Class 12 History Chapter 5 প্রাগৈতিহাসিক যুগ

Join Roy Library Telegram Groups

Class 12 History Chapter 5 (ক) প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, (খ)পর্যটকদের দৃষ্টিতে, (গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল is a textbook prescribed by the AHSEC Board Class 12 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 History Chapter 5 (ক) প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, (খ)পর্যটকদের দৃষ্টিতে, (গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 History Chapter 5 (ক) প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, (খ)পর্যটকদের দৃষ্টিতে, (গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল Solutions are free to use and easily accessible.

দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর 2023, উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর 2023 pdf, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর, উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর pdf, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস মক টেস্ট, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর pdf, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ছোট প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায়, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস চতুর্থ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন 2023, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস নোট, উচ্চ মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর, দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সিলেবাস।

Class 12 History Chapter 5 প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, পর্যটকদের দৃষ্টিতে, ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 12 History Chapter 5 (ক) প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, (খ)পর্যটকদের দৃষ্টিতে, (গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল Question Answer in Bengali. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Hs 2nd year History, Class 12 History Chapter 5 (ক) প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, (খ)পর্যটকদের দৃষ্টিতে, (গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল question answer in Bengali gives you a better knowledge of all the chapters. Class 12 History Chapter 5 (ক) প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, (খ)পর্যটকদের দৃষ্টিতে, (গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল Assam AHSEC Board HS 2nd Year, Class 12 History Chapter 5 (ক) প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ, (খ)পর্যটকদের দৃষ্টিতে, (গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল Answers The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Medium Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. Class XII History Solutions Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 History Bengali Medium Textbooks. HS 2nd Year History Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

উত্তরঃ আজান পির একজন মুসলমান ধার্মিক পির ছিলেন। শিবসাগর জেলার সরাগুড়ি চাপরি নামক স্থানে তার দরগা অবস্থিত।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। রাল্ফ ফিট্স্ অথবা সিহাবুদ্দিন তালিসের কাহিনিতে অতিরঞ্জিত কথা তুমি দেখতে পেয়েছ কি?

উত্তরঃ রাল্ফ ফিরে কাহিনিতে শুক্লধ্বজকে কোঁচ রাজ্যের রাজা বলে বর্ণনাটিতে দেখানো হয়েছে যে সম্ভবত রাজ্যের প্রকৃত ক্ষমতা তাঁর উপরই ন্যস্ত ছিল। রাজ্যের মানুষ পশু-পক্ষীর প্রতি যে মমতা দেখিয়েছিল, তা ব্যাখ্যা করা কঠিন। প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ এডওয়ার্ড গেইট বলেছিলেন—একটি কিংবদন্তী মতে কোন এক বছর জ্যোতিষী পণ্ডিতগণ মহারাজা নরনারায়ণের উপর শনির প্রভাব পড়বে বললে নরনারায়ণ তাঁর ভাই শুক্লধ্বজের হাতে সমস্ত দেশের শাসনভার অর্পণ করে সম্পূর্ণ একবছর সময় ছদ্মবেশে ঘুরেফিরে কাটিয়েছিলেন। রাল্ফ ফিস্ হয়তো এই সময়কালে কোঁচ রাজ্য পরিভ্রমণ করেছিলেন এবং শুক্লধ্বজকে সিংহাসনে বসে থাকতে দেখেছিলেন।

তদুপরি নরনারায়ণ নিজে একজন গভীর ধর্মানুরাগী ছিলেন বলে জৈনধর্ম বা বৈষ্ণবধর্মের প্রভাবে পশু-পক্ষীর জন্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

প্রশ্ন ২। আসামে ভক্তিবাদ আন্দোলন সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।

উত্তরঃ খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকে আসামে শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের নেতৃত্বে ভক্তি আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। সেই সময়ে আসামে ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায় পরস্পরাগত ভাবে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজার্চনা করত। সামাজিক নীতি-নিয়ম মানে না এমন লোকজনও সমাজে বৃদ্ধি পেয়েছিল। সামাজিক অনাচারে প্রবৃত্ত লোকজন জনজীবনে অশান্তি সৃষ্টি করতে শুরু করে। শাক্তপন্থীরা বলি-পূজার সমর্থক ছিলেন। পুরোহিত শ্রেণীর প্রাধান্য এবং জাতিভেদ প্রথা সাধারণ মানুষের ধর্ম-সাধনায় যথেষ্ট বাধার সৃষ্টি করেছিল। সমস্ত মানুষের মুক্তির পথ সুগম করার জন্য এক সহজ সরল ধর্ম আবশ্যক হয়ে পড়েছিল, এই পটভূমিতে ১৪৪৯ খ্রিস্টাব্দে শঙ্করদেবের জন্ম হয়। তাঁর নেতৃত্বেই আসামে ভক্তি আন্দোলন আরম্ভ হয়।

প্রশ্ন ৩। শ্রীমন্ত শঙ্করদেব সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ১৪৪৯ খ্রিস্টাব্দে আসামের নগাঁও জেলার অন্তর্গত আলিপুখুরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম কুসুম্বর ভূঁইয়া এবং মাতার নাম সত্যসন্ধ্যা দেবী। মহেন্দ্রকদলী নামে এক পণ্ডিতের নিকট শঙ্করদেব নানা শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। তিনি সত্যবর্তী নামে এক মহিলাকে বিবাহ করেন। এক কন্যাসন্তান রেখে সত্যবতী পরলোকগমন করলে শঙ্করদেব গৃহত্যাগ করে প্রায় বারো বৎসর বিভিন্ন তীর্থস্থান ভ্রমণ করেন। কবীর ও অন্যান্য সাধু-সত্তদের সঙ্গে ধর্ম বিষয়ে আলোচনা করে তিনি উপলব্ধি করেন যে ধর্মচর্চার জন্য সংসার ত্যাগের কোন প্রয়োজন নেই। গৃহে ফিরে তিনি দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন। শঙ্করদেব প্রবর্তিত ধর্মকে ভাগবতী বৈষ্ণবধর্ম বা একশরণ ধর্ম বলা হয়। এই ধর্মের মূল কথা হল ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়। শঙ্করদেব তাঁর ধর্মমত প্রচার করতে থাকেন। অসমীয়া সমাজ, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে শঙ্করদেবের দান অপরিসীম। তিনি গীত, কির্তন, কাব্য, নাটক প্রভৃতি রচনা করেন। ১৫৬৯ খ্রিস্টাব্দে শঙ্করদেব স্বর্গারোহণ করেন।

প্রশ্ন ৪। আসামে শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের ধর্মমত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ দর্শাও।

উত্তরঃ পঞ্চদশ শতকে আসামে শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের নেতৃত্বে ভক্তি আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। সেই সময়ে আসামে ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায় পরম্পরাগতভাবে বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা-অর্চনা করত। সামাজিক নীতি-নিয়ম মানে না এমন লোকজনও সমাজে বৃদ্ধি পেয়েছিল। সামাজিক অনাচারে প্রবৃত্ত লোকজন জনজীবনে অশান্তি সৃষ্টি করতে শুরু করে। এ-হেন পটভূমিতে ১৪৪৯ খ্রিস্টাব্দে অসমিয়া কলা-সংস্কৃতির প্রাণস্বরূপ শঙ্করদেবের জন্ম হয়। ভারতবর্ষের প্রসিদ্ধ তীর্থস্থানগুলো ভ্রমণ করে শঙ্করদেব হিন্দুধর্মের মূল শাস্ত্রগুলো গভীরভাবে অধ্যয়ন করেছিলেন। তিনি একেশ্বরবাদী ছিলেন। তাঁর ভক্তিবাদ আসামের সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যে প্রসারলাভ করে। ভক্তিবাদের ধারণা দিয়ে তিনি অসমিয়া সমাজটি নতুন করে গড়ে তোলেন। অসমিয়া সামাজিক জীবন সংঘবদ্ধ করতে তিনি সমতা, সহিষ্ণুতা ও অহিংসার বাণী প্রচার করেছিলেন। এই সকল কারণে শঙ্করদেবের ধর্মমত জনপ্রিয় হয়।

প্রশ্ন ৫। অসমিয়া সংস্কৃতিতে শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের অবদান লেখ।

উত্তরঃ অসমিয়া সংস্কৃতিতে শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের অবদান অপরিসীম। অসমিয়া ভাষা ও সংস্কৃতির উৎকর্ষ সাধনের জন্য তিনি আজীবন প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। সংস্কৃত ভাষা থেকে অসমিয়া ভাষায় বেশ কয়েকটি গ্রন্থ অনুবাদ করে তিনি অসমিয়া ভাষা সমৃদ্ধ করেছেন। অঙ্কীয়া নাট ও ভাওনা রচনা করে তিনি অসমিয়া কলা-সংস্কৃতিতে নতুন ধারার সংযোজন ঘটান। নামঘর স্থাপনের মাধ্যমে তিনি আসামে সংগীত ও নাট্যচর্চার কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন। সামাজিক একতা ও সম্প্রীতির সেতু সুদৃঢ় করার জন্য তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচীর ব্যবস্থা করেছিলেন। শঙ্করদেব শুধু ধর্ম প্রচারকই নন, তিনি হলেন প্রকৃত অর্থে অসমিয়া জাতির কাণ্ডারি। অসমিয়া ভাষা ও কলা-সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠাতা।

প্রশ্ন ৬। আজান পিরের বিষয়ে একটি টীকা লেখ।

উত্তরঃ আজান পির মুসলমান সুফিবাদের একজন গুরু। তাঁর প্রকৃত নাম শাহ মিলন। তিনি ১৭ শতকে আসামে এসেছিলেন। তিনি মুসলমানগণকে আজান দিয়ে ভগবানের প্রার্থনা করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন যার জন্য তিনি আজান পির নামে জনপ্রিয় ছিলেন। অহোম রাজা গদাধর সিংহ আজান পিরকে শাস্তি প্রদান করেছিলেন। কিন্তু পরে তাঁর অসাধারণ ঐশ্বরিক শক্তির কথা জানতে পেরে ১৬৮৬ খ্রিস্টাব্দে পিরকে শাস্তি হতে রেহাই দিয়ে তাঁর পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। শিবসাগর জেলা সদর হতে ২২ কিলোমিটার দূরে শরাগুড়িতে আজান পিরের দরগাহ আছে। অসমিয়া ভাষায় জিকির গীতসমূহ রচনাকারী তিনিই প্রথম মুসলমান ধর্মগুরু।

প্রশ্ন ৭। মধ্যযুগে আসামের রাজধানী গড়গাঁওয়ের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তরঃ অহোম রাজা চুকেন মুং গড়গাঁও-এ অহোম রাজ্যের রাজধানী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সিহাবুদ্দিন তালিস তাঁর ‘ফতিয়াহ-ই-ইব্রিয়াহ’ নামক গ্রন্থে এই রাজধানী নগর গড়গাঁও – এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদান করেছেন।

গড়গাঁও নগরের চারিদিকে চারখানা পাথরের দরজা আছে। প্রতিটি দরজা হতে রাজপ্রাসাদের দূরত্ব তিন কিলোমিটার। নগরের চারিদিকে প্রাচীরের পরিবর্তে দুই কিলোমিটার বা ততোধিক প্রস্থবিশিষ্ট সারি সারি বাঁশগাছ লাগানো আছে। কিন্তু নগরের ভিতরে বাড়িগুলি শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সাজানো নয়। ঘরবাড়িগুলি যত্রতত্র এলোমেলোভাবে তৈরি। প্রত্যেক বাড়ির সামনে একটি ফুলবাগান আছে। রাজপ্রাসাদের নিকটে দিঘৌ নদীর দুই পারে অসংখ্য ঘর আছে।

সাধারণভাবে আমরা দেখতে পাই যে গড়গাঁও নগরখানি গোলাকৃতি, বিস্তৃত ও বহু গ্রামের একত্রিত সমষ্টি। রাজার রাজসভা বসার ঘরটিকে চোলোং ঘর বলা হত। তা দৈর্ঘ্যে ১২০ হাত ও প্রস্থে ৩০ হাত ছিল। ঘরটি নির্মিত ছিল ৬৬টি খুঁটির উপর। প্রতিটি খুঁটি প্রায় ৪ হাত গোলাকার। প্রতিদিন ১২,০০০ মানুষ কাজ করে অট্টালিকাখানা তৈরি করতে এক বছর সময় লেগেছিল।

প্রশ্ন ৮। অহোম রাজত্বকালে আসামের সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে কি জানো?

উত্তরঃ অহোম রাজত্বকালে অহোম সমাজে উদার সমাজ নীতি প্রচলিত ছিল। তারা জাতিভেদ মানতেন না। এক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অপর সম্প্রদায়ের বিবাহাদি সম্পন্ন হত। কোন কোন সামাজিক বিষয়ে অহোমদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল উদার। খাদ্যাদি সম্বন্ধেও কোন বাধানিষেধ ছিল না। অহোমগণ মাছ, মাংস প্রভৃতি সকল খাদ্য অন্যান্য জাতির সহিত একত্রে গ্রহণে কোন বাধা ছিল না। অহোম সমাজে নারীর স্থান ছিল উচ্চে। পর্দা প্রথার বিশেষ প্রচলন ছিল না। প্রাচীন অহোম সমাজে খেলাধূলাও প্রচলিত ছিল।

প্রশ্ন ৯। অহোম রাজত্বকালে আসামের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে কি জানো?

উত্তরঃ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অহোমদের অবস্থা যথেষ্ট স্বচ্ছল ছিল। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে তারা স্বনির্ভর ছিল। অহোমদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষি। বস্ত্র শিল্প, রঞ্জন শিল্প, মৃৎশিল্প, ধাতুশিল্প হাতির দাঁতের শিল্প, বাঁশ ও বেত শিল্পে সে যুগে আসাম বেশ নিপুণতা লাভ করেছিল। সেই যুগে আসামে, এণ্ডি, মুগা, পাট প্রভৃতি দ্বারাও কাপড় প্রস্তুত করা হত। তাছাড়া নানা ধরনের মাটির বাসনও প্রস্তুত করা হত। পাট শিল্পেও আসাম উন্নত ছিল। অহোম রাজত্বে সিকি, আধুলি প্রভৃতি ধাতুর মুদ্রার প্রচলন ছিল। ভারতের অন্যান্য রাজ্য ছাড়াও চীন, তিববত, ভূটান প্রভৃতি দেশের সঙ্গে অহোম রাজ্যের ব্যবসা-বাণিজ্য চলত। বঙ্গদেশের সঙ্গেও অহোমদের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রচলিত ছিল।

প্রশ্ন ১০। অহোম রাজত্বকালে আসামে কৃষির অবস্থা সম্পর্কে কি জানো?

অথবা,

আহোম শাসনকালে কৃষকদের স্থান কেমন ছিল?

উত্তরঃ অহোমদের প্রধান জীবিকা ছিল কৃষি। ব্রাহ্মণ ছাড়া সকলেই কৃষিকাজ করতেন। কৃষি ছিল একটি সম্মানজনক বৃত্তি। পাইকের সাহায্যে কৃষিকাজ করানো হত। সামরিক বিভাগে নিযুক্ত ১৫–৫০ বৎসরের প্রত্যেকটি লোককে ‘পাইক’ বলা হত। তারা বিনা করে ক্ষেতের জমি ভোগ করত। তবে জমির পর তাদের কোন স্বত্ব ছিল না। পাইকরা বৎসরে ৩-৪ মাস রাজার কাজ করে অন্য সময় করমুক্ত জমিতে কৃষিকার্য করত। পাইকের বয়স ৫০ বৎসর হলে তার জমি অন্য পাইককে দেওয়া হত। অহোম যুগে আসামে ধান, পাট, গম, শস্য প্রভৃতি প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হত। যুদ্ধবিগ্রহের সময় শস্য উৎপাদনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হত।

প্রশ্ন ১১। পাইক প্রথা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

অথবা,

‘পাইক প্রথা’ বলতে কি বোঝায়?

উত্তরঃ অহোম যুগে সামরিক বিভাগে ১৫-৫০ বৎসরের প্রত্যেকটি লোককে ‘পাইক’ বলা হত। রাজেশ্বর সিংহের সময় তিনজন পাইক নিয়ে একটি ‘গোট’ সৃষ্টি হয়। এদের মূল, দেরাল এবং তেরাল বলা হত। তারা পালাক্রমে রাজগৃহে ৩/৪ মাস বেগার খাটত। পাইকরা বিনা করে ক্ষেতের জমি ভোগ করত। পাইক প্রথার ফলে সৈন্যদের চাহিদাও পূরণ হত। ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে মোমাই তামুলী পাইকদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন। তিনি বিশ জন পাইকের উপর এক জন বরা, একশ জন পাইকের উপর এক জন শইকীয়া, একহাজার জন পাইকের উপর এক জন হাজারিকা, তিন হাজারের উপর এক জন রাজখোয়া এবং ছয় হাজারের উপর এক জন ফুকন নিযুক্ত করেছিলেন। অহোম রাজ্যে নিয়মিত সৈন্যবাহিনী না থাকাতে পাইক প্রথা দ্বারা যুদ্ধ চালানো হত। পাইকরা করমুক্ত জমি ভোগ করলেও জমির উপর তাদের কোন স্বত্ব ছিল না। পাইকের বয়স ৫০ বৎসর হলে তার জমি অন্য পাইককে দেওয়া হত।

প্রশ্ন ১২। অহোম রাজত্বে আসামে নারীজাতির স্থান কিরূপ ছিল?

উত্তরঃ অহোম সমাজে নারীর স্থান উচ্চে ছিল। পর্দা প্রথার কোন প্রচলন ছিল না। মহিলাদের লেখাপড়া শিখতে কোন বাধা ছিল না। বররাজা ফুলেশ্বরী, সর্বেশ্বরী, অম্বিকা প্রভৃতি রমণীগণ সেই যুগে রাজকার্য পর্যন্ত চালিয়েছিলেন। মূলা-গাভরু, রাধা, রুক্মিণী যুদ্ধক্ষেত্রেও পারদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। অহোম রমণীগণ উৎকৃষ্ট ধরনের ‘বোয়া-কাটার’ কাজ জানতেন। যারা তা জানত না তাদের ‘থুপুরী’ বলে উপহাস করা হত এবং এইরূপ রমণীর বিবাহ হত না। মন্দিরে যে সকল মহিলা কাজ করত তাদের ‘নটী’ বলা হত। তা সম্মানজনক বলে গণ্য হত।

প্রশ্ন ১৩। অহোমদের স্থাপত্য শিল্প সম্বন্ধে কি জানো লেখ।

উত্তরঃ অহোমরা প্রথমে কাঠের ঘর প্রস্তুত করেছিল। পরবর্তীকালে তারা ইটের ঘর প্রস্তুত করেন। ইটগুলি ছিল লম্বা ও বিভিন্ন কোণী। অহোম যুগের বিখ্যাত মন্দিরসমূহের অন্যতম হল গৌরী সাগরের তীরে দেবীদোল, জয়দোল, উমানন্দ মন্দির, কামাখ্যা মন্দির, কামেশ্বর মন্দির, জনার্দন মন্দির, প্রতাপ সিংহের আমলের দেরগাঁও মন্দির, বিশ্বনাথের শিব মন্দির, রাজেশ্বর সিংহের আমলের তৈরি নবগ্রহ মন্দির, দীর্ঘেশ্বরী মন্দির, বশিষ্ঠো-শ্রমের মন্দির, কমলেশ্বরের সময়ে তৈরি ছত্রাকার মন্দির। তাছাড়া গড়গাঁওয়ের কারেং ঘর, রংপুরের রং ঘর, তলাতল মন্দির অহোম স্থাপত্য শিল্পের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। রুদ্র সিংহের সময় হতে অহোম স্থাপত্য শিল্পে মোগল-পারসি স্থাপত্যের নিদর্শন দেখা যায়।

প্রশ্ন ১৪। শঙ্করদেব প্রচারিত ধর্মকে ‘ভাগবতী’ ধর্ম কেন বলা হয়? তিনি সত্রঘর এবং নামঘরসমূহ কেন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?

উত্তরঃ শঙ্করদেব প্রবর্তিত ধর্মকে ভাগবতী বৈষ্ণবধর্ম বা এককারণ ধর্ম বলা হয়। কারণ এই ধর্মের মূল কথা হল ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়। তাঁর অভিমত ছিল বিষ্ণুর উপর নিজেকে সম্পূর্ণরূপে সমর্পণ করা। নাম-কীর্তনের মাধ্যমে নিজের অন্তর উজাড় করে বৈষ্ণবধর্মে নিজেকে বিলীন করে দেওয়াই হল শঙ্করদেবের ধর্মের মূল কথা।

বৈষ্ণবধর্ম অর্থাৎ একশরণ বা ভাগবতী ধর্ম প্রচারের জন্য শঙ্করদেব সত্র নির্মাণ করেন। নামঘর স্থাপনের মাধ্যমে তিনি আসামে সংগীত ও নাট্যচর্চার কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন।

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। রাল্ফ ফিট্স্ কে ছিলেন? আসাম সম্পর্কে তার প্রদত্ত তথ্যাদি সংক্ষেপে বর্ণনা কম।

উত্তরঃ রাল্ফ ফিস্ একজন যেসুইট মিশনারী ছিলেন। তিনি ১৬ শতকের আসামের সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে বহু সরকারি তথ্য প্রদান করেছেন।

রাল্ফ ফিট্স বলেছিলেন যে বঙ্গদেশের টান্দ্রা হতে উত্তরদিক হয়ে কোঁচ দেশ পর্যন্ত আসতে তাঁর ২৫ দিন সময় লেগেছিল। কোঁচ দেশের রাজা অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিলেন। তাঁর নাম শুকেল কাউস (শুক্ল কোঁচ বা শুক্ল-ধ্বজ)। তাঁর রাজ্যখানি অতিবৃহৎ ছিল। সম্পূর্ণ রাজ্যটি বাঁশের খুঁটি বেতে মাটিতে পুঁতে বেষ্টন করে রাখা হত। শত্রুর আক্রমণ হলে নদীর বাঁধ কেটে আক্রান্ত স্থানসমূহ প্লাবিত করে রাখা হত যাতে মানুষ বা ঘোড়া অতিক্রম করতে না পারে। যুদ্ধ হলে তারা জলে বিষ মিশিয়ে দিত। এতে অনেক কস্তুরী পাট এবং কার্পাস কাপড় উৎপন্ন হয়। রাল্ফ-এর মতে মানুষের কানসমূহ অদ্ভূত ধরনের বৃহৎ ছিল। প্রায় এক বিঘৎ লম্বা ছিল। কেঁাঁচ রাজ্যে সকল মানুষ হিন্দু ছিল। তারা কোন পশু বধ করত না। ভেড়া, ছাগল, কুকুর, বিড়াল, চড়ুই ও সকল প্রকার জীবিত প্রাণীর জন্য এখানে চিকিৎসালয় ছিল। কোন প্রাণী যখন বৃদ্ধ ও পঙ্গু হয়ে পড়ে তখন এইসকল হাসপাতালে এদের রাখা হত। রাল্ফ এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন যে ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কোঁচ রাজ্যের মহারাজা নরনারায়ণ একজন পরোপকারী, দয়ালু ও গুণী রাজা ছিলেন।

প্রশ্ন ২। সিহাবুদ্দিন তালিস কে ছিলেন? আসাম সম্পর্কে তার প্রদত্ত তথ্যাদি সংক্ষেপে আলোচনা কর।

উত্তরঃ সিহাবুদ্দিন তালিস একজন পরিব্রাজক ও ঐতিহাসিক ছিলেন। মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের নির্দেশে বঙ্গদেশের শাসক মিরজুমলা আসামের বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। মিরজুমলা তার আসাম আক্রমণ অভিযানে সিহাবুদ্দিন তালিস নামে একজন কালানুক্রমিক বিবরণকারীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন।

সিহাবুদ্দিন তালিস তার ভ্রমণকাহিনি ‘ফাতিয়াহ-ই-ইব্রিয়াহ’-তে সেই সময়কার আসামের বিষয়ে একটি বিস্তৃত বিবরণ লিখেছেন। তার বিবরণ অনুযায়ী দেশখানি বিশাল ও দুর্গম ছিল। তা পশ্চিম হতে পূর্বদিকে ২০০ মাইল দীর্ঘ ছিল। বৃহৎ নদী ব্রহ্মপুত্রের উত্তর তীরকে ‘উত্তর কোল’ ও দক্ষিণ তীরকে ‘দক্ষিণ কোল’ বলা হত। উত্তর তীর জনবসতিপূর্ণ, উর্বর ও ক্ষেতকৃষিতে ভরপুর ছিল। এর জলবায়ু বিদেশিদের উপযুক্ত ছিল না। বৎসরের আটমাসই বৃষ্টিপাত হত। নদীতীরের জলবায়ু কিছুটা ভালো ছিল। ধান ছিল প্রধান শস্য। এখানে নানা ধরনের ফলমূল, যেমন—আনারস, লেবু ও কুশিয়ার পাওয়া যেত। আমসমূহ পোকা-আক্রান্ত ছিল। নারিকেল বাগান কদাচিৎ দেখা যায়। নিমগাছের খুবই আকাল ছিল। স্থানীয় মানুষ কলাগাছ কেটে রৌদ্রে শুকিয়ে এক প্রকার বস্তু তৈরি করত যা নিম হিসাবে ব্যবহার করা হত। তালিস উল্লেখ করেছিলেন যে তখনকার দিনে আসামে হাতি এবং নানা প্রকার পক্ষী যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যেত। আসামের জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থা অস্বাভাবিক ছিল।

রাজা ও রাজতন্ত্র প্রসঙ্গে সিহাবুদ্দিন লিখেছিলেন—সেরা বলে রাজা অত্যন্ত দাম্ভিক ও অহংকারী ছিলেন। তাঁর উত্তরসূরীগণ রক্তপাতের প্রতি অধিক আসক্ত ছিল। সামান্য দোষে একটি পরিবারকে শেষ করে দিত।

এই দেশের মানুষ একই ধর্ম গ্রহণ করেনি। খাওয়া-দাওয়া ও জাতিবিশ্বাসে তাদের কোন বাধা ছিল না। তারা ঘি খেত না। নরমাংস ব্যতীত সকল প্রকার মাংস তারা খেত। এখানকার মুসলমান মানুষকে স্থানীয় আচার-ব্যবহার ও রীতিনীতি গ্রহণ করতে দেখা যায়। এখানকার মানুষ নদী হতে বালি সংগ্রহ করে তা ধৌত করে সোনা সংগ্রহ করত। সোনার মান এটি ছিল না।

আসামে দুর্ধর্ষ পদাতিক সৈন্য ছিল। এখানে অসংখ্য যুদ্ধের নৌকা দেখা যায়। অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে দা, কুঠার, তির-ধনুক, তরোয়াল, লাঠি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। রাজা ও অভিজাতগণকে তাঁদের পত্নী, দাসদাসী ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কবর দেওয়া হত। বহু মূল্যবান অলংকার, খাদ্যবস্তু, বাসনপত্র ইত্যাদি শবাধারের মধ্যে রাখা হত।

প্রশ্ন ৩। অহোম রাজ্যের পতনের প্রধান কারণসমূহ উল্লেখ কর।

উত্তরঃ নিম্নলিখিত কারণে অহোম রাজ্যের পতন ঘটেছিল:

(ক) সব জাতির প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী কালক্রমে অবনতিগ্রস্ত হয় এবং অহোমদের ক্ষেত্রেও তা ঘটেছিল।

(খ) পরবর্তী অহোম রাজাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা অহোম সাম্রাজ্যের পতনের জন্য বিশেষভাবে দায়ী।

(গ) অহোম রাজাগণের অক্ষমতা এবং বিলাসিতার সুযোগে অভিজাত শ্রেণী প্রবল পরাক্রান্ত হয়ে ওঠে। তাদের অত্যাচারে জনজীবনে অসন্তোষ ও বিক্ষোভ দেখা দেয় যা অহোম সাম্রাজ্যের ভিত্তি শিথিল করে দেয়।

(ঘ) মোগলদের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুদ্ধবিগ্রহের ফলে অহোম রাজকোষের শূন্যতা অহোম রাজ্যের অবনতির জন্য অনেকাংশে দায়ী।

(ঙ) অহোম রাজের অবনতি ও পতনের মূল কারণ প্রকৃতপক্ষে অহোম জাতির চরিত্রের অবনতি ও যোগ্যতার হ্রাস।

(চ) অহোম সামরিক বাহিনীর দুর্বলতা ও অক্ষমতা অহোম রাজ্যের পতনের জন্য বহুলাংশে দায়ী।

প্রশ্ন ৪। বুরঞ্জী গ্রন্থসমূহ আসামের ইতিহাসের প্রকৃত ও নির্ভরশীল উপাদান বলে তুমি মনে কর কি?

অথবা,

মধ্যযুগীয় অসমের ইতিহাসের উৎস হিসাবে ‘বুরঞ্জী’ গ্রন্থসমূহের গুরুত্ব আলোচনা কর।

উত্তরঃ অহোমদের আগমনের পর আসামে ‘বুরঞ্জী’ বা ইতিহাস লেখার নিয়ম প্রচলিত হয়। বুরঞ্জীসমূহ অহোমদের এক বহুমুল্য অবদান। আসামের রাজাগণ কালানুক্রমিক বিবরণ লিখতে প্রেরণা যুগিয়েছিলেন। কারণ এইগুলি একটি ঘটনার বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রদান করে যা মূল্যবান ও নির্ভরযোগ্য বলে গণ্য করা হয়। উল্লেখ্য বহু অহোম পরিবারে বুরঞ্জী লেখার নিয়ম প্রচলিত ছিল।

বুরঞ্জীসমূহকে ‘জ্ঞানের ভাণ্ডার’ আখ্যা দেওয়া হয়; অর্থাৎ তা অজানা কথা জানাটাকে বোঝায়। বুরঞ্জী লিপিবদ্ধ করা ঘটনাসমূহ, তারিখ ও কালানুক্রমিক তারিখসমূহ, শিলালিপি, তাম্রপত্র, মুদ্রা প্রভৃতির বর্ণনা প্রদান করে। কিছুসংখ্যক বুরঞ্জীতে রাজপুরুষগণের ঘনিষ্ঠ কথাবার্তা, রাজদরবারের ঘটনা ও বিচার-সম্পর্কীয় গোপন নথিপত্রের বিবরণ থাকে। বুরঞ্জী কেবলমাত্র রাজা ও রাজবংশের বিবরণই নয়, সেই সময়ের সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিষয়েও অনেক তথ্য সংগ্রহ করে।

(গ) ঔপনিবেশিকতাবাদ ও গ্রামাঞ্চল

প্রথম খণ্ড

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। আসামের শেষ অহোম রাজা কে ছিলেন?

উত্তরঃ পুরন্দর সিংহ।

প্রশ্ন ২। কত খ্রিস্টাব্দে পুরন্দর সিংহের সিংহাসনচ্যুতি ঘটে?

উত্তরঃ ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৩। কোন্ সন্ধির ফলে আসামে ব্রিটিশ শাসন আরম্ভ হয়?

উত্তরঃ ইয়াণ্ডাবুর সন্ধি।

প্রশ্ন ৪। ইয়াণ্ডাবুর সন্ধি কত খ্রিস্টাব্দে স্বাক্ষরিত হয়?

উত্তরঃ ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৫। দেশপ্রেমিক ইউ তিরুৎ সিং কোন্ রাজ্যের লোক ছিলেন?

উত্তরঃ খাসিয়া রাজ্যের।

প্রশ্ন ৬। টিকেন্দ্রজিৎ কোন্ রাজ্যের বীর সেনাপতি ছিলেন?

উত্তরঃ মণিপুর।

প্রশ্ন ৭। গোমধর কোঁয়র কোন রাজ্যের বিদ্রোহী নেতা ছিলেন?

উত্তরঃ আসাম।

প্রশ্ন ৮। কত খ্রিস্টাব্দে শিলং আসামের রাজধানী হয়?

উত্তরঃ ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৯। আসামে সিপাহী বিদ্রোহের অন্যতম নায়ক কে ছিলেন?

উত্তরঃ মণিরাম দেওয়ান।

প্রশ্ন ১০। মণিরাম দেওয়ানের ফাঁসি কত খ্রিস্টাব্দে হয়?

উত্তরঃ ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ২৮। NEFA-র বর্তমান নাম কি?

উত্তরঃ অরুণাচল প্রদেশ।

প্রশ্ন ২৯। ইয়াণ্ডাবুর সন্ধি কবে স্বাক্ষর করা হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৩০। কোন্ খ্রিস্টাব্দে উজান আসাম ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত করা হয়?

উত্তরঃ ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৩১। প্রথম অসমীয়া ছায়াছবি ‘জয়মতী’ কে প্রযোজনা করেছিলেন?

উত্তরঃ জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা।

প্রশ্ন ৩২। আসামে কোন্ খ্রিস্টাব্দে চা আবিষ্কার হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮২৩ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৩৩। পুরন্দর সিংকে বৎসরে কত টাকা কর হিসাবে শোধ করতে হয়েছিল?

উত্তরঃ বার্ষিক ৫০,০০০ টাকা।

প্রশ্ন ৩৪। আসামের প্রথম ইংরেজি স্কুলটির নাম কি ছিল?

উত্তরঃ গুয়াহাটী মিশনারি।

প্রশ্ন ৩৫। কার নামে আসামে প্রথম চিকিৎসা বিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছিল?

উত্তরঃ বেরী হোয়াইট।

প্রশ্ন ৩৬। ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা প্রথম অহোম রাজার নাম লেখ।

উত্তরঃ গোমধর কোঁয়র।

প্রশ্ন ৩৭। মটক রাজার উপাধি কি ছিল?

উত্তরঃ বড় সেনাপতি।

প্রশ্ন ৩৮। মণিরাম দেওয়ানকে কোন্ খ্রিস্টাব্দে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৩৯। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে অসমে সংঘটিত হওয়া কৃষক বিদ্রোহের জনপ্রিয় নামটি কি?

উত্তরঃ ফুলগুড়ি ধাওয়া।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অহোম রাজ্যের পতনের যে-কোন দুটি কারণ লেখ।

উত্তরঃ অহোম রাজ্যের পতনের দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) পরবর্তী অহোম রাজাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা অহোম সাম্রাজ্যের পতনের একটি প্রধান কারণ।

(খ) মোগলদের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুদ্ধবিগ্রহের ফলে অহোম রাজকোষের শূন্যতা অহোম রাজ্যের পতনের মূল কারণ।

প্রশ্ন ২। ইয়াণ্ডাবুর সন্ধির দুটি শর্ত লেখ।

উত্তরঃ ইয়াণ্ডাবুর সন্ধির দুটি শর্ত নিম্নরূপ:

(ক) বর্মী রাজা অহোম, কাছাড়ী, জয়ন্তিয়া ও মণিপুর রাজ্যের উপর তার অধিকার ত্যাগ করেন।

(খ) এই সন্ধির ফলে আসামে বর্মী শাসনের অবসানক্রমে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রশ্ন ৩। অহোম সমাজে কয় শ্রেণীর লোক ছিল এবং কি কি?

উত্তরঃ অহোম সমাজে তিন শ্রেণীর লোক ছিল—

(ক) অভিজাত।

(খ) কৃষক। ও 

(গ) দাস।

প্রশ্ন ৪। আসামে প্রাক্-ব্রিটিশবিরোধী যে-কোন দুটি বিদ্রোহের উল্লেখ কর।

উত্তরঃ আসামে প্রাক-ব্রিটিশবিরোধী দুটি বিদ্রোহ হল—

(ক) গোমধর কোঁওরের বিদ্রোহ। এবং 

(খ) খাসি বিদ্রোহ।

প্রশ্ন ৫। আসামে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ বা সিপাহী বিদ্রোহের যে-কোন দুটি কারণ লেখ।

উত্তরঃ আসামে সিপাই বিদ্রোহের দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে আসামে ব্রিটিশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর হতেই ইংরেজ – বিরোধী নানা ষড়যন্ত্র গড়ে উঠতে থাকে।

(খ) অভিজাত সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্রিটিশ-বিরোধী অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে।

প্রশ্ন ৬। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে আসামে দুইজন শহীদের নাম লেখ।

অথবা,

সিপাহী বিদ্রোহে আসামের দুইজন শহীদের নাম লেখ।

উত্তরঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহে বা সিপাহী বিদ্রোহে আসামের দুইজন শহীদ হলেন- 

(ক) মণিরাম দেওয়ান। ও 

(খ) পিয়লী বরুয়া।

প্রশ্ন ৭। আসামে সিপাহী বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার দুটি কারণ লেখ।

উত্তরঃ আসামে সিপাহী বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) আসামে ব্রিটিশ সরকার মণিরাম দেওয়ানের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন।

(খ) আসামের সাধারণ মানুষ বিদ্রোহের কারণ হৃদয়ঙ্গম করতে পারেনি।

প্রশ্ন ৮। ঊনবিংশ শতকে আসামে নবজাগরণ বা রাজনৈতিক চেতনা বিকাশে দুটি সামাজিক সংস্থার নাম উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকে আসামে নবজাগরণ বা রাজনৈতিক চেতনা বিকাশে দুটি সামাজিক সংস্থার নাম – 

(ক) রাইজ মেল। এবং 

(খ) সার্বজনীন সভা।

প্রশ্ন ৯। ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ফুলগুড়ি যুদ্ধের দুটি কারণ লেখ।

উত্তরঃ ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ফুলগুড়ি যুদ্ধের দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক পপি চাষ নিষিদ্ধকরণ।

(খ) ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক পান-সুপারির উপর কর আরোপ।

প্রশ্ন ১০। ডেভিড স্কট ও রবার্টসন কোন দেশের লোক ছিলেন?

উত্তরঃ ডেভিড স্কট ও রবার্টসন ইংল্যান্ডের লোক ছিলেন।

প্রশ্ন ১১। ঊনবিংশ শতাব্দীতে সংগঠিত ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আসামে দুটি উপজাতি বিদ্রোহ উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতাব্দীতে সংগঠিত ব্রিটিশের বিরুদ্ধে আসামে দুটি উপজাতি। বিদ্রোহ—

(ক) জয়ন্তিয়া বিদ্রোহ (১৮৬০–৬২ খ্রিস্টাব্দ)। এবং 

(খ) নাগা বিদ্রোহ (১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দ)।

প্রশ্ন ১২। আসাম অ্যাসোসিয়েশনের যে-কোন দুটি লক্ষ্য লেখ।

উত্তরঃ আসাম অ্যাসোসিয়েশনের দুটি লক্ষ্য নিম্নরূপ:

(ক) জনগণকে রাজনৈতিক সচেতন করে তোলা।

(খ) বেআইনি আফিং ব্যবসা নিষিদ্ধকরণের জন্য দাবি জানানো।

প্রশ্ন ১৩। প্রথম গোলটেবিল বৈঠক কখন হয়? এই বৈঠকে আসামের প্রতিনিধি কে ছিলেন?

উত্তরঃ প্রথম গোলটেবিল বৈঠক ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে হয়। আসামের প্রতিনিধি ছিলেন চন্দ্রধর বরুয়া।

প্রশ্ন ১৪। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে আসামের দুইজন মহিলা শহীদের নাম লেখ।

উত্তরঃ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে আসামের দুইজন মহিলা শহীদ হলেন— 

(ক) কনকলতা। ও 

(খ) ডোগেশ্বরী দেবী।

প্রশ্ন ১৫। ক্যাবিনেট মিশনের ‘সমষ্টি পরিকল্প’ অনুযায়ী আসামকে কোন্ ভাগে ও কোন প্রদেশের সংগে সংযুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়?

উত্তরঃ ‘গ’ ভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে।

প্রশ্ন ১৬। স্বদেশী আন্দোলনে আসামের দুইজন নেতার নাম লেখ।

উত্তরঃ স্বদেশী আন্দোলনে আসামের দুইজন নেতা হলেন –

(ক) বিষ্ণুরাম মেধি। এবং

(খ) বিপিন চন্দ্র পাল।

প্রশ্ন ১৭। অসহযোগ আন্দোলনে আসামের দুইজন নেতার নাম লেখ।

উত্তরঃ অসহযোগ আন্দোলনে আসামের দুইজন নেতা হলেন—

(ক) তরুণরাম ফুকন। এবং 

(খ) নবীনচন্দ্র বরদলৈ।

প্রশ্ন ১৮। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে আসামের দুইজন নেতার নাম লেখ।

উত্তরঃ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে আসামের দুইজন নেতা হলেন-

(ক) জ্যোতিপ্ৰসাদ আগরওয়ালা। এবং 

(খ) মহেন্দ্র নাথ হাজারিকা।

প্রশ্ন ১৯। ঊনবিংশ শতাব্দীতে আসামে জাতীয় চেতনা বিকাশে অবদানকারী দুটি পত্রিকার নাম লেখ।

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতাব্দীতে আসামে জাতীয় চেতনা বিকাশে অবদানকারী দুটি পত্রিকার নাম হল— 

(ক) অরুণোদই। এবং 

(খ) জোনোকী।

প্রশ্ন ২০। আসামে ব্রিটিশ শাসনের যে-কোন দুটি ফল লেখ।

উত্তরঃ আসামে ব্রিটিশ শাসনের দুটি ফল নিম্নরূপ:

(ক) ব্রিটিশ শাসনের সর্বশ্রেষ্ঠ ফল হল আসামের দ্রুত বৈষয়িক উন্নতি।

(খ) ব্রিটিশ শাসনে পাশ্চাত্য ভাবধারা প্রবাহের মাধ্যমে আসামে এক নূতন সমাজ গঠন আরম্ভ হয়।

প্রশ্ন ২১। ১৮১৯ ও ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মানেরা যে কয়জন অহোমকে অসমের রাজা করেছিল তাঁদের নাম লেখ।

উত্তরঃ ১৮১৯ ও ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মানেরা যে কয়জন অহোমকে অসমের রাজা করেছিলেন তাঁরা হলেন— 

(ক) চন্দ্রকান্ত সিং। এবং 

(খ) যোগেশ্বর সিং।

প্রশ্ন ২২। ব্রিটিশের জয়ন্তিয়া রাজ্য অন্তর্ভুক্ত করার দুটি কারণ প্রদান কর।

উত্তরঃ ব্রিটিশের জয়ন্তিয়া রাজ্য অন্তর্ভুক্ত করার দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) জয়ন্তিয়া রাজা ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাব পোষণ করতেন।

(খ) জয়ন্তিয়া রাজার আদেশে গোভার রাজা জয়ন্তেশ্বরীর নিকট বলি দেবার জন্য চারজন ব্রিটিশ প্রজাকে অপহরণ করে ও তিনজনকে বলি দেয়।

প্রশ্ন ২৩। ব্রিটিশদের আসামে আফিং চাষ বন্ধ করার দুটি কারণ উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ব্রিটিশদের আসামে আফিং চাষ বন্ধ করার দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) ব্রিটিশদের মজুদকৃত আফিং বিক্রি করার জন্য।

(খ) ব্রিটিশগণ নিজেরা আফিং চাষ করার জন্য আসামের আফিং চাষিদের আফিং চাষ বন্ধ করে।

প্রশ্ন ২৪। ১৮৫৮ ও ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আসামে জারি করা দুই প্রকার করের উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ১৮৫৮ ও ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আসামে জারি করা দুই প্রকার কর হল— 

(ক) লাইসেন্স কর। এবং 

(খ) পেশা কর।

প্রশ্ন ২৫। ব্রিটিশের খাসি রাজ্য অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে দুটি কারণ লেখ।

উত্তরঃ ব্রিটিশের খাসি রাজ্য অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) উপজাতি এলাকায় ব্রিটিশ আধিপত্য স্থাপন করা।

(খ) ব্রহ্মপুত্র ও সুরমা উপত্যকার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা।

প্রশ্ন ২৬। কোন্ খ্রিস্টাব্দে এবং কোথায় আসামের প্রথম ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয় স্থাপিত হয়?

উত্তরঃ ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে গুয়াহাটীতে প্রথম ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয় স্থাপিত হয়।

প্রশ্ন ২৭। ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে আসামে প্রবর্তিত দুটি করের নাম লেখ।

উত্তরঃ ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে আসামে প্রবর্তিত দুটি কর হল— 

(ক) লাইসেন্স কর। এবং 

(খ) আয়কর।

প্রশ্ন ২৮। কাদের দেওলীয়া পাইক বলা হত?

উত্তরঃ যে সকল পাইক মন্দির বা কোন দেবস্থানের কার্যে নিয়োজিত ছিল তাদের দেওলীয়া পাইক বলা হত।

প্রশ্ন ২৯। কোন্ সন্ধি অনুযায়ী এবং কখন আসামে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

উত্তরঃ বর্মীরাজা ও ইংরেজের মধ্যে ইয়াণ্ডাবুর সন্ধি অনুযায়ী ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে আসামে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রশ্ন ৩০। পুরন্দর সিংহকে কি শর্তে কোন্ কমিশনারের শাসনকালে সিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়?

উত্তরঃ ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের ২৮শে এপ্রিল কমিশনার রবার্টসনের শাসনকালে নিম্নলিখিত শর্ত অনুযায়ী আসামের সিংহাসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়:

(ক) বার্ষিক ৫০ হাজার টাকা কর হিসাবে ইংরেজ সরকারকে দিতে হবে।

(খ) দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করা হবে এবং কোন বিদেশি রাজার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা যাবে না।

প্রশ্ন ৩১। ঊনবিংশ শতকের অসমের কৃষক বিদ্রোহের দুটি কারণ দেখাও।

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকের অসমের কৃষক বিদ্রোহের কারণগুলি নিম্নরূপ:

(ক) কৃষকদের ভূমিকর বৃদ্ধি।

(খ) প্রচলিত করসমূহ ছাড়াও স্ট্যাম্প কর, লাইসেন্স কর, আয়কর প্রভৃতি নূতন কর আরোপিত হয়েছিল।

প্রশ্ন ৩২। অসম ছাত্র সম্মিলনের গঠন কবে হয়েছিল এবং প্রথম অধিবেশনের সভাপতি কে ছিলেন?

উত্তরঃ ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে অসম ছাত্র সম্মিলন গঠিত হয়েছিল। লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। পুরন্দর সিংহের সিংহাসনে পুনঃস্থাপন ও সিংহাসন – চ্যুতি সম্বন্ধে কি জানো?

অথবা,

পুরন্দর সিংহ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ পুরন্দর সিংহ শেষ স্বাধীন অহোম রাজা। তিনি ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি বর্মী কর্তৃক সিংহাসনচ্যুত হন। ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে ইয়াণ্ডাবুর সন্ধির মাধ্যমে বর্মী শাসনের অবসান ঘটে এবং সমগ্র আসামে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অহোম অভিজাতদের মধ্যে অসন্তোষ ও নানা বিশৃঙ্খলা লক্ষ্য করে ডেভিড স্কট সমগ্র উত্তর-পূর্ব আসামকে কোন অহোম রাজপুত্রকে প্রত্যর্পণ করবার সুপারিশ করেন। স্কটের পর রবার্টসন আসামের কমিশনার ও গভর্নর- জেনারেলের এজেন্ট নিযুক্ত হন। তিনি স্কটের উক্ত প্রস্তাবে সহমত হন। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে রবার্টসন আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তর-পূর্ব আসাম পুরন্দর সিংহকে প্রত্যর্পণ করেন। কিন্তু পুরন্দর সিংহের শাসনে রাজ্যের অধিবাসীদের চরম দুর্গতি আরম্ভ হয়। অধিকন্তু তিনি প্রতিশ্রুত বার্ষিক কর পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতেও অক্ষম হন। অবশেষে জেনারেল জেনকিনসের প্রস্তাব অনুসারে ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে এক ঘোষণায় পুরন্দর সিংহকে সিংহাসনচ্যুত করা হয়।

প্রশ্ন ২। গোমধর কোঁয়রের ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহ সম্পর্কে কি জানো?

অথবা,

গোমধর কোঁয়র সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ গোমধর কোঁয়রের বিদ্রোহ: ১৮২৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মার্চ ব্রিটিশ সরকার নিম্ন আসামকে ইংরেজদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলে ঘোষণা করে এবং উজান আসাম হতে ব্রিটিশ সৈন্য অপসারণ করে। এই অবস্থার সুযোগ গ্রহণ করে গোমধর নিজেকে স্বৰ্গদেও হিসাবে ঘোষণা করে স্থানীয় রাজকর্মচারীদের তার সঙ্গে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে মরিয়াণী অভিমুখে সসৈন্যে যাত্রা করেন। গোমধরের ঐ অভিযান ব্যর্থ করবার জন্য ব্রিটিশ লেফটেন্যান্ট বুথার ফোর্ড নাগা পাহাড়ে অবস্থিত গোমধর সহ অন্যান্য বিদ্রোহীদের বন্দী করলে ব্রিটিশ কমিশনার ডেভিড স্কট গোমধর সহ অন্যান্য বন্দীদের সাত বৎসরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। কিন্তু হরনাথের সহায়তায় গোমধর শীঘ্রই কারাগার হতে পলায়ন করেন। তবে গোমধর আবার ব্রিটিশ হস্তে বন্দী হন এবং বঙ্গদেশের রংপুর জেলে তাকে সাত বৎসর রাখা হয়। প্রথমে ইংরেজ সরকার গোমধরকে ফাঁসী দেওয়ার চিন্তা করলেও তার অল্প বয়স বিবেচনা করে কারাগারে রাখারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। রংপুর জেল হতে গোমধর কোথায় গিয়েছিলেন তা জানা যায়নি।

প্রশ্ন ৩। তিরৎ সিংহের ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহের সম্পর্কে কি জানো?

অথবা,

ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে খাসি বিদ্রোহ সম্পর্কে কি জানো?

অথবা,

তিরৎ সিংহ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ তিরুৎ সিংহের বিদ্রোহ: ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় আধিপত্য স্থাপনের পর ইংরেজ খাসিয়া পাহাড়ের মধ্য দিয়ে সুরমা উপত্যকার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে রানির নিকট হতে নংঘৌর-এর মধ্য দিয়ে এক রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রথমে খাসি সিয়েম তিরুৎ সিংহ তাতে অনুমতি দান করলেও ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দের ৪ঠা এপ্রিল তিরুৎ সিংহ তার খাসিয়া অনুচর নংঘৌতে কোম্পানীর জনগণের উপর আক্রমণ চালিয়ে দুইজন ইংরেজ এবং ৬০ জন ভারতীয় সিপাহীর মৃত্যু ঘটান এবং খাসিয়া পাহাড়ে ইংরেজদের প্রবেশে বাধাদানের জন্য প্রচুর সৈন্য মোতায়েন করেন। কিন্তু ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই জানুয়ারি তিরুৎ সিংহ পরাজিত হয়ে ইংরেজদের নিকট আত্মসমর্পণ করেন। এর ফলে খাসিয়া পাহাড় ব্রিটিশের হস্তগত হয়ে যায়।

প্রশ্ন ৪। আসামে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে মণিরাম দেওয়ানের ভূমিকা কি ছিল?

অথবা,

মণিরাম দেওয়ান সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

অথবা,

মণিরাম দেওয়ান বৃটিশবিরোধী মনোভাব কেন প্রকাশ করেছিলেন? এর ফলাফল লেখ।

উত্তরঃ মণিরাম দেওয়ান ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর একজন দক্ষ ও বিশ্বস্ত কর্মচারী ছিলেন। ১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ক্যাপ্টেন নিউফডিল এই দক্ষ ও প্রতিভাশালী অসমীয়া অভিজাতকে যোড়হাটে সেরেস্তাদার নিযুক্ত করেছিলেন। এই কার্যে তিনি বিশেষ দক্ষতা প্রদর্শন করেন। অহোম অভিজাতদের মধ্যে যখন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অসন্তোষের আগুন বিস্তার লাভ করছিল তখন মণিরাম তাদের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ১৮৩৮ খ্রিস্টাব্দে পুরন্দর সিংহ সিংহাসনচ্যুত হলে মণিরাম ইংরাজের উপর অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন এবং তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অধীনে কোন কার্য করতে অসম্মত হন। তিনি পুরন্দর সিংহের পৌত্র কন্দর্পেশ্বর সিংহের রাজ্য প্রাপ্তির জন্য চেষ্টা করে বিফল হন। মণিরাম তখন ষড়যন্ত্র ও বিদ্রোহের পথই বেছে নিলেন। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে উত্তর ভারতে সিপাহী বিদ্রোহের বিস্তার লক্ষ্য করে মণিরাম উৎসাহিত হন। তিনি তাঁর বাঙালি বন্ধু মধু মল্লিকের সহায়তায় কন্দর্পেশ্বর সিংহের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করেন এবং তাঁকে স্থানীয় সিপাহীদের সাহায্যে বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত হতে উৎসাহিত করেন। কন্দর্পেশ্বর সিংহ যোড়হাট ও গোলাঘাটের সিপাহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কন্দর্পেশ্বর সিংহ ও মণিরামের বিদ্রোহের প্রচেষ্টা বেশি দূর অগ্রসর হবার পূর্বেই ধরা পড়ে। ধৃত হওয়ার পর কন্দর্পেশ্বর সিংহকে বর্ধমানে অন্তরীণ করা হয় এবং মণিরাম দেওয়ানকে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে ফেব্রুয়ারি যোড়হাটে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top