Class 11 Political Science Chapter 16 নাগরিকত্ব

Join Roy Library Telegram Groups

Class 11 Political Science Chapter 16 নাগরিকত্ব, AHSEC Class 11 Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 11 Political Science Chapter 16 নাগরিকত্ব The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Class 11 Political Science Chapter 16 নাগরিকত্ব Solutions are free to use and easily accessible.

Class 11 Political Science Chapter 16 নাগরিকত্ব

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই PDF, Assam Board Class 11 Political Science Question Answer in Bengali Class 11 Political Science Chapter 16 নাগরিকত্ব The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 1st Year Political Science Notes in Bengali, Class 11 All Books PDF File Download in Bengali Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 11 Political Science Solution in Bengali, HS 1st Political Science Suggestion in Bengali, একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান Question answer in Bengali, Class 11 Political Science Chapter 16 নাগরিকত্ব The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. NCERT Class 11 Political Science Solution, will be able to solve all the doubts of the students. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান প্রশ্ন উত্তর, Class XI Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 11 Political Science Textbooks Solution. একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান সাজেশন 2023 Assam AHSEC Class 11 Political Science Suggestion are present on Roy Library’s website in a systematic order.

নাগরিকত্ব

একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান

দ্বিতীয় খণ্ড

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। টি. এইচ. মার্শাল কে?

উত্তরঃ টি. এইচ. মার্শাল একজন ব্রিটিশ সমাজতত্ত্ববিদ। 

প্রশ্ন ২। প্রাচীন গ্রীস ও রোমে কারা নাগরিক হিসাবে গণ্য হতেন?

উত্তরঃ ‘নগর রাষ্ট্রের সভ্যগণ নাগরিক হিসাবে গণ্য হতেন। 

প্রশ্ন ৩। সুনাগরিকের একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ কী?

উত্তরঃ রাজনৈতিক সচেতনতা।

প্রশ্ন ৪। নাগরিক কে?

অথবা,

নাগরিকত্বের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ নাগরিক হল রাষ্ট্রের ভেতর স্থায়ী বসবাসকারী ও রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনকারী ব্যক্তি; যে ব্যক্তি রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত সকল প্রকারের অধিকার ভোগ করে এবং সমাজের সার্বিক উন্নতির জন্য তার সুচিন্তিত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে।

প্রশ্ন ৫। বিদেশি কে?

উত্তরঃ কর্তব্য সম্পাদনের জন্য যখন কেউ নিজ রাষ্ট্র পরিত্যাগ করে সাময়িক সময়ের জন্য অন্য রাষ্ট্রে গিয়ে বসবাস করে তখন তাকে বিদেশি বলে। 

প্রশ্ন ৬। নাগরিকত্ব হারানোর একটি শর্ত লেখ?

উত্তরঃ কেউ যদি সেনাবাহিনী হতে পলায়ন করে তবে তার নাগরিকত্ব একেবারে লোপ পায়। 

প্রশ্ন ৭। কে ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করতে পারে?

উত্তরঃ ভারতীয় সংসদ।

প্রশ্ন ৮। Citizen (নাগরিক) শব্দটি কোন্ শব্দ হতে উদ্ভূত হয়েছে? 

উত্তরঃ ল্যাটিন শব্দ ‘Civis’ থেকে উদ্ভূত হয়েছে।

প্রশ্ন ৯। ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব’ ও ‘অনুমোদনের মাধ্যমে নাগরিকত্বের মধ্যে পার্থক্য করা হয় না এমন দুটি দেশের নাম লেখো?

উত্তরঃ ভারত ও ব্রিটেন।

প্রশ্ন ১০। ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব’ ও ‘অনুমোদনের মাধ্যমে নাগরিক’– এর মধ্যে পার্থক্য করা হয় এমন একটি দেশের নাম লেখো?

উত্তরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

প্রশ্ন ১১। জন্মসূত্রে লাভ করা নাগরিকত্বের একটি নীতি উল্লেখ করো?

উত্তরঃ রক্তের সম্পর্ক (Jus Sanguinis) নীতি।

প্রশ্ন ১২। একজন বিদেশীকে রাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা যায়। (হ্যাঁ বা না লেখো)

উত্তরঃ হ্যাঁ।

প্রশ্ন ১৩। ভারতবর্ষে দ্বি-নাগরিকত্ব ব্যবস্থা প্রচলিত। (হ্যাঁ বা না লেখো)

উত্তরঃ না।

প্রশ্ন ১৪। কোন্ দেশে দ্বি–নাগরিকত্ব ব্যবস্থা প্রচলিত?

উত্তরঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

প্রশ্ন ১৫। অষ্টাদশ শতকে ফরাসী বিপ্লবীগণ ‘স্বাধীনতা, সমতা এবং ………… রণধ্বনি ব্যবহার করেছিল। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তরঃ ভ্রাতৃত্ব।

সঠিক বেছে লেখোঃ

প্রশ্ন ১। নাগরিকত্ব অর্জন করা যায়–

(ক) দীর্ঘকাল বসবাসের দ্বারা।

(খ) বিবাহ দ্বারা।

(গ) সরকারি চাকরি গ্রহণের দ্বারা।

(ঘ) উপরের সবকয়টি।

উত্তরঃ (ঘ) উপরের সবকয়টি।

প্রশ্ন ২। নীচের কোনটি সুনাগরিকের গুণাবলীর মধ্যে পড়ে না?

(ক) শিক্ষা।

(খ) দেশভক্তি।

(গ) সুস্বাস্থ্য।

(ঘ) অজ্ঞতা।

উত্তরঃ (ঘ) অজ্ঞতা।

প্রশ্ন ৩। নীচের কোনটি নাগরিকের কর্তব্য নয়? 

(ক) রাষ্ট্রের আইন মান্য করা।

(খ) কর প্রদান।

(গ) রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য।

(ঘ) দেশ দ্রোহিতা প্রদর্শন করা।

উত্তরঃ (ঘ) দেশ দ্রোহিতা।

প্রশ্ন ৪। ভারতীয় নাগরিকের ভোটাধিকারের নিম্নতম বয়স সীমা কত?

(ক) ১৮ বছর।

(খ) ২১ বছর।

(গ) ১৫ বছর।

(ঘ) ২৫ বছর।

উত্তরঃ (ক) ১৮ বছর।

প্রশ্ন ৫। কাজের অধিকার একটি রাজনৈতিক অধিকার। ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ লেখো।

উত্তরঃ না। 

S.L. No.সূচীপত্র
প্রথম খণ্ড
পাঠ – ১সংবিধান প্রণয়নঃ সংবিধানঃ কেন এবং কিভাবে?
পাঠ – ২ভারতীয় সংবিধানে অধিকার
পাঠ – ৩নির্বাচন ও প্রতিনিধিত্ব 
পাঠ – ৪সংসদীয় সরকারের কার্যপালিকা
পাঠ – ৫কেন্দ্র ও রাজ্য
পাঠ – ৬বিচার বিভাগ 
পাঠ – ৭যুক্তরাষ্ট্রবাদ 
পাঠ – ৮স্থানীয় সরকার 
পাঠ – ৯জীবন্ত দলিলরূপে সংবিধান
পাঠ – ১০সংবিধানের রাজনৈতিক দর্শন
দ্বিতীয় খণ্ড
পাঠ – ১১রাজনৈতিক তত্ত্বঃ এক ভূমিকা
পাঠ – ১২স্বাধীনতা
পাঠ – ১৩ সমতা
পাঠ – ১৪সামাজিক ন্যায়
পাঠ – ১৫অধিকার
পাঠ -১৬নাগরিকত্ব
পাঠ -১৭জাতীয়তাবাদ
পাঠ -১৮ধর্মনিরপেক্ষতা
পাঠ -১৯শান্তি
পাঠ -২০উন্নয়ন

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। নাগরিকের দুটি কর্তব্য লেখো?

উত্তরঃ নাগরিকের দুটি কর্তব্য হলঃ

(ক) রাষ্ট্রের আইন মেনে চলা।

(খ) কর প্রদান করা।

প্রশ্ন ২। সুনাগরিকের যে কোনো দুটি গুণাবলী উল্লেখ করো?

উত্তরঃ সুনাগরিকের প্রধান দুটি গুণ হলঃ

(ক) রাজনৈতিক সচেতনতা।

(খ) বুদ্ধি মত্তা।

(গ) নির্ভীকতা।

প্রশ্ন ৩। নাগরিক ও বিদেশির মধ্যে পার্থক্য দেখাও?

উত্তরঃ নাগরিক ও বিদেশির মধ্যে আইনগত দিক দিয়ে উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। এই পার্থক্যগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) স্থায়ী বাসিন্দাঃ নাগরিক নিজ রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। কিন্তু বিদেশি অন্যরাষ্ট্রে অস্থায়ী ভাবে বসবাস করে। 

(খ) আনুগত্যঃ নাগরিক নিজ রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে দায়বদ্ধ। কিন্তু বিদেশি পর রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে বাধ্য নয়। 

(গ) অধিকারঃ নাগরিক রাজনৈতিক অধিকার সহ সকল অধিকার উপভোগের অধিকারী। কিন্তু বিদেশির কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই। 

প্রশ্ন ৪। নাগরিকত্ব অর্জনের যে কোনো দুটি পদ্ধতি লেখো?

উত্তরঃ নাগরিকত্ব অর্জনের দুটি পদ্ধতি নিম্নরূপঃ

(ক) জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জন।

(খ) অনুমোদন দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জন। 

প্রশ্ন ৫। দেশীয়করণ দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জন বলতে তুমি কী বোঝ?

উত্তরঃ দেশীয়করণ দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জন হল বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন উপায়ে বিদেশিকে অনুমোদনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রদান করা। যদি কোন ব্যক্তি অন্য রাষ্ট্রের অধীনে চাকরি গ্রহণ করে, বা দীর্ঘদিন বসবাস করে বা সেই দেশে সম্পত্তি ক্রয় করে বা সেই দেশের সেনাবাহিনীতে যোগদান করে অথবা সেই দেশে অবস্থানকালে সেই দেশের বিধিবন্ধ শর্ত মেনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করে তাহলে সেই দেশ তার নাগরিকত্ব অনুমোদন করতে পারে। তবে কোন মহিলা যদি অন্য কোন দেশের পুরুষকে বিবাহ করে, তাহলে সেই মহিলা তার স্বামী যে রাষ্ট্রের নাগরিক সেই রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করে। অনুমোদনের দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জনের ক্ষেত্রে নাগরিকত্বের পরিবর্তন ঘটে। 

প্রশ্ন ৬। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জন সম্পর্কে একটি টীকা লেখো?

উত্তরঃ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জনের দুটি পদ্ধতি আছে যথা – 

(ক) রক্ত সম্পর্ক ( Jus Sanguinis)। এবং 

(খ) জন্মস্থান নীতি (Jus Soli)।

(ক) রক্ত সম্পর্কঃ রক্তের সম্পর্ক নীতি অনুসারে পিতা–মাতার নাগরিকত্ব অনুযায়ী তার সন্তানদের নাগরিকত্ব নির্ধারিত হয়। 

(খ) জন্মস্থান নীতিঃ জন্মস্থান নীতি অনুসারে ব্যক্তির জন্মস্থান অনুযায়ী তাঁর নাগরিকত্ব স্থির হয়। এক্ষেত্রে পিতা মাতা বিদেশি হলেও সন্তানের জন্মস্থান অনুযায়ী সন্তান নাগরিকত্ব লাভ করে। 

প্রশ্ন ৭। নাগরিকত্ব ও অধিকারের মধ্যে সম্পর্ক কী?

অথবা,

নাগরিকত্ব ও অধিকারের সম্পর্ক উল্লেখ করো। 

উত্তরঃ নাগরিকত্ব ও অধিকারের মধ্যে একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। রাষ্ট্র স্বীকৃত অধিকারগুলো বিশেষ করে রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নাগরিক হতে হয়। নাগরিকের অধিকারই তাকে সামাজিক মর্যাদা ও সুরক্ষা প্রদান করে। কতিপয় অধিকার ব্যতীত নাগরিকত্বের মূল্য অর্থহীন। রাষ্ট্রের নাগরিক হলেই অধিকার

অর্জনে ব্যক্তি সক্ষম হয়। সুতরাং নাগরিকত্ব ও অধিকার অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। 

প্রশ্ন ৮। যদি একজন ব্যক্তি দীর্ঘদিন নিজ রাষ্ট্রের বাইরে অবস্থান করে তাহলে তার নাগরিকত্ব কী হয়?

উত্তরঃ নিজ রাষ্ট্রের অনুমতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তি যদি দীর্ঘকাল যাবৎ নিজ দেশে অনুপস্থিত থাকে তাহলে তার নিজ রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লোপ পায়। দীর্ঘকাল অনুপস্থিতি বলতে সাধারণত ৭ বছরের অনুপস্থিতি বোঝায়। নাগরিকত্ব হানির এটা একটি অন্যতম কারণ। 

প্রশ্ন ৯। লর্ড ব্রাইস সুনাগরিকের পথে তিনটি ত্রুটির কথা বলেছেন। এই ত্রুটি তিনটি কী কী? 

উত্তরঃ ত্রুটি তিনটি হলঃ 

(ক) নির্লিপ্ততা।

(খ) স্বার্থপরতা। ও 

(গ) সংকীর্ণ দলীয় মনোভাব।

প্রশ্ন ১০। নাগরিক ও বিদেশির মধ্যে সাদৃশ্য আছে এমন দুটি বিষয় লেখো?

উত্তরঃ নাগরিক ও বিদেশির মধ্যে সাদৃশ্যগুলো হল– 

(ক) উভয়ে রাষ্ট্রীয় আইন মেনে চলতে বাধ্য। ও 

(খ) রাষ্ট্র উভয়কে সুরক্ষা প্রদান করে। 

প্রশ্ন ১১। নাগরিক ও বিদেশীর মধ্যে একটি পার্থক্য দেখাও?

উত্তরঃ নাগরিক রাজনৈতিক অধিকারসহ সকল প্রকারের অধিকার ভোগ করে, কিন্তু বিদেশীর রাজনৈতিক অধিকার নেই। 

প্রশ্ন ১২। সুনাগরিকের যে কোনো দুটি গুণ উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ সুনাগরিকের দুটি গুণ হলঃ

(ক) বুদ্ধিমতা। এবং 

(খ) রাজনৈতিক সচেতনতা।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। সুনাগরিকের তিনটি গুণ উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ সুনাগরিকের তিনটি গুণ হলঃ 

(ক) বুদ্ধিমত্তা।

(খ) আত্ম সংযম।

(গ) রাজনৈতিক সচেতনতা।

প্রশ্ন ২। শরনার্থীরা কী কী সমস্যাবলীর সম্মুখীন হয়?

উত্তরঃ শরনার্থীরা সাধারণত নিম্নোক্ত সমস্যাবলীর সম্মুখীন হয়ঃ

(ক) আশ্রয়ের সমস্যা।

(খ) থানা সমস্যা।

(গ) পরিধানের সমস্যা। 

(ঘ) স্থায়ী বাসস্থানের সমস্যা।

(ঙ) নাগরিকতা, অধিকার প্রভৃতির সমস্যা।

প্রশ্ন ৩। সমান অধিকারের অর্থ ব্যাখ্যা করো? 

উত্তরঃ রাষ্ট্রের সকল নাগরিক সমান অধিকার ও সুযোগ–সুবিধা ভোগ করে। কারণ নাগরিক হল রাষ্ট্রের পূর্ণ ও সমান সদস্যপদের অধিকারী। সুতরাং অধিকার উপভোগ করার ক্ষেত্রে সকল নাগরিকই সমান। তাদের মধ্যে কোন ধরনের অসমতা নেই। এজন্য সমান অধিকারের অর্থ হল রাষ্ট্রের নাগরিকের মর্যাদা সমান এবং তাদের সদস্যপদ পূর্ণ ও সমতা নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত।

প্রশ্ন ৪। “স্বাধীনভাবে চলাফেরা” বলতে তুমি কী বুঝ? 

অথবা,

স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ স্বাধীনভাবে চলাফেরা বা চলাফেরা স্বাধীনতা ভারতীয় নাগরিকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। আমাদের সংবিধানের ১৯ (১) (ঘ) [Art. 19 (1) (d)] নং অনুচ্ছেদে নাগরিকদের জন্য স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার অধিকার বিধিবদ্ধ আছে। একজন ভারতীয় নাগরিক ভারতের যে কোনো এক অঞ্চল হতে অন্য অঞ্চলে যেতে বা প্রব্রজন করতে পারেন। বিশেষ করে শ্রমিকদের জন্য এ অধিকারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সংবিধানে এ অধিকারটিকে মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। 

প্রশ্ন ৫। নাগরিকের রাজনৈতিক অধিকার ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ নাগরিকের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধিকার হল রাজনৈতিক অধিকার। এ রাজনৈতিক অধিকার নাগরিক ও বিদেশির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করে। নাগরিকের প্রধান রাজনৈতিক অধিকার হল ভোটদানের অধিকার এবং নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অধিকার। ভোটাধিকার প্রয়োগ ও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মাধ্যমে একজন নাগরিকের নাগরিকত্ব প্রমাণিত হয়। রাজনৈতিক দল গঠন করা, সরকারের সমালোচনা করা প্রভৃতি হল নাগরিকের অন্যান্য রাজনৈতিক অধিকার।

প্রশ্ন ৬। কীভাবে সুনাগরিকতার পথে দারিদ্রতা একটি বড় বাধা বা অন্তরায়? 

উত্তরঃ দারিদ্রতা সুনাগরিকতার পথে একটি বড় বাধা বা অন্তরায় স্বরূপ। দরিদ্র্য শ্রেণীর লোকেরা তাদের অধিকার সততার সঙ্গে প্রয়োগ করতে সক্ষম হয় না। অর্থের জন্য প্রায়ই এই শ্রেণীর লোকেরা তাদের অধিকারগুলোর অপব্যবহার করে থাকে। ভ্রষ্ট রাজনীতিবিদগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো অর্থ ঘুষ দিয়ে তাদেরকে রাজনৈতিক অধিকারের অপব্যবহার করতে বাধ্য করে। তারা নির্বাচনের সময় যোগ্য প্রার্থীকে ভোট প্রদান করে না। অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট দান করে। তাই দারিদ্রতা সুনাগরিকতার পথে একটি বড় বাধা।

প্রশ্ন ৭। মার্টিন লুথার কিং–এর নাগরিকত্ব সম্পর্কে ধারণার একটি সংক্ষিপ্ত টাকা লেখো? 

উত্তরঃ ১৯৫০ সালে আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকারের জন্য আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল। এ আন্দোলনের মূল দাবি ছিল শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে থাকা বৈষম্যের অবসান ঘটানো। কারণ আমেরিকায় সে সময় কৃষ্ণাঙ্গদের পৌর ও রাজনৈতিক অধিকারসমূহ উপভোগ করা হতে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল।

মার্টিন লুথার কিং একজন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান ছিলেন। তিনি এই শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে থাকা বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। তিনি আমেরিকা সরকারের শ্বেতাঙ্গদের সকল প্রকার অধিকার প্রদান ও কৃষ্ণাঙ্গদের পৌর ও রাজনৈতিক অধিকার হতে বঞ্চিত রাখার আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গদের মধ্যের এই বৈষম্য নীতিকে তিনি “সামাজিক কুষ্ঠ” হিসাবে আখ্যা দেন এবং এটি অবসানের দাবি করেন। তাঁর মতে সমাজের শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গ উভয় বর্ণের মানুষের সমান অধিকার। শ্বেতাঙ্গদের সাথে কৃষ্ণাঙ্গরাও রাজনৈতিক অধিকারের দাবিদার। কারণ রাজনৈতিক অধিকার ও পৌর অধিকার ব্যতীত নাগরিকত্বের মূল্য অর্থহীন। তিনি অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে এই বৈষম্য নীতির প্রতিবাদ করেছিলেন। মূলত তাঁর জন্যই আমেরিকায় এই নীতির অবসান হয়। তিনি নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ছিলেন।

প্রশ্ন ৮। সুনাগরিকতার পথে প্রধান অন্তরায়গুলো কী কী? আলোচনা করো?

 উত্তরঃ সুনাগরিকতার পথে প্রধান বাধা বা অন্তরায়গুলো নিম্নরূপঃ

(ক) অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতাঃ সুনাগরিকত্বের পথে প্রধান অন্তরায় হচ্ছে অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতা। কারণ সুশিক্ষা ব্যতীত সুনাগরিক হওয়া অসম্ভব। সার্বিকভাবে বিকাশের জন্য শিক্ষার প্রয়োজন। অশিক্ষিত–অজ্ঞ নাগরিক রাষ্ট্রের জন্য চিন্তা করতে সক্ষম হয় না।

(খ) স্বার্থপরতাঃ স্বার্থপরতা সুনাগরিকত্ব অর্জনের পথে আরেকটি প্রধান অন্তরায়। কারণ স্বার্থপর ব্যক্তি কারোর কল্যাণ করতে পারে না। 

(গ) সংকীর্ণ দলীয় মনোভাবঃ সুনারিকত্বের পথে সংকীর্ণ দলীয় মনোভাব একটি অন্তরায়। রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য জাতি–ধর্ম–বর্ণ–দল নির্বিশেষে সকলের সার্বিক উন্নতির চেষ্টা করতে হবে। সংকীর্ণ দলীয় মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি কখনও সমাজের মঙ্গল সাধন করতে পারে না।

(ঘ) দারিদ্র্যতাঃ সুনাগরিকতার পথে দারিদ্র্যতা একটি প্রধান অন্তরায়। কারণ নোংরা রাজনীতিবিদগণ বা রাজনৈতিক দলগুলো অর্থের বিনিময়ে দরিদ্র শ্রেণীর লোকদের ভোট নিজেদের অনুকূলে আনতে সক্ষম হয়। দারিদ্র্যতার জন্য এই দরিদ্র শ্রেণীর ভোটাররা তাদের রাজনৈতিক অধিকার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে না। 

প্রশ্ন ৯। সুনাগরিকতার পথে প্রধান বাধা বা অন্তরায়গুলো কী কী?

উত্তরঃ সুনাগরিকতার পথে বিভিন্ন বাধা বা অন্তরায় আছে। 

সুনাগরিকতার পথে প্রধান অন্তরায়গুলো নিম্নরূপঃ

(ক) অজ্ঞতা ও নিরক্ষরতা।

(খ) স্বার্থপরতা।

(গ) সংকীর্ণ দলীয় মনোভাব।

(ঘ) দারিদ্র্যতা।

প্রশ্ন ১০। বিশ্ব নাগরিকত্ব বলতে কী বোঝ?

অথবা,

বিশ্ব নাগরিকত্ব সম্পর্কে একটি টীকা লেখো?

অথবা,

সর্বজনীন নাগরিকত্বের ধারণাটি পরীক্ষা করো?

উত্তরঃ নাগরিকের বেশ কিছু অধিকার ও কর্তব্য রয়েছে। যা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিকত্বের ধারণা বিশ্ব নাগরিকত্বের ধারণাকে ত্বরান্বিত করেছে। বিশ্ব নাগরিকত্ব হল বিশ্বের সকল মানুষ বিশ্বের নাগরিক এবং রাষ্ট্রীয় বা আন্তঃরাষ্ট্রীয় গণ্ডীর মধ্যে তা সীমাবদ্ধ হতে পারে না। 

বিশ্ব নাগরিকত্বের ধারণা বিতর্কিত বিষয়। এই বিষয়ের উপর দ্বিবিধ চিন্তাধারা দেখা যায়। একপক্ষ মনে করেন যে বিশ্ব নাগরিকত্বের ধারণার অস্তিত্ব আছে ও অন্যপক্ষের মতে, বিশ্ব নাগরিকত্বের কোনো অস্তিত্বই নেই। 

প্রশ্ন ১১। কীভাবে নাগরিকত্বের ইতিহাসে ফরাসি বিপ্লব একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা? 

উত্তরঃ পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য বিপ্লবগুলোর অন্যতম বিপ্লব ছিল ফরাসি বিপ্লব। এ বিপ্লব নানা বিষয়ের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল। ফরাসি বিপ্লব ১৭৮৯ সালে সংঘটিত হয়েছিল। এই বিপ্লবের মূলমন্ত্র ছিল – স্বতন্ত্রতা, সমতা ও ভ্রাতৃত্ব। এই বিপ্লব নাগরিকত্বের ইতিহাসে এক বিখ্যাত ঘটনা। কারণ এ বিপ্লব নাগরিকত্বের ভিত্তিকে ব্যাপকতা প্রদান করেছিল। এটি রাষ্ট্রের সকল প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্যদের নাগরিকতার অধিকার প্রদান করেছিল। স্বতন্ত্রতা, সামা, ও ভ্রাতৃত্বের দ্বারাই নাগরিকত্ব সুরক্ষিত হয়। 

প্রশ্ন ১২। নাগরিক ও বিদেশীর মধ্যে চারটি পার্থক্য উল্লেখ করো? 

উত্তরঃ আইনগত দিক দিয়ে নাগরিক ও বিদেশী উভয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। 

এই পার্থক্যগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) স্থায়ী বাসিন্দাঃ নাগরিক নিজ রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। কিন্তু বিদেশী অন্য রাষ্ট্রে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে।

(খ) আনুগত্যঃ নাগরিক নিজ রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে দায়বদ্ধ। কিন্তু বিদেশী পররাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনে বাধ্য নয়।

(গ) অধিকারঃ নাগরিক রাজনৈতিক অধিকারসহ সকল অধিকার উপভোগ করার অধিকারী। কিন্তু বিদেশীর কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই।

(ঘ) একজন বিদেশীকে রাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা যায়। কিন্তু একজন নাগরিককে তার নিজ দেশ থেকে বহিষ্কার করা যায় না।

দীৰ্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। নাগরিকের সংজ্ঞা দাও। নাগরিক ও বিদেশির মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর?

উত্তরঃ নাগরিক হল স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ও রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনকারী ব্যক্তি, যে রাষ্ট্র প্রদত্ত সকল ধরনের অধিকার উপভোগ করে এবং সমাজের সার্বিক বিকাশের জন্য তার সুচিন্তিত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করে।

নাগরিক ও বিদেশি সাময়িকভাবে পাশাপাশি বসবাস করলেও আইনগত দিক দিয়ে উভয়ের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এ পার্থক্যসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) স্থায়িত্বঃ নাগরিক নিজ রাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। কিন্তু বিদেশি পররাষ্ট্র অস্থায়ীভাবে বসবাস করে।

(খ) অধিকার ভোগঃ নাগরিক রাজনৈতিক অধিকার উপভোগ করে। কিন্তু বিদেশি অন্য রাষ্ট্রে রাজনৈতিক অধিকার উপভোগ করতে পারে না।

(গ) আনুগত্যঃ নাগরিক নিজ রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করতে বাধ্য। কিন্তু বিদেশির পররাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন বাধ্যতামূলক নয়। 

(ঘ) বহিষ্কারঃ অসদাচরণের জন্য নাগরিককে নিজ রাষ্ট্র হতে বহিষ্কার করা হয় না; কিন্তু শাস্তি দেওয়া হয়। কিন্তু বিদেশির ক্ষেত্রে বহিষ্কার করা সম্ভব।

প্রশ্ন ২। নাগরিকত্ব অর্জনের উপায়সমূহ বর্ণনা করো?

অথবা,

নাগরিকত্ব কীভাবে অর্জন করা যায়?

অথবা,

নাগরিকত্বের উপায়সমূহ আলোচনা করো?

উত্তরঃ সাধারণত নাগরিকত্ব অর্জনের পদ্ধতি দুটি। এই পদ্ধতি দুটি হলঃ

(ক) জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জন। এবং 

(খ) দেশীয়করণ পদ্ধতি দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জন। এই দুটি পদ্ধতি ব্যতীতও রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যেমেও নাগরিকত্ব অর্জন করা যায়। 

(ক) জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জনঃ জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব অর্জনের দুটি পদ্ধতি আছে, যথা– রক্ত সম্পর্ক ( Jus Sanguinis), এবং জন্মস্থান নীতি (Jus Soli)। রক্তের সম্পর্ক নীতি অনুসারে পিতা–মাতার নাগরিকত্ব অনুযায়ী তাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব নির্ণয় করা হয়। রক্তের সম্পর্ক অনুসারে সন্তানের জস্থানের কোন গুরুত্ব নেই। তার মাতা–পিতা যে দেশের নাগরিক সন্তান সে দেশেরই নাগরিকত্ব লাভ করে। রক্তের সম্পর্ক সূত্রে নাগরিকত্ব অর্জনের নীতি আমেরিকা, সুইডেন; সুইজারল্যাণ্ড সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে। জন্মস্থান নীতি অনুসারে জন্মস্থান নীতি অনুযায়ী সন্তানের নাগরিকত্ব স্থির হয়। এক্ষেত্রে পিতা–মাতার নাগরিকত্বের কোনো গুরুত্ব নেই। পিতা–মাতা বিদেশি হলেও সন্তান যে দেশে জন্মগ্রহণ করবে সেই দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করবে। জন্মস্থান নীতি অনুযায়ী নাগরিকত্ব প্রদানের নীতি আর্জেন্টিনায় দেখা যায়।

(খ) দেশীয়করণ দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জনঃ নাগরিকত্ব দেশীয়করণ অর্থাৎ রাষ্ট্রের অনুমোদন দ্বারাও লাভ করা যায়। নিম্নলিখিত উপায়ে অনুমোদন সিদ্ধ নাগরিকত্ব লাভ করা যায়।

(অ) বিবাহঃ যদি কোনো মহিলা অন্য দেশের পুরুষকে বিবাহ করে তাহলে সেই মহিলা তার স্বামী যে দেশের নাগরিক সে দেশের নাগরিকত্ব লাভ করে। 

(আ) সরকারি চাকরি গ্রহণঃ যদি কোনো ব্যক্তি অন্য রাষ্ট্রের অধীনে চাকরি গ্রহণ করে তখন সে ব্যক্তি ওই রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করতে পারেন। কিন্তু তারে নিজ রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বর্জন করতে হবে।

(ই) সম্পত্তি ক্রয়ঃ কোনো রাষ্ট্রে দীর্ঘদিন বসবাস করলে অথবা ওই রাষ্ট্রের স্থায়ী সম্পত্তি ক্রয় করলে ওই রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করা সম্ভব। 

(ঈ) সেনাবাহিনীতে যোগদানঃ যদি কোনো নাগরিক অন্য কোনো রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে চাকরি গ্রহণ করেন তাহলে তার নিজ রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বিলুপ্ত হবে এবং তিনি যে রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছেন, সে রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করবেন।

(উ) নথিভূক্ত করণঃ কোনো বিদেশি অন্য দেশে অবস্থান কালে সেই রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য সেই সরকারের নিকট আবেদন করতে পারেন এবং কতকগুলো শর্তে সেই রাষ্ট্র বিদেশিকে নাগরিকত্ব প্রদান করতে পারে। এই পদ্ধতিকে নথিভূক্তকরণ ( Registration) পদ্ধতি বলা হয়। 

রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তি দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জনঃ একটি রাষ্ট্র যদি অন্য রাষ্ট্র দখল করে বা কোনো চুক্তি অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রের একটি অংশ বা সম্পূর্ণ রাষ্ট্র অন্তর্ভুক্ত করে তখন সেই রাষ্ট্রের নাগরিকগণকে অন্তর্ভুক্তকারী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। এ পদ্ধতিকে রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তি দ্বারা নাগরিকত্ব অর্জন বলা হয়।

প্রশ্ন ৩। কীভাবে একজন নাগরিক তার নাগরিকত্ব হারাতে পারে?

অথবা,

নাগরিকত্বের কীভাবে বিলুপ্তি ঘটে আলোচনা করো?

অথবা,

নাগরিকত্ব হানির কারণগুলো আলোচনা করো?

উত্তরঃ নাগরিকত্ব হারানোর কারণ/পদ্ধতিগুলো নিম্নরূপঃ

(ক) অন্যদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণঃ একজন ব্যক্তি অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে সে তার নিজ রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব হারায়।

(খ) বিবাহঃ সাধারণত কোনো মহিলা যদি অন্য কোনো দেশের পুরুষকে বিবাহ করে, তবে সেই মহিলার পূর্ব নাগরিকত্বের অবসান ঘটে। অবশ্য কোনো কোনো দেশ মহিলার পূর্ব নাগরিকত্ব অনুমোদন করে।

(গ) বিদেশি উপাধি গ্রহণঃ নিজ রাষ্ট্রের অনুমতি ব্যতীত কোনো ব্যক্তি অন্য রাষ্ট্রের উপাধি গ্রহণ করলে তার নিজ রাষ্ট্রের নাগরিকত্বের অবসান ঘটে।

(ঘ) দীর্ঘকাল অনুপস্থিতিঃ সরকারের অনুমতি ব্যতীত দীর্ঘকাল (সাধারণত ৭ বছর) ধরে স্বদেশে অনুপস্থিত থাকলে তার নিজ দেশের নাগরিকত্বের বিলোপ সাধন হয়।

(ঙ) ভিনদেশি চাকরি গ্রহণঃ নিজ রাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়া অন্য কোনো দেশে চাকরি গ্রহণ করলে তার নিজ দেশের নাগরিকত্ব লোপ পায়।

(চ) সেনাবাহিনী হতে পলায়নঃ কেউ সেনাবাহিনী হতে পলায়ন করলে তার নাগরিকত্ব একেবারেই লোপ পায়। 

(ছ) গুরুতর অপরাধঃ গুরুতর অপরাধ যেমন – দেশদ্রোহিতার ফলে নাগরিকত্ব লোপ পায়।

এটা উল্লেখ করা আবশ্যক যে অন্যদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ, বিবাহ, বিদেশি উপাধি গ্রহণ প্রভৃতির ফলে শুধু নাগরিকত্বের পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু সেনাবাহিনী হতে পলায়ন বা গুরুতর অপরাধের ফলে নাগরিকত্ব একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। 

প্রশ্ন ৪। সুনাগরিকের গুণসমূহ আলোচনা করো? 

উত্তরঃ গণতান্ত্রিক শাসন কৃতকার্য হওয়ার জন্য নাগরিকগণের সৎগুণাবলীর অধিকারী হতে হবে। নাগরিকের নিম্নলিখিত গুণসমূহ থাকা 

একান্ত আবশ্যকঃ 

(ক) বুদ্ধিমত্তাঃ নাগরিকগণের নিজস্ব বুদ্ধিতে বিচার বিবেচনা করার ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। বুদ্ধিমান নাগরিক সমাজ তথা সরকারের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে। 

(খ) আত্মসংযমঃ সুনাগরিকের অন্যতম একটি গুণ হল আত্মসংযম। আত্মসংযমী নাগরিক দেশের তথা সমাজের কল্যাণের স্বার্থে কাজ করতে পারে। আত্মসংযমী নাগরিক ব্যক্তিস্বার্থকে গুরুত্ব দেয় না।

(গ) বিবেকবানঃ বিবেকবান নাগরিক ভালমন্দ বিচার করতে সক্ষম। বিবেকবান মানুষ কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। 

(ঘ) সচ্চরিত্রঃ চরিত্রবান নাগরিক রাষ্ট্রের সম্পদ। সে রাষ্ট্রের সার্বিক কল্যাণ সাধনে কখনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। সর্বদা সে সৎ উপায়ে উন্নতির চেষ্টা করে।

(ঙ) দেশভক্তিঃ রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য সুনাগরিকের আরেকটি মহৎ গুণ। নিজের দেশকে ভালোবাসা ও নিজের দেশের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করা সুনাগরিকের একটি প্রধান গুণ। দেশভক্তিহীন নাগরিক কখনও রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধন করতে পারে না।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ

প্রতু ১। নাগরিকত্বের ব্যাপারে সমভাবে ও সম্পূর্ণভাবে জড়িত আছে অধিকার ও নৈতিকতা বোধ। আজকের দিনে, গণতান্ত্রিক দেশে কোন্ কোন্ অধিকার আছে যা নাগরিকরা ভোগ করতে পারে। তাদের রাষ্ট্র ও নাগরিকদের ক্ষেত্রে কী নৈতিকতা বোধ থাকতে হবে?

উত্তরঃ নাগরিকত্ব হল একটি আইনসম্মত সম্পর্ক যা রাষ্ট্রের সদস্য হিসাবে প্রত্যেক বাক্তিকে আবদ্ধ রাখে। নাগরিকত্বের সঙ্গে অধিকার ও নৈতিকতা বোধ জড়িত। রাষ্ট্রের পূর্ণ ও সমান সত্য হিসাবে নাগরিকত্ব অধিকার ও কর্তব্য উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে। অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিকরাণ কতকগুলি সাধারণ অথচ প্রয়োজনীয় অধিকার ভোগ করে। এইগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রধান অধিকার হল – সমতার অধিকার স্বাধীনতার অধিকার, বাক ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা, শিক্ষার অধিকার, ভোটাধিকার, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবার অধিকার প্রভৃতি। নাগরিকগণ যেমন অধিকার উপভোগ করে তেমনি তাদের রাষ্ট্রের প্রতি কর্তব্য ও দায়িত্বও পালন করতে হয়। নাগরিকগণের রাষ্ট্রের আইন মেনে চলা, দেশ ও জাতির সেবা করা, সময়মতো কর প্রদান করা প্রভৃতি নাগরিকের প্রধান কর্তব্য। শান্তিপূর্ণ উপায়ে সকল বিবাদের মীমাংসা করা, অন্যের অধিকার ভঙ্গ না করা প্রভৃতি একজন সুনাগরিকের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।

প্রশ্ন ২। সব নাগরিকের সমান অধিকার থাকতে পারে কিন্তু সবাই সমানভাবে সেই অধিকারগুলো প্রয়োগ করতে পারে না। ব্যাখ্যা করো?

উত্তরঃ অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের সমান অধিকার। আমাদের সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ মৌলিক অধিকারসমূহ সকল নাগরিকের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সকল নাগরিক এই অধিকারগুলোকে সমানভাবে প্রয়োগ করতে পারে না। আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষ বসবাস করে। তাদের সকলে সমানভাবে দক্ষ এবং পারদর্শী নয়। আমাদের সমাজে ধনী–দরিদ্র সকল শ্রেণীর নাগরিক আছে যাদের সকলের দক্ষতা ও পারদর্শীতা সমরূপ নয়। সুতরাং সকল নাগরিক সমানভাবে অধিকারগুলো প্রয়োগ করতে নাও পারে। 

প্রশ্ন ৩। সংক্ষিপ্তভাবে বর্ণনা কর যে কোনো দুটি সংগ্রামের ঘটনা যা ইদানিংকালে ভারতে ঘটেছে। কী অধিকার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে দাবি করা হয়েছিল?

উত্তরঃ সাম্প্রতিককালে ভারতে অধিকারের দাবি সম্পর্কিত বিভিন্ন সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছে। স্বাধীনতার পরবর্তীকালে মহিলাগণ আন্দোলন আরম্ভ করে। তারা পুরুষ ও মহিলাদের সমান অধিকার দাবি করে। মহিলাগণ সকলক্ষেত্রে পুরুষদের সমান অধিকার দাবি করে।

সমাজের দলিত বর্গ তাদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন আন্দোলন করে। তাদের প্রধান দাবি হল সামাজিক ন্যায়। 

প্রশ্ন ৪। শরনার্থীরা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়? কীভাবে বিশ্ব নাগরিকত্বের ধারণা তাদের উপকারে আসতে পারে?

উত্তরঃ শরনার্থীরা সাধারণত নিম্নলিখিত সমস্যাসমূহের সম্মুখীন হয়ঃ

(ক) আশ্রয়ের সমস্যা।

(খ) আহারের সমস্যা।

(গ) পরিধানের সমস্যা।

(ঘ) স্থায়ী বাসস্থানের সমস্যা।

(৫) নাগরিকত্ব, অধিকার সম্পর্কিত সমস্যা।

বিশ্ব নাগরিকত্বের ধারণা শরণার্থীদের উপরোক্ত কতকগুলো সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত সহায়ক হবে।

প্রশ্ন ৫। দেশের ভিতরে এক জায়গা হতে অন্য জায়গায় শরনার্থী হিসাবে যাওয়া ও আসার ক্ষেত্রে, অনেক সময় স্থানীয় লোকদের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়। শরনার্থীরা কী কী পদক্ষেপ নিলে স্থানীয় অর্থনীতিতে সাহায্য হতে পারে?

উত্তরঃ আমাদের দেশের সংবিধান আমাদের স্বাধীনভাবে দেশের সর্বত্র চলাফেরা করবার স্বাধীনতা প্রদান করেছে। আমরা ভারতীয় নাগরিকগণ ভারতের যে–কোন স্থানে যাওয়া ও বসবাসের অধিকারী। লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজের সন্ধানে দেশের একপ্রান্ত হতে অন্যপ্রান্তে ঘোরে বেড়ায়। দক্ষ শ্রমিক, কারিগর, অভিযন্ত্রী প্রভৃতি ছোটো বা মাঝারি শহর হতে মুম্বাই, বেঙ্গালুরুর মতো বৃহৎ নগরে গিয়ে জীবিকা পালন করে এবং বাসস্থান গড়ে তোলে।

উপরোক্ত প্রব্রজনকারীরা স্থানীয় এলাকার অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে। যখন এই সকল স্থানে কাজ, বাসস্থান, জল প্রভৃতির সমস্যা দেখা দেয় তখন স্থানীয় এলাকাবাসীরা বহিরাগতদের প্রবেশ রোধ করতে আন্দোলন আরম্ভ করে। অবশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কার্য করে।

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top