Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধা

Join Roy Library Telegram Groups

Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি, is a textbook prescribed by the Assam AHSEC Board Class XII Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Assam Board HS 2nd Year Logic and Philosophy Question Answer in Bengali The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি Solutions are free to use and easily accessible. Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily.

Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি

Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি, Gives you a better knowledge of all the chapters. HS 2nd Year Logic and Philosophy in Bengali Notes. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam Board HS 2nd Year Logic and Philosophy in Bengali Suggestion will be able to solve all the doubts of the students. Class 12 Logic and Philosophy in Bengali Solution, Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the Assam AHSEC Board Class 12 Logic and Philosophy in Bengali Question Answer PDF. HS 2nd Year Logic and Philosophy in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

প্রশ্ন ২। পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি বলতে কী বোঝ ? মিল কয়টি পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি স্বীকার করেছেন ? এই পদ্ধতি গুলির নাম লেখো।

উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক আগমনের উদ্দেশ্য হলো, দুটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যাতে একটি যথার্থ সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। তর্কবিজ্ঞানী মিল এই সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন। মিলের মতে এসব পদ্ধতি অবলম্বন করে নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের ভিত্তিতে জটিল ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যায়। এই পদ্ধতিগুলিকেই ‘ পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি ‘ বা আরোহী পদ্ধতি বা কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের পদ্ধতি বলে। 

এই পদ্ধতিগুলো হল নিম্নরূপ ——

(ক) অন্বয়ী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(খ) ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(গ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঘ) সহ- পরিবর্তন পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঙ) পরিশেষ পদ্ধতি বা প্রণালী।

প্রশ্ন ৩। ‘ অন্বয়ী পদ্ধতি হল একটি নিরীক্ষণ পদ্ধতি ‘– ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ  সরল পর্যবেক্ষণ বা নিরীক্ষণ হল প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘটা ঘটনাগুলির সুনিয়ন্ত্রিত উদ্দেশ্যমূলক প্রত্যক্ষ। অন্বয়ী পদ্ধতি মূলতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি। তার অর্থ এই নয় যে, পরিক্ষণের ক্ষেত্রে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যাবে না। পরীক্ষণ হল কৃত্রিম পরিবেশে নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরীক্ষণ সম্ভব নয়। যেমন —– বন্যা, ভূমিকম্প,চন্দ্রগ্ৰহণ, সূর্যগ্ৰহণ ইত্যাদি কৃত্রিম পরিবেশে পরীক্ষণ চলে না। এসব ক্ষেত্রে নিরীক্ষণই অনুসন্ধান চালিয়ে যাবার একমাত্র উপায়। অন্বয়ী পদ্ধতি মূলতঃ নিরীক্ষণের প্রণালী। এই কারণে , যে সবক্ষেত্রে পরীক্ষণ সম্ভব নয়,সে সব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। এই প্রণালীতে নিরীক্ষণের সাহায্যেই দৃষ্টান্তগুলি সংগ্ৰহ করা যায়। সুতরাং অন্বয়ী পদ্ধতিকে নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ৪। ‘ অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি নিশ্চিতভাবে অন্বয়ী পদ্ধতির উন্নতি ‘—- ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগের জন্য প্রচুর পরিশ্রম ও সময়ের প্রয়োজন। সদার্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ সহজে সংগ্ৰহ করা যায়, কিন্তু নঞর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ সংগ্ৰহ করা অত্যন্ত কঠিন। অন্বয়ী পদ্ধতি যে কার্যকারণ সম্বন্ধের বিষয়ে যে সম্ভাবনার আভাস দেয়, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি দ্বারা তাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়। তবুও এই পদ্ধতি দ্বারা লব্ধ সিদ্ধান্তে অনিশ্চয়তা থাকে, কারণ, এটি নিরীক্ষণের পদ্ধতি। অতএব, আমরা বলতে পারি, অন্বয়ী পদ্ধতির চেয়ে এটি বেশি বিশ্বাসযোগ্য পদ্ধতি এবং নিশ্চিতই অন্বয়ী পদ্ধতির উন্নততর রূপ।

প্রশ্ন ৫। ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে কেন পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি বলা হয় ?

উত্তরঃ মিল ব্যতিরেকী প্রণালীকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলেছেন। কারণ ,এই প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণের ওপর নির্ভরশীল। এই প্রণালী প্রয়োগের জন্য দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়। একটি সদর্থক অপরটি নঞর্থক। একটিতে অনুসন্ধানের বিষয়টি উপস্থিত থাকে, অন্যটিতে থাকে না। দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে কেবল একটি বিষয় ছাড়া অন্য সকল বিষয়ে মিল থাকতে হবে। অমিল থাকা সদর্থক দৃষ্টান্তে থাকতে হবে এবং নঞর্থক দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত থাকতে হবে। সরল পর্যবেক্ষণের দ্বারা এই জাতীয় দৃষ্টান্ত পাওয়া সম্ভব নয়। একমাত্র পরীক্ষণের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। কারণ পরীক্ষণে আমরা কৃত্রিম পরিবেশে ভাববাচক এবং অভাববাচক দৃষ্টান্তগুলি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারি। কাজেই ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ৬।’ ব্যতিরেকী প্রণালী বা পদ্ধতি কারণ প্রমাণ করতে পারে, একমাত্র কারণকে নয়।’ ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ব্যতিরেকী পদ্ধতি নানা কারণবাদ ক্রটি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। এই প্রণালী এটাই শুধু প্রমাণ করে যে, কোন বিশেষ একটি ক্ষেত্রে কোন একটি ঘটনা হচ্ছে ‘কারণ’ । যেমন — জ্ঞাত অবস্থার সঙ্গে কোন একটি বিষয় যোগ করলে যদি একটি অনুবর্তী ঘটনা ঘটে, তাহলে অবশ্যই সেক্ষেত্রে পূর্ববর্তী অবস্থাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা বলতে পারি, অনুবর্তী অবস্থাটির অন্যান্য ক্ষেত্রে অন্য কোন কারণ থাকতে পারে না। সুতরাং ব্যতিরেকী প্রণালী দ্বারা প্রমাণ করা যায় কোন একটি বিশেষ, ক্ষেত্রে কোন একটি অনুবর্তী ঘটনাই বিশেষ কারণ, অন্যান্য কোন ক্ষেত্রে অন্য কোন কারণ থাকতে পারে না।

অতএব, ব্যতিরেকী পদ্ধতি কারণ প্রমাণ করতে পারে, একমাত্র কারণকে নয়।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অন্বয়ী প্রণালীর মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর দ্বারা কার্যকারণ আবিষ্কার বা প্রমাণ করা যায় না। তাই এই প্রণালীর মূল্য অত্যন্ত সীমিত। যদিও এই প্রণালী আমাদের কার্য অথবা কারণ সম্পর্কে একটি আনুমানিক ধারণা বা প্রকল্প গঠন করতে সাহায্য করে, কিন্তু তা প্রকল্পটিকে প্রমাণ করতে পারে না। এই জন্য এই পদ্ধতিকে আবিষ্কারের পদ্ধতি বলা গেলেও ‘ প্রমাণের পদ্ধতি ‘ বলা যায় না। এই প্রণালীর একটাই সুবিধা যে, এর প্রয়োগ সহজসাধ্য, অর্থাৎ এটি একটি সহজ ও সরল প্রণালী। সাধারণ মানুষ তাদের নিত্যদিনের জীবনে এই পদ্ধতিকে ব্যবহার করে।

তবে প্রকৃত পক্ষে এটি বর্জন বা অপসারণের পদ্ধতি। এখানে অপসারণের সূত্রটি হচ্ছে, ” যদি কিছু ঘটলেও অন্য একটি ঘটনা না ঘটে, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বীতিয় ঘটনার কারণ বলা যাবে না।”

এই সূত্রটি প্রয়োগ করে অন্বয়ী পদ্ধতি অপ্রয়োজনীয় বিষয় বর্জন করতে পারলেও সঠিকভাবে কারণ ‘ আবিষ্কার বা প্রমাণ ‘ করা যায় না।

প্রশ্ন ২। অন্বয়ী প্রণালী এবং অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমানের মধ্যে তিনটি সাদৃশ লেখো।

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালী এবং অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমানের মধ্যে তিনটি সাদৃশ হল নিম্নরূপ –

(ক) অন্বয়ী প্রণালী এবং অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমান , উভয়েই পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভরশীল। দুটি ক্ষেত্রেই পর্যবেক্ষণের দ্বারা কয়েকটি সদর্থক দৃষ্টান্তের সংগ্ৰহ করা হয়।

(খ) দুটিতেই সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়, নিশ্চিত হয় না। দুটি ক্ষেত্রেই ভাববাচক দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি দেখা যাবে, সিদ্ধান্তও তত বেশি সম্ভাব্য হবে।

(গ) দুটি ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত কার্যকারণ সম্পর্ক সম্বন্ধে একটি আভাস দেয়, যদিও তা প্রমাণ করা যায় না।

প্রশ্ন ৩। অন্বয়ী প্রণালী ও অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমানের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ যুক্তিবাদ মিল অন্বয়ী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে বলেছেন, ” যদি আলোচ্য ঘটনার দই বা তার চেয়ে বেশি দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনা সাধারণভাবে উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সাধারণ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য হবে।” যেমন — ম্যালেরিয়া জ্বরের কয়েকটি দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল যে, প্রতিটি দৃষ্টান্তে অন্যানোফিলিস মশার কামড় সাধারণ পূর্ববর্তী ঘটনা। তার থেকে সিদ্ধান্ত করা গেল যে, অন্যানোফিলিস মশার কামড় ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ।

অবৈজ্ঞানিক বা অপূর্ন গণনাভিত্তিক অনুমানে আমরা বিশেষ বিশেষ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে অবাধিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করি। যেমন— আমাদের অভিজ্ঞতায় আমরা যত কাক দেখেছি, সবই কালো। সেই অবাধিত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাই যে, সব কাক হয় কালো।

অন্বয়ী প্রণালী ও অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমনের মধ্যে পার্থক্য হল —

(ক) অন্বয়ী প্রণালী হল এক পরীক্ষণের প্রণালী। কিন্তু অপূর্ন গণনাভিত্তিক অনুমান এক প্রকারের যথার্থ আগমন অনুমান।

(খ) অন্বয়ী প্রণালীর লক্ষ্য কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করা। কিন্তু অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমনের উদ্দেশ্য,এক সার্বিক নিয়ম প্রতিষ্ঠা করা।

(গ) অন্বয়ী প্রণালীতে দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ এবং বৈসাদৃশ্য দুই ই মূল্যবান। কিন্তু, অবৈজ্ঞানিক অনুমানে কেবল সাদৃশ্যকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।

(ঘ) অন্বয়ী প্রণালীর ক্ষেত্রে ঘটনার পরম্পরাকে বিচার করা হয়। অন্যতায় , অপূর্ন গণনাভিত্তিক অনুমানে ঘটনার সহাবস্থানকে বিচার করা হয়।

প্রশ্ন ৪। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ অন্যান্য প্রণালীর মত এই প্রণালীরও সীমিত মূল্য আছে, অন্যান্য প্রণালীগুলির মত এটিও অপসারণের প্রণালী। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে নিশ্চিতভাবে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় বর্জন করা সম্ভব হয়। এই প্রণালী দ্বারা লব্ধ সিদ্ধান্ত সুনিশ্চিত ভাবে কারণ বা কার্য আবিষ্কার করতে বা তার যথার্থতা প্রমাণ করতে পারে না।

এই প্রণালী কোন স্বতন্ত্র বা মৌলিক প্রণালী নয়। এটি হল, অন্বয়ী প্রণালীর দ্বিবিধরূপ বা প্রয়োগ। তাই অনেকে একে অন্বয়ী এবং ব্যতিরেকী প্রণালীর যুগ্ম প্রয়োগ বলেন। অন্বয়ী প্রণালীর ক্ষেত্রে নানা কারণ জনিত ক্রটি থাকার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীতে সেই সম্ভাবনা অনেকটাই দূর হয়। যে সব ক্ষেত্রে ব্যতিরেকী প্রণালী সঠিকভাবে সংগ্ৰহ করা সম্ভব হয় না,সে সব ক্ষেত্রে মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করা যায়। যেমন—– বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ জানতে ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে আমাদের এমন দুই জোড়া দম্পতি সংগ্ৰহ করতে হবে,যাদের ক্ষেত্রে কেবল একটি বিষয়ে অমিল বাকি সব বিষয়ে মিল। এরকম দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করা সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ৫। সহ পরিবর্তন প্রণালীকে অন্বয়ী প্রণালীর বিশেষ রূপ বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ সহ পরিবর্তন প্রণালীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে,যেখানে অন্বয়ী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ হয় সেখানে পূর্ববর্তী ঘটনার এবং অনুবর্তী ঘটনার মধ্যে একটি ব্যাপারের সহ পরিবর্তনের সঙ্গে তাদের ঘটনাগুলির পরিমাণের ভিন্নতা না থাকলেও তারা বিভিন্ন দৃষ্টান্তে এক থাকে না , ভিন্ন ভিন্ন হয়। যদি সমগামী ঘটনাগুলি প্রতিটি দৃষ্টান্তে ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাহলে সহ পরিবর্তনের প্রণালীকে অন্বয়ী প্রণালীর বিশেষ প্রকার রূপে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে প্রণালীটির প্রয়োগ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে করা হয় বলে সিদ্ধান্ত কমবেশি সম্ভাব্য হয়। কখনই সুনিশ্চিত হয় না।

প্রশ্ন ৬। সহ পরিবর্তন প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ বা রূপ বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ সহ পরিবর্তন প্রণালীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে যেখানে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ হয় সেখানে পূর্ববর্তী ও অনুবর্তী ঘটনার মধ্যে একটি বিষয়ে সহ পরিবর্তন হলেও সঙ্গের অন্যান্য বিষয়গুলো প্রতিটি দৃষ্টান্তে এক অপরিবর্তিত থাকে। এক্ষেত্রে পরীক্ষণের সাহায্যে পূর্ববর্তী এবং অনুবর্তী ঘটনার একটি মাত্র পরিবর্তন সাধন করা হয় এবং সহগামী অন্যান্য বিষয়গুলি প্রতিটি দৃষ্টান্তে অভিন্ন  এবং অপরিবর্তিত থাকে। এই জাতীয় প্রয়োগ হলে সহ পরিবর্তন প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ বলা হয়।

প্রশ্ন ৭। ‘ অন্বয়ী পদ্ধতি দ্বারা কারণ এবং সহ কার্যের অথবা সহ- অবস্থানের পার্থক্য করা যায় না।’ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ অন্বয়ী পদ্ধতি দ্বারা কার্যকারণ  সম্পর্ক এবং সহ- কার্যের পার্থক্য বোঝা যায় না। কতকগুলি দৃষ্টান্তে দুটি ঘটনা সর্বদাই অনুবর্তী এবং পূর্ববর্তী ঘটনা হিসাবে উপস্থিত থাকতে পারে। কিন্তু তাতে একথা প্রমাণিত হয় না যে, ঐ দুটি ঘটনার একটি পূর্ববর্তী ঘটনাটির কারণ এবং অনুবর্তী ঘটনাটি কার্য। যেমন দিন হল রাত্রির নিয়ম পূর্ববর্তী ঘটনা কিন্তু দিন রাত্রির কারণ নয়। একই কারণের দুটি কার্য,যে কারণটি হল , পৃথিবীর আহ্নিক গতি। পৃথিবীর নিজ নিজ কক্ষপথে পরিক্রমা হল দিন ও রাত্রের কারণ, দিন ও রাত হল সেই পরিক্রমার সহকার্য। সুতরাং অন্বয়ী পদ্ধতি দ্বারা কারণ এবং সহ কার্য্যের পার্থক্য নির্ণয় করা যায় না।

প্রশ্ন ৮। অন্বয়ী পদ্ধতির অসুবিধাগুলি কীভাবে দূর করা যায় ?

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর ক্রটিগুলি দূর করা সম্ভব —–

(ক) বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে অন্বয়ী পদ্ধতির অসুবিধা দূর করা যায়। অন্বয়ী পদ্ধতি নানা কারণবাদজনিত দোষে দুষ্ট। দৃষ্টান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি করে যদি দেখা যায় যে অন্বেষণীয় ঘটনা উপস্থিত আছে এবং বহু সংখ্যক দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে মিল থাকে , তাহলে সেই মিল থাকা বিষয়টি অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

(খ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী অন্বয়ী প্রণালীর উন্নতর রূপ। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য একটি ভাববাচক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ এবং অভাববাচক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়, যে সব দৃষ্টান্তে আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিত থাকে। সদর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি উপস্থিত থাকে এবং দৃষ্টান্ত গুলির মধ্যে একটি বিষয়ে মিল থাকে। নঞর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে এবং সদর্থক দৃষ্টান্তের মিল থাকা বিষয়টি অনুপস্থিত থাকে। কিন্তু, মিল থাকা ঘটনা অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ বা কার্য হবে। অতএব মিশ্র অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগ করে নানা কারণ বাদের সম্ভাবনা বা অপর্যবেক্ষণজনিত দোষের সম্ভাবনা দূর করা যাবে।

প্রশ্ন ৯। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ উল্লেখ করো।

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

প্রশ্ন ১০। মিশ্র অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা ও দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

প্রশ্ন ১১। চরম দৃষ্টান্ত বা নির্ণায়ক দৃষ্টান্ত মানে কী ? উদাহরণের সাহায্যে নিরীক্ষণলব্ধ চরম দৃষ্টান্তের বিষয়ে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ যে নিরীক্ষণের মাধ্যমে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রকল্পের মধ্যে একটিকে গ্ৰহণ করা হয় তাকে  crucial instance বা চরম দৃষ্টান্ত বলে। যেমন, কোন হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্দেহবশত তিনজন ব্যক্তিকে আটক করা হল। তিনজনাই দোষী। এই তিনজনের মধ্যে প্রকৃত আসামী কেউ ধরা পড়েনি। কিন্তু ভালোকের অনুসন্ধান করে ঘটনাস্থলের উপর আঙ্গুলের চাপ পাওয়া গেল। এই আঙ্গুলের চাপের দ্বারা প্রকৃত আসামী নির্ণয় করা গেল। এখানে আঙ্গুলের চাপ ‘ চরম দৃষ্টান্ত ‘ এবং নিরীক্ষণের দ্বারা পাওয়া গেল বলে এটি নিরীক্ষণ লব্ধ চরম দৃষ্টান্ত।

প্রশ্ন ১২। পার্থক্য পদ্ধতির বিধানটি লেখো। এই পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা বস্তুগুলো কী কী ?

উত্তরঃ পার্থক্য পদ্ধতির একটি নাম হল ব্যতিরেকী প্রণালী। নিম্নে তর্কবিধ মিলের ব্যতিরেকী প্রণালীর সংজ্ঞা দেওয়া হল—–

তর্কবিদ মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সংজ্ঞাটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —–” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

মিলের এই সূত্রটি ব্যাখ্যা করে পাওয়া যায় যে ব্যতিরেকী প্রণালীর ক্ষেত্রে —–

(ক) প্রথমত দুটি এবং কেবল দুটি দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করতে হয়। দৃষ্টান্ত দুটির একটিতে অন্বেষণীয় ঘটনাটি উপস্থিত থাকে এবং অন্যটিতে অন্বেষণীয় ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে। অর্থাৎ দৃষ্টান্ত দুটির একটি সদর্থক ও অন্যটি নঞর্থক।

(খ) একটি বিষয়ের বাইরে দৃষ্টান্ত দুটির সম্পূর্ণ ভাবে মিল থাকে।

(গ) দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে অমিল বা ব্যতিরেক থাকা সেই বিষয়টি অন্বেষণীয় ঘটনার কার্য বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।

প্রশ্ন ১৩। সহ পরিবর্তন প্রণালীর দুটি সুবিধা এবং দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ সহ- পরিবর্তন প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) স্থায়ী কারণ সমূহের ক্ষেত্রে সহ- পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

(খ) সহ- পরিবর্তন প্রণালীর সাহায্যেই কার্য এবং কারণের পরিমাণগত স্বভাব বিচার করা হয়। পরিমাণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কেবল সহ- পরিবর্তন প্রণালী প্রযোজ্য ।

প্রশ্ন ১৪।‌ পরিশেষ প্রণালীর দুটি সুবিধা এবং দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ পরিশেষ প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ —-

ক) কোন ঘটনার যে অংশের ব্যাখ্যা জানা নেই, সেই অংশের ব্যাখ্যার কিংবা অজ্ঞাত কারণ বা কার্য অনুসন্ধানে এই প্রণালী কার্যকর।

(খ) বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে এই প্রণালীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

(গ) মিশ্রকারণ এবং মিশ্র কার্যের অনুমানের ক্ষেত্রে পরিশেষ প্রণালীই একমাত্র পদ্ধতি।

(ঘ) এই প্রণালী দ্বারা কারণ থেকে কার্য এবং কার্য থেকে কারণ‌‌‌ অনুমান করা যায়।

পরিশেষ পদ্ধতির দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—-

(ক) পরিশেষ পদ্ধতির ব্যবহার অতি সীমিত। এই পদ্ধতি কেবল সমগুণ সম্পন্ন কার্য সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

(খ) এই পদ্ধতি থেকে কোন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কাজ আরম্ভ করা যায় না।

প্রশ্ন ১৫। ” কাকতালীয় দোষ ” বলতে কী বোঝ ? উদাহরণ সহ লেখো।

উত্তরঃ ব্যতিরেকী প্রণালীকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে কাকতালীয় ন্যায় দোষ (Fallacy of posthoc ergo propter hoc) ঘটে। ‘ একটি ঘটনার পরে অপর একটি ঘটনা ঘটেছে, অতএব,প্রথম ঘটনাটি দ্বিতীয় ঘটনার কারণ ‘ এমন সিদ্ধান্ত করলে এই দোষ ঘটে। যেমন—- 

আকাশে ধূমকেতু ছিল না এবং রাজাও মারা যাননি।

আকাশে ধূমকেতু দেখা দিল এবং রাজাও মারা গেলেন।

আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর কারণ এই যুক্তিতে কাকতালীয় দোষ ঘটে।

তবে এই প্রণালী যখন পরীক্ষণ ভিত্তিক হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়। অন্যান্য প্রণালীর তুলনায় এই প্রণালীর গুরুত্ব হলো এখানে যে, সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে, আমরা কার্যকারণ সম্বন্ধে সঠিক সিদ্ধান্ত করতে পারি। অন্বয়ী প্রণালী যে কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়, ব্যতিরেকী প্রণালী তাকে প্রমাণ করে। সুতরাং মিলের মতে,সব প্রণালীর মধ্যে ব্যতিরেকী প্রণালী শ্রেষ্ঠতম।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top