Class 12 Political Science Chapter 18 ভারতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি, AHSEC Class 12 Bengali Medium Students will find the solutions very useful for exam preparation. Class 12 Political Science Chapter 18 ভারতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি The experts of Roy Library provide solutions for every textbook question to help students understand and learn the language quickly. Solutions are free to use and easily accessible. Class 12 Political Science Chapter 18 ভারতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি Bengali Medium Solutions by Roy Library helps students understand the literature lessons in the textbook. Assam AHSEC Board Class 12 Political Science Question Answer in Bengali The sole purpose of the solutions is to assist students in learning the language easily.
Class 12 Political Science Chapter 18 ভারতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি
HS 2nd Year Political Science Notes in Bengali, Solution gives you a better knowledge of all the chapters. AHSEC Class 12 Political Science Solution in Bengali he experts have made attempts to make the solutions interesting, and students understand the concepts quickly. Class 12 Political Science in Bengali Suggestions, will be able to solve all the doubts of the students. Class XII Political Science Question Answer in Bengali provided are as per the Latest Curriculum and covers all the questions from the NCERT/AHSEC Class 12 Political Science Textbooks Solution are present on Roy Library’s website in a systematic order.
ভারতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি
দ্বিতীয় খন্ড (স্বাধীনোত্তর ভারতের রাজনীতি)
অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ‘কংগ্রেস ব্যবস্থা’ বলতে কি বোঝ?
উত্তরঃ ভারতীয় রাজনীতিতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত যে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করেছিল তাকে কংগ্রেস ব্যবস্থা বলে।
প্রশ্ন ২। করসেবা মানে কি?
উত্তরঃ অযোধ্যার বিবাদমান বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ যে সংগ্রাম আরম্ভ করে রামমন্দির নির্মাণের জন্য যে স্বেচ্ছামূলক কার্য আরম্ভ করেছিল, তাই-ই হল করসেবা।
প্রশ্ন ৩। ১৯৮৯ সালে মোর্চা সরকারের প্রধান কে ছিলেন?
উত্তরঃ ভি. পি. সিং।
প্রশ্ন ৪। ১৯৮৯ সনে কেন্দ্রে কে সরকার গঠন করেছিল?
উত্তরঃ ‘জনতা দল’ ও অন্যান্য আঞ্চলিক দলসমূহ রাষ্ট্রীয় ফ্রন্ট গঠন করে সরকার গঠন করেছিল।
প্রশ্ন ৫। হিন্দুত্ব বলতে কি বোঝ?
উত্তরঃ আক্ষরিক অর্থে হিন্দুত্ব বলতে হিন্দুবাদ বা হিন্দুধর্ম বলে। ভি. ডি. সাভারকর একে ভারতীয় জাতির ভিত্তি বলে সংজ্ঞায়িত করেছেন।
প্রশ্ন ৬। রাজীব গান্ধীর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে হয়েছিলেন?
উত্তরঃ পি. ভি. নরসিংহ রাও।
প্রশ্ন ৭। রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চায় কোন্ দল নেতৃত্ব দিয়েছিল?
উত্তরঃ ভারতীয় জনতা পার্টি।
প্রশ্ন ৮। আদবানির পর বি. জে. পি. সভাপতি কে হয়েছিলেন?
উত্তরঃ রাজনাথ সিং।
প্রশ্ন ৯। এন. ডি. এ. কয়টি রাজনৈতিক দল গঠন করেছিল?
উত্তরঃ ১৩টি।
প্রশ্ন ১০। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দল একক বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসাবে পরিগণিত হয়েছিল?
উত্তরঃ বি. জে. পি.।
প্রশ্ন ১১। মণ্ডল আয়োগের যে-কোন একটি পরামর্শ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ সরকারি চাকরিসমূহে অনগ্রসর শ্রেণীর লোকদের জন্য ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা।
প্রশ্ন ১২। মণ্ডল আয়োগ কি?
উত্তরঃ ১৯৭৮ সালে বি. পি. মণ্ডলের নেতৃত্বে অনগ্রসর শ্রেণীর লোকদের শনাক্তকরণ ও তাদের সংরক্ষণের বিষয় বিচার করে পরামর্শ দেওয়ার জন্য যে আয়োগ গঠন করা হয়েছিল তাকে মণ্ডল আয়োগ বলে।
প্রশ্ন ১৩। ইউ. পি. এ. বলতে কি বোঝ?
উত্তরঃ ইউ. পি. এ. হল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন শাসক সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা।
প্রশ্ন ১৪। এন. ডি. এ. সরকারের নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ অটল বিহারী বাজপেয়ী।
প্রশ্ন ১৫। কাসিরাম কে ছিলেন?
উত্তরঃ কাসিরাম বহুজন সমাজ পার্টির প্রতিস্থাপক ছিলেন।
প্রশ্ন ১৬। আঞ্চলিক দলসমূহ বিকাশের জন্য দায়ী একটি কারণ লেখ।
উত্তরঃ ভাষা ও সংস্কৃতি।
প্রশ্ন ১৭। কোন্ সনে ভারতীয় জনতা দল গঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৮৯ সালে।
প্রশ্ন ১৮। কোন্ সনে জনতা পার্টি গঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৮০ সালে।
প্রশ্ন ১৯। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মোর্চা সরকারের নেতা কে ছিলেন?
উত্তরঃ অটল বিহারী বাজপেয়ী।
প্রশ্ন ২০। বি. জে. পি-র কোন্ নেতা মহম্মদ আলি জিন্নাকে একজন ধর্মনিরপেক্ষ নেতা বলেছিলেন?
উত্তরঃ লালকৃষ্ণ আডবানি।
প্রশ্ন ২১। ২০০৪ সালের নির্বাচনের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে হয়েছিলেন?
উত্তরঃ মনমোহন সিং।
প্রশ্ন ২২। শূন্যস্থান পূর্ণ কর:
(ক) _______ সালে ভারত সরকার মণ্ডল আয়োগ নিযুক্ত করেছিল।
উত্তরঃ ১৯৭৯
(খ) প্রধানমন্ত্রী _______ কে ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর হত্যা করা হয়েছিল।
উত্তরঃ ইন্দিরা গান্ধী।
(গ) ________ জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী।
উত্তরঃ মেহবুবা মুফতি।
(ঘ) ১৯৮৯ সালের নির্বাচন ________ পরিসমাপ্তি ঘটায়।
উত্তরঃ একদলীয় শাসনের।
প্রশ্ন ২৩। ইন্দিরা গান্ধির মৃত্যুর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে হয়েছিলেন?
উত্তরঃ রাজীব গান্ধী।
প্রশ্ন ২৪। ১৯৮০ দশকে ভারতীয় রাজনীতিতে সবচেয়ে সংকটময় ঘটনা কোনটি?
উত্তরঃ ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস দলের পরাজয়।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ২৫। ১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় রাজনীতিতে সংঘটিত যে-কোন একটি পরিবর্তন উল্লেখ কর।
উত্তরঃ একদলীয় একাধিপত্যের অবসান।
প্রশ্ন ২৬। মণ্ডল আয়োগ কোন্ সরকারের আমলে নিযুক্ত করা হয়েছিল?
উত্তরঃ জনতা পার্টি সরকারের আমলে।
প্রশ্ন ২৭। নব-অর্থনৈতিক নীতি কখন গ্রহণ করা হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯১ সালে।
প্রশ্ন ২৮। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস সর্বপ্রথম কেন্দ্রে কখন ক্ষমতা হারায়?
উত্তরঃ ১৯৭৭ সালে।
প্রশ্ন ২৯। জনতা পার্টি কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৭৭ সালে।
প্রশ্ন ৩০। রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা সরকার প্রথম কখন গঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯৮ সালে।
প্রশ্ন ৩১। সংযুক্ত গণতান্ত্রিক মোর্চা সরকার কখন গঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ২০০৪ সালে।
প্রশ্ন ৩২। এন. ডি. এ. সরকারের সম্পূর্ণ অর্থ কি?
উত্তরঃ ন্যাশন্যাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা)।
প্রশ্ন ৩৩। ভারতীয় জনতা পার্টির সম্মিলিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তরঃ অটলবিহারী বাজপেয়ী।
প্রশ্ন ৩৪। বর্তমানে কেন্দ্রে ক্ষমতাচ্যুত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের সম্মিলিত সরকারের নাম কি ছিল?
উত্তরঃ ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (ইউ.পি.এ.) (সম্মিলিত প্রগতিশীল মোর্চা)।
প্রশ্ন ৩৫। আসামে বর্তমান জাতীয় কংগ্রেস দলের সঙ্গে সহযোগী দল হিসাবে থাকা রাজনৈতিক দলটির নাম কি?
উত্তরঃ বড়োল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট (বি.পি. এফ.)।
প্রশ্ন ৩৬। নূতন আর্থিক নীতি ভারত সরকার কখন গ্রহণ করেছিলেন?
উত্তরঃ ১৯৯১ সালে।
প্রশ্ন ৩৭। আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়া কোন্ সনে শুরু হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯১ সালে।
প্রশ্ন ৩৮। আর্থিক সংস্কারের প্রক্রিয়া আরম্ভ করার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তরঃ পি. ভি. নরসিমা রাও।
প্রশ্ন ৩৯। আর্থিক সংস্কার প্রক্রিয়া আরম্ভ হওয়ার সময় ভারতের অর্থমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তরঃ ড. মনমোহন সিং।
প্রশ্ন ৪০। মণ্ডল আয়োগ কখন নিযুক্ত করা হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৭৯ সালের ১লা জানুয়ারি।
প্রশ্ন ৪১। মণ্ডল আয়োগ মোট কতটি জাতি বা সম্প্রদায়কে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্তির জন্য চিহ্নিত করেছিল?
উত্তরঃ ৩২৪৮টি জাতি।
প্রশ্ন ৪২। বাবরি মসজিদ কখন ধ্বংস করা হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর।
প্রশ্ন ৪৩। গুজরাট দাঙ্গা কোন্ সালে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ২০০২ সালে।
প্রশ্ন ৪৪। গোধরা স্টেশনে কোন্ এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল?
উত্তরঃ সবরমতী এক্সপ্রেস ট্রেনে।
প্রশ্ন ৪৫। ২০০৪ সালে কেন্দ্রে কে সরকার গঠন করেছিল?
উত্তরঃ সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা।
প্রশ্ন ৪৬। ২০০৯ সালে কেন্দ্রে কে সরকার গঠন করেছিল?
উত্তরঃ সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা।
বিষয় | সূচী-পত্ৰ |
প্রথম খন্ড (সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতি) | |
অধ্যায় – ১ | বিশ্ব রাজনীতিতে শীতল যুদ্ধের যুগ |
অধ্যায় – ২ | দ্বি-মেরুকরণের অবসান |
অধ্যায় – ৩ | বিশ্ব রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভুত্ব বা আধিপত্য |
অধ্যায় – ৪ | বিকল্প শক্তির উৎস |
অধ্যায় – ৫ | সমসাময়িক দক্ষিণ এশিয়া |
অধ্যায় – ৬ | আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ |
অধ্যায় – ৭ | সমসাময়িক বিশ্বে নিরাপত্তা |
অধ্যায় – ৮ | পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ |
অধ্যায় – ৯ | বিশ্বায়ন |
দ্বিতীয় খন্ড (স্বাধীনোত্তর ভারতের রাজনীতি) | |
অধ্যায় – ১০ | একদলীয় প্রাধান্যের যুগ |
অধ্যায় – ১১ | জাতিগঠনের প্রত্যাহ্বান |
অধ্যায় – ১২ | পরিকল্পিত বিকাশের রাজনীতি |
অধ্যায় – ১৩ | ভারতের বৈদেশিক সম্পর্ক |
অধ্যায় – ১৪ | কংগ্রেস প্রণালীর প্রতি প্রত্যাহ্বান এবং এর পুনঃপ্রতিষ্ঠা |
অধ্যায় – ১৫ | গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সংকট |
অধ্যায় – ১৬ | গণ-আন্দোলনের উত্থান |
অধ্যায় – ১৭ | আঞ্চলিক প্রত্যাশা |
অধ্যায় – ১৮ | ভারতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিক ঘটনাবলি |
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। আঞ্চলিক দলসমূহ প্রয়োজনীয় কি? তোমার উত্তরের সমর্থনে দুটি যুক্তি দাও।
উত্তরঃ ভারতের মতো বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও সম্প্রদায়ের দেশে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল নিম্নলিখিত কারণে প্রয়োজনীয়:
(ক) আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল প্রান্তিক এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ও সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে।
(খ) আঞ্চলিক দলের মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের জনগণ অধিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পায়।
প্রশ্ন ২। এন. ডি. এ.-র বিষয়ে কি জানো?
উত্তরঃ এন. ডি. এ. হল বর্তমান ভারতের একটি উল্লেখযোগ্য মোর্চা। এর সম্পূর্ণ নাম হল ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স বা রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা। এন. ডি. এ. ১৩টি দলের দ্বারা গঠিত। ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে এই মোর্চা সরকার গঠন করেছিল এবং বর্তমানে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে।
প্রশ্ন ৩। ২০০৪ সালের নির্বাচনে বি. জে. পি. ও কংগ্রেস কত আসন লাভ করেছিল?
উত্তরঃ বি. জে. পি.—১৩৮টি; কংগ্রেস—১৪৫টি।
প্রশ্ন ৪। নূতন অর্থনৈতিক সংস্কারসমূহ কি ছিল এবং তা কখন ঘোষণা করা হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯১ সালে অর্থমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর প্রচেষ্টায় ভারতে নূতন আর্থিক সংস্কার গ্রহণ করা হয়। উদারীকরণ, বিশ্বায়ন ও বেসরকারিকরণ আর্থিক সংস্কারের মূল ভিত্তি ছিল। এই সংস্কার ১৯৯১ সাল থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে সরকারি খণ্ড, রাজস্ব নীতি, মূল্য নীতি প্রভৃতির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন নীতিকে অন্তর্ভুক্ত করে।
প্রশ্ন ৫। রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড বিষয়ে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ ১৯৯১ সালের ২১শে মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরাম্বুদুর নামক স্থানে এক নির্বাচনী সভায় ভাষণ দিতে গেলে রাজীব গান্ধীকে এল. টি. টি. ই. (LTTE) নামক শ্রীলঙ্কার একটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আত্মঘাতী বোমায় হত্যা করে।
প্রশ্ন ৬। মোর্চা সরকারের রাজনীতি কখন আরম্ভ হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৮৯ সালের পর থেকে ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোন একটি রাজনৈতিক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার ফলে সব কয়টি সরকার মোর্চাভিত্তিক গঠন করা হয়।
প্রশ্ন ৭। বি. এস. পি. বা বহুজন সমাজ পার্টির বিষয়ে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ বহুজন সমাজ পার্টি হল উত্তরপ্রদেশের প্রধান বিরোধী দল। এই দল ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সালের নির্বাচন পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল। ভারতীয় রাজনীতিতে বিশেষ স্থান দখল করা এই দলটি উত্তর প্রদেশের কাসিরামের নেতৃত্বে একটি আঞ্চলিক দল হিসাবে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর মায়াবতী এই দলের নেতৃত্ব দান করছেন। এই দল জাতীয় রাজনীতিতেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রশ্ন ৮। সংযুক্ত সরকার বা মোর্চা সরকার বলতে কি বোঝ? কেন্দ্রে প্রথমবারের মতো কখন এই সরকার গঠন করা হয়েছিল?
উত্তরঃ সংসদীয় শাসন ব্যবস্থায় যখন কোন একটি নির্দিষ্ট দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করতে পারে না, তখন পারস্পরিক বোঝাপড়ার দ্বারা কয়েকটি দল একত্রে সরকার গঠন করে। একে সংযুক্ত সরকার বা মোর্চা সরকার বলে।
কেন্দ্রে সর্বপ্রথম ১৯৭৭ সালে মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বে মোর্চা সরকার গঠন করা হয়েছিল।
প্রশ্ন ৯। কোন্ নির্বাচন সংযুক্ত সরকার বা মোর্চা সরকার গঠন করেছিল এবং কেন?
উত্তরঃ ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে কোন একটি রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার জন্য মোর্চা সরকার গঠিত হয়েছিল। এই যুগের শুরু হয় ১৯৮৯ সনের নির্বাচনের পর।
প্রশ্ন ১০। ভারতীয় রাজনীতিতে কবে এবং কখন মণ্ডল বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯০ সালের আগস্ট মাসে রাষ্ট্রীয় মোর্চা সরকার মণ্ডল আয়োগের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে যখন অনগ্রসর শ্রেণীর লোকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার চাকুরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তখন তার প্রতিক্রিয়া রূপে মণ্ডল বিষয়টির উদ্ভব হয়েছিল।
প্রশ্ন ১১। কোন্ রাজনৈতিক দল হিন্দুত্ব নীতি অনুসরণ করত?
উত্তরঃ ভারতীয় জনতা পার্টি।
প্রশ্ন ১২। BAMCEF কি? এটা কোন্ সালে গঠন করা হয়েছিল?
উত্তরঃ Backward and Minority Communities Employees Federation-কে সংক্ষিপ্তভাবে BAMCEF বলা হয়।
BAMCEF ১৯৭৮ সালে গঠন করা হয়েছিল।
প্রশ্ন ১৩। AIADMK-র সম্পূর্ণ নামটি লেখ।
উত্তরঃ All India Anna Dravida Munnetra Kazhagam.
প্রশ্ন ১৪। ভারতে কোয়ালিশন সরকারের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতে কোয়ালিশন সরকারের দুটি বৈশিষ্ট্য হল—
(ক) অস্থির সরকার। ও
(খ) রাজনৈতিক মতভেদ।
প্রশ্ন ১৫। অর্থনৈতিক গোলকীকরণের উপর সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ বিশ্বায়ন বা গোলকীকরণের অর্থ হল কোনো অর্থব্যবস্থাকে বিশ্ববাজারে উন্মুক্ত করে দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়। অন্য কথায় বলা যায়, বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের সঙ্গে উৎপাদন, ব্যবসা, বিত্তীয় আদান-প্রদানের মাধ্যমে সম্বন্ধ স্থাপন করাকে বিত্তীয় বা আর্থিক গোলকীকরণ বলে।
প্রশ্ন ১৬। বি. জে. পি.-র প্রধান নির্বাচনী প্রচারসমূহ কি ছিল?
উত্তরঃ বি. জে. পি.-র প্রধান নির্বাচনী প্রচারসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) জাতীয়তাবাদ, ইতিবাচক ধর্মনিরপেক্ষতা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা।
(খ) বিকেন্দ্রীভূত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা।
(গ) কৃষি উন্নয়ন, দারিদ্র নির্মূল ও সার্বিক কল্যাণ।
(ঘ) দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা করা।
প্রশ্ন ১৭। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত কোন্ দল লোকসভায় শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল?
উত্তরঃ ভারতীয় জনতা পার্টি।
প্রশ্ন ১৮। কোন্ বছর কোন্ রাজনৈতিক দল লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে?
উত্তরঃ ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে।
প্রশ্ন ১৯। কয়টি দল এন. ডি. এ. গঠন করেছিল?
উত্তরঃ ২৪টি দল।
প্রশ্ন ২০। করসেবার বিষয়ে সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ অযোধ্যার বিবাদমান বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে ভারতীয় জনতা পার্টি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ যে সংগ্রাম আরম্ভ করে রামমন্দির নির্মাণের জন্য যে স্বেচ্ছামূলক কার্য আরম্ভ করেছিল, তাই-ই হল করসেবা।
প্রশ্ন ২১। ইউ. এফ. (সংযুক্ত মোর্চা) -এর বিষয়ে একটি টীকা লেখ।
উত্তরঃ ১৯৯৬ সালে জনতা দলের নেতৃত্বে সংযুক্ত ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। সমাজবাদী পার্টি, ডি. এম. কে., অসম গণপরিষদ, তামিল মানিলা কংগ্রেস, তেলেগু দেশম, ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রভৃতি দলসমূহ নিয়ে গঠিত হয়েছিল।
প্রশ্ন ২২। কবে এবং কেন পিছিয়ে পড়া ও সংখ্যলঘু শ্রেণীর কর্মচারী ফেডারেশন গঠিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৭৮ সালে গঠিত হয়েছিল পিছিয়ে পড়া ও সংখ্যালঘু শ্রেণীর রাজনৈতিক ক্ষমতা তথা অধিকারের দাবিতে।
প্রশ্ন ২৩। উত্তর ভারতীয় রাজনীতিতে অন্যান্য অনগ্রসর জাতির উত্থানের বিষয়ে লেখ।
উত্তরঃ দলিত সম্প্রদায় ১৯৮০-এর দশক হতে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হতে থাকে। দলিত নেতা কাশীরাম ১৯৭৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকুরি ছেড়ে Backward And Minority Commission Employees Federation (BAMCEF) নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংগঠন সকল অনগ্রসর শ্রেণী—দলিত, অনুসূচীত জাতি ও জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী তথা সংখ্যালঘু—সকলের জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতা তথা অধিকারের দাবি উত্থাপন করেছিল। এই সংগঠন হতেই পরবর্তী সময়ে দলিত-শোষিত সমাজ সংঘর্ষ সমিতি গড়ে উঠেছিল। ১৯৮৪ সালে কাশীরাম বহুজন সমাজ পার্টি গঠন করে। বর্তমানে কুমারী মায়াবতী এই দলটি পরিচালনা করেন।
প্রশ্ন ২৪। ভারতীয় জনসংঘ কবে গঠন করা হয়েছিল এবং এই দলের প্রতিষ্ঠাপক সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তরঃ ভারতীয় জনসংঘ ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী এই দলের প্রতিষ্ঠাপক সভাপতি ছিলেন।
প্রশ্ন ২৫। ভারতের আর্থিক সংস্কারের পথ প্রদর্শক কে? এটি কখন আরম্ভ হয়েছিল?
উত্তরঃ ভারতের আর্থিক সংস্কারের পথ প্রদর্শক হলেন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী পি.ভি. নরসিমা রাও ও তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং।
আর্থিক সংস্কার ১৯৯১ সালে শুরু হয়েছিল।
প্রশ্ন ২৬। কখন এবং কেন মণ্ডল বিষটি ভারতীয় রাজনীতিতে উত্থাপিত হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯০ সালের আগস্ট মাসে রাষ্ট্রীয় মোর্চা সরকার মণ্ডল আয়োগের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে যখন অনগ্রসর শ্রেণীর লোকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার চাকুরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল তখন তার প্রতিক্রিয়া রূপে মণ্ডল বিষয়টির উদ্ভব হয়েছিল।
প্রশ্ন ২৭। ভারতে আঞ্চলিকতাবাদ উত্থানের দুটি কারণ লেখ।
উত্তরঃ ভারতে আঞ্চলিকতাবাদ উত্থানের দুটি কারণ হল –
(ক) ভাষাবাদ। এবং
(খ) জাতিবাদ।
প্রশ্ন ২৮। AIADMK এর সম্পূর্ণ রূপটি লেখো। এটি কোন রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত?
উত্তরঃ AIADMK এর সম্পূর্ণ রূপটি হল— All India Anna Dravida Munnetra Kazhagam. এই দলটি তামিলনাড়ুর শাসক দল।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ২৯। ১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় রাজনীতিতে সংঘটিত যে-কোন দুটি পরিবর্তন উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ১৯৯০-এর দশকে ভারতীয় রাজনীতিতে সংঘটিত দুটি পরিবর্তন নিম্নরূপ:
(ক) ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একাধিপত্যের অবসান।
(খ) আর্থিক সংস্কারের পথ অবলম্বন।
প্রশ্ন ৩০। মণ্ডল আয়োগের যে-কোন দুটি পরামর্শ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ মণ্ডল আয়োগের দুটি পরামর্শ নিম্নরূপ:
(ক) সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে অনগ্রসর জাতির জন্য ২৭% আসন সংরক্ষণ।
(খ) অনগ্রসর সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য প্রকল্পগুলি অনুসূচীত জাতি ও উপজাতিদের অনুরূপ হতে হবে।
প্রশ্ন ৩১। রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা কি?
উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা ১৯৯৯ সালে বি. জে. পি-র নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছিল বি. জে. পি, শিবসেনা, জনতা দল (ইউনাইটেড) ও কয়েকটি আঞ্চলিক দল নিয়ে।
প্রশ্ন ৩২। সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা কি?
উত্তরঃ চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনের পর ২০০৪ সালে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা গঠিত হয়েছিল। এর সহযোগী দলগুলির মধ্যে এন. সি. পি., ডি. এম. কে., এস. পি. ও আর. জে. ডি অন্যতম। এরা ২০০৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ছিল।
প্রশ্ন ৩৩। ভারতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল উৎপত্তির যে-কোন দুটি কারণ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল উৎপত্তির দুটি কারণ হল—
(ক) জাতিগত, ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক কারণ। ও
(খ) আর্থিক কারণ।
প্রশ্ন ৩৪। সম্মিলিত সরকারের দুটি গুণ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ সম্মিলিত সরকারের গুণ দুটি নিম্নরূপ:
(ক) সম্মিলিত সরকার কয়েকটি দল মিলিত হয়ে গঠিত হয়। ফলে কোন একটি দল স্বেচ্ছাচারী হতে পারে না।
(খ) একটি দলের মুষ্টিমেয় নেতাদের চেয়ে বহু দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শাসন পরিচালনা সুচারুরূপে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেইজন্য একটি দলের শাসনের তুলনায় বহুদলের শাসন উত্তম হওয়ার আশা থাকে।
প্রশ্ন ৩৫। সম্মিলিত সরকারের দুটি দোষ নির্দেশ কর।
উত্তরঃ সম্মিলিত সরকারের দুটি দোষ নিম্নরূপ:
(ক) সম্মিলিত সরকারের স্থায়িত্ব অপেক্ষাকৃত কম। জোটসঙ্গীদের মধ্যে বিরোধের ফলে সম্মিলিত সরকারের পতন যে-কোন সময় ঘটতে পারে।
(খ) সম্মিলিত সরকার অপেক্ষাকৃত দুর্বল সরকার। জোটের বিভিন্ন দলের নিজস্ব মতামত রক্ষা করতে না পারলে অথবা দলীয় স্বার্থ পূরণ না হলে জোটে ভাঙন হওয়ার ভয়ে সরকার কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না বা দ্বিধাগ্রস্থ হয়।
প্রশ্ন ৩৬। রাষ্ট্রীয় মোর্চা সরকারকে বাইরে থেকে কোন্ কোন্ দল সমর্থন করেছিল?
উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় মোর্চা সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল—
(ক) ভারতীয় জনতা পার্টি। ও
(খ) বামপন্থী দলসমূহ।
প্রশ্ন ৩৭। রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (এন. ডি. এ.)-র তিনটি শরিক দলের নাম লেখ।
উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (এন. ডি. এ.)-র তিনটি শরিক দলের নাম হল—
(ক) বি. জে. পি.।
(খ) শিবসেনা। ও
(গ) এ. জি. পি।
প্রশ্ন ৩৮। সংযুক্ত প্রগতিশীল জোটের (ইউ.পি.এ.)-র যে-কোন তিনটি দলের নাম লেখ।
উত্তরঃ সংযুক্ত প্রগতিশীল জোটের (ইউ. পি. এ.)-র তিনটি দলের নাম হল-
(ক) এস. পি.।
(খ) কংগ্রেস। এবং
(গ) এন. সি. পি.।
প্রশ্ন ৩৯। ভারতীয় জনতা পার্টি কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল? এর প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তরঃ ভারতীয় জনতা পার্টি ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর প্রথম সভাপতি ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী।
প্রশ্ন ৪০। ভারতের নূতন আর্থিক নীতির দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতের নূতন আর্থিক নীতির দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:
(ক) উদারীকরণ, বিশ্বায়ন ও বেসরকারিকরণ।
(খ) বৈদেশিক পুঁজি বিনিয়োগ।
প্রশ্ন ৪১। মণ্ডল কমিশনের দুটি সুপারিশ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ মণ্ডল কমিশনের দুটি সুপারিশ হল নিম্নরূপ:
(ক) সরকারি চাকুরির ক্ষেত্রে অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য ২৭% সংরক্ষণ।
(খ) অনগ্রসর শ্রেণীর উন্নতিকল্পে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারি অর্থ তপশীলভুক্ত জাতি ও জনজাতির মতো হবে।
প্রশ্ন ৪২। ভারতে সাম্প্রদায়িকতার দুটি কারণ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতে সাম্প্রদায়িকতার দুটি কারণ নিম্নরূপ:
(ক) রাজনৈতিক সুবিধাবাদ: রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজেদের স্বার্থে সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করেন।
(খ) ভোটের রাজনীতি: অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই ভোট অর্জনের জন্য বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক শক্তিসমূহকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িকতাকে চিরস্থায়ী করে রাখেন।
প্রশ্ন ৪৩। সাম্প্রতিককালে ভারতে সংঘটিত যে-কোন দুটি সাম্প্রদায়িক ঘটনা লেখ।
উত্তরঃ সাম্প্রতিককালে ভারতে সংঘটিত দুটি সাম্প্রদায়িক ঘটনা হল—
(ক) বাবরি মসজিদ ধ্বংস। ও
(খ) গুজরাট দাঙ্গা।
প্রশ্ন ৪৪। ভারতে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহমতের যে-কোন দুটি ক্ষেত্র উল্লেখ কর।
উত্তরঃ ভারতে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহমতের দুটি ক্ষেত্র হল—
(ক) নূতন আর্থিক নীতি। ও
(খ) অনগ্রসর শ্রেণীর রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকারের প্রতি সমর্থন।
প্রশ্ন ৪৫। মণ্ডল কমিশন কখন নিযুক্ত করা হয়েছিল? এর সভাপতি কে ছিলেন?
উত্তরঃ মণ্ডল কমিশন ১৯৭৯ সালের ১লা জানুয়ারি নিযুক্ত করা হয়েছিল। এর সভাপতি ছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি. পি. মণ্ডল।
প্রশ্ন ৪৬। ভারতে নূতন আর্থিক নীতি কখন গৃহীত হয়েছিল? তখন প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তরঃ ভারতে নূতন আর্থিক নীতি ১৯৯১ সালে গৃহীত হয়েছিল। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন পি. ভি. নরসিমা রাও।
প্রশ্ন ৪৭। গুজরাট দাঙ্গা কখন ঘটেছিল? কোন্ এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগ হয়েছিল?
উত্তরঃ গুজরাট দাঙ্গা ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সংঘটিত হয়েছিল। সবরমতী এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল।
দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর লোকদের মধ্যে শক্তিশালী ভিত্তি থাকা রাজনৈতিক দলসমূহের নাম লেখ।
উত্তরঃ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর লোকদের মধ্যে শক্তিশালী ভিত্তি থাকা রাজনৈতিক হর নাম হল –
(ক) বহুজন সমাজ পার্টি।
(খ) সমাজবাদী পার্টি।
(গ) জনতা দল।
(ঘ) রাষ্ট্রীয় জনতা দল।
(ঙ) রিপাব্লিকান পার্টি প্রভৃতি।
প্রশ্ন ২। বি. এস. পি.-র ভূমিকা আলোচনা কর।
উত্তরঃ ১৯৮৪ সাল থেকে ভারতীয় রাজনীতিতে বহুজন সমাজ পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বহুজন সমাজ পার্টি অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ব্যাপক সমর্থন আদায়ে সক্ষম হয়েছে। এই দল উত্তর প্রদেশে পাঁচ বৎসর এককভাবে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই পার্টি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দলিত সম্প্রদায়ের উন্নতিকল্পে বহুজন সমাজ পার্টি ব্যাপক প্রচেষ্টা করছে। বর্তমানে এই দল ক্ষমতায় নেই এবং তাদের সমর্থনও বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। এই দলের প্রধান মুখ কুমারী মায়াবতী।
প্রশ্ন ৩। ধর্মনিরপেক্ষতার উপর তীব্র বিতর্ক কিভাবে হয়েছিল?
উত্তরঃ ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর অযোধ্যার বিতর্কিত স্থল ধ্বংস দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার উপর চরম আঘাত হানে, ফলে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্ন নিয়ে তীব্র বিতর্কের সূচনা হয়। এই ঘটনায় দেশের নানা প্রান্তে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাও সংঘটিত হয়। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এই ধ্বংসলীলাকে ধিক্কার জানায় এবং এই রকম কার্য ধর্মনিরপেক্ষ নীতিবিরোধী বলে ঘোষণা করে। এই সময়ে নির্বাচনে সুবিধা আদায়ের জন্য ধর্মকে কাজে লাগানোর বিতর্কও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
প্রশ্ন ৪। ত্রিশঙ্কু সংসদ সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
উত্তরঃ নির্বাচনের পর কোন দলই যদি আইন সভা বা সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারে তখন এই অবস্থাকে ত্রিশঙ্কু সংসদ বা Hang Parliament বলে। ১৯৯১ সালের পর থেকে সাধারণ নির্বাচনে কোন দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারায় ত্রিশঙ্কু সংসদ সৃষ্টি হয়। এর ফলস্বরূপ কয়েকটি দল সম্মিলিত হয়ে সরকার গঠন করে; উদাহরণ—১৯৮৯ লোকসভা, ১৯৯৬ লোকসভা, ১৯৯৮ লোকসভা ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৫। মণ্ডল আয়োগের প্রতিবেদনের প্রধান সমালোচনাসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ মণ্ডল আয়োগের প্রতিবেদনের প্রধান সমালোচনাসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) মণ্ডল আয়োগের প্রতিবেদনটি সরকার অতি সত্ত্বর রূপায়িত করতে আগ্রহী ছিল। এইরূপ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের শীঘ্র বাস্তবায়ন অভিপ্রেত নয়।
(খ) উত্তর ভারতের সাধারণ মানুষ সরকারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিলেন না।
প্রশ্ন ৬। ১৯৯০-এর দশকে উদ্ভব হওয়া চারটি গোষ্ঠীর নাম লেখ।
উত্তরঃ নিম্নলিখিত চারটি গোষ্ঠীর উদ্ভব হয় ১৯৯০-এর দশকে:
(ক) দেবগৌড়ার নেতৃত্বে সংযুক্ত মোর্চা (UF)
(খ) রাষ্ট্রীয় মোর্চা (NF)
(গ) রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (NDA)
(ঘ) সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (UPA)
প্রশ্ন ৭। বর্তমানে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহ কেন অধিক জনপ্রিয়তা অর্জন করছে?
উত্তরঃ সাম্প্রতিককালে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহের জনপ্রিয়তা ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামিলনাড়ুর ডি.এম.কে., অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশম, পাঞ্জাবের শিরোমণি অকালি দল, জম্মু ও কাশ্মীরে জাতীয় সম্মেলন, উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি বিগত নির্বাচনসমূহে ভাল ফল করেছে। কেবল অসম গণ পরিষদ পূর্বের তুলনায় বিভিন্ন কারণে নিম্নগামী ফলাফল লাভ করেছে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের এরূপ জনপ্রিয়তা লাভের মূল কারণ হল বিকেন্দ্রীভূত রাজনীতির প্রতি থাকা জনগণের আকাঙ্খা। রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়ার জন্য ভারতীয় জনগণ বর্তমানে স্বশাসন বা স্বায়ত্বশাসনের প্রতি অধিক আগ্রহী হয়েছে। এই সকল কারণে আঞ্চলিক দলসমূহ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
প্রশ্ন ৮। জরুরিকালীন অবস্থার পরবর্তীকালে ভারতীয় জনতা পার্টির এক শক্তিশালী দল হিসাবে উত্থান বিশ্লেষণ কর।
উত্তরঃ ভারতীয় জনতা পার্টি বা বি. জে. পি. ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই পার্টি পূর্বতন জনসংঘের পরিবর্তিত রূপ। ১৯৭৭ সালে জনসংঘ, সংগঠন কংগ্রেস, ভারতীয় লোকদল ও সমাজতন্ত্রী দল মিলিত হয়ে জনতা পার্টি গঠিত হয়। ১৯৭৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে জনতা পার্টি সাফল্য লাভ করে এবং কেন্দ্রে সরকার গঠন করে। কিন্তু ১৯৭৯ সালে দলীয় কোন্দলে জনতা সরকারের পতন ঘটে। রাজনারায়ণ, চরণ সিং প্রভৃতি নেতাগণ জনতা পার্টি ত্যাগ করে জনতা পার্টি (সমাজতন্ত্রী) গঠন করে। এর পর ১৯৮০ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে পূর্বতন জনসংঘ গোষ্ঠী জনতা পার্টি ত্যাগ করে ভারতীয় জনতা পার্টি গঠন করেন।
ভারতীয় জনতা পার্টি—
(ক) জাতীয়তাবাদ।
(খ) জাতীয় সংহতি।
(গ) গণতন্ত্র।
(ঘ) ইতিবাচক ধর্মনিরপেক্ষতা।
(ঙ) গান্ধীবাদী সমাজতন্ত্র। এবং
(চ) মূল্যবোধভিত্তিক রাজনীতি—এই ছয়টি আদর্শে বিশ্বাসী।
ভারতীয় জনতা পার্টিকে অনেকে সাম্প্রদায়িক দল বলে মনে করেন। কিন্তু তা সর্বাংশে সত্য নয়। এই দল ইতিবাচক ধর্মনিরপেক্ষতায় (Positive Secularism) বিশ্বাসী।
এই সময়ের মধ্যে দল ১৯৯৬, ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালে আঞ্চলিক দলগুলির সাহায্য নিয়ে সরকার গঠন করেছিল। ১৯৮৪ সালে দল লোকসভায় ২টি আসন লাভ করে এবং ২০১৪ সালের লোকসভায় দল ২৮২ আসন লাভ করে সম্পূর্ণ বহুমত নিয়ে সরকার গঠন করে।
প্রশ্ন ৯। গুজরাট দাঙ্গা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
উত্তরঃ ২০০২ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি গুজরাটের গোধরা নামক শহরের রেলস্টেশনে ‘সবরমতী এক্সপ্রেস’-এর কোন একটি কামরায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি অগ্নিসংযোগ করে। সেই কামরায় অযোধ্যা হতে করসেবকগণ ফিরে আসছিল। এই ঘটনায় শিশু ও মহিলা সহ ৫৭জন লোক জীবন্ত দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারায়। এই কাণ্ড স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায় দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল বলে প্রচারের পরিপ্রেক্ষিতে সমগ্র গুজরাটে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের আগুন জ্বলে ওঠে। সমগ্র গুজরাটে প্রায় ১৫০টি শহর ও এক হাজারেরও অধিক গ্রাম আক্রান্ত হয়। এই সংঘর্ষ প্রায় চার মাস ধরে চলে। সংঘর্ষে প্রায় একহাজার লোকের মৃত্যু হয়। মৃত্যু হওয়া লোকদের মধ্যে ৮০% মুসলমান ও ২০% হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোক। এই ঘটনায় দুইশত লোক নিখোঁজ হয়। প্রায় আড়াই হাজার লোক আহত হয়। একশোরও অধিক মহিলা বিধবা হয় এবং ছয় শতাধিক শিশু পিতা-মাতাকে হারায়।
এই ঘটনার সময় কেন্দ্র ও রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় ছিল। উভয় সরকারই এই ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ উত্থাপিত হয়। এই সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন আয়োগ গুজরাট বিধানসভার নির্বাচন স্থগিত রাখতে বাধ্য হয়।
প্রশ্ন ১০। কোন্ নির্বাচন কোয়ালিশন বা মোর্চা সরকারের যুগের সূচনা করে এবং কেন?
উত্তরঃ ১৯৮৯ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে কোন একটি রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার জন্য মোর্চা সরকার গঠিত হয়েছিল। এই যুগের শুরু হয় ১৯৮৯ সনের নির্বাচনের পর।
প্রশ্ন ১১। করসেবা বিষয়টি সংক্ষেপে অঙ্কন কর।
উত্তরঃ ১৬৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে যে প্রতিষ্ঠানুলি মন্দির নির্মাণে সমর্থন করেছিল, তাঁরা দ্বারসেবা আয়োজন করে। সমগ্র দেশ থেকে হাজার হাজার করসেবক ৬ ডিসেম্বর ১৯৯২ -এ অযোধ্যায় জমায়েত হয় এবং মসজিদটি ধ্বংস করে।
করসেবাকে ঘিরে ভারতীয় রাজনীতিতে দুইটি ব্যাপক বিবাদ সৃষ্টি হয়—প্রথমতঃ বাবরী মসজিদ ধ্বংস ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতাকে বিরাট প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেয় এবং সাবরমতী এক্সপ্রেসের করসেবকদের কামরায় অগ্নিকাণ্ডকে ঘিরে গুজরাট দাঙ্গা।
প্রশ্ন ১২। ১৯৮৯ সালের পরবর্তী সময়ে ভারতীয় রাজনীতির প্রধান বিষয়সমূহ উল্লেখ কর। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কি মতাদর্শ এই পার্থক্য সৃষ্টি করেছিল?
উত্তরঃ রাজনীতির প্রধান বিষয়সমূহ নিম্নরূপ:
(ক) ১৯৮৯ সালে কংগ্রেসের পরাজয়।
(খ) মণ্ডল আয়োগ সংক্রান্ত বিষয়।
(গ) সরকারের নব অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ।
(ঘ) রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্ক।
(ঙ) রাজীব গান্ধী হত্যা।
(চ) কোয়ালিশন যুগের সূচনা।
উক্ত বিষয়সমূহে রাজনৈতিক দলের আদর্শগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছিল।
প্রশ্ন ১৩। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচন ২০০৪ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে কংগ্রেস বৃহদাকারে জোট রাজনীতি বা কোয়ালিশন রাজনীতিতে প্রবেশ করে। রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক মোর্চা (এন. ডি. এ.) এই নির্বাচনে পরাজিত হয় এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বে সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউ. পি. এ.) নামক নূতন জোট কেন্দ্রে কোয়ালিশন সরকার গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং-এর নেতৃত্বে এই মোর্চা সরকারকে বামপন্থী দলগুলি বাইরে থেকে সমর্থন করে। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের আংশিক পুনরুত্থান ঘটে। কংগ্রেস মোট ১৪৫টি আসন লাভ করে সহযোগী দলগুলিকে নিয়ে কেন্দ্রে সরকার গঠন করে। এইভাবে ভারতীয় রাজনৈতিক অবস্থা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়।
প্রশ্ন ১৪। সম্মিলিত সরকার বা মোর্চা সরকারের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
অথবা,
ভারতে সম্মিলিত সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ সম্মিলিত বা সংযুক্ত সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) সংযুক্ত বা সম্মিলিত সরকার গঠনকারী দলসমূহ নিজেদের মধ্যে একটি ন্যূনতম সাধারণ কর্মসূচী তৈরি করে কতিপয় সাধারণ লক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে।
(খ) সংযুক্ত সরকার গঠিত হয় যখন কোন দলই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারে। সমমনোভাবাপন্ন দলসমূহের মধ্যে সাধারণত বোঝাপড়ার মাধ্যমে সরকার গঠিত হয়।
(গ) সংযুক্ত সরকার সাধারণত ক্ষণস্থায়ী হয়। শরিক দলের মধ্যে মতানৈক্যের ফলে দলীয় মোর্চায় ভাঙন দেখা দিলে সরকারের পতন ঘটে।
(ঘ) সংযুক্ত সরকারে রাজনৈতিক দলগুলি জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বর্তমান এন. ডি. এ. সরকারে ডি. এম. কে. একটি আঞ্চলিক দল।
প্রশ্ন ১৫। দেশে লক্ষ্য করা ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত যে-কোন চারটি বিষয়ের উপর সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ রাজনীতির প্রধান বিষয়সমূহ নিম্নরূপ:
(ক) ১৯৮৯ সালে কংগ্রেসের পরাজয়।
(খ) মণ্ডল আয়োগ সংক্রান্ত বিষয়।
(গ) সরকারের নব অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ।
(ঘ) রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্ক।
(ঙ) রাজীব গান্ধী হত্যা।
(চ) কোয়ালিশন যুগের সূচনা।
উক্ত বিষয়সমূহে রাজনৈতিক দলের আদর্শগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়েছিল।
প্রশ্ন ১৬। জনতা দলের যে-কোন চারটি প্রধান নীতি লেখ।
উত্তরঃ জনতা দলের প্রধান নীতিসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) জনতা দল গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। এই দল সাধারণ মানুষের সার্বিক বিকাশে বিশ্বাসী।
(খ) জনতা দল সমাজের অনগ্রসর শ্রেণীর লোকদের কল্যাণে অঙ্গীকারবদ্ধ।
(গ) জনতা দল সংরক্ষণ নীতিতে বিশ্বাসী এবং ‘মণ্ডল আয়োগের’ সুপারিশ কার্যকর করতে বদ্ধপরিকর।
(ঘ) আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জনতা দল গোষ্ঠীনিরপেক্ষ নীতিতে বিশ্বাসী।
প্রশ্ন ১৭। বর্তমান দিনগুলিতে আঞ্চলিক দলসমূহ অধিক জনপ্রিয় হচ্ছে কেন?
উত্তরঃ সাম্প্রতিককালে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহের জনপ্রিয়তা ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামিলনাড়ুর ডি.এম.কে., অন্ধ্র প্রদেশের তেলেগু দেশম, পাঞ্জাবের শিরোমণি অকালি দল, জম্মু ও কাশ্মীরে জাতীয় সম্মেলন, উত্তর প্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি বিগত নির্বাচনসমূহে ভাল ফল করেছে। কেবল অসম গণ পরিষদ পূর্বের তুলনায় বিভিন্ন কারণে নিম্নগামী ফলাফল লাভ করেছে। আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের এরূপ জনপ্রিয়তা লাভের মূল কারণ হল বিকেন্দ্রীভূত রাজনীতির প্রতি থাকা জনগণের আকাঙ্খা। রাজনৈতিকভাবে সচেতন হওয়ার জন্য ভারতীয় জনগণ বর্তমানে স্বশাসন বা স্বায়ত্বশাসনের প্রতি অধিক আগ্রহী হয়েছে। এই সকল কারণে আঞ্চলিক দলসমূহ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
প্রশ্ন ১৮। তেলেগু দেশমের ভূমিকা লেখ।
উত্তরঃ তেলেগু দেশম পার্টি ১৯৮২ সালে গঠিত হয়। এই দলের প্রতিষ্ঠাপক সভাপতি ছিলেন এন. টি. রামারাও। এই দল একটি আঞ্চলিক দল যার কার্যক্ষেত্র হচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা রাজ্য। জন্মলগ্ন থেকেই এই দল ভারতীয় রাজনীতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। এই দলের সমর্থনে ১৯৮৯ সালে ভারতে জোট রাজনীতির সূচনা হয় বললে ভুল হবে না।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১৯। ভারতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহের উৎপত্তির কারণসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর।
অথবা,
ভারতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের উদ্ভবের যে-কোন দুটি কারণের বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তরঃ আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দলগুলি কোন বিশেষ ধর্ম, ভাষা অথবা এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে। এদের জনপ্রিয়তা নির্দিষ্ট এলাকায় সীমাবদ্ধ। আঞ্চলিক দলগুলির উদ্দেশ্য হল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করা ও তাদের দাবি-দাওয়াসমূহ আইনসভায় উত্থাপন করা। স্বাধীনতার পর হতে বিশেষ করে সাম্প্রতিককালে ভারতে আঞ্চলিক দল উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এর কারণসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) স্থানীয় সমস্যা: স্থানীয় নানাবিধ সমস্যা বিশেষত সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল উৎপত্তির একটি প্রধান কারণ। কেন্দ্রীয় সরকার উক্ত সমস্যাগুলি সমানভাবে সমাধানে অনেক সময় সক্ষম হয় না। ফলে এই এলাকার জনসাধারণ নিজেদের অবহেলিত বোধ করে। সুতরাং নিজেদের সমস্যা ও অভাব- অভিযোগের প্রতি আলোকপাত করার উদ্দেশ্যে তাহারা নূতন রাজনৈতিক দল গঠন করে।
(খ) কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক: ভারতের সংবিধান রাজ্য অপেক্ষা কেন্দ্রীয় সরকারকে অধিক ক্ষমতা প্রদান করেছে। রাজ্যগুলির উন্নয়ন অনেকাংশে বিঘ্ন হচ্ছে। রাজ্যগুলির হাতে অধিক ক্ষমতা প্রদানের দাবিতে অনেক সময় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি হয়।
(গ) অসম উন্নয়ন: অসম আর্থিক উন্নয়ন ভারতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গঠনে সহায়তা করে। ভারতের কোন কোন রাজ্য শিল্পক্ষেত্রে অধিক উন্নত আবার কোন কোন রাজ্য শিল্পক্ষেত্রে পশ্চাৎপদ। কোন কোন রাজনৈতিক নেতা এই বিষয়ে জনমত গঠনের সুযোগ গ্রহণ করেন এবং নূতন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গঠনের প্রেরণা যোগান।
(ঘ) ধর্ম: ধর্ম ভারতের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের উৎপত্তির একটি প্রধান গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ধর্মের ভিত্তিতে ভারতে অনেক আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের আবির্ভাব ঘটেছে। পাঞ্জাবে ‘অকালি দল’, জম্মু ও কাশ্মীরে ‘জাতীয় সম্মেলন’ ও মহারাষ্ট্রে ‘শিব সেনা’ ধর্মীয় ভিত্তিতে গঠিত কতিপয় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল।
(ঙ) ভাষা ও সংস্কৃতি: কোন কারণে যখন কোন অঞ্চলের অধিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতি বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় উক্ত অঞ্চলের জনগণ নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার্থে নতুন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গঠন করে। অসমীয়া জনগণের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার্থে এবং বাঙালি তথা বাংলা ভাষার প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত মনোভাবের ফলে ১৯৮৫ সালে অসম গণ পরিষদ গঠিত হয়। উপরে উল্লিখিত কারণ এবং অন্যান্য নানাবিধ কারণে ভারতে উত্তরোত্তর আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের উৎপত্তি হচ্ছে।
প্রশ্ন ২০। সম্মিলিত বা সংযুক্ত সরকার বলতে কি বোঝ?
উত্তরঃ বহুদলীয় ব্যবস্থায় অনেকগুলি দল থাকে ৷ নির্বাচনে বহুদল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। এই ব্যবস্থায় অনেক সময় কোন দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে কয়েকটি সমমনোভাবাপন্ন দল একত্রিত হয়ে সরকার গঠন করে। এই সরকারকে সম্মিলিত বা সংযুক্ত সরকার বলে। আমাদের দেশে ১৯৭৭ সালে, ১৯৮৯ সালে, ১৯৯৮ সালে, ১৯৯৯ সালে, ২০০৪ সালে ও ২০০৯ সালে কেন্দ্রে সম্মিলিত বা সংযুক্ত সরকার গঠিত হয়। বর্তমানে অনেক রাজ্যে সম্মিলিত সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত।
প্রশ্ন ২১। সম্মিলিত সরকারের সপক্ষে চারটি যুক্তি তুলে ধর।
উত্তরঃ সম্মিলিত সরকারের কতকগুলি গুণ বা সুবিধা পরিলক্ষিত হয়। এই প্রকার সরকারের সপক্ষে নিম্নলিখিত যুক্তি দেখানো যায়:
(ক) সম্মিলিত সরকার বলতে একাধিক সরকারকে বোঝায়। এই সরকার গঠন হলে কোন একটি দলের স্বেচ্ছাচারিতা থাকে না। দলীয় বিষয়াদি বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ হতে বিবেচনা করে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়।
(খ) একটি দলের মুষ্টিমেয় নেতাদের তুলনায় বহুদলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সরকার ভাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(গ) সম্মিলিত সরকার দেশের অপচয় রোধ করতে পারে। কোন একটি দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারলে পুনরায় নির্বাচন করতে হয়। বারবার নির্বাচনে বিশাল অঙ্কের অর্থের অপচয় হয়। কিন্তু কয়েকটি দল একত্রিত হয়ে সম্মিলিত সরকার গঠন করলে ঘন ঘন নির্বাচন এড়ানো সম্ভব হয় এবং সরকারি অর্থের অপচয় রোধ হয়।
(ঘ) সম্মিলিত সরকারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঞ্চলিক দলসমূহ সরকারে অংশগ্রহণ করতে পারে। ফলে এই সকল দলসমূহের প্রতিনিধিত্ব করা অঞ্চলসমূহের উন্নয়নের সম্ভাবনা দেখা দেয়।
প্রশ্ন ২২। সম্মিলিত সরকারের চারটি অসুবিধা ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ সম্মিলিত সরকারের কতিপয় দোষ-ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। এই ধরনের সরকারের প্রধান অসুবিধাসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) সম্মিলিত সরকার সাধারণত স্থিতিশীল হয় না। বিভিন্ন দলে গঠিত সম্মিলিত সরকারের মধ্যে আদর্শগত মতানৈক্যের ফলে জোটে ভাঙন দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হ্রাস পেয়ে সরকারের পতন ঘটতে পারে।
(খ) সম্মিলিত সরকার দুর্বল সরকার। বিভিন্ন দলের মধ্যে মতানৈক্যের ফলে সরকার অনেক ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না। নীতি নির্ধারণ ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিভিন্ন দলের মধ্যে সহমত দেখা যায় না। ফলে সরকার শক্তিশালী হতে পারে না।
(গ) সম্মিলিত সরকারে সব দলের সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচী থাকলেও তা বাস্তবায়িত না হলে বিভিন্ন দলের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ বৃহৎ জাতীয় স্বার্থকে ব্যাঘাত করে।
(ঘ) সম্মিলিত সরকারে ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল-উপদলের সৃষ্টি হতে পারে। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের ধারণা এইক্ষেত্রে অবান্তর হয়ে পড়ে। ফলে সরকারের অস্তিত্ব সংকটাপন্ন হয়।
প্রশ্ন ২৩। সম্মিলিত সরকারের স্থায়িত্ব কি কারণে ক্ষণস্থায়ী হতে পারে?
উত্তরঃ সম্মিলিত সরকার বিভিন্ন দলের দ্বারা গঠিত হয়। বিভিন্ন দলের আদর্শ বিভিন্ন। বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দের নিজ দলের আদর্শের প্রতি থাকা আনুগত্য তথা স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে মতভেদ দেখা দিতে পারে। নিজ দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় কোন দলের মতামত কার্যকরী হয় না। ফলে একত্রিত দলসমূহের মধ্যে ভাঙন দেখা দিতে পারে এবং সরকারের পতন ঘটতে পারে। এইজন্য সম্মিলিত সরকারের স্থায়িত্ব ক্ষণস্থায়ী হতে পারে; উদাহরণ—১৯৭৭ সালের ও ১৯৯৮ সালের জনতা সরকার এবং ১৯৯৬ ও ১৯৯৮ সালের এন. ডি. এ সরকার।
প্রশ্ন ২৪। ১৯৮৯ সালে রাষ্ট্রীয় মোর্চা সরকারের সহযোগী দলগুলির নাম লেখ।
উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় মোর্চা সরকারের সহযোগী দলগুলি নিম্নরূপ:
(ক) কংগ্রেস (সমাজবাদী)।
(খ) তেলেগু দেশম।
(গ) জনতা দল।
(ঘ) লোকদল (বি)।
(ঙ) ডি. এম. কে.। ও
(চ) অসম গণ পরিষদ।
প্রশ্ন ২৫। দলিত সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক উত্থান বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।
উত্তরঃ ভারতে বিশাল সংখ্যক দলিত সম্প্রদায়ের বাসস্থান। ‘দলিত’ শব্দের অর্থ হল নীচু সম্প্রদায়। ভারতে তারা দীর্ঘকালব্যাপি নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অবহেলিত। তারা আর্থিক, সামাাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত অনগ্রসর। ভারতের সংবিধানে তাদের উন্নতির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকলেও দলিত সম্প্রদায় আজ পর্যন্ত অনগ্রসর, কারণ তাদের দাবীদাওয়া আদায়ের জন্য যথাযোগ্য নেতৃত্বের অভাব।
দলিত সম্প্রদায় ১৯৮০-এর দশক হতে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হতে থাকে। দলিত নেতা কাশীরাম ১৯৭৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকুরি ছেড়ে Backward And Minority Commission Employees Federation (BAMCEF) নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংগঠন সকল অনগ্রসর শ্রেণী—দলিত, অনুসূচীত জাতি ও জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী তথা সংখ্যালঘু—সকলের জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতা তথা অধিকারের দাবি উত্থাপন করেছিল। এই সংগঠন হতেই পরবর্তী সময়ে দলিত-শোষিত সমাজ সংঘর্ষ সমিতি গড়ে উঠেছিল। ১৯৮৪ সালে কাশীরাম বহুজন সমাজ পার্টি গঠন করে। এই দল মূলত দলিত সম্প্রদায়ের উন্নতিকল্পে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তীকালে মায়াবতী এই দলে উচ্চবর্ণের লোকদের অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন।
প্রশ্ন ২৬। ভারতে সাম্প্রদায়িকতার উদ্ভবের প্রধান কারণসমূহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ভারতে বহু সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করে। এই সম্প্রদায়গুলির মধ্যে সদ্ভাব থাকলেও অনেক সময় স্বার্থান্বেষী কিছু দুষ্ট লোকের প্ররোচনায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয়।
ভারতে সাম্প্রদায়িকতা উদ্ভবের প্রধান কারণসমূহ নিম্নরূপ:
(ক) রাজনৈতিক সুবিধাবাদ: সাম্প্রদায়িকতা মূলত একটি রাজনৈতিক সমস্যা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বই একে নির্মূল করতে পারে। পরিতাপের বিষয় এই যে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব নিজেদের স্বার্থে সাম্প্রদায়িকতাকে ব্যবহার করেন।
(খ) সাম্প্রদায়িক দল ও সংস্থা: ভারতে কতিপয় দল ও সংস্থা সাম্প্রদায়িকতা উদ্ভবের অন্যতম প্রধান কারণ। এই দলগুলির মধ্যে মুসলিম লীগ, অকালি দল অন্যতম।
(গ) ভোটের রাজনীতি: বর্তমানে ভারতে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই ভোট অর্জনের জন্য বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক শক্তিসমূহকে নিজেদের কাজে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িকতাকে চিরস্থায়ী করে রাখেন।
(ঘ) শিক্ষার নেতিবাচক ভূমিকা: আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাও আঞ্চলিকতাবাদের আনুগত্য প্রদর্শন করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাম্প্রদায়িকতার ইন্ধন যোগাচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে সাম্প্রদায়িকতা হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
(ঙ) ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা: গ্রামীণ এলাকার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন প্রকার মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, গির্জা প্রভৃতি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এই সকল ধর্মীয় স্থান হতে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প বিচ্ছুরিত হচ্ছে। ধর্মীয় নেতাগণ ধর্মীয় উৎসবে ভাষণদানে সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিয়ে থাকেন।
সাম্প্রদায়িকতা ভারতীয় সমাজকে ক্ষতবিক্ষত করে দেশের সংহতিকে বিপন্ন করে তুলেছে। যে-কোন মূল্যে সাম্প্রদায়িকতা নির্মূল করা সর্বাগ্রে প্রয়োজন।
প্রশ্ন ২৭। অযোধ্যা বিবাদ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তরঃ অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিবাদমান স্থানের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ষষ্ঠদশ শতকে মোগল সম্রাট বাবরের সেনাধ্যক্ষ ‘মির বাকি’ অযোধ্যায় এই মসজিদ নির্মাণ করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী একাংশ লোক বিশ্বাস করে যে বাবরি মসজিদ নির্মাণস্থলে রামচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল এবং ভগবান রামকে পূজা করবার জন্য নির্মাণ করা একটি মন্দির ভেঙে এখানে ‘মির বাকি’ মসজিদ নির্মাণ করেছিল। এই বিবাদের মীমাংসা না হওয়ায় বহু দশক পূর্বে তা আদালতে যায়। আদালত কোন রায় না দেওয়ার জন্য বাবরি মসজিদ তালা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১৯৮৬ সালে উত্তর প্রদেশের ফরিদাবাদ জেলা আদালত এক আদেশে বাবরি মসজিদের তালা খুলে দিয়ে সেখানে হিন্দুদের রামচন্দ্রের থাকা বলে বিশ্বাস করা স্থানে পূজা করার অনুমতি প্রদান করে। সঙ্গে সঙ্গে এই বিবাদ এক নূতন রূপ গ্রহণ করে। হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের বিভিন্ন সংগঠন এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে নিজ নিজ ধর্মের লোককে রাজনৈতিকভাবে সংঘটিত করতে থাকে। ভারতীয় জনতা পার্টি অযোধ্যার এই বিবাদমান স্থানে ‘রাম মন্দির’ নির্মাণকে ইস্যু হিসাবে উত্থান করে। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংস্থা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ প্রভৃতি হিন্দু সংগঠন এই প্রশ্নে হিন্দুদের সংগঠিত করে। রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে চলতে থাকা এইরূপ ঘটনা প্রতিঘটনার ফলশ্রুতিতেই ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা সংঘটিত হয়।
Hi! I’m Ankit Roy, a full time blogger, digital marketer and Founder of Roy Library. I shall provide you all kinds of study materials, including Notes, Suggestions, Biographies and everything you need.