Class 12 History Chapter 13 উপনিবেশিক নগর

Join Roy Library Telegram Groups

Class 12 History Chapter 13 উপনিবেশিক নগর Question Answer in Bengali is a textbook prescribed by the AHSEC Board Class 12 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 History Chapter 13 উপনিবেশিক নগর Solutions in Bengali. The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 History Chapter 13 উপনিবেশিক নগর Notes in Bengali are free to use and easily accessible.

Class 12 History Chapter 13 উপনিবেশিক নগর

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 12 History Chapter 13 উপনিবেশিক নগর Question Answer in Bengali. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 2nd year History in Bengali, Class 12 History Chapter 13 উপনিবেশিক নগর Question answer in Bengali gives you a better knowledge of all the chapters. Assam AHSEC Board HS 2nd Year History in Bengali , Class 12 History Answers The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam AHSEC Board Class 12 History in Bengali Medium Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. Class XII History in Bengali Solutions Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 History in Bengali Medium Textbooks. HS 2nd Year History in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

উপনিবেশিক নগর

তৃতীয় খণ্ড

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ভারতে লোকগণনা সর্বপ্রথম কখন হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮৭২ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৫। কলিকাতা নগরের গোড়াপত্তন কে করেন?

উত্তরঃ জব চার্নক।

প্রশ্ন ২। ভারতে কত বৎসর অন্তর লোকগণনা করা হয়?

উত্তরঃ দশ বছর।

প্রশ্ন ৩। ভারতে প্রথম দশ বছরীয়া লোকগণনা কখন আরম্ভ হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ৪। ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে ভারতে কত শতাংশ লোক নগরে বাস করত?

উত্তরঃ ৯.৪ শতাংশ।

প্রশ্ন ৬। কলিকাতা নগরের গোড়াপত্তন কখন হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দের ২৪ আগস্ট।

প্রশ্ন ৭। ওলন্দাজ বণিকগণ ভারতে প্রথম কোথায় তাদের বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন করেন?

উত্তরঃ মুসলিপত্তমে।

প্রশ্ন ৮। ইংরেজ বণিকগণ ভারতে প্রথম কোথায় তাদের বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন করে?

উত্তরঃ মাদ্রাজে।

প্রশ্ন ৯। ফরাসি বণিকগণ ভারতে প্রথম কোথায় বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেন?

উত্তরঃ পণ্ডিচেরী।

প্রশ্ন ১০। পর্তুগীজ বণিকগণ ভারতে সর্বপ্রথম কোথায় তাদের বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন করেন?

উত্তরঃ গোয়ার পানাজিতে।

প্রশ্ন ১১। লর্ড ওয়েলেসলি কোন্ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতায় নগর সমিতি স্থাপন করেন?

উত্তরঃ ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ১২। কলিকাতা লটারি কমিটি কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে।

S.L. No.সূচীপত্র
প্রথম খণ্ড
অধ্যায় -1ইট, মনি ও হাড়
অধ্যায় -2রাজা, কৃষক ও নগরসমূহ
অধ্যায় -3জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি (প্রাচীন সমাজ)
অধ্যায় -4দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য (সাংস্কৃতিক অগ্রগতি)
অধ্যায় -5প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ
দ্বিতীয় খণ্ড
অধ্যায় -6পর্যটকদের দৃষ্টিতে (দশম থেকে সপ্তদশ শতক)
অধ্যায় -7ভক্তি ও সুফী পরম্পরা
অধ্যায় -8একটি সাম্রাজ্যবাদী রাজধানী – বিজয়নগর
অধ্যায় -9কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র
অধ্যায় -10কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র
তৃতীয় খণ্ড
অধ্যায় -11উপনিবেশবাদ ও গ্রামাঞ্চল
অধ্যায় -12বিদ্রোহ ও রাজ (১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ)
অধ্যায় -13উপনিবেশিক নগর
অধ্যায় -14মহাত্মা গান্ধী ও জাতীয় আন্দোলন
অধ্যায় -15দেশ বিভাজনের উপলব্ধি
অধ্যায় -16সংবিধান প্রণয়ন
অধ্যায় -17মানচিত্র অঙ্কনকার্য

সংক্ষিপ্ত প্ৰশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। মাদ্রাজ, কলিকাতা ও বোম্বাই কিরূপ নগর ছিল? কিভাবে এদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়?

উত্তরঃ মাদ্রাজ, কলিকাতা ও বোম্বাই মৎস্য ব্যবসায়ী ও অস্তবায়দের বাসস্থান ছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই তিনটি স্থানে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করার পর ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসাবে এই তিনটি স্থানের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্ন ২। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কখন মাদ্রাজ ও কলিকাতায় বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেছিল?

উত্তরঃ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এজেন্টগণের প্রচেষ্টায় ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজে কুঠি স্থাপন করে এবং ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতায় বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন করে।

প্রশ্ন ৩। সপ্তদশ শতকে বাণিজ্য বন্দর রূপে গড়ে ওঠা তিনটি শহর অষ্টাদশ শতকে তাদের গুরুত্ব হারায়। এই শহর তিনটির নাম লেখ।

উত্তরঃ সপ্তদশ শতকে বাণিজ্য বন্দর রূপে গড়ে ওঠা ও অষ্টাদশ শতকে গুরুত্ব হারানো তিনটি শহর হল—

(ক) সুরাট। 

(খ) মুসলিপট্রম। ও 

(গ) ঢাকা।

প্রশ্ন ৪। ‘অসামরিক অঞ্চল’ বা ‘সিভিল লাইনস’ কি?

উত্তরঃ নির্দিষ্ট সীমিত অঞ্চলে শ্বেতকায় ব্যক্তিদের জন্য অধিকতর নিরাপদ ও ভিন্নতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য যে বাসস্থান গড়ে উঠেছিল তাই-ই ‘অসামরিক অঞ্চল’ নামে পরিচিত হত।

প্রশ্ন ৫। শৈল নগরসমূহের প্রাথমিক প্রয়োজন কি ছিল?

উত্তরঃ প্রথম দিকে শৈল নগরগুলি ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর জন্য অপরিহার্য ছিল। সৈন্য মোতায়ন করা, সীমানা সুরক্ষিত করা এবং প্রতিবেশী শত্রুর রাজ্য আক্রমণ করার জন্য শৈল নগরগুলি গঠন করা হয়েছিল।

প্রশ্ন ৬। ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতের দুই প্রকার নগরের নাম লেখ।

উত্তরঃ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতের দুই প্রকার নগর হল—

(ক) শ্বেতনগর। এবং 

(খ) কৃষ্ণনগর।

প্রশ্ন ৭। বোম্বাই নগরীতে গৃহীত দুই প্রকার স্থাপত্য পদ্ধতির উল্লেখ কর।

উত্তরঃ বোম্বাই নগরীতে গৃহীত দুই প্রকার স্থাপত্য পদ্ধতি হল—

(ক) নব-ধ্রুপদী স্থাপত্য পদ্ধতি। এবং 

(খ) নব-গথিক স্থাপত্য পদ্ধতি।

প্রশ্ন ৮। কলিকাতা লটারি কমিটি সম্বন্ধে সংক্ষেপে লেখ।

উত্তরঃ ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতায় লটারি কমিটি স্থাপিত হয়। সরকারের সহযোগিতায় কলিকাতা নগরীর পরিকল্পনায় এই কমিটি নানাভাবে সাহায্য করত। লটারির মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ কলিকাতা নগর উন্নয়ন প্রকল্পে প্রদান করা হত।

প্রশ্ন ৯। চারিটি ইউরোপীয় কোম্পানির নাম লেখ যারা ভারতে এসে বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন করেছিল এবং তারা কোথায় বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন করেছিল?

উত্তরঃ চারিটি ইউরোপীয় কোম্পানি নিম্নোক্ত স্থানে বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন করেছিল:

(ক) পর্তুগীজ — পানাজি।

(খ) ওলন্দাজ — মসলিপত্তনম।

(গ) ব্রিটিশ — মাদ্রাজ।

(ঘ) ফরাসি — পণ্ডিচেরী (পুদুচেরী)।

প্রশ্ন ১০। নব-ধ্রুপদী ও ইন্দো-সারাসেনিক স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত প্রতিটির দুইটি অট্টালিকার নাম লেখ।

উত্তরঃ নব-ধ্রুপদী ও ইন্দো-সারাসেনিক স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত অট্টালিকার নাম নিম্নরূপ:

(অ) নব-ধ্রুপদী স্থাপত্য রীতি:

(ক) বোম্বে সচিবালয়।

(খ) বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয়।

(গ) বোম্বে হাইকোর্ট।

(আ) ইন্দো-সারাসেনিক স্থাপত্য রীতি:

(ক) ভারতের প্রবেশদ্বার।

(খ) তাজ হোটেল।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে নগরসমূহের পর্যায়ের পরিবর্তন কেন এবং কিভাবে হয়েছিল?

উত্তরঃ অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে নগরসমূহ পর্যায়ে একটি পরিবর্তন সূচিত হয়। সুরাট, ঢাকা, মসলিপটম প্রভৃতি ১৭ শতকে গড়ে ওঠা নগরগুলির পতন দেখা দেয়। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ সরকার ধীরে ধীরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ নিজ হাতে গ্রহণ করে। মাদ্রাজ, কলিকাতা, বোম্বাই নূতন আর্থিক রাজধানী রূপে আত্মপ্রকাশ করে। এই শহরগুলি ঔপনিবেশিক শাসনকেন্দ্র হিসাবেও পরিগণিত হয়। নতুন বৃত্তি ও পেশা বিকাশ লাভ করে। ১৮০০ শতকে এই তিনটি নগর ছিল ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ নগর।

প্রশ্ন ২। ব্রিটিশ সরকার মানচিত্র অঙ্কনের উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করত কেন?

উত্তরঃ নিম্নলিখিত কারণে ব্রিটিশ সরকার মানচিত্র অঙ্কনের উপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন:

(ক) সরকার বিশ্বাস করতেন যে ভূচিত্র ও ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হওয়ার জন্য মানচিত্র অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

(খ) মানচিত্রসমূহ বাণিজ্য বিকাশ ও ক্ষমতা সুদৃঢ়করণের জন্য অপরিহার্য।

(গ) নগরের মানচিত্র নদী, পর্বত, উদ্ভিদ প্রভৃতি বিষয়ে তথ্যাদি সরবরাহ করে। এই তথ্যাদি পরিকল্পনা পরিকাঠামো ও প্রতিরক্ষার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

(ঘ) মানচিত্রসমূহ জনবসতির ঘনত্ব ও ঘরবাড়ির পরিমাণ নির্ধারণ করে।

প্রশ্ন ৩। কলিকাতা, বোম্বাই ও মাদ্রাজ নগরগুলিকে কেন প্রাচীরবেষ্টিত করা হয়েছিল?

উত্তরঃ অষ্টাদশ শতকে মাদ্রাজ, কলিকাতা ও বোম্বাই গুরুত্বপূর্ণ বন্দরে পরিণত হয়েছিল। এই নগরগুলিতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নির্মিত অনেকগুলি ফ্যাক্টরি ও বাণিজ্যিক অফিস ছিল। সুতরাং এই নগরগুলির মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার্থে ইংরেজ সরকার এদের প্রাচীরবেষ্টিত করেছিল। মাদ্রাজে শ্বেতকায় মানুষ ফোর্ট সেন্ট জর্জে বাস করত। কলিকাতায় তারা ফোর্ট উইলিয়ামে বাস করত এবং বোম্বাই-এ তারা ফোর্ট-এর নিকটে বাস করত। অন্যদিকে ভারতবাসীরা এই সুরক্ষিত স্থানগুলির বাইরে বাস করত।

প্রশ্ন ৪। কলিকাতা নগরীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তরঃ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী জব চার্নক ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে আগস্ট কলিকাতা নগরীর পত্তন করেন। সুতানুটি, কলিকাতা ও গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রামের সমষ্টিতে কলিকাতা নগরী সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছিল। ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে ফোর্ট উইলিয়াম প্রেসিডেন্সী গঠিত হয়। ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে মোগল বাদশা ফারুকশিয়ারের প্রদত্ত ফরমান অনুযায়ী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বার্ষিক তিন হাজার টাকায় সরকারি খাজাঞ্চিখানায় জমা দেওয়ার পরিবর্তে বিনা শুল্কে বাংলাদেশে বাণিজ্য করার সুযোগ লাভ করে। কিন্তু মোগল বাদশাহের এই বদান্যতা বাংলার নবাবদের পছন্দ হয় নি। দুর্গ নির্মাণের ব্যাপারে তাদের আপত্তি ছিল। ফলে বাংলার নবাবদের সঙ্গে ইংরেজদের বিরোধ দেখা দেয়। শেষে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পলাশীর যুদ্ধ এবং ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দের দেওয়ানি লাভের ফলে বাংলাদেশের উপর ইংরেজদের কর্তৃত্ব স্থাপিত হয়। ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা বাংলা এবং সমগ্র ভারতের রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে ভারতের রাজধানী কলিকাতা হতে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করা হয়।

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। উপনিবেশিক প্রেক্ষাপটে নগরায়ণের কাঠামো পুনর্গঠনের জন্য লোকগণনার তথ্যসমূহ কতটুকু সহায়ক?

উত্তরঃ লোকগণনার তথ্য সাবধানভাবে অধ্যায়ন করলে নগর জীবনের পরিবর্তন সম্পর্কে নানা প্রকার বিষয়াদি জানতে পারা যায়:

(ক) ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের পর ভারতে নগরায়ণের প্রক্রিয়া মন্থর ছিল।

(খ) উনিশ শতকে এবং বিংশ শতকের প্রথম দুই দশকে ভারতে শহরাঞ্চলের জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার তুলনায় অত্যন্ত কম এবং স্থবির ছিল।

(গ) ১৯০০ খ্রিস্টাব্দ এবং ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে নগরাঞ্চলের জনসংখ্যা ১৩% বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে সমগ্র দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ১০ শতাংশ।

(ঘ) জনগণনার তথ্যাদি জনগণের বয়স, লিঙ্গ, জাত, ধর্ম ও বুদ্ধি সম্পর্কে অবগত হতে সহায়তা করে।

(ঙ) ব্রিটিশগণ শ্বেত অর্থাৎ সুন্দর এলাকায় এবং ভারতীয়গণ কৃষ্ণ অর্থাৎ কুৎসিত এলাকায় বসবাস করত। শ্বেত এলাকা সুন্দর, পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত ছিল। অন্যদিকে কৃষ্ণ এলাকা বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা ও রোগপ্রবণ ছিল।

প্রশ্ন ২। ‘শ্বেত নগর’ ও ‘কৃষ্ণ নগর’ সংজ্ঞা দুইটি কি বোঝায়?

অথবা,

‘শ্বেতাঙ্গ’ ও ‘কৃষ্ণাঙ্গ’ নগর বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ ব্রিটিশগণ সাদা চামড়াযুক্ত ছিল। এই কারণে তাদের ‘সাদা’ বা ‘শ্বেত’ বলা হত। তারা নিজেদের অন্যদের তুলনায় উচ্চশ্রেণীর মনে করত। অন্যদিকে কৃষ্ণাঙ্গদের গায়ের রং ছিল খৈরি ও কালো। সুতরাং তাদের ‘কৃষ্ণাঙ্গ’ বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ ভারতীয় ও আফ্রিকীয়দের উল্লেখ করা যায়। সুতরাং শ্বেতাঙ্গরা কৃষ্ণাঙ্গদের তুলনায় উঁচু মর্যাদার ছিল।

ইউরোপীয়গণ কৃষ্ণ অঞ্চল বিশৃঙ্খল ও অরাজক অঞ্চল বলে মনে করত এবং তাকে ঘৃণ্য ও রোগাক্রান্ত স্থান বলে বিবেচনা করত। তারা নিজেদের শ্বেত অঞ্চল স্বাস্থ্যসম্মত করে রাখতে গুরুত্ব দিত। কিন্তু কলেরার মতো মহামারী কৃষ্ণকায় শ্বেতকায় কারোকে রক্ষা করে না ভেবে ঔপনিবেশিক সরকার সর্বত্র স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দের পর ভারতীয় নগরসমূহে জনস্বাস্থ্য, পয়ঃপ্রণালী, নালা-নর্দমার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

ব্রিটিশগণ কৃষ্ণাঙ্গ এলাকায় জলসরবরাহ ও জনস্বাস্থ্য সুনিশ্চিতের উদ্দেশ্যে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল। তারা কৃষ্ণাঙ্গ এলাকায় রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। তাছাড়াও এই সকল এলাকার উন্নয়নের জন্য ব্রিটিশ সরকার নানা প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল।

প্রশ্ন ৩। মুখ্য ভারতীয় সওদাগরগণ ঔপনিবেশিক মহানগরসমূহে নিজেদের কিভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল?

উত্তরঃ মুখ্য ভারতীয় সওদাগরগণ বোম্বাই, কলিকাতা ও মাদ্রাজের মতো ঔপনিবেশিক নগরসমূহে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তারা ছিলেন অতিশয় ধনী এবং এজেন্ট বা মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকায় পালন করতেন। তারা কৃষ্ণাঙ্গ শহরে বিশালাকার বাগানবাড়ি তৈরি করতেন। তারা এই সকল নগরে বিশাল এলাকাযুক্ত জমি রাখতেন। তারা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করতেন। তারা তাদের ইংরেজ প্রভুদের সন্তুষ্ট রাখতে উৎসবের সময় বিশাল ও রাজসিক ভোজসভার আয়োজন করতেন। সমাজে তাদের মর্যাদা ও আত্মসম্মান বহাল রাখতে তারা মন্দির তৈরি করে দিতেন।

প্রশ্ন ৪। সুরক্ষা ও সুস্বাস্থ্যের স্বার্থেই কলিকাতা মহানগরী কিভাবে গড়ে উঠেছিল তা পরীক্ষা কর।

উত্তরঃ ব্রিটিশ সরকার বাংলার শাসন গ্রহণ করা হতেই নগর পরিকল্পনায় গুরুত্ব দিয়েছিল। এর প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রতিরক্ষা। বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলা ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দে কলিকাতা আক্রমণ করে গুদাম হিসাবে রাখা তাঁর ছোট দুর্গটি অবরোধ করে। ব্রিটিশ কোম্পানি নবাবের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে নি এবং সিরাজ বাংলার কর্তৃত্ব রাখতে চেয়েছিলেন। ফলে সিরাজউদ্দৌল্লার সঙ্গে ইংরেজদের সম্পর্ক বিঘ্নিত হয়। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধে সিরাজকে পরাজিত করে একটি দুর্গ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। এই দুর্গই হল বিখ্যাত ‘ফোর্ট উইলিয়াম’।

নগর পরিকল্পনা: সুতানুটি, কলকাতা ও গোবিন্দপুর এই তিনটি গ্রামের সমন্বয়ে কলিকাতা নগর সুপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছিল। ফোর্ট উইলিয়ামের সম্মুখে একখানি বৃহৎ চৌতলা ছিল। একে স্থানীয় ভাষায় ময়দান বা ‘গড়ের মাঠ’ বলা হত। ময়দানখানি রাখার উদ্দেশ্য ছিল যাতে দুর্গ হতে শত্রুপক্ষের আক্রমণ সুবিধা হয়।

লর্ড ওয়েলেসলির সময়ে নগর পরিকল্পনা: কলিকাতার নগর পরিকল্পনা কেবল ফোর্ট উইলিয়াম ও ময়দান নির্মাণে সীমাবদ্ধ ছিল না। ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে গভর্নর-জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলি কলিকাতায় এক বৃহৎ অট্টালিকা নির্মাণ করেন। এই সরকারি ভবনে তিনি বাস করতেন এবং ব্রিটিশের ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ধ্বজা উড়িয়েছিলেন। ওয়েলেসলি নগরের ভারতীয়দের প্রতি দৃষ্টি দিয়েছিলেন। কারণ বদ্ধ জলা, বদ্ধ নালা, নর্দমার অপরিষ্কার অংশ হতে রোগ সংক্রামিত হয়ে ইংরেজ বসতি অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। কলিকাতায় গ্রীষ্মকালে এই প্রকার রোগ বেশি হয়। নগরে মুক্তস্থানে থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। এইজন্য ওয়েলেসলি ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে কয়েকটি নগর সমিতি স্থাপন করে নগর পরিকল্পনার ব্যবস্থা করেন বহু বাজার-হাট, সমাধিস্থল ও ধর্মসংস্কার, গৃহ পরিষ্কার করা অথবা ভেঙে ফেলা হয়। এইভাবে কলিকাতায় জনস্বাস্থ্য বিভাগ আরম্ভ হয়। ওয়েলেসলির পর নগর পরিকল্পনার কাজে সরকারি সহায়তায় ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে লটারি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। নগর উন্নয়নের পুঁজি লটারি যোগে সংগ্রহ করা হয়েছিল। মহামারি সমস্যাও পরে নগর পরিকল্পনায় অধিক গুরুত্ব লাভ করেছিল। ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে কলেরা ও ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে; প্লেগ মহামারি আকারে দেখা দিয়েছিল। অস্বাস্থ্যকর গৃহে বসবাসের ফলে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ঝুপড়ি ঘরের পরিবর্তে পাকাঘর তৈরির সূচনা হয়। ঘন ঘন অগ্নিকাণ্ড হতে রক্ষার জন্য ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে খড়ের ঘর নির্মাণ বন্ধ করা হয়।

প্রশ্ন ৫। কি কি বিভিন্ন ঔপনিবেশিক স্থাপত্য শৈলী বোম্বাই মহানগরীতে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল?

উত্তরঃ ব্রিটিশ রাজকীয় শক্তি ও ক্ষমতা প্রকাশ করার অন্য একটি মাধ্যম হল স্থাপত্য। ভারতীয় নগরসমূহে ব্রিটিশ দুর্গ, সরকারি কার্যালয়, শিক্ষানুষ্ঠান, ধর্মানুষ্ঠান, স্মারকসৌধ, বন্দর, পোতাশ্রয় প্রভৃতি নির্মাণ করেছিল। ভবনসমূহে ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলী ও শাসক গোষ্ঠীর সংস্কৃতিও তার উপর প্রকাশিত হয়েছিল।

সরকারি গৃহসমূহে তিন প্রকার স্থাপত্য শৈলী ব্যবহার করা হয়েছিল। এইগুলি হল— 

(ক) নবধ্রুপদী।

(খ) নিওগথিক। ও 

(গ) ইন্দো-সারাসেনিক।

(ক) নবধ্রুপদী: এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল জ্যামিতিক গঠন প্রণালী। সম্মুখে গোল স্তম্ভ থাকে। ব্রিটিশ সরকার ভারতে এর ব্যবহার করা উপযোগী বলে মনে করেছিল। বোম্বাইয়ের টাউন হলটি ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে এই স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত হয়েছিল। ১৮৬০-এর দশকে নির্মিত বোম্বাইয়ের এলফিলস্টোন সার্কেল ইটালির স্থাপত্যশৈলী অনুসরণে অর্ধচন্দ্রাকারে নির্মাণ করা হয়েছিল।

(খ) নিওগথিক: ইমারত নির্মাণে ইংরেজগণ নিওগথিক স্থাপত্যশৈলীও গ্রহণ করেছিল। এই স্থাপত্যশৈলীতে উঁচু চালা, তীক্ষ্ণ ধেনু আকৃতির খিলান ও বিস্তৃতভাবে অলংকরণের ব্যবস্থা ছিল। বোম্বাইয়ের সচিবালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চন্যায়ালয়, ভিক্টোরিয়া টারমিনাল এই স্থাপত্যের উদাহরণ।

(গ) ইন্দো-সারাসেনিক: বিংশ শতকের শুরুতেই ভারতীয় ও ইউরোপীয় বৈশিষ্ট্যের সংমিশ্রণে একটি নূতন সংকর শৈলী বিকশিত হয়ে উঠেছিল। একে ইন্দো-সারাসেনিক শৈলী বলা হয়। ইন্দো’ হল ‘হিন্দু’ শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ এবং ইউরোপীয়গণ ‘সারাসেন’ শব্দটি মুসলমানদের বোঝাতে ব্যবহার করেছিল। ভারতবর্ষে মধ্যযুগীয় ভবনসমূহ গম্বুজ, ছত্র, জালি ও চৌপিটীয়া গাঁথানিসমূহের দ্বারা এই শৈলী অনুপ্রাণিত হয়েছিল। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জ রানি মেরীর সম্ভাষণ জানানোর জন্য বোম্বাই-এ ‘ভারতবর্ষের প্রবেশদ্বার’ (Gateway of India) এই স্থাপত্য শৈলীর দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছিল।

প্রশ্ন ৬। অষ্টাদশ শতকে নগরকেন্দ্রসমূহের কিভাবে রূপান্তর ঘটেছিল?

অথবা,

ঔপনিবেশিক বন্দর নগরসমূহ দ্রুতগতিতে নব-অর্থনৈতিক মুখ্য-কেন্দ্রে কিভাবে রূপায়িত হয়েছিল?

উত্তরঃ অষ্টাদশ শতকে পুরাতন নগরসমূহের স্থানে নূতন নূতন নগর সৃষ্টি হয়েছিল। মোগল শক্তির পতনের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত নগরসমূহ গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। সুতরাং মোগল রাজধানী দিল্লি, আগ্রা রাজনৈতিক গুরুত্ব হারায়। 

সুতরাং অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগ হতে ভারতীয় নগরায়ণের নিম্নোক্ত পরিবর্তন দেখা দিয়েছিল:

(ক) নূতন আঞ্চলিক শক্তির উদ্ভব: অষ্টাদশ শতকে বহু নতুন আঞ্চলিক রাজধানীর উদ্ভব ঘটে। শীঘ্রই তারা গুরুত্ব অর্জন করে। এই সকল শক্তির মধ্যে কয়েকটি হল—লক্ষ্ণৌ, সেরিঙ্গপত্তম, পুণা, নাগপুর, বরোদা ও তাঞ্জাভূর।

(খ) নূতন নগর বসতি প্রতিষ্ঠা: মোগল নগরগুলিতে বহু বিষয়া ও সামন্তগণ বাস করত। তারা কোয়সবী ও গঞ্জ হিসাবে নতুন নগর কেন্দ্র গড়ে তোলে। অবশ্য নগরের বৃদ্ধি ছিল অসম।

(গ) বাণিজ্যকেন্দ্রের বিকাশ: নূতন বাণিজ্যকেন্দ্রের উদ্ভবের ফলে বাণিজ্যের আদান-প্রদানে অনেক পরিবর্তন দেখা দেয়। উদাহরণস্বরূপ ওলন্দাজগণ ১৬০৫ খ্রিস্টাব্দে মসলিপট্টমে এবং পর্তুগিজগণ পানাজিতে ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে বসতি স্থাপন করে। ব্রিটিশগণ ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজে আসে। ফরাসিগণ ১৬৭৩ খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিচেরীতে আসে। এইসব বাণিজ্যকেন্দ্রগুলির আশেপাশে অনেকগুলি নতুন নগর গড়ে ওঠে।

(ঘ) ঔপনিবেশিক বন্দর-নগরের উদ্ভব: অষ্টাদশ শতকের মধ্যভাগে ঢাকা, মসলিপত্তম প্রভৃতি বাণিজ্য নগরগুলি তাদের গুরুত্ব হারায়। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশগণ অধিক ক্ষমতাশালী হলে মাদ্রাজ, কলিকাতা ও বোম্বাই-এ ব্যবসা-বাণিজ্য স্থানান্তরিত হয়। এই নগরগুলি বাণিজ্য রাজধানীরপে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে মাদ্রাজ, কলিকাতা ও বোম্বাই ভারতের বৃহত্তম নগরীতে পরিণত হয়।

প্রশ্ন ৭। ঔপনিবেশিক মহানগরসমূহের উত্থান ঘটা নতুন প্রকার স্থানসমূহ কি কি ছিল?

উত্তরঃ সাধারণ ভারতবাসীর কাছে নগর জীবন এক আশ্চর্যের বিষয়। এক অবিরত যাত্রা। এখানে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান স্পষ্ট হয়। এখানে ঘোড়ায় টানা গাড়ি, বাস, মোটর প্রভৃতি যাতায়াত সুগম করে। গ্রামাঞ্চল হতে নগরাঞ্চলে যাতায়াত বৃদ্ধি পায়।

নতুন সরকারি স্থানের উদ্ভব: নূতন উপনিবেশিক মহানগরীতে নানা প্রকার সরকারি স্থান পরিদৃষ্ট হয়। এইগুলির মধ্যে অন্যতম হল—সরকারি রঙ্গমঞ্চ, উদ্যান, সিনেমাঘর, বাগান প্রভৃতি। তাছাড়াও ক্লাব ও বাগান গৃহও দেখা যায়।

কার্যাবলী: এই সরকারি স্থানগুলি চিত্তাকর্ষক ও প্রাণবন্ত ছিল। এইগুলি আমোদ-প্রমোদের গুরুত্বপূর্ণ উৎস ও উপাদান ছিল। এই স্থানগুলি সামাজিক ভাব বিনিময় বৃদ্ধি করেছিল। এখানে সাধারণ মানুষ সরকার ও সমাজ সম্পর্কে তাদের অভিমত ব্যক্ত করত। তারা সামাজিক রীতিনীতি বিষয়েও প্রশ্ন করত।

প্রশ্ন ৮। কি কি বিষয় ঊনবিংশ শতকের নগর পরিকল্পনা প্রভাবিত করেছিল?

উত্তরঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পর ব্রিটিশগণ নগর পরিকল্পনা সম্পর্কে নানা প্রকার বিষয় মনে পোষণ করত। 

প্রধান বিষয়সমূহ নিম্নরূপ:

(ক) বিদ্রোহের অবিরত ভয়: ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহের পরই রাজগণের মনে বিদ্রোহের সদা ভয় থাকত। সুতরাং তারা সুরক্ষিত ও সুবেষ্টিতভাবে থাকার পরিকল্পনা করেছিল। নিজেদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে তারা দেশীয় জনগণ হতে দূরে থাকতে চেয়েছিল যাতে তারা বিদ্রোহের সম্মুখীন হতে না পারে।

(খ) নিরাপদ আস্তানা: মহাবিদ্রোহের পর ব্রিটিশরা তাদের আবাসস্থল অধিক সুরক্ষিত করেছিল। নগরের নিকট পশু পালনভূমি ও কৃষিভূমিতে ‘সিভিল লাইন’ নামে শ্বেতকায় বসবাস করা স্থান সম্প্রসারণ করেছিল। ইউরোপীয় সেনাপতির নেতৃত্বে সেনাশিবিরসমূহ অধিক নিরাপদ করা হয়।

(গ) শ্বেতশহর: ব্রিটিশ জাতি শ্বেতকায় অর্থাৎ শ্বেত গাত্রবর্ণের অধিকারী এবং তাদের সংক্ষেপে ‘শ্বেত’ বা ‘সাদা’ বলা হয়। ভারতীয়গণ কৃষ্ণবর্ণ। আর্য ভারতীয়দের গাত্রবর্ণ কৃষ্ণ বা কালো। ইংরেজগণ সর্বদাই কৃষ্ণবর্ণ ভারতীয় অপেক্ষা নিজেদের উন্নত মনে করত এবং কৃষ্ণকায় ভারতীয়দের প্রতি ঘৃণা পোষণ করত। এইরূপ অহংবোধ হতে প্রতিটি প্রধান প্রধান শহরে ‘শ্বেত’ ও ‘কৃষ্ণ’ এই দুইটি ভাগে ভাগ থাকত। ব্রিটিশ জাতিসম্ভূত লোকেরা শহরের শ্বেত অঞ্চলে বাস করত এবং শ্বেত অঞ্চল ছিল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মসৃণ রাস্তাঘাট, উন্নত জল সরবরাহ ও জল নিষ্কাষণ ব্যবস্থা সম্বলিত। আর শহরে যে কৃষ্ণকায় লোক বাস করত তাদের অঞ্চল ছিল নোংরা, মশামাছির আতুর ঘর এবং সংক্রামক ব্যাধির অবাধ শিকারস্থল।

প্রশ্ন ৯। নূতন মহানগরসমূহের সামাজিক সম্পর্কসমূহের কি পরিমাণ রূপান্তর ঘটেছিল?

অথবা,

নতুন ঔপনিবেশিক মহানগরগুলিতে সামাজিক সম্পর্কে কতটা পরিবর্তন ঘটেছিল?

উত্তরঃ সাধারণ ভারতীয়দের কাছে নগরজীবন এক আশ্চর্য বিষয় — এক অবিরত যাত্রা। এখানে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য স্পষ্ট হয়।

(ক) আবাসস্থল হতে কর্মস্থলের পৃথকীকরণ: নূতন উপনিবেশিক নগরগুলিতে যাতায়াতের নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা পরিলক্ষিত হয়। নগরে রেলগাড়ি, বাস এবং ঘোড়ায় টানা গাড়ি থাকে। সুতরাং মানুষ নগর হতে পূর্ববর্তী স্থানে বসবাস করতে পারত। ধীরে ধীরে বাসস্থান হতে কর্মস্থল পৃথক হয়ে যায়।

(খ) সামঞ্জস্যতার অভাব: নূতন উপনিবেশিক শহরে সামঞ্জস্যতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। এই নগরগুলি বিশালাকার হওয়ায় মানুষ একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে না। ফলে মানুষের মধ্যে সৌজন্যবোধের অভাব দেখা যায়।

(গ) সরকারি স্থান নির্মাণ: নূতন উপনিবেশিক নগরে রঙ্গমঞ্চ, সিনেমাঘর, সরকারি পার্ক ছিল। এই স্থানগুলি বিনোদনমূলক ছিল।

(ঘ) নূতন সামাজিক গোষ্ঠীর উদ্ভব: নূতন উপনিবেশিক নগরের মানুষে তাদের প্রাচীন পরিচিতি হারায়। তারা নূতন একটি শ্রেণীতে পরিণত হয়। এই লোকগুলির মধ্যে কেরানি, শিক্ষক, আইনবিদ, ডাক্তার ও হিসাবরক্ষক ছিল অন্যতম।

(ঙ) মহিলাদের নূতন সুযোগ: নূতন ঔপনিবেশিক নগরে মহিলাগণ নিজেদের সার্বিক বিকাশের জন্য নানা প্রকার সুযোগ-সুবিধা ভোগ করত। এই নগরগুলিতে নূতন শ্রমিক শ্রেণীরও উদ্ভব ঘটেছিল।

প্রশ্ন ১০। ভারতের একখানি মানচিত্র অঙ্কন করে প্রধান প্রধান নদী ও পর্বতমালাসমূহ চিহ্নিত কর। এতে বোম্বাই, কলিকাতা ও মাদ্রাজসহ দশটি মহানগর চিহ্নিত কর।

উত্তরঃ 

মানচিত্র সংকেত:

প্রধান নদীসমূহ

(১) গঙ্গা।

(২) ব্রহ্মপুত্র।

(৩) সিন্ধু।

(৪) মহানদী।

(৫) কৃষ্ণা।

পর্বতমালাসমূহ

(৬) আরাবল্লী পর্বতমালা।

(৭) বিন্ধ্যপর্বতমালা।

(৮) সাতপুরা পর্বতমালা।

(৯) পূর্বঘাট পর্বতমালা।

(১০) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা।

মহানগরসমূহ

(১১) মুম্বাই।

(১২) কোলকাতা।

(১৩) চেন্নাই।

(১৪) দিল্লি।

(১৫) বেঙ্গালুরু।

(১৬) হায়দ্রাবাদ।

(১৭) আহমেদাবাদ।

(১৮) তিরুবনন্তপুরম।

(১৯) এলাহাবাদ।

(২০) গুয়াহাটি।

প্রশ্ন ১১। ভারতের একটি মানচিত্র অঙ্কন করে প্রদেশগুলি চিহ্নিত কর যেখানে নিম্নে প্রদত্ত ভাষাগুলি রাজ্যিক ভাষা:

(ক) মালায়ালাম। 

(খ) উড়িয়া। 

(গ) তেলুগু। 

(ঘ) কন্নড়।

উত্তরঃ কেরালা, উড়িষ্যা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও কর্ণাটক চিহ্নিত করে ভারতের map করতে হবে।

FAQs

Question: Where I can get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Suggestion Chapter Wise?

Answer: You can get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Suggestion Chapter Wise On Roy Library. For every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly.

Question: Which is the best Site to get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Solutions?

Answer: Roy Library is a genuine and worthy of trust site that offers reliable information regarding Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Solutions.

Question: How can students use the solutions for exam preparation?

Answer: Students can use the solutions for the following:

  • Students can use solutions for revising the syllabus.
  • Students can use it to make notes while studying.
  • Students can use solutions to understand the concepts and complete the syllabus.

IMPORTANT NOTICE

We have uploaded this Content by Roy Library. You can read-write and Share your friend’s Education Purposes Only. Please don’t upload it to any other Page or Website because it is Copyrighted Content.

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top