Class 12 History Chapter 15 দেশ বিভাজনের উপলব্ধি Questions Answer in Bengali is a textbook prescribed by the AHSEC Board Class 12 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 History Chapter 15 দেশ বিভাজনের উপলব্ধি Solutions in Bengali. The experts of The Roy Library provide solutions for every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly. Class 12 History Chapter 15 দেশ বিভাজনের উপলব্ধি Notes in Bengali are free to use and easily accessible.
Class 12 History Chapter 15 দেশ বিভাজনের উপলব্ধি
Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Class 12 History Chapter 15 দেশ বিভাজনের উপলব্ধি Question Answer in Bengali. The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily. HS 2nd year History in Bengali, Class 12 History Chapter 15 দেশ বিভাজনের উপলব্ধি Question answer in Bengali gives you a better knowledge of all the chapters. Assam AHSEC Board HS 2nd Year History in Bengali, Class 12 History Answers The experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Assam AHSEC Board Class 12 History in Bengali Medium Books Solutions will be able to solve all the doubts of the students. Class XII History in Bengali Solutions Provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the AHSEC Board Class 12 History in Bengali Medium Textbooks. HS 2nd Year History in Bengali Syllabus are present on Roy Library’s website in a systematic order.
দেশ বিভাজনের উপলব্ধি
তৃতীয় খণ্ড
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। মুসলিম লীগ কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন ২। মুসলিম লীগ কখন পাকিস্তান দাবি করেছিল?
উত্তরঃ ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন ৩। ভারতের শেষ গভর্নর-জেনারেল কে ছিলেন?
উত্তরঃ লর্ড মাউন্টব্যাটেন।
প্রশ্ন ৪। ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতীয়রা প্রথমে কোন্ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীনতা দিৱস উদযাপন করেছিল?
উত্তরঃ ২৬ জানুয়ারি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন ৫। “স্বরাজ আমার জন্মস্বত্ব এবং এইটি আমাকে লাভ করতে হবে।” কে বলেছিলেন?
উত্তরঃ বালগঙ্গাধর তিলক।
প্রশ্ন ৬। ভারতের স্বাধীনতাকালে ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তরঃ ক্লীমেন্ট এট্লি।
প্রশ্ন ৭। ক্যাবিনেট মিশন কখন ভারতবর্ষে এসেছিল?
উত্তরঃ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪শে মার্চ।
প্রশ্ন ৮। অন্তর্বর্তী সরকার কখন কার্যভার গ্রহণ করে?
উত্তরঃ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২রা সেপ্টেম্বর।
প্রশ্ন ৯। প্রত্যক্ষ দাবি দিবস কোনদিন পালিত হয়?
উত্তরঃ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট।
প্রশ্ন ১০। বাংলাদেশ কখন স্বাধীনতা লাভ করে?
উত্তরঃ ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর।
S.L. No. | সূচীপত্র |
প্রথম খণ্ড | |
অধ্যায় -1 | ইট, মনি ও হাড় |
অধ্যায় -2 | রাজা, কৃষক ও নগরসমূহ |
অধ্যায় -3 | জ্ঞাতিত্ব, বর্ণ ও শ্রেণি (প্রাচীন সমাজ) |
অধ্যায় -4 | দার্শনিক প্রত্যয় ও স্থাপত্য (সাংস্কৃতিক অগ্রগতি) |
অধ্যায় -5 | প্রাগৈতিহাসিক যুগ — ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ |
দ্বিতীয় খণ্ড | |
অধ্যায় -6 | পর্যটকদের দৃষ্টিতে (দশম থেকে সপ্তদশ শতক) |
অধ্যায় -7 | ভক্তি ও সুফী পরম্পরা |
অধ্যায় -8 | একটি সাম্রাজ্যবাদী রাজধানী – বিজয়নগর |
অধ্যায় -9 | কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র |
অধ্যায় -10 | কৃষক, জমিদার ও রাষ্ট্র |
তৃতীয় খণ্ড | |
অধ্যায় -11 | উপনিবেশবাদ ও গ্রামাঞ্চল |
অধ্যায় -12 | বিদ্রোহ ও রাজ (১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের বিদ্রোহ) |
অধ্যায় -13 | উপনিবেশিক নগর |
অধ্যায় -14 | মহাত্মা গান্ধী ও জাতীয় আন্দোলন |
অধ্যায় -15 | দেশ বিভাজনের উপলব্ধি |
অধ্যায় -16 | সংবিধান প্রণয়ন |
অধ্যায় -17 | মানচিত্র অঙ্কনকার্য |
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার যে কোন দুটি অনুবিধি লেখ।
উত্তরঃ মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনার দুটি অনুবিধি নিম্নরূপ:
(ক) মুসলমান প্রধান অঞ্চলগুলির বাসিন্দাগণ ইচ্ছা করলে তারা পৃথক ডোমিনয়ন গঠন করবে।
(খ) উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ পাকিস্তানে যোগদান করতে চায় কিনা তা সেখানকার জনগণের গণভোট দ্বারা স্থির হবে।
প্রশ্ন ২। ভারতের স্বাধীনতা আইনের প্রধান দুটি শর্ত উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতের স্বাধীনতা আইনের প্রধান দুটি শর্ত নিম্নরূপ:
(ক) এই আইন ভারত ও পাকিস্তান নামে পৃথক দুটি রাষ্ট্র গঠন করে।
(খ) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট হতে ভারত ও পাকিস্তানের শাসন ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের কোন কর্তৃত্ব থাকবে না।
প্রশ্ন ৩। প্রতিষ্ঠার সময়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের যে-কোন দুটি উদ্দেশ্য লেখ।
উত্তরঃ প্রতিষ্ঠার সময়ে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দুটি উদ্দেশ্য নিম্নরূপ:
(ক) দেশের বিভিন্ন অংশের বিভিন্ন মানুষের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করা।
(খ) দেশের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাসমূহ আলোচনা করা ও সমাধানের পন্থা নির্ণয় করা।
প্রশ্ন ৪। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের যে-কোন দুটি সুফল উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতে ব্রিটিশ শাসনের দুটি সুফল নিম্নরূপ:
(ক) ব্রিটিশ শাসনের ফলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ভাবধারার প্রসার ঘটে।
(খ) ব্রিটিশ শাসনের ফলে ভারতে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন ৫। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের যে-কোন দুটি কুফল উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতে ব্রিটিশ শাসনের দুটি কুফল নিম্নরূপ:
(ক) ব্রিটিশ শাসনে অর্থনৈতিক শোষণের ফলে ভারতের আর্থিক অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং জনগণের দুর্দশা বৃদ্ধি পায়।
(খ) ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের কুটির শিল্পের বিনাশ ঘটে।
প্রশ্ন ৬। স্বদেশী আন্দোলনের দুটি কার্যসূচী লেখ।
উত্তরঃ স্বদেশী আন্দোলনের দুটি কার্যসূচী নিম্নরূপ:
(ক) বিদেশি দ্রব্য বর্জন ও স্বদেশী দ্রব্য গ্রহণ।
(খ) খাদ্যবস্ত্র তৈরি ও পরিধান করা।
প্রশ্ন ৭। প্রথম অসমীয়া সংবাদপত্রটির নাম কি ছিল? এইটি কখন প্রকাশিত হয়েছিল?
উত্তরঃ প্রথম অসমীয়া সংবাদপত্র ‘অরুণোদয়’ ১৮৪৬ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল।
প্রশ্ন ৮। মহাত্মা গান্ধী কেন এবং কখন অসহযোগ আন্দোলন স্থগিত করেছিলেন?
উত্তরঃ চৌরিচৌরা পুলিশ থানায় ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই ফেব্রুয়ারি অসহযোগ আন্দোলন স্থগিত করেছিলেন।
প্রশ্ন ৯। কবে এবং কার সভাপতিত্বে রাজ্য পুনর্গঠন আয়োগ গঠন করা হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে ফজল আলির নেতৃত্বে রাজ্য পুনর্গঠন আয়োগ গঠন করা হয়েছিল।
প্রশ্ন ১০। ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে সীমারেখার নাম কি? এই সীমারেখা কেন এবং কবে নির্ধারণ করা হয়েছিল?
উত্তরঃ এই সীমারেখার নাম ‘ডুরান্ড লাইন’। এটা ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে নির্ধারণ করা হয়েছিল।
প্রশ্ন ১১। মুসলমানদের জন্য মুসলিম লীগ কোন্ লীগ সভায় একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের দাবি জানিয়েছিল? লীগের সেই সভার সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তরঃ ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের লাহোর অধিবেশনে। সভাপতি ছিলেন জিন্না।
প্রশ্ন ১২। ব্রিটিশ শাসকদের জাতিগত দন্তের দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ব্রিটিশ শাসকদের জাতিগত দত্তের উদাহরণ দুটি নিম্নরূপ:
(ক) ক্লাব, হোটেল, পার্ক প্রভৃতিতে ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।
(খ) ইংরেজদের সামনে ভারতীয়দের ছাতা, জুতা প্রভৃতি ব্যবহার অপরাধ বলে গণ্য করা হত।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। মন্ত্রী মিশন বা ক্যাবিনেট মিশন সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
উত্তরঃ ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে শ্রমিক দল ইংল্যান্ডে ক্ষমতা গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী এট্লি ভারত সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ভারত সচিব প্যাথিক লরেন্স, বাণিজ্য সচিব স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস্, নৌ-সচিব মিঃ আলেকজান্ডারকে নিয়ে গঠিত মন্ত্রী মিশন ভারতে প্রেরণ করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক পৃথক ভাবে আলোচনায় ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই মে তারিখে ভবিষ্যৎ সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি ‘গণ পরিষদ’ এবং শাসন পরিচালনার জন্য একটি ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তাতে পাকিস্তান প্রস্তাব বাতিল করা হয়। কংগ্রেস এই প্রস্তাব মেনে নেয়। প্রতিবাদে মুসলিম লীগ ব্রিটিশের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়।
প্রশ্ন ২। মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
উত্তরঃ লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ভারতের গভর্নর-জেনারেল ছিলেন। লর্ড ওয়াভেলকে অপসারিত করে লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে ভারতের গভর্নর-জেনারেল ও ভাইসরয় পদে নিযুক্ত করা হয়। মাউন্টব্যাটেন ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে শাসনভার গ্রহণ করে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ঘোষণা করলেন। এই ঘোষণায় যা বলা হল তা নিম্নরূপঃ
(ক) মুসলমান-প্রধান অঞ্চলগুলির বাসিন্দাগণ যদি ইচ্ছা করে তাহলে তারা পৃথক ডোমিনিয়ন গঠন করতে পারবে, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও পাঞ্জাব ভাগ করার প্রয়োজন দেখা দেবে।
(খ) উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ পাকিস্তানে যোগদান করতে চায় কিনা তা সেখানকার জনগণের গণভোট দ্বারা স্থির হবে।
(গ) শ্রীহট্ট জেলা পাকিস্তানে যোগদান করতে চায় কিনা তাও গণভোট দ্বারা স্থির হবে।
(ঘ) বাংলা ও পাঞ্জাবের কোন্ কোন্ অংশ পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত হবে তা নির্ধারণের জন্য একটি সীমা নির্ধারণ কমিশন নিয়োগ করা হবে।
(ঙ) ব্রিটিশ পার্লামেন্ট অনতিবিলম্বে ভারতবর্ষকে একটি এবং পাকিস্তান গঠনের সপক্ষে মত হলে দুটি ডোমিনিয়নে পরিণত করবার জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করবে।
তখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী মাউন্টব্যাটেন প্ল্যান বা পরিকল্পনা গ্রহণ করা ভিন্ন গত্যন্তর ছিল না।
প্রশ্ন ৩। ভারতে কে ক্যাবিনেট মিশন প্রেরণ করেছিলেন? উক্ত মিশনের সদস্যদের নাম উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ইংল্যান্ডের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট এট্লি ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ক্যাবিনেট মিশন প্রেরণ করেছিলেন।
উক্ত মিশনের সদস্যরা হলেন —
(ক) ভারত সচিব—প্যাথিক লরেন্স।
(খ) বাণিজ্য সচিব—স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস্। এবং
(গ) নৌ-সচিব—মিঃ আলেকজান্ডার।
প্রশ্ন ৪। ক্যাবিনেট মিশনের ‘সমষ্টি পরিকল্পনা অনুযায়ী রাজ্যগুলির বিভাগকরণ কিভাবে হয়েছিল?
উত্তরঃ ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা অনুযায়ী সর্বভারতীয় একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠন করা হবে এবং প্রদেশগুলি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে। ভারতীয় প্রদেশগুলি ক, খ ও গ—এই তিনভাগে বিভক্ত হবে। ‘ক’ ভাগে থাকবে হিন্দু-প্রধান মাদ্রাজ (চেন্নাই), বোম্বাই (মুম্বাই), মধ্যপ্রদেশ, যুক্তপ্রদেশ (উত্তরপ্রদেশ), বিহার ও উড়িষ্যা। ‘খ’ ভাগে থাকবে মুসলমান-প্রধান পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু ও বেলুচিস্তান। ‘গ’ বিভাগে থাকবে বঙ্গদেশ ও আসাম। প্রত্যেক ভাগ নিজ নিজ এলাকার জন্য সংবিধান স্থির করবে। কিন্তু সকল ভাগ হতেই প্রতিনিধিগণ এবং যে সকল দেশীয় রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যোগদানে স্বীকৃত হবে সেই সকল রাজ্যের প্রতিনিধিগণ সমবেতভাবে ভারত ইউনিয়নের সংবিধান স্থির করবেন। নূতন সংবিধান অনুযায়ী প্রথম নির্বাচনের পর যে-কোন প্রদেশ এক ভাগ হতে অপর ভাগে যোগদান করতে পারবে।
প্রশ্ন ৫। অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
উত্তরঃ মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২রা সেপ্টেম্বর কেন্দ্রে অন্তর্বর্তী সরকারে মোট ১২ জন মন্ত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন ৬ জন কংগ্রেসের, হিন্দু কংগ্রেসের ১ জন ও লীগ বহির্ভূত ২ জন মুসলমান, শিখ, ভারতীয় খ্রিস্টান ও পারসি সম্প্রদায়ের ১ জন করে সদস্য মন্ত্রিসভায় যুক্ত হন। শেষ পর্যন্ত মুসলিম লীগ অন্তর্বর্তী সরকারে যোগদান করে। লিয়াকত আলি গুরুত্বপূর্ণ অর্থদপ্তরের দায়িত্ব পান। কিন্তু মন্ত্রিসভার মধ্যে কংগ্রেস ও লীগ সদস্যরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে অক্ষম হয়। তাদের মধ্যে বিরোধ ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। ফলে সুষ্ঠুভাবে নীতি নির্ধারণ ও শাসন পরিচালনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
প্রশ্ন ৬। অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন মন্ত্রীর/সদস্যের নাম লেখ।
উত্তরঃ মন্ত্রী বা সদস্যগণ হলেন—
(ক) পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু।
(খ) সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল।
(গ) ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ। ও
(ঘ) চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারী।
প্রশ্ন ৭। ওয়াভেল পরিকল্পনা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
উত্তরঃ ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট আন্দোলনের সময় কংগ্রেস বেআইনি ঘোষিত হয়। অধিকাংশ কংগ্রেস নেতা গ্রেপ্তার হন। এই সুযোগে লীগ তার প্রভাব বৃদ্ধি করে। আসাম, সিন্ধু, বাংলা ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে লীগের মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। জাতীয় কংগ্রেস ও লীগের মতভেদ দূর করার জন্য চক্রবর্তী রাজা গোপালাচারী একটি সমাধান সূত্র দেন। কিন্তু জিন্না পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের দাবি তুলে ‘রাজাগোপালাচারী ফর্মুলা (সি. আর. ফর্মুলা) প্রত্যাখ্যান করেন। এই অচলাবস্থা অবসানের জন্য লর্ড ওয়াভেল ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার সাথে আলোচনা করে একটি পরিকল্পনা পেশ করেন। এটি ‘ওয়াভেল পরিকল্পনা’ (১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ) নামে খ্যাত।
এতে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়:
(ক) নতুন সংবিধান রচিত না-হওয়া পর্যন্ত ভারতীয় নেতাদের নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গড়া হবে।
(খ) কেন্দ্রীয় পরিষদে বর্ণহিন্দু ও মুসলমান সদস্যের সংখ্যা সমান থাকবে।
(গ) বড়লাট ও প্রধান সেনাপতি ছাড়া সমস্ত সদস্যই হবেন ভারতীয়।
(ঘ) ক্ষমতা হস্তান্তরের পূর্ব পর্যন্ত প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ইংরেজের হাতেই থাকবে।
প্রস্তাবগুলি আলোচনা করার জন্য লর্ড ওয়াভেল সিমলাতে ভারতীয় নেতাদের একটি বৈঠক ডাকেন (২৫ জুন, ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ)। কংগ্রেসের পক্ষে মৌলানা আজাদ ও মুসলিম লীগের পক্ষে জিন্না এই বৈঠকে উপস্থিত থাকেন। জিন্না দাবি করেন যে, কেন্দ্রীয় পরিষদে মুসলিম লীগের সভ্যদের মধ্য থেকে সমস্ত মুসলিম সদস্য গ্রহণ করতে হবে। কংগ্রেস এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। ফলে সিমলা বৈঠকও ব্যর্থ হয়।
প্রশ্ন ৮। ভারতের একখানি মানচিত্র অঙ্কন করে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত দেশীয় রাজ্য ও ব্রিটিশ-শাসিত অঞ্চলসমূহ চিহ্নিত কর।
উত্তরঃ
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। কি কি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত বিভাগ হয়েছিল তা আলোচনা কর।
অথবা,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
অথবা,
১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ হতে স্বাধীনতা লাভ করা সময় পর্যন্ত জাতীয় আন্দোলনের ঘটনাবলী সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
অথবা,
ভারত বিভাজনের কারণগুলি কি কি?
অথবা,
ভারত বিভাজন কি পরিপ্রেক্ষিতে হয়েছিল?
উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতের রাজনৈতিক ঘটনাসমূহ অতি দ্রুতগতিতে চলতে থাকে। আন্তর্জাতিক চাপে ব্রিটিশ সরকার ভারতের প্রতি তাঁদের নীতি পরিবর্তনে বাধ্য হলেন। অপরদিকে কংগ্রেস ও আজাদ হিন্দ ফৌজের সামরিক কর্মচারীবর্গকে সর্বতোভাবে সাহায্য দান করে দেশবাসীর অধিকতর শ্রদ্ধা অর্জন করল।
১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে ইংল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচনে রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের পতন ঘটল। সেই স্থানে শ্রমিক দলের নেতা ক্লিমেন্ট এট্লি প্রধানমন্ত্রী হলেন। সঙ্গে সঙ্গে নবগঠিত সরকার ভারতের সমস্যা সমাধানে মনোনিবেশ করলেন। ঐ বৎসর অর্থাৎ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে লর্ড ওয়াভেল ঘোষণা করলেন যে, ঐ বৎসরের শেষের দিকে যে সাধারণ নির্বাচন হবে তাতে নির্বাচিত সদস্যবর্গ নিয়ে সংবিধান সভা গঠিত হবে। সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীগণ প্রায় সকল প্রদেশে অধিকাংশ অ-মুসলমান পদগুলিতে নির্বাচিত হলেন। ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করতে পারলেন যে কংগ্রেসই ভারতীয় জনগণের মুখপাত্র।
নৌসেনা বিদ্রোহ: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই ফেব্রুয়ারি বোম্বাইতে (মুম্বাইতে) ‘রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি’-এর ভারতীয় কর্মচারীগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করল। ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করলেন যে ভারতে আর বিদেশি শাসন টিকিয়ে রাখা যাবে না। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ নৌ-বিদ্রোহের পরদিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলি ঘোষণা করলেন যে ব্রিটিশ ক্যাবিনেট মন্ত্রীবর্গের তিনজন—লর্ড পেথিক লরেন্স, স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস্ এবং মিঃ এম. ভি. আলেকজান্ডারের সঙ্গে ভারতবর্ষে সংবিধান সভা গঠনের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করবে।
ক্যাবিনেট মিশন: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে মার্চ ক্যাবিনেট মিশন ভারতে উপস্থিত হলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক পৃথক ভাবে আলোচনার পর ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই মে তারিখে ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি ‘গণ পরিষদ’ (Constituent Assembly) এবং শাসন পরিচালনার জন্য একটি ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ (Interim Government) পরিকল্পনার শ্বেত পত্রিকা (White Paper) প্রকাশিত হয়। এটাই মন্ত্রী মিশনের ‘মে পরিকল্পনা’। এতে পাকিস্তান প্রস্তাব বাতিল করে ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্য নিয়ে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব করা হয়। কংগ্রেস এই প্রস্তাব মেনে নেয়। প্রতিবাদে মুসলিম লীগ প্রত্যক্ষ কার্য (Direct Action) দ্বারা মুসলমানগণকে ব্রিটিশ প্রদত্ত উপাধি বর্জন করতে নির্দেশ দেয়। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট লীগ ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ (Direct Action Day) পালন করে কলকাতা, নোয়াখালি, ত্রিপুরা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি স্থানে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ঘটায়।
অন্তর্বর্তী সরকার: মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব অনুসারে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২রা সেপ্টেম্বর কেন্দ্রে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। মুসলিম লীগ অন্তর্বর্তী সরকার বয়কট করে। ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের সভাপতিত্বে ৯ই ডিসেম্বর গণ পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং ভারতীয় সংবিধান প্রণয়ন শুরু হয়।
মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা: মুসলিম লীগ অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ না দেওয়ায় শাসনব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এদিকে মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব কার্যকর না হওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এট্লি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২০শে ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে ভারতের শাসন ক্ষমতা ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের মধ্যে ভারতীয়দের হাতে অর্পণ করা হবে বলে ঘোষণা করেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে মার্চ লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে গান্ধীজির ও জিন্নার এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
ভারত বিভাগ: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে লর্ড মাউন্টব্যাটেন গভর্নর-জেনারেল হয়ে ভারতে আসেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব কার্যকর করার দায়িত্ব তাঁর উপরই দেওয়া হয়। কার্যভার গ্রহণ করেই মাউন্টব্যাটেন বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে আপোসের কোন সম্ভাবনা না দেখে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুন ভারতকে দ্বিখণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়। মুসলিম লীগ স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। কংগ্রেস নিরুপায় হয়ে অনিচ্ছায় ভারত বিভাগের প্রস্তাব মেনে নেয়। মাউন্টব্যাটেনের পরিকল্পনা কার্যকর করতে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতের স্বাধীনতা আইন’ (Indian Independence Act, 1947) গৃহীত হয়। এই আইন অনুযায়ী ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারতীয়গণের হাতে ভারতের শাসনভার সম্পূর্ণভাবে ন্যস্ত করা হল। এই আইনের ফলে ভারতে দুই স্বতন্ত্র রাষ্ট্র-ভারত ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়। পাঞ্জাবের পশ্চিম ভাগ, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু, বেলুচিস্তান এবং পূর্বপ্রান্তে শ্রীহট্টসহ পূর্ববঙ্গ — এই পাঁচটি বিভিন্ন প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র (Pakistan Dominion) এবং ব্রিটিশ-শাসিত ভারতের অন্যান্য প্রদেশগুলি নিয়ে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র (Indian Union) গঠিত হয়। দুইটি পৃথক গণ পরিষদ উভয় রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ শাসন প্রণালী স্থির করবে বলে ধার্য হল। মহম্মদ আলি জিন্না পাকিস্তানের এবং লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড়লাট নিযুক্ত হলেন। নিজস্ব সংবিধান প্রণয়ন করে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি ভারত একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
প্রশ্ন ২। মন্ত্রী মিশনের সুপারিশসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তরঃ প্রধানমন্ত্রী এটলির পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ব্রিটিশ প্রতিনিধিদল ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ভারতে আসেন। ভারত সচিব লর্ড পেথিক লরেন্স, নৌবাহিনীর প্রধান এ. বি. আলেকজান্ডার, বোর্ডের সভাপতি স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস—ব্রিটিশ মন্ত্রীসভার এই তিনজন সদস্যকে নিয়ে প্রতিনিধি দল গঠিত হয়। এটি ‘ক্যাবিনেট মিশন’ বা ‘মন্ত্রী মিশন’ নামে পরিচিত। মন্ত্রী মিশনের সদস্যরা ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে দীর্ঘ আলোচনা করেন। ভারতের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সমস্যাগুলি এই আলোচনায় গুরুত্ব পায়। কিন্তু দীর্ঘ আলোচনার পরেও সর্বজনগ্রাহ্য কোন মীমাংসা খুঁজে পাওয়া যায়নি। মুসলিম লীগ পৃথক ‘পাকিস্তান’ গঠনের দাবিতে অটল থাকে। অন্যদিকে কংগ্রেস ভারত-বিভাগের যে-কোন প্রস্তাবের প্রবল বিরোধিতা করতে থাকে। মন্ত্রী মিশনও জিন্নার পাকিস্তান দাবিকে খারিজ করে দেয়। মিশনের মতে, পাকিস্তান গঠন করলেই সংখ্যালঘু সমস্যার সমাধান হবে না। তাছাড়া পাকিস্তানের মধ্যে বাংলা, পাঞ্জাব, আসামের মতো অ-মুসলমান জেলাগুলিকে যুক্ত করা সঠিক হবে না।
কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মতভেদের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাবিনেট মিশন তার নিজস্ব সুপারিশ ঘোষণা করে। মিশন তার সুপারিশে ভারতের অখণ্ডতা বজায় রেখে মুসলিম লীগের দাবি যতটা সম্ভব পূরণ করার চেষ্টা করে। এই সুপারিশে নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত হয়:
(অ) ভারতবর্ষে একটি যুক্তরাষ্ট্র (Federal Union) গঠিত হবে। দেশীয় রাজ্যগুলি পরে এই যুক্তরাষ্ট্রে যোগ দিতে পারবে।
(আ) কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারগুলির মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করা হবে। প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও যোগাযোগের দায়িত্ব পাবে কেন্দ্র। অন্যান্য বিষয় থাকবে প্রদেশের হাতে।
(ই) ব্রিটিশ ভারতের প্রদেশগুলিকে তিনটি এলাকায় ভাগ করা হবে।
(ক) হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ৬টি প্রদেশ নিয়ে গঠিত হবে প্রথম এলাকা।
(খ) মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ তিনটি প্রদেশ নিয়ে হবে দ্বিতীয় এলাকা। এবং
(গ) বাংলা, আসাম নিয়ে গঠিত হবে তৃতীয় এলাকা।
(ঈ) প্রদেশগুলির নির্বাচন প্রতিনিধিদের নিয়ে সংবিধান রচনার জন্য গণ পরিষদ গঠিত হবে।
(উ) নতুন সংবিধান অনুসারে নির্বাচনের পর কোন রাজ্য ইচ্ছা করলে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে পারবে।
(ঊ) নতুন সংবিধান চালু না-হওয়া পর্যন্ত একটি অন্তর্বর্তী সরকার শাসন পরিচালনা করবে।
আপাতভাবে স্বীকার করতে হয় যে, মন্ত্রী মিশনের সুপারিশে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সমাধানের একটি কার্যকরী ও যুক্তিগ্রাহ্য প্রয়াস ছিল। প্রদেশগুলিকে তিনটি ভাগে ভাগ করায় মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে একটা ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা ছিল। ইংল্যান্ডে এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো হয়। কংগ্রেস সভাপতি মৌলানা আজাদ বলেন—“সংখ্যালঘু সমস্যার সমাধানের কাজে মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাবের চেয়ে উন্নততর কোন পরিকল্পনা যে সম্ভব নয় মি. জিন্নাও সম্ভবত তা স্বীকার করবেন।” গান্ধীজিও এতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তথাপি শেষ পর্যন্ত ভারতের রাজনৈতিক দলগুলি এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারে নি। মন্ত্রী মিশনের সুপারিশে কংগ্রেস খুশি হতে পারে নি। কারণ এতে ভারত বিভাগের সুযোগ রাখা ছিল। তাছাড়া এই সুপারিশে সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা ছিল, যা কংগ্রেসের নীতিবিরোধী। ফলে কংগ্রেস অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দিতে অসম্মত হয়। তবে সংবিধান রচনার জন্য গঠিত গণ পরিষদে যোগ দিতে কংগ্রেস সম্মত হয়। অন্যদিকে এই সুপারিশে পাকিস্তান গঠনের সম্ভাবনা ছিল। তাই লীগ উল্লসিত হয়। সরকার গঠনের জন্য লীগ বড়লাটকে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু জাতীয় কংগ্রেস অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দিতে অসম্মত হওয়ায় বড়োলাট সরকার গঠন করতে অরাজি হন। এই সিদ্ধান্তে লীগ অসন্তুষ্ট হয় এবং ক্যাবিনেট মিশনের পরিকল্পনা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রশ্ন ৩। ক্যাবিনেট মিশনের পরিকল্পনা বর্ণনা কর। এই ক্যাবিনেট মিশনের গ্রুপিং পরিকল্পনা থেকে আসাম কিভাবে রক্ষা পেয়েছিল?
অথবা,
আসামে ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়া সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা,
ক্যাবিনেট মিশনের ‘সমষ্টি পরিকল্পনা’ বা রাজ্যসমূহের বিভাগকরণ প্রস্তাব আলোচনা কর। আসাম কিভাবে এই প্রস্তাব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল?
অথবা,
আসামে ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনার প্রভাব আলোচনা কর।
উত্তরঃ ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা অনুযায়ী সর্বভারতীয় একটি যুক্তরাষ্ট্র গঠন করা হবে এবং প্রদেশগুলি স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে। ভারতীয় প্রদেশগুলি ক, খ ও গ—এই তিন ভাগে বিভক্ত হবে। ‘ক’ ভাগে থাকবে হিন্দু-প্রধান মাদ্রাজ (চেন্নাই), বোম্বাই (মুম্বাই), মধ্যপ্রদেশ, যুক্তপ্রদেশ (বর্তমানে উত্তর প্রদেশ), বিহার ও উড়িষ্যা। ‘খ’ ভাগে থাকবে মুসলমান প্রধান পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু ও বেলুচিস্তান। ‘গ’ ভাগে থাকবে বঙ্গদেশ ও আসাম। প্রত্যেক ভাগ নিজ নিজ এলাকার জন্য সংবিধান স্থির করবে। কিন্তু সকল ভাগ হতেই প্রতিনিধিগণ এবং যে সকল দেশীয় রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যোগদানে স্বীকৃত হবে সেই সকল রাজ্যের প্রতিনিধিগণ সমবেতভাবে ভারত ইউনিয়নের সংবিধান স্থির করবেন। নূতন সংবিধান অনুযায়ী প্রথম নির্বাচনের পর যে-কোন প্রদেশ এক ভাগ হতে অপর ভাগে যোগদান করতে পারবে।
ক্যাবিনেট মিশনের ‘সমষ্টি পরিকল্পনা’ বা রাজ্যগুলির বিভাগকরণ ও আসাম ও বাংলাদেশকে ‘গ’ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনায় আসামে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয়। একমাত্র মুসলিম লীগ ব্যতীত রাজ্যের সকল শ্রেণীর জনগণ ক্যাবিনেট মিশনের এই প্রস্তাবের প্রতিবাদ জানায়। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই মে তারিখে ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনা ঘোষণার দিনই আসাম প্রদেশ কংগ্রেস এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রস্তাব গ্রহণ করে। আসাম জাতীয় মহাসভাও এইরূপ প্রতিবাদ প্রস্তাব গ্রহণ করে। সমগ্র আসামে ক্যাবিনেট মিশনের এই ‘বিভাগকরণ’ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন আরম্ভ হয়। সারা রাজ্যে বিভিন্ন সভা-সমিতির মাধ্যমে ক্যাবিনেট মিশনের আসাম সম্পর্কিত এই পরিকল্পনা বাতিলের দাবি জানানো হয়। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই জুলাই আসামের প্রধানমন্ত্রী গোপীনাথ বরদলৈ আসাম বিধানসভার উক্ত প্রস্তাব বাতিলের জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন এবং বিধানসভায় তা গৃহীত হয়।
ক্যাবিনেট মিশনের উক্ত পরিকল্পনা প্রস্তাবে আসামে অসন্তোষ ও ভয়ের প্রকৃত কারণ আছে। আসাম সর্বদাই একটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য। আসামকে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য বঙ্গদেশের সঙ্গে যুক্ত করলে আসামের পরিচয় ও অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। অধিকন্তু আসাম সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে লিপ্ত হবে। দিল্লিতে গোপীনাথ বরদলৈ ক্যাবিনেট মিশন ও লর্ড ওয়াভেলের সঙ্গে আলোচনাকালে এই ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে বিজয়চন্দ্র ভগবতী এবং মহেন্দ্রমোহন চৌধুরী শ্রীরামপুরে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে উক্ত বিষয়টি উত্থাপন করেন। মহাত্মা গান্ধী আসামের দাবি সমর্থন করে বললেন যে ক্যাবিনেট মিশনের উক্ত প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে আসামের অস্তিত্ব সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হবে। অবশেষে গোপীনাথ বরদলৈ উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে অন্যান্য ভারতীয় নেতাদের ওয়াকিবহাল করতে সক্ষম হন। অবশেষে ক্যাবিনেট মিশন পরিকল্পনার আসাম সম্পর্কিত উক্ত প্রস্তাবটি বাতিল হয়ে যায়।
প্রশ্ন ৪। ১৯৪৬-৪৭ খ্রিস্টাব্দের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তরঃ মুসলিম লীগ ক্যাবিনেট মিশনের প্রস্তাব বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলে বড়লাট লর্ড ওয়াভেল কংগ্রেস সভাপতি জওহরলাল নেহরুকে অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার গঠনের জন্য অনুরোধ করেন। জাতীয় কংগ্রেস পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে রাজি হয়। কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তে মুসলিম লীগ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়। জিন্না এটিকে ‘মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইংরেজের বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে ঘোষণা করেন। ক্রুদ্ধ জিন্না ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট দিনটিকে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দাবিতে ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ (Direct Action Day) রূপে পালন করার ডাক দেন। তবে এই সংগ্রাম করার বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ নাকি সংখ্যাগরিষ্ঠদের বিরুদ্ধে—সে বিষয়ে লীগ নেতৃত্ব কোন স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন নি।
প্রত্যক্ষ সংগ্রামের নামে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট ধর্মীয় উন্মত্ততা ও নিষ্ঠুরতা প্রথমেই কলকাতা শহরকে গ্রাস করে। ১৬ই থেকে ২০শে আগস্ট কলকাতা শহর একপ্রকার দাঙ্গাকারীদের হাতে চলে যায়। আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণে প্রায় চার হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। আহত হয় দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। ক্রমে দাঙ্গা দেশের অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। ১লা সেপ্টেম্বর বোম্বাই (মুম্বাই) শহরে দাঙ্গা শুরু হয়। এখানেও উভয় সম্প্রদায়ের তিন শতাধিক মানুষ নিহত হয়। পরের মাসে পূর্ববঙ্গের নোয়াখালি, ত্রিপুরা, বিহার ও যুক্তপ্রদেশের গড় মুক্তেশ্বর অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে পাঞ্জাবেও দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। মার্চ-এপ্রিল মাসে কলকাতায় দ্বিতীয় দফার দাঙ্গা শুরু হয়। স্বাধীনতার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মাঝেমাঝেই হাঙ্গামা বা ছুরি মারার ঘটনা চলতে থাকে।
ড. সুমিত সরকারের মতে, ১৯৪৬-৪৭ খ্রিস্টাব্দের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সূচনা বিস্তার ও প্রকৃতি পূর্বেকার দাঙ্গাগুলি থেকে লক্ষণীয়ভাবে স্বতন্ত্র ছিল। ১৬ই আগস্ট লীগ মন্ত্রিসভা কলকাতায় ছুটি ঘোষণা করেছিল। লীগ কলকাতা ময়দানে একটি শান্তিসভার আয়োজন করে। ময়দানের সেই জমায়েতের পর বিনা প্ররোচনায় লীগ সমর্থকরা হিন্দুদের আক্রমণ করে। বাংলার প্রধানমন্ত্রী সুরাবর্দী নীরব দর্শকের ভূমিকা নেন। প্রখ্যাত আমলা অশোক মিত্র তাঁর স্মৃতিচারণে এই দাঙ্গার জন্য বাংলার লীগ সরকার ও বড়লাট লর্ড ওয়াভেলকেও দায়ী করেছেন। এই দাঙ্গায় মন্দির-মসজিদ অপবিত্র করা কিংবা ভিন্ন সম্প্রদায়ের সম্পত্তির ওপর চড়াও হবার থেকে কলকাতার দাঙ্গার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল হত্যাকাণ্ড। ত্রিপুরা ও নোয়াখালির দাঙ্গায় মূল আক্রমণকারী ছিল মুসলমানরা। ‘দ্যা স্টেট্সম্যান’ পত্রিকার মতে, এই দাঙ্গায় লুঠপাটের সঙ্গে ধর্মান্তরিত করার কাজেও জোর দেওয়া হয়েছিল। তবে এখানকার দাঙ্গায় কৃষি সম্পর্কের একটা ভূমিকা ছিল। পূর্ববঙ্গের এই দুটি জেলায় কৃষিজীবনে অস্থিরতার একটা ঐতিহ্য ছিল। সেখানে কৃষকরা ছিল মূলত মুসলমান, আর ভূস্বামী, বণিক ও অন্যান্য বৃত্তিজীবিদের মধ্যে প্রাধান্য ছিল হিন্দুদের। তাই দাঙ্গার মধ্যে বিকৃত সামাজিক উপাদানের অস্তিত্ব ছিল বলে ড. সুমিত সরকার মনে করেন। বিহারের দাঙ্গা ছিল আরো বেশি ভয়াবহ। এখানের দাঙ্গায় হিন্দু ভূস্বামীদের বিশেষ প্ররোচনা ছিল। জওহরলাল নেহরুর মতে, কৃষিসমস্যা থেকে প্রজাদের মনোযোগ সরিয়ে দেওয়াই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে শিখদের প্ররোচনায় পাঞ্জাবের লাহোর, আটক, রাওয়ালপিণ্ডি ও অমৃতসরে দাঙ্গা বাধে। নিহত হয় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। পেন্ডেরেল মুন তাঁর ‘ডিভাইড্ অ্যান্ড কুইট’ গ্রন্থে দেখিয়েছেন যে, ১৯৪৬-৪৭ খ্রিস্টাব্দের দাঙ্গায় আনুমানিক ১ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। অসংখ্য নিরীহ মানুষের এই হত্যাকাণ্ড কার্যত ভারতের জাতীয় ঐক্য ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিতকে কাঁপিয়ে দেয়।
প্রশ্ন ৫। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ভারতের স্বাধীনতা আইনে প্রধান অনুবিধিগুলি আলোচনা কর।
অথবা,
ভারতের স্বাধীনতা আইনের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর।
অথবা,
ভারতের স্বাধীনতা আইনের প্রধান শর্তসমূহ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভারতের স্বাধীনতা আইন প্রণয়ন করে। এই আইনের বলে অন্তর্বর্তী সরকারের অবসান ঘটে এবং ভারত ও পাকিস্তানে পার্লামেন্টারি শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর দ্বারা ভারতে দীর্ঘদিনের ইংরেজ শাসনের অবসান হয়। ভারতবাসীর স্বাধীনতা লাভের জন্য সংগ্রাম এই আইনের মাধ্যমেই স্বীকৃতি লাভ করে। অবশ্য এর মাধ্যমে ভারত বিভাগও হয়েছিল, তা ভুলতে পারা যায় না।
ভারতীয় স্বাধীনতা আইনের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপে উল্লেখ করা যেতে পারে:
(ক) ভারতীয় স্বাধীনতা আইন, ভারত ও পাকিস্তান এই দুইটি পৃথক ডোমিনিয়ন সৃষ্টি করেছিল। এই আইন ডোমিনিয়ন দুইটির আইনগত সার্বভৌমত্ব স্বীকার করেছিল।
(খ) ভারত ও পাকিস্তান ডোমিনিয়নের নূতন সংবিধান রচনার পূর্ব পর্যন্ত গণ পরিষদের হাতে আইনসভার দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়।
(গ) কেন্দ্রীয় শাসন ব্যাপারে উভয় ডোমিনিয়নের জন্য একজন করে গভর্নর- জেনারেল নিযুক্ত হবেন।
(ঘ) প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থায় দায়িত্বশীলতার নীতি প্রবর্তন হয়।
(ঙ) ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্টের পর হতে ডোমিনিয়ন বা প্রদেশগুলির শাসন ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের কোন কর্তৃত্ব রইল না।
(চ) ভারতীয় স্বাধীনতা আইনে ভারত সচিবের পদ বিলুপ্ত হয়।
(ছ) দেশীয় রাজ্যগুলির উপর ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের প্রাধান্যের অবসান ঘটল।
পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতীয় স্বাধীনতা আইন ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটায়।
ইংরাজ সরকার ভারতে নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই সকল নানা প্রকার সাংবিধানিক সংস্কারের প্রবর্তন করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল যতদিন সম্ভব ভারতে তাদের শাসন কায়েম করা। কিন্তু কালক্রমে ঘটনার চাপে বাধ্য হয়ে ইংরেজ এই দেশ ত্যাগ করে।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলীর উত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের প্রস্তাব অনুসারে মুসলিম লীগ কি দাবি জানিয়েছিল?
অথবা,
১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের মুসলীম লীগের প্রস্তাবে একটি নতুন দেশের ছবি প্রতিফলিত হয়েছিল কি?
উত্তরঃ ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে মার্চ মুসলিম লীগ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এই প্রস্তাবের মাধ্যমে মুসলিম লীগ উপমহাদেশে মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় স্বায়ত্বশাসন দাবি করে। অবশ্য উক্ত প্রস্তাবে দেশ বিভাগ অথবা পাকিস্তান গঠনের কোন উল্লেখ ছিল না। বস্তুত পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ও ইউনিয়নিস্ট পার্টির প্রধান সিকন্দর হায়াত খান এই প্রস্তাবের খসড়া প্রণয়ন করেছিলেন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ১লা মার্চ পাঞ্জাব আইন পরিষদে তিনি পাকিস্তান গঠনের বিরোধিতা করেন। তিনি অঙ্গরাজ্যসমূহের অধিক স্বশাসন দাবি করেছিলেন।
প্রশ্ন ২। কিছু মানুষ কেন ভারত বিভাজনকে একটি আকস্মিক উদ্ভব হওয়া ঘটনা বলে মনে করেছিল?
উত্তরঃ ভারত বিভাজনকে একটি আকস্মিক ঘটনা বলে অনেক লোক মনে করেছিল। এমনকী মুসলিম লীগও ভাবে নি যে পাকিস্তান তাদের জন্যই। তারা তাদের দেশে নিজেদের মতো করে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন গড়ে তুলবেন। অনেক লোক নূতন দেশে উদ্বাস্তু হয়ে আসে। তারা মনে করেছিল যে তাদের দেশে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে তারা আবার সেখানে চলে যাবে। অনেক মুসলমান নেতাও পাকিস্তান দাবিতে তৎপর ছিলেন না। জিন্না অনেক সময় ব্রিটিশদের সমর্থনলাভের আশায় পাকিস্তান বিষয়টি ব্যবহার করতেন। এক কথায় বলা যায় যে দেশ বিভাজন ও পাকিস্তান সৃষ্টি এত দ্রুত সম্পন্ন হয়েছিল যে কেউই উপলব্ধি করতে পারে নি যে মাত্র কয়েকদিনে কি ঘটল।
প্রশ্ন ৩। সাধারণ মানুষ দেশ বিভাজনকে কিভাবে দৃষ্টিপাত করেছিল?
উত্তরঃ সাধারণ মানুষ দেশ বিভাজনকে নিম্নপ্রদত্ত দৃষ্টিতে অবলোকন করেছিল:
(ক) বিভাজনের ফলে বহুলোক গৃহহীন হয়ে অন্যত্র উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছিল। তারা তখনও মনে করে যে তা একটি অস্থায়ী ঘটনা এবং তারা তাদের স্বগৃহে প্রত্যাবর্তন করবে।
(খ) বহুলোক দেশ বিভাজনকে একটি বিপর্যয় বলে গণ্য করেছেন। তারা একে ‘Maashala’ (Martial Lord) ‘মারামারি’, Raula (বিশৃঙ্খলা) প্রভৃতি বলেছেন। অন্য কথায় তারা দেশ ভাগকে অধিক পরিমাণে ধ্বংসলীলা বা নরহত্যা বলে অভিহিত করেছেন।
(গ) কিছু মানুষ দেশ বিভাজনকে গৃহযুদ্ধ বলে গণ্য করেছেন।
(ঘ) আবার কিছু লোক দেশ বিভাজনকে কম-বেশি সুবিন্যস্ত সাংবিধানিক ব্যবস্থা বলেছেন।
প্রশ্ন ৪। দেশ বিভাজনের বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীর কি অভিমত ছিল?
উত্তরঃ মহাত্মা গান্ধী ধর্মীয় ঐক্যে বিশ্বাস করতেন। তিনি দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে একতার সমর্থক ছিলেন। তিনি দেশ বিভাগের ঘোর বিরোধী ছিলেন। তিনি শতাব্দীব্যাপি একতাবাদী হিন্দু ও মুসলমানদের বিভাজন কখনও কামনা করেন নি। তিনি সদাই বলতেন যে তার মৃতদেহের উপর দেশ বিভাগ হবে। তিনি দেশ বিভাগের বিপক্ষে নিম্নোক্ত যুক্তি প্রদান করেন:
(ক) গান্ধীজি বলেছিলেন যে মুসলিম লীগের পাকিস্তান দাবি অ-ইসলামি ও পাপস্বরূপ। ইসলাম মানুষের ঐক্য ও সৌভ্রাতৃত্বের প্রতীক। সুতরাং তা মনুষ্যজাতির একতা ভঙ্গ করতে পারে না।
(খ) গান্ধীজির মতে দেশ বিভাজনের পৃষ্ঠপোষকতা ইসলাম ও ভারত উভয়ের শঙ্কা।
(গ) গান্ধীজি বিভাজনকে এক বড় ভুল বলে মনে করতেন। তিনি নিজে দেহ বিচ্ছেদের পক্ষে ছিলেন, কিন্তু দেশ বিভাগের পক্ষে ছিলেন না।
(ঘ) তিনি মুসলিম লীগকে কোন ভারতবাসীকে শক্তি না ভাবতে আবেদন জানান। হিন্দু ও মুসলিম একই দেশের ভাইবোন। সুতরাং একে অন্যে পৃথক হতে পারে না।
প্রশ্ন ৫। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে বিভাজন কেন সাংঘাতিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বলে চিহ্নিত হয়েছে?
উত্তরঃ দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে ভারত বিভাজনকে একটি সাংঘাতিক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এর কয়েকটি কারণ নিম্নরূপ:
(ক) এই বিভাজন জাতি ও ধর্মের নামে হয়েছিল। ইতিহাসে এইপ্রকার ঘটনা বিরল।
(খ) ইতিহাসে এই প্রথম দুইটি দেশের লোক অপসারিত হয়েছিল। দেশ ভাগের ফলে ভারতের বহু মুসলমান ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে যায়, আবার অনেক হিন্দু ও শিখ-পাকিস্তান হতে ভারতে চলে আসে।
(গ) দেশ বিভাজনকালে হাজার হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে। যে সকল মানুষ এক সময় একত্রে শান্তিতে বাস করত দেশভাগের সময় তারা একে অন্যকে হত্যা করে। প্রশাসনের তা প্রতিরোধের কোন ভূমিকা ছিল না।
(ঘ) অসংখ্য নারী ও মহিলাকে অপহরণ ও ধর্ষণ করা ও নানাভাবে নির্যাতন করা হয়। তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়।
(ঙ) অসংখ্য মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। তারা নিজেদের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি হারায়। তারা বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজন হতে বিচ্যুত হয়।
প্রশ্ন ৬। ব্রিটিশ ভারত কেন বিভাজন করা হয়েছিল?
উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতের রাজনৈতিক ঘটনাসমূহ অতি দ্রুতগতিতে চলতে থাকে। আন্তর্জাতিক চাপে ব্রিটিশ সরকার ভারতের প্রতি তাঁদের নীতি পরিবর্তনে বাধ্য হলেন। অপরদিকে কংগ্রেস ও আজাদ হিন্দ ফৌজের সামরিক কর্মচারীবর্গকে সর্বতোভাবে সাহায্য দান করে দেশবাসীর অধিকতর শ্রদ্ধা অর্জন করল।
১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসে ইংল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচনে রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের পতন ঘটল। সেই স্থানে শ্রমিক দলের নেতা ক্লিমেন্ট এট্লি প্রধানমন্ত্রী হলেন। সঙ্গে সঙ্গে নবগঠিত সরকার ভারতের সমস্যা সমাধানে মনোনিবেশ করলেন। ঐ বৎসর অর্থাৎ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে লর্ড ওয়াভেল ঘোষণা করলেন যে, ঐ বৎসরের শেষের দিকে যে সাধারণ নির্বাচন হবে তাতে নির্বাচিত সদস্যবর্গ নিয়ে সংবিধান সভা গঠিত হবে। সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীগণ প্রায় সকল প্রদেশে অধিকাংশ অ-মুসলমান পদগুলিতে নির্বাচিত হলেন। ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করতে পারলেন যে কংগ্রেসই ভারতীয় জনগণের মুখপাত্র।
নৌসেনা বিদ্রোহ: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ই ফেব্রুয়ারি বোম্বাইতে (মুম্বাইতে) ‘রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি’-এর ভারতীয় কর্মচারীগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করল। ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করলেন যে ভারতে আর বিদেশি শাসন টিকিয়ে রাখা যাবে না। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯শে ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ নৌ-বিদ্রোহের পরদিন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এটলি ঘোষণা করলেন যে ব্রিটিশ ক্যাবিনেট মন্ত্রীবর্গের তিনজন—লর্ড পেথিক লরেন্স, স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস্ এবং মিঃ এম. ভি. আলেকজান্ডারের সঙ্গে ভারতবর্ষে সংবিধান সভা গঠনের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করবে।
ক্যাবিনেট মিশন: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩শে মার্চ ক্যাবিনেট মিশন ভারতে উপস্থিত হলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক পৃথক ভাবে আলোচনার পর ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই মে তারিখে ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি ‘গণ পরিষদ’ (Constituent Assembly) এবং শাসন পরিচালনার জন্য একটি ‘অন্তর্বর্তী সরকার’ (Interim Government) পরিকল্পনার শ্বেত পত্রিকা (White Paper) প্রকাশিত হয়। এটাই মন্ত্রী মিশনের ‘মে পরিকল্পনা’। এতে পাকিস্তান প্রস্তাব বাতিল করে ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্য নিয়ে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব করা হয়। কংগ্রেস এই প্রস্তাব মেনে নেয়। প্রতিবাদে মুসলিম লীগ প্রত্যক্ষ কার্য (Direct Action) দ্বারা মুসলমানগণকে ব্রিটিশ প্রদত্ত উপাধি বর্জন করতে নির্দেশ দেয়। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৬ই আগস্ট লীগ ‘প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস’ (Direct Action Day) পালন করে কলকাতা, নোয়াখালি, ত্রিপুরা, বিহার, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি স্থানে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ঘটায়।
অন্তর্বর্তী সরকার: মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব অনুসারে পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের ২রা সেপ্টেম্বর কেন্দ্রে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। মুসলিম লীগ অন্তর্বর্তী সরকার বয়কট করে। ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদের সভাপতিত্বে ৯ই ডিসেম্বর গণ পরিষদের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং ভারতীয় সংবিধান প্রণয়ন শুরু হয়।
মাউন্টব্যাটেন পরিকল্পনা: মুসলিম লীগ অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ না দেওয়ায় শাসনব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এদিকে মন্ত্রী মিশনের প্রস্তাব কার্যকর না হওয়ায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এট্লি ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২০শে ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে ভারতের শাসন ক্ষমতা ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসের মধ্যে ভারতীয়দের হাতে অর্পণ করা হবে বলে ঘোষণা করেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে মার্চ লর্ড মাউন্টব্যাটেনের সঙ্গে গান্ধীজির ও জিন্নার এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
ভারত বিভাগ: ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে লর্ড মাউন্টব্যাটেন গভর্নর-জেনারেল হয়ে ভারতে আসেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব কার্যকর করার দায়িত্ব তাঁর উপরই দেওয়া হয়। কার্যভার গ্রহণ করেই মাউন্টব্যাটেন বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের মধ্যে আপোসের কোন সম্ভাবনা না দেখে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩রা জুন ভারতকে দ্বিখণ্ডিত করার সিদ্ধান্ত ঘোষিত হয়। মুসলিম লীগ স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। কংগ্রেস নিরুপায় হয়ে অনিচ্ছায় ভারত বিভাগের প্রস্তাব মেনে নেয়। মাউন্টব্যাটেনের পরিকল্পনা কার্যকর করতে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভারতের স্বাধীনতা আইন’ (Indian Independence Act, 1947) গৃহীত হয়। এই আইন অনুযায়ী ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ই আগস্ট ভারতীয়গণের হাতে ভারতের শাসনভার সম্পূর্ণভাবে ন্যস্ত করা হল। এই আইনের ফলে ভারতে দুই স্বতন্ত্র রাষ্ট্র-ভারত ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হয়। পাঞ্জাবের পশ্চিম ভাগ, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু, বেলুচিস্তান এবং পূর্বপ্রান্তে শ্রীহট্টসহ পূর্ববঙ্গ—এই পাঁচটি বিভিন্ন প্রদেশ নিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র (Pakistan Dominion) এবং ব্রিটিশ-শাসিত ভারতের অন্যান্য প্রদেশগুলি নিয়ে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র (Indian Union) গঠিত হয়। দুইটি পৃথক গণ পরিষদ উভয় রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ শাসন প্রণালী স্থির করবে বলে ধার্য হল। মহম্মদ আলি জিন্না পাকিস্তানের এবং লর্ড মাউন্টব্যাটেন ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড়লাট নিযুক্ত হলেন। নিজস্ব সংবিধান প্রণয়ন করে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি ভারত একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
প্রশ্ন ৭। দেশ বিভাজন বিষয়ে মহিলাগণের অভিজ্ঞতা কিরূপ ছিল?
অথবা,
মহিলাদের ভারত বিভাজনের অভিজ্ঞতা কি ধরনের ছিল?
উত্তরঃ দেশ বিভাগের সময় মহিলাদের তিক্ত ও ভয়ানক অভিজ্ঞতা হয়েছিল। তাদের অপহরণ, ধর্ষণ ও বিক্রি করা হয়েছিল। তাদের নূতন সঙ্গীর সাথে অপরিচিত অবস্থায় থাকতে বাধ্য করা হয়। মহিলাদের পক্ষে মানসম্মান রক্ষা করা কঠিন ছিল। সরকার ও প্রশাসন ছিল নীরব দর্শক। কোন কোন ক্ষেত্রে মহিলাদের মানসম্মান রক্ষার্থে তাদের পরিবারের লোক এমনকী হত্যাও করে। অনেক মহিলা আত্মহত্যা করে।
প্রশ্ন ৮। দেশ বিভাজনের ব্যাপারে কংগ্রেস কিভাবে মত পরিবর্তন করেছিল?
উত্তরঃ কংগ্রেস প্রথমাবস্থায় দেশ বিভাজনের বিরোধী ছিল। কিন্তু ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে কংগ্রেস হাইকমান্ড পাঞ্জাবকে দ্বিখণ্ডিত করতে রাজি হয়। হিন্দু শিখ সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে একটি অংশ এবং মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে অন্য অংশ।
বাংলার ক্ষেত্রে ও একই নীতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল ভারতে থাকবে। এইভাবে কংগ্রেস দেশ বিভাজন বিষয়ে মত পরিবর্তন করেছিল।
FAQs
Question: Where I can get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Suggestion Chapter Wise?
Answer: You can get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Suggestion Chapter Wise On Roy Library. For every textbook question Answer to help students understand and learn the language quickly.
Question: Which is the best Site to get Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Solutions?
Answer: Roy Library is a genuine and worthy of trust site that offers reliable information regarding Assam AHSEC Board Class 12 History Bengali Solutions.
Question: How can students use the solutions for exam preparation?
Answer: Students can use the solutions for the following:
- Students can use solutions for revising the syllabus.
- Students can use it to make notes while studying.
- Students can use solutions to understand the concepts and complete the syllabus.
IMPORTANT NOTICE
We have uploaded this Content by Roy Library. You can read-write and Share your friend’s Education Purposes Only. Please don’t upload it to any other Page or Website because it is Copyrighted Content.
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.