Class 12 Bengali Question Answer Chapter 5 কৃপণ

Join Roy Library Telegram Groups

Class 12 Bengali Question Answer Chapter 5 কৃপণ Provided by The Roy Library is one of the best content available on the internet as well as many other offline books. Class 12 Bengali Question Answer Chapter 5 কৃপণ | উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন Question Answer is made for AHSEC Board students. We ensure that You can completely trust this content. If you learn PDF from then you can Scroll Down and buy PDF text book Solutions I hope You Can learn Better Knowledge.

Class 12 Bengali Question Answer Chapter 5 কৃপণ

Here we will provide you complete Bengali Medium AHSEC Class 12 বাংলা ( MIL ) Suggestion, AHSEC Class 12 Bengali (MIL) Question Answer, AHSEC Class 12 Bengali (MIL) Notes, AHSEC Class 12 Bengali (MIL) Solution, উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন, উচ্চ মাধ্যমিক বাংলা সমাধান, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) বই প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা ( MIL ) PDF Question Answer absolutely free of cost. If you read this solution very carefully with proper understanding & then memorize questions by yourself you can score the maximum number of marks in your upcoming Exam.

কৃপণ

গোট : ১ নির্বাচিত পদ্যাংশ 

১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ 

( ক ) ‘ কৃপণ ‘ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভূক্ত ? 

উত্তরঃ কৃপণ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ গীতাঞ্জলি ’ কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত । 

( খ ) কবিতার ‘ আমি ’ গ্রামের পথে কী উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ? 

উত্তরঃ কবিতার আমি গ্রামের পথে ভিক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন । 

( গ ) রথ থেকে নেমে রাজাধিরাজ ভিখারিকে কী বলেছিলেন ? 

উত্তরঃ রথ থেকে নেমে রাজাধিরাজ ভিখারির সামনে হাত বাড়িয়ে বলেছিলেন তাঁকে কিছু দেওয়ার জন্য । 

( ঘ ) ভিখারি রাজাধিরাজকে কী দিয়েছিলেন ? 

উত্তরঃ ভিখারি রাজাধিরাজকে একটি ছোট শস্য কনা দিয়েছিলেন । 

( ঙ ) দিনান্তে ঘরে ফিরে ভিখারি তাঁর ভিক্ষান্নের মধ্যে কী দেখেছিলেন ? 

উত্তরঃ দিনান্তে ঘরে ফিরে ভিখারি তাঁর ভিক্ষান্নের মধ্যে একটি ছোট স্বর্ণ কনা দেখেছিলেন । 

২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ 

( ক ) রাজাধিরাজ রথ থেকে পথের দুধারে কী ছড়িয়ে দেবেন এবং তা নিয়ে ভিখারি কী করবেন বলে ভেবেছিলেন ? 

উত্তরঃ ভিখারি ভেবেছিলেন রাজাধিরাজ রথ থেকে পথের দুধারে অনেক ধন – ধান্য টাকা পয়সা ছড়িয়ে দেবেন । আর ভিখারি দুহাত ভরে সমস্ত ধন – ধান্য কুড়িয়ে নিয়ে তার ঝুলি ভর্তি করবেন ।

( খ ) রথ থামার পর রাজাধিরাজ কী করেছিলেন ? 

উত্তরঃ রথ থামার পর রাজাধিরাজ রথ থেকে নেমে সেই ভিখারির সামনে এসে দাড়িয়ে হাত পেতে কিছু ভিক্ষা চাইছিলেন ভিখারি থেকে । 

( গ ) রাজাধিরাজের কথা শুনে ভিখারির কী মনে হয়েছিল ? 

উত্তরঃ রাজাধিরাজের কথা শুনে ভিখারি কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন । তারপর ভিখারি ভাবতে লাগলেন রাজাধিরাজ তার সঙ্গে প্রবঞ্চনা করেছেন কারণ একজন রাজাধিরাজের ভিখারির কাছে কিছু চাওয়ার থাকতে পারে না । তার কোনো অভাব থাকতে পারে না । তাই ভিখারি ভেবেছিলেন তাকে রাজাধিরাজ প্রবঞ্চনা করেছেন । 

( ঘ ) ভিক্ষান্নের মধ্যে সোনার কণা দেখে ভিখারি কেন আক্ষেপ করেছিলেন ? 

উত্তরঃ ভিক্ষান্নের মধ্যে সোনার কণা দেখে ভিখারির মনে আক্ষেপ হয়েছিল এই ভেবে যে , তিনি একটি মাত্র শস্য কণা রাজাধিরাজকে দিয়ে একটি স্বর্ণ কণা পেয়েছেন , যদি তিনি তার সম্পূর্ণ ঝুলি উজার করে সমস্ত শস্য রাজাধিরাজকে দিয়ে দিতেন তাহলে তিনি প্রচুর সোনার কণা বিনিময়ে পেতে পারতেন । 

( ঙ ) ‘ রাজভিখারি ’ বলতে কাকে চিহ্নিত করা হয়েছে ? 

উত্তরঃ রাজভিখারি বলতে এখানে স্বয়ং ঈশ্বরকে বোঝানো হয়েছে । মানুষ চিরকাল ঈশ্বরের কাছে চেয়ে এসেছে । কিন্তু কবি এখানে দেখিয়েছেন যে ঈশ্বর ভিখারির কাছে পাত পেতে চেয়েছেন । অর্থাৎ ঈশ্বরের নিকট মানুষ যদি নিজেকে সম্পূর্ণ উজার করে নিজেকে বিলিয়ে দিতে না পারলে ঈশ্বরের থেকে কিছুই পাওয়া যায় না । 

S.L. No.সূচী-পত্ৰ
পাঠ -১অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি – গোবিন্দ দাস
পাঠ -২অন্নদার আত্মপরিচয় – ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
পাঠ -৩বঙ্গভাষা – মাইকেল মধুসূদন দত্ত
পাঠ -৪মাতৃহৃদয় – প্রিয়ংবদা দেবী
পাঠ -৫কৃপণ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পাঠ -৬কুলিমজুর – কাজী নজরুল ইসলাম
পাঠ -৭পূব-পশ্চিম – অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
পাঠ -৮খরা – শঙ্খ ঘোষ
পাঠ -৯ফুলের বিবাহ – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের
পাঠ -১০স্বাদেশিকতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
পাঠ -১১আমার জীবনস্মৃতি – লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া
পাঠ -১২মন্ত্রের সাধন – জগদীশচন্দ্র বসু
পাঠ -১৩মাস্টার মহাশয় – প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়
পাঠ -১৪দিবসের শেষে – জগদীশ গুপ্ত
পাঠ -১৫গণেশ জননী – বনফুল
পাঠ -১৬ভাত – মহাশ্বেতা দেবী
পাঠ -১৭মূল্যবোধ শিক্ষা – ড° সুজিত বর্ধন
পাঠ -১৮কৈশোরকাল ও তার উপযোগী শিক্ষা ড° কাবেরী সাহা
পাঠ -১৯ব্যাকরণ
পাঠ -২০রচনা

৩। দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ

( ক ) ‘ কৃপণ ‘ কবিতার কাহিনি অংশ নিজের ভাষায় লেখো । 

উত্তরঃ কৃপণ কবিতাটিতে কবি একটি পরম সত্যকে রূপকের আড়ালে উৎঘাটিত করেছেন । এক ভিখারি গ্রামের পথে ভিক্ষা করে ফিরছিল । আর তখন রাজাধিরাজ সোনার রথে চড়ে গ্রাম পরিক্রমা করতে বেড়িয়েছেন । সোনার রথে রাজাধিরাজকে অপূর্ব সুন্দর লাগছিল । ভিখারি তখন মনে মনে ভাবতে লাগল কার মুখ দেখে তার প্রভাত হয়েছে যে পথে রাজাধিরাজের সাক্ষাৎ পেল । ভিখারি ভাবল রাজাধিরাজ পথের দুধারে ধন – ধান্য ছড়িয়ে ছড়িয়ে যাবেন আর ভিখারি দুহাত ভরে মুঠো মুঠো করে কুড়িয়ে নিয়ে তার ভিক্ষার ঝুলি পূর্ণ করবে । কিন্তু দেখা যায় রাজাধিরাজ ভিখারির সামনে এসে ‘ আমায় কিছু দাও গো ’ বলে ভিখারিকে অবাক করে দেয় । ভিখারি ভেবে নেয় রাজাধিরাজ তার সঙ্গে প্রবঞ্চনা করছেন কারণ একজন রাজা , যিনি সাম্রাজ্যের অধিকারী , তার তো কোনো অভাব থাকার কথা নয় , তার ভিখারির কাছে হাত পাতার কোনো কারণ থাকতে পারে না । তবুও ভিখারি তার ভিক্ষার ঝুলি থেকে এক কণা শস্য রাজাধিরাজকে ভিক্ষা দেয় । 

এরপর ভিখারি যখন বাড়ি ফিরে আসে তখন সে তার ভিক্ষার ঝুলি উজার করে দেখে যে ভিক্ষালব্ধ জিনিসের মধ্যে এক কণা সোনা । তখন ভিখারি বুঝতে পারে যে রথে চড়ে রাজাধিরাজ যিনি এসেছিলেন তিনি আসলে স্বয়ং ঈশ্বর । ভিখারি ঈশ্বরকে চিনতে পারেনি । এরপর ভিখারি চোখের জল ফেলতে ফেলতে আক্ষেপ করে যে সে তার সমস্ত শূণ্য করে রাজাধিরাজকে কেন দিল না । 

( খ ) ‘ কৃপণ ’ কবিতায় কৃপণ কে – ভিখারি না রাজ ভিখারি ? তোমার মন্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দাও । 

উত্তরঃ ‘ কৃপণ ’ কবিতায় কৃপণ হচ্ছে ভিখারি । কৃপণ কবিতাটিতে দেখা যায় রাজধিরাজ , সোনার রথে চড়ে নগর পরিভ্রমন কালে ভিখারির কাছে এসে দাঁড়ায় । রাজাধিরাজের ধন – দৌলত অর্থের অভাব নেই , তবুও তিনি ভিখারির কাছে ভিক্ষা চাইলেন । রাজাধিরাজ স্বয়ং ঈশ্বর তিনি ভিখারির মানসিকতা ও হৃদয়ের গভীরতা পরীক্ষা করার জন্য পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছেন । কিন্তু ভিখারি তার ঝুলিতে থাকা ভিক্ষালব্ধ সামগ্রী থেকে এক কণা শস্যই রাজভিখারিকে দান করেছে । আর এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে , রাজা তার ঐশ্বর্য ত্যাগ করতে পেরেছেন কিন্তু ভিখারি তার ভিক্ষালব্ধ সামগ্রী সম্পূর্ণ উজার করে দিতে পারেনি , ভিখারি সামান্য ক্ষুদ্র কণাটুকু দিতে রাজি হয়েছে । তাই এখানে ভিখারিই ‘ কৃপণ ’ পরিচয়ের অধিকারী । 

( গ ) কোন যুক্তিতে ভিখারি রাজাকে ক্ষুদ্র কণা ভিক্ষা দিয়েছিলেন এবং পরিশেষে কেনই বা তার জন্য আক্ষেপ করেছিলেন – বিস্তৃত করো । 

উত্তরঃ ভিখারি যখন ভিক্ষার জন্য পথে বেড়িয়েছে তখন স্বর্ণরথে রাজাধিরাজকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যায় । ভিখারি মনে মনে খুশি হয় এবং তার মনে আশা জাগে যে , তার দিনটা ভালো যাবে , সে রাজাধিরাজের দর্শন পেয়েছে । রাজধিরাজ তার স্বর্ণরথ থেকে মূল্যবান সব ধন রত্ন পথের দুধারে ছড়িয়ে দেবে আর ভিখারি তার দুহাতে মুঠো মুঠো করে জুড়িয়ে নিয়ে তার ভিক্ষার ঝুলি পূর্ণ করবে । কিন্তু পরিস্থিতি ভিখারির ভাবনা অনুযায়ী বিপরীত হয় । দেখা যায় রাজভিখারি ভিখারির সামনে এসে তার কাছে হাত পেতে ভিক্ষা চায় । তখন ভিখারি খুব অবাক হয়ে যায় , কারণ একজন রাজা ভিখারির কাছে ভিক্ষা চাইছে । ভিখারি তখন মনে মনে ভাবে যে রাজাধিরাজ নিশ্চয় তাকে প্রবঞ্চনা করেছেন । তাই নিয়ম রক্ষার্থে সামান্য একটি শস্য কণা ঝুলি থেকে বের করে ভিখারি রাজভিখারিকে ভিক্ষা দেয় । 

পরিশেষে ভিখারি আক্ষেপ করেছিলেন কারণ বাড়িতে ফিরে এসে ভিখারি যখন তার ভিক্ষালব্ধ ঝুলি উজার করেন তখন দেখতে পান , ভিক্ষার সামগ্রীর সঙ্গে এক ক্ষুদ্র স্বর্ণ কণা । যে শস্য কণা ভিখারি রাজভিখারিকে দান করেছিলেন সেটাই স্বর্ণকণা হয়ে তার কাছে ফিরে এসেছে । তাই ভিখারি আক্ষেপ করেছিলেন যে একটি ক্ষুদ্র কণা শস্যের বিনিময়ে যদি স্বর্ণ পাওয়া যায় । তবে তাকে যদি ভিখারি সর্বস্ব উদার করে দিত তবে তার ঝুলি আজ স্বর্ণ কণায় ভর্তি হয়ে যেত । এই ভেবেই ভিখারি আক্ষেপ করেছিলেন । 

( ঘ ) ‘ কৃপণ ’ কবিতায় বর্ণিত কাহিনি অনুসারে কবির চরিত্র চিত্রণ দক্ষতার পরিচয় দাও । 

উত্তরঃ কৃপণ কবিতায় কবি কাহিনির মধ্য দিয়ে এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে ঈশ্বরকে নিঃস্বার্থভাবে দান করা উচিত । ঈশ্বরকে সংশয়হীন ভাবে দান করতে পারলেই ঈশ্বর লাভ করা যায় । ঈশ্বর কোনো দান চান না , কিন্তু কোনো কিছু চিন্তা না করেই , সর্বান্তকরণে ঈশ্বরকে যা দান করা যায় ঈশ্বর তার দ্বিগুন ফিরিয়ে দেন । 

সমগ্র কৃপণ কবিতাটির আখ্যান একটি রূপকের আড়ালে বর্ণিত হয়েছে । কবিতাটিতে একজন ভিখারির চরিত্রের মানুষের চাওয়ার অন্ত থাকে না। কিন্তু মানুষের এই চাহিদার মাঝ থেকে কেউ কিছু ফিরিয়ে চাইলে মানুষ তা দিতে দ্বিধা বোধ করে । সাধারণ দৃষ্টিতে মানুষ আজ ভিখারির সমতুল্য কারণ পরম ঈশ্বর সামনে এসে কিছু চাইলে মানুষ দ্বিধায় বিভক্ত হয় । আর কবিতাটিতে কবি এই সাধারণ মানুষ ঈশ্বরের চরিত্র ধর্ম আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন । কবি এখানে রাজাধিরাজ অর্থাৎ রাজভিখারিকে ঈশ্বর এবং ভিখারি চরিত্রের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন । সাধারণ মানুষের প্রকৃত প্রকাশ কৃপণতা , তাই ভিখারিকে দেখা যায় রাজাধিরাজকে ভিক্ষা দিতে সে দ্বিধা বোধ করেছে তাই ঝুলি থেকে সামান্য শস্য কণাই সে দিয়েছে আর স্বয়ং ঈশ্বর রাজাধিরাজ কিন্তু সেই শস্য কণাই স্বর্ণ রূপে ফিরিয়ে দিয়েছেন সেই ভিখারিকে । ভিখারি তার সর্বস্ব দিয়ে ঈশ্বরকে দান করতে পারেনি তার ঈশ্বরের দানও সে কিঞ্চিতই পেয়েছে । সে ঈশ্বরকে লাভ করতে পারেনি । 

( ঙ ) ‘ কৃপণ ’ কবিতা অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর চেতনার স্বরূপ বিশ্লেষণ করো । 

উত্তরঃ কৃপণ কবিতা অবলম্বনে রূপকের আড়ালে রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর চেতনাই প্রকাশিত হয়েছে । কবিতাটিতে এক ভিখারির রাজদর্শনের রূপকের আড়ালে এক চিরন্তন সত্য প্রকাশিত হয়েছে । যে সত্যটি হল ঈশ্বরের সান্নিধ্যলাভ সহজ কথা নয় , ঈশ্বরকে লাভ করতে হলে নিজেকে ঈশ্বরের নিকট সম্পূর্ণরূপে উৎসর্গ করতে হয় । রবীন্দ্রনাথ এই মর্মবাণীই কবিতাটির মধ্যে প্রকাশ করেছেন । 

স্বয়ং ঈশ্বর রাজভিখারির রূপে পথে পথে বেড়িয়েছেন । পথে পথে ভিক্ষা করে বেড়ানো ভিখারির কাছে এসে রাজভিখারি যখন ‘ আমায় কিছু দাও গো ’ বলে হাত বাড়িয়েছেন তখন ভিখারি এই ঘটনাকে রাজভিখারির প্রবঞ্চনা ভেবে তার কৃপণ স্বভাব বৈশিষ্ট্যে ক্ষুদ্র এক শস্য কণা তুলে দেয় । পরবর্তীতে রাজভিখারি অর্থাৎ স্বয়ং ঈশ্বর ভিখারির দান ফিরিয়ে দেন স্বর্ণ কণা দিয়ে । তখন ভিখারি বুঝতে পারে ঈশ্বরের মহিমা । ভিখারি আক্ষেপ করে ঈশ্বরকে সম্পূর্ণ উদার করে না দেওয়ার জন্য । অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ এখানে এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে ঈশ্বরের কাছে নিঃস্বার্থভাবে জাগতিক মোহ – মায়া ত্যাগ করে নিজেকে সমর্পিত করতে পারলেই ঈশ্বর ধরা দেন । ঈশ্বর তখন ভক্তকে দ্বিগুন ফিরিয়ে দেন । ঈশ্বর চেতনার স্বরূপ যেন মূর্ত হয়ে উঠেছে রাজভিখারি চরিত্রের মধ্যে । ঈশ্বর লাভের একমাত্র পথ হল ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে উৎসর্গ করা । 

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ 

১। ভিখারি কোথায় ভিক্ষা করছিল ? 

উত্তরঃ ভিখারি গ্রামের পথে পথে ভিক্ষা করছিল । 

২। ভিখারি যখন ভিক্ষা করছিল তখন রাজভিখারি কোথায় ছিল ? 

উত্তরঃ ভিখারি যখন ভিক্ষা করছিল তখন রাজভিখারি স্বর্ণরথে চড়ে যাচ্ছিলেন । 

৩। রাজভিখারিকে দেখে ভিখারির চোখে কেমন লেগেছিল ? 

উত্তরঃ রাজভিখারিকে দেখে ভিখারির চোখে স্বপ্নের মতো লেগেছিল । 

৪। রাজভিখারি দেখতে কেমন ছিলেন ? 

উত্তরঃ রাজভিখারি বিচিত্র শোভা ও সাজে সজ্জিত ছিলেন । 

৫। রাজভিখারিকে দেখে ভিখারির কী মনে হয়েছিল ? 

উত্তরঃ রাজভিখারিকে দেখে ভিখারির মনে হয়েছিল কোনো মহারাজ । ভিখারিকে এখন আর পথে পথে ঘুরতে হবে না । 

৬। রথ চলার সময় রাজা কী করবেন বলে ভিখারি ভেবেছিলেন ? 

উত্তরঃ রথ চলার সময় রাজা পথের দুধারে ধন – ধান্য ছড়াবেন বলে ভিখারি ভেবেছিলেন । 

৭। ধন – ধান্য ছড়ালে ভিখারি কী করবে ? 

উত্তরঃ ধন – ধান্য ছড়ালে ভিখারি তা মুঠো মুঠো দুহাতে কুড়িয়ে ঝোলায় ভর্তি করবে । 

৮। পথের ধারে যখন ভিখারি এই কথা ভাবছিল তখন কী হল ?

উত্তরঃ পথের ধারে যখন ভিখারি এই কথা ভাবছিল তখন রাজার রথ তার সামনে এসে দাঁড়ালো । 

৯ । রাজা ভিখারির সামনে এসে কী করলেন ? 

উত্তরঃ রাজা ভিখারির সামনে এসে হাত বাড়িয়ে বললেন – আমায় কিছু দাও গো ‘ । 

১০। রাজা ভিক্ষা চাওয়াতে ভিখারির মনের অবস্থা কী হয়েছিল ? 

উত্তরঃ রাজা ভিক্ষা চাওয়াতে ভিখারির মনে হয়েছিল রাজা তার সঙ্গে কৌতুক করে প্রবঞ্চনা করছেন । 

১১। ভিখারি রাজাকে কি দিল ? 

উত্তরঃ ভিখারি রাজাকে থলি থেকে শস্য কণা দিল । 

১২। ভিখারি ভিক্ষা মাঝে কী দেখতে পেল ? 

উত্তরঃ ভিখারি ভিক্ষা মাঝে একটি ছোট্ট সোনার কণা দেখতে পেল । 

১৩। ভিখারি কেন কেঁদেছিল ? 

উত্তরঃ ভিখারি কেঁদেছিল এই ভেবে যে সে সকল কিছু শূণ্য করে রাজাকে কেন দেয়নি । 

১৪। ‘ কৃপণ ’ কবিতায় আমি বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ? 

উত্তরঃ ‘ কৃপণ ’ কবিতায় আমি বলতে ভিখারিকে বোঝানো হয়েছে । 

১৫। সামনে মহারাজকে দেখতে পেয়ে ভিখারির মনে কোন আশা জেগেছিল ? কেন ? 

উত্তরঃ সামনে মহারাজকে দেখতে পেয়ে ভিখারির মনে আশা জেগেছিল নিজেকে সৌভাগ্যবান ভেবে । তাকে আর পথে পথে ঘুরে ভিক্ষা করে বেড়াতে হবে না । কারণ রাজা পথের দুধারে ধন – ধান্য ছড়িয়ে দেবেন আর ভিখারি দুহাতে মুঠো মুঠো করে তা ঝুলিতে ভর্তি করবে । তবে তার দুঃখের দিন অবসান হবে । 

১৬। রাজা ভিখারির সামনে এসে কী করলেন ? 

উত্তরঃ রাজা রথে চজেড ভিখারির সামনে এসে দাড়িয়েছেন । ভিখারির মুখের দিকে তাকিয়ে তিনি মৃদু হেসে রথ থেকে নামলেন । এরপর ভিখারির সামনে এসে ভিখারির কাছে হাত পেতে ‘ আমায় কিছু দাও গো’ বলে ভিখারিকে অবাক করে দিলেন । 

১৭। ভিক্ষা মাঝে সোনার কণা দেখে ভিখারির কি অনুভূতি হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ভিক্ষা মাঝে সোনার কণা দেখে ভিখারির মনে হয়েছিল , সামান্য একটা শস্য কণার পরিবর্তে সে সোনার কণা পেয়েছে আর যদি সে সম্পূর্ণ শূণ্য করে দিত তাহলে সে বোঝা ভর্তি সোনা পেত । অর্থাৎ ভিখারি বুঝতে পারল যে রাজভিখারি আসলে স্বয়ং ঈশ্বর । ভিখারি আক্ষেপ করে ক্রন্দন করতে লাগল যে সকল শূণ্য করে কেন সে ঈশ্বরকে দান দিল না । 

১৮। ভিখারি ও রাজভিখারির চরিত্র দুটির মধ্য দিয়ে কবি আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন ? 

উত্তরঃ ভিখারি ও রাজভিখারি চরিত্র দুটির অন্তরালে কবি জীবাত্মা ও পরমাত্মার চরিত্র ধর্মকেই ফুটিয়ে তুলেছেন । ভিখারি এখানে জীবাত্মার প্রতীক এবং রাজভিখারি হল পরমাত্মার প্রতীক । জীবাত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে এক গভীর আত্মিক সংযোগ রয়েছে । জীবাত্মা পরমাত্মার কাছে অনবরত চাইতেই থাকে নিজের সমস্ত সঞ্চয় করে রেখে । কিন্তু পরমাত্মাও জীবাত্মার কাছে চান , জীবাত্মার ভক্তি তার নিঃস্বার্থ সমর্পণ। তবেই পরমাত্মা জীবাত্মাকে শান্তি ও মুক্তি দিয়ে থাকেন । কবিতাটিতে রাজভিখারি পরমাত্মার প্রতীক তিনি ভিখারির কাছ থেকে যা চেয়েছিলেন কিন্তু ভিখারি কৃপণ বলে প্রকৃত অর্থ বুঝতে না পেরে ভিক্ষালব্ধ সামগ্রীর ক্ষুদ্রতম কণাই দান করেছে এবং পরিবর্তে সে ক্ষুদ্রকণা স্বর্ণই লাভ করেছে । 

১৯। ব্যাখ্যা করোঃ 

( ক ) “ তোমার কিবা অভাব আছে ভিখারি ভিক্ষুকের কাছে । ” 

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ কৃপণ ’ কবিতা থেকে গৃহিত হয়েছে । কবি এখানে রূপকের আশ্রয়ে ভক্ত এবং ভগবানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন । একবার এক গ্রামের পথে এক ভিক্ষুক ও এক রাজভিখারির সাক্ষাৎ হয় । রাজভিখারি স্বর্ণরথে বেড়িয়েছিল আর ভিখারি ভিক্ষা করে ফিরছিল । রাজভিখারি বিচিত্র শোভা দেখে ভিখারি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল । ভিখারি ভেবেছিল তার দুঃখের দিন অবসান হয়েছে , রাজভিখারি সমস্ত ধন ধান্য পথের দুধারে ছড়িয়ে দেবেন আর ভিখারি তা মুঠো মুঠো করে ঝুলিতে ভর্তি করবে । কিন্তু প্রবল প্রত্যাশী ভিখারি অবাক হয়ে যায় যখন স্বয়ং রাজবেশি রাজভিখারি ভিখারির সামনে এসে দাড়ায় ও হাত পেতে ভিখারির কাছে ভিক্ষা চান । তখন ভিখারি অবাক হয়ে যায় এই ভেবে যে , ভিখারি ভিক্ষুকের কাছে রাজাধিরাজের কী চাওয়া থাকতে পারে । তিনি স্বয়ং ধন – ঐশ্বর্যের অধিকারী । তিনি হয়তো কৌতুক করে ভিখারির সঙ্গে প্রবঞ্চনা করছেন । 

এখানে রাজভিখারি আসলে স্বয়ং ঈশ্বর । আর ভিখারি হ’ল মানবাত্মার প্রতীক । ঈশ্বর ভক্তদের মনের বাঞ্ছা পূরণ করেন ভেবে মানব তাঁর পূজা অর্চনা করে থাকেন । কিন্তু ঈশ্বর আড়ম্বর চান না , ঈশ্বর চান , ভক্তের সম্পূর্ণ সমর্পন । তবেই ঈশ্বর ভক্তকে পূর্ণতা দান করেন । কিন্তু সামান্য মানব তা বুঝতে পারে না ফলে ঈশ্বরের পূর্ণতা থেকে বঞ্চিত হয় । 

( খ ) “ তোমায় কেন দিই নি আমার সকল শূন্য করে ? ” 

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিরচিত ‘ কৃপণ ’ কবিতা থেকে গৃহিত হয়েছে । রাজভিখারি ও ভিখারির চরিত্র দুটিতে রূপকের আড়ালে কবি জীবাত্মা ও পরমাত্মার প্রসঙ্গ এনেছেন । 

ঈশ্বর আসলে ভক্তদের থেকে আড়ম্বরপূর্বক কিছুই চান না , কিন্তু সাধারণ মানুষ তা বুঝতে পারে না । সাধারণ মানুষের ধারণা ঈশ্বরের পূজা অর্চনা করলেই ঈশ্বর সন্তুষ্ট হয়ে মানুষের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন । আসলে ঈশ্বর চান ভক্তের আকুতি , ভক্তের সমর্পণ । কিন্তু মানুষ তা নিঃস্বার্থভাবে তা করতে পারে না । ফলে ঈশ্বরের পূর্ণতা থেকে বঞ্চিত হয়। 

কবিতাটিতে ভিখারির সঙ্গেও তাই হয়েছে । রাজভিখারি যখন ভিখারির কাছে ভিক্ষা চেয়েছে তখন ভিখারি কৃপণতা করে ঝুলি থেকে ক্ষুদ্র এক কণা শস্য দান করেছে । পরে গৃহে ফিরে এসে যখন ঝুলি উজার করে ভিক্ষালব্ধ সামগ্রী দেখছে তখন ভিখারি দেখতে পায় ভিক্ষার সামগ্রীতে এক ক্ষুদ্র স্বর্ণকণা তখন ভিখারি বুঝতে পারে ও অলৌকিক মহিমা একমাত্র স্বয়ং ঈশ্বরই করতে পারেন । তাই ভিখারি আক্ষেপ করে অশ্রুবরণ করে বলতে থাকে সে তার সমস্ত শূণ্য করে অর্থাৎ নিজেকে সমর্পণ কেন করল না । তবে সে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করতে পারত । 

( গ ) “ আমায় কিছুদাও গো ” বলে বাড়িয়ে দিলেম হাত – (অধ্যায় -১) পংক্তিটি কোন কবিতার ? কে , কার কাছে , কেন হাত পেতেছিল ? 

উত্তরঃ পংক্তিটি রবীন্দ্রনাথ রচিত ‘ কৃপণ ’ কবিতার থেকে নেওয়া হয়েছে । রাজাধিরাজ ভিক্ষুকের কাছে হাত পাত পেতেছিলেন । ভিখারি গ্রামের পথে পথে ভিক্ষা করে বেরিয়ে একদিন হঠাৎ এক মহারাজের দেখা পায় । স্বর্ণরথে চড়ে মহারাজ পথে বেরিয়েছিলেন । ভিখারি রাজাকে দেখে ভেবেছিল মহারাজ পথের দুধারে ধনধান্য ছড়িয়ে দেবেন আর ভিখারি দুহাত ভরে তা তুলি নিবেন । কিন্তু ভিখারির ভাবনা উল্টো হল । দেখা গেল রাজাধিরাজ রথ থেকে নেমে ভিখারির কাছে পাত পেতে ভিক্ষা চাইলেন । 

আসলে রূপকের আড়ালে করি এটাই দেখাতে চেয়েছেন যে রাজাধিরাজ আসলে স্বয়ং ঈশ্বর , তিনি ভক্তের কাছে ভিক্ষা চেয়ে তার মন পরীক্ষা করতে চেয়েছেন । তাই তিনি হাত পেতেছিলেন ।

শব্দার্থ : 

ভিক্ষা – প্রার্থনা।

প্রসন্নতা – সন্তুষ্টি।

অপূর্ব – সুন্দর।

হেনকালে – এইসময়।

স্বপ্নসম – স্বপ্নের মত।

কিসের লাগি – কিসের জন্য।

মম – আমার।

অকস্মাৎ – হঠাৎ।

বিচিত্র – অপূর্ব।

রাজধিরাজ – রাজাদের রাজা।

শুভক্ষণ – ভালো সময়।

প্রবঞ্চনা – প্রতারণা।

রাত পোহাল – ভোর হল। 

উজার করি – উপুর করে ঢালা।

দ্বারে দ্বারে – দরজায় দরজায়।

কণা – ছোট অংশ।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top