Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য

Join Roy Library Telegram Groups

Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য is a textbook prescribed by the AHSEC Board Class 12 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য Solutions are free to use and easily accessible.

Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য Question Answer in Bengali. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. Hs 2nd year History, Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য question answer in Bengali gives you a better knowledge of all the chapters. Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য Assam AHSEC Board HS 2nd Year, Class 12 History Chapter 4 দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য Answers The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Medium Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. Class XII History Solutions Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 History Bengali Medium Textbooks. HS 2nd Year History Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য (সাংস্কৃতিক অগ্রগতি)

প্রথম খণ্ড

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। সাঁচী স্তুপ কোথায় অবস্থিত?

উত্তরঃ ভূপাল হতে ২০ কিমি উত্তর-পূর্বে কংখিরা গ্রামে।

প্রশ্ন ২। সাঁচী স্তুপ কখন আবিষ্কৃত হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮১৮ সালে।

প্রশ্ন ৩। ‘তাজউল – ইকবাল তোয়ারিখ ভূপাল’ নামক গ্রন্থের রচয়িতা কে?

উত্তরঃ সাহজাঁহা বেগম।

প্রশ্ন ৪। সাঁচী স্তুপ কার স্মৃতিসৌধ?

উত্তরঃ গৌতম বুদ্ধের।

প্রশ্ন ৫। সাঁচীকে কখন বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসাবে ঘোষণা করা হয়?

উত্তরঃ ১৯৮৯ সালে।

প্রশ্ন ৬। প্রাচীন বৈদিক যুগের সময়সীমা কত?

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ হতে ১০০০ অব্দ।

প্রশ্ন ৭। বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক কে?

উত্তরঃ গৌতম বুদ্ধ।

প্রশ্ন ৮। গৌতম বুদ্ধ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ কপিলাবস্তু নগরের লুম্বিনী উদ্যানে।

প্রশ্ন ৯। গৌতম বুদ্ধ কোথায় বুদ্ধত্ব লাভ করেন?

উত্তরঃ বুদ্ধগয়ায়।

প্রশ্ন ১০। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের নাম কি?

উত্তরঃ ত্রিপিটক।

প্রশ্ন ১১। জৈন ধর্মের প্রবর্তক কে?

উত্তরঃ মহাবীর।

প্রশ্ন ১২। জৈনদের ধর্মগ্রন্থের নাম লেখ।

উত্তরঃ কল্পসূত্র।

S.L. No.সূচীপত্র
প্রথম খণ্ড
অধ্যায় -1ইট, মনি ও হাড়
অধ্যায় -2রাজা, কৃষক ও নগরসমূহ
অধ্যায় -3জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি (প্রাচীন সমাজ)
অধ্যায় -4দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য (সাংস্কৃতিক অগ্রগতি)
অধ্যায় -5প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ
দ্বিতীয় খণ্ড
অধ্যায় -6পর্যটকদের দৃষ্টিতে (দশম থেকে সপ্তদশ শতক)
অধ্যায় -7ভক্তি ও সুফী পরম্পরা
অধ্যায় -8একটি সাম্রাজ্যবাদী রাজধানী – বিজয়নগর
অধ্যায় -9কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র
অধ্যায় -10কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র
তৃতীয় খণ্ড
অধ্যায় -11উপনিবেশবাদ ও গ্রামাঞ্চল
অধ্যায় -12বিদ্রোহ ও রাজ (১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ)
অধ্যায় -13উপনিবেশিক নগর
অধ্যায় -14মহাত্মা গান্ধী ও জাতীয় আন্দোলন
অধ্যায় -15দেশ বিভাজনের উপলব্ধি
অধ্যায় -16সংবিধান প্রণয়ন
অধ্যায় -17মানচিত্র অঙ্কনকার্য

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দ হতে ৬০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে দার্শনিক সত্য ও ধর্মীয় বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে ঐতিহাসিকগণ কি কি উৎস ব্যবহার করেন?

উত্তরঃ দার্শনিক সত্য ও ধর্মীয় বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে ঐতিহাসিকগণ কর্তৃক ব্যবহৃত উৎসসমূহ নিম্নরূপ:

(ক) বৌদ্ধ, জৈন ও ব্রাহ্মণ সাহিত্য।

(খ) প্রাচীন স্থাপত্য, ভাস্কর্য, স্মৃতিসৌধ ও লিপিসমূহ।

প্রশ্ন ২। সাঁচী স্তুপ কোথায় অবস্থিত? এর একটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তরঃ সাঁচী স্তুপ ভূপাল হতে ২০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে সাঁচী কংখিরা নামক গ্রামে পাহাড়ের উপর অবস্থিত।

এটা ভূপাল রাজ্যের প্রাচীনতম ও বিস্ময়কর বৌদ্ধ স্মৃতিসৌধ।

প্রশ্ন ৩। কে এবং কেন সাঁচীর পূর্বদিকের প্রবেশদ্বার তুলে নিতে চেয়েছিল?

উত্তরঃ ঊনবিংশ শতকে ইউরোপীয়গণ সাঁচী সম্পর্কে অত্যধিক আগ্রহ প্রকাশ করত। ফরাসিগণ সাঁচীর পূর্বদিকের প্রবেশদ্বার উঠিয়ে নিতে সাহজাঁহা বেগমের অনুমতি চেয়েছিলেন। তারা একে ফ্রান্সের যাদুঘরে প্রদর্শনের জন্য নিতে চেয়েছিল।

প্রশ্ন ৪। সাঁচী স্তুপ কে সংরক্ষণ করেছিল? দুইজন পৃষ্ঠপোষক বা সংরক্ষণকারীর নাম উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ভূপাল রাজ্যের শাসকগণ সাঁচী স্তুপ সংরক্ষণ করেছিলেন। বেগম সাহজাঁহা এবং তাঁর উত্তরসূরী সুলতান জাঁহা বেগম এই প্রাচীন স্থাপত্যটি সংরক্ষণের জন্য অর্থ মঞ্জুর করেন।

প্রশ্ন ৫। সাঁচী স্তুপের তাৎপর্য কি?

উত্তরঃ সাঁচী স্তুপের তাৎপর্য নিম্নরূপ:

(ক) সাঁচী স্তুপ সর্বাধিক সংরক্ষিত বৌদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ। এটি একটি বিস্ময়কর স্থাপত্য প্রতিকল্প।

(খ) এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধকেন্দ্র। এর আবিষ্কার বৌদ্ধধর্মের প্রাচীনত্ব সম্পর্কে আমাদের অনুমানের পরিবর্তন করে।

প্রশ্ন ৬। খ্রিস্টপূর্ব একহাজার বছরের মধ্যবর্তীকালের মধ্যবর্তী সময়ে বিশ্ববিখ্যাত চিন্তাবিদদের নাম উল্লেখ কর।

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব একহাজার বছরের মধ্যবর্তীকালের মধ্যবর্তী সময়ে বিশ্ববিখ্যাত চিন্তাবিদদের নাম নিম্নরূপ:

(ক) ইরানের জরাথুষ্ট্র।

(খ) চীনের কং জি।

(গ) গ্রিসে সক্রেটিস, প্লেটো ও অ্যারিস্টটল।

(ঘ) ভারতে মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ।

প্রশ্ন ৭। কোন্ গ্রন্থ আদি বৈদিক পরম্পরা সম্পর্কে তথ্যাদি প্রদান করে? এই গ্রন্থে উল্লিখিত তিনজন দেবতার নাম লেখ।

উত্তরঃ ঋকবেদ আদি বৈদিক পরম্পরা সম্পর্কে তথ্যাদি প্রদান করে। এই গ্রন্থে উল্লিখিত তিনজন দেবতা হলেন — অগ্নি, ইন্দ্র ও সোমা।

প্রশ্ন ৮। প্রাচীনকালের দুইটি যজ্ঞের নাম লেখ। কে এবং কেন তা সম্পাদন করতেন?

উত্তরঃ প্রাচীনকালের দুইটি যজ্ঞ হল রাজসূয় যজ্ঞ ও অশ্বমেধ যজ্ঞ। এই যজ্ঞগুলি রাজাগণ সম্পাদন করতেন।

প্রশ্ন ৯। ভারত উপমহাদেশের বাইরে বৌদ্ধধর্ম বিস্তার হওয়া দেশগুলির নাম লেখ।

উত্তরঃ ভারত উপমহাদেশের বাইরে বৌদ্ধধর্ম বিস্তার হওয়া দেশগুলির নাম হল — চীন, কোরিয়া, জাপান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া।

প্রশ্ন ১০। বৌদ্ধধর্মের দুটি সম্প্রদায়ের উল্লেখ কর।

উত্তরঃ বৌদ্ধধর্মের দুটি সম্প্রদায় হল – 

(ক) হীনযান। এবং 

(খ) মহাযান।

প্রশ্ন ১১। জৈনধর্মের দুটি সম্প্রদায়ের উল্লেখ কর।

উত্তরঃ জৈনধর্মের দুটি সম্প্রদায় হল — 

(ক) দিগম্বর। এবং 

(খ) শ্বেতাম্বর।

প্রশ্ন ১২। বুদ্ধের জীবন সম্পর্কিত চারটি স্থানের নাম লেখ যেখানে স্তুপ নির্মিত হয়েছিল?

উত্তরঃ বুদ্ধের জীবন সম্পর্কিত চারটি স্থানের নাম লেখ যেখানে স্তুপ নির্মিত হয়েছিল হল —

(ক) লুম্বিনী।

(খ) বুদ্ধগয়া।

(গ) সারনাথ। ও 

(ঘ) কুশীনগর।

প্রশ্ন ১৩। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক বুদ্ধদেবের ধর্ম কেন গ্রহণ করেছিল?

উত্তরঃ বুদ্ধদেব জনসাধারণের মধ্যে সত্য ও অহিংসার বাণী পৌঁছে দিতে থাকেন। তিনি বলতেন যে সৎ জীবনযাপনের জন্য বলির বিধানসহ ব্যয়বহুল যাগ – যজ্ঞের কোন প্রয়োজন নেই। জাতিভেদ প্রথারও কোন মূল্য নেই। সৎ পথে থেকে সহজসরল জীবনযাপন করেই মানুষ সুখ – শান্তি লাভ করতে পারে। বুদ্ধ তাঁর বাণী সাধারণ মানুষের ভাষা ‘পালি’-তে প্রচার করতেন। সাধারণ মানুষ বুদ্ধদেবের বাণীতে আকৃষ্ট হয়ে বুদ্ধদেবের ধর্ম গ্রহণ করেছিল।

প্রশ্ন ১৪। বৌদ্ধধর্মের সমসাময়িককালে আর কোন্ ধর্ম বিকশিত হয়েছিল?

উত্তরঃ বৌদ্ধধর্মের সমসাময়িককালে বেশ কয়েকটি নূতন ধর্ম বিকশিত হয়েছিল। এর মধ্যে প্রধান হল জৈন ধর্ম।

প্রশ্ন ১৫। বৌদ্ধধর্মের তিনটি মন্ত্র কি কি?

উত্তরঃ বৌদ্ধধর্মের মন্ত্র তিনটি নিম্নরূপ:

(ক) বুদ্ধং শরণম গচ্ছামি।

(খ) সংঘং শরণম গচ্ছামি।

(গ) ধর্মং শরণম গচ্ছামি।

প্রশ্ন ১৬। বৌদ্ধধর্মের চারটি মহৎ সত্যের উল্লেখ কর।

উত্তরঃ বৌদ্ধধর্মের চারটি মহৎ সত্য নিম্নরূপ:

(ক) পৃথিবী দুঃখময়।

(খ) মানুষের আশা – আকাঙ্খা থেকে দুঃখের উৎপত্তি হয়।

(গ) আশা – আকাঙ্খা দমন করলে মুক্তি সম্ভব হয়।

(ঘ) সেই মুক্তির জন্য অষ্টাংগিক মার্গ বা আটটি পথ অনুসরণের প্রয়োজন আছে।

প্রশ্ন ১৭। অষ্টাংগিক মার্গ বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ অষ্টাংগিক মার্গ হল — সৎ চিন্তা, সৎ সিদ্ধান্ত, সৎ বাক্য, সৎ আচরণ, সৎ কর্ম, সৎ চেষ্টা, সৎ স্মৃতি ও সৎ ধ্যান।

প্রশ্ন ১৮। ত্রিপিটক তিনটি কি কি?

উত্তরঃ ত্রিপিটক তিনটি নিম্নরূপ:

(ক) বিনয় পিটক।

(খ) সূত্ত পিটক।

(গ) অভিধর্ম পিটক।

প্রশ্ন ১৯। পূর্ব কাকে বলে?

উত্তরঃ মহাবীরের বাণীসমূহ পরবর্তীকালে মোট চৌদ্দটি খণ্ডে সংগৃহীত করা হয়। এইগুলোকে একত্রে ‘পূর্ব’ বলে।

প্রশ্ন ২০। আসামে বৌদ্ধধর্মের প্রভাব কিরূপ?

উত্তরঃ আসামে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষ ও বৌদ্ধধর্মের প্রভাব সীমিত হলেও একেবারে নগণ্য নয়। বিশেষত উজান আসামের শ্যাম, আইটনীয়া, চিংফৌ, খামতি প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর লোক আজও বৌদ্ধধর্মের উপাসক।

প্রশ্ন ২১। বাবা গুরু নানকের যে-কোন তিনটি বাণী লেখ।

উত্তরঃ বাবা গুরু নানকের তিনটি বাণী নিম্নরূপ:

(ক) ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস ও ভক্তি রাখবে।

(খ) ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়।

(গ) ঈশ্বর সর্বত্র ও সর্বশক্তিমান।

প্রশ্ন ২২। সর্বপ্রথম কে এবং কবে হাম্পি আবিষ্কার করেছিলেন?

উত্তরঃ কর্নেল কলিন মার্কেন্‌জি নামে একজন ইংরেজ অভিযন্ত্রা ১৮০০ সনে হাম্পি আবিষ্কার করেছিলেন।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। খ্রিস্টপূর্ব একহাজার বছরের মধ্যবর্তী সময়ের প্রথমার্ধকে বিশ্ব ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণ বলে কেন গণ্য করা হয়?

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব একহাজার বছরের মধ্যবর্তীকালের প্রথমদিককে ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণ বলে গণ্য করা হয়। কারণ এই যুগে ইরানে জরাথুস্ট্র, চীনে কংজি, গ্রিসে সক্রেটিস, প্লেটো, অ্যারিস্টোটল, ভারতে মহাবীর, গৌতম বুদ্ধ এবং আরও বহুসংখ্যক দার্শনিক চিন্তাবিদের অভ্যুত্থান প্রত্যক্ষ করেছিল। এইসকল মনীষীগণ অস্তিত্বের রহস্য, মহাজাগতিক প্রচলিত নীতি ও মানব সম্বন্ধে বুঝতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। তদুপরি সেই যুগেই নূতন রাজ্য ও নগরের দ্রুত বিকাশ ঘটেছিল এবং গাঙ্গেয় উপত্যকায় সামাজিক ও আর্থিক জীবনে নানাপ্রকার পরিবর্তন এসেছিল। এইসকল দার্শনিক-চিন্তাবিদ এই অগ্রগতিসমূহের বিষয়েও উপলব্ধি করার চেষ্টা করেছিলেন।

প্রশ্ন ২। ভূপাল রাজ্যের সবচেয়ে প্রাচীন প্রাসাদসমূহ কোথায় ছিল? সাঁচী স্তুপের পূর্বদিকের প্রবেশদ্বার বাইরে নিয়ে যাওয়া হতে কিভাবে রক্ষা করা হয়েছিল?

উত্তরঃ ভূপাল রাজ্যের সর্বাধিক কৌতূহলোদ্দীপক অট্টালিকা সাঁচীর কানাখেরা নামক এক সুন্দর গ্রামে অবস্থিত। গ্রামটি পাহাড়ের ঊর্ধ্বমুখী স্থানে অবস্থিত। এর দূরত্ব ভূপাল হতে ২০ মাইল উত্তর – পূর্বদিকে।

ঊনবিংশ শতকের ইউরোপীয়গণের সাঁচী স্তুপ সম্পর্কে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে সেই একই সময়ে সাঁচীর স্থাপত্য সম্পর্কে ফরাসিগণেরও কৌতূহল দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছিল। তারা উক্ত স্থানের সর্বাধিক সুন্দরভাবে সংরক্ষিত পূর্বদিকের প্রবেশদ্বারটি নিজ দেশে নিয়ে সংগ্রহশালায় রাখার জন্য নবাব সাহজাঁহা বেগমের অনুমতি চেয়েছিলেন। অন্যদিকে কিছুসংখ্যক ইংরাজ শাসকও এই প্রবেশদ্বারটি ইংল্যান্ডে নেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছিল। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে ইংরেজ ও ফরাসি উভয়ই এই দ্বার দুইটির ঢালাই সাঁচ গ্রহণ করে সন্তুষ্ট থাকতে হল এবং মূলদ্বারখানি যেখানে ছিল সেখানেই থাকল।

প্রশ্ন ৩। প্রাচীন যুগে ভারতে উৎসর্গ-সংক্রান্ত পরম্পরা কি ছিল?

উত্তরঃ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ হতে ১৮০০ অব্দের মধ্যে সংকলিত ঋকবেদ নামে পরিচিত বৈদিক পরম্পরার গ্রন্থখানাকে ধরে অনাদিকাল হতে চলে আসা ও পরম্পরাগতভাবে ধর্মীয় প্রত্যয় তথা বিশ্বাস ও লোকাচারের বিষয়ে জানতে পারা গিয়েছে। বহু দেবদেবী, বিশেষত অগ্নি, ইন্দ্র এবং সোমার গুণগান সম্বলিত শ্লোকসমূহে ঋকবেদ সমৃদ্ধ হয়েছে। উৎসর্গের সময় এইরূপ বহুসংখ্যক শ্লোক উচ্চারিত হয়েছিল এবং সমবেত সকলে গোধন, সন্তান, সু – স্বাস্থ্য সং সুদীর্ঘ জীবন বাসনায় প্রচলিত প্রার্থনায় অংশগ্রহণ করেছিল।

প্রথমদিকে উৎসর্গসমূহ সামগ্রিকভাবে সম্পাদনা করা হত। কিন্তু পরবর্তীকালে (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১০০০-৫০০ এবং পরবর্তী সময়) কোন কোন ক্ষেত্রে বাড়ির কর্তা পরিবারের মঙ্গল কামনা করে এই কাজ সম্পাদন করতেন। অধিক বাহুল্যকরণে ‘রাজসূয়’ ও ‘অশ্বমেধ’ যজ্ঞের সময় ব্রাহ্মণ পুরোহিতগণ দ্বারা পরিচালিত ধর্মীয় নীতি-নিয়মের মধ্যে স্বয়ং দলপতি বা রাজাই উৎসর্গ কার্য সমাধা করতেন।

প্রশ্ন ৪। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতককে ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে গণ্য করা হয় কেন?

উত্তরঃ নিম্নলিখিত কারণে খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতককে ভারতের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলা হয়:

(ক) খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে বৈদিক পরম্পরা তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল। উপনিষদের গুরুত্ব বৃদ্ধির ফলে ধ্যানের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। জনগণ নির্বাণ লাভের নূতন পথ খুঁজে পেতে কৌতূহলোদ্দীপক হয়। ফলস্বরূপ, সমাজে নূতন নূতন দার্শনিক প্রত্যয় আবির্ভূত হয়।

(খ) নূতন দার্শনিক প্রত্যয় আবির্ভাবের ফলে বহু নূতন ধর্মীয় গোষ্ঠী জন্মলাভ করে। এদের মোট সংখ্যা ৬২টি ছিল। এইগুলির মধ্যে একমাত্র জৈনধর্ম ও বৌদ্ধধর্ম জনগণকে অধিক প্রভাবিত করেছিল।

(গ) জৈনধর্ম ও বৌদ্ধধর্ম ধ্যান ও আত্ম – নিয়ন্ত্রণের উপর গুরুত্ব প্রদান করে। তাদের মতবাদ উপনিষদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। সুতরাং উপনিষদের দার্শনিক প্রত্যয় জনপ্রিয়তা লাভ করে।

প্রশ্ন ৫। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে নূতন ধর্মীয় মতবাদ আবির্ভাবের কারণসমূহ দেখাও।

উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উত্তর পূর্ব ভারতে অনেক নূতন ধর্মীয় মতবাদ আবির্ভূত হয়েছিল। এর প্রধান কারণসমূহ নিম্নরূপ:

(ক) বৈদিক ধর্মের জটিলতা: আদিপর্বে বৈদিক সভ্যতা অত্যন্ত সহজ ও সরল ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে তা জটিল হয়ে যায়। সুতরাং জনগণ একটি সহজ ধর্ম চেয়েছিল।

(খ) জাতিভেদ প্রথা ও অস্পৃশ্যতা: শূদ্রকে উচ্চ তিন বর্ণের মানুষ অত্যন্ত ঘৃণা করত। এই নিম্নশ্রেণীর মানুষ অন্য একটি নতুন ধর্মের প্রত্যাশা করেছিল যা তাদের যথার্থ মর্যাদা দিতে পারে।

(গ) জটিল ভাষা: বৈদিক ধর্মের সকল গ্রন্থই সংস্কৃত ভাষায় লিখিত ছিল। সাধারণ মানুষ সংস্কৃতের মতো এত জটিল ভাষা উপলব্ধি করতে পারত না।

(ঘ) মহামানবের জন্ম: খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা হিন্দুধর্মে কিছু সংস্কার আনয়ন করেন এবং একে নূতন পর্যায়ে উপস্থাপন করেন। তাঁদের মতবাদ জৈনধর্ম ও বৌদ্ধধর্ম নামে সমধিক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

প্রশ্ন ৬। মহাযান বৌদ্ধধর্মের অগ্রগতি সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দী হতে বৌদ্ধধর্মের ধারণা ও ক্রিয়াকাণ্ডের অনেক পরিবর্তন হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। পুরানো বৌদ্ধধর্ম নিজ চেষ্টায় নির্বাণ লাভে যথেষ্ট গুরুত্ব প্রদান করেছিল। তদুপরি বুদ্ধকে একজন ব্যক্তি হিসাবে ধরে তাঁরা নিজের প্রচেষ্টায় জ্ঞান ও নির্বাণ লাভ করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়েছিল। কিন্তু সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বৌদ্ধধর্মে ত্রাণকর্তার ধারণার উদ্ভব ঘটে। ফলে এই জনই একমাত্র মুক্তিদাতা — এইরূপ একটি বদ্ধমূল বিশ্বাস মাথাচড়া দিয়া ওঠে। অতিশয় দয়ালু বলে পরিচিত বোধিসত্ত্বগণ নিজ প্রচেষ্টায় বহুগুণের অধিকারী হয় এবং পুঞ্জীভূত সৎগুণসমূহের দ্বারা নির্বাণ লাভ করে পৃথিবী হতে চলে যাওয়া উচিত বলে তাঁরা মনে করেন। বুদ্ধ ও বোদ্ধিসত্ত্বের মূর্তিপূজা নব্য বৌদ্ধধর্মের একটি আবশ্যকীয় পরম্পরায় পরিণত হয়েছিল।

এই নূতন চিন্তাধারাটি মহাযান নামে পরিচিত হয়েছিল। এই নব্য বৌদ্ধধর্ম গ্রহণকারীগণ পুরানো পরম্পরাপন্থীগণকে হীনযান নাম দেন।

প্রশ্ন ৭। ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের অবনতির কারণসমূহ কি কি ছিল?

উত্তরঃ ভারতে বৌদ্ধধর্মের অবনতির প্রধান কারণসমূহ নিম্নরূপ:

(ক) মৌর্যবংশের পতনের পর ব্রাহ্মণ্য ধর্মাবলম্বী সূঙ্গ বংশের অভ্যুত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই বৌদ্ধধর্ম রাজপ্রসাদ লাভে বঞ্চিত হয় এবং এর অবনতি আরম্ভ হয়। কুষাণ সম্রাটগণের মধ্যে কয়েকজন বৌদ্ধধর্মের অনুরক্ত ছিলেন বটে, কিন্তু সরল ও সহজ নৈতিক অনুশাসনগুলির পরিবর্তে বুদ্ধদেবের পূজা ও বুদ্ধভক্তি প্রাধান্যলাভ করেছিল। তখন তা হিন্দুধর্মেরই এক শাখায় পরিণত হয়ে পড়ে।

(খ) তান্ত্রিক মতবাদের প্রাধান্য লাভের ফলে প্রাচীন বৌদ্ধধর্মের পবিত্রতা বিনষ্ট হয়। উত্তর ভারতের গুপ্তসম্রাটগণের ও তাঁদের পরবর্তী কয়েকটি রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায়, কুমারিল ভট্ট, শঙ্করাচার্য প্রভৃতি ধর্মপ্রচারকগণের প্রভাবে এবং লিঙ্গায়েৎ, শ্রীবৈষ্ণব প্রভৃতি সম্প্রদায়ের আবির্ভাবে ব্রাহ্মণ্যধর্মের পুনরুত্থান হল।

(গ) মিহিরকুল এবং বখতিয়ার খিলজীর মতো শাসকদের বৌদ্ধ – বিদ্বেষ ও আক্রমণের ফলে বৌদ্ধধর্মের প্রভাব ভারতবর্ষ হতে প্রায় বিলীন হয়ে গেল। কিন্তু বৌদ্ধ দর্শন এবং মৈত্রী, করুণা, অহিংসা মন্ত্রের প্রভাব আজও ভারতবাসীকে পৃথিবীর সম্মুখে গৌরবান্বিত করছে।

প্রশ্ন ৮। হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধধর্মের মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্যসমূহ দেখাও।

উত্তরঃ হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধধর্মের মধ্যে নানা বিষয়ে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আছে:

(ক) জৈন এবং বৌদ্ধরা হিন্দু ধর্মের কর্মফল ও জন্মান্তরবাদে বিশ্বাসী।

(খ) কিন্তু তাঁরা বেদবিরোধী এবং যাগযজ্ঞ, পশুবলির নিন্দাকারী। বৌদ্ধ ও জৈন উভয়েই জাতিভেদের বিরোধী; কিন্তু জাতিভেদের প্রতি বিতৃষ্ণা ও জৈনধর্ম অপেক্ষা বৌদ্ধধর্মে অধিক তীব্র।

(গ) উভয় ধর্মের প্রধান অঙ্গ অহিংসা এবং পবিত্র নৈতিক জীবনযাপন।

(ঘ) কিন্তু জৈনদিগের অহিংসার ধারণা বৌদ্ধদিগের অপেক্ষা বেশি ব্যাপক।

(ঙ) হিন্দুধর্মের সঙ্গে বৌদ্ধধর্ম অপেক্ষা জৈনধর্মের সাদৃশ্য বেশি। জৈনগণ হিন্দুদের ন্যায় ধর্মকার্যে পুরোহিত নিয়োগ করেন এবং হিন্দুদের কোন কোন দেবতার পূজ়াও করেন।

প্রশ্ন ৯। হীনযান ও মহাযান বলতে কি বোঝ? তাদের মধ্যে পার্থক্য দর্শাও।

উত্তরঃ খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকে বৌদ্ধধর্মারলম্বীরা দুইটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়, যথা — হীনযান ও মহাযান। মহাযান হল বৌদ্ধধর্মের নূতন রূপ। কণিষ্কের রাজত্বকালে বৌদ্ধধর্মের এই দিক প্রকাশিত হয়।

হীনযানগণ নিরাকার সাধনা ও আত্ম – অনুশীলনের দ্বারা নির্বাণ লাভ করাকেই শ্রেষ্ঠধর্ম বলে মনে করেন। কিন্তু মহাযানীরা বুদ্ধকে অবতার হিসাবে প্রতিষ্ঠা করে পূজার্চনার মাধ্যমে নির্বাণ লাভের সিদ্ধান্ত নেন।

হীনযান ও মহাযানদের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ:

হীনযানমহাযান
(ক) হীনযানগণ ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন না। তাঁরা বুদ্ধকে তাঁদের ঈশ্বর বলে মনে করেন।(ক) মহাযানগণ ঈশ্বরে বিশ্বাস, করেন। তাঁরা বুদ্ধকে তাঁদের ঈশ্বর মনে করে।
(খ) হীনযানে মূর্তিপূজার কোনো স্থান নেই।(খ) মহাযানে মূর্তিপূজা প্রচলিত।
(গ) হীনযানদের বুদ্ধের প্রতি আস্থা আছে কিন্তু বোধিসত্ত্বের উপর কোন আস্থা নেই।(গ) মহাযানগণ বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্বকে পূজা করেন।
(ঘ) হীনযানগণ অষ্টমার্গকে পবিত্র জীবনযাপনের উপায় বলে মনে করেন।(ঘ) মহাযানগণ সৎ জীবনের জন্য বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্বের পূজার উপর গুরুত্ব প্রদান করেন।
(ঙ) হীনযানদের মতে জীবের প্রধান উদ্দেশ্য হল নির্বাণ লাভ।(ঙ) মহাযানদের মতে স্বর্গলাভ জীবনের মুখ্য উদ্দেশ্য।

প্রশ্ন ১০। সাঁচী স্তুপ টিকেছিল, কিন্তু অমরাবতী স্তুপটি নেই কেন?

উত্তরঃ অমরাবতী স্তুপ সাঁচী স্তুপের বহুপূর্বে আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু পণ্ডিতগণ সেইসময় এইসব স্মৃতিসৌধ রক্ষা করার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেননি। সাঁচী স্তুপ ১৮১৮ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এইসময় চারটি প্রবেশদ্বারের তিনটি সঠিক অবস্থায় ছিল। এইগুলি এখনও পর্যন্ত সুন্দর অবস্থায় আছে। চতুর্থ প্রবেশদ্বারটি বর্তমানে ভগ্নাবস্থা প্রাপ্ত। সম্পূর্ণ গম্বুজটি সুন্দর অবস্থায় আছে। অন্যদিকে অমরাবতীর মহাচৈত্য গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। তা বর্তমানে অতীতের গৌরব হারিয়েছে।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top