Class 12 History Chapter 3 জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি is a textbook prescribed by the AHSEC Board Class 12 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 History Chapter 3 জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 History Chapter 3 জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি Solutions are free to use and easily accessible.
Class 12 History Chapter 3 জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 12 History Chapter 3 জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি Question Answer in Bengali. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Class 12 History Chapter 3 জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি Question Answer in Bengali gives you a better knowledge of all the chapters. Class 12 History Chapter 3 জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি Notes. The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Medium Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. Class XII History Solutions Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 History Bengali Medium Textbooks. HS 2nd Year History Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.
জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি
প্রথম খণ্ড
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্নঃ ১। ইন্দ্ৰ কে ছিলেন?
উত্তরঃ ইন্দ্র ছিলেন অন্যতম প্রধান দেবতা। যাকে শৌর্য, যুদ্ধ এবং বর্ষণের দেবতা বলা হত।
প্রশ্নঃ ২। কৌরবগণের মাতার নাম কী ছিল?
উত্তরঃ কৌরবগণের মাতার নাম ছিল গান্ধারী।
প্রশ্নঃ ৩। পাণ্ডবগণের মাতার নাম কী ছিল?
উত্তরঃ পাণ্ডবগণের মাতার নাম ছিল কুন্তী।
প্রশ্নঃ ৪। গান্ধারী কে?
উত্তরঃ গান্ধারী ছিলেন হস্তীনাপুরের মহারাজ ধৃতরাষ্ট্রের রাণী এবং কৌরবদের মাতা।
প্রশ্নঃ ৫। কুন্তী কে?
উত্তরঃ কুন্তী ছিলেন মহারাজ পাণ্ডুর স্ত্রী এবং পাণ্ডবদের মাতা।
প্রশ্নঃ ৬। স্ত্রীধন কী?
উত্তরঃ মেয়েরা বিয়ের সময় যে সকল উপহারাদি পেত সেগুলিকে নিজেদের অধিকারে রাখতে পারত। এই সকল সামগ্রী এবং সম্পদকে স্ত্রীধন বলা হত।
প্রশ্নঃ ৭। মাতঙ্গ কে ছিলেন?
উত্তরঃ জাতকের গল্পে বোধিস্বত্ত্ব একদা বারাণসী নগরের বহির্ভাগে চণ্ডালপুত্র মাতঙ্গ রূপে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্নঃ ৮। ঘটোৎকচ কে ছিলেন।
উত্তরঃ ঘটোৎকচ ছিলেন দ্বিতীয় পান্ডব ভীম এবং হিড়িম্বার পুত্র।
প্রশ্নঃ ৯। দ্ৰোণ কে ছিলেন?
উত্তরঃ দ্রোণ একজন আচার্য ব্রাহ্মণ যিনি কৌরব এবং পান্ডবদের ধনুর্বিদ্যা শিক্ষাদানে নিয়োজিত ছিলেন।
প্রশ্নঃ ১০। একলব্য কে ছিলেন?
উত্তরঃ একলব্য ছিলেন এক অরণ্যচারী নিষাদ (শিকারী) যিনি অস্ত্র শিক্ষা লাভের জন্য দ্রোণাচার্যের নিকট এসেছিলেন।
প্রশ্নঃ ১১। কোন্ গ্রন্থে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ দ্বারা অর্জুনকে দান করা উপদেশের বর্ণনা পাওয়া যায়?
উত্তরঃ ভগবদ্গীতা।
প্রশ্নঃ ১২। শকগণ কে ছিলেন?
উত্তরঃ শকগণ হলেন মধ্য এশিয়া থেকে আসা এক শ্রেণির শাসক গোষ্ঠী।
S.L. No. | সূচীপত্র |
প্রথম খণ্ড | |
অধ্যায় -1 | ইট, মনি ও হাড় |
অধ্যায় -2 | রাজা, কৃষক ও নগরসমূহ |
অধ্যায় -3 | জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি (প্রাচীন সমাজ) |
অধ্যায় -4 | দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য (সাংস্কৃতিক অগ্রগতি) |
অধ্যায় -5 | প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ |
দ্বিতীয় খণ্ড | |
অধ্যায় -6 | পর্যটকদের দৃষ্টিতে (দশম থেকে সপ্তদশ শতক) |
অধ্যায় -7 | ভক্তি ও সুফী পরম্পরা |
অধ্যায় -8 | একটি সাম্রাজ্যবাদী রাজধানী – বিজয়নগর |
অধ্যায় -9 | কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র |
অধ্যায় -10 | কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র |
তৃতীয় খণ্ড | |
অধ্যায় -11 | উপনিবেশবাদ ও গ্রামাঞ্চল |
অধ্যায় -12 | বিদ্রোহ ও রাজ (১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ) |
অধ্যায় -13 | উপনিবেশিক নগর |
অধ্যায় -14 | মহাত্মা গান্ধী ও জাতীয় আন্দোলন |
অধ্যায় -15 | দেশ বিভাজনের উপলব্ধি |
অধ্যায় -16 | সংবিধান প্রণয়ন |
অধ্যায় -17 | মানচিত্র অঙ্কনকার্য |
প্রশ্নঃ ১৩। গোত্র কী?
উত্তরঃ ব্রাহ্মণ্য রীতি অনুসারে এক একজন ঋষির উত্তর সূরীদের একই গোত্র হয়।
প্রশ্নঃ ১৪। মাতৃকুল ধারা কী?
উত্তরঃ বৃহদারণ্যক উপনিষদে কয়েক পুরুষের পরম্পরাগত গুরু-শিষ্যের তালিকা আছে যেগুলিকে মাতৃকুল ধারা বলে।
প্রশ্নঃ ১৫। সাতকার্নি কে ছিলেন?
উত্তরঃ সাতবাহন বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন।
প্রশ্নঃ ১৬। জ্ঞাতি কী?
উত্তরঃ সংস্কৃত গ্রন্থে বৃহত্তর আত্মীয় গোষ্ঠীকে জ্ঞাতি বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ ১৭। প্যাট্রিলিনি মানে কী?
উত্তরঃ প্যাট্রিলিনি এর অর্থ পিতৃ পুরুষের সাথে সম্বন্ধ যুক্ত।
প্রশ্নঃ ১৮। ম্যাট্রিলিনি শব্দের দ্বারা কী বোঝায়?
উত্তরঃ ম্যাট্রিলিনি শব্দের দ্বারা মায়ের বংশানুক্রম বোঝায়।
প্রশ্নঃ ১৯। এন্ডোগ্যামি মানে কী?
উত্তরঃ একই গোষ্ঠীতে বিবাহকে এন্ডোগ্যামি বলে।
প্রশ্নঃ ২০। ‘এক্সোগ্যামি’ বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ একই গোষ্ঠীর বাইরে বিবাহ বা ‘অসবর্ণ বিবাহ’কে এক্সোগ্যামি বলে।
প্রশ্নঃ ২১। পলিগ্যামি কথার অর্থ কী?
উত্তরঃ একই পুরুষের একাধিক স্ত্রী থাকাকে বহুবিবাহ বা পলিগ্যামি বলে।
প্রশ্নঃ ২২। পলিঅ্যান্ড্রি বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ একজন স্ত্রীলোকের একাধিক স্বামী থাকার প্রথাকে পলিঅ্যান্ড্রি বলে।
প্রশ্নঃ ২৩। ‘ধর্মশাস্ত্র’ এবং ধর্মসূত্র কী?
উত্তরঃ ব্রাহ্মণদের দ্বারা পালনীয় সামাজিক রীতি-নীতি সংকলিত সংস্কৃত গ্রন্থ হল ‘ধর্মশাস্ত্র’ এবং ধর্মসূত্র।
প্রশ্নঃ ২৪। সংস্কৃত গ্রন্থে এবং অভিলিখনে ‘বণিক’ শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ সংস্কৃত গ্রন্থ এবং অভিলিখনে বণিক শব্দটি বাণিজ্যে অভিযোজিত ব্যক্তিবর্গকে বোঝাবার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ ২৫। ‘মৃচ্ছকটিকা’ কে রচনা করেছিলেন?
উত্তরঃ শূদ্রক।
প্রশ্নঃ ২৬। চারুদত্ত কে ছিলেন?
উত্তরঃ ‘মৃচ্ছকটিকা’র নায়ক।
প্রশ্নঃ ২৭। ‘মাজহিমা নিকায়’ গ্রন্থটি কোন্ ভাষায় লিখিত ছিল?
উত্তরঃ পালি ভাষায়।
প্রশ্নঃ ২৮। ‘রাক্ষস’ শব্দটির দ্বারা কী বোঝানো হত?
উত্তরঃ ঐতিহাসিক গণের মতে যে সকল মানুষের আচার-আচরণ ব্রাহ্মণ্য গ্রন্থের আচরণবিধি হতে ভিন্নতর তাদের রাক্ষস বলা হত।
প্রশ্নঃ ২৯। বর্ণ প্রথাতে কয়টি বর্ণ আছে।
উত্তরঃ চারটি।
প্রশ্নঃ ৩০। সাতবাহন বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসনকর্তা কে ছিলেন?
উত্তরঃ গৌতমীপুত্র সাতকর্ণি।
প্রশ্নঃ ৩১। শূদ্রকের দ্বারা রচিত বিখ্যাত সংস্কৃত গ্রন্থটির নাম লেখো।
উত্তরঃ মৃচ্ছকটিকা।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্নঃ ১। ‘কুল এবং জ্ঞাতি’র সংজ্ঞা লেখো।
উত্তরঃ সংস্কৃত গ্রন্থে বংশকে ‘কুল’ এবং বৃহত্তর আত্মীয় গোষ্ঠীকে ‘জ্ঞাতি’ নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কুলের ধারা বংশ নামে ব্যবহৃত হয়েছে।
প্রশ্নঃ ২। অন্তর্বিবাহ এবং বহির্বিবাহ পদ্ধতির বিষয়ে লেখো।
উত্তরঃ একই জ্ঞাতির অন্তর্ভূক্ত দুই ব্যক্তির মধ্যে হওয়া বিবাহ পদ্ধতিকে অন্তর্বিবাহ পদ্ধতি এবং এক জ্ঞাতির অন্তর্ভূক্ত ব্যক্তির সঙ্গে অন্য জ্ঞাতির অন্তর্ভূক্ত কোন ব্যক্তির বিবাহের পদ্ধতিকে বহির্বিবাহ পদ্ধতি বলে।
প্রশ্নঃ ৩। প্রধান কে ছিলেন? তার দুটি কাজ উল্লেখ করো।
উত্তরঃ প্রায় 2000 বৎসর পূর্বে তামিলকামে কিছু অঞ্চলে একেক জন সর্দার ছিলেন, যারা সেই অঞ্চলের শাসক ছিলেন যারা তাদের অনুগতদের রক্ষণাবেক্ষণ এবং দান-দাক্ষিণ্য করতেন। এই সর্দারগণকে প্রধান বলা হত। তার দুটি কাজ হল (i) তার অনুগতদের ক্ষুধা নিভৃতি (ii) তার অনুগতদের দারিদ্র্য মোচন।
প্রশ্নঃ ৪। মনুস্মৃতি অনুসারে মহিলাদের সম্পত্তি আহরণ করার দুটি উপায় উল্লেখ করো।
উত্তরঃ মহিলারা নীচে দুটি উপায়ে সম্পত্তি আহ্বরণ করতে পারতেন।
(i) বিবাহকালে অগ্নির সম্মুখে প্রদত্ত সামগ্রী।
(ii) বিবাহ সম্বন্ধীয় সম্পত্তি।
প্রশ্নঃ ৫। মহাভারতের কাহিনির সঙ্গে জনসাধারণের পরিচিতি করার দুটি উপায় উল্লেল্লখ করো।
উত্তরঃ মহাভারতের কাহিনির সঙ্গে জনসাধারণের পরিচিতি করার দুটি জনপ্রিয় উপায় হল –
(i) নাটকের মাধ্যমে।
(ii) কবিগানের মাধ্যমে।
প্রশ্নঃ ৬। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ কোথায় এবং কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তরঃ এই যুদ্ধ কুরুক্ষেত্র নামক স্থানে পাণ্ডব এবং কৌরবদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল।
প্রশ্নঃ ৭। মহাভারতের সমালোচনাত্মক সংস্করণের কাজ কে কখন আরম্ভ করেছিলেন?
উত্তরঃ আনুমানিক 200 এবং 400 সাধারণকালের মধ্যবর্তী সময়ে ঋষি ব্যাস মহাভারতের সমালোচনাত্মক সংস্করণের কাজ শুরু করেন।
প্রশ্নঃ ৮। ইতিহাসবিদগণ মহাভারতের কাহিনিকে কোন্ দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করেছিলেন?
উত্তরঃ ইতিহাসবিদগণ মহাভারতের কাহিনিকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করেছেন–
(i) উপাখ্যান অংশ; যে অংশে গল্পসমূহ আছে।
(ii) নীতিগৰ্ভ অংশ; এই অংশে সামাজিক এবং নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষার জন্য উপদেশমূলক রচনা আছে।
প্রশ্নঃ ৯। মনুস্মৃতি অনুসারে পুরুষদের সম্পত্তি আহরণ করার দুটি উপার লেখো।
উত্তরঃ মনুস্মৃতি অনুসারে পুরুষদের সম্পত্তি আহরণ করার দুটি উপায় হল–
(i) উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত করা।
(ii) আবিষ্কারের ফলে প্রাপ্ত করা।
প্রশ্নঃ ১০। গোত্রের দুটি বিশেষ নিয়ম উল্লেখ করো।
উত্তরঃ গোত্রের দুটি নিয়ম হল–
(i) বিবাহের সময় স্ত্রী তার পিতৃ গোত্র ত্যাগ করে স্বামীর গোত্র গ্রহণ করবে।
(ii) একই গোত্রের সদস্যরা স্বগোত্রে বিবাহ করতে পারবে না।
প্রশ্নঃ ১১। বহুপতি এবং বহুপত্নি বিবাহ কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বিবাহ প্রথায় একজন স্ত্রীলোকের একাধিক স্বামী থাকে তাকে পলিঅ্যান্ড্রি বা বহুপতি বিবাহ বলে।
অন্যদিকে যে বিবাহ প্রথায় একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী থাকে তাকে পলিগ্যামি বা বহুপত্নি বিবাহ বলে।
প্রশ্নঃ ১২। অন্তর্বিবাহ এবং বহির্বিবাহ কাকে বলে?
উত্তরঃ অন্তর্বিবাহ – যে বিবাহ পদ্ধতিতে একই জ্ঞাতির একজন পুরুষ এবং মহিলার বিবাহ হয় তাকে অন্তর্বিবাহ বলে।
বহির্বিবাহ – যে বিবাহ পদ্ধতিতে একই জ্ঞাতির পুরুষ এবং মহিলার মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ এবং অন্য জ্ঞাতির দুই ব্যক্তির মধ্যে বিবাহ হয় তাকে বহির্বিবাহ বলে।
প্রশ্নঃ ১৩। সাধারণ পূর্ব 600 থেকে সাধারণকাল 600 পর্যন্ত ভারতীয় অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক জীবনে হওয়া পরিবর্তন সমূহের প্রভাব লেখো।
উত্তরঃ সাধারণ পূর্ব 600 থেকে সাধারণকাল 600 পর্যন্ত ভারতীয় অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক জীবনে হওয়া পরিবর্তনসমূহ ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটায়। যেমন অরণ্য অঞ্চলে চাষবাসের প্রসার অরণ্যবাসীদের সভ্য করে তুলে। হস্তশিল্প বিশারদগণ স্বতন্ত্র সামাজিক গোষ্ঠী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। সম্পদের বণ্টনব্যবস্থা সামাজিক বৈষম্যকে তীক্ষ্ণতর করে তুলেছিল।
প্রশ্নঃ ১৪। শকগণ কারা ছিলেন? সর্বশ্রেষ্ঠ শক শাসক কে ছিলেন?
উত্তরঃ শকগণ ছিলেন এক শ্রেণির জনগোষ্ঠী যারা মধ্য এশিয়া হতে ভারতবর্ষে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। সর্বশ্রেষ্ঠ শক শাসক ছিলেন রুদ্রদমন।
প্রশ্নঃ ১৫। শকগণকে ব্রাহ্মণরা কী অভিধায় ভূষিত করেছিলেন? শকশাসক রুদ্রদমনের করা একটি উল্লেখযোগ্য কাজের নাম লেখো।
উত্তরঃ ব্রাহ্মণরা শকগণকে ‘ম্লেচ্ছ’, ‘বর্বর’ বা ‘বহিরাগত’ ইত্যাদি অভিধায় ভূষিত করেছিলেন। শকশাসক রুদ্রদমন সুদর্শন হ্রদের পুনর্নির্মাণ করেছিলেন।
প্রশ্নঃ ১৬। প্যাট্রিলিনি এবং ম্যাট্রিলিনি কথার অর্থ লেখো।
উত্তরঃ প্যাট্রিলিনি এর অর্থ পিতৃ গোত্রজ, পিতৃগোষ্ঠী সম্ভূত অথবা পিতৃ পুরুষের সাথে সম্বন্ধযুক্ত।
ম্যাট্রিলিনি শব্দের দ্বারা মায়ের বংশানুক্রম বা মাতৃ গোত্রজ অর্থাৎ মাতৃ পুরুষের সাথে সম্বন্ধযুক্ত বোঝায়।
প্রশ্নঃ ১৭। ভি.এস. সুকথংকর কে ছিলেন? মহাভারতের সংস্করণে তার ভূমিকা কী ছিল?
উত্তরঃ ভি. এস. সুকথংকর ছিলেন একজন সংস্কৃত বিশেষজ্ঞ।
1919 সনে উনার নেতৃত্বে কয়েক ডজন পণ্ডিতের একটি দল মহাভারতের বিশ্লেষণধর্মী সংস্করণ কাজের সূত্রপাত করেন।
প্রশ্নঃ ১৮। মহাভারতের মূল ঘটনাটি কী ছিল?
উত্তরঃ মহাভারতের মূল ঘটনা ছিল একই জ্ঞাতির অন্তর্ভূক্ত দুটি দল কৌরবগণ এবং পাণ্ডবগণের মধ্যে কুরুক্ষেত্র নামক স্থানে একটি মহাযুদ্ধ। যে যুদ্ধে কৌরবগণ পাণ্ডবগণের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত এবং নিহত হন।
প্রশ্নঃ ১৯। ঘটোৎকচ কে ছিলেন?
উত্তরঃ দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীম এবং হিরিম্বার পুত্র ছিলেন ঘটোৎকচ। ঘটোৎকচ উনার মা হিড়িম্বার সঙ্গে নিয়ে পাণ্ডবদের থেকে সরে গিয়েছিলেন কিন্তু কথা দিয়েছিলেন যে যখন প্রয়োজনে তাকে ডাকা হবে তিনি উপস্থিত হবেন।
প্রশ্নঃ ২০। ধর্মশাস্ত্র মতে ব্রাহ্মণদের দুটি প্রধান জীবিকা কী ছিল?
উত্তরঃ ধর্মশাস্ত্র এবং ধর্মসূত্র সমাজের চারটি বর্গ বা বর্ণের জন্য আদর্শ পেশার প্রণিধান অন্তর্ভুক্ত করেছে। এই অনুসারে ব্রাহ্মণদের দুটি আদর্শ পেশা হল-
(i) অধ্যাপনা করা।
(ii) যজ্ঞ সম্পন্ন করানো।
প্রশ্নঃ ২১। ধর্মশাস্ত্র এবং ধর্মসূত্র মতে ক্ষত্রিয়দের দুটি আদর্শ পেশা উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ধর্মশাস্ত্র এবং ধর্মসূত্র মতে ক্ষত্রিয়দের দুটি আদর্শ পেশা ছিল–
(i) যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা।
(ii) জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্রশ্নঃ ২২। মহাভারতের অন্যতম একটি প্রত্যাহ্বানপূর্ণ অধ্যায়ের উল্লেখ করো।
উত্তরঃ মহাভারতের অন্যতম প্রত্যাহ্বানপূর্ণ একটি অধ্যায় হল দ্রৌপদীর পাঁচজন পাণ্ডবের সঙ্গে বিবাহ। এটি ‘বহুপতি’ বা পলিঅ্যান্ড্রি বিবাহ পদ্ধতির একটি উদাহরণ। এর থেকে ঐতিহাসিকগণ এই ধারণা করেন যে সে যুগে অভিজাত পরিবারেও এই বিবাহ পদ্ধতি প্রচলিত ছিল।
প্রশ্নঃ ২৩। গোত্র কী? গোত্র ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য নিয়ম দুটি কী কী?
উত্তরঃ গোত্র অনুসারে মানুষের শ্রেণিবিভাগ করা হয়। প্রতিটি গোত্র একজন বৈদিক ঋষির নামে ছিল এবং যাদের একই গোত্র ছিল তাদের ঐ ঋষির উত্তরসূরী হিসাবে মানা হত। গোত্র ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য নিয়ম দুটি হল –
(i) বিবাহের সময় স্ত্রী তার পিতৃ গোত্র ত্যাগ করে স্বামীর গোত্র গ্রহণ করবে। এবং
(ii) একই গোত্রের সদস্যরা স্বগোত্রে বিবাহ করতে পারবেন না।
প্রশ্নঃ ২৪। গোত্রের আবির্ভাব কীভাবে হয়েছিল?
উত্তরঃ ব্রাহ্মণ আনুমানিক 1000 সাধারণ পূর্ব কালে সমাজের সকল মানুষকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করেন। একেকটি ভাগে থাকা মানুষকে এক একজন বৈদিক ঋষির উত্তরসূরী হিসাবে মানা হত। এই ধরনের একটি ভাগকে একটি গোত্র বলা হত।
প্রশ্নঃ ২৫। চণ্ডাল কারা ছিলেন? সমাজে তাদের স্থান কী ছিল?
উত্তরঃ কিছুলোক মৃতদেহ এবং মরা পশু ইত্যাদিকে স্পর্শ করত এবং এই সমস্তের সৎকার কার্য সম্বন্ধীয় পেশায় যুক্ত ছিল। এদের চণ্ডাল বলা হত।
এদের স্থান সমাজে একেবারে নিচে ছিল এবং এদের অস্পৃশ্য বলে গণ্য করা হত।
প্রশ্নঃ ২৬। মনুস্মৃতিতে চণ্ডালদের কী দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।
উত্তরঃ মনুস্মৃতি অনুসারে চণ্ডালরা গ্রামের বাইরে বসবাস করবে এবং পরিত্যক্ত বাসন ইত্যাদি ব্যবহার করবে। এবং মৃত মানুষের কাপড় পরবে। তারা লোহা দ্বারা নির্মিত অলংকার ব্যবহার করবে। এরা আত্মীয়বন্ধুহীন মৃতের দেহ সৎকার করবে এবং প্রয়োজনে জল্লাদের কাজ করবে।
প্রশ্নঃ ২৭। চীনা পরিব্রাজকগণের বর্ণনা হতে প্রাচীন ভারতে অস্পৃশ্য ব্যক্তি গণের সমাজে অবস্থানের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ চীনা পরিব্রাজক ফা হিয়ান লিখে গিয়েছেন যে ‘অস্পৃশ্য’ জনগোষ্ঠী পথ চলার সময় হাততালি দিত যাতে অন্যান্য পথচারী এদেরকে দেখা পরিহার করতে পারে। আরেক চীনা পরিব্রাজক হুয়ান জং লক্ষ্য করেছিলেন যে জল্লাদ ও আবর্জনা পরিষ্কারকারীদের জোর করে নগরের বাইরে বসবাস করতে বাধ্য করা হত।
প্রশ্নঃ ২৮। মহাভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি কী? এতে কী বর্ণিত আছে?
উত্তরঃ মহাভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হল ভগবদ্গীতা।
ভগবদ্গীতায় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যে সকল উপদেশ দিয়েছিলেন সেইগুলি বর্ণিত আছে।
প্রশ্নঃ ২৯। সিরি-সাতকানি কে ছিলেন? তিনি কী করেছিলেন?
উত্তরঃ সিরি-সাতকানি ছিলেন সাতবাহন শাসক। তিনি ছিলেন ঋষি গৌতমীর পুত্র।
তিনি চারবর্ণের সদস্যগণের মধ্যে আন্তঃবিবাহ নিষিদ্ধ করেছিলেন এবং একই সঙ্গে রুদ্রদমনের জ্ঞাতির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।
প্রশ্নঃ ৩০। মহাভারতে হস্তিনাপরের বর্ণনা কীভাবে দেওয়া হয়েছে?
উত্তরঃ মহাভারতের আদি পার্বনে হস্তিনাপুর নগরটিকে সমুদ্রের ন্যায় উত্তাল, অট্টালিকা শোভিত, তোরণ এবং মেঘরাশির মত গম্বুজের দ্বারা ইন্দ্রের মহিমাময় নগরের মত জাঁকজমক পূর্ণ ছিল।
প্রশ্নঃ ৩১। পরিবার বলতে কী বোঝানো হত?
উত্তরঃ একই সঙ্গে খাদ্য গ্রহণ করা এবং একই সঙ্গে জীবনযাপন করে কাজ-কর্ম, রীতি রেওয়াজ একত্রে পালন করা ব্যক্তি সকলকে নিয়ে একটি পরিবার গঠিত হয়। বৃহত্তর অর্থে একই জ্ঞাতি অর্থাৎ আত্মীয়তার সম্পর্কে সম্পর্কিত লোক সকলকে একই পরিবারের অন্তর্ভূক্ত বলা হয়।
প্রশ্নঃ ৩২। ‘পুরুষ শুভ’ কী? এতে কী উল্লেখ আছে?
উত্তরঃ নিজেদের দাবীর সমর্থনে ব্রাহ্মণগণ প্রায়ই ঋগ্বেদের স্তোত্রগীতের একটি স্তবক উদ্ধৃত করতেন যাকে ‘পুরুষ শুভ’ বলা হত।
এটি ‘পুরুষ’ আদিমানবের যজ্ঞ বর্ণনা করেছে। জগতের সকল উপাদান এবং সমাজের চারটি বর্ণ তার শরীর হতে সৃষ্টি হয়েছে বলা হয়েছে। ব্রাহ্মণগণ তার মুখমণ্ডল, তার হাত ক্ষত্রিয় গণ, বৈশ্যগণ তার উরু এবং শূদ্রগণ তার পা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ ৩৩। ইতিহাস পুনর্নির্মাণের জন্য বাতিল বস্তুকে দরকারি সামগ্রী বলে গণ্য করার দুটি কারণ দেখাও।
উত্তরঃ কারণ দুটি হল—
(ক) যখন দীর্ঘতর বাতিল বস্তুর খণ্ডসমূহ ক্ষুদ্র বস্তু তৈরির কাজে প্রয়োজন হয় তখন এসব বস্তু সাধারণত নির্মাণ স্থানের আশে পাশে পড়ে থাকে এবং পরবর্তীকালে ঐতিহাসিক গণ ইতিহাস পুননির্মাণের কাজে এগুলো ব্যবহার করেন।
(খ) বিভিন্ন স্থানে স্বীকৃত এসব বাতিল বস্তু প্রত্নতাত্ত্বিক গণের গবেষণার কাজে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্নঃ ৩৪। বহির্বিবাহ এবং বহুপতি প্রথার সংজ্ঞা দাও।
উত্তরঃ বহির্বিবাহ – যে বিবাহ পদ্ধতিতে একই জ্ঞাতির পুরুষ এবং মহিলার মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ এবং অন্য জ্ঞাতির দুই ব্যক্তির মধ্যে বিবাহ হয় তাকে বহির্বিবাহ বলে।
যে বিবাহ প্রথায় একজন স্ত্রীলোকের একাধিক স্বামী থাকে তাকে পলিঅ্যান্ড্রি বা বহুপতি বিবাহ বলে।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্নঃ ১। ইতিহাসবিদ সকলে মহাভারতের কাহিনিকে কীভাবে বিভক্ত করেছিলেন?
উত্তরঃ ইতিহাসবিদগণ মহাভারত গ্রন্থটিকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম ভাগ হল উপাখ্যান। এই ভাগে মূল গল্পটি বলা হয়েছে এবং দ্বিতীয় ভাগটি হল নীতিগর্ভ অংশ। এই অংশে সামাজিক মূল্যবোধ এবং উপদেশসমূহ যুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কাহিনি যুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এই বিভাজন কোন ভাবেই নিশ্ছিদ্র নয়। অর্থাৎ উভয় অংশেরই অন্য অংশের সঙ্গে সমাবর্তন ঘটেছে। যেমন নীতিগর্ভ অংশে গল্প বা কাহিনি থাকে এবং অন্যদিকে উপাখ্যান অংশে সামাজিক সন্দেশও পাওয়া যায়। তবে সাধারণতঃ ঐতিহাসিকগণ একমত যে মহাভারত রচনা করা হয়েছিল একটি নাটকীয় আবেগপূর্ণ কাহিনি হিসাবে। নীতিগর্ভ অংশ সম্ভবতঃ পরে সংযোজিত করা হয়।
প্রশ্নঃ ২। সম্ভ্রান্ত পরিবারগুলিতে পিতৃতান্ত্রিক আদর্শ কেন গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল এর সংক্ষিপ্ত আভাস দাও।
উত্তরঃ প্রাচীন ভারতের অভিজাত পরিবারগুলিতে – পিতৃতান্ত্রিক আদর্শ গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হত। কারণ অভিজাত পরিবার সমূহ ব্রাহ্মণ্য রীতি দ্বারা পরিচালিত হত। ব্রাহ্মণ্য রীতিসমূহ ধর্মশাস্ত্র এবং ধর্মসূত্র গ্রন্থ দ্বারা পরিচালিত হত। ধর্মশাস্ত্র অনুসারে পুরুষকে পরিবারের প্রধান মানা হত। অন্যদিকে মনুস্মৃতি অনুসারে কোন একজন পুরুষের সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে তার পুত্রদের মধ্যেই ভাগ করে দেওয়া হত। মনুস্মৃতি অনুসারে মহিলাদের উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি আহরণের রীতি ছিল না। এই সমস্ত কারণে পুরুষের প্রাধান্য সমাজে ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। অভিজাত পরিবারগুলি ঋগ্বেদ মনুস্মৃতি তথা ধর্মশাস্ত্র ইত্যাদি গ্রন্থের প্রদত্ত ধারা অনুসারে পরিচালিত হওয়ার ফলে এই ধরনের পরিবারে পিতৃতান্ত্রিক আদর্শগুলি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হত। তাছাড়া পুত্র সন্তান বংশের অগ্রগতি বজায় রাখতে পারত বলে পুত্র সন্তান পরিবারে বেশি সমাদৃত হত। এভাবেই অভিজাত পরিবারগুলি পিতৃগোত্রজ প্রতিস্থাপিত হয়।
প্রশ্নঃ ৩। পিতৃপ্রধান এবং মাতৃপ্রধান পরিবারগুলির বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ পিতৃপ্রধান পরিবারগুলিতে একজন পুরুষ হতেন পরিবারের প্রধান। প্রাচীন ভারতের অভিজাত পরিবারসমূহ পিতৃ প্রধান ছিল। এই ধরনের পরিবারে পিতৃগোত্রজ উত্তরাধিকার ঘোষিত হয়েছিল। যেখানে পিতার মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি তার পুত্রদের মধ্যে বিভাজিত হত। একজন পুরুষের সম্পত্তি তার কন্যারা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়ার কোন বিধান ছিল না। এই ধরনের পরিবারে সন্তানেরা তাদের পিতার গোত্রের অধিকারী হত এবং মহিলারা বিবাহের পরে স্বামীর গোত্র অনুসারে পরিচিতি লাভ করত।
অন্যদিকে মাতৃপ্রধান পরিবারগুলিতে একজন মহিলাকে পরিবারের প্রধান বলে গণ্য করা হত। মাতৃপ্রধান ব্যবস্থায় সন্তানেরা মাতার নাম অনুসারে পরিচিতি লাভ করত। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে কয়েকজন সাতবাহন নৃপতি বহুগামী ছিলেন ফলে তাদের সন্তানেরা তাদের মাতার নাম অনুসারে নাম গ্রহণ করতেন। এই ধরনের পরিবারে মহিলারা স্বামীর গোত্র গ্রহণ না করে নিজের গোত্র বজায় রাখতেন এবং সম্পত্তিতে মেয়েদের উত্তরাধিকার সাব্যস্ত হত।
প্রশ্নঃ ৪। বিবাহ কত প্রকারের? বিবাহের নিয়মের বিষয়ে লেখো।
উত্তরঃ ধর্মসূত্র এবং ধর্মশাস্ত্র অনুসারে আট প্রকারের বিবাহ স্বীকৃত ছিল। যেখানে চার প্রকার বিবাহকে শুভ এবং চার প্রকারকে নিন্দনীয় বলা হত।
মেয়েদের জ্ঞাতি সম্পর্কের বাইরে গিয়ে বিবাহ সম্পন্ন করা আকাংক্ষিত মনে করা হত। এই প্রথাটিকে ভিন্ন গোষ্ঠীতে বিবাহ বা অসবর্ণ বিবাহ বলা হত। এর অর্থ ছিল অভিজাত বংশের কিশোরী ও তরুণীদের জীবন অত্যন্ত সাবধানতার সাথে নিয়ন্ত্রণ করা হত। এটি করার কারণ ছিল যাতে ‘সঠিক সময়ে’ এবং ‘সঠিক পাত্রে’র সাথে এদের বিবাহ সম্পন্ন করা যায়। এর থেকে একটি ধারণার জন্ম নেয় যে বিবাহে কন্যাদান কন্যার পিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ব্রাহ্মণ্য রীতি অনুযায়ী বিবাহের সময় স্ত্রী তার পিতৃগোত্র ত্যাগ করে স্বামীর গোত্র গ্রহণ কতর এবং একই গোত্রের সদস্যরা স্বগোত্রে বিবাহ করতে পারবেন না। ব্রাহ্মণ্য রীতি অনুসারে একই জ্ঞাতির মধ্যে বিবাহ অর্থাৎ ‘অন্তর্বিবাহ’ নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু দক্ষিণ ভারতের বহু সম্প্রদায়ের মধ্যে এই রীতির প্রচলন ছিল।
প্রশ্নঃ ৫। মনুস্মৃতি অনুসারে স্ত্রী এবং পুরুষ কী কী উপায়ে সম্পত্তি আহরণ করতে পারত?
উত্তরঃ মনুস্মৃতি অনুসারে পুরুষ এবং স্ত্রী ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে সম্পত্তি আহরণ করতে পারতো। মনুস্মৃতিতে পুরুষদের জন্য সম্পত্তি অর্জনের সাতটি উপায় স্বীকৃত ছিল। সেই উপায়গুলি হল-
(i) উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত করা।
(ii) আবিষ্কারের ফলে প্রাপ্ত করা।
(iii) ক্রয় করে প্রাপ্ত করা।
(iv) বিজয়ের ফলে পাওয়া।
(v) বিনিয়োগের ফলে লাভ করা।
(vi) কর্মের ফলে উপার্জন। এবং
(vii) সৎ ব্যক্তি হতে উপঢৌকনের ফলে প্রাপ্ত হওয়া। অন্যদিকে মহিলাদের সম্পত্তি আহরণের জন্য ছয়টি উপায়ের কথা বলা হয়েছে। সেই উপায়গুলি হল-
(i) বিবাহের সময় অগ্নির সম্মুখে যা তাকে দেওয়া হয়।
(ii) বিবাহ সম্বন্ধীয় সূত্রে প্রাপ্ত হওয়া।
(iii) স্নেহউপহার হিসাবে প্রাপ্ত সামগ্রী।
(iv) মাতা, পিতা বা ভ্রাতার নিকট থেকে লাভ করা সামগ্রী।
(v) বিভিন্ন জনের থেকে প্রাপ্ত নানান উপহার হিসাবে। এবং
(vi) ‘স্নেহময়’ স্বামীর নিকট হতে প্রাপ্ত উপহার দ্বারা।
প্রশ্নঃ ৬। কুল এবং জ্ঞাতির সংজ্ঞা লেখো।
উত্তরঃ সংস্কৃত গ্রন্থে বংশকে কুল বলা হয়েছে। একটি বংশের বিভিন্ন শাখাকে একটি কুল বলা হয়ে থাকে। একই কুলের অন্তর্গত মানুষদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক থাকে। অন্যদিকে বৃহত্তর আত্মীয় গোষ্ঠীকে জ্ঞাতি নামে অ্যাখ্যায়িত করা হয়েছে। একটি জ্ঞাতির মধ্যে বিভিন্ন পরিবার অন্তর্ভুত হয়ে থাকতে পারে। একই জ্ঞাতির মানুষগণ নিজেদের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধনে জড়িত থাকে। প্রকৃত পক্ষে আত্মীয়তার একটি বৃহৎ বৃক্ষকে জ্ঞাতি বলা হয়।
প্রশ্নঃ ৭। মহাভারত কীভাবে পিতৃগোত্রজের আদর্শকে দৃঢ় করে আলোচনা করো।
অথবা,
“মহাভারতের উপাখ্যান জ্ঞাতি এবং বংশের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে।” – আলোচনা করো।
অথবা,
জ্ঞাতির মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক কীভাবে পরিবর্তিত হয়? মহাভারতের আলোকে আলোচনা করো।
উত্তরঃ প্রকৃত পক্ষে মহাভারত একটি পরিবর্তনশীল সম্পর্কের কাহিনি। প্রাচীন ভারতের কোন একটি সময়ে জ্ঞাতি সম্পর্কের পরিবর্তন হতে থাকে। একটি পর্যায়ে মহাভারত এই বিষয় নিয়ে একটি কাহিনি। দুটি জ্ঞাতি সম্পর্কের ভ্রাতাগণের রাজ্য ও ক্ষমতা নিয়ে কুলবৈরীতা অথবা জ্ঞাতি বিবাদের বর্ণনা আছে মহাভারতে। কুরুবংশ নামক শাসক পরিবারের অন্তর্ভূত দুটি গোষ্ঠী কৌরব এবং পাণ্ডব একটি জনপদের কর্তৃত্ব নিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে এবং এই বিবাদ এক সময় যুদ্ধের পরে গিয়ে সমাপ্ত হয় যেখানে পাণ্ডবরা বিজয়ী হয়। এর পর পিতৃগোত্রজ উত্তরাধিকার বিঘোষিত হয়। যদিও মহাভারত রচিত হওয়ার আগে থেকেই পিতৃগোত্রজ বংশধারার গুরুত্ব ছিল, মহাভারতের মূল উপাখ্যান এই ধারণাকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। এবং এভাবেই মহাভারতের উপাখ্যান জ্ঞাতি এবং বংশের ধারণাকেও প্রতিষ্ঠিত করে। পিতৃগোষ্ঠীর বংশধারা অনুযায়ী পিতৃবিয়োগের পর পুত্রদের পিতৃসম্পত্তি দাবী করার অধিকার।
প্রশ্নঃ ৮। সাতবাহন কারা ছিলেন? সাতবাহনদের অভিলেখন হতে ওদের গোত্র সম্বন্ধে কী আভাস পাওয়া যায়?
উত্তরঃ সাতবাহনগণ পশ্চিম ভারতে রাজত্ব করা এক শাসক বংশের রাজা ছিলেন। সাতবাহনদের দ্বারা লিখিত অভিলেখন সমূহ থেকে তাদের বংশে গোত্র কীভাবে ধারণ করা হত তার আভাস পাওয়া যায়। তাদের অনেক অভিলেখন পুনরুদ্ধার করা গেছে যেগুলি ইতিহাসবিদদের বিবাহসহ পারিবারিক অনুসন্ধানে সাহায্য করে। কিছু সাতবাহন নৃপতির একাধিক স্ত্রী ছিলেন। সাতবাহন মহিষীদের নামগুলি নির্দেশ করে যে এদের অনেকের নাম পিতার গোত্র হতে উদ্ভূত, যেমন গৌতম এবং বশিষ্ট, এদের পিতার গোত্র। এরা স্বামীর গোত্রের নাম গ্রহণের পরিবর্তে পিতার গোত্র বজায় রাখেন যা ব্রাহ্মণরীতির বিরুদ্ধে ছিল। আরেকটি বিষয় স্পষ্ট যে এদের মধ্যে কিছু একই গোত্রজ ছিলেন যে প্রথা ব্রাহ্মণ গ্রন্থকারদের রীতি অনুযায়ী গোত্র বর্হিভূত বিবাহের পরিপন্থী ছিল। এটি একটি বিকল্প রীতির সন্ধান দেয়, যেখানে একই জ্ঞাতির মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন হত।
প্রশ্নঃ ৯। বর্ণপ্রথা কী ছিল? চারটি বর্ণের লোকেদের জন্য আদর্শ জীবিকা কী ছিল?
উত্তরঃ ব্রাহ্মণ্য মতবাদ অনুযায়ী সমাজের মানুষকে মর্যাদা অনুযায়ী উচ্চ হতে নিম্নে চারটি সামাজিক শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এই বিভাজন প্রথা জন্মসূত্রের উপর নির্ভরশীল ছিল। এই প্রথাকে বর্ণপ্রথা বলা হয়।
বর্ণপ্রথা অনুযায়ী চারটি বর্ণ ছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র। ব্রাহ্মণের স্থান ছিল সর্বোচ্চ যেখানে শূদ্রের স্থান সর্বনিম্ন ছিল।
ধর্মসূত্র এবং ধর্মশাস্ত্রে সমাজের চারটি বর্ণের জন্য আদর্শ পেশারও প্রণিধান আছে। ব্রাহ্মণগণ বেদ অধ্যয়ন এবং অধ্যাপনা করাবেন, যজ্ঞ সম্পন্ন করবেন এবং করাবেন। এরা উপহার প্রদান ও গ্রহণ দুটিই করবেন। ক্ষত্রিয়েরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবেন, জনসাধারণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবেন, ন্যায় বিধান করবেন, বেদ অধ্যয়ন করবেন, যজ্ঞ সম্পন্ন করাবেন এবং উপহার প্রদান করবেন। বৈশ্যদের প্রধান পেশা ছিল বাণিজ্য, কৃষিকাজ এবং পশুচারণ এবং অন্যদিকে শূদ্রদের মূল পেশা ছিল দাসত্ব এবং বাকি তিনটি অন্য বর্ণের সেবা করা।
প্রশ্নঃ ১০। বর্ণপ্রথার সঙ্গে জীবিকার কী সম্বন্ধ ছিল? এই রীতি প্রচলন করার জন্য ব্রাহ্মণরা কী কৌশল প্রয়োগ করেছিলেন?
উত্তরঃ বর্ণপ্রথা অনুযায়ী চারটি বর্ণ ছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র। ব্রাহ্মণের স্থান ছিল সর্বোচ্চ যেখানে শূদ্রের স্থান সর্বনিম্ন ছিল। ধর্মসূত্র এবং ধর্মশাস্ত্রে সমাজের চারটি বর্ণের জন্য আদর্শ পেশারও প্রণিধান আছে। ব্রাহ্মণগণ বেদ অধ্যয়ন এবং অধ্যাপনা করাবেন, যজ্ঞ সম্পন্ন করবেন এবং করাবেন। এরা উপহার প্রদান ও গ্রহণ দুটিই করবেন। ক্ষত্রিয়েরা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবেন, জনসাধারণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবেন, ন্যায় বিধান করবেন, বেদ অধ্যয়ন করবেন, যজ্ঞ সম্পন্ন করাবেন এবং উপহার প্রদান করবেন। বৈশ্যদের প্রধান পেশা ছিল বাণিজ্য, কৃষিকাজ এবং পশুচারণ এবং অন্যদিকে শূদ্রদের মূল পেশা ছিল দাসত্ব এবং বাকি তিনটি অন্য বর্ণের সেবা করা।
এই রীতি প্রচলন করার জন্য ব্রাহ্মণগণ দুই বা তিনটি কৌশল প্রয়োগ করেন। প্রথমতঃ তারা এটা দৃঢ়তার সঙ্গে দাবী করেন যে এই বর্ণাশ্রম ঈশ্বরের নির্দেশে সৃষ্টি করা হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ তারা রাজন্যবর্গকে এই আদর্শবিধির প্রচলন করতে উৎসাহিত করেন এবং তৃতীয়তঃ তারা জনসাধারণকে এটা বিশ্বাস করতে প্ররোচিত করতেন যে তাদের সামাজিক মর্যাদা জন্মসূত্রে নির্ধারিত হবে। যদিও এই উপায় সর্বদা সহজ ছিল না সুতরাং বিধানগুলি প্রায়ই বলীয়ান করা হত মহাভারত ও অন্যান্য গ্রন্থে বলা কাহিনির মাধ্যমে।
প্রশ্নঃ ১১। জাতি এবং বর্ণের মধ্যে কী পার্থক্য ছিল?
উত্তরঃ ব্রাহ্মণরীতি অনুযায়ী সমাজের লোকজনকে মর্যাদা অনুসারে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছিল। এই প্রথাকে বর্ণপ্রথা বলা হত। এই চারটি বর্ণ ছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র। এই প্রথা অনুযায়ী চারটি বর্ণের জন্য আদর্শ পেশা নির্ধারণ করা হয়েছিল। একজন লোকের বর্ণ তার জন্মের উপর নির্ভর করত এবং সেই অনুসারে তার জীবিকা ঠিক হত। অন্যদিকে ব্রাহ্মণ্য সমাজপতিগণ যখন নতুন কোন গোষ্ঠীর সম্মুখীন হতেন যাদের পেশা বর্ণাশ্রমের নির্ধারিত কোন পেশার সঙ্গে মিলত না, তাদের নতুন একটি জাতিতে নামকরণ করতেন। যেমন অরণ্যে বসবাসকারীকে নিষাদ, অথবা পেশায় বা বৃত্তিতে নিয়োজিত কোন গোষ্ঠীর নামকরণ করেছেন। যেমন স্বর্ণ অলংকার প্রস্তুত কারকগণকে ‘স্বর্ণকার’ ইত্যাদি। যেটি চারটি বর্গে বিভাজিত বর্ণাশ্রমে খাপ খায় না, তাদের জাতি হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। যে সকল জাতি একই পেশা অথবা বৃত্তির অংশীদার তারা একটি শ্রেণি বা গোষ্ঠী হিসাবে দলবদ্ধ হয়েছে। বর্ণাশ্রম প্রথা প্রথম থেকেই জন্মের অনুসারে নির্দিষ্ট হয়েছিল। কিন্তু জাতিভেদ প্রথা প্রথমে মানুষের পেশার থেকে উৎপত্তি হয় যদিও পরে তা জন্ম অনুসারে নির্ধারিত হতে থাকে।
প্রশ্নঃ ১২। মহাভারতকে কেন একটি গতিময় প্রাণবন্ত গ্রন্থ বলা হয়?
উত্তরঃ মহাভারত একটি মহান গতিময় এবং প্রাণবন্ত গ্রন্থ। এটা মহাযুদ্ধ, বন, প্রাসাদ, বসতি ইত্যাদির বিবরণ দান করে। মহাভারতের পরিবর্ধন এবং সমৃদ্ধি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এর পরিবর্ধন সংস্কৃত গ্রন্থের সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায়নি। শতাব্দীর পর শতাব্দী বিভিন্ন ভাষায় এর বিভিন্ন রূপান্তর লিখিত হয় মানুষ, সম্প্রদায় এবং যারা গ্রন্থ লেখেন তাদের মধ্যে নিরন্তর চলে আসা বার্তালাপের মাধ্যমে। কিছু বিশেষ অঞ্চলে কিছু নির্দিষ্ট মানুষের মধ্যে প্রচলিত বিভিন্ন কাহিনি ধীরে ধীরে মহাকাব্যটিতে সংযোজিত হয়। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় কাহিনিটি ভিন্নভাবে পুনঃ প্রচারিত হয়েছে। উপাখ্যানগুলি বিভিন্ন সময়ে ক্রমাগতভাবে ভাস্কর্ষে এবং চিত্রে চিত্রিত হয়েছে। মহাভারতের বিভিন্ন উপাখ্যান নাটক, নৃত্য এবং অন্যান্য ধরনের বর্ণনের ক্রিয়াশীল শিল্পের উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই সব কারণেই মহাভারতকে গতিময় প্রাণবন্ত গ্রন্থ বলা হয়।
প্রশ্নঃ ১৩। গৌতমীপুত্র সাতকাণী কে ছিলেন? তার প্রধান কৃতিত্বসমূহ বর্ণনা করো।
উত্তরঃ সাতবাহন বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন গৌতমীপুত্র সাতকাণী।
গৌতমীপুত্র সাতকাণী 106 সাধারণকাল থেকে 130 সাধারণ কাল পর্যন্ত রাজত্ব করেন এবং সাতবাহন বংশের পুনরোখান তার সময়ে ঘটে। সাতবাহন বংশের ‘নাসিক’ প্রশক্তি হতে সাতকাণী সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
গৌতমীপুত্র সাতকাণীকে একাধারে এক অনন্য ব্রাহ্মণ এবং ক্ষত্রিয়দের অহংকার খর্বকারী হিসাবে দাবী করা হয়। তিনি শকদের যুদ্ধে পরাজিত করেন। তিনি একজন সুশাসক ছিলেন যিনি বিভিন্ন কর্মচারীর মধ্যে শাসনভার সুষমভাবে বণ্টন করে দিয়েছিলেন। তিনি চার বর্ণের সদস্যগণের মধ্যে আন্তঃবিবাহ নিষিদ্ধ করেছিলেন এবং একই সঙ্গে তিনি রুদ্দমনের জ্ঞাতির সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। সাতকাণীর রাজত্ব উত্তরে মালতা থেকে দক্ষিণে কর্ণাটক পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তিনি স্থাপত্য এবং ভাস্কর্য শিল্পের প্রভূত উন্নতি সাধন করেন। তিনি বড় পাথর বা পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণের কার্য করিয়েছিলেন।
প্রশ্নঃ ১৪। জাতিভেদ প্রথার কুফল সমূহ লেখো।
উত্তরঃ জাতিভেদ প্রথার কয়েকটি কুফল নিম্নে দেওয়া হল—
(i) জাতীয়তাবাদের বিরোধিতা – জাতিভেদ প্রথার ফলে ব্যক্তি দেশের থেকে নিজের জাতি সমন্ধে বেশি সচেতনতা দেখাতে শুরু করে যা তার জাতীয়তাবোধকে নষ্ট করে।
(ii) সমাজে বিভাজন – জাতিভেদ প্রথার ফলে সমাজে বিভাজন সৃষ্টি হয় ফলে অসৎ ব্যক্তিগণ দুই জাতির লোকেদের মধ্যে বিবাদ বাধিয়ে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা করে।
(iii) ব্যক্তিগত বিকাশে বাধা – জাতিভেদ প্রথার ফলে কোন একটি জাতিতে জন্মগ্রহণ করা ব্যক্তিকে সেই জাতির জন্য নির্ধারিত পেশা গ্রহণে বাধ্য করা হয় যা তার বিকাশে বাধাদান করে।
(iv) বহিঃশত্রুর মোকাবিলাতে সমস্যা – শুধুমাত্র ক্ষত্রিয় জাতির যুদ্ধে অংশ গ্রহণের অনুমতি ছিল। সেজন্য কোন রাজ্যের সৈন্য সংখ্যা কম হয়ে যেত যা বহিঃশত্রুর মোকাবিলাতে সমস্যার সৃষ্টি করত।
প্রশ্নঃ ১৫। “ব্রাহ্মণ্য রীতিসমূহ প্রাচীন ভারতে সার্বজনীন ভাবে গৃহীত হতো না।” কয়েকটি তথ্যের দ্বারা এই উক্তির স্বপক্ষে যুক্তি দাও।
অথবা,
“জ্ঞাতি এবং বিবাহের রীতি-নীতি সমূহ মহাভারতের যুগে সবসময় ব্রাহ্মণ রীতি মেনে হতো না।” — এই তথ্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেখাও।
উত্তরঃ নিচের কয়েকটি তথ্য থেকে এটা প্রমাণিত হয় যে ব্রাহ্মণ্য রীতিসমূহ প্রাচীন ভারতে সার্বজনীনভাবে গৃহীত হয়নি।
(i) ব্রাহ্মণ্য রীতিতে এটা নির্ধারিত ছিল যে মহিলারা বিবাহের সময় পিতার গোত্র ত্যাগ করে স্বামীর গোত্র গ্রহণ করবেন। কিন্তু অনেক সাতবাহন রমণী তা করেননি।
(ii) ব্রাহ্মণ্য গ্রন্থ মতে শুধুমাত্র ক্ষত্রিয়রা যুদ্ধ করবেন এবং দেশ শাসন করবেন। কিন্তু অনেক ব্রাহ্মণও যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং দেশ শাসন করেন।
(iii) অনেক ক্ষেত্রে নিজের বর্ণের বাহিরে বিবাহ সম্পন্ন হত যা ব্রাহ্মণ্য রীতির বিরুদ্ধে ছিল।
(iv) ব্রাহ্মণ্য গ্রন্থ মনুস্মৃতি এবং ধর্মসূত্র মতে শুধুমাত্র পুরুষরাই উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির অধিকারী হতেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মহিলারাও সম্পত্তির অধিকার পেয়েছিলেন। যেমন প্রভাবতী দেবী।
প্রশ্নঃ ১৬। সম্পত্তির অধিকার কীভাবে নারী এবং পুরুষের মধ্যে বিভাজন তীব্র করেছিল আলোচনা করো।
উত্তরঃ মনুস্মৃতি অনুযায়ী পৈত্রিক সম্পত্তি পিতার মৃত্যুর পর ভাইগণের মধ্যে বিভাজিত করে দেওয়ার বিধান ছিল। সবচেয়ে বড় ছেলের এই বিষয়ে বিশেষ অধিকার ছিল। মহিলাদের এই সম্পত্তি দাবী করার কোন অধিকার ছিল না। কিন্তু মেয়েরা বিবাহের সময়ে পাওয়া সকল উপহারাদি নিজেদের অধিকারে রাখতে পারত। এগুলিকে স্ত্রীধন বলা হত। এই সম্পদ তার সন্তান সন্ততিগণ উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করত। এতে স্বামীর কোন অধিকার ছিল না। একই সঙ্গে মনুস্মৃতি স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোন মূল্যবান বস্তু অধিকারে রাখার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছিল। অভিলেখন তথা বিভিন্ন গ্রন্থাদি নির্দেশ করে যে যদিও সম্ভ্রান্ত বংশের মহিলাগণের সম্পত্তিতে প্রবেশগম্যতা ছিল কিন্তু জমি, গবাদি গৃহপালিত পশু এবং অর্থ পুরুষের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এই সব নির্দেশনার ফলে মহিলা ও পুরুষের সামাজিক বৈষম্য বিষয় সম্পত্তিতে অধিকারের পার্থক্যের কারণে তীব্রতর হয়।
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.