংশোধনী। এ সংশোধনীগুলোর সঙ্গে সংবিধানের মূল অনুবিধির কোনোও পার্থক্য নেই।

(খ) দ্বিতীয় শ্রেণী হল – বিশাল সংখ্যক সংশোধনীর বিচারালয় ও সরকার কর্তৃক সংবিধানের ব্যাখ্যা। যখন এগুলোর মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয় তখন সংসদ একটি নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা সঠিক চিহ্নিত করে এবং বিচারালয়ের বিরূপ ব্যাখ্যাকে অতিক্রম করে সংবিধান সংশোধন করে। ১৯৭০ সাল হতে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এ পরিস্থিতি বার বার দেখা দেয়।

(গ) তৃতীয়ত, সংশোধনীর অপর একটি বৃহৎ ভাগ আছে যা রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সহমতের মাধ্যমে গৃহীত হয়েছিল। বস্তত ১৯৮৪ সালের সময়ে অনেক সংশোধনী রাজনৈতিক দলসমূহের সহমতের মাধ্যমে হয়েছিল। দলত্যাগ নিরোধক ব্যবস্থা (৫২-তম), ভোটারদের বয়স সীমা ২১ বছর হতে ১৮ বছরে হ্রাস করা (৬১-তম) প্রভৃতি সংশোধনী এর উদাহরণ। 

প্রশ্ন ১০। সংবিধানের পর্যালোচনা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো?

উত্তরঃ নব্বই দশকের শেষভাগে সংবিধানের পর্যালোচনা আরম্ভ হয়। ভারতে সংবিধানের পর্যালোচনার জন্য ২০০০ সালে ভারত সরকার সুপ্রীমকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ভেষ্টচালাইয়ার সভাপতিত্বে সংবিধানের কার্যকারিতা পর্যালোচনার জন্য একটি কমিশন গঠন করে। বিরোধী দল এবং অন্যান্য অনেক সংগঠন উক্ত কমিশন বয়কট করে। উক্ত কমিশন সম্পর্কে নানা বিতর্কের সূত্রপাত হয়। উক্ত কমিশন সংবিধানের মৌলিক কাঠামো তত্ত্বে বিশেষ অগ্রসর হয়নি এবং মৌলিক কাঠামো বিপন্ন হলে কী ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে তার কথাও বলেনি। এটা অবশ্য আমাদের সাংবিধানিক ব্যবস্থার মৌলিক কাঠামো তত্ত্বের তাৎপর্য দেখিয়েছে।

প্রশ্ন ১১। ভারতীয় সংবিধানের বিভিন্ন সংশোধনীগুলোর মাধ্যমে হওয়া উল্লেখযোগ্য তিনটি পরিবর্তন দর্শাও? 

উত্তরঃ ভারতের সংবিধান সংশোধনগুলো নিম্নোক্ত পরিবর্তন এনেছেঃ

(ক) বিচারালয় ও সংসদ সংবিধানের বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করেছে। এইগুলির মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হলে বিচারালয়ের বিরূপ ব্যাখ্যার নির্দেশ অতিক্রম করে সংসদ সংবিধান সংশোধন করেছে।

(খ) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসমূহের সহমতের মাধ্যমে বহুবার সংবিধান সংশোধন হয়েছে।

(গ) কেশবানন্দ ভারতী মামলা সংসদের সংশোধন ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা নির্দিষ্ট করেছে। কোনো সংশোধন দ্বারাই সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ভঙ্গ করা যায় না।

প্রশ্ন ১২। ভারতীয় সংবিধানের মর্যাদা বৃদ্ধিতে প্রচলিত রীতি কীভাবে সহায়তা করেছে?

উত্তরঃ প্রচলিত রীতিগুলো অলিখিত বিধি বা নিয়মনীতি। ব্রিটিশ সংবিধানের প্রধান ভিত্তি হল এই অলিখিত নিয়মনীতি বা প্রচলিত প্রথা। ভারতীয় সংবিধানেও এই প্রচলিত নিয়মনীতিগুলো পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ রাজ্যপালের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ের উল্লেখ করা যায়। রাষ্ট্রপতি রাজ্যপালকে নিয়োগ করেন। কিন্ত তিনি রাজাপালকে নিয়োগের পূর্বে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেন। এই আলোচনা হল প্রচলিত প্রথা বা নিয়ম যা সংবিধানে বিধিবদ্ধ নয়। অন্য আরেকটি প্রচলিত প্রথা হল লোকসভার অধ্যক্ষ নিরপেক্ষ থাকবেন। তিনি কোন দলের পক্ষপাতিত্ব করবেন না। ব্রিটিশ সংসদের হাউস অব কমন্সের অধ্যক্ষের মতো ভারতের লোকসভার অধ্যক্ষও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেন। এই প্রচলিত রীতিগুলো সংবিধানের মর্যাদা বুদ্ধি করেছে।

প্রশ্ন ১৩। ভারতীয় সংবিধানের বিতর্কিত সংশোধনীসমূহ আলোচনা করো?

উত্তরঃ ভারতীয় সংবিধানের কতিপয় সংশোধনী বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বস্তত ১৯৭০ সাল হতে ১৯৮০ সালের মধ্যবর্তীকালীন সংশোধনীসমূহ নানাপ্রকার আইনগত ও রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বিশেষভাবে ৩৮-তম, ৩৯-তম, এবং ৪২-তম সংশোধনী তিনটি সর্বাপেক্ষা বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। এই তিনটি সংশোধনী ১৯৭৫ সালের জুনমাসে দেশে ঘোষিত জরুরি অবস্থাকালীন সময়ে গৃহীত হয়েছিল। এই তিনটি সংশোধনীর মধ্যে প্রধান বিতর্কিত সংশোধনীটি ছিল ৪২-তম সংশোধনী। ৪২-তম সংশোধনীর মাধ্যমে কেশবানন্দ ভারতী মামলায় সুপ্রীমকোর্টের রায়কে উপেক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এমনকী লোকসভার মেয়াদ পাঁচ বছর হতে বৃদ্ধি করে ছয় বছর করা হয়েছিল।

৪২-তম সংশোধনী বিচারালয়ের পুনর্বিবেচনা করার অধিকারের উপরও সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছিল। সে সময় এটাও বলা হয়েছিল যে এই সংশোধনী মূল সংবিধানের বহু অংশের পুনর্লিখন মাত্র ছিল। এই সংশোধনী সংবিধানের প্রস্তাবনা, সপ্তম তপশীল ও ৫৩টি অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করেছিল। উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল – এই সংশোধনী সংসদে যখন পাশ হয় তখন বহু সাংসদ জেলে বন্দী ছিলেন। তাই ১৯৭১ সাল হতে ১৯৭৬ সাল সময়সীমার মধ্যের অধিকাংশ সংশোধনীকে বিরোধী দলগুলো শাসকদলের সংবিধান লঙ্ঘনের চেষ্টা রূপে দেখেছিল। এই পটভূমিতে ১৯৭৭ সালে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং শাসক দল (কংগ্রেস) পরাজিত হয়। নতুন সরকার এসব বিতর্কিত সংশোধনীসমূহ পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে এবং ৪৩-তম ও ৪৪-তম সংশোধনীর মাধ্যমে ৩৮-তম, ৩৯-তম ও ৪২-তম সংশোধনীর অধিকাংশ পরিবর্তন বাতিল করে। এই ৪৩-তম ও ৪৪-তম সংশোধনীগুলির দ্বারা সাংবিধানিক সমতা পুনরুদ্ধার করা হয়।

প্রশ্ন ১৪। ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের বিভিন্ন পদ্ধতি আলোচনা করো।

উত্তরঃ আমাদের দেশের সংবিধান প্রণেতাগণ চেয়েছিলেন যে আমাদের সংবিধান নমনীয় এবং একই সঙ্গে অনমনীয় হবে। সংবিধান প্রণেতাগণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন যে সংবিধানের যেগুলো অনুবিধি অস্থায়ী প্রকৃতির সেগুলো যাতে সংসদ পরবর্তী সময়ে অতি সহজে সংশোধন করতে পারে। আবার সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং কেন্দ্রীয় প্রবণতামূলক বৈশিষ্ট্য যাতে পরিবর্তন হতে রক্ষা পায় সেদিকেও লক্ষ্য রেখেছিলেন। এ সকল বিচার বিবেচনার জন্য সংবিধান সংশোধনের বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করা হয়েছিল। 

ভারতীয় সংবিধানের বিংশ অধ্যায়ের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদে সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি বর্ণিত আছে। 

ভারতের সংবিধান নিম্নোক্ত তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে সংশোধন করা হয়ঃ 

(ক) সংসদের সাধারণ সংখ্যাধিক্যে (সাধারণ বা নমনীয় পদ্ধতি): সংবিধানের বহু অনুচ্ছেদ সংসদের সাধারণ আইন প্রণয়নের দ্বারা সংশোধন করা যায়। এ সকল ক্ষেত্রে সংশোধনের বিশেষ কোনো পদ্ধতির প্রয়োজন হয় না। এই প্রকার সংশোধনী ও সাধারণ আইনের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। 

এ পদ্ধতিতে যে সকল অনুচ্ছেদ সংশোধন করা যায় তাদের মধ্যে কতকগুলো হল নিম্নরূপঃ

(অ) কোনো নতুন রাজ্যের সৃষ্টি, অথবা কোনো রাজ্যের সীমানা পরিবর্তন, অথবা রাজ্যের নাম পরিবর্তন। 

(আ) কোনো রাজ্যের আইনসভার উচ্চকক্ষ (বিধান পরিষদ) গঠন বা বিলোপ সাধন করা।

(ই) সাংসদদের সুযোগ–সুবিধা।

(ঈ) সংসদের কোরাম।

(উ) ভারতীয় নাগরিকত্ব। 

(ঊ) ভারতের সরকারি ভাষা।

(ঋ) নির্বাচনী চক্র নির্ধারণ।

(এ) রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, রাজ্যপাল, সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারকগণের বেতন ও ভাতা বৃদ্ধি প্রভৃতি।

(খ) সংসদের বিশেষ (দুই–তৃতীয়াংশ) সংখ্যাধিক্যে সংশোধন (নমনীয় ও অনমনীয় পদ্ধতি): সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ কেন্দ্রীয় সংসদের একপাক্ষিক প্রক্রিয়ায় বিশেষ সংখ্যাধিক্যে সংশোধন করা হয়। একমাত্র সংসদ এইপ্রকার সংশোধন করে এবং এরূপ সংশোধনীয় প্রস্তাব পাশ করতে সংসদের বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয় বলে এই পদ্ধতিকে অনমনীয়ও বলা হয়।

সংশোধনী প্রস্তাব একটি বিলের আকারে সংসদের যে কোনো কক্ষে উত্থাপন করা হয়। এরূপ উত্থাপিত সংশোধনী বিল প্রত্যেক কক্ষে মোট সদস্য সংখ্যার সংখ্যাধিক্য ভোটে এবং উপস্থিত দুই–তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটাধিক্যে গৃহীত হতে হয়। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে যৌথ অধিবেশনের ব্যবস্থা নেই। সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত সংশোধনী বিল রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে সংশোধিত আইনে পরিণত হয়। সাধারণত মৌলিক অধিকার ও নির্দেশাত্মক নীতিসমূহ এই পদ্ধতিতে সংশোধন করা হয়। 

(গ) সংসদের বিশেষ সংখ্যাধিক্যের সমর্থন ও ন্যূনতম ৫০% রাজ্যিক আইনসভা সমূহের অনুমোদনের মাধ্যমে সংশোধন (অনমনীয় পদ্ধতি): সংবিধানের কতকগুলো অনুচ্ছেদ কেন্দ্রীয় সংসদ ও রাজ্যসমূহের আইনসভার দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। এইক্ষেত্রে সংবিধানের বিংশ অধ্যায়ের ৩৬৮নং অনুচ্ছেদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অনুচ্ছেদে সংবিধানের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো–সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর সংশোধন পদ্ধতি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো–সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলো পরিবর্তনের ব্যাপারে সংশোধনী প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করার পর সংসদের প্রতিটি কক্ষে মোট সদস্য সংখ্যার অধিকাংশ এবং উপস্থিত ভোটদানকারী সদস্যগণের দুই–তৃতীয়াংশ ভোটে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর অনুমোদনের জন্য রাজাগুলোর নিকট পাঠানো হয়। ন্যূনতম অর্ধেক রাজ্যিক আইনসভাগুলো কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর তাতে রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য তাঁর নিকট পাঠানো হয়। রাষ্ট্রপতি সম্মতি দান করার পর সংশোধনী বিলটি আইনে পরিণত হয়। এই পদ্ধতি অনুযায়ী যে সকল অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয় সেগুলো হল – 

(অ) রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।

(আ) কেন্দ্র ও রাজ্যসমূহের প্রশাসনিক ক্ষমতা। 

(ই) সুপ্রীমকোর্ট ও হাইকোর্টের গঠন ও প্রক্রিয়া। 

(ঈ) সংবিধানের সপ্তম তপশীলের কেন্দ্র ও রাজ্যতালিকাভূক্ত বিষয়।

(উ) রাজ্যগুলোর সংসদে প্রতিনিধিত্ব প্রভৃতি। 

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top