Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র

Join Roy Library Telegram Groups

Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র is a textbook prescribed by the AHSEC Board Class 12 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র Solutions are free to use and easily accessible.

Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র

Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র Question Answer in Bengali. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 2nd year History in Bengali, Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র Question answer in Bengali gives you a better knowledge of all the chapters. Class 12 History Chapter 9 কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam AHSEC Board Class 12 History in Bengali Medium Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. Class XII History in Bengali Solutions Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 History in Bengali Medium Textbooks. HS 2nd Year History in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.

কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র

দ্বিতীয় খণ্ড

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। বোড়শ ও সপ্তদশ শতকে ভারতে কত শতাংশ লোক গ্রামে বাস করত?

উত্তরঃ ৮৫ শতাংশ।

প্রশ্ন ২। পলাহ নাহার খাল কোথায় ছিল?

উত্তরঃ পাঞ্জাবে।

প্রশ্ন ৩। শাহ নাহার খালের দৈর্ঘ্য কতটুকু ছিল?

উত্তরঃ ৭৮ মাইল।

প্রশ্ন ৪। গ্রামের প্রধানকে কি বলা হত?

উত্তরঃ গ্রামপতি (মুকদ্দম)।

প্রশ্ন ৫। টেভার্নিয়ার কে ছিলেন?

উত্তরঃ বিখ্যাত ফরাসি পর্যটক।

প্রশ্ন ৬। মোগল যুগে ক্ষুদ্র গণতন্ত্র’ কাকে বলা হত?

উত্তরঃ গ্রামকে।

প্রশ্ন ৭। আবুল ফজল কে ছিলেন?

উত্তরঃ আকবরের রাজসভার সভাসদ।

প্রশ্ন ৮। আকবরনামা গ্রন্থের লেখক কে?

উত্তরঃ আবুল ফজল।

প্রশ্ন ৯। ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থের লেখক কে?

উত্তরঃ আবুল ফজল।

প্রশ্ন ১০। মোগল সাম্রাজ্য কে প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তরঃ বাবর।

প্রশ্ন ১১। মোগল যুগের সূচনা কখন হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ১২। নাদির শাহ কখন ভারত আক্রমণ করেন?

উত্তরঃ ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে।

প্রশ্ন ১৩। মোগল যুগে বহুল পরিমাণে চাষ করা কয়েকটি শস্যের নাম লেখ।

উত্তরঃ মোগল যুগে বহুল পরিমাণে চাষ করা কয়েকটি শস্য হল ধান, গম ও ভুট্টা।

প্রশ্ন ১৪। অর্থকরী দুটি শস্যের নাম লেখ।

উত্তরঃ অর্থকরী দুটি শস্য হল-

(ক) তুলা। এবং 

(খ) কুশিয়ার।

প্রশ্ন ১৫। মোগল যুগের দুই প্রকার কৃষকের নাম লেখ।

উত্তরঃ মোগল যুগের দুই প্রকার কৃষকের নাম — 

(ক) খুদ খাস্তা। এবং 

(খ) পাহী খাস্তা।

S.L. No.সূচীপত্র
প্রথম খণ্ড
অধ্যায় -1ইট, মনি ও হাড়
অধ্যায় -2রাজা, কৃষক ও নগরসমূহ
অধ্যায় -3জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি (প্রাচীন সমাজ)
অধ্যায় -4দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য (সাংস্কৃতিক অগ্রগতি)
অধ্যায় -5প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ
দ্বিতীয় খণ্ড
অধ্যায় -6পর্যটকদের দৃষ্টিতে (দশম থেকে সপ্তদশ শতক)
অধ্যায় -7ভক্তি ও সুফী পরম্পরা
অধ্যায় -8একটি সাম্রাজ্যবাদী রাজধানী – বিজয়নগর
অধ্যায় -9কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র
অধ্যায় -10কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র
তৃতীয় খণ্ড
অধ্যায় -11উপনিবেশবাদ ও গ্রামাঞ্চল
অধ্যায় -12বিদ্রোহ ও রাজ (১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ)
অধ্যায় -13উপনিবেশিক নগর
অধ্যায় -14মহাত্মা গান্ধী ও জাতীয় আন্দোলন
অধ্যায় -15দেশ বিভাজনের উপলব্ধি
অধ্যায় -16সংবিধান প্রণয়ন
অধ্যায় -17মানচিত্র অঙ্কনকার্য

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। মোগল যুগে সরকারি বিষয়াগণ কৃষিপ্রধান সমাজখানি কেন নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছিল?

উত্তরঃ মোগল সাম্রাজ্যে প্রধান আয়ের উৎস ছিল ভূমি হতে প্রদত্ত রাজস্ব। এই আয়সমূহ মূলত গ্রামীণ কৃষিসমাজ হতে গৃহীত হত। এই কারণে রাজস্ব বিষয়াগণ কৃষি প্রক্রিয়ায় বিশেষ দৃষ্টি দিতেন। কৃষি উৎপাদন তাদের নিয়ন্ত্রণাধীনে ছিল। তারা রাজস্ব ধার্য ও সংগ্রহ করত।

প্রশ্ন ২। ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থের লেখক কে? এই গ্রন্থে তৎকালীন কৃষিব্যবস্থা সম্পর্কে কি উল্লেখ আছে?

উত্তরঃ ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থের লেখক হলেন আবুল ফজল। উক্ত গ্রন্থে কৃষিকার্যের তথ্যাদির মধ্যে যা অন্যতম তা নিম্নরূপ:

(ক) নিয়মিত কৃষিকার্য সুনিশ্চিত করা।

(খ) রাজ্য কর্তৃক রাজস্ব সংগ্রহ পদ্ধতি।

(গ) সরকার ও জমিদারের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ।

প্রশ্ন ৩। মোগল যুগে ইন্দো-পারসি উৎসে ব্যবহৃত চারটি শব্দের উল্লেখ কর।

উত্তরঃ মোগল যুগে ইন্দো-পারসি উৎসে ব্যবহৃত চারটি শব্দ হল – 

(ক) রায়ত। 

(খ) মুজারিয়ান।

(গ) কিষান। ও 

(ঘ) আস্মী।

প্রশ্ন ৪। খুদ খাস্তা ও পাহী খাস্তা কারা ছিল?

অথবা,

‘খুদ খাস্তা’ ও ‘পাহী খাস্তা’ কৃষক বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ খুদ খাস্তা ও পাহী খাস্তা উভয়ই কৃষক ছিল।

খুদ খাস্তা গ্রামে বাস করত। গ্রামে তাঁদের নিজস্ব জমি ছিল। তারা জমি চাষ করত। পাহী খাস্তা হল অনাবাসী কৃষক। তারা অন্য গ্রামে বাস করত ও জমি চাষ করত।

প্রশ্ন ৫। মোগল যুগে ক্রমবর্ধমান কৃষি উৎপাদনের চারটি উপাদান উল্লেখ কর।

উত্তরঃ মোগল যুগে ক্রমবর্ধমান কৃষি উৎপাদনের চারটি উপাদান নিম্নরূপ:

(ক) জমির আধিক্যতা।

(খ) শ্রমিকের অধিক যোগান।

(গ) কৃষকদের গতিশীলতা।

(ঘ) কৃত্রিম জলসেচ ব্যবস্থা।

প্রশ্ন ৬। ঋতুভিত্তিক দুটি শস্যের নাম উল্লেখ কর।

উত্তরঃ ঋতুভিত্তিক দুটি শস্য হল —

(ক) খরিফ শস্য (শরৎকালে)। এবং 

(খ) রবি শস্য (শীতকালে)।

প্রশ্ন ৭। সপ্তদশ শতকে বিদেশ হতে ভারতে আসা চারটি নতুন শস্যের নাম উল্লেখ কর।

উত্তরঃ সপ্তদশ শতকে বিদেশ হতে ভারতে আসা চারটি নুতন শস্য হল – 

(ক) মকাই। 

(খ) টমেটো, আলু ও মরিচ। 

(গ) আনারস। ও 

(ঘ) পেঁপে।

প্রশ্ন ৮। টোডরমল উল্লেখিত চার প্রকার মাটির নাম লেখ।

উত্তরঃ টোডরমল উল্লেখিত চার প্রকার মাটি হল-

(ক) পরাউতি। 

(খ) পোলেজ। 

(গ) চাচর। ও

(ঘ) বঞ্জর।

প্রশ্ন ৯। আবুল ফজল রচিত দুইখানি গ্রন্থের নাম লেখ।

উত্তরঃ আবুল ফজল রচিত দুইখানি গ্রন্থ হল-

(ক) আকবরনামা। এবং 

(খ) আইন-ইআকবরি।

প্রশ্ন ১০। মোগল যুগে জলসেচের দুটি উৎস উল্লেখ কর।

উত্তরঃ মোগল যুগে জলসেচের দুটি উৎস হল- 

(ক) নালা ও খাল। এবং 

(খ) পুকুর।

প্রশ্ন ১১। জমিদারদের থেকে গ্রামের জোতদাররা প্রায়ই বেশি প্রভাবশালী দেখা যায়। দুটি কারণ উল্লেখ কর।

উত্তরঃ জমিদারদের থেকে গ্রামের জোতদারদের বেশি প্রভাবশালী হওয়ার দুটি কারণ নিম্নরূপ:

(ক) অর্থ প্রদানের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে রায়তদের নিয়ন্ত্রণ করা।

(খ) রাজস্ব প্রদান স্থগিত রাখা অথবা বেনামী জমি দখল করা।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। মোগল যুগের জলসেচ পদ্ধতি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ বর্তমানকালের মতো মোগল যুগেও কৃষি বৃষ্টিনির্ভর ছিল। কিন্তু এমন কিছু শস্য আছে যাতে জলের পর্যাপ্ত যোগান অপরিহার্য। এর জন্য কৃত্রিম জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। নদী ও পুকুরই ছিল জল সরবরাহের প্রধান উৎস। কৃষিকার্যের জন্য পুকুর ও নদীর জল ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়েছিল। জলসেচ প্রকল্পসমূহ রাজ্য হতে সাহায্য পেত। উত্তর ভারতে সরকারি তত্ত্বাবধানে বহু নূতন খাল খনন ও পুরাতনগুলিকে মেরামত করা হয়। উদাহরণস্বরূপ- শাহজাহানের রাজত্বকালে পাঞ্জাবে সাহনাহার খন্দ খনন করা হয়েছিল। এই খাল ৭৮ মাইল দীর্ঘ ছিল।

প্রশ্ন ২। “ভারতের গ্রামসমূহ ক্ষুদ্র গণতন্ত্র।” ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ উনিশ শতকে বৃটিশ বিষয়াগণ ভারতের গ্রামসমূহকে ‘ক্ষুদ্র গণতন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছেন। গ্রামস্তরে ভ্রাতৃত্ববোধের সামূহিক স্তরে সম্পদ ও শ্রমের বিতরণ করা হয়েছিল। কিন্তু তা সাম্যবাদের প্রতীক ছিল না। গ্রামগুলিতে সম্পত্তির ব্যক্তিগত মালিকানা, জাত ও লিঙ্গবৈষম্য পরিলক্ষিত হত। কিছুসংখ্যক সম্ভ্রান্ত লোক গ্রামের বিবাদ সমাধানের ক্ষেত্রে অগ্রসর হয়েছিল। তারা গরিবদের শোষণ করেছিল। এমনকী ন্যায় প্রদানের ক্ষমতাও তাদের হাতে ন্যস্ত ছিল।

প্রশ্ন ৩। মনসবদারি প্রথা বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ জায়গির ব্যবস্থা বৃহত্তর মোগল সাম্রাজ্যের নিরাপত্তা ও সংহতি বিধানের পক্ষে যথেষ্ট ছিল না। আকবর সুশাসন প্রবর্তনের জন্য একটি দক্ষ আমলাতন্ত্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। এই উদ্যোগের পরিণতি হল মনসবদারি প্রথার উদ্ভব। ‘মনসব’ কথার অর্থ হল পদমর্যাদা। এটি ছিল একাধারে সামরিক ও বেসামরিক মোগল কর্মীমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের মর্যাদার দ্যোতক। ইতিহাসবিদ আতহার আলি এর সংজ্ঞা নির্ণয় করে বলেছেন“মনসব হল কোন ব্যক্তিকে প্রদত্ত মর্যাদা এবং তার কর্তব্য ও দায়িত্বের পরিচয় ও ভিত্তি।” সামরিক ও অসামরিক-উভয় ক্ষেত্রেই ‘মনসব’ দেওয়া হত। উচ্চ-অভিজাত, বিচারক, জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি ইত্যাদি প্রতিক্ষেত্রেই সম্রাট ‘মনসব’ প্রদান করতেন। মনসবদারের নিয়োগ ও পদচ্যুতি ছিল একান্তভাবেই সম্রাটের ইচ্ছাধীন। মনসবদারদের সাধারণভাবে সেনাবাহিনী পোষণ করতে হত এবং সম্রাটের প্রয়োজনে সেনাবাহিনী দিয়ে সাহায্য করতে হত। তবে সকল মনসবদারের ক্ষেত্রে সামরিক কর্তব্য বাধ্যতামূলক ছিল না। মনসবদারদের কোন বংশানুক্রমিক দাবি স্বীকৃত ছিল না। একজন মনসবদার ‘জাট’ ও ‘সওয়ার’ এই দুটি পদের অধিকারী হতেন। জাট ও সওয়ার-এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে মতভেদ আছে। সাধারণভাবে মনে করা হয়, ‘জাট’ হল মনসবদারের ব্যক্তিগত পদমর্যাদা ও ‘সওয়ার’ হল তার অধীনে অশ্বারোহী সৈন্যের সংখ্যা। প্রত্যেক মনসবদার সেনাবাহিনীর ব্যয়নির্বাহের জন্য জায়গির পেতেন। আকবরের আমলে মনসবদারদের ত্রিশটি স্তর ছিল। সর্বনিম্ন মনসবদারের অধীনে ১০ জন এবং সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার সেনা থাকত। উচ্চ মনসব মূলত রাজপরিবারের লোকেদের জন্য নির্দিষ্ট থাকত। মনসবদারের অধীনস্থ সৈনিকরা তাদের ঘোড়ার সংখ্যার ভিত্তিতে নানা ভাগে বিভক্ত ছিল। যার তিনটি ঘোড়া, তাকে বলা হত ‘শি-আসপা’, যার দুটি ঘোড়া তাকে বলা হত ‘দু-আসপা’ এবং যার একটি ঘোড়া তাকে বলা হত ‘এক-আসপা’। আবার অনেক সময় দু’জন সৈনিকের একটি মাত্র ঘোড়া থাকত। এদের বলা হত ‘নিম-আসপা’।

প্রশ্ন ৪। জায়গিরদারি ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ মোগল শাসনব্যবস্থার বিশেষ অঙ্গ ছিল জায়গির প্রথা। সারা দেশের চাষযোগ্য জমিকে তিনভাগে ভাগ করা হত—খালিসা, জায়গির ও পাইবাকি। সরকারি কর্মীরা খালিসা বা খাস জমির রাজস্ব সংগ্রহ করে কোষাগারে জমা দিত। তবে দেশের বিপুল পরিমাণ জমি নির্দিষ্ট শর্তে বিশেষ ব্যক্তির হাতে হস্তান্তরিত করা হত। এর রাজস্ব আদায় করার দায়িত্ব পেত বন্দোবস্ত-প্রাপক ব্যক্তি। এই জমিকে বলা হত ‘জায়গির জমি’। প্রাপককে বলা হত ‘জায়গিরদার’। সরকারি কর্মচারীদের একাংশ নগদ অর্থের পরিবর্তে জায়গির জমি ভোগ করতেন। এদের বলা হত ‘তন্থা জায়গির’। জায়গিরদার তাঁর জন্য নির্দিষ্ট জমি (বরাত) থেকে রাজস্ব আদায় করতেন এবং নিজ বেতন ও প্রশাসনিক খরচ বাবদ অর্থ রেখে উদ্বৃত্ত অর্থ রাজকোষে জমা দিতেন। এছাড়া ‘ওয়াতন জায়গির’ (বংশানুক্রমিক জমিদারি), মাসরূত জায়গির (বিশেষ পদের মর্যাদার পুরস্কার), ইনাম জায়গির (জ্ঞানীগুণী ব্যক্তির সম্মানী) ইত্যাদি নানা প্রকার জায়গির প্রচলিত ছিল। তবে দেশের প্রায় পঁচাত্তর শতাংশ আবাদি জমিই ‘তন্‌খা জায়গির’ হিসেবে উচ্চ কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টিত হয়েছিল।

প্রশ্ন ৫। ‘আইন-ই-আকবরি’ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ ‘আইন-ই-আকবরি’ আবুল ফজল রচিত একখানি বিখ্যাত গ্রন্থ। এই গ্রন্থে সম্রাট আকবরের শাসনকালের নানা তথ্যাদি পাওয়া যায়। আকবরের নির্দেশে রচিত ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থখানি মোগল যুগের এক ঐতিহাসিক দলিল। পাঁচবার সংশোধনের পর সম্রাট আকবরের রাজত্বের ৪২তম বর্ষে অর্থাৎ ১৫৯৮ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থখানি রচনার কাজ সম্পূর্ণ করা হয়। গ্রন্থখানিতে মোগল দরবার ও প্রশাসন, সৈন্য ও সম্পদ, রাজস্ব ও রাজস্ব উৎস, আকবরের সাম্রাজ্যের ভৌগোলিক বিবরণ, জনসাধারণের সাহিত্যিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক তথা ধর্মীয় রীতিনীতির বিস্তৃত বিবরণ আছে। তদুপরি আকবরের প্রশাসনের সকল বিভাগ ও প্রদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রান্তের সূক্ষ্ম ও বিতর্কিত বিষয়সমূহের তথ্য সন্নিবিষ্ট করা হয়েছে। এককথায় ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থে আকবরের সময়ের মোগল সাম্রাজ্যের এক প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে।

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। মোগল যুগের কৃষি সমাজের ইতিহাস রচনা করতে ‘’আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থের উৎস ব্যবহার করার সমস্যাসমূহ কি এবং ইতিহাসবিদগণ কিভাবে তার সমাধান করেছিলেন?

উত্তরঃ ‘আইন-ই-আকবরি’ গ্রন্থখানা আবুল ফজল ১৫৯৮ খ্রিস্টাব্দে রচনা করেছিলেন। ভুলভ্রান্তি দূর করবার জন্য তিনি এটা পাঁচবার সংশোধন ও পরিমার্জন করেছিলেন। তিনি অতি সাবধানতা অবলম্বন করে উক্ত গ্রন্থে বিভিন্ন তথ্যাদি সংযোজন করেছিলেন। তিনি সকল প্রকার মৌখিক তথ্যাদি বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে পুস্তকে সন্নিবিষ্ট করেছিলেন। বস্তুত তিনি ন্যূনতম ভুলভ্রান্তি এড়াতে চেয়েছিলেন।

অনেক ঐতিহাসিক এই গ্রন্থে নানা সমস্যা ও জটিলতা পেয়েছিলেন। প্রথমত, তাঁরা মোট যোগফলে অনেক ভুলভ্রান্তি বের করেছিলেন। দ্বিতীয়ত, সকল প্রদেশ থেকে সমানভাবে সাংখ্যিক তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়নি। উদাহরণস্বরূপ, আবুল ফজল বাংলা ও উড়িষ্যার জমিদারদের জাত ও বর্ণের কোন বিবরণ প্রদান করেন নি। তৃতীয়ত, তিনি উৎপাদন সামগ্রীর মূল্য ও শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণের মাপকাঠির কোন উল্লেখ করেননি। তিনি আগ্রা হতে প্রাপ্ত তথ্যাদির উপর নির্ভর করেছিলেন।

এই সকল অসুবিধা হতে মুক্তিলাভের জন্য ইতিহাসবিদগণ ১৭ শতক ও ১৮ শতকে গুজরাট, রাজস্থান ও মহারাষ্ট্রে প্রাপ্ত বিভিন্ন দলিল ব্যবহার করেন। তাছাড়া মোগল শাসনাধীন কালের কৃষিব্যবস্থা সম্পর্কে আলোকপাত করা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অনেক দলিলপত্রও তারা ব্যবহার করেন।

প্রশ্ন ২। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে কৃষি উৎপাদন কতটুকু পেষণ কৃষি হিসাবে চরিত্রায়িত করা সম্ভব হয়েছে? তোমার উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তরঃ মোগল যুগে কৃষির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জনগণের খাদ্যের যোগান দেওয়া। অধিকাংশ চাষিই ধান, গম; মকাই, ভুট্টা প্রভৃতি অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য উৎপাদন করত। কৃষকরা সম্পূর্ণরূপে বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভরশীল ছিল, যা ভারতে কৃষিকার্যের মেরুদণ্ড ছিল। সুতরাং তা কৃত্রিম জলসেচের ব্যবস্থা করেছিল। উত্তর ভারতে সরকার নূতন খাল ও নালা খননের কাজ ও পুরাতন খাল ও নালা মেরামতের কাজ হাতে নিয়েছিলেন। তাছাড়াও কৃষকগণ সেই সকল প্রযুক্তি গ্রহণ করেছিলেন যাতে পশুদের কাজে লাগানো যায়।

ঋতুর উপর নির্ভর করে শস্যকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছিল। একটি হল খরিফ শস্য, অন্যটি হল রবি শস্য। শরৎকালে খরিফ শস্য ও শীতকালে রবি শস্যের চাষ করা হত। সকল কৃষকই বৎসরে অন্তত দুইবার শস্য উৎপাদন করত। কেউ কেউ অবশ্য তিনবারও উৎপাদন করতে পারত। সুতরাং কৃষি কেবল খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্যই নয়, তা হতে লাভও অর্জন করা যেত। অধিকাংশ কৃষকই অর্থকরী ফসল উৎপাদন করত, যা অধিক রাজস্বের যোগান দিত। তারা কার্পাস তুলা ও কুশিয়ারকে অধিক অর্থকরী ফসল হিসাবে গণ্য করত। সুতরাং পেষক ও বাণিজ্যিক উৎপাদন প্রায় প্রতিটি কৃষকের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল।

প্রশ্ন ৩। কৃষি উৎপাদনে মহিলাগণের ভূমিকা বর্ণনা কর।

উত্তরঃ গোগল যুগে কৃষি উৎপাদন কার্যে পুরুষ ও মহিলা সমান ভূমিকা পালন করত। পুরুষগণ জমি চাষ করত এবং মহিলাগণ বীজ বপন, চারা রোপণ, শস্য কাটা ও শুকানো প্রভৃতি নানা কাজ করত। অন্যভাবে বলা যায় যে, মোগল সমাজে কোন প্রকার লিঙ্গবৈষম্য ছিল না। মহিলা ও পুরুষ উভয়ই কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কঠোর পরিশ্রম করত। ভূসম্পত্তিবান পরিবারের মহিলাগণ জমির উত্তরাধিকার ভোগ করত। মহিলাগণের গ্রামীণ বাজারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার কথা পাঞ্জাবের বহু ঐতিহাসিক উল্লেখ করেছেন। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি তার বিক্রিও করত।

সুতা কাটা, কাপড় বোনা, মাটির বাসনপত্র তৈরি, সেলাই করা ও কারিগরি কার্যাবলী মহিলা শ্রমিকদের শ্রমের উপর নির্ভর করত।

প্রশ্ন ৪। মোগল অর্থনীতিতে ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার গুরুত্ব আলোচনা কর।

উত্তরঃ মোগল যুগের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ছিল ভূমিরাজস্ব ও কৃষি। সেইজন্য মোগল যুগে কৃষির উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়া সাম্রাজ্যের রাজস্ব নির্ধারণ ও সংগ্রহ করবার জন্য এক শক্তিশালী প্রশাসনিক ব্যবস্থার আবশ্যক ছিল। ‘দেওয়ান’ নামক বিষয়া এই ব্যবস্থার অংশীদার ছিলেন এবং রাজ্যের সমগ্র আর্থিক ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করতেন। এইভাবে দেওয়ান রাজার বিষয়াগণ কৃষিজগতের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে এবং কৃষি সম্পর্কের এক নূতন রূপ প্রদান করে।

রাজস্ব নির্ধারণ করার আগে জমি জরিপ করা হত। উৎপাদিকা শক্তির উপর ভিত্তি করে রাজস্বের পরিমাণ নির্ধারণ করা হত। ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থা দুইভাগে বিভক্ত ছিল— প্রথমটি হল রাজস্ব নির্ধারণ এবং দ্বিতীয়টি হল রাজস্ব সংগ্রহ। ‘জমা’ রাজস্ব ধার্য করা এবং ‘হাসিল’ হল প্রকৃত রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ। আকবরের এক আদেশ অনুসারে রাজস্ব আধিকারিক নগদ অর্থে রাজস্ব আদায় করতে পারতেন। অবশ্য উৎপাদিত শস্যের দ্বারা রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থাও ছিল। সুতরাং মোগলযুগে অর্থের আদান-প্রদান গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

প্রশ্ন ৫। কৃষিপ্রধান সমাজে জাতিব্যবস্থা আর্থ-সামাজিক সম্পর্কে কি পরিমাণ প্রভাব বিস্তার করেছিল বলে তুমি ডাব? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ কৃষিপ্রধান সমাজে জাতিপ্রথা এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। জাতিগত প্রভেদের জন্যই কৃষকগণকে কিছুসংখ্যক সম্প্রদায়ে ভাগ করা হয়েছিল। কৃষিকার্যকে কিছু সংখ্যক লোক নীচু কাজ বলে মনে করত। তাই তারা কিছুসংখ্যক লোককে নীচু জাতি মনে করে তাদের কিছু পরিমাণ নীচু কাজ করতে বাধ্য করত। ফলে তারা দরিদ্র জীবনযাপন করত। সেই সময় জনসংযোগ ব্যবস্থা ছিল না, যদিও আমাদের হাতে থাকা সীমিত তথ্য অনুযায়ী গ্রামসমূহে এক-দুইজন লোক সাধারণ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। আধুনিক ভারতে দলিতগণের মতোই এই সমস্ত লোকের বিষয়-সম্পত্তি অত্যন্ত কম ছিল। তারা জাতিব্যবস্থার নিয়ম-নীতির মধ্যে ছিল। অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যেও এইপ্রকার ভেদভাব ছিল। মুসলমান সম্প্রদায়ের নীচু কাজ করা লোকজন গ্রামের বাইরে বাস করত। বিহারের মালদাজ দাসগণকে হেয় চোখে দেখা হত। অন্যদিকে মধ্যম শ্রেণীর লোকদের মধ্যে এইরূপ সম্পর্ক ছিল না। সতেরো শতকে মাড়োয়াতে লিখিত একটি গ্রন্থে রাজপুতগণকে প্রকৃতপক্ষে কৃষক বলে উল্লেখ করা আছে। জাঠগণ কৃষক ছিল। তারা রাজপুতদের নীচে ছিল। মথুরা বৃন্দাবন ক্ষেত্রে গৌরবগণ কৃষিকর্মের সঙ্গে জড়িত হয়ে নিজেদের রাজপুত বলে দাবি করেছিল। সুতরাং এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, জাতিপ্রথা সামাজিক ও অর্থনৈতিক উভয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নির্ধারক উপাদান ছিল।

প্রশ্ন ৬। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে বনাঞ্চলবাসীদের জীবন কিভাবে পরিবর্তন হয়েছিল বর্ণনা কর।

উত্তরঃ মোগল যুগের সমসাময়িক রচনায় বনাঞ্চলবাসী বা জঙ্গলবাসীদের জংলি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু জংলি মানে সভ্যতাহীন অসভ্য বোঝায় না। সেইসময় বন বা জঙ্গলের উপাদান, যেমন—শিকার ও জুম খেতে জীবন নির্বাহকারীদের জংলি বলা হত। এই কাৰ্যসমূহ সম্পূর্ণ ঋতুভিত্তিক ছিল। উদাহরণস্বরূপ—ভেনাগণ সমস্ত বসন্তকালে জঙ্গলে উৎপাদিত সামগ্ৰীসমূহ সংগ্রহ করে গ্রীষ্মকালে মাছ ধরা, বর্ষাকালে ক্ষেত করা, শরৎ ও শীতকালে শিকার করত। এই বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসমূহ থেকে তাদের গতিশীলতা স্থায়ী ও নিরন্তর বলে ধারণা করতে পারা যায়।

(ক) হাতি ধরা ও সরবরাহ করা: অধিকাংশ জঙ্গলবাসী হাতি ধরত। তারা এই হাতিগুলি রাজকীয় সেনাবাহিনীতে সরবরাহ করত। সুতরাং জংলি লোকদের উপর ধার্য করা ‘পেশকশ’ হাতির যোগান অন্তর্ভুক্ত করত।

(খ) বাণিজ্যিক কৃষির বিস্তার: বহুসংখ্যক জঙ্গলবাসী কৃষির বাণিজ্যিকিকরণ বিস্তার করতে আরম্ভ করে। তারা মধু, গম, মৌমাছিদের মোম প্রভৃতি অন্যান্য দেশে রপ্তানি করত।

(গ) আন্তঃবাণিজ্য: বহুসংখ্যক জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত লোক, যেমন—পাঞ্জাবের লোহিয়া ভারত ও আফগানিস্থানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করত। সুতরাং তাদের মধ্যে অনেকে জমিদারে পরিণত হয়েছিল। তাদের মধ্যে মুষ্টিমেয় রাজাও হয়েছিলেন।

(ঘ) সামরিক সেবাকার্য: বহুসংখ্যক জনজাতি লোক সামরিক সেবাকার্য প্রদান করত। যখন তারা রাজা হত তখন তারা তাদের সৌভ্রাতৃত্বের কাছে সামরিক সেবা প্রদানের দাবি করত। উদাহরণস্বরূপ, অহোম রাজাদের অনেক লোক ছিল যারা জমির পরিবর্তে সামরিক সেবাকার্য প্রদান করত।

প্রশ্ন ৭। মোগল যুগে জমিদারদের ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ জমিদারগণ হল সেই শ্রেণীর লোক যারা প্রত্যক্ষভাবে কৃষি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত নন। তারা সমাজে উচ্চ মর্যাদা ভোগ করেন।

(ক) জমিদারগণ তাদের জমির মালিক। তারা তাদের জমিকে নিজেদের সম্পত্তি বলে গণ্য করেন। তারা জমি বিক্রি ও বন্ধক দিতে পারত। তারা সমাজে নানাপ্রকার অধিকার ভোগ করত।

(খ) জমিদারগণ সমাজের উচ্চশ্রেণীভুক্ত ছিল, যা সমাজে তাদের মর্যাদায় নূতন মাত্রা দিয়েছিল।

(গ) জমিদারগণ সমাজে পরিমিত সেবাকার্য (খিদমত) প্রদান করত। সুতরাং তারা সমাজে সম্মান ও মর্যাদা পেত।

(ঘ) জমিদারগণ অত্যন্ত ক্ষমতাশালী ছিল, কারণ তারা রাষ্ট্রের পক্ষে রাজস্ব সংগ্রহ করত। এই কাজের জন্য অবশ্য তারা আর্থিক সাহায্য পেতেন।

(ঙ) জমিদারদের ক্ষমতার অন্য একটি কারণ হল তারা সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করত। তারা একটি দুর্গ, পদাতিক সৈন্য ও অশ্বারোহী সৈন্য রাখত।

(চ) জমিদারগণ কৃষিজ জমির উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করত। তারা প্রয়োজনে কৃষকদের অর্থঋণ দিয়ে সাহায্য করত।

(ছ) মোগল যুগে সমাজের ধাপ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে জমিদারগণ সমাজের শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত ছিল।

জমিদারগণ সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে তারা সমাজের শোষক ছিল। তারা সাধারণ মানুষকে নানাভাবে শোষণ ও অত্যাচার করত।

প্রশ্ন ৮। গ্রামীণ সমাজে গ্রাম পঞ্চায়েত ও গ্রামের মুরুব্বীর ভূমিকা আলোচনা কর।

উত্তরঃ গ্রাম পঞ্চায়েত ছিল গ্রামের বয়স্ক ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের একটি সভা। গ্রামে নানা জাতের লোক বাস করত। পঞ্চায়েত ছিল একটি বহুজাতিক সংস্থা। যা সকল সম্প্রদায়ের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করত। পঞ্চায়েতের গৃহীত সিদ্ধান্ত সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল।

(ক) পঞ্চায়েত প্রধানের ভূমিকা: পঞ্চায়েতে একজন মুরুব্বী থাকতেন। তাকে সাধারণত পঞ্চায়েত প্রধান বলা হত। তাকে গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিগণ সহমতের মাধ্যমে মনোনীত করতেন। তিনি গ্রামের হিসাবনিকাশ দেখাশুনা করতেন। তাকে পাটোয়ারী বা হিসাবরক্ষক সাহায্য করত। তিনি বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলার জন্য কাজের সমন্বয় সাধন করতেন।

(খ) পঞ্চায়েতের কার্যাবলী: পঞ্চায়েতের প্রধান কাজ ছিল সকল সম্প্রদায়ের মানুষ একই জাতি সীমারেখার মধ্যে বাস করা সুনিশ্চিত করা। পঞ্চায়েতের জরিমানা ধার্য করার ক্ষমতা ছিল। পঞ্চায়েত শ্ৰেণীচ্যুত করার মতো মারাত্মক শাস্তি প্রদান করতে পারত।

(গ) জাতি পঞ্চায়েত: গ্রামীণ সমাজে জাতি পঞ্চায়েত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করত। রাজস্থানে জাতি পঞ্চায়েত বিভিন্ন জাতির লোকদের বিবাদ নিষ্পত্তি করত ও জমি-সংক্রান্ত মামলায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করত। জাতি পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত সকলে মান্য করত।

প্রশ্ন ৯। জায়গিরদারি প্রথার ত্রুটিগুলি উল্লেখ কর।

উত্তরঃ জায়গিরদারি ব্যবস্থা শেষপর্যন্ত সুফলদায়ী হতে পারেনি। আকবরের পরবর্তীকালে জায়গির ব্যবস্থার মধ্যে নানা ত্রুটি সঞ্চারিত হয়।

(ক) জাহাঙ্গির থেকে ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মনসবদারের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু জায়গির জমির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় নি। তাই ‘মনসব’ পেলেও অনেককে ‘জায়গির’ পেতে দীর্ঘকাল অপেক্ষা করতে হত। এমতাবস্থায় মনসবদারদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রবল হয় এবং অভিজাতদের ঐক্য বিনষ্ট করে।

(খ) মনসবদারদের চাহিদা মেটাতে বহু খালিসা জমিকে ‘জায়গির’ জমিতে পরিবর্তন করা হয়। ফলে সরকারের রাজস্ব আয় অনেক হ্রাস পায় এবং কোষাগার দুর্বল হয়।

(গ) কোন জমির নির্দিষ্ট সরকারি হিসেবকে বলা হত ‘জমা’। আর ওই জমি থেকে যে রাজস্ব আদায় করা যেত, তাকে বলা হত ‘হাসিল’। জাহাঙ্গিরের আমল থেকে ‘জমা’ ও ‘হাসিল’-এর পার্থক্য বাড়ছিল। জায়গির জমির অভাব সামাল দিতে নির্দিষ্ট জমির ‘জমা’ বৃদ্ধি করে বন্দোবস্ত দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এতে জমা ও হাসিলের পার্থক্য অনেক বৃদ্ধি পেয়ে সংকট তীব্রতর হয়।

(ঘ) জায়গির বদলিযোগ্য হওয়ার কারণে জায়গিরদাররা সর্বদা জায়গিরচ্যুত হবার ভয়ে সন্ত্রস্ত থাকতেন। কৃষকদের কাছ থেকে যত বেশি সম্ভব রাজস্ব আদায় করার প্রবণতা ছিল জোরালো। ফলে কৃষকদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল।

FAQs

Question: Where I can get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Suggestion Chapter Wise?

Answer: You can get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Suggestion Chapter Wise On Roy Library. For every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly.

Question: Which is the best Site to get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Solutions?

Answer: Roy Library is a genuine and worthy of trust site that offers reliable information regarding Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Solutions.

Question: How can students use the solutions for exam preparation?

Answer: Students can use the solutions for the following:

  • Students can use solutions for revising the syllabus.
  • Students can use it to make notes while studying.
  • Students can use solutions to understand the concepts and complete the syllabus.

IMPORTANT NOTICE

We have uploaded this Content by Roy Library. You can read-write and Share your friend’s Education Purposes Only. Please don’t upload it to any other Page or Website because it is Copyrighted Content.

Leave a Reply

error: Content is protected !!
Scroll to Top