Class 12 Bengali Question Answer Chapter 10 স্বাদেশিকতা Provided by The Roy Library is one of the best content available on the internet as well as many other offline books. Class 12 Bengali Question Answer Chapter 10 স্বাদেশিকতা Question Answer is made for AHSEC Board students. Class 12 Bengali Question Answer Chapter 10 স্বাদেশিকতা | উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন We ensure that You can completely trust this content. If you learn PDF from then you can Scroll Down and buy PDF text book Solutions I hope You Can learn Better Knowledge.
Class 12 Bengali Question Answer Chapter 10 স্বাদেশিকতা
Here we will provide you complete Bengali Medium AHSEC Class 12 বাংলা ( MIL ) Suggestion, AHSEC Class 12 Bengali (MIL) Question Answer, AHSEC Class 12 Bengali (MIL) Notes, AHSEC Class 12 Bengali (MIL) Solution, উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন, উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সমাধান, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) বই প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) PDF Question Answer absolutely free of cost. If you read this solution very carefully with proper understanding & then memorize questions by yourself you can score the maximum number of marks in your upcoming Exam.
স্বাদেশিকতা
গোট – ২ নির্বাচিত গদ্যাংশ
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) রবীন্দ্রনাথের পরিবারের সকলের মধ্যে প্রবল দেশপ্রেম কার অনুপ্রেরণায় সঞ্চারিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণায় পরিবারের সকলের মধ্যে প্রবল দেশপ্রেম সঞ্চারিত হয়েছিল ।
( খ ) আমাদের বাড়িতে দাদারা চিরকাল ____ চর্চা করিয়া আসিয়াছিলেন । ( শূণ্যস্থান পূর্ণ করো )
উত্তরঃ আমাদের বাড়িতে দাদারা চিরকাল মাতৃভাষার চর্চা করিয়া আসিয়াছিলেন ।
( গ ) রবীন্দ্রনাথের পিতৃদেবকে কে ইংরাজিতে চিঠি লিখেছিলেন ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের পিতৃদেবকে তাঁর কোনো একজন আত্মীয় ইংরেজিতে পত্র লিখেছিলেন ।
( ঘ ) হিন্দুমেলার ’ অন্যতম কর্মকর্তা কে ছিলেন ?
উত্তরঃ ‘ হিন্দুমেলার ’ অন্যতম কর্মকর্তা ছিলেন নবগোপাল মিত্র মহাশয়।
( ঙ ) “ মিলে সবে ভারতসন্তান ’ সংগীতটি কে রচনা করেছিলেন ?
উত্তরঃ ‘ মিলে সবে ভারতসন্তান ’ সংগীতটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা করেছিলেন ।
( চ ) রবীন্দ্রনাথের স্বাদেশিকের সভার সভাপতি কে ছিলেন ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের স্বাদেশিকের সভার সভাপতি ছিলেন রাজনারায়ন বসু ।
S.L. No. | সূচী-পত্ৰ |
পাঠ -১ | অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি – গোবিন্দ দাস |
পাঠ -২ | অন্নদার আত্মপরিচয় – ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর |
পাঠ -৩ | বঙ্গভাষা – মাইকেল মধুসূদন দত্ত |
পাঠ -৪ | মাতৃহৃদয় – প্রিয়ংবদা দেবী |
পাঠ -৫ | কৃপণ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
পাঠ -৬ | কুলিমজুর – কাজী নজরুল ইসলাম |
পাঠ -৭ | পূব-পশ্চিম – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত |
পাঠ -৮ | খরা – শঙ্খ ঘোষ |
পাঠ -৯ | ফুলের বিবাহ – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের |
পাঠ -১০ | স্বাদেশিকতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
পাঠ -১১ | আমার জীবনস্মৃতি – লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া |
পাঠ -১২ | মন্ত্রের সাধন – জগদীশচন্দ্র বসু |
পাঠ -১৩ | মাস্টার মহাশয় – প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় |
পাঠ -১৪ | দিবসের শেষে – জগদীশ গুপ্ত |
পাঠ -১৫ | গণেশ জননী – বনফুল |
পাঠ -১৬ | ভাত – মহাশ্বেতা দেবী |
পাঠ -১৭ | মূল্যবোধ শিক্ষা – ড° সুজিত বর্ধন |
পাঠ -১৮ | কৈশোরকাল ও তার উপযোগী শিক্ষা ড° কাবেরী সাহা |
পাঠ -১৯ | ব্যাকরণ |
পাঠ -২০ | রচনা |
( ছ ) কার উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথেদের স্বাদেশিকের সভা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিকের সভা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ।
( জ ) স্বাদেশিক সভার সদস্যরা তাঁদের আয়ের কত অংশ সভায় দান করতেন ?
উত্তরঃ স্বাদেশিক সভার সদস্যরা তাঁদের আয়ের দশমাংশ অংশ সভায় দান করতেন ।
( ঝ ) স্বদেশ ___ প্রভৃতির কারখানা স্থাপন করা আমাদের সভার উদ্দেশ্যের স্বদেশে মধ্যে একটি ছিল । ( শূন্যস্থান পূর্ণ করো ) ।
উত্তরঃ স্বদেশে দিয়াশলাই প্রভৃতির কারখানা স্থাপন করা আমাদের সভার উদ্দেশ্যের মধ্যে একটি ছিল ।
( ঞ ) অবশেষে একদিন দেখি ___ মাথায় একখানা গামছা বাঁধিয়া জোড়াসাঁকোর বাড়িতে আসিয়া উপস্থিত । ( শূন্যস্থান পূর্ণ করো ) ।
উত্তরঃ অবশেষে একদিন দেখি ব্রজবাবু মাথায় একখানা গামছা বাঁধিয়া জোড়াসাঁকোর বাড়িতে আসিয়া উপস্থিত ।
( ঞ ) ” আমাদের কালে এই গামছার টুকরা তৈরি হয়েছে ‘ — উক্তিটি কার ?
উত্তরঃ উক্তিটি ব্রজনাথ দে মহাশয়ের ।
( ঠ ) রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভা কোথায় বসত ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের স্বাদেশিক সভা বসতো কলিকাতার এক গলির মধ্যস্থ পোড়ো বাড়িতে ।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) কার উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিকের সভা গঠিত হয়েছিল ? এই সভার সভাপতি কে ছিলেন ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিকের সভা গঠিত হয়েছিল ।
( খ ) স্বাদেশিক সভার সদস্যরা তাঁদের আয়ের দশমাংশ এই সভায় দান করতেন কেন ?
উত্তরঃ স্বাদেশিক সভার সদস্যরা তাঁদের আয়ের দশমাংশ এই সভায় দান করতেন কারণ এই সভার অন্যতম একটি উদ্দেশ্য ছিল দিয়াশলাই সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দেশীয় কারখানা স্থাপন করা । আর এই কারখানার স্থাপন কার্যে অর্থসাহায্য করার জন্য সদস্যরা তাঁদের আয়ের দশমাংশ এই সভা দান করতেন ।
( গ ) রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভায় কোন কোন জিনিস উৎপাদন করা হয়েছিল ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রানাথের স্বাদেশিক সভায় সদস্যরা কয়েক বাক্স দিয়াশলাই তৈরি করেছিল এবং এক অল্পবয়স্ক ছাত্র অনেক চেষ্টা করে কাপড়ের কল তৈরি করেছিল এবং একটি গামছার টুকরা তৈরি করেছিল ।
( ঘ ) রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভা কীভাবে ভেঙে গিয়েছিল ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভার সদস্যদের কিছু বুদ্ধিমান মানুষ জ্ঞান প্রদান করেছিলেন ফলে সদস্যদের মনে দেশভক্তির প্রবল উন্মাদনা অন্তর্হিত হয় । ফলে রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভাটি ভেঙে গিয়েছিল ।
( ঙ ) রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভার অধিবেশনের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ কলকাতার কোন এক অঞ্চলের গলির মধ্যে এক পোড়ো বাড়িতে রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভার অধিবেশন বসতো । সভাটির উদ্যোক্তা ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সভাপতি ছিলেন রাজনারায়ণ বসু । অন্ধকার ঘরে দরজা বন্ধ করে অত্যন্ত গোপনে তাঁদের এই সভা সংঘটিত হত । অতিমাত্রায় গোপনীয়াতার জন্য সেই সভার সদস্যদের মধ্যে এক বীরত্বব্যঞ্জক উত্তেজনা ছিল । সদস্যরা বীরমন্ত্রে দীক্ষা নিয়ে দেশকে মুক্ত করার জন্য এই সভা পরিচালনা করেছিলেন ।
( চ ) রবীন্দ্রনাথ হিন্দুমেলায় গাছের তলায় দাঁড়িয়ে কী পড়েছিলেন ? শ্রোতাদের মধ্যে কোন বিখ্যাত ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ হিন্দুমেলায় গাছের তলায় দাঁড়িয়ে ‘ হিন্দুমেলার উপহার ’ নামে গদ্যপ্রবন্ধটি রচনা করেছিলেন । শ্রোতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত কবি নবীনচন্দ্র সেন মহাশয় ।
( ছ ) ‘ আমার মতো অর্বাচীনও এই সভার সভ্য ছিল’— এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? অর্বাচীন শব্দের অর্থ কী ?
উত্তরঃ এখানে আমার মতো বলতে লেখক রবীন্দ্রাথ নিজেকে নির্দেশ করেছেন । অর্বাচীন শব্দের অর্থ নবীন বা আধুনিক ।
( জ ) ‘ এদিকে তিনি মাটির মানুষ কিন্তু তেজে একেবারে পরিপূর্ণ ছিলেন’ কার কথা বলা হয়েছে ? ‘ মাটির মানুষ ’ এর অর্থ কী ?
উত্তরঃ এখানে লেখক শ্রদ্ধেয় রাজনারায়ণ বসুর কথা বলেছেন । এখানে মাটির মানুষ বলতে রাজনারায়ণ বসুকে অত্যন্ত সহজ – সরল ও নরম মনের মানুষ হিসাবে বোঝানো হয়েছে ।
( ঝ ) ‘ দেশের জন্য অকাতরে প্রান দিতে পারে এমন বীরপুরুষ অনেক থাকিতে পারে । কিন্তু দেশের মঙ্গলের জন্য সর্বজনীন পোশাক পরিয়া গাড়ি করিয়া কলিকাতার রাস্তা দিয়া যাইতে পারে এমন লোক নিশ্চয় বিরল । ” – রবীন্দ্রনাথের এই বক্তব্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর ।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর তৎকালীন প্রচলিত পোষাক পরিকল্পনাকে ভেঙে নিজের সৃষ্ট পোষাক পরে প্রকাশ্যে সকলের সামনে গাড়িতে গিয়ে উঠতেন , সেই প্রসঙ্গেই লেখক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন । কারণ সেই সময় দেশের স্বাধীনতার জন্য , দেশের মুক্তির জন্য বিরোধী শক্তির হাতে প্রাণ দিতে অনেকেই রাজি কিন্তু স্বাদেশিক সভার উদ্যোগে তৈরি পোষাক সকলের কাছে হাস্যকর । কিন্তু সমাজের প্রচলিত প্রথাকে ভেঙে প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধচারণ করা অত্যন্ত বিরলতম কাজ । আর এই বিরলতম কাজটি করছেন জ্যোতিরিন্দ্র মহাশয় । তাই লেখক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন ।
( ঞ ) “ সূত্রের চেয়ে ভাষ্য যেমন অনেক বেশি হয় তেমনি তাঁহার উৎসাহের তুমুল হাতনাড়া তাঁর ক্ষীণ কণ্ঠকে বহুদূরে ছাড়াইয়া গেল , তালের ঝোকে মাথা নাড়িতে লাগিলেন এবং তাঁহার পাকা দাড়ির মধ্যে ঝড়ের হাওয়া মাতামাতি করিতে লাগিল ” – এখানে কার কথা বলা হয়েয়ে ? কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করা হয়েছে ?
উত্তরঃ এখানে বৃদ্ধ রাজনারায়ণ বসুর কথা বলা হয়েছে ।
রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথদের একটি শিকারের দল ছিল । সেই শিকারের দলে একজন মধ্যবিত্ত জমিদার ছিলেন । তিনি নিষ্ঠাবান হিন্দু । তাঁর গঙ্গার ধারে একটি বাগান ছিল । সেখানে গিয়ে লেখকরা একদিন জাতি – বর্ণ – নির্বিচারে আহার করেছিলেন । বিকালে বিষম ঝড় এসেছিল , সেই ঝড়ে লেখকরা গঙ্গার ঘাটে দাঁড়িয়ে চীৎকার করে ঘুরে গান করেছিলেন । রাজনারায়ণ বসুও লেখকদের মত গানে অংশ নিলেন এবং তিনিও গলা ছেড়ে গান গেয়েছিলেন । রাজনারায়ণ বসুর সেই উদাত্ত কণ্ঠের গান গাওয়ার প্রসঙ্গে লেখক উক্ত প্রসঙ্গটি করেছেন ।
৩। দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতৃদেব দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনুপ্রেরণায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির স্বদেশ প্রেমের একটি মূল্যায়ণ প্রস্তুত করো ।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বাল্যকাল থেকে ইংরেজি ভাষায় শিক্ষালাভ করেছিলেন । ইংরেজিতে শিক্ষা লাভ করলেও তিনি নিজরে মাতৃভাষা ও সংস্কৃতিক অবজ্ঞা করেননি । কোনরকম হীন মনোভাব প্রকাশ করেননি । স্বদেশের প্রতি রবীন্দ্রনাথের পিতা দেবেন্দ্রনাথের আন্তরিক শ্রদ্ধা ছিল । সেই শ্রদ্ধার ভাবটি সকলের মধ্যো সঞ্চারিত হয়েছিল । প্রকৃতপক্ষে সে সময়টা স্বদেশপ্রেমের সময় নয়। দেশের লোকেরা তখন দেশের ভাষা ও দেশের ভাব দুটিকেই দূরে সরিয়ে রেখেছিল । কিন্তু ঠাকুর পরিবারের জ্যেষ্ঠজন সকলেই মাতৃভাষার চর্চা করেছেন । দেবেন্দ্রনাথ তত্ত্ববোধিনী পাঠশালা স্থাপন করেন । এই পাঠশালার উদ্দেশ্য ছিল যুবসমাজকে স্বদেশগামী করে তোলা । এমনকি কোন আত্মীয় যদি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ইংরাজিতে পত্র লিখলে , সে পত্র প্রেরকের কাছে ফিরে যেত । এরকমই স্বদেশপ্রীতি সঞ্চারিত হয়েছিল ঠাকুর পরিবারের পুত্র কন্যাদের মধ্যে । –
ঠাকুর পরিবারের সহায়তায় অর্থাৎ গনন্দ্রেনাথ ঠাকুর দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর , সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ নবগোপাল মিত্র মহাশয়ের অনুপ্রেরণায় বাংলা ১২৭৩ চৈত্র সংক্রান্তি ‘ চৈত্ৰমেলা ’ নামে সূচনা হয়েছিল । পরবর্তীকালে এই মেলা ‘ হিন্দুমেলা ’ নামে পরিচিত হয় । রবীন্দ্রনাথের মেজদাদা বিখ্যাত জাতীয় সংগীত ‘ মিলে সবে ভারত সন্তান ‘ রচনা করেছিলেন। এই মেলায় দেশের স্তবগান , দেশানুরাগের কবিতা , দেশি শিল্প ব্যায়াম প্রকৃতি প্রদর্শিত হত । জ্যোতিরিন্দ্রনাথ উদযোগে সেই সময় আর একটি সভা হয়েছিল সঞ্জীবনী সভা , সাংকেতিকনাম হা মুচু পা মুহাফে ।
বৃদ্ধ রাজনারায়ণ বসু ছিলেন সভাপতি । সভার অনুষ্ঠানে যথেষ্ট রহস্যময়তা ছিল । গোপনীয়তাও ছিল ভয়ঙ্গর । অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে এই সভাতে স্বদেশী বিভিন্ন কার্যকলাপ ও আলাপ আলোচনা চলত । জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ভারতবর্ষে প্রচলিত সার্বজনীন পোশাকের আদর্শ তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন । বিদেশি দ্রব্য ব্যবহার না করার জন্য নিজেরাই দেশলাই , বস্ত্ৰ প্ৰকৃতি দ্ৰব্য উৎপাদন করেন । এভাবেই ঠাকুর পরিবারে স্বদেশীকতার জোয়ার এসেছিল ।
( খ ) ‘ হিন্দুমেলা ‘ সম্বন্ধে সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের সহায়তায় হিন্দুমেলা নামে একটি মেলার সূচনা হয়েছিল । প্রথমে মেলাটির নাম ছিল ‘ চৈত্রমেলা ’ । ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল এই মেলার প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় । সম্পাদক গপেন্দ্রনাথ ঠাকুর , সহকারী সম্পাদক নবগোপাল মিত্র । স্বদেশপ্রেমের সূচনা এখান থেকেই । এই মেলা আয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই ছিল স্বদেশী আদর্শ ও স্বদেশী চেতনা সকলের মধ্যে জাগ্রত করা।এই মেলার দ্বিতীয় বার্ষিক অধিবেশন হয়েছিল ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ ই এপ্রিল । রবীন্দ্রনাথের মেজদাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর বিখ্যাত জাতীয় সংগীত ‘ মিলে সবে ভারত সন্তান ‘ রচনা করে সভার কাজ আরম্ভ করেন ।
১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের প্রথম শনি ও রবিবার এই মেলার অধিবেশন আয়োজন করা হত । গপেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুর পর সহ সম্পাদক হল নবগোপাল মিত্র । ১১ ই ফেব্রুয়ারি ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ‘ হিন্দুমেলার ’ নবম বার্ষিক অধিবেশন উদ্বোধন করা হয় রাজা কমলকৃষ্ণ বাহাদুরের সভাপতিত্বে । এই সময় কিশোর রবীন্দ্রনাথ গাছের নীচে দাঁড়িয়ে সর্বসাধারণের সামনে স্বরচিত একটি কবিতা পাঠ করেছিলেন । কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ লর্ড কার্জনের সময়ের দিল্লীর দরবার সম্বন্ধে একটি গদ্য – প্রবন্ধ লিখেছিলেন। লর্ড লিটনের সময় লিখেছিলেন পদ্যে । হিন্দুমেলার প্রথম কবিতা পাঠ ‘ হিন্দুমেলার উপহার ‘ ।
( গ ) হিন্দুমেলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অংশগ্রহন সম্বন্ধে যা জানো আলোচনা করো ।
উত্তরঃ রাজা কৃষ্ণকমল বাহাদুরের সভাপতিত্বে ১১ ই ফেব্রুয়ারি ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে হিন্দুমেলার নবম বার্ষিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল । এই অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথ প্রথম অংশ গ্রহন করেন । তখন তাঁর বয়স মাত্র তেরো বছর । ‘ হিন্দুমেলার উপহার ’ নামে স্বরচিত একটি কবিতা রবীন্দ্রনাথ গাছের নীচে দাঁড়িয়ে জনসাধারণে সমক্ষে আবৃত্তি করেন । ১৪ ই ফেব্রুয়ারি ১৮৭৭ খ্রিস্টাব্দে হিন্দুমেলায় একাদশ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় । ঐ বছরেই তিনি দিল্লীর দরবার সম্বন্ধে একটি কবিতা রচনা করেন । কিন্তু কবিতাটি পরিবেশন করা সম্ভব হয়নি ।
( ঘ ) ভারতের ‘ সর্বজনীন পরিচ্ছদ ‘ হিসেবে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর কী ধরণের পোশাক তৈরি করেছিলেন ?
উত্তরঃ ভারতবর্ষের সার্বজনীন পরিচ্ছেদ কি হতে পারে এ নিয়ে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ নানা ধরণের নমুনা উপস্থাপিত করেন । ধুতিটা কর্মক্ষেত্রের উপযোগী নয় আবার পায়জামাটাও বিজাতীয় । এই দুটিকে মিলিয়ে তিনি ‘ পায়জামার উপর একখণ্ড কাপড় পাট করিয়া একটা কৃত্রিম মালকোঁচা ছুড়িয়া দিলেন । ‘ সোনার টুপির সঙ্গে পাগড়ির মিশালে এক অদ্ভুত পদার্থ তৈরি হল । এই সার্বজনীন পোষাক পড়ে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সর্বজন সন্মুখে গাড়িতে ওঠেন । রবীন্দ্রনাথ কৌতুক করে বলেছেন , সর্বজনীন পোষাক সর্বজনে গ্রহন করার আগে একলা নিজে ব্যবহার করা সব লোগের পক্ষে সম্ভব নয় ।
( ঙ ) স্বাদেশিক সভার দলবলের ‘ শিকার ’ পর্বের বর্ণনা দাও ।
উত্তরঃ প্রতি রবিবার জ্যোতিরিন্দ্রনাথ তার স্বাদেশিক সভার দলবলকে নিয়ে শিকার করতে বেরতেন । আর এই শিকারে ছুতোর , কালোর থেকে উচ্চ , নীচু বহু শ্রেণির লোক এসে জুটত । এই শিকারে রক্তপাতটাই নগণ্য ছিল অর্থাৎ শিকারে গেলেও পশু – পাখি বধ করা হয়ে উঠত না । স্বাদেশিক সভার দলবল একত্রিত ভাবে বউঠাকুরাণীর রাশীকৃত লুচি তরকারি সঙ্গে থাকায় কাউকে উপবাস করতে হয়নি । আর এই অহিংসক শিকারিদলের প্রধান উৎসাহ দাতা ছিলেন ব্রজবাবু । তিনি মেট্রোপলিটিন কলেজের সুপারিটেণ্ডেন্ট এবং কিছুমান রবীন্দ্রনাথের শিক্ষক ছিলেন । লুচির শেষে আবার ডাবের জল পাওয়াতে তাঁদের পানীয়ের অভাব হয়নি । জ্যোতিরিন্দ্রনাথ শিকারি দলে একজন নিষ্ঠাবান হিন্দু জমিদার ছিলেন । বাজারে ধারে তাঁর একটা বাগান ছিল।সেখানে জাতি – ধর্ম – বর্ণ নির্বিচারে আহার চলতো । তারপর অপরাহ্নে উঠল বিষম ঝড় । সেখানেই গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে চীৎকার করে গান শুরু করলেন রবীন্দ্রনাথ । তারপর অনেক রাতে ঝড় থামলে তাঁরা বাড়ি ফিরে গেলেন ।
( চ ) শিকার থেকে ফেরার পথে এক বাগানে ঢুকে ব্রজবাবু কী করেছিলেন ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাতা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে স্বাদেশিক সভার সবাই মিলে শিকারে গিয়েছিলেন । তাঁদের দলের প্রধান উৎসাহদাতা ছিলেন ব্রজবাবু । ব্রজবাবু মেট্রোপলিটিন কলেজের সুফারিটেন্ড । একদিন শিকার থেকে ফেরার পথে তিনি মানিকতলা অঞ্চলের একটি বাগন ঢুকে মালীকে জিজ্ঞেস করেন যে মামা ইতিমধ্যে বাগান এসেছিলেন কী না । মালী বুঝতে না পেরে শশব্যস্ত হয়ে প্রণাম করে জানানা যে মামা আসেননি । এরপর ব্রজবাবুকে মালীক দিয়ে গাছের ভাবে পড়ানো দলের “ সকালের মিলে মনভরে ডাবের জল পান করলেন । আসলে মামার প্রসঙ্গটি নেহাতাই তিনি আছিলা করে এনেছিলেন । মামার উপস্থিতির খবরটি তাঁর কাম্য নয় , আসলে বাগানে ঢুকে ডাবের জল খাওয়ার ইচ্ছাটিই ছিল । তাঁর প্রধান উদ্দ্যেশ । আর এই আছিলায় তিনি তাঁর ইচ্ছাটি পূরণ করেন ।
( ছ ) রবীন্দ্রনাথদের স্বাদেশিক সভার কার্যাবলীর বর্ণনা দাও ।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে তাঁদের একটি সভার সূচনা হয় । সভাটির নাম স্বাদেশিকতার সভা । রাজনারায়ণ বসু ছিলেন এই সভার সভাপতি। এই সভার সাংকেতিক নাম ছিল ‘ হামুচুপামুহাফ ’ । আর সাংকেতিক ভাষাতেই এই সভার কার্যবিবরণী লেখা হত । কলকাতার একটি গলির মধ্যে একটি পোড়ো বাড়িতে এই সভার অধিবেশন বসত । সভার আসবাবপত্রের মধ্যে ছিল একটি ভাঙা ছোট টেবিল , কয়েকটা ভাঙা চেয়ার ও আধখানা ছোটো টানাপাখা । সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় হিতকর ও উন্নতিকর সমস্ত কার্যাবলী । সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই তারা স্বদেশী দেশলাই কারখানা স্থাপন করার চেষ্টা করল । সভ্যরা তাদের আয়ের দশমাংশ এই সভার জন্য দান করতেন ।
দেশলাই তৈরিতে কাঠি পাওয়া সমস্যা । যাই হোক অনেক পরীক্ষার পর বাক্স কয়েক দেশলাই তৈরি হল । এক বাক্সে যে খরচ ছিল তাতে একটা পল্লীর সম্বৎসরে চুলা ধরানো চলত । আর দেশলাই এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছিল যে সামনে আগুনের শিখা না থাকলে সেই দেশলাই জ্বালানো সম্ভব হত না । এরপর খবর পাওয়া গেল অল্পবয়স্ক এক যুবক ছাত্র কাপড়ের কল তৈরি করতে চায় । কাপড়ের কল সম্পর্কে কারো কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না । ঐ যন্ত্র তৈরি করতে কিছু দেনা হয়েছিল । সেটা শোধ করা হল । অবশেষে একদিন ব্রজবাবু মাথায় একখানা গামছা বেঁধে জোড়াসাঁকোয় উপস্থিত । বললেন – ‘ আমাদের কালে এই গামছার টুকরা তৈরি হইয়াছে । ” বলে তিনি দুই হাত তুলে তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন ।
( জ ) ‘ স্বাদেশিকতা ’ পর্বে রাজনারায়ণ বসু সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের পর্যালোচনার এক আলোচনা করো ।
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ স্বাদেশিকতা ’ গদ্যাংশে রাজনারায়ণ বসু সম্পর্কে সশ্রদ্ধ পরিচয় দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ । ছেলেবেলা থেকেই রাজনারায়ণ বসুর সঙ্গে পরিচয় রবীন্দ্রনাথের । কিন্তু এ বয়সে এই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মানুষটিকেত সম্পূর্ণ বুঝতে পারেননি তিনি । তাঁর চরিত্রে যথেষ্ট বৈপরীত্য ছিল । যদিও তিনি বয়েসে প্রধান ছিলেন , চুল দাড়ি প্রায় সম্পূর্ণ পেকেছে । তথাপি সকলের চেয়ে ছোটো যে ব্যক্তিত্ব তার সঙ্গেও তাঁর আন্তরিকতায় বাধা হয়নি । প্রচুর পাণ্ডিত্য থাকলেও তিনি ছিলেন সহজ মানুষ । দুঃখ কষ্ট অস্বাস্থ্য বয়সের গাম্ভীর্য কোনোটিই তাঁর হাসির বেগকে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি । তিনি তার জীবনটিকে ঈশ্বরের নিকট নিবেদন করে দিয়েছিলেন । তিনি রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র ছিলেন । ইংরেজি শিক্ষাতেই তিনি বাল্যকাল থেকে মানুষ । কিন্তু সমস্ত অনভ্যাসের বাঁধা ঠেলে উৎসাহ এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন । দেশের প্রতি তাঁর অনুরাগ তেজদীপ্ত। দেশের সমস্ত খর্বতা , দীনতা , অপমানকে তিনি দগ্ধ করে ফেলতে চাইতেন । তাঁর দীপ্ত চোখ দুটি আর হৃদয়ের উচ্ছ্বাস নিয়ে সকলের সঙ্গে তিনি গাইতেন – ‘ এক সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্ৰটি মন ‘ ।
( ঝ ) ব্যাখ্যা করোঃ
দ্বার আমাদের রুদ্ধ , ঘর আমাদের অন্ধকার , দীক্ষা আমাদের ঋকমন্ত্রে , কথা আমাদের চুপিচুপি – ইহাতেই সকলের রোমহর্ষণ হইত , আর বেশি কিছুই প্রয়োজন ছিল না ।
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ স্বাদেশিকতা ’ গদ্যাংশ থেকে গৃহীত । জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে গঠিত স্বাদেশিক সভা সম্পর্কে লেখক আলোচ্য বিষয়টি ব্যক্ত করেছেন ।
কলকাতার একটি গলির মধ্যে খেলাতচন্দ্র ঘোষের মানিকানাধীন একটি পোড়ো বাড়িতে স্বাদেশিক সভা বসত । ঘরটি অন্ধকার করে , দরজা বন্ধ করে লোকচক্ষুর আড়ালে অত্যন্ত গোপনে এই সভার কাজকর্ম , আলোচনা ইত্যাদি কার্য সমাধা হত । যারা এই সভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তারা প্রত্যেকেই ইংরেজ বিরোধী । আর ইংরেজের প্রতি এই বিদ্বেষই তাদের মনে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়েছিল এবং তারা বীরত্বের সঙ্গে দেশভক্তির যজ্ঞে যোগদান করেছিল । তাদের উদ্দেশ্য ছিল বিদেশী প্রভাব মুক্ত স্বদেশী সমাজ গড়ে তোলা । এই উদ্দেশ্যকে সফল করার জন্য তারা যেসব কাজকর্মে নিয়োজিত করতেন তা অত্যন্ত গোপনে সংঘটিত হয় । তাদের এই গোপন কার্যকলাপ সমাজের আর সাধারণ মানুষের কাজে কৌতূহলের বিষয় ছিল । আর সাধারণ মানুষের এই কৌতুহল সভার সদস্যদের রোমহর্ষণ করত , তাদের উদ্যমকে বাড়িতে তুলতো ।
( ঞ ) গঙ্গার ধারে এক বাগানে ঝড়ের সময় স্বাদেশিক সভার সদস্যদের আচরণ ও রবীন্দ্রনাথের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করো ।
উত্তরঃ প্রতি রবিবার স্বাদেশিক সভার সদস্যদের সঙ্গে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরও শিকারে যান । স্বাদেশিক সভার শিকারের দলের মধ্যে একজন নিষ্ঠাবান হিন্দু মধ্যবিত্ত জমিদার ছিলেন । গঙ্গার ধারে জমিদারের একটি বাগান ছিল । কোন একদিন শিকার থেকে ফেরার পথে তাঁরা সকলে এই বাগানে গিয়ে জাতি বর্ণ নির্বিচারে সকলে একসঙ্গে খাওয়া – দাওয়া করেন । আহারের পরে অপরাহ্নে প্রবল ঝড় উঠে । তখন শিকার দলের সকলে গঙ্গার ঘাটে দাঁড়িয়ে একত্রে গান করতে থাকেন । তাঁদের দলের মধ্যে সেদিন বৃদ্ধ রাজনারায়ণ বসু মহাশয়ও ছিলেন । রাজনারায়ণ বসুর কণ্ঠের সুর – ছন্দ স্বচ্ছন্ন ছিল না । কিন্তু তবুও তিনি গান গেয়েছিলেন । সূত্রের চেয়ে ভাষ্য যেমন অনেক বেশি তেমনি তাঁর গানে সুরের থেকে গানের সঙ্গে হাতনাড়া ছিল অনেক বেশি । এরপর ঝড় থেমে গেলে অনেক রাজে তারা গাড়ি করে বাড়ি ফেরেন ।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১। ‘ বিশ্বভারতী ’ কে প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
২। কবে এবং কোথায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম হয় ?
উত্তরঃ ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই মে কলকাতার জোড়াসাঁকো অঞ্চলের ঠাকুর পরিবারে ।
৩। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবে এবং কিসের জন্য নোবেল পুরস্কার পান ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ‘ গীতাঞ্জলি ’ কাব্যগ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার পান।
৪। ‘ সে সময়টা দেশপ্রেমের সময় নয় ’ – কোন সময়কে এখানে নির্দেশ করা হয়েছে ?
উত্তরঃ এখানে সে সময়টা বলতে উনবিংশ শতকের বঙ্গভূমিকে নির্দেশ করা হয়েছে ।
৫। রবীন্দ্রনাথের বাল্যকালে একশ্রেণির পাশ্চাত্য লোক দেশের কোন জিনিসকে দূরে ঠেকিয়ে রেখেছিল ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথের বাল্যকালে একশ্রেণির পাশ্চাত্য লোক দেশের ভাব ও ভাষাকে দূরে ঠেকিয়ে রেখেছিল ।
৬। নবগোপাল মিত্র কিসের কার্যকর্তা হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন ?
উত্তরঃ নবগোপাল মিত্র জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে সৃষ্ট হিন্দুমেলার কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন ।
৭। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজদাদার নাম কী ?
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেজদাদার নাম সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
৮ । হিন্দুমেলার সময়ে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন গান রচনা করেছিলেন ?
উত্তরঃ হিন্দুমেলার সময়ে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘ মিলে সবে ভারত সন্তান ’ গানটি রচনা করেন ।
৯। হিন্দুমেলায় কী কী করা হত ?
উত্তরঃ হিন্দুমেলায় দেশের স্তবগান , গীত , দেশানুরাগের কবিতা পাঠ , দেশীয় শিল্প , ব্যায়াম প্রভৃতি প্রদর্শনী ও দেশী গুনীলোকদের পুরস্কৃত করা হত ।
১০। লর্ড কার্জনের শাসন কালে রবীন্দ্রনাথ প্রবন্ধে উল্লেখিত কোন প্রবন্ধটি কে লিখেছিনে ?
উত্তরঃ লর্ড কার্জনের শাসন কালে রবীন্দ্রনাথ দিল্লী দরবার সম্বন্ধে একটি গদ্য প্রবন্ধ লিখেছিলেন ।
১১। ‘ আমার বড়ো বয়সে তিনি একদিন একথা আমাকে স্মরণ করাইয়া দিয়াছিলেন ’ তিনি বলতে বক্তা কাকে নির্দেশ করেছেন ?
উত্তরঃ এখানে তিনি বলতে নবীনচন্দ্র সেন মহাশয়কে নির্দেশ করেছেন ।
১২। ‘ সেই সভার সমস্ত অনুষ্ঠান রহস্যে আবৃত ছিল ’ – কোন সভার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ এখানে স্বাদেশিকতার সভার কথা বলা হয়েছে , যেই সভাটি জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছিল ।
১৩। স্বদেশে কীসের কারখানা স্থাপন করা স্বাদেশিকতার সভার উদ্দেশ্যের মধ্যে অন্যতম ছিল ?
উত্তরঃ স্বদেশে দিয়াশলাই কারখানা স্থাপন করা ছিল স্বাদেশিকতা সভার অন্যতম উদ্দেশ্য ।
১৪। তাঁহার মধ্যে নানা বৈপরীত্যের সমাবেশ ঘটিয়াছিল ’ – কার কথা এখানে বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ শ্রীরাজনারায়ণ বসুর মধ্যে নানা বৈপরীত্যের সমাবেশ ঘটায় কথা এখানে বলা হয়েছে ।
১৫ । ‘ এক সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্ৰটি মন য এক কার্যে সঁপিয়াছি সহস্ৰ জীবন ‘ – কে এই গানটি গেয়েছিলেন ।
উত্তরঃ গান গেয়েছিলেন রাজনারায়ণ বসু ।
১৬। ‘ স্বাদেশিকতা ’ প্রবন্ধটি কার লেখা ?
উত্তরঃ স্বাদেশিকতা প্রবন্ধটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ।
শব্দার্থ ও টীকা :
স্বদেশাভিমান :- স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা ।
মাতৃভাষা :- জন্মসূত্রে মায়ের কাছ থেকে পাওয়া ভাষা ।
পিতৃদেব :- রবীন্দ্রনাথের পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
সর্বজনীন পরিচ্ছদ :- সকলের পরিধানযোগ্য পোশাক ।
পেনো বাড়ি :- অব্যবহৃত বাড়ি ।
অর্বাচীন :- অল্প বয়স্ক ।
নিষ্কৃতি :- মুক্তি ।
খদ্যোত :- জোনাকি ।
নিতবর :- বিয়ের সময় যে বালক সহচর হিসাবে বরের পাশে থাকে । ওই বালককে কোলবরও বলা হয়ে থাকে ।
মোসায়ের :- চাটুকার ।
কুরুবক :- মিন্টি ফুল বা ঝাঁটি ফুলের গাছ ।
কুটজ :- গিরিমল্লিকা ফুলের গাছ ।
পরিমল :- সুগন্ধ ।
অনিত্য :- চিরস্থায়ী নয় এখন ।
হিন্দুমেলা :- ১৮৬৭ সালে নাগোপাল মিত্রের উদ্যোগে এবং গণেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আনুকূল্যে ও উৎসাহে হিন্দুমেলা আয়োজিত হয় । সভাটির উদ্দেশ্য ছিল দেশে স্বদেশ চেতনা – জাগিয়ে তোলা । গণেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ‘ হিন্দুমেলা’র সম্পাদক এবং নবগোপাল মিত্র সহকারী সম্পাদক। এই মেলাতে সর্বপ্রথম জাতীয় শিল্পপ্রদর্শনী আয়োজিত হয় । দেশের উন্নতির সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়ই এই মেলার বিচার্য বিষয় ছিল ।
নবগোপাল মিত্র :- জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ির অতি ঘনিষ্ট নবগোপাল মিত্র । তিনি ‘ তত্ত্ববোধিনী সভা’র সঙ্গে জড়িত ছিলেন । তিনি ‘ ন্যাশনাল পেপার ’ এর পরিচালক ছিলেন । সেই যুগের অন্যতম জাতীয়তাবোধ এই নেতা দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তোলার উদ্দেশ্যেই ‘ চৈত্রমেলা ’ ‘ হিন্দুমেলা’র অন্যতম আয়োজক ছিলেন ।
মেজ দাদা :- রবীন্দ্রনাথ মেজদাদা হলে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর । প্রথম ভারতীয় আই.সি.এস তিনি । তিনি সাহিত্য ও সংগীতের অনুরাগী ছিলেন । তাঁর রচনাগুলি হল – – বোম্বাই মিত্র আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস , বৌদ্ধধর্ম ইত্যাদি তাঁর বিখ্যাত রচনা ।
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.